নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইদের শুভেচ্ছা

শামীম শাহ

শামীম আহমেদ

শামীম শাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

নকল হইতে সাবধান

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৮:৪৫

'নকল হইতে সাবধান’
এই লেখাটা নকল জিনিষের উপরও লেখা থাকে।

আসল জিনিষেও একই কথা লেখা থাকে।
তো,
কিভাবে নির্ণয় করবেন আসল নকল?
উপায় নেই। নকলে নকলে সয়লাব সারা দেশ।
সরকারীভাবে কঠোর কোনো ব্যাবস্থা না নেয়া পর্যন্ত এদেশে নকলবাজি চলবেই। যতদিন না মানুষের বিবেক মানুষকে সতর্ক করবে... আর নাহ্‌ এবার খ্যামা দে।

গরম মসলায় গরুর গোবর পাওয়া যাওয়ার পরও বাজারে গরম মসলা বিক্রি বন্ধ হয়নি।
বন্ধ হয়নি কারন খবরটি সীমিত সংখ্যক মানুষই জেনেছিলো।
সারাদেশের মানুষকে সতর্ক করার মানবিক দায়িত্ব কেউ নেয়নি।

জুতার আঠা দিয়ে তৈরী লাচ্ছা সেমাই পাওয়া গিয়েছিলো গত ঈদের বাজারে।
নকল সেমাইয়ের খবরতো পুরনো হয়ে গেছে। কারো জন্য এই খবরগুলো নতুনও হতে পারে। তাদের উদ্দ্যেশেই এই সতর্কবার্তা।
কুলসুন, আলাউদ্দিন, কিটকাট, মেহের আলী... আরো অনেক বাহারি নাম। পোড়া মবিলে ভাজা হচ্ছে এই চমকপ্রদ নামের নকল সেমাইগুলো।
এছাড়া জনপ্রিয় ব্রান্ডের সেমাইয়ের হুবহু নকল প্যাকেট তৈরী করে বাজারজাত করা হচ্ছে। র‍্যাব এবং ভ্রাম্যমান আদালত ইতোমধ্যে প্রায় ১০০ মন সেমাই জব্দ করে নকল উৎপাদকদের জেল জরিমানা করেছে।
নকলে নকল, তার উপর ওজনেও কম। অর্থাৎ দুইশ গ্রাম লেখা থাকলেও ওজন করে দেখা গেছে দেড়শ গ্রামের নিচে !!

আসুন জেনে নেয়া যাক আর কি কি নকল জিনিষের কারবার চলছে দেশেঃ
গতবছরের জুন ২৭ তারিখে র‍্যাবের হাতে ধরা পড়া আমিনুল ইসলাম নামে একব্যাক্তি পিটুনি খেয়ে স্বীকার করেছে নিজের ঘরে এন্টিবায়োটিক ওষুধ তৈরী করে দেশের বিভিন্ন ফার্মেসি আর হাসপাতালে সাপ্লাই দিতো সে। শুধুমাত্র মিডফোর্ড হাসপাতালেই প্রতি সপ্তাহে এক লাখ টাকার নকল ওষুধ সাপ্লাই দিতো হারামী আমিনুল।

বাংলাদেশে স্যামসাং কোম্পানীর কোনো মেমোরি কার্ড নেই। অথচ বাজারে স্যামসাং-এর ৪ জিবি, ১৬ জিবি, ৩২ জিবির মেমোরি কার্ড পাওয়া যাচ্ছে। মেমোরি কার্ডের উপর নিখুঁতভাবে স্যামসাং-এর হলোগ্রাম বসিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশী নকল আইটি বিজ্ঞানীরা।
সেদিন একজনের পোস্টে দেখলাম তিনি গুলিস্তান থেকে মাত্র ১০০ টাকায় ৩২ জিবি USB ফ্ল্যাশ ড্রাইভ কিনে বাসায় গিয়ে কম্পিউটারে সেট করে দেখেন চলছেনা। পরে ড্রাইভটি খুলে দেখলেন ভেতরে কিছুই নেই... খালি কাভারটাই আছে !
জিঞ্জিরার ম্যানুফেকচারার-রা USB ড্রাইভের পিনটা সেট করে রেখেছে ভেতর থেকে।

ঢাকার গুলিস্তান থেকে সস্তায় ইলেকট্রনিক্স জিনিষ কিনলে এমন ধোকা খেতে হবে, এই গোবেচারা নিশ্চয়ই আগে থেকে জানতোনা।

