নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শামিম ইশতিয়াক, জন্ম ময়মনসিংহ জেলার জাতীয় কবির শৈশব কাটাবো ত্রিশাল উপজেলায়,বিএসএস অনার্স (অর্থনীতি) নিয়ে বর্তমানে অধ্যায়নরত আছেন, এছাড়াও ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক (সমমান) পাশ করেছেন, শামিম ইশতিয়াক নিজেকে একজন কবিতাসক্ত হিসেবে পরিচয় দিলেও

শামিম ইশতিয়াক

শামিম ইশতিয়াক জন্ম ৭ জুলাই, জাতীয় কবি কাজি নজরুল ইসলামের শৈশবের স্মৃতি বিজরিত ময়মনসিংহের ত্রিশালে। অর্থনীতি তে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেন আনন্দ মোহন কলেজ থেকে, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কামিল মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন, এছাড়াও আইন শিক্ষায় এল এল বি শেষ করেন। ছাত্রজীবন থেকেই লেখালেখি শুরু, বিভিন্ন পত্রিকায় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ শুরু করেন, পাশাপাশি দৈনিক, সাপ্তাহিক মাসিক পত্রিকাগুলোতে লেখালেখি শুরু করেন, সমসাময়িক বিষয় নিয়ে কবিতা, গল্প, রম্য রচনা, কলাম, ভ্রমণকাহিনী লিখেছেন বিভিন্ন পুস্তক, ম্যাগাজিন, পত্রিকায়, রয়েছে কবিতা আবৃত্তির কালেকশন। ভ্রমণকাহিনী লেখার পাশাপাশি দেশ ভ্রমণেও তিনি পরিচিত মুখ, পরিচালনা করেন ভ্রমণ এজেন্সি। তিনি জাতীয় দৈনিকে সাংবাদিকতা শুরু করেন পাশাপাশি তিনি তিনি সম্পাদনা করেছেন কয়েকটি সাপ্তাহিক পত্রিকা, সাহিত্য পত্রিকা ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল । সামাজিক, সেচ্ছাসেবী ও সাহিত্য সংগঠনের তিনি দায়িত্বশীল ও নিয়মিত সদস্য হিসেবে কাজ করে এসেছেন। সাহিত্য চর্চা ও সামাজিক কর্মকাণ্ডের জন্য তিনি সম্মাননা পদক, পুরস্কার লাভ করেছেন।

শামিম ইশতিয়াক › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রাক্তনের বিয়ের দাওয়াত

