নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি লেখালিখি করি, মনের মাধুরী মিশিয়ে
৩ দিন আগের ঘটনা। বাসার যে রুমে বসে অফিস করছি, সেটার জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখি একটি বৃদ্ধ লোক যাত্রী ছাউনীতে বসে রয়েছেন। বেশ-ভূষা দেখে মনে হলো বেশ দরিদ্র। মানুষটি একটি ব্যাগে হেলান দিয়ে আনমনে বই পড়ছেন। ছাউনী'র পিছনেই লালমাটিয়া গার্লস স্কুল। করোনা'র কারণে স্কুল বন্ধ। তাহলে, এই সময়ে তিনি এখানে কি করছেন!
গার্ডকে বললাম- 'যাও তো, একটু গিয়ে জিজ্ঞাসা করে আসো, বৃদ্ধ লোকটি কোন সাহায্য নিবেন কি না।'
গার্ড জিজ্ঞাসা করে ফিরে এসে জানালো যে, সাহায্য নিতে রাজি আছেন ঐ লোকটি। আমি বাসায় ফিরে রিলিফের একটি ব্যাগ হাতে নিয়ে আবার নিচে নামলাম। লোকটির হাতে ব্যাগটি দিতেই বললেন- 'বাবা, আমার বাসা-বাড়ি নেই। আমি তো রেঁধে খেতে পারি না।'
আমি ভাবলাম, লোকটি যেহেতু নিজে রেঁধে খেতে পারছেন না, তাঁর হাতে কিছু টাকা দিলেই হয়তো কিনে খেয়ে নিতে পারবেন। মানুষটি আমার হাত থেকে টাকা নিয়ে নিজের জায়গায় ফিরে গেলেন।
পরের দুই দিনও একই জায়গায় দেখলাম বৃদ্ধ লোকটিকে। আজ যখন ঐ ছাউনীতেই তাঁকে দেখতে পেলাম, মনে হলো কিছু করা দরকার। কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। হঠাৎ বুদ্ধি এলো, আমার অফিসটি তো ফাঁকা পড়ে রয়েছে। ঐখানেই আপাততঃ জায়গা করে দেই না কেন!
মানুষটিকে নিয়ে যখন অফিসের পথে রওনা হলাম, তিনি বললেন, তাঁর একটি মেয়ে আছে। মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন। এখন রাস্তায় রাস্তায়ই জীবন কাটে। ১০ম ক্লাস পর্যন্ত পড়েছেন।
চমকে উঠলাম তাঁর কথা শুনে! আজ থেকে ৪০-৫০ বছর আগে, দশম ক্লাস পর্যন্ত পড়া তো অনেক বড় ব্যাপার! ছাউনীতে বসে কি বই পড়ছিলেন জিজ্ঞাসা করতেই জানালেন- রাস্তায় একটি 'মাসুদ রানা' পেয়েছিলাম। ওটাই পড়ছি।'
আগামী দুই মাস বৃদ্ধ লোকটিকে অফিসে রাখতে পারবো। এরপরে? আমি B-Property-এর সাথে কথা বলেছি। তারা আমাকে ১০,০০০ টাকার মধ্যে একটি বাসা ভাড়ার ব্যবস্থা করে দিবে বলে কথা দিয়েছে। জানি না কত দিন ব্যবসা'র অবস্থা ভালো থাকে। যত দিন থাকবে, আমি চেষ্টা করে যাবো।
রবী ঠাকুর বলেছিলেন- জানার কথাকে জানানো আর হৃদয়ের কথাকে বোধে জাগানো, এ-ছাড়া ভাষআর আরেকটি বড় কাজ আছে। সে হচ্ছে কল্পনাকে রুপ দেওয়া।
করোনা পরিস্থিতিতে আমার কেন যেন বার বার মনে হয়, দেশের পরিত্যক্ত অফিসগুলোকে যদি ছিন্নমূলদের থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া যেতো! এখন মনে হয়- শাইয়্যান, আগে নিজে কাজটা করে দেখাও। তারপরে, অন্যকে তা করতে বলবে।
আজ সামাজিক পরিবর্তনের ধারা নিজেকে দিয়েই শুরু করলাম।
১৪ ই মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫৬
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
ছোট দিয়েই বড় পদক্ষেপের শুরু।
ধন্যবাদ নিরন্তর।
২| ১৪ ই মে, ২০২০ রাত ৮:৪৪
রাজীব নুর বলেছেন: সরকারী-বেসরকারী অফিসগুলোতে দরকার নাই। ঝামেলা হবে।
এর চেয়ে ভালো মসজিদ। দেশে মসজিদের অভাব নেই। দেশের সব মসজিদে সব ছিন্নমূল মানুষের জায়গা হয়ে আরো বেঁচে যাবে।
১৪ ই মে, ২০২০ রাত ৮:৫৯
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
ভালো বলেছেন। এক সময়ে, মসজিদ্গুলোতে ছিন্নমূলদের থাকার ব্যবস্থা থাকতো বলে শুনেছি।
এখন তো মসজিদ্গুলোতে রাতে তালা দেওয়া হয়।
তবে, আমি মসজিদ্গুলোর কমিটিতে নেই। আমার এক্তিয়ারে প্রাইভেট অফিস। তাই, সেখানেই থাকার ব্যবস্থা করেছি।
আর, মসজিদে তো কক্ষ সুবিধা নেই। করোনা পরিস্থিতিতে মসজিদ্গুলোতে বিছানা বিছানোর ব্যবস্থা করা যাবে না। অফিসে করা যাবে।
ধন্যবাদ নিরন্তর।
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩৯
চাঁদগাজী বলেছেন:
বড় পদক্ষেেপ; এখন থেকে আপনার অংকগুলো ক্রমেই শুদ্ধ হবে