নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যে পৃথিবীতে ভালবাসা নেই, সে পৃথিবী মানুষের জন্য নয়। এমন একটা পৃথিবী চাই, যেখানে তুমি আর আমি শুধু ভালবাসায় মাখামাখি হয়ে থাকবো।

সালমা শারমিন

সালমা শারমিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইসলাম ধর্মে পারদর্শী লোকেরা প্লিজ উত্তর দিবেন

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৩১

আমার কিছু প্রশ্ন ছিল।সময় নাই, তাই ছোট করে লিখছি। কেউ যদি উত্তর গুলো জানেন, কোরআন,সহীহ হাদিস মোতাবেক, এবং তথ্য সূত্র সহ আমাকে জানাবেন।অবশ্য জানাবেন, আমি খুব উপকৃত হব।



১) হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কি দিয়ে তৈরি?

২)শব-ই-বরাত নিয়ে ইসলামে কোন দলিল আছে কি না। থাকলে তা কি রকম দলিল?অথবা কোন নিষেধ আছে কি না?

৩)বিয়ের পর নাকে ফুল পরা ইসলাম ধর্মের কোন নিয়ম কিনা?

৪)অনেকেই বলে স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেশত। কথাটা কতটুকু সত্য?কোন সহীহ্‌ দলীল আছে কিনা?

মন্তব্য ২৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৯

হানিফঢাকা বলেছেন: ১। আমাদের মতই মাটি দিয়ে তৈরি
২। জানি না
৩। না
৪। না

২| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৯

ইউসুফ কামাল বলেছেন: পারদর্শী?! হাহ?! ধর্মে পারদর্শী?!

যাইহোক,

১) আপনি আমি যা দিয়ে তৈরী, তা।
২) রাত এর কথা নবিজী বলেছেন, কোন আমল এর কথা ঠিক করা নাই।
৩) নাকে ফুল পরার কোন দায়বদ্ধতা বিয়ের আগে বা পরে কখনই নেই।

৩| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৩

চাঁন মিঞা সরদার বলেছেন:
১) রাসুল(সঃ) নুরের তৈরি যেটা আল-কোরানে এসেছে। তবে কেউ কেউ বলেন তিনি মাটির তৈরি যেটার ব্যখ্যাও তারা দিয়েছেন।

২) শবে বরাত নিয়ে নির্ভর যোগ্য কোনো দলিল নেই। তবে শবে কদর নিয়ে আছে।

৩) না।

৪) স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেস্ত এই কথাটির নির্ভরযোগ্য দালিলিক প্রমান আমি পাইনি। বা নেই । তবে মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেস্ত এটা আছে।

ধন্যবাদ।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৫৩

সালমা শারমিন বলেছেন: ধন্যবাদ

৪| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৪

বিলাসী বলেছেন: ১। আমাদের মতই মাটি দিয়ে তৈরি
২। শব-ই-বরাত নিয়ে ইসলামে কোন দলিল নেই, শব-ই-বরাত এই শব্দটি হল ফারসি. ইসলামে শুধু লাইলাতুল কদর আছে।
৩। বিয়ের পর নাকে ফুল পরা ইসলাম ধর্মের কোন নিয়ম নেই, এটা মানুষের বানানো।
৪। এটা ডাহা মিথ্যা কথা। সহীহ্‌ দলীল হল: মায়ের পায়ের নিচে সনতানের বেহেশত। আশা করি বুজেছেন।

৫| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৯

rafiq buet বলেছেন: হাদীস শরীফে এসেছে - নবীজী সাঃ বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সর্বপ্রথম আমার নূর সৃস্টি করেন।

আর সরাসরি কোন মানুষই মাটি দিয়ে তৈরি নয়। বৈজ্ঞানিকভাবে চিন্তা করলেও মানুষের শুক্রানু ও ডিম্বানুর জেনেটিকেল গঠনে মাটির আস্তিত্ব পাওয়া যায় না। হযরত আদম আঃ কে মাটি দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল, পরবর্তীতে রুহ দান করা হয়েছিল। তাই বলা হয় মানুষ মাটি দিয়ে তৈরি।

