![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মা দিবস নিয়ে হাজারো ষ্ট্যাটাস আর ছবি দেখলাম। সবার প্রকাশ ভঙ্গি, মাকে নিয়ে তাদের আবেগ সব প্রায় একই পর্যায়ের। কিন্তু এতো কিছুর পরও আমার কেন জানি মনে হয় এই আমি তুমি আমরা কেমন যেন খুব বেশী বাইরের দেখানো ভালোবাসায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছি।
মা দিবস নামে যখন কোন দিবস এ দেশে প্রচলন ছিলো না তখন কি আমাদের ভালোবাসার কমতি ছিলো? কখনোই না। তবে যুগের সাথে সাথে সব কিছুরই পরিবর্তন হয়েছে। সময় বদলে এসেছে ফেসবুক,মিঃবেকার এর কেক, আর্চিসের কার্ড। আর আমাদের মা দের মধ্যেও এসেছে পরিবর্তন। এরাও এসব বিষয়কে সাদরে গ্রহন করেছে। যাই হোক আমিও এসব আয়োজনে আজকে মা'কে খুশি করতে চাইলাম এবং মনে হচ্ছে মোটামুটি সফল।
আমার চিন্তা জগতে এখন ঘুরছে একজন সদ্য কৈশর পেরুনো তরুনী যে জীবন সংসার বুঝে ওঠার আগেই যার গর্ভে চলে এসেছে সন্তান। দিন রাত সেকি কষ্ট। বসতে শুতে অথবা খেতে গেলে কষ্ট। মুখে রুচি নেই সারারাত ঘুম নেই। আবার মাঝে মাঝে সন্তান নড়চড়। শেষে যখন শিশুটি দুনিয়ায় আসার সময় হলো সেকি অমানুষিক কষ্ট,গগন বিদারী চিৎকার। আমি এখন উপলব্ধি করি। বলছিলাম আমার মায়ের কথা। আবার যখন ছোট বেলায় ডান দিকে শোয়ালেন পেশাব করে দিলাম,এবার বাম দিকে শোয়ালেন সেখানেও পেশাব করে দিলাম, এবার উপায় না দেখে আমাকে বুকে নিয়ে ঘুমালেন। সারা রাত নিজে পেশাবে ঘুমালেন আমাকে ঠান্ডা লাগতে দিলেন না।
ছোট বেলায় এক অজানা রোগে আক্রান্ত হয়ে পিজি হাসপাতালের সি ব্লকের ২য় তলায় শিশু বিভাগে শুয়ে আছি। ডাক্তার লাইফ সাপোর্ট খুলে ফেলার চিন্তা করছেন। মা তখন নামাজের বিছানায়।সকালের আলো ফুটতে আরো কিছু সময় বাকী। এবার মা দু হাত তুলে বললেন হে পরোয়ার দিগার আমি আমার জীবন তোমার কাছে সপে দিলাম, আমার জীবনের বদলে আমার সন্তানকে ফেরত দাও। ভোরের আলো ফুটলো,মায়ের করুন আর্জির কাছে রাহমানুর রাহিমের অন্তর সিক্ত হলো। আমি ফিরে ফেলাম নব জীবন।
মেট্রিক পরীক্ষায় এ প্লাস ও বোর্ড পজিশন যখন পেলাম সবাই আনন্দে হাসলো মা শুধু বিহবল নয়নে তাকিয়ে রইলেন। কারনটা শুধুই আমি আর মা জানি। গভীর রাতে সবাই যখন ঘুমিয়ে তখন আমার টেবিলের পাশে বসে আমাকে চা খাওয়াচ্ছেন,ফল কেটে দিচ্ছেন, নানান সাহস দিচ্ছেন। আমি জানি আমার সে ফলাফল ছিলো শুধুমাত্র মায়ের কষ্টের ফসল।
জানিনা জীবনের বাস্তবতায় আমি মা'কে তাঁর ভালোবাসার মতো করে ভালোবাসতে পারবো কিনা? জানিনা মা এর প্রতি আমি আমার কিছু মাত্র দায়িত্ব পালন করতে পারবো কিনা?
মা আমার সব ক্ষুদ্রতা ক্ষমা করো, মা আমার সব না পারা ক্ষমা করো। তোমাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আমাকে এ পৃথিবীতে আনার জন্য, তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাকে জীবন দিয়ে ভালোবাসার জন্য।
©somewhere in net ltd.