নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অন্ধকারে পা হড়কালে কি করার !!৫২

শামীমঅাহেমদ

পথ হারানো পথিকের জন্য পথের মোড়ে কেউ না কেউ আছে অপেক্ষমাণ পথ দেখাবে বলে ।

শামীমঅাহেমদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

অনুসরণ যোগ্য মুজতাহিদ ইমামগণ চারের মধ্যে সীমবদ্ধ কেন?

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:৪৩

অনুসরণ যোগ্য মুজতাহিদ ইমামগণ চারের মধ্যে সীমবদ্ধ কেন?



হযরত শাহ্‌ ওলীউল্লাহ সাহেব (রহ.) 'ইকদুল'জায়্যিদ' নামক কিতাবে বলেন, চার মাযহাব গ্রহণ করার মধ্যে বিশাল বড় রহস্য ও উপকারিতা রয়েছে এবং এই চার থেকে বের হওয়ার মধ্যে বিশাল বড় ক্ষতি রয়েছে যা আমি দলীলসহ বর্ণনা করব।



প্রথম দলীল,



সমস্ত উম্মত এই ব্যাপারে একমত যে, শরীয়ত জানতে হলে পূর্ববর্তী বুযুর্গদের উপর নির্ভর করতে হবে। এজন্যই তাবেঈনগণ সাহাবাগণের উপর নির্ভর করেছিলেন এবং তাবয়ে'তাবেঈনগণ তাবেঈনগণের উপর নির্ভর করেছিলেন। তেমনিভাবে প্রতি যুগের ওলামাগণ তাঁদের পূর্ববর্তী ওলামাগণের উপর নির্ভর করতেন। জ্ঞান ও যুক্তির নিরিখেও এমনটি করা উত্তম মনে হয়। কারণ শরীয়ত জানতে হলে ধারাবাহিক বর্ণনাকারীর বর্ণনার মাধ্যমে জানতে হয় এবং মাসআলা বের করার যোগ্যতা হাসিলের ভিত্তিতে জানতে হয়। আর ধারাবাহিক বর্ণনা তখনই সঠিক হবে যখন প্রতি যুগের মানুষ যদি তাঁদের সাথে মিলিত পূর্ব যুগের বড় আলেম ও বুযুর্গদের থেকে তা হাসিল করেন। আর মাসআলা বের করার যোগ্যতা তখন সঠিক হবে যখন পূর্ববর্তীদের মাযহাব জানা থাকবে। কেননা তা জানা থাকা মাসআলা বের করার জন্য নিতান্ত জরুরী। তা না হলে অনেক ক্ষেত্রে তাঁদের সর্বসম্মত মাসআলার সাথে বিরোধী হয়ে যাবে। এজন্য তাঁদের মাযহাব জেনে সেটাকেই নিজের কথার ভিত্তি বানাতে হবে। আর এর জন্য প্রত্যেক যুগের মানুষ তার সাথে মিলিত পূর্ববর্তী যুগের বুযুর্গদের থেকে তা হাসিল করতে হবে। কারণ যে কোন ধরণের বিদ্যা চাই নাহু হোক বা সরফ, চাই ডাক্তারী বিদ্যা হোক বা কাব্য চর্চা, চাই রাজমিস্ত্রী হোক বা রংমিস্ত্রী ইত্যাদি। এর কোনটাই ততক্ষণ পর্যন্ত সহজ হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত এ বিষয়ের পণ্ডিতদের সাথে না থাকবে। যদিও যুক্তি একথা বলে যে, সাথে থাকা ছাড়াও সম্ভব। কিন্তু বাস্তবে তার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না। পূর্ববর্তীদের কথার উপর নির্ভর করার বিষয়টা যখন প্রমাণিত হয়ে গেল, এর পাশাপাশি এটাও জরুরী যে, তাঁদের নির্ভরযোগ্য উক্তি সমূহ সঠিক সূত্রে বর্ণিত হতে হবে এবং প্রসিদ্ধ কিতাবাদিতে লিখিত থাকতে হবে। ওলামাগণের পক্ষ থেকে ঐসমস্ত কিতাবাদির ব্যাখ্যাগ্রন্থও লিখা থাকতে হবে, যার মধ্যে সম্ভাবনাময় উক্তিগুলোর মধ্য হতে উত্তমটার বর্ণনা থাকতে হবে। কোন কোন ক্ষেত্রে আম্‌কে খাস এবং মুতলাককে মুকাইয়্যাদ করা হয়েছে এবং সাথে সাথে বিধি বিধানের কারণও উল্লেখ করা হয়েছে। এসব বিষয় না পাওয়া গেলে তাদের উক্তির উপর নির্ভর করা সঠিক হবে না। আর বর্তমানে প্রসিদ্ধ চার মাযহাব ছাড়া (আহলে সুন্নাত ওল'জামাতের) অন্য কোন মাযহাব এই গুণে গুণান্বিত নেই।