৬| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:০১

মুনসীমাহফুজ বলেছেন: নবী (সাঃ ) মাটি থেকে সৃষ্টি।

মাটি থেকে নবীর সৃষ্টি হওয়ার প্রমাণঃ

(ক) কুরআন থেকেঃ
আমার নিকট আশ্চর্য লাগে যে বিদআতীরা কেমন করে মহান আল্লাহর দ্ব্যর্থহীন বাণীকে অস্বীকার করে বলে যে, নবী (ছাল্লাল্লাহু আআইহি ওয়াসাল্লাম) মাটির তৈরী নন, বরং নূরের তৈরী। কারণ মহান আল্লাহ একাধিক স্থানে বলেছেন যে নবী (ছাল্লাল্লাহু আআইহি ওয়া সাল্লাম) সৃষ্টিগত দিক থেকে بشر তথা আমাদের মতই একজন মানুষ। যেমনঃ

সূরা কাহাফে মহান আল্লাহ এরশাদ করেনঃ (হে রাসূল!) ‘আপনি বলে দিন, আমি তো তোমাদেরই মত এক জন মানুষ, আমার নিকট এই মর্মে ওহী করা হয় যে, তোমাদের উপাস্য এক ও একক, অতএব যে নিজ প্রতিপালকের দিদার লাভের আশাবাদী সে যেন সৎকর্ম করে এবং নিজ প্রতিপালকের ইবাদতে অন্য কাউকে শরীক না করে’। (সূরা আল্ কাহাফঃ ১১০)

অন্যত্রে মহান আল্লাহ বলেনঃ ‘আপনি বলুন আমি আমার প্রতিপালকের পবিত্রতা বর্ণনা করছি। একজন মানব, একজন রাসূল বৈ আমি কে? (সূরা বনী ইসরাইল: ৯৩)

তিনি আরো বলেনঃ ‘নিশ্চয় আল্লাহ মুমিনদের বড় উপকার করেছেন, যেহেতু তাদেরই মধ্য থেকে একজনকে রাসূল হিসাবে পাঠিয়েছেন যিনি তাদের নিকট তাঁর আয়াতসমূহ তিলাওত করেন, তাদেরকে পরিশুদ্ধ করেন, এবং তাদেরকে কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দান করেন, যদিও তারা ইতোপূর্বে স্পষ্ট গুমরাহীতে নিমজ্জিত ছিল। (সূরাহ আলে ইমরানঃ ১৬৪)

তিনি আরো বলেনঃ তোমাদের নিকট আগমন করেছে, তোমাদেরই মধ্যকার এমন একজন রাসূল, যার কাছে তোমাদের ক্ষতিকর বিষয় অতি কষ্টদায়ক মনে হয়, যিনি হচ্ছেন তোমাদের খুবই হিতাকাঙ্খী, মুমিনদের প্রতি বড়ই স্নেহশীল, করুনাপরায়ণ। (সূরা তাওবা: ১২৮)

তিনি আরো বলেনঃ এ লোকদের জন্যে এটা কী বিস্ময়কর হয়েছে যে, আমি তাদের মধ্য হতে একজনের নিকট অহী প্রেরণ করেছি এই মর্মে যে, তুমি লোকদেরকে ভয় প্রদর্শন কর এবং যারা ঈমান এনেছে তাদরকে এই সুসংবাদ দাও যে, তারা তাদের প্রতিপালকের নিকট (পূর্ণ মর্যাদা) লাভ করবে, কাফেররা বলতে লাগলো যে, এই ব্যক্তি তো নিঃসন্দেহে প্রকাশ্য যাদুকর। (সূরা ইউনুস: ২)

তিনি আরো বলেনঃ তিনিই নিরক্ষরদের মধ্য থেকে একজন রাসূল প্রেরণ করেছেন তাদের নিকট, যিনি তাদের কাছে পাঠ করেন তাঁর আয়াতসমূহ, তাদেরকে পবিত্র করেন এবং শিক্ষা দেন কিতাব ও হিকমত, যদিও তারা ইতোপূর্বে স্পষ্ট গোমরাহীতে লিপ্ত ছিল। (সূরা-আল্ জুমুআহ: ২)

আল্লাহ আরো বলেনঃ আমি তোমাদের মধ্য হতে এরূপ রাসূল প্রেরণ করেছি যে, তোমাদের নিকট আমার নিদর্শনাবলী পাঠ করে ও তোমাদেরকে পবিত্র করে এবং তোমাদেরকে গ্রন্থ ও বিজ্ঞান শিক্ষা দেয়, আর তোমরা যা অবগত ছিলে না তা শিক্ষা দান করেন। (সূরা বাকারা ১৫১)

