![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা।
বসবাসের অযোগ্য এই শহরে দেশের যোগ্য নাগরিকদের বসবাস। জাতিসংঘের জরিপ অনুযায়ী বসবাসের অযোগ্য সেরা দশটি শহরের অন্যতম হিসেবে ঢাকা শহরকে উল্লেখ করা হয়েছে।
নিকটবর্তী দেশ শ্রীলংকার রাজধানী কলম্বো। সাউথ এশিয়ান দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন শহর। অথচ শ্রীলংকার অর্থনৈতিক অবস্থা বাংলাদেশের তুলনায় তেমন উন্নত নয়।
তাদের মানসিকতা পরিচ্ছন্ন। কারন পরিচ্ছন্নতার ভাবনা পরিচ্ছন্ন মানসিকতা থেকেই আসে।
আপাতদৃষ্টিতে পুরো রাজধানীটাকেই একটা বড় ডাস্টবিন বলা চলে।
যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা, যানবাহন সংকট, শব্দদূষণ, বায়ু দূষণ, পানি দূষণ, মশার উপদ্রব, ভয়াবহ যানজট, পয়ঃনিষ্কাশনের করুণ অবস্থা, জলাবদ্ধতা, রাস্তাঘাটের করুণ দশা প্রভৃতি সমস্যায় ঢাকা নগরী বিপর্যস্ত। এ অবস্থায় ঢাকা নগরীতে জীবনযাপন যে সত্যিই ঝুঁকিপূর্ণ তা কারো অজানা নয়।
এই নোংরা শহরে বসবাস করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বি এন পির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় পরিবেশমন্ত্রী। সরকার এবং বিরোধীদলের বড় বড় মন্ত্রী এমপিরা।
দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দলের উচ্চপদস্থ নেতানেত্রীরা। দেশের নামকরা সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এই শহরেই। নামিদামী হাসপাতাল, হোটেল রেস্তোঁরা, শপিং মল, ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান আরো কত কী...
রাজধানী ঢাকার অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত ধানমন্ডির রাস্তার পাশে ছড়ানো-ছিটানো ময়লা-আবর্জনা দেখে মনে হবে কোনো বস্তিতে দাঁড়িয়ে আছেন আপনি।
যাত্রাবাড়ি মোড় থেকে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল পর্যন্ত রোডের দুইপাশে আপাতদৃষ্টিতে তাকালে ময়লার ভাগাড় মনে হবে।
বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাশ দিয়েই অতিক্রম করেছে শাহবাগ-ফার্মগেট রাস্তাটি। এই রাস্তা দিয়েই প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে। কিন্তু ইদানীং হাসপাতালের পাশ দিয়ে হেঁটে যেতে পারে এমন সাধ্য কারো নেই। রীতিমতো মনুষ্য বর্জ্যে ও দুর্গন্ধে এ এলাকায় টেকা দায়। মানুষ যেখানে দুর্গন্ধে দাঁড়াতেই পারে না সেখানে চিকিৎসাসেবা নেবে কী করে?
কোথাও কোথাও ডাস্টবিন থেকে উপচে ময়লা আবর্জনা ছড়িয়ে পড়ছে রাস্তায়, মানুষের চলাচল স্থানে। কোতোয়ালি, বংশাল, চকবাজার ও মিরপুরের অবস্থা মূলত এইরকমই। আবার ময়লাবোঝাই গাড়িগুলো যখন এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ময়লা বহন করে, তখন চলন্ত গাড়ি থেকে ময়লা পড়ে রাস্তায়, ছড়িয়ে যায় নানান জায়গায়। কিন্তু সেদিকে নজর নেই কারো।
শুধু সিটি কর্পোরেশানকে দোষারোপ করলেই চলবেনা। আমরা নিজেরা কতটা সচেতন?
শহরকে নোংরা কারা করছে? আমরাইতো নাকি !!
বসবাসের অযোগ্য সেরা দশ শহরের অন্যতম শহরে বাস করছি। এই লজ্জা কি শুধুই সরকারের নাকি আমাদের সবার?
বাংলাদেশের নোংরা রাজনীতির মতো দেশের মানুষের মানসিকতাও নোংরা হয়ে গেছে আসলে।
নোংরা মানসিকতা নিয়ে নোংরা পরিবেশে থাকার অভ্যাস হয়ে গেছে বাঙ্গালীদের।
তবুও আমরা ডিজিটাল।
টেলিভিশনের টক শোতে দেশের সমস্যা নিয়ে কথা বলা লোকের অভাব নেই। কিন্ত বাস্তবে দেশের জন্য নিজের কিছু ত্যাগ করতে রাজী নেই কেউই। বিভিন্ন চ্যানেলে প্রতিদিনের টক শো গুলোতে বড় বড় উপদেশ আর বুদ্ধির সয়লাব।
দেশের উন্নতি চায় সবাই।
পর্দার আড়ালে এদের অধিকাংশই নানান অপরাধকর্মের সাথে জড়িত।
মাথায় আবর্জনার স্তুপ নিয়ে আমরা দিনবদলের বুলি আওড়াই। এমন ডিজিটাল জাতি পৃথিবীর অন্য কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবেনা। দুর্নীতিতে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েও আমরা লজ্জিত হইনা। বরং আমরা এটাকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে সরকারের সমালোচনায় মেতে উঠি।
বিশ্বের সেরা নোংরা শহরে বাস করি। তাতেও আমাদের লজ্জা লাগেনা।
নিজেরাই নোংরা করি, তারপর এক অন্যকে দোষারোপ করি।
রাস্তার পাশে আবর্জনার স্তুপ দেখে নাকে রুমাল চেপে রাস্তা পার হচ্ছি। পার হয়েই গালি দিচ্ছি। কাকে গালি দিচ্ছি?
নিজের বিবেককে কখনো প্রশ্ন করিনা,
আমি কতটুকু সঠিক কাজ করছি?
আমি কতটুকু সৎ পথে আছি?
আমি দেশের জন্য কতটুকু ভাবছি?
আমি দেশের জন্য কি করছি???
চা খেয়ে টি ব্যাগটা কোথায় ছুঁড়ে ফেলছি?
পেপসি ম্যারেন্ডা খাওয়া শেষে বোতলটা ডাস্টবিনে ফেলেছি তো?
রাস্তায় আমার ছুঁড়ে ফেলা কলার খোসাটা কারো বিপত্তির কারন হবেনা তো?
নাহ্ আমরা এসব ভাবিনা। কেউই ভাবিনা। দেশ গোল্লায় যাক... জন্ম থেকেই আমরা স্বার্থপর জাতি।
এই পঁচা দুর্গন্ধময় শহরে আমাদের জন্ম। দুর্গন্ধ শুঁকে শুঁকে বড় হয়েছি আমরা। নোংরা আবর্জনা দেখলে আমাদের বিবেকে কোনো প্রভাব পড়েনা। শরীরের সাথে সয়ে গেছে।
বর্তমান ঢাকার যে অবস্থা,
পঞ্চাশ বছর পরও নোংরা শহরের তালিকা থেকে মুক্তি পাবে বলে মনে হয়না
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৪:৪৬
রাজীব নুর বলেছেন: হুম।