নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি লেখালিখি করি, মনের মাধুরী মিশিয়ে
হযরত নুহ (আ)-এর প্রপৌত্র বং-এর আবাদ করা বাংলার ভূমিতে 'বাংলা' ছাড়া অন্য কোন ভাষা রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চিন্তাও করা যায় না। এখনকার প্রজন্ম যেমন চিন্তা করতে পারে না, তেমনি কয়েক দশক আগে, ১৯৪৭ সালের জুলাই মাসে যখন আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. জিয়াউদ্দিন আহমদ মন্তব্য করেন যে- পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু, তখন, ক্ষোভে ফেটে পরেন এদেশের সুফি-দরবেশ এবং আলেমগণ। তাঁদের সাথে যোগ দেন আপামর জনসাধারণ। আমি আজ শাকের হোসাইন শিবলি রচিত 'একুশের মাওলানারা' বই হতে তেমন কয়েকজনের নাম উল্লেখ করবো-
১) ড. মৌলভী আল্লামা মুহম্মদ শহীদুল্লাহঃ
তিনি ছিলেন ফুরফুরা'র পিরসাহেবের সুযোগ্য খলিফা। আলীগড়ের উপাচার্য যখন উর্দুকে রাষ্ট্রীয় ভাষা করার ব্যাপারে মত প্রকাশ করেন, তখন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বাংলা ভাষার পক্ষে যুক্তি প্রদান করে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার ব্যাপারে যুক্তি প্রদান করেন। তিনি একবার বলেছিলেন-
''আমরা হিন্দু মুসলমান যেমন সত্য, তাঁর চেয়ে বেশি সত্য আমরা বাঙালি। এটি কোন আদর্শের কথা নয়, এটি একটি বাস্তব কথা। যা প্রকৃতি নিজের হাতে আমাদের চেহারায় ও ভাষায় বাঙ্গালিত্বের এমন ছাপ মেরে দিয়েছেন যে, মালা-তিলক-টিকিতে কিংবা টুপি-লুঙ্গি-দাড়িতে ঢাকবার জো-টি নেই।''
২) মাওলানা আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশঃ
তিনিই প্রথম পাকিস্তান পার্লামেন্টে বাংলা ভাষায় বক্তৃতা দেন। ফুরফুরার পির সাহেবের খলিফা মাওলানা তকর্বাগীশ যখন পাকিস্তান গণপরিষদে বাংলায় বক্তৃতা শুরু করেন, তখন গণপরিষদের অনেক সদস্য উপহাস করতে থাকেন। কিন্তু তিনি তাঁর বক্তৃতা থামাননি।
৩) এডভোকেট মৌলোভী ফরিদ আহমেদঃ
তিনি ছিলেন নেযামে ইসলাম পার্টির শীর্ষ নেতা। ঢাকা কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক। সরকারী চাকরী করেও ভাষা আন্দোলনে যোগ দেওয়ার কারণে তাঁকে পাকিস্তানী প্রশাসন জবাবদিহিতার সম্মুখীন করে।
৪) মাওলানা শামসুল হুদা পাঁচবাগীঃ
যুক্ত ও মুক্ত বাংলার প্রথম স্বাধীনতাকামী রাজবন্দী শামসুল হূদা ছিলেন শেরেবাংলা একে, ফজলুল হক এবং মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর সহযোদ্ধা। তিনি ছিলেন জিন্নাহ, আইয়ুব ও জমিদারবিরোধী আন্দোলনের সময় হওয়া ১০২১টি মামলার বিজয়ী আইনজ্ঞ। তাঁর ইমারত পার্টির সক্রিয় কর্মী ছিলেন ভাষাশহিদ আব্দুল জব্বার।
৫) মওলানা আকরাম খাঁঃ
মওলানা আকরাম খাঁ প্রতিষ্ঠিত 'দৈনিক আজাদ' তখন ছিলো মুসলিমবাংলার একমাত্র মুখপত্র। ১৯৪৭ সালে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে মফস্বলে যেসব আন্দোলন-সংগ্রাম হয়েছিলো, সেগুলোকে নিয়ে ২৫টির অধিক খবর দৈনিক আজাদে প্রকাশিত হয়।
৬) মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীঃ
তিনি ছিলেন গরিব ও কৃষকদের বন্ধু আর রক্তচোষা মহাজন ও জমিদারদের বিরুদ্ধে আজীবন সংগ্রামকারী। করাচি'র দৈনিক 'ডন'-সহ আরও কয়েকটি দৈনিক পত্রিকা পূর্ব বাংলার ভাষা আন্দোলনকে আঞ্চলিক বলে তুলে ধরে, তখন মওলানা ভাসানী এর তীব্র নিন্দা করেন এভাবে-
''আমি দেখিয়া মর্মাহত হইলাম যে, পশ্চিম পাকিস্তানের কতিপয় সংবাদপত্র আমাদের বাংলা ভাষা আন্দোলনের কদর্য্য ও ভুল ব্যাখ্যা করিবার প্রয়াস পাইয়াছে এবং পশ্চিম পাকিস্তানের ভাইদের মনে বিদ্বেষ সৃষ্টির দুরভিসন্ধিতে মাতিয়া উঠিয়াছে। ইহা দ্বারা পত্রিকাগুলি কায়েমি সার্থের দালালদের ভেদনীতিকেই চাঙ্গা করিয়া রাখিয়া দেশের দুষমনী করিতেছে।''
৭) মাওলানা সৈয়দ মুছলেহ উদ্দীনঃ
রাষ্ট্রভাষা বাংলা করার আন্দোলনে জমিয়োতে উলামায়ে ইসলাম ও নেযামে ইসলাম পার্টিকে সক্রিয় করে তোলার পেছনে সিলেটের সন্তান মাওলানা সৈয়দ মুছলেহ উদ্দীনের ভূমিকা ছিলো অপরিসীম।
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ১২:০৫
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আপনার শিরোনাম ও ভেতরের লেখার মধ্যে অনেক অসংগতি আছে। মাদরাসায় পড়লেই কেউ আলেম হয় না। যাদের কথা লিখেছেন তাদের মধ্যে কেউ কেউ মাদ্রাসায় শুধু দাখিল পাশ করেছে। নিশ্চয়ই সেটা সরকারি মাদরাসা হবে। তারা অনেকে আবার পুনরায় এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন, কলেজে এডমিশন নিয়ে ভার্সিটি পর্যন্ত আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছেন। তারা কেউ ধর্মীয় লাইনে উচ্চতর ডিগ্রী নেন নি। কোন মাদরাসায় পড়ান নি। কেউ কারো শিষ্যত্ব গ্রহণ করলেই সে আলেম হয়ে যায় না।
আলেম হচ্ছেন আল্লামা শফী, জুনায়েদ বাবু নগরী, মামুনুল হক উনারা।