এখানে মহান আল্লাহ বলেই দিয়েছেন যে, নবী (ছাল্লাল্লাহু আআইহি ওয়া সাল্লাম) ঐসব লোকদেরই একজন, তিনি তাদের বাইরের কোন লোক নন। কাজেই ঐসব লোক যদি নূরের তৈরী হন, তাহলে নবী(ছাল্লাল্লাহু আআইহি ওয়া সাল্লাম)ও নূরের তৈরী হবেন, আর যদি তারা নূরের তৈরী না হন তবে তিনিও নূরের তৈরী হবেন না এটাইতো স্বাভাবিক। আসলে বিদআতীরা কুরআন ও ছহীহ হাদীছ আয়ত্ব করতে এবং এর সঠিক ব্যাখ্যা অনুধাবন করা থেকে চির ব্যর্থ, তাই তারা নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কে কুরআন ও হাদীছ বিরোধী কথা বলে যে, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাটির তৈরী নন, বরং তিনি নূরের তৈরী। অথচ এভাবে তারা নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে অধিক সম্মান দিতে গিয়ে আরো তাঁকে খাটো করে দিয়েছে। কারণ নূরের তৈরী ফেরেশতার উপর আল্লাহ মাটির তৈরী আদম (আলাইহিস্ সালাম)কে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। তাদেরকে দিয়ে আদমের সিজদা করিয়ে নিয়েছেন। (দ্রঃসূরা আল বাকারাহ: ৩৪, সূরা আল্ আ’রাফ: ১১) তাহলে কার শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত হল? নূরের তৈরী ফেরেশতাদের নাকি মাটির তৈরী আদম (আলাইহিস্ সাল্লাম)এর? অবশ্যই মাটির তৈরী আদম (আলাইহিস্ সালাম) এর শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত হল। তবে আমরা তর্কের খাতিরে এটা বললেও আমাদের বিশ্বাস, আদম (আলাইহিস্ সালাম) ফেরেশতাদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে ছিলেন তাঁর ইলমের মাধ্যমে। আর এটা একমাত্র আল্লাহর অনুগ্রহেই হয়ে ছিল। তিনিই আদমের প্রতি অনুগ্রহ করে ফেরেশতাদের চেয়ে তাকে বেশি ইলম দান করে ছিলেন।

এক লক্ষ চব্বিশ হাজার নবী ও রাসূল (অনেকে বলেনঃ নবী ও রাসূলদের সর্ব মোট সংখ্যা হলঃ এক লক্ষ চব্বিশ হাজার, মতান্তরে দুই লক্ষ চব্বিশ হাজার। এভাবে বলে থাকেন, এটা প্রমাণ করে তারা ঐমর্মে নবী এর কোন হাদীছ অবগত হন নি। মুসনাদ আহমাদ, ছহীহ ইবনু ইব্বান প্রভৃতিতে নবী ও রাসূলদের সর্ব মোট সংখ্যা একলক্ষ চব্বিশ হাজার বলা হয়েছে, আরো বলা হয়েছে তাদের মধ্যে রাসূলদের সংখ্যা সর্ব মোট ৩১৫ জন দ্রঃ মুসনাদ আহমাদ ৫/১৭৯,হা/২১৫৯২, ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/ প্রভৃতি হাদীছ ছহীহ, সিলসিলাতুল আহাদীছ আছ ছহীহাহ ) এর মধ্যে শুধু নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিভাবে নূরের তৈরী হলেন? যদি তাঁকে নূরের তৈরী না বলায় তার মান খাটো করা হয়,তবে বাকী এক লক্ষ তেইশ হাজার নয়শো নিরানব্বই জন নবী রাসূলকে মাটির তৈরী বলে কি তাদের মান খাটো করা হয় না? নাকি তারাও নূরের তৈরী? কৈ কোন বিদআতীকে তো বলতে শুনি না যে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মত বাকী সমস্ত নবী, রাসূলগণও নূরের তৈরী! বরং তারা এমনটি শুধু নবী মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ক্ষেত্রেই বলে থাকে। সুতরাং বাকী সমস্ত নবীকে মাটির তৈরী বলায় যেমন তাদের মান হানী হয় না, তদ্রƒপ আমাদের নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কেও মাটির তৈরী বলায় তার মানহানী হবে না। তবে কেন বিষয়টি নিয়ে এত বাড়াবাড়ি?