০৭ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ২:১৫

প্রাক্তন প্রেমিকার বিয়েতে বিরিয়ানি রান্না করা বাধ্যতামূলক করা হোক এটা নিয়ে একটা রিট করতে আদালত মুখি যাইয়ার ধ্যান করতেছিলাম, এমন সময় প্রাক্তনের ফোন এলো,
হ্যালো, ওই কুত্তা দাওয়াত রাখিস, অমুক দিন বিয়ে, আর তুই ত জন্মের ছ্যাছড় গিফট ত দিতে পারবিনা তবুও আসিস, বলেই ফোন রেখে দিলো, আমি অপমানিত বোধ করলাম না, মেয়েটা সত্য বলেছে, রিলেশনকালে একটা টাকাও খরচ করিনি আমি উল্টা রিক্সা থেকে রেস্টুরেন্ট সব বিল দিতো সে,
নাহ দাওয়াতটা মিস করা যাবেনা, আর কিছু নিয়ে গিয়ে প্রমাণ করতে হবে আমি আগের মত ছ্যাছড়া নাই,
বিয়েতে কি দেওয়া যায় তা নিয়ে ভাবনায় পরে গেলাম আমার বিশিষ্ট বড় ভাই শ্যামদা কে ফোন দিলাম,
-হ্যালো ভাই কথা ছিলো?
- হ কি কইবি?
- ভাই প্রাক্তনের বিয়ে, কি গিফট দেয়া যায়?
- আগে বল খাবারের ম্যানু কি?
- জানিনা ভাই,
- ঠিক আছে ভাইব্বা তরে জানাই, এক কাজ কর বাসায় চলে আয় তর ভাবি নাই, রাগ কইরা বাপের বাড়ি গেছে, সিগারেট নিয়ে আসিস, বলে ফোন রেখে দিলো,
মানিব্যাগ ঝাকাইয়া তিনটা ব্যানসন কিনার টাকা পাইলাম, কিনে রওনা দিলাম বাসার দিকে,
কলিংবেল চাপতেই দরজা খুলে গেলো,
- কিরে বিড়ি আনছোস?
- হ ভাই,
- রুমে আয়,
- ভাই ভাইব্বা পাইছো কিছু?
- কোনটা যেনো?
- ওইযে একটু আগে যে বললাম ফোনে,
- কোনটা যেনো বলছিলি?
- ভাই বিড়ির কথা মনে আছে আর আমার কথাটা মনে নাই? প্রাক্তনের বিয়েতে কি দেওয়া যায় তা বলছিলাম,
- হ বস, ভাবিনাই এখন ভাবব্বো,
আমি কিছু না বলে নিরবে সোফায় গা এলিয়ে দিলাম, এই লোকের বউ কেন বাসায় থাকেনা এটা এখন বুঝতেছি,
- বুঝলি নীলাভ্র, একটা প্লেন পাইলাম,
- কি ভাই?
- বিয়েতে কলম গিফট দে, এটা যত্ন করে রেখে দিবে, বিয়ের পর বাচ্চাকাচ্চা হওয়ার আগে পর্যন্ত কলম কাজে লাগবেনা, বাচ্চা হলে বাচ্চাকে কলম দিয়ে লিখাবে, তখন তুই খোটা দিয়ে বলতে পারবি যে তর বাচ্চার জ্ঞ্যান-অর্জন শুরু হইছে আমার দেয়া জিনিস দিয়ে, এতে তুই মানসিক শান্তি পাবি, তর রাগ জিদ সব কেটে যাবে.
এই লোকটা যেমন তার বুদ্ধিটাও তেমন এর কাছে আসাই বৃথা, ভেবে উঠে পরলাম,
- ভাই চলে গেলাম,
- বিড়ি দিয়ে যা,
- আনিনাই টাকা নাই,
- ফ্রিতে আমার পরামর্শ নিলি কেন? তুই আসলেও একটা উচ্চ লেভেলেত ছ্যাছড়া,
আরো ঘ্যানঘ্যান শুনার আগেই সোজা বের হয়ে চলে এলাম, বুদ্ধিটা ভালো লাগেনি, কলম দিলে কেমন দেখায়, অন্য কিছু দিতে হবে, ভাবছি আর হাটছি, মোড়ের হাজির বিরিয়ানি দোকান থেকে বিরিয়ানির কড়া ঘ্রাণ আসছে, নাকটা লম্বা করে একটা দম নিলাম, আহা শান্তি, বিয়েটা খেতেই হবে বিরিয়ানি না দিলেও কমপক্ষে পোলাও মাংস ত দিবে, চিন্তা ভাবনা অন্য দিকে চলে যাচ্ছে, কি দেওয়া যায় এটা ভাবা দরকার, দূর ভেবেটেবে লাভ নাই, কিছুই নিবনা, খালি হাতেই যাবো, ছ্যাছড়ামি করাটা আমার ধাচে আছে, এলাকার ছ্যাছড়া কমিটির সভাপতি ছিলাম দীর্ঘদিন, টিমের সবাইকে নিয়ে মিলাদ থেকে শুরু করে এলাকার সব দাওয়াতে নিমন্ত্রণ ছাড়াই হাজির হইতাম, শুক্রবারে মসজিদে বাতাসার জন্য দাঁড়িয়ে থাকতাম, এমনকি ইফতার ও কর‍তাম মসজিদে, শহরে এলাম এসব কমে গেলো কিন্তু ওইযে অভ্যাস বদলায় না, তাই অভ্যাসের তালিম দিতে কমিউনিটি সেন্টারে ফ্রিতে প্রতি সপ্তাহে খাইতাম, তখন কেউ দেখতে আসতোনা যে আমি দাওয়াত ছাড়াই খাচ্ছি, আর এতো আমার নিজের প্রাক্তন প্রেমিকার বিয়ে, গিফট ছাড়া গেলে কে কি বলবে, আর
কে ই দেখতে আসবে যে কি আনলাম না আনলাম, প্রাক্তন ত নিজেই সেজে বসে থাকবে এসব দেখতে আসার টাইম কই তার?
আমি খেয়ে চলে আসবো আমার কাজ হয়ে যাবে, খাওয়াটাই সবার উর্ধে, অন্য সব কিছু গোল্লায় যাক,
কবি বলেছেন -
"যেখানে দেখিবে খাওয়া দাওয়ার আয়োজন হয়,
সেখানেই যাইবে তুমি করিবেনা কোন লাজ ভয়"
আমি কবিদের কে যথেষ্ট সম্মান করি, তাদের কে ফলো করি তাই কবির এই লাইনকে পালন করতেই প্রাক্তনের বিয়েতে কোন গিফট ছাড়াই যাওয়ার সিদ্ধান্তটা পাকাপোক্ত করে ফেললাম।
এখন যাই লন্ড্রিতে শার্ট প্যান্ট স্ত্রি করতে দিতে হবে, বেচারি প্রাক্তন আমাকে এলোমেলো দেখলেই রাগ করতো, তার বিয়েতে এলোমেলো গেলেও হয়ত রাগ করে বিয়েটাই করবেনা।

শামিম ইশতিয়াক
আনন্দ মোহন কলেজ, ময়মনসিংহ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.