নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইদের শুভেচ্ছা

শামীম শাহ

শামীম আহমেদ

শামীম শাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

শ্রেষ্ঠ অবস্থানে থাকার গর্ব

০২ রা মার্চ, ২০১৭ রাত ১:৪৩

সারা বিশ্বে বসবাসের অযোগ্য নোংরা ২৫টি শহরের সেরা দশের অবস্থানে আছে বাংলাদেশের ঢাকা শহর।

বিশ্বজরিপের কোনো এক তালিকায় সেরা অবস্থানে থাকাটাও কিন্ত গর্বের বিষয় (!)।


বাংলাদেশে রাজধানী ঢাকা।
বসবাসের অযোগ্য এই শহরে দেশের যোগ্য নাগরিকদের বসবাস। জাতিসংঘের জরিপ অনুযায়ী বসবাসের অযোগ্য সেরা দশটি শহরের অন্যতম হিসেবে ঢাকা শহরকে উল্লেখ করা হয়েছে।

নিকটবর্তী দেশ শ্রীলংকার রাজধানী কলম্বো। সাউথ এশিয়ান দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন শহর। অথচ শ্রীলংকার অর্থনৈতিক অবস্থা বাংলাদেশের তুলনায় তেমন উন্নত নয়।
তাদের মানসিকতা পরিচ্ছন্ন। আমাদের মানসিকতা পরিচ্ছন্ন নয়।

পুরো রাজধানীটাই একটা বড় ডাস্টবিন।
যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা, যানবাহন সংকট, শব্দদূষণ, বায়ু দূষণ, পানি দূষণ, মশার উপদ্রব, ভয়াবহ যানজট, পয়ঃনিষ্কাশনের করুণ অবস্থা, জলাবদ্ধতা, রাস্তাঘাটের করুণ দশা প্রভৃতি সমস্যায় ঢাকা নগরী বিপর্যস্ত। এ অবস্থায় ঢাকা নগরীতে জীবনযাপন যে সত্যিই ঝুঁকিপূর্ণ তা কারো অজানা নয়।

এই নোংরা শহরে বসবাস করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বি এন পির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় পরিবেশমন্ত্রী। সরকার এবং বিরোধীদলের বড় বড় মন্ত্রী এমপিরা।
দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দলের উচ্চপদস্থ নেতানেত্রীরা। দেশের নামকরা সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এই শহরেই। নামিদামী হাসপাতাল, হোটেল রেস্তোঁরা, শপিং মল, ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান আরো কত কী...

রাজধানী ঢাকার অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত ধানমন্ডির রাস্তার পাশে ছড়ানো-ছিটানো ময়লা-আবর্জনা দেখে মনে হবে কোনো বস্তিতে দাঁড়িয়ে আছেন আপনি।

যাত্রাবাড়ি মোড় থেকে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল পর্যন্ত রোডের দুইপাশে আপাতদৃষ্টিতে তাকালে ময়লার ভাগাড় মনে হবে।

বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাশ দিয়েই অতিক্রম করেছে শাহবাগ-ফার্মগেট রাস্তাটি। এই রাস্তা দিয়েই প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে। কিন্তু ইদানীং হাসপাতালের পাশ দিয়ে হেঁটে যেতে পারে এমন সাধ্য কারো নেই। রীতিমতো মনুষ্য বর্জ্যে ও দুর্গন্ধে এ এলাকায় টেকা দায়। মানুষ যেখানে দুর্গন্ধে দাঁড়াতেই পারে না সেখানে চিকিৎসাসেবা নেবে কী করে?

কোথাও কোথাও ডাস্টবিন থেকে উপচে ময়লা আবর্জনা ছড়িয়ে পড়ছে রাস্তায়, মানুষের চলাচল স্থানে। কোতোয়ালি, বংশাল, চকবাজার ও মিরপুরের অবস্থা মূলত এইরকমই। আবার ময়লাবোঝাই গাড়িগুলো যখন এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ময়লা বহন করে, তখন চলন্ত গাড়ি থেকে ময়লা পড়ে রাস্তায়, ছড়িয়ে যায় নানান জায়গায়। কিন্তু সেদিকে নজর নেই কারো।

শুধু সিটি কর্পোরেশানকে দোষারোপ করলেই চলবেনা। আমরা নিজেরা কতটা সচেতন?
শহরকে নোংরা কারা করছে? আমরাইতো নাকি !!
বসবাসের অযোগ্য সেরা দশ শহরের অন্যতম শহরে বাস করছি। এই লজ্জা কি শুধুই সরকারের নাকি আমাদের সবার?