(সংগ্রিহীত)


৭| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:০৯

সকাল>সন্ধা বলেছেন: “আমি তোমাদেরকে সামান্যতম ইলম দান করেছি। (সূরা বণী ঈসরাইল- ৮৫)
খালিক মালিক মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন হচ্ছেন ‘আলিমুল গইব’ অর্থাৎ সর্ব প্রকার গইব বা অদৃশ্য বস্তু বা বিষয়ের ইল্‌ম আল্লাহ পাক উনার রয়েছে। আল্লাহ পাক বিনা মধ্যস্থতায় বা কারো মাধ্যম ছাড়াই সকল ইলমের বা ইলমে গইবের অধিকারী।
আর এরূপ ইল্‌মে গইব সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক উনার কালামে পাকে ইরশাদ করেন, “আসমান-যমীনে আল্লাহ পাক ব্যতীত কারো ইল্‌মে গইব নেই।”(সূরা নমল-৫৫) অর্থাৎ বিনা মধ্যস্থতায় বা কারো মাধ্যম ব্যতীত যে ইল্‌মে গইব তা শুধুমাত্র আল্লাহ পাক উনারই রয়েছে।
প্রথমোক্ত আয়াত শরীফে ইলমের স্বল্পতা মহান আল্লাহ পাক উনার সাধারণ বান্দাদের জন্য প্রযোজ্য। আল্লাহ পাক উনার বিশেষ বিশেষ বা খাছ বান্দাগণ তথা হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস্‌ সালামগণ এবং হাক্বীক্বী নায়িবে নবী ওয়ারাছাতুল আম্বিয়া তথা খাছ খাছ ওলী আল্লাহগণ এ হুকুমের বাইরে। অর্থাৎ দুনিয়াতে মানুষ বৈজ্ঞানিক, দার্শনিক ইত্যাদি যাই হোক না কেন তার জ্ঞান সামান্য থেকে সামান্যতম।
পক্ষান্তরে যাঁরা মহান আল্লাহ পাক উনার গুণে হাক্বীক্বীভাবে গুণান্বিত তথা নবী রসূল আলাইহিমুস্‌ সালামগণ, বিশেষ করে সকল নবীদের নবী, রসূলদের রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মহান আল্লাহ পাক উনার খাছ হাবীব বা বন্ধু হওয়ার কারণে স্বয়ং আল্লাহ পাকই উনাকে সমস্ত প্রকার ইলম দান করেছেন। আল্লাহ পাক উনার কায়িনাতে এমন কোন বিষয় ছিল না যা উনি জানতেন না বা জানেন না।
অর্থাৎ আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হচ্ছেন “মুত্তালা আলাল গইব” অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীবকে সর্ব প্রকার ইল্‌মে গইব দান করেছেন।
মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “দয়াময় আল্লাহ পাক উনার হাবীব উনাকে কুরআন শরীফ শিক্ষা দিয়েছেন, উনি ইনসান সৃষ্টি করেছেন এবং উনাকে বয়ান শিক্ষা দিয়েছেন।” (সূরা আর রহমান ১-৪)
এ আয়াত শরীফের ব্যাখ্যায় বিখ্যাত তাফসীরগ্রন্থ ‘তাফসীরে খাযিনে’ উল্লেখ আছে, “বলা হয়েছে যে, ইনসান দ্বারা উদ্দেশ্য হলেন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আর বয়ান দ্বারা বুঝানো হয়েছে যে, যা ঘটেছে এবং যা ঘটবে, পূর্বাপর সমস্ত কিছুর ইল্‌ম আল্লাহ পাক উনাকে দান করেছেন। কেননা উনাকে পূর্ববর্তী পরবর্তী এবং পরকাল সম্পর্কে সকল গাইবী বিষয়ের ইল্‌ম দান করেছেন।” অনুরূপ তাফসীরে মায়ালিমুত তানযীল, হুসাইনী, ছাবীতেও উল্লেখ আছে।
হাদীছ শরীফের বিখ্যাত ও মশহুর কিতাব ‘মিশকাত শরীফে’ উল্লেখ আছে, “হযরত আব্দুর রহমান বিন আইশ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। উনি বলেন, আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আমি আমার রবকে উত্তম ছূরত মুবারকে দেখেছি। আমার রব বললেন, (হে আমার হাবীব!) মুকার্‌রব ফেরেশ্‌তাগণ কোন বিষয়ে আলোচনা করছে? আমি বললাম, আপনিই অধিক জানেন। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, অতঃপর মহান আল্লাহ পাক উনার রহমতের হাত আমার দু’কাঁধের মধ্যখানে রাখলেন। আমি আল্লাহ পাক উনার ফয়েজের শীতলতা আমার মধ্যে অনুভব করলাম। অতঃপর আসমান-যমীনের সকল বিষয় ও বস্তুর ইলম আমার অর্জিত হয়ে গেল।”
