নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ক খ গ

শামসুদ্দীন হাবিব

আমি অতি সাধারন একজন মানুষ,নিজকে নিয়ে খুব বেশি প্রত্যাশা নাই।পেশায় টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার,একসময় নাটকে ক্যামেরার পেছনে কাজ করেছি।টুকটাক লেখালেখি করি।হাসতে ভালোবাসি,ভালোবাসি হাসাতে।এই তো।

শামসুদ্দীন হাবিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

আসুন আমরা পাগল হয়ে যাই (দ্বিতীয় পত্র)

০৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১:০৮

প্রথম পত্র আকারে বড় হওয়ায় আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি,আপনারা হয়ত পড়তে গিয়ে ধৈর্য হারিয়ে ফেলেছেন,আপনারা আমার কাছে এক কাপ চায়ের দাবীদার,যারা ধুমপান করেন তারা বেনসন(লাল/সাদা)।কারন এই লেখাটা পড়তে গিয়ে আপনাদের তেষ্টা পেয়েছে।সাক্ষাতে পুষিয়ে দেব।
শিক্ষাঃ
আগেই বলেছি এই পরিবারের ছোট মেয়ে ক্লাস টেনে পড়ে বিজ্ঞান বিভাগে।ম্যাথ,ফিজিক্স,ক্যামিষ্ট্রি,বায়োলজী,ইংরেজী তার পাঠ্য বিষয় ধানাই পানাই সাবজেক্ট না।বাংলাও তার পাঠ্যসূচীতে আছে তবে আমরা কম বেশী বাংলায়(প্রথম পত্রে) দক্ষ। দ্বিতীয় পত্র কিন্তু সোজা না।তার প্রাইভেট দরকার।স্কুলের ক্লাস শিক্ষকই এক্ষেত্রে তার শিক্ষক,ব্যাচে পড়ান,সেটাও ছোটখাট এক স্কুল।সব বিষয়ের জন্য আলাদা আলাদা শিক্ষক,ইংরেজী শিক্ষক আবার বাংলা দ্বিতীয় পত্রে দক্ষ তাই বাংলা দ্বিতীয় পত্রের জন্য আলাদা শিক্ষকের দরকার হয় নাই।আমার কাছে মনে হয় প্রাইভেট বা কোচিং পুরোটাই দুর্নিতীর আওতায়,কারন একজন শিক্ষক যদি ক্লাসে ভালোমত শিক্ষা দেন প্রাইভেটের আর প্রয়োজন পরে না।আপনি প্রাইভেট না পড়লেও বিপদ স্কুল পরীক্ষায় মার্কস উঠবে না(সব শিক্ষক আবার এক নয়)।মোটামুটি একটা ফাঁদ।
এবার আসা যাক স্কুলের বেতনের কথায়।প্রতি মাসের সাধারন বেতনের সাথে আপনাকে আরও কিছু চার্জ পরিশোধ করতে হবে যেমন
হাসলেন কেন=১৫ টাকা
হাংকি পাংকি=১৩ টাকা
আঙ্গিনা সাফ=৮টাকা
তাহলে মাসিক প্রাইভেট আর স্কুল বিলের বাড়তি খরচ=৫*৫০০+১৫+১৩+৮=২৫৩৬ টাকা!(আমি কম ধরেছি আমি যখন প্রাইভেট পড়তাম ৭০০ টাকা করে দিতে হত ১৬ দিনে মাস,২০০১ এর কথা)
শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নিতীর আরও ধরণ আছে,এই যেমন প্রশ্ন ফাঁস,কোচিংগুলোতে ভর্তিপরীক্ষার প্রশ্ন এককালীন প্রচুর টাকা দিয়ে বিক্রি।এগুলোর সাইড ইফেক্ট অনেক প্রশ্ন ফাঁসের কারনে মেধার যথাযত মূল্যায়ন হচ্ছে না,এটা জাতীয় ক্ষতি।আপনি পাশ করেছেন সার্টিফিকেট দরকার,বিভাগীয় অফিসে গিয়েছেন পিয়ন থেকে শুরু করে লেখক পর্যন্ত সবাইকে সরাসরি টাকা দিতে হবে,চোখের আড়ালে যারা ভাগ পাবে তাদের কথা বলতে গেলে আমার অর্জিত সকল সার্টিফিকেট বাজেয়াপ্ত হতে পারে।তাদের ক্ষমতা আবার মাথা পর্যন্ত।
এবার একটা কথা বা প্রশ্ন আসতে পারে এই মেয়েটা তো সারা জীবন প্রাইভেট পড়বে না,স্কুলের বেতন দেবে না।ধরলাম এই মেয়েটা বাঁচবে ৭০ বছর তাহলে
প্রতি মাসে শিক্ষার চার্জ=২৫৩৬*১২/৭০/১২=৩৬.২৯ টাকা
(কলেজেও প্রাইভেট পড়তে হয়,নার্সারী থেকে শুরু হয় প্রাইভেট সেগুলো এখানে হিসাবে আনিনি)

শিক্ষিত হওয়া কি কম কথা!
চিকিৎসা ঃ
মানুষ হয়েছেন আর রোগ হবে না,এটা কি কোন কাজের কথা!তারপরে যা খাচ্ছেন আর পড়ছেন বেঁচে যে আছি এই তো অনেক।প্রথমেই আসি এই পরিবারের বৃদ্ধার কথায়,উনার ডায়াবেটিস।এখানে একটি প্রশ্ন আসতে পারে মহিলার ডায়াবেটিস আর আপনি তাকে মিনিকেট চালের ভাত খাওয়ালেন!তার তো খাওয়ার কথা রুটি,ভাইরে আমি প্রামান্য লেখা লিখছি না,ফিকশন লিখছি ফিকশনে ডায়াবেটিস রোগীকে ভাত খাওয়ানো যায় পরে তাকে ইন্সুলিন দিয়ে নেব অথবা ধরে নেব যে মহিলার রুটি খেতে ভালো লাগে না।ইন্সুলিন তাকে নিতেই হবে কারন আছে বলছি।
ইন্সুলিন বিষয়ে আমার একটি একান্তই ব্যাক্তিগত ধারনার কথা বলব।আমার কেন জানি মনে হয় ডায়াবেটিসের প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়ে গেছে।এখন প্রশ্ন হল তাহলে এটা প্রকাশ হচ্ছে না কেন?এইত লাইনে এসেছেন।কারন হল বানিজ্যিকতা।সারা পৃথিবী ব্যাপী হাজার হাজার কোটি টাকার ইন্সুলিনের ব্যাবসা তাহলে বন্ধ হয়ে যাবে না!আর যারা আবিষ্কার করেছেন তারাও কেন মুখ খুলছেন না,ঐ যে বানিজ্যিকতা,তাদেরকে পে করছে ইন্সুলিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো।এ বিষয়ে আমার একটি গল্প মনে পড়ে গেল।
এক লোক এসেছেন তার বন্ধুর কারখানা দেখতে।মেশিনপত্র সম্বন্ধে তার ধারণা কম।এই কারখানায় তৈরি হয় শিশুদের দুধ খাওয়া ফিডারের নিপল আর কনডম।বন্ধু লোকটাকে ঘুড়ে ঘুড়ে কারখানা দেখাচ্ছে।তারা এসে দাঁড়াল একটা মেশিনের সামনে মেশিনে শব্দ হচ্ছে ফট টিং,ফট টিং,ফট টিং।লোকটা প্রশ্ন করল আচ্ছা বন্ধু এখানে কি তৈরী হচ্ছে?বন্ধু বলল নিপল!এমন শব্দ হচ্ছে কেন?ও ফট করে নিপল তৈরী হচ্ছে আর টিং করে নিপলের মাথায় ছিদ্র হচ্ছে।বন্ধু বিমোহিত।
তারা এগিয়ে গেল পরের মেশিনের দিকে।এখানে শব্দ হচ্ছে ফট ফট ফট ফট টিং ফট ফট ফট ফট ফট টিং।বন্ধু এখানে কি তৈরী হচ্ছে?কনডম!
কনডম তৈরীতে তো ফট ফট ফট শব্দ হওয়ার কথা তবে মাঝে মাঝে টিং কেন?আরে বোকা বুঝলি না দুই একটা কনডম ফুটো না করলে নিপলের ব্যাবসা লাটে উঠবে যে!
নিপলের ব্যাবসা যাতে মার না খায় সেজন্য কনডমে ফুটো বুঝুন বানিজ্যিকতা।
মূল প্রসঙ্গে ফিরে আসি,এই মহিলার ইন্সুলিনের খরচ দুর্নিতীর খাতায় আমি ফেলতে পারছি না,যদি আমার প্রিডিকশন সঠিক হয় তবে এটা আন্তর্জাতিক দুর্নিতী।আমি আম জনতা আমার প্রিডিকশন ঠিক হবে এটা কোন কাজের কথা না,তার ওপর আবার ইন্টারন্যাশনাল বিষয়ে,তাহলেই হয়েছে।তারচেয়ে বরং আমরা বাড়ির কর্তার বুকের ব্যাথা বাড়িয়ে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাই দেখি ডাক্তার কি বলে।
