নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কোন এক সময় লেখালেখি শুরু করবো। এখন যা লিখছি তা সেই সময়ের জন্যে প্রস্তুতি আসলে। আর লেখার জন্যে নতুন নতুন তথ্য যোগাড় করছি আপাতত।

ফায়েজুর রহমান সৈকত

মুক্ত সকল চিন্তা করি, নিজের সাথে নিজেই লড়ি।

ফায়েজুর রহমান সৈকত › বিস্তারিত পোস্টঃ

সিনেমাকে সত্য হইতে হয় কিনা

২১ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৯:৫৪

সিনেমা যে বই না অথবা বই যে সিনেমা না এই অতি সাধারণ ব্যাপারটি বুঝতে না পেরেও বছরের পর বছর ধরে দর্শক টিকে থাকতে পারে। এবং তারা দিব্যি টিকে আছেন। আপনি ভাবতে পারেন এটি কিভাবে সম্ভব? আমি বলব সম্ভব। বঙ্গদেশে সম্ভব।

সিনেমা দেখতে গিয়ে বইয়ের সাথে মিলাইতে গেলে যে সিনেমাটাই দেখা হয় না, এটি কেউ কেউ ভাবেন না এমনকি ভাবতে চানও না তারা। সিনেমা যে সম্পূর্ণটাই প্রযোজক, পরিচালক, স্ক্রিপ্ট লেখক, ক্যামেরাম্যান, শব্দ সঞ্চালক আর অভিনয় শিল্পীদের সেটি না বুঝে তারা বুঝেন সিনেমাটি কেবলমাত্র গল্পকারের। ফলে গল্পকার যেভাবে গল্প লিখেছেন হুবহু সেভাবে তারা সিনেমাটি দেখতে চান। উপন্যাসের মত মিল পেলে তা ভাল আর মিল না পেলে তা মন্দ! এমনকি কোন সিনেমার থিম সত্য ঘটনা থেকে হলে তারা সিনেমাটি দেখার চেয়ে সত্য ঘটনার কোথায় কী ঘটেছে সেসব খুঁজতে শুরু করেন। এখন সিনেমার প্রয়োজনে পরিচালক যদি কোথাও সংযোজন বিয়োজন করেন তাহলেই সেড়েছে। কেন এমন হলো সেই কৈফিয়ত দিতে দিতেই বেচারি পরিচালকের জীবন শেষ হয়ে যাবার অবস্থা।

এই অস্বস্তিকর অবস্থার কারণ সিনেমার ব্যাপারে দর্শকের উদাসীনতা এবং না জানা। সিনেমা যে বিনোদনের একটা বড় মাধ্যম সেটি কেউ কেউ যেন বুঝতেই চান না। তারা হয়ত ভাবেন সিনেমা মানে একটা অতি সস্তা বিনোদন যেটি চাইলেই অনলাইন থেকে বিনে পয়সায় নামান যায়। অথবা পেনড্রাইভ দিয়ে এর ওর কাছে থেকে সহজে পাওয়া যায়। সেই সহজেই প্রাপ্ত কয়েক জিবির ফাইলগুলি দেখে আবার এক নিমিষে কেটেও ফেলা যায়। অথচ সেই সিনেমাটি যে একেকজনের সারাজীবনের চিন্তা থেকে, প্যাশন থেকে, ভীষণ খেটেখুটে, অনেক পয়সা খরচ করে, মাথা খাটিয়ে বানাতে হয় সেটি কোন কোন দর্শক বুঝতেই চান না। এই ধরণের অকৃতজ্ঞতা আর উদাসীনতা থেকে যারা সিনেমাকে বিচার করতে চান তারাই বেশিরভাগ সময় সিনেমাকে কম্পেয়ার করেন আমার ধারণা।

→হিডেন ফিগার্স সিনেমা যদি কেউ দেখে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই মনে আছে ১৯৬১ সালে নাসায় চাকরি করা ম্যাথমেটিশিয়ান ক্যাথরিনকে ওয়াশরুমে যাবার জন্যে বারেবারে নাসার অফিস থেকে বের হয়ে আধা কিলোমিটার দূরে যেতে হতো। কারণ ক্যাথরিন ছিল আফ্রিকান আমেরিকান বংশোদ্ভূত। গল্পটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে হলেও মজার ব্যাপার হলো ১৯৬১ সালে আসলে ক্যাথরিনকে এভাবে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়নি৷ তবে ম্যারি জ্যাকসন নামে এক প্রকৌশলীর এমন অভিজ্ঞতা হয়েছিল। হিডেন ফিগার্সের পরিচালক ভাবলেন এই স্পর্শকাতর ঘটনা ক্যাথরিনের সাথে দেখালে সিনেমাটি আরো এক্সাইটিং হবে এবং তিনি তাই করলেন।
→সিনেমাটিকে দর্শকপ্রিয় করার জন্যে ক্যাথরিনের সেকেন্ড ম্যারেজের সময় তার তিন সন্তানকে শিশু বয়েসে দেখান হয়েছে অথচ তখন তারা প্রত্যেকেই টিনেজ ছিল।
→ফ্রেন্ডশিপ সেভেন স্পেসক্রাফটে করে মহাকাশে চড়ার সময় জন গ্লেনের বয়েস ৪১ ছিল অথচ সিনেমাতে দেখিয়েছে ২৭ কেবল।
→এমনকি যে সিনে দেখাচ্ছিল রকেট ছাড়ার সময় শ্বাসরুদ্ধকর হিসেব নিকেশ করে ক্যাথরিন কনফার্ম করেছিল সেই হিসেব আসলে এক সপ্তাহ আগেই করা হয়েছিল। সিনেমার প্রয়োজনে সেটি রকেট ছাড়ার মুহূর্তে দেখিয়েছে।

সত্য ঘটনা অবলম্বনে বানিয়ে এত মিথ্যা তথ্য দিয়েও তিনটা অস্কারের জন্যে মনোনীত হয়েছিল হিডেন ফিগার্স। এইখানে সিনেমাকে সত্য হতে হয় নি বরং পরিচালক যেভাবে চেয়েছেন সেভাবে হয়েছে। সিনেমা এমনি স্বাধীন হয়। উপন্যাসও এমন স্বাধীন হয়। ঔপন্যাসিক আর পরিচালকরা সেটি বুঝেন। আমাদের দর্শকদেরও তা বুঝা উচিত।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:১৪

সাগর শরীফ বলেছেন: গল্প থেকে হুবহু তো সিনেমায় তুলে ধরা হয় না। সিনেমার প্রয়োজনে মূল গল্পও পরিবর্তিত হয়। এটা তো স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে গিয়েছে। আমাদের হাজার বছর ধরে অথবা লাল সালুর দিকে দেখলেই দর্শক সেটা ভাল বুঝবে।

২১ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:১৬

ফায়েজুর রহমান সৈকত বলেছেন: হ্যাঁ।

২| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:১৭

ফেনা বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট। ভাল লাগল।

২১ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:২৯

ফায়েজুর রহমান সৈকত বলেছেন: :)

৩| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: খুব সুন্দর লিখেছেন।

২১ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:২১

ফায়েজুর রহমান সৈকত বলেছেন: :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.