এ হাদীছ শরীফের ব্যাখ্যায় বিখ্যাত মুহাদ্দিছ আল্লামা মুল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিখ্যাত ব্যাখ্যাগ্রন্থ ‘মিরকাত শরীফে’ লিখেন, “আল্লামা ইবনে হাজার রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, “সামাওয়াত” দ্বারা আসমানসমূহ এমনকি তারও উপরের সমস্ত সৃষ্টির ইলমকে বুঝানো হয়েছে। যেমন মি’রাজ শরীফের ঘটনা দ্বারা বুঝা যায়। আর ‘আল আরদ’ জিন্‌স (জাতি) অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে, ঐ সমূদয় বস্তু যা সমস্ত যমীনের মধ্যে বরং তারও নিচে রয়েছে তার সব বিষয়েরই ইলম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্জিত হয়ে যায়। (শুধু তাই নয় হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন) আমার জন্যে মহান আল্লাহ পাক গইব-এর সকল দরজাসমূহ খুলে দিয়েছেন।”
মূলতঃ এই প্রকারের হাদীছ শরীফ আয়াত শরীফ-এর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকতা এর বিষয়টা বুঝানো হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে নূরে মুজাস্‌সাম, হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হিসেবে সৃষ্টি হয়েছে। যার কারণে উনি সমস্ত ইল্‌ম ও নিয়ামত সহই সৃষ্টি হয়েছেন। কাজেই নতুন করে দেয়ার মত বিষয় নয়। বরং যা দেয়া হয়েছে সে বিষয়টা সমস্ত কায়িনাতকে বুঝানোর জন্য অনুষ্ঠান করা হয়েছে।
হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ হয়েছে, “হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত । উনি বলেন, একদা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মাঝে দাঁড়িয়ে সৃষ্টির শুরু থেকে জান্নাতবাসীদের জান্নাতে প্রবেশ এবং দোযখবাসীদের দোযখে প্রবেশ করা পর্যন্ত সকল বিষয়ের সংবাদ প্রদান করেন। এগুলো যারা স্মরণ রাখতে পেরেছেন উনারা স্মরণ রেখেছেন আর যাঁরা স্মরণ রাখতে পারেননি উনারা ভুলে গেছেন।” (বুখারী শরীফ, মিশকাত শরীফ)
‘ছহীহ মুসলিম শরীফে” আরো উল্লেখ আছে যে, “হযরত হুযাইফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। উনি বলেন, একদা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মাঝে দাঁড়িয়ে ক্বিয়ামত পর্যন্ত যা কিছু হবে তার সব কিছুই বর্ণনা করে দিলেন, কোন কিছুই বাদ দিলেন না।”
আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো ইরশাদ করেন “আমি সমস্ত ইলমসহ প্রেরীত হয়েছি।” (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ-৫১২)
বিখ্যাত মুহাদ্দিছ ও মুহাক্কিক হযরত শায়খ আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিখ্যাত গ্রন্থ “মাদারিজুন নুবুওওয়াতে” উল্লেখ করেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সকল বিষয় বা বস্তু সম্পর্কেই অবহিত ছিলেন। উনি আল্লাহ পাক উনার শান তার আহকাম বা বিধি-বিধান, উনার ছিফাত বা গুণাবলী তার আসমা বা নাম সমূহ উনার আফয়াল বা কর্মসমূহের এবং আদি-অন্ত, যাহির-বাতিন ইত্যাদি সর্ব প্রকার ইলমের অধিকারী ছিলেন।”
অনুরূপ আরো ইমাম-মুজতাহিদ আউলিয়ায়ে কিরাম তাঁদের স্ব-স্ব কিতাবে উল্লেখ করেছেন যে, আখিরী রসূল হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ পাক উনার কায়িনাতের সর্বপ্রকার ইলমের অধিকারী ছিলেন। কাজেই, ইলমের স্বল্পতা বা ইলমের সীমা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য প্রযোজ্য নয় বরং আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হচ্ছেন- “মুত্তালা আলাল গইব” অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীবকে পরিপূর্ণ ইলমে গইব দান করেছেন এবং নূরে মুজাস্‌সাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অপরিসীম ইল্‌ম্‌ সর্বপ্রকার সীমার উর্ধ্বে।
শুধু তাই নয়, বরং পূর্ববর্তী সকল নবী-রসূল আলাইহিমুস্‌ সালামগণ এবং হক্কানী ওলীআল্লাহগণকেও মহান আল্লাহ পাক ইলমে গইব দান করেছেন বা করেন। এটাই আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদা। এ আক্বীদাই সকলকে পোষণ করতে হবে। এর খিলাফ বা বিপরীত আক্বীদা পোষণ করা গুমরাহী ও কুফরীর নামান্তর।

