![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুক্ত সকল চিন্তা করি, নিজের সাথে নিজেই লড়ি।
নিজের কাহিনী কই। তখন সদ্য সিনিয়র হয়েছি। একরাতে দল বাইন্ধা ক্যাম্পাসে ঘুরতেছি এমন সময় রেগ দেওনের দাওয়াত পাইলাম। রেগ কী এইসব আমি শিখছি ভর্তি পরীক্ষা দেওনের কালে। পরীক্ষা দেওনের আগের রাতে চাটগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন এক হলে যেন উঠছিলাম। সেইখানে চারিপাশে শুধু একটা গুঞ্জনই আমারে ডর দেখাইছিল। সেইটা হইল রেগ। এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু তার লজ্জাকর অভিজ্ঞতা কইল, তারে নাকি উদাম কইরা নাচাইছিল। সে আমারে এই কথা কয় আর হাসে। আমি কইলাম, হাসস ক্যা? সে কয়, উদাম করাইয়া নাকি তারে হাসতে কইছিল! আমি ভাবি উদাম করাইয়া হাসাইলে কী হয়?
যাই হোক, দাওয়াত পাইয়া আমিও রেগ দিতে গেলাম। গিয়া দেখি চাইর পাঁচটা নতুন ভর্তি হওয়া পোলারে ডাকায়া টিলার পিছে নিয়া আসা হইছে। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে টিলা খুব সেফ জায়গা। তাই যেকোন কিছু হইলেই আমরা টিলায় চলে যাইতাম। তারপর কে কারে রেগ দিমু তার সিলেকশন হইল। আমি স্বাস্থ্যবান দেখে একটা পোলারে রেগ দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করলাম। তারে আমার আন্ডারে দেওয়া হইল। আমি রেগ দেওনের প্রস্তুতি নিলাম। প্রথমেই আমি তার নাম ঠিকানা ভাই বইনের কথা জিগাইলাম। সে কাচুমাচু হইয়া উত্তর দিল। পরিবারের কথা জিজ্ঞাস কইরা তারপরে কী জিগাইতে হইব আমি ভুলে গেলাম। আসলে আমি আগে কখনো রেগ দিই নাই এমনকি দেখিও নাই তো তাই কী জিগামু। কিন্তু এইটা তো আর তারে বুঝান যাইব না তাই আমি এমন একটা হাসি দিলাম যেন সে বুঝতে পারে তারে আমি আরো কঠিন কিছু জিগামু।
তখন পানু সিনেমার কথা জিগানি একটা বহুল প্রচলিত রেগ ছিল। আমি সেইটা জানতাম কিন্তু নতুন বলে ভুলে গেছিলাম। পাশ থেকে আমার এক সহরেগী আইসা তারে গার্লফ্রেন্ড আছে কিনা জিগাইল। সে জানাইল আছে। আমি বুঝতে পারলাম এখন বিব্রতকর প্রশ্ন আসবে। তাই হলো। সহরেগী তারে পানু দেখে কিনা জিগাইল। এই কথা শুনে আমি নিজেই শরম পায়া গেলাম কিন্তু তারে ত বুঝতে দেওন যাইব না তাই মুচকি হাসলাম। বিবাহে কবুল কইবার আগে পাত্রী যেভাবে চুপচাপ থাকে সেও তেমন চুপচাপ থাকলো। কিন্তু একসময় পাত্রীকে যেহেতু কবুল করতেই হয় তাই তাকেও কবুল করতে হলো।
তারপরে আমি তারে গান গাইতে কইলাম। সে গাইলো। তারে নাচতে কইলাম। সে নেচেও দেখাইলো। যদিও আগে কখনো সে নাচে নাই বুঝতে পারলাম হিহিহি। আমার রেগ দেওন শেষ দিকে ছিল। কিন্তু হঠাৎ কইরা এক সহরেগী আইসা চিত্রপট পাল্টাই দিল। সে রেগকৃত পোলাটারে উপর্যুপরি ধমকাইতে লাগলো। মহররমে যেমন রক্ত না ঝরাইলে তা পূর্ণ হয় না, রেগেও যেন মানসিক কিম্বা শারীরিক আঘাত না দিলে পূর্ণ হয়না। আঘাত না পাইলে যেন নবীনরা ডরায় না। যেন নবীনদের ডর দেখাইতেই হইব।
না তেমন সিরিয়াস কিছু হয় নাই কিন্তু পোলাটারে এমন সব উদ্ভট প্রশ্ন আর শারীরিক কসরত দেখাইতে হইছিল যে সে একসময় ডরাই গেল। এইটাই হয়ত মানসিক নির্যাতন ছিল। এক সময় পোলাটা কাইন্দা দিল। আমি অপ্রস্তুত হইয়া গেলাম। নিজেরে এত ছোট মনে হইল যে তাড়াতাড়ি তারে জড়ায়ে ধরলাম। তারে অভয় দিয়া কইলাম কান্দিস না ভাই। সে চুপ হইল।
সে রাতের পরে আমার এত অনুতাপ লাগলো যে আর রেগের নাম নিলাম না। জীবনের প্রথম রেগরে শেষ রেগ বানায়ে মাটিচাপা দিলাম। তারপরে ছেলেটারে দেখলেই আমার লজ্জা লাগতো। তক্ষুণি সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে গেছিল, সে হাসছিলও কিন্তু আমি একটা অনুতাপ বয়ে বেড়াতে থাকলাম। আজ চার বছর শেষ। ছেলেটার সাথে আর কখনো কথা হয়নি । তবে মনে মনে আমি তার খোঁজ রেখেছি। অনেকদিন সে তাবলীগের সাথে জড়িত ছিল। আজকাল দেখি পাঞ্জাবী আর দাড়ি ছেড়ে প্যান্ট শার্ট পরা শুরু করেছে, হিহিহি। কিছুদিন পরে সে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে বের হয়ে যাবে। তার সুস্বাস্থ্য কামনা করি।
(৩১/১০/২০১৬)
৩১ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:৩৫
ফায়েজুর রহমান সৈকত বলেছেন: হ্যাঁ। খুবই বিচ্ছিরি ।
২| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:০৯
রাজীব নুর বলেছেন: মানুষ ভুল করেই শিখে।
©somewhere in net ltd.
১|
৩১ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:২৬
সনেট কবি বলেছেন: বিচ্ছিরি কান্ড!