নকল ডিমঃ
ডিমের মুল্যে উর্ধগতি দেখে কিছু অসাধু লোক রাসায়নিকভাবে ডিম তৈরী করে বাজারে ছড়িয়ে দিয়েছে। খবরটি পুরনো হলেও কারো কারো জন্য নতুনও হতে পারে।
এসব নকল ডিম আসল ডিমের সাথে মিশিয়ে ফেলায় আসল ডিম চেনার উপায় নেই।
সাধারণ মানুষের সাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া উচিত সরকারের।

নকল জুসঃ
রাজধানীর গুলশানে মেয়াদোত্তীর্ণ ও নকল জুস বিক্রি করার দায়ে গত ঈদে তিন হাজার লিটার ফ্রুট জুস ধ্বংস ও তাহের এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মালিককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে বিএসটিআইয়ের মোবাইল কোর্ট।
এই ঈদেও এর ব্যতিক্রম হবেনা। সুতরাং নিজে সতর্ক হউন, আপনার আশেপাশের মানুষদেরও সতর্ক করুন।
আমার মতে ম্যাঙ্গো জুস বর্জন করাটা সাস্থ্যের জন্য মঙ্গল।
কারন দেশে সাস্থ্যসম্মত কোনো ম্যাঙ্গু জুস তৈরী হয়না।

প্রাসঙ্গিক আরেকটি বিষয় তুলে ধরতে চাই। সেটা হলো নকল সার্টিফিকেটঃ
নীলক্ষেতের বাকুশাহ্‌ মার্কেট আর গাউসুল আজম মার্কেটে তৈরী হয় যাবতীয় নকল সার্টিফিকেট। গাড়ির নকল ড্রাইভিং লাইসেন্স, বিভিন্ন শিক্ষাবোর্ডের স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট, এম বি বি এস ডাক্তারের অফিসিয়াল স্ট্যাম্প সাইনসহ মেডিকেল সার্টিফিকেট, মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট, জাতীয় পরিচয়পত্র ইত্যাদি।

সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, এই নকল কারখানায় স্বল্পমুল্যে পাওয়া যাচ্ছে বুয়েটের সার্টিফিকেট !!
শুধুমাত্র নীলক্ষেত না, দেশের প্রায় সব জেলাতেই চলছে ভুয়া সার্টিফিকেটের রমরমা বানিজ্য।
সার্টিফিকেট আছে কিন্ত খোমায় ঘিলু নেই… কি লাভ এই নকলবাজিতে !

পরীক্ষায় ফেল করে কিংবা নকলবাজি করে কোনোমতে পাশ হয়ে যখন কোথাও চাকরি পাওয়া যায়না, তখনই এরা আশ্রয় নেয় নকল পথের।
যোগ্যতার ক্ষেত্রে কি নকলবাজি চলেরে...?

রবি ঠাকুর বলেছিলেন,
যাহারা কেবল নকল করিয়া শেখে, তাহারা নকলের বাহিরে কিছুই দেখিতে পারে না...

নকল কসমেটিক্সঃ
একলোক সন্ধ্যেবেলায় বাজার শেষে বাড়ি ফেরার পথে তার স্ত্রী ফোন দিয়ে জানালো 'ফেয়ার অ্যান্ড লাভলী' ক্রিম আনতে হবে। বেচারা স্ত্রীর ভয়ে অনেকদুর থেকে ফিরে এসে কসমেটিক্স দোকান থেকে একটা ফেয়ার অ্যান্ড লাভলী ক্রিম কিনে নিয়ে বাড়ি গেলো।
ঘন্টাখানেক পর ফিরে এসে দোকানীর সাথে সেকি তুমুল ঝগড়া।
ঘটনাটা শোনার জন্য কৌতুহলবশত একটু এগিয়ে গেলাম।
জানা গেলো আসল ক্রিমের টাকা নিয়ে নকল ক্রিম দেয়া হয়েছে।
দেখতে অবিকল ফেয়ার অ্যান্ড লাভলী টিউব ক্রিমের মতই।
শুধু নামটা ভিন্ন। একটু কাছে গিয়ে পড়ে দেখি ওটার উপরে লেখা- লেয়ার অ্যান্ড কাবলী !

ঈদের বাজারে কসমেটিক্স কেনার ক্ষেত্রেও আপনাকে সাবধান হতে হবে।
জনপ্রিয় কসমেটিক্স কোম্পানীগুলোর নাম আর হলোগ্রাম ব্যাবহার করে পঁচা গুদামে তৈরী হচ্ছে স্কিনকেয়ার কসমেটিক্স।

পাবনার চাটমোহরে নকল সোনা বিক্রেতাকে গনধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছে পাবলিক।
ভাবা যায়... স্বর্নের মতো দামী ধাতুতেও চলছে নকলবাজি !

পরিশেষে বলি,
'নকল হইতে সাবধান' লেখা পন্যক্রয়ে সাবধান হউন...

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.