৮| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:০৯

সকাল>সন্ধা বলেছেন: নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, আমাকে সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সকল বিষয়ের ইলম হাদিয়া করা হয়েছে। অর্থাৎ তিনি সর্বপ্রকার ইলমের অধিকারী। যা উনার সীমাহীন ফযীলতের মধ্যে একটি ফযীলত।
‘খালিক মালিক মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন হচ্ছেন আলিমুল গইব’ অর্থাৎ সর্বপ্রকার গইব বা অদৃশ্য বস্থ বা বিষয়ের ইলম আল্লাহ পাক, উনার রয়েছে। আল্লাহ পাক বিনা মধ্যস্থতায় বা কারো মাধ্যম ছাড়াই সকল ইলমের বা ইলমে গইবের অধিকারী। আর এরূপ ইলমে গইব সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক উনার কালাম পাকে ইরশাদ করেন, “আসমান-যমীনে আল্লাহ পাক ব্যতীত কারো ইলমে গইব নেই।” (সূরা নমল-৫৫) অর্থাৎ বিনা মধ্যস্থতায় বা কারো মাধ্যম ব্যতীত যে ইলমে গইব তা শুধুমাত্র আল্লাহ পাক, উনারই রয়েছে।
মহান আল্লাহ পাক ‘সূরা বণী ঈসরাইল’-এর ৮৫ নম্বর আয়াত শরীফ-এ ইরশাদ করেন, “আমি তোমাদেরকে সামান্যতম ইলম দান করেছি।” এ আয়াত শরীফ-এ বর্ণিত ইলমের স্বল্পতা মহান আল্লাহ পাক, উনার সাধারণ বান্দাদের জন্য প্রযোজ্য। আল্লাহ পাক, উনার বিশেষ বিশেষ বা খাছ বান্দা তথা হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম এবং হাক্বীক্বী নায়িবে নবী ওয়ারাছাতুল আম্বিয়া তথা খাছ খাছ ওলী আল্লাহগণ উনারা এ হুকুমের বাইরে। অর্থাৎ দুনিয়াতে মানুষ বৈজ্ঞানিক, দার্শনিক ইত্যাদি যাই হোক না কেন তার জ্ঞান সামান্য থেকে সামান্যতম। পক্ষান্তরে যাঁরা মহান আল্লাহ পাক, উনার গুণে হাক্বীক্বীভাবে গুণান্বিত তথা নবী রসূল আলাইহিমুস সালামগণ, বিশেষ করে সকল নবীদের নবী, রসূলদের রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি মহান আল্লাহ পাক, উনার খাছ হাবীব বা বন্ধু হওয়ার কারণে স্বয়ং আল্লাহ পাকই উনাকে সমস্ত প্রকার ইলম হাদিয়া করেছেন। আল্লাহ পাক, উনার কায়িনাতে এমন কোন বিষয় ছিল না যা তিনি জানতেন না বা জানেন না। অর্থাৎ আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হচ্ছেন “মুত্তালা আলাল গইব” অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীবকে সর্বপ্রকার ইলমে গইব হাদিয়া করেছেন।
মহান আল্লাহ পাক ‘সূরা আর রহমান’-এ ইরশাদ করেন, “দয়াময় আল্লাহ পাক উনার হাবীব উনাকে কুরআন শরীফ শিক্ষা দিয়েছেন, তিনি ইনসান সৃষ্টি করেছেন এবং উনাকে বয়ান শিক্ষা দিয়েছেন।” এ আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায় বিখ্যাত তাফসীরগ্রন্থ' ‘তাফসীরে খাযিনে’ উল্লেখ আছে, বলা হয়েছে যে, “ইনসান দ্বারা উদ্দেশ্য হলেন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আর বয়ান দ্বারা বুঝানো হয়েছে যে, যা ঘটেছে এবং যা ঘটবে, পূর্বাপর সমস্ত কিছুর ইলম আল্লাহ পাক উনাকে হাদিয়া করেছেন। কেননা উনাকে পূর্ববর্তী পরবর্তী এবং পরকাল সম্পর্কে সকল গইবী বিষয়ের ইলম হাদিয়া করেছেন।” অনুরূপ তাফসীরে মায়ালিমুত তানযীল, হুসাইনী, ছাবীতেও উল্লেখ আছে।”