বাংলাদেশের নোংরা রাজনীতির মতো দেশের মানুষের মানসিকতাও নোংরা হয়ে গেছে আসলে।
নোংরা মানসিকতা নিয়ে নোংরা পরিবেশে থাকার অভ্যাস হয়ে গেছে বাঙ্গালীদের।
তবুও আমরা ডিজিটাল।

টেলিভিশনের টক শোতে দেশের সমস্যা নিয়ে কথা বলা লোকের অভাব নেই। কিন্ত বাস্তবে দেশের জন্য নিজের কিছু ত্যাগ করতে রাজী নেই কেউই। বিভিন্ন চ্যানেলে প্রতিদিনের টক শো গুলোতে বড় বড় উপদেশ আর বুদ্ধির সয়লাব।
দেশের উন্নতি চায় সবাই।
পর্দার আড়ালে এদের অধিকাংশই নানান অপরাধকর্মের সাথে জড়িত।

মাথায় আবর্জনার স্তুপ নিয়ে আমরা দিনবদলের বুলি আওড়াই। এমন ডিজিটাল জাতি পৃথিবীর অন্য কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবেনা। দুর্নীতিতে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েও আমরা লজ্জিত হইনা। বরং আমরা এটাকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে সরকারের সমালোচনায় মেতে উঠি।
বিশ্বের সেরা নোংরা শহরে বাস করি। তাতেও আমাদের লজ্জা লাগেনা।
নিজেরাই নোংরা করি, তারপর এক অন্যকে দোষারোপ করি।

রাস্তার পাশে আবর্জনার স্তুপ দেখে নাকে রুমাল চেপে রাস্তা পার হচ্ছি। পার হয়েই গালি দিচ্ছি। কাকে গালি দিচ্ছি?
নিজের বিবেককে কখনো প্রশ্ন করিনা,
আমি কতটুকু সঠিক কাজ করছি?
আমি কতটুকু সৎ পথে আছি?
আমি দেশের জন্য কতটুকু ভাবছি?
আমি দেশের জন্য কি করছি???
চা খেয়ে টি ব্যাগটা কোথায় ছুঁড়ে ফেলছি?
পেপসি ম্যারেন্ডা খাওয়া শেষে বোতলটা ডাস্টবিনে ফেলেছি তো?
রাস্তায় আমার ছুঁড়ে ফেলা কলার খোসাটা কারো বিপত্তির কারন হবেনা তো?

নাহ্‌ আমরা এসব ভাবিনা। কেউই ভাবিনা। দেশ গোল্লায় যাক... জন্ম থেকেই আমরা স্বার্থপর জাতি।
এই পঁচা দুর্গন্ধময় শহরে আমাদের জন্ম। দুর্গন্ধ শুঁকে শুঁকে বড় হয়েছি আমরা। নোংরা আবর্জনা দেখলে আমাদের বিবেকে কোনো প্রভাব পড়েনা। শরীরের সাথে সয়ে গেছে।
বর্তমান ঢাকার যে অবস্থা,
পঞ্চাশ বছর পরও নোংরা শহরের তালিকা থেকে মুক্তি পাবে বলে মনে হয়না..

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা মার্চ, ২০১৭ রাত ১:৫৩

ওমেরা বলেছেন: আসলে ঢাকার লোকসংখ্যা খুব বেশী আর জনগন সচেতন না হলে সরকারের একার পক্ষে এটা কখনো সম্ভব না ।

২| ০২ রা মার্চ, ২০১৭ রাত ২:০০

দ্যা ফয়েজ ভাই বলেছেন: আসলে আমাদের দৌড় শুধু কলমের আগা পর্যন্ত।সঠিক একজন মানুষের অভাবে আমরা জনসচেতনতা তৈরির আগেই খেই হারিয়ে ফেলছি।কারণ নিজেরাই স্পচেতন নই। :(

৩| ০২ রা মার্চ, ২০১৭ রাত ২:০৪

মিঃ আতিক বলেছেন: দেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে ভাই, রাস্তা দিয়ে হাঁটতে না পারলে ফ্লাইওভার এর উপর দিয়ে হাঁটেন। তবুও সরকার কে কিছু বইলেন না।

৪| ০২ রা মার্চ, ২০১৭ রাত ৩:০৬

কালীদাস বলেছেন: একটা ছোট আয়তনের শহর এত লোক আর এত অনিয়মের পরও যে টিকে আছে সেটাই তো আধুনিক সপ্তাশ্চার্যের লিস্টে ঢুকে যাওয়ার কথা।

৫| ০২ রা মার্চ, ২০১৭ ভোর ৪:১০

চাঁদগাজী বলেছেন:


কেহ ঢাকাকে নিজের মনে করে না, নিজের মনে করলে ময়লা ফেলতো না চারিদিকে

৬| ০২ রা মার্চ, ২০১৭ সকাল ৮:৪৭

শামীম শাহ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর মতামতের জন্য।
শুধু ঢাকা শহরই নয়, দেশের প্রত্যেকটা জেলাশহরই তো নোংরা।
আর ফয়েজ ভাই বলেছেন 'আমাদের দৌড় শুধু কলমের আগা পর্যন্তই'
উঁহু, কয়েকবছর আগে একদল বিদেশী নাগরিক ঢাকার ময়লা আবর্জনা পরিস্কার করেছেন নিজ হাতে। তাঁদের দেখাদেখি অনেকেই পরিচ্ছন্ন ঢাকার উদ্যেগ নিয়ে রাস্তায় নেমেছিলো।

চাঁদগাজী ভাই, কেউ উদ্যেগ নিতেই হবে।
ওমেরা, কালীদাস, সরকারের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে আমরা বসে থাকতে পারিনা।
সিটি কর্পোরেশনের দেয়া ডাস্টবিনগুলো চুরি হয়ে গেছে। আমাদের নীতি নৈতিকতার অবক্ষয় কতটা হয়েছে, এই উদাহরণ থেকেই অনুমেয়।

৭| ০২ রা মার্চ, ২০১৭ সকাল ১০:২৮

আমি স্বপ্নদ্রষ্টা বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট ।
উপদেশ - আমরা কেউ ময়লা ফেলবনা।
প্রশ্নঃ ময়লা কোথায় ফেলব? উত্তরঃ ডাস্টবিনে।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশে তার উপযুক্ত ব্যবস্থা কি আছে ? আছে। /:) ????????
প্রশ্নঃ ময়লা ম্যানেজম্যান্ট কী? ?????/
ময়লার প্রকারভেদ সম্পর্কে আমরা সবাই জানি???????????
# পোড়ানো যায় এমন ময়লা ( যা নির্দিষ্ট জায়গায়, নির্দিষ্ট সময়ে পোড়ালে পরিবেশের কম ক্ষতি হয় )
# পোড়ানো যায়না এমন ময়লা ( যা পোড়ালে পরিবেশের মারাত্নক ক্ষতি হয় , রিসাইকেল করতে হয় )
# পচনশীল ময়লা ( যা সার উৎপাদনের কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে )
এই প্রকারের ময়লা মানুষের জন্য সাময়িক অসুবিধার সৃষ্টি করে ।
এখন আমাদের কাজ হলঃ
১।পাঠ্য পুস্তকে এই ময়লা ম্যনেজম্যেন্ট অন্তর্ভুক্ত করা ,
২।প্রচার চালানো ,
৩।রিসাইকেল করার কারখানা তৈরি কারা ।
জনগণ যদি তিন প্রকারের ময়লা আলাদা আলাদা প্যাকেট করে নির্দিষ্ট স্থানে রাখতে পারে তাহলে কর্তৃপক্ষ তা ম্যানাজম্যান্ট কতে সহজ হবে ।
আমার জাপানে থাকার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি , জাপানে এভাবেই করে থাকে ।
আসুন আমরা সবাই মিলে কাজ করি দেশটা সুন্দর করি ।
আমরাই পারব।

০২ রা মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:৪৪

শামীম শাহ বলেছেন: অনেক সুন্দর কথা বললেন ভাই। আপনার মন্তব্যগুলো থেকে ভাবনা নিয়ে নতুন আর্টিকেল লিখবো

৮| ০২ রা মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৫

লর্ড অফ দ্য ফ্লাইস বলেছেন: ঢাকার বাইরে বিদ্যুৎ, গ্যাসের বেহাল অবস্থা। এই সমস্যাটা দূর করতে পারলে ঢাকায় মানুষের চাপ অনেক কমে যেত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.