দ্বিতীয় দলীল,



রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তোমরা বড় দলের অনুসরণ কর। আর প্রসিদ্ধ চার মাযহাব ব্যতীত অন্যান্য মাযহাবের ফেকাহ যেহেতু বিলুপ্ত হয়ে গেছে। সুতরাং এখন প্রসিদ্ধ চার মাযহাবের মধ্য হতে যে কোন মাযহাবের অনুসরণ করলেই বড় দলের অনুসরণ করা হবে। আর না করলে বড় দল থেকে বের হয়ে যেতে হবে।



তৃতীয় দলীল,



দীর্ঘকাল অতিবাহিত হয়ে যাওয়া এবং আমানতদারী নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে বর্তমানের নিকৃষ্টতম আলেমদের উপর নির্ভর করার মত কোন পথ থাকে নি। এরা ঐসমস্ত ব্যক্তিবর্গের দিকেও মিথ্যা কথার সম্বোধন করতে পারে যাদের সত্যতা ও আমানতদারিতা প্রসিদ্ধ হয়ে আছে। বর্তমান আলেমদের উপর বিশ্বাস করা যেহেতু নির্ভরযোগ্য নয় তাই তাদের বর্ণনাও গ্রহণযোগ্য নয়। এখন রয়ে গেল প্রসিদ্ধ চার ইমামের মাযহাবের কথা। এই চার মাযহাবের যে কোন একটার অনুকরণ এজন্য জরুরী। কারণ তাঁদের মাযহাব লিখিতভাবে রয়ে গেছে এবং তাঁদের কিতাবাদি পূর্বে থেকে নির্ভরযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য হয়ে আছে। এজন্য তাঁদের দিকে ভুল কথা ছুড়ে মারাও সম্ভব নয়।

আহলে হাদিস ভাইরা আরও জোরে শোরে প্রচার করেন তাবলীগ খারাপ, বিদআত ইত্যাদি। কোন সমস্যা নেই। কিন্তু তাবলীগের আলেমরা এই সব বিরোধীতার উত্তর দিতে ও না করেছে। কারণ সবাই জানে যে আহলে হাদিসরা হচ্ছেন ফিতনাবাজ এক নতুন ফিরকা, যে ফিরকা ইংরেজ শাসন আমলের আগে ছিল না। নবীজী (সাঃ) থেকে ইংরেজ শাসন আমল পর্যন্ত পুরা পৃথিবীতে আহালে হাদিস নামে কোন ফিরকা ছিল না। তারা উম্মতকে এক করার কোন চেষ্টায় নেই, আছে শুধু কিছু মতভেদপূর্ণ হাদিস নিয়ে "আমরা সহিহ বাকি সবাই ভুল" এই নিয়ে।

