নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সবার উপরে দেশ - আমার স্বদেশ। ভাল লাগে সততা, সরলতা। খারাপ লাগে নোংরামি, মিথ্যা, অহমিকা, কুটিলতা।
কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবীতে শাহবাগে জড়ো হওয়া, দেশপ্রেমে উজ্জীবিত সকল বয়সের, সকল মতের, সকল শ্রেনীর মানুষের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিতে অম্লান হয়ে এক হয়ে যাওয়া বাংলাদেশীদের দেশমাতার প্রতি আবেগের জায়গাটিকেই স্মরণ করিয়ে দেয়। এ আবেগের কাছে যুক্তির স্হান তুচ্ছ, বোধন পরাজিত। মু্ক্তিযুদ্ধ আমাদের অহংকার, গৌরবের আরেক নাম। কিন্তু সমাজের সবাই যদি আবেগের বলী হন তবে সে সমাজের স্হায়িত্ব নষ্ট হয়ে যায়।
রাজনীতি হচ্ছে জনগনের আবেগের সাথে এক ধরনের খেলা। আর যে দেশের মানুষের মাঝে আবেগের পরিমান বেশী থাকে সেখানে এই খেলায় আবেগ দ্রুত উঠা নামা করে। আর তাই সেখানে এই খেলা অনেক ঝুকি পূর্ণ হয়ে উঠে। বাংলাদেশের মানুষের আবেগের কারণেই এখানে রাজনীতির খেলা অনেক বেশী ঝুকিপূর্ন। এই আবেগের কারণেই এখানে পারিবারিক রাজনীতির উৎথান সার্কভূক্ত অন্যদেশ গুলোর মতোই প্রবল।
এবার আসল কথায় আশা যাক। যুদ্ধাপরাধ তথা মানবতাবিরোধি অপরাধের বিচার আমাদের প্রাণের দাবী। কিন্তু কিছু মানুষের ব্যার্থতার কারনে গত চার বছরেও এই বিচারটিকে শেষ করা গেলনা। আবার এখন তড়িঘড়ি করে এর কিছু বিচার শেষ করার একটা চেষ্টা দেখা যাচ্ছে। যার উদ্দ্যেশ্যই হচ্ছে আমাদের আবেগকে পুঁজি করে নির্বাচনের বৈতরনী পার হওয়া।
কিন্তু যে বিচারটিকে আমরা এতদিন টেনে আনলাম তার প্রক্রিয়াগুলো যথাযথভাবে শেষ না করলে এর কুফল দীর্ঘদিন বহন করতে হবে। যারা সাজা পাবে, তারা সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে হয়ে যাবে জাতীয় বীর - যা সহ্য করার থেকে আত্নহত্যা করাই শ্রেয়।
কাদের মোল্লার মামলার ক্ষেত্রে যে কয়েকটি আইনি বিতর্ক উঠেছে তার মধ্যে একটি হচ্ছে রিভিউ করা যাবে কিনা। লিখার কলেবর না বাড়িয়ে সরকারকে বলছি রিভিউয়ের সুযোগ দিন (যদিও তা হবে আদালতের মাধ্যমে)। দ্বিতীয়ত নিম্নের লিখাটির উত্তর খোঁজা উচিত সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলেরঃ
" একটি ঘটনায় একমাত্র মহিলা সাক্ষীর জবানবন্দির ভিত্তিতে ফাঁসির দণ্ড ন্যায়বিচার কতটা নিশ্চিত করবে—সেটা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যে ঘটনায় আবদুল কাদের মোল্লার দণ্ড বাড়িয়ে ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়েছে, সে ঘটনায় সাক্ষী মাত্র একজন। ঘটনার সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১৩ বছর। ওই মহিলার একটি জবানবন্দি ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে রয়েছে। সেই জবানবন্দিতে জড়িতদের মধ্যে আবদুল কাদের মোল্লার নাম নেই। আবার মামলার তদন্তকারীর কাছে দেয়া জবানবন্দিতেও আবদুল কাদের মোল্লাকে সরাসরি দেখেছেন—এমনটা উল্লেখ নেই। সাক্ষীর সময় তিনি বলেছেন আবদুল কাদের মোল্লাকে দেখেছেন। ঘটনার সময় অপ্রাপ্ত বয়স্ক একমাত্র সাক্ষীর ভিত্তিতে ন্যায়বিচারের মানদণ্ডে চূড়ান্ত শাস্তি কতটা গ্রহণযোগ্য—সেই প্রশ্ন এরই মধ্যে উঠে এসেছে আন্তর্জাতিক মিডিয়ায়।"
সুত্র: Click This Link
আমার প্রশ্নঃ এই মামলায় কি আর এর থেকে কোন ভাল উপাদান ছিলনা যেখানে তাকে ফাঁসি দেয়া যেত কোন প্রশ্ন উৎথাপনের সুযোগ না দিয়ে? যাদের অমনোযোগিতায়, যেনতেন ভাবে বিচার শেষ করার সুযোগে আজ রাজাকারের দোষরেরা এই প্রশ্ন উৎথাপনের সুযোগ পাচ্ছে তাদেরকে এর জবাব দিতেই হবে।
সবশেষে বলতে চাই, কাদেরের ফাঁসির দাবী যেমন বাংলাদেশের রাজনীতিকে পরিবর্তন করে দিয়েছে, সরকারের জনপ্রিয়তার স্হানে আঘাত করেছে, আঘাত করেছে আমাদের সামাজিক এবং রাজনৈতিক চরিত্রে। তার ফাঁসির বাস্তবায়ন সম্ভবত বাংলাদেশ রাষ্ট্রের চরিত্র বদলে দিতে পারে। তবে আমাদেরকে আরেকটু অপেক্ষা করতে হবে এই জন্যে যে তা রাষ্ট্রের চরিত্র কত গভীর ভাবে বদলায় তা দেখার জন্যে।
©somewhere in net ltd.