প্রথমেই ইমার্জেন্সী,এখানে কিছু বুঝে ওঠার আগেই ইঞ্জেকশন,স্যালাইন,অক্সিজেন চালাচালি হবে।পরে রোগীর ব্যাবস্থা বুঝে ডাক্তারের কাছে পাঠানো হল।ডাক্তার দিলেন টেষ্ট।হল বুকের ব্যাথা তিনি দিলেন সিটিস্ক্যান,ইউরিন,ব্লাড,ইসিজি।এগুলোর দরকার ছিল না হয়ত।হয়ত বলছি কারন ভালো ডাক্তার হলে পরীক্ষা কম দেন।হয়ত তিনি ভালো ডাক্তার নন নয়ত কমিশন খাবেন(সব ডাক্তারই এক নয়)।
ধরেন ডাক্তার টেষ্ট দিয়েছে ২৮০০ টাকার এর মধ্যে মেশিন,ইলেক্ট্রিসিটি চার্জ,পরিশ্রম এগুলোর চার্জ বাদ দিয়ে দুর্নিতী খেতে হয়েছে ১৭০০ টাকার।
এবার আসি ঔষধের কথায়।আপনি বুড়ো হয়েছেন হাড়ের জয়েন্ট দুর্বল,মাথা ঘোড়ে,পড়ে যেতে চান।তাই রেগুলার ঔষধের পাশাপাশি আপনার ভিটামিন দরকার ডাক্তার বলবে একথা।এই ভিটামিনের গায়ে রেট আছে ৩৫০ টাকা।এর ব্যাবচ্ছেদ কেমন বলছি। উৎপাদন খরচ ১৫০ টাকা,ডাক্তার পাবে ১০০ টাকা কোম্পানী পাবে ১০০ টাকা।আমাদের মধ্যে কমবেশী সবারই গ্যাস বা এসিডিটির সমস্যা আছে।আপনি কি জানেন ৫ টাকার ২০ mg এর একটা প্রাজল(ওমে,ইসমে,রেবি ইত্যাদি) এর উৎপাদন খরচ ১ টাকারও কম।
এরপর আসি সরকারী হাসপাতালের কথায়।সরকারী হাসপাতালের ডাক্তারদের আলাদা চেম্বার আছে,ডিউটির ফাঁকে ফাঁকে অথবা ডিউটি শেষে তারা এখানে বসে।রোগীরাও আজকাল খুব স্মার্ট এরা জানে হাসপাতালের চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদী তাই তারা ডাক্তারের ব্যাক্তিগত চেম্বারে যাবে,ভিজিট দেবে,টেষ্টে টাকা খরচ করবে আর বলবে স্যার এমন ওষুধ দেন যাতে একদিনে ঠিক হয়ে যাই।শুধু ডাক্তার নয় আসুন মেডিক্যাল এসিস্ট্যান্টের কথায়,এরা ডাক্তারেরও বাপ সকালে হাসপাতালের খাতায় সই করেই বেড় হবে স্থানীয় সব ক্লিনিকে আল্ট্রাসনোগ্রাম,সিজার,অপারেশন ইত্যাদি কাজে।সরকারী হাসপাতালের ওষূধের ষ্টোরের সব ওষুধ এদের হাত দিয়েই বাইরে বিক্রি হবে।সেখানে পড়ে থাকবে নিম্নমানের ডেট এক্সপায়ার হওয়া ওষুধ।ভাইরে মনে হতে পারে আমি গল্প বলছি,আসলে না এটাই সত্যি।আমার আপন চাচাতো ভাই সরকারী হাসপাতালের মেডিক্যাল এসিস্ট্যান্ট,চোখের সামনেই তো দেখি ও কি করে।এই ওষূধগুলোই আবার বিভিন্ন ওষূধের দোকানে কম দামে বিক্রি হয়,বিক্রেতা বেশী লাভের আশায় এগুলো কেনে।
ওষুধে আরও মারপ্যাঁচ আছে আমরা প্রায়ই তো টেলিভিষনে দেখছি ভেজাল ওষুধের কারখানা।তো এই ভেজাল ওষুধ কিনলে তো লছই বড় লছ আপনার অসুখ ভালো হবে না এমনকি আপনি মারাও যেতে পারেন।এদের পেছনেও বড় গ্যাং আছে এসব কথার বিষদে গেলে আরব্য রজনীর কাহিনী হয়ে যাবে তাই সংক্ষেপে লিখতে হচ্ছে।

ধরে নেই এই পরিবারের গড়ে বছরে ডাক্তারের কাছে যেতে হয় ছয়বার।আর প্রতিবার ডাক্তারের ভিজিট,টেষ্ট,ওষুধ বাবদ গড়ে দুর্নিতীর চার্জ দিতে হয় ৯০০ টাকা।
তাহলে চিকিৎসা বাবদ মাসিক দুর্নিতীর চার্জ=৯০০*৬/১২=৪৫০ টাকা।

চলবে…………

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.