![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের স্নাতক শ্রেনীর ছাত্র, পাশাপাশি টুকিটাকি লিখালিখি করে চলেছি।
চলচ্চিত্র সমাজের প্রতিচ্ছবি হয়ে সমাজের ভালো মন্দ বর্তমান অবস্থানের কথা সমাজে প্রচার করে। চলচ্চিত্র আবিস্কারের পর থেকেই সমাজ গঠনে এবং সমাজের বিভিন্ন ভুল ত্রুটি নির্নয়ে চলচ্চিত্র বিশেষ ভুমিকা রেখে চলেছে। গতানুগতিক ধারার মিডিয়া জগতে অজস্র চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে যার অধিকাংশ সিনেমা ই পুরুষদের পরিচালিত। তার মধ্যে সংখ্যালঘু কিছু সিনেমা নির্মানন করেছেন নারীরা। নারীরা কিভাবে তাদের সিনেমায় সমাজে কিভাবে নারী এবং পুরুষদের রিপ্রেজেন্ট করেছেন সেটাও অনেক কিছু সমাজের জন্য।
সমাজে নারীদের অগ্রগতিতে, লাইট ক্যামেরা আকশান বললে শুধুমাত্র পুরুষ নয় নারীরাও এখন ভেসে ওঠেন তেমনি একটা নাম অপর্না সেন বাংলা চলচ্চিত্রের একটি অতি পরিচিত এবং সমাদৃত একটি মুখ। যিনি একাধারে অভিনেত্রী, ছবি সম্পাদীকা, পরিচালিকা, এবং তাছাড়াও নারী বিষয়ক একটি পত্রিকাও তিনি সম্পাদনা করে আসছেন। অপর্না সেন বাংলা চলচ্চিত্রে সমাজে নারীদের অবস্থান, এবং নারীদের আশা আকাঙ্ক্ষা, প্রতিবাদী চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন তার বেশিরভাগ মুভিতে। অপর্না সেন মনে করেন নারীকে শুধু একটি নারী এই একটি পরিচয়ে ফুটিয়ে তুলতে তিনি বিশ্বাসী নন, নারী নয় মানুষ হিসাবেই তিনি নারীদের কে তার চলচ্চিত্রে উপস্থাপন করেন। অপর্না সেনের পরিচালিত পারমিতার একদিন মুভিতে একটি হিন্দু নারীর একাগ্রতাকে তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন, এই চলচিত্রের প্রধান চরিত্র ঋতুপর্ণা সেনের চরিত্রকে মুভির প্রথমদিকে একটি প্রাচীন ভারতের বউয়ের রুপ দিয়েছিলেন, সেখানে ঋতুপর্নার প্রথম স্বামীর সেচ্ছাচারীতা সহ্য করা ফুটিয়ে তুলেছেন, সমাজে পুরুষের সেচ্ছাচারীতা কে দেখিয়েছেন যে পুরুষরা নারীদের কিভাবে বশ করে রাখতো এমনকি বিয়ের রাতে প্রথমদিনেই কি আচরন করেছে, প্রতিরাতে মদ খেয়ে বাড়ি ফিরে বউয়ের সাথে আচরনের ছবিও ফুটিয়ে তুলেছেন। সন্তান হবে এজন্য আবার বউকে আদর ও করেছে। আবার প্রতিবন্ধী সন্তান জন্ম দেওয়ায় কিভাবে স্ত্রীকে দোষারোপ ও করা হয়েছে অপবাদ দেওয়া হয়ে থাকে সেই চিত্র ও ফুটে উঠেছে, আবার একটি অংশে ঋতুপর্নার দ্বিতীয় স্বামীর একটি আদর্শ চরিত্র ও ফুটিয়ে তুলেছেন যে পুরুষরা কিভাবে সমাজে নারীদের প্রতিষ্ঠিত করতে সাহায্য এবং উৎসাহিত করেন। স্ত্রীর খেয়াল ভালোবাসা এবং কিভাবে নারী জাতিকে সম্মান করেন। অপর্না সেন এই মুভির মধ্যবর্তী সময়ে দেখিয়েছেন একজন নারী কিভাবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়, একজন নারী সমাজের হেও নয় বরং পুরুষের সমান অবদান রাখেন। পারমিতার একদিন মুভিতে ঋঋতুপর্ণার শাশুড়িকে নারী হয়ে কিভাবে তার ইচ্ছা আকাঙ্ক্ষা বিসর্জন দেয় সমাজে নারীরা কিভাবে আত্মাহুতি দেয় সেটা দেখিয়েছেন। পারমিতার একদিন মুভিতে অপর্না সেন সমাজে নারীরা কিভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়, তারাও পুরুষের সমান অবদান রাখেন সেটি তুলে ধরেছেন অন্যদিকে পুরুষরাও নারীবাদী হয়ে ওঠে নারীদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে সাহায্য করে সেটি উপস্থাপন করেছেন। অপর্না সেনের অপর মুভি জাপানিজ ওয়াইফ মুভিটা যদিও ভৌগলিক প্রেক্ষাপটককে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে তাও এই মুভিতে রাহুল বোসের চরিত্রের মাধ্যমে সমাজের পুরুষদের নারীদের প্রতি শেয়ারিং কেয়ারিং জিনিসটা ফুটিয়ে তুলেছেন, সমাজে এমনো পুরুষ আছেন যারা তাদের স্ত্রীর প্রতি এতটা নমনীয় দূরে থাকলেও স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসা, তার প্রতিটি পদক্ষেপেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, এর মাধ্যমে অপর্না সেন পুরুষদের নারীবাদী হয়ে উঠাকে ফুটিয়ে তুলেছেন। তাছাড়া অপরদিকে রাইমা রায় এর চরিত্রের মধ্যদিয়ে সমাজের বিধবা নারীদের কে তুলে ধরেছেন, অল্প বয়সে বিধবা হলে মেয়েদের স্বামীর বাড়ি অস্তিত্ব থাকেনা পরগাছার মতো জীবনযাপন করতে হয়। রাইমা সেন এর চরিত্রের মধ্য দিয়ে নারীদের লাজুকতা কিভাবে পুরুষদের থেকে আড়াল করে জর্জরিততা নিয়ে কিভাবে বিধবা একজন মহিলা সমাজে বেচে থাকেন। অপর্না সেন তার বেশিরভাগ সিনেমায় নারী চরিত্রকে সমাজে নারী হিসেবে তুলে ধরেন নি মানুষ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন তিনি নারীকে ভারতীয় স্ত্রীর রুপ থেকে প্রতিবাদী এবং কিভাবে নারীরা সমাজে মাথা উচু করে অবস্থান নেয় সেটিও তুলে ধরেছেন অপরদিকে মোড়ল পুরুষ যারা নারীকে দাশী হিসেবে দেখে তাদের কেও দেখিয়েছেন অপরদিকে কিভাবে নারীদের নারী নয় মানুষ হিসেবে দেখতে হয় তাদের টেনে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে হয় সেটিও দেখিয়েছেন পারমিতার একদিন সিনেমার মাধ্যমে।
©somewhere in net ltd.