কিন্তু তাবলীগ শুধু চার মাজহাব যথাঃ হানাফি, শাফেয়ী, মালেকি ও হাম্বেলিকেই একত্রিত করে নি বরং আহলে হাদিসের অনেক ভাইরা ও এই মেহেনতের সাথে পুরো জিন্দেগি দিচ্ছেন। পুরান ঢাকার বংশাল হচ্ছে আহলে হাদিসদের আখড়া। অথচ সেই বংশালের অনেক মসজিদেই তাবলীগের জিম্মাদার সাথি হচ্ছেন আহলে হাদিস। তারা তাবলীগের জন্য এত মেহনত করেন যে হানাফি মাজহাব অনুসারিদের থেকেও অগ্রগামি। তাবলীগ পুরো দুনিয়ার মুসমানদের এক করছে, একই প্লেটে বাঙালি, আরব, ইংলিশ, আফ্রিকান, সোমালিয়ান খানা খাচ্ছে, এক সাথে আপন ভাইএর মত চলছে। পুরো পৃথিবীতে এই নজির অনুপস্থিত। যেখানেই যাবেন, একই কথা শুনবেনঃ "আমরা সহিহ বাকি সবাই ভুল"। কিন্তু কেউ, কখন শুনে নাই যে তাবলীগএর কোন বয়ানে বলছে যে, আহলে হাদিস খারাপ, মাজহাব ওয়ালারা ভাল। কোন মুসলমানের চাই সে ব্যক্তি হোক বা দল হোক বিভেদ সৃষ্টি হবে এমন কোন কথা কখনও কোন তাবলীগের বয়ানে বলা হয় না। কারণ সে যাই হোক আমার ভাই। ব্যাস, এই সহমর্মিতার কারনে পুরা পৃথিবীতে আজ আল্লাহ্‌ তায়ালা তাবলীগের দ্রুত সম্প্রসারণ ঘটাচ্ছেন। কোন সমালোচনা নাই, আছে শুধু আন্তরিক দিল থেকে মোহাব্বত।

কিন্তু আহলে হাদিস কে কেন মানুষ দিল থেকে নিতে পারে না? কারণ এরা সমসময় একই কথাঃ "আমরা সহিহ বাকি সবাই ভুল"। উম্মতের শুধু ভুল, দোষ-ত্রুটি খোজাই এদের কাজ। তাই আহলে হাদিস ভাইরা, আপনাদের দৃষ্টি ভঙ্গি পরিবর্তন করুন। উম্মতের ভাল দেখুন। হতে পারে তার সব কিছু আপনাদের মন মত নয়। কিন্তু আপনারা যেসব বিষয় নিয়ে ফিতনা সৃষ্টি করেন, তার বেশিরভাগই হচ্ছে নফল যেমনঃ জোরে আমীন না আস্তে আমীন, হাত বুকে না নাভিতে ইত্যাদি। নফল নিয়ে ফিতনা করে চলছেন, অথচ দেশের বেশির ভাগ মানুষ বে নামাজই, দুনিয়ার ধোঁকায় এত মশগুল যে আখিরাত যে আছে, এটাই আজ তাদের কাছে অস্পষ্ট। এদের কাছে কে যায়? কে যায় এই সব রিকসা ওয়ালা, ঢেলা ওয়ালা, শ্রমিক, মজুর থেকে শুরু করে শিল্পপতি, বড় ব্যবসায়ি দেশের সকল মানুষের কাছে? প্রতিটি ঘরে ঘরে প্রতিদিন কে যাচ্ছে আখিরাতের কথা বলতে? আহলে হাদিসরা? তারা তো ফেসবুক নিয়ে আর কিছু ওয়াজ-মাহফিল নিয়ে ব্যস্ত। তাও মুল বিষয় হলঃ "আমরা সহিহ বাকি সবাই ভুল"।

যা হোক তাবলীগের মেহেনত না বুঝে অনেকেই বিরোধিতা করেছেন, পরে অনেক ভাই তাবলীগের জন্য পুরা জিন্দেগী দিচ্ছেন। তাই আহলে হাদিসরা তাদের কাজ করুক, কোন সমস্যা নেই। কারণ কুরআন শরীফের আয়াতের মাফহুমঃ তারাও কৌশল করেছিল, আরা আল্লাহ তায়ালা ও কৌশল করেছিলেন, আল্লাহ্‌ তায়ালাই উত্তম কৌশলকারী।

তাবলীগের মেহনত আল্লাহ্‌ কবুল করে পুরো দুনিয়া তে চালাচ্ছেন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.