![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঈদ চলে গেছে।
ঈদের সাথে সাথে 'ইদ' বানান বিতর্কের ইস্যুও চাপা পড়েছে। আবার আগামী ঈদে পুনর্জীবিত হবে অসমাপ্ত ইস্যুটি। যতদিন না সঠিক জবাবটা সবার কাছে না পৌঁছাবে, ততদিন এই বিষয়ে আলোচনা সমালোচনা চলতেই থাকবে।
অথচ এটা খুব বড় কোনো সমস্যা নয়। বাংলা একাডেমি এর আগেও অনেকগুলো শব্দে বানানের পরিবর্তন করেছে। তখন কেউ তা নিয়ে নাক গলায়নি।
ধর্মের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকায় এটি (ইদ) আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়েছে।
কেউ বুঝে বিতর্কে জড়িয়েছে, কেউবা না বুঝেই।
আমি ফেসবুকে একজনের স্ট্যাটাস দেখলাম তিনি 'ইদ' লিখে শুভেচ্ছা জানানো ব্যক্তিদের অশালীন ভাষায় সমালোচনা করছেন। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী 'ঈদ'কে 'ইদ' বানানে লেখা মানে বাঙ্গালিদের হাজার বছরের ধর্মীয় সংস্কৃতিতে আঘাত হানার শামিল। (!)
যখন দুটো শব্দের আলাদা করে আভিধানিক ব্যাখ্যা জানতে চাওয়া হলো, তিনি নীরব হয়ে গেলেন। অর্থাৎ এ বিষয়ে তাঁর বিন্দুমাত্র ধারনা নেই।
একটা আলোচিত সমালোচিত বিষয়ে যথেষ্ট ধারনা না থাকা স্বত্ত্বেও আমরা বিতর্কে জড়াই। অবস্থাটা এমন, 'সবাই যেহেতু বলছে' আমি বাদ যাব কেন !
সেজন্যই বোধহয় আমরা মাঝে মাঝে গর্ব করে শ্রেষ্ঠ জাতির দাবী তুলি।
কয়েকদিন আগে ফেসবুকে একলোক কেকা ফেরদৌসির রেসিপিকে বিদ্রুপ করে পোস্ট দিলেন। একজন কমেন্ট বক্সে জিজ্ঞেস করলেন কে এই কেকা ফেরদৌসি?
তিনি কি করেন, কোথায় থাকেন, পরিচয় কী?
জবাবে পোস্টদাতা জানালেন আমি তাকে চিনিনা। শুনেছি তিনি নুডল্স দিয়ে আঁচার বানান।
এবার ভাবুন আমাদের সমালোচক মশাইদের কান্ডজ্ঞান কেমন!
ইদ এবং ঈদ কোনোটাই সঠিক নয়। এটি একটি আরবি শব্দ। আরবি ভাষার যথাযথ উচ্চারণের জন্য যথেষ্ট শব্দভান্ডার এবং নিয়ম বাংলা ব্যকরণে নেই।
"ঈদ" আরবি আ'ইন এবং ইয়া দ্বারা গঠিত। যার সঠিক উচ্চারণ শুধুমাত্র আরবি ভাষা জানা ব্যক্তিরাই করতে পারবেন। বাংলা একাডেমি দেশীয় ভাষায় ঈদ লেখার নিয়মের কথা জানিয়েছেন মাত্র।
আরবিতে এক আলিফ, তিন আলিফ এবং চার আলিফ টানের নিয়ম রয়েছে। আমার জানামতে বাংলায় এমন কোনো বর্ণ নেই যা তিন আলিফ এবং চার আলিফ টান বর্ণনা করে।
সেজন্য বাংলায় কোরআন মজিদ পড়া অনুচিত। আল কোরআন সঠিক তাজবিদের সঙ্গে না পড়লে অর্থের পরিবর্তন হতে পারে।
বিদেশি ভাষাকে বাংলায় লিখতে দীর্ঘ ঈ-কার ব্যবহৃত হবেনা। হোক না সেটা আরবি ইংরেজি কিংবা অন্যকোনো ভাষা। একই সংস্করণে কয়েকটি নির্দিষ্ট বিষয়ে 'ঈ' কার এর পরিবর্তে 'ই' কার ব্যবহারের নিয়ম করা হয়েছে।
দেশী(দেশি), বিদেশী(বিদেশি) শব্দের বেলায় মনুষ্যেতর জীব, বস্তু, গুণ, ভাব ও কর্ম-বাচক শব্দের এবং দ্বিরাবৃত্ত শব্দের শেষে 'ই' হবে, 'ঈ' হবে না। যেমন কাঠবিড়ালী-কাঠবিড়ালি, বাড়ী- বাড়ি, গাড়ী-গাড়ি।
মনে রাখবেন জাতি ও ভাষার নামের শেষে ই-কার ব্যবহৃত হয়।
বাংলাদেশী, বাঙালী, ইংরেজী, আরবী, জাপানী, ইহুদী/ বাংলাদেশি,বাঙালি, ইংরেজি, আরবি, জাপানি, ইহুদি... ইত্যাদি।
অনেকে নামের আগে মোহাম্মদ লেখার সময় মোঃ লিখে থাকেন।
একইভাবে ডাক্তার/ডক্টরকে সংক্ষেপে ডঃ লিখে থাকেন যা সঠিক নয়।
আসলে বিসর্গ (ঃ) একটি বর্ণ, সংক্ষেপচিহ্ন নয়। ইংরেজির মতো বাংলাতেও একবিন্দু (.) কে সংক্ষেপণের চিহ্ন হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। সংক্ষেপনের সময় বিসর্গ ব্যবহার করা ভুল।
বিসর্গ ব্যবহার করলে এগুলোর উচ্চারণ হয়- মোহ্/মুহ্/ডাহ্/ডহ্। সুতরাং বিসর্গ পরিহার করে লেখা উচিত মো./ মু./ ডা./ ড. প্রভৃতিরূপে।
একইভাবে ক্রমশঃ , প্রধানতঃ , মূলতঃ , সাধারণতঃ প্রভৃতি বানান এভাবে হবে- ক্রমশ, প্রধানত, মূলত, সাধারণত। পদান্তে বিসর্গ হবেনা।
প্রাণী, শ্রেণী, মন্ত্রী, শশী প্রভৃতি বানানে ঈ-কার ব্যবহার করা হলেও এগুলো যখন সমাসবদ্ধ পদ হিসেবে বসে তখন ঈ-কারের স্থলে ই-কার হয়।
যেমন: প্রাণিবিজ্ঞান, মন্ত্রিসভা, শশিকর, শ্রেণিসমেত, শ্রেনিবিভাগ ইত্যাদি।
অনেকে 'কি' এবং 'কী' এর ব্যবহারে জড় পাকিয়ে ফেলেন। দুটোর আলাদা অর্থগত পার্থক্য রয়েছে।
পার্থক্যটা হচ্ছে- 'কী' দ্বারা প্রশ্ন করলে তার উত্তর অবশ্যই ভাষার ব্যবহারে দিতে হবে।
ইশারায় নয়।
কিন্তু 'কি' দ্বারা প্রশ্ন করা হলে তার উত্তর শুধু মাথা নেড়েই দেয়া যায়।
অর্থাৎ হ্যাঁ বা না-এর মাধ্যমে। কারন এটি বস্তবিশেষ প্রশ্ন নয়।
যেমন- যদি প্রশ্ন করা হয়, খেয়েছেন কি?
এর উত্তর হ্যাঁ বা না হবে।
আর যদি প্রশ্ন এভাবে করা হয়, খেয়েছেন কী?
এর উত্তর হবে ভাত মাছ ডাল মাংস ইত্যাদি। অর্থাৎ যা খেয়েছেন সেটার বর্ণনা দিতে হবে।
বিদেশি শব্দে ‘ন’ ও ‘স’ ব্যবহৃত হয়। যেমন : ট্রেন, জাপান, জার্মানি, কোরান, পাকিস্তান, টেন্ডার, কিন্ডার, মাস্টার, স্টুডিও, স্টুডেন্ট, ফটোস্ট্যাট প্রভৃতি। এক্ষেত্রে কেউ কেউ 'ণ' এবং 'ষ' এর ব্যবহার করে থাকেন, যা ভুল।
'ইদ' বানানটি বাংলা একাডেমি ব্যবহারিক বাংলা অভিধানের পরিমার্জিত সংস্করণ ২০০০ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত ছিল। সম্প্রতি বিষয়টা কেউ আলোচনায় নিয়ে এসেছে। আর এই নিয়ে শুরু হয়েছে তুলকালাম কান্ড!
আসলে বিদেশি ভাষার ব্যবহার অনেকটা ব্যক্তির উচ্চারণের উপর নির্ভর করে।
অনেকে চাইলেও জন্মগত সমস্যার কারনে শব্দের সঠিক উচ্চারণ করতে পারেন না।
ডাক্তার জাকির নায়েক আরবি বর্ণ আ'ইন এবং হা' এর উচ্চারণ ঠিকভাবে করতে পারেন না। এর অর্থ এই নয় যে তিনি অজান্তে ভুল উচ্চারণ করছেন। আসলে তিনি চাইলেও তা পারছেন না।
নোয়াখালী, কুমিল্লা, ফেনী, লক্ষ্মীপুরসহ চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জেলার আঞ্চলিক ভাষা প্রায় কাছাকাছি।
'প' 'চ' বর্ণদ্বয়ের উচ্চারণ যথাক্রমে 'ফ' এবং 'স' এর মতো হয়। এছাড়া 'ঘ' এবং 'জ' এর উচ্চারন যথাক্রমে 'গ' এবং 'য' এর মত হয়। এসব অঞ্চলে চানাচুরকে বলা হয় সনাসুর।
সিলেট জেলায়তো 'প' এর ব্যবহারই নেই!
এছাড়াও সিলেটে 'ক' এবং খ, 'গ' এবং ঘ, 'ত' এবং থ, 'দ' এবং 'ধ' এসব বর্ণের উচ্চারণগত কোন তফাৎ নেই। ক্ষেত্র বিশেষে 'খ' এর উচ্চারণ এমন ভাবে করা হয়ে থাকে যা প্রকৃত বা জন্মগত সিলেটি না হলে তার পক্ষে উচ্চারণ করা খুবই কষ্টসাধ্য....
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে জুন, ২০১৭ সকাল ১০:৩৫
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: এই লেখাটি তো আপনার না ভাই। যার লেখা তার নাম দিয়ে দিতেন। অথবা লিঙক কিছুই করেন নাই। এটা অন্যায়। কার্টেসি দেন।
এটা রবিউস সানি দাদার লেখা ফেইসবুকে।