নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এস এম মাসুদ ভুবন।

শামীম মোহাম্মাদ মাসুদ

আমি খুব সাধারন একটা ছেলে বেড়ে উঠা গ্রামে, আর ভালোবাসি বাংলাদেশ। পড়তে খুব পছন্দ করি, মাঝে মাঝে লিখারও চেষ্টা করি।

শামীম মোহাম্মাদ মাসুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার মা।

১২ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৪:৩৬

আমার মাকে আমি বলি সুপার ওম্যান। এমন কোন কিছু নেই যে তিনি জানেন না। সকালে সুর্য ওঠার পর থেকে ক্লান্তিহীনভাবে রাত এগারোটা পর্যন্ত তিনি সংসারের জন্য খেটে যাচ্ছেন। কখনো ওনাকে ক্লান্ত হতে দেখিনি। কি রমজান, কি ঈদ, কি গ্রীষ্ম অথবা শীত, বর্ষা সব সময় দেখেছি ওনাকে কিছু না কিছু করতে। উনি অসুস্থ এজন্য আমার জীবনে এক বেলার জন্যও আমাদের চুলায় রান্না বন্ধ রয়েছে এরকম দিন আসেনি।

আমার মা কোনদিন আমার উপর বা আমাদের সংসারের উপর বিরক্ত হননি। কোন কিছু পাওয়া বা প্রতিদানের আশায় উনি ওনার সারাটা জীবন এই সংসারের জন্য ব্যয় করেছেন বলে আমার মনে হয়নি। জীবনে অনেক অনেক অপ্রাপ্তি আছে, অভাব আছে, অভিযোগ আছে কিন্তু কখনো এসব নিয়ে ওনাকে কষ্ট পেতে দেখিনি। যা কিনে দিয়েছি আমি অথবা আব্বু তাই ব্যাবহার করেছেন। যখন যা রান্না খেতে চেয়েছি তাই রান্না করেছেন কোনদিন এক বারের জন্যও বিলাসিতা করতে দেখিনি।

আমার মাকে আমি বলি স্মার্ট ওম্যান। এই বয়সেও উনি দারুনভাবে সব কিছু হ্যান্ডেল করতে পারেন। উনি খুব দারুন লিডার। নিজের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে সবকিছু নিজেরমত করে করতে পছন্দ করেন। আগে সবকিছু না পারলেও এখন দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়ে, আমাদের সব ভাইবোনকে পড়াশোনা করিয়ে, আমাকে শহরে রেখে উনি দুনিয়ার সব কিছুতে এক্সপার্ট হয়ে গেছেন। উনি সব খবরাখবর রাখেন, এখন সব ধরনের রান্না পারেন। আমি অবাক হই এই বয়সে উনি ওনার সারাদিন কাজ করেও দেশের সমস্ত খবর উনি রাখেন। উনি ক্রিকেট খেলা দেখেন, নাতনীদের সাথে কার্টুনও দেখেন আবার সিরিয়ালও দেখেন।

আমার মা ছোটবেলা থেকে আমাদের শাসক। আমরা তিন ভাইবোন আব্বুকে মোটেই ভয় পাইনা কিন্তু ছোটবেলা থেকে আম্মুকে বাঘের মত ভয় পাই। আমার মা খ্রিপ্ত বাঘের মত ভয় দেখিয়ে আমাদের শাসন করেছেন বলেই হয়তো আজকে আমরা তিন ভাইবোনই মানুষ হয়েছি। আমার মা ফুটন্ত পদ্মের মত ঝকঝকে সুন্দর, পবিত্র। তিনি মুরগীর বাচ্চার মত আমাদের আগলে রেখে বড় করেছেন। আমার মা চির সবুজ, মাঝেমধ্যে বাচ্চাদের মত। ভ্যালভ্যাল করে কাঁদে, উচ্চস্বরে হাসে, খুব রাগও করে।

আমার মাকে এখন আমরা আর ভয় পাইনা। আমরা এখন বড় হয়ে গেছি। আমরা এখন নিজেই নিজের সিদ্ধান্ত নিতে পারি। আমার মা এখনো আমাদের শাসন করার চেষ্টা করে। কিন্তু আমরা মাকে ধমক দিয়ে থামিয়ে দেই। মা চুপ হয়ে যায়। কিছু একটা ভাবে, কিছু একটা বলতে গিয়েও বলতে পারেনা। আবার নিজের কাজে মন দেয়। আবার আমাদের খাওয়ার জন্য ডাক দেয়। আমরা খুশিমনে আম্মুর হাতের রান্না খাই।

আমরা তিন ভাইবোনই আম্মুকে প্রচণ্ড ভালোবাসি। কিন্তু সেটা বোধহয় ওনার অবদানের তুলনায় অনেক কম। মা এমনই হয়, কোনদিন কিছু পাওয়ার আশা করেননা। ওনাকে আমি এখনো কিছুই দিতে পারিনি। কিন্তু এখনো উনি আমাকে দিয়েই যাচ্ছেন.. দিয়েই যাচ্ছেন।। জানি এই দিয়ে যাওয়াটা ওনার চোখ বন্ধ হওয়া ছাড়া থামবে না। পৃথিবীর কোন মা'ই থামে না। এজন্যই কিছু বলিনা, প্রতিদানও দিতে চাইনা। শুধু মাঝেমধ্যে ধমক দিয়ে থামিয়ে দেই। এত বেশি ভালোবাসার দরকার কি, এখন বড় হয়ে গেছি একটু কম ভালোবাসলেওতো পারে!

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৪:৪২

যামিনী সুধা বলেছেন:



সবার কাছে সবার মা ঐ রকমই; তবে, বাংগালীরা বিয়ে করলে ৮০ ভাগ মা বেশী বয়সে খুবই উপেক্ষিত হয়।

১২ ই মে, ২০২৫ রাত ৮:৫০

শামীম মোহাম্মাদ মাসুদ বলেছেন: সত্য কথা ভাই। শুভকামনা রইলো

২| ১২ ই মে, ২০২৫ রাত ৯:২১

ইয়া আমিন বলেছেন: "আমার মা—আমার পৃথিবী।
সারাদিন পরিশ্রম করে যান, একটুও ক্লান্তি নেই চোখে।
আমরা বড় হয়েছি, কিন্তু ওনার ভালোবাসা কমেনি।
আজও শুধু দিয়ে যান... বিনিময়ে কিছু চান না।
মা কখনো থামেন না, থামেন না বলেই তিনি 'মা'।"

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.