![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
২০৩৫ সালের রমজান মাসের ২য় শুক্রবার। প্রায় ৩০বছর পর নিজ মাতৃভূমি বাংলাদেশে ফিরছেন আজমল সাহেব। বহু বছর ফিনল্যান্ডের এসপো শহরে কাটিয়েছেন। দিনে আর রাতে বরফে ঢাকা এসপো শহরকে বলা যায় আজমল সাহেবের বর্তমানের স্থায়ী ঠিকানা।
প্লেনে ট্রানজিট রুটে দুবাই হয়ে বাংলাদেশে আসতে হয়। আজমল সাহেবের আসলে তেমন কোন ইচ্ছা ছিলোনা দেশে ফেরার। কিন্তু কদিন আগে রাতের বেলা মাকে স্বপ্নে দেখার পর থেকে মনটা হা হুতাশ করে উঠলো। আজমল সাহেবের মা বাবা ছোট বেলায় মারা যান। তিনি বড় হয়েছেন মামার আশ্রয়ে।
একসময় স্কলারশিপ নিয়ে পড়াশোনার জন্য তিনি ফিনল্যান্ড আসেন। তারপর আর দেশে ফিরে যাননি। আসলে যেতে ইচ্ছে করেনি।কারন তিনি এমন এক বাংলাদেশে ছিলেন যেখানে মানুষে মানূষে হানাহানি সংঘর্ষ প্রতিনিয়ত। রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পরিক দন্দ,দূর্নীতি দেশের মানুষকে বিষিয়ে তুলেছিলো। জীবনের সেখানে কোন মূল্য নেই। আজমল সাহেব দেশ থেকে পালাতে চাইলেন। মাঝে মাঝে দেশের খবর নিতেন। তবে তেমন আগ্রহ ছিলোনা।
একবার শুনেছেন দেশে ইসলাম পন্থী সরকার এসেছে। আজমল সাহেব তখন খুব হেসেছিলেন এই ভেবে হাতি ঘোড়া গেলো তল ইসলাম পন্থী দল বলে কত জল। দেশটা হবে নতুন আফগানিস্তান। যা শালারা তোরা মর।
প্লেনে বসে আজমল সাহেব ভাবছেন এয়ারপোর্ট নেমে না জানি কত দালালের খপ্পরে পড়তে হবে কে জানে। যাই হোক কি আর করা যাবে। এই শেষ তারপর মা স্বপ্নে আসুক আর লাইভ আসুক বাংলাদেশে আসা যাবেনা। সকাল দশটায় এমিরেটস এয়ারলাইন্সের আটতলা বিমান এসে ঢাকা বিমান বন্দরে নামলো। আজমল সাহেব অবাক হলেন কোন দালালের খপ্পরে না পড়ে। তিনি নামলেন ঝকঝকে আধুনিক এক বিমান বন্দরে । মনে মনে ভাবছেন সামনে বোধহয় বড় ধরনের কোন বিপদ অপেক্ষা করছে।বিমান বন্দর থেকে বের হয়ে দেখছেন ছবির মতো সুন্দর করে সাজানো এক শহর। কোন ধাক্কাধাক্কি নেই। নেই সামান্য সমস্যার আভা।
তিনি ট্যাক্সিতে উঠে সোজা গিয়ে উঠলেন হোটেল ব্লু মেরিনে। সেখানে আগের থেকে বুক করা ছিলো। রাস্তায় কোন যানযট পেলেন না। এমন কি রাস্তার সিগনালে পেলেন না একজন ভিক্ষুক ও। আজমল সাহেব অবাক হয়ে দেখছেন আর ভাবছেন দেশটার হলোটা কি?
দুপুরে জুমার নামাজ পড়তে আসলেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মুকাররামে। কত বছর পর এ মসজিদে আসা। নামাজের মোনাজাত শেষে যখন মসজিদের বারান্দায় গেলেন। দেখলেন অনেক লোক বসে আছে। তাদের হাতে বড় বাটি। বাটিতে রাখা নতুন নতুন হাজার টাকার নোট। আজমল সাহেব ভাবলেন এইতো পেয়ে গেছি ভিক্ষুক এখন কিছু দান সদকা করা যাক। এবার আজমল সাহেবের অবাক হবার পালা। তিনি যখন ঐ লোকদের টাকা দিতে গেলেন তারা বললো ভাই করছেন কি? আমরা তো সকাল থেকে টাকা নিয়ে বসে আছি ভিক্ষুককে দেয়ার জন্য কিন্তু এখন পর্যন্ত পাচ্ছিনা। আজমল সাহেব তাজ্জব বনে গেলেন তিনি বুঝতে পারছেন না হচ্ছেটা কি?
মসজিদের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন আজমল সাহেব, দেখা হয়ে গেলো অনেক দিনের পুরনো এক বন্ধুর সাথে। তাকে দেখে আজমল সাহেব আনন্দে আত্মহারা। গল্প করতে এগিয়ে চলছেন দুই বন্ধু। তিনি বন্ধুকে জিজ্ঞাসা করলেন বাংলাদেশে এই আমূল পরিবর্তনের কারন কি? আজমল সাহেবের বন্ধু জানালেন...
বাংলাদেশে ইসলামী আইন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এতে করে সরকারী ভাবে যাকাত আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেউ যাতে এই যাকাত ফাঁকি দিতে না পারে সেদিকে কড়া নজরদারী করা হয়েছে। আর এ যাকাত এমন ভাবে গরীবদের দান করা হয়েছে যে ঐ গরীব পরবর্তি বছর নিজেই জাকাত দেয়ার উপযোগী হয়ে গেছে। এরফলে দেশের দারিদ্রতা প্রায় শূণ্যের কোঠায় চলে এসেছে।
আজমল সাহেব আকাশের দিকে তাকেলেন। সেদিনের সে আকাশে সাদা মেঘের অপূর্ব দৃশ্যের সামনে দাঁড়িয়ে আজমল সাহেব অনেক চিৎকার করে বললেন হে মানুষের স্রষ্টা তুমি সত্য তোমার বিধান সত্য।
উপরের গল্পটী কাল্পনিক হলেও এটি যে সম্ভব তা আমি মনে প্রানে বিশ্বাস করি। বাংলাদেশে হাজারো ধনী মানুষ। কিছু শাড়ি লুঙ্গি বিতরন করে এলাকায় নাম ফুটানো ছাড়া এদের যাকাত কোন সমাজের কোন উপকারে আসেনা।
কমদামী সেই সব শাড়ি লুঙ্গি একধোয়ায় যখন শেষ হয়ে যায় তখন হয়তো গরীব মানুষগুলো মুখ ফুটে কিছু বলতে পারেনা। কিন্তু তাদের অন্তর ঠিকই তোমাদের অভিশাপ দেয়।মনে রেখো তাদের অভিশাপে এক সময় পৃথিবীর ভূমি ভারী হয়ে আসবে আর তখন মহামহিমের পক্ষ থেকে নেমে আসবে ভয়ংকর সব শাস্তি,সেদিনের সে শাস্তির জন্য প্রস্তুত হও অথবা সঠিকভাবে যাকাত আদায় করো। সিদ্ধান্ত তোমার হাতে।
©somewhere in net ltd.
১|
০২ রা আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:১৩
উড়োজাহাজ বলেছেন: গল্পটা সত্যি হচ্ছে। কারণ এমন শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে যেমন অশান্তি ছিল! কিন্তু সেই লোক কারা? আপনি আমি আছি তো তাদের সাথে?