হাদীছ শরীফ-এর বিখ্যাত ও মশহুর কিতাব ‘মিশকাত শরীফ’-এ উল্লেখ আছে, “হযরত আব্দুর রহমান বিন আইশ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আমি আমার রবকে উত্তম ছূরত মুবারকে দেখেছি। আমার রব বলেন, (হে আমার হাবীব!) মুকাররব ফেরেশতাগণ কোন বিষয়ে আলোচনা করছেন? আমি বললাম, আপনিই অধিক জানেন। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, অতঃপর মহান আল্লাহ পাক উনার রহমতের কুদরতি হাত মুবারক আমার দু’কাঁধের মধ্যখানে রাখলেন। আমি উনার ফয়েজের শীতলতা আমার মধ্যে অনুভব করলাম। অতঃপর আসমান-যমীনের সকল বিষয় ও বস্থর ইলম আমার অর্জিত হয়ে গেল।”
এ হাদীছ শরীফ-এর ব্যাখ্যায় বিখ্যাত মুহাদ্দিছ আল্লামা হযরত মুল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি হাদীছ শরীফ-এর বিখ্যাত ব্যাখ্যাগ্রন্থ' ‘মিরকাত শরীফ’-এ লিখেন, “আল্লামা ইবনে হাজার রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, “সামাওয়াত” দ্বারা আসমানসমূহ এমনকি তারও উপরের সমস্ত সৃষ্টির ইলমকে বুঝানো হয়েছে। যেমন মি’রাজ শরীফ-এর ঘটনা দ্বারা বুঝা যায়। আর ‘আল আরদ’ জিনস (জাতি) অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে, ঐ সমুদয় বস্থ যা সমস্ত যমীনের মধ্যে বরং তারও নিচে রয়েছে তার সব বিষয়েরই ইলম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উনার অর্জিত হয়ে যায়। শুধু তাই নয় হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “আমার জন্যে মহান আল্লাহ পাক গইব-এর সকল দরজাসমূহ খুলে দিয়েছেন।”
মূলত এই প্রকারের হাদীছ শরীফ আয়াত শরীফ-এর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকতা এর বিষয়টা বুঝানো হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হিসেবে সৃষ্টি হয়েছেন। যার কারণে তিনি সমস্ত ইলম ও নিয়ামতসহই সৃষ্টি হয়েছেন। কাজেই নতুন করে দেয়ার জন্য নয়। বরং যা দেয়া হয়েছে সে বিষয়টা সমস্ত কায়িনাতকে বুঝানোর জন্য অনুষ্ঠান করা হয়েছে।
হাদীছ শরীফ-এ আরো ইরশাদ হয়েছে, “হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত । তিনি বলেন, একদা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, তিনি আমাদের মাঝে দাঁড়িয়ে সৃষ্টির শুরু থেকে জান্নাতবাসীদের জান্নাতে প্রবেশ এবং দোযখবাসীদের দোযখে প্রবেশ করা পর্যন্ত সকল বিষয়ের সংবাদ প্রদান করেন। এগুলো যাঁরা স্মরণ রাখতে পেরেছেন উনারা স্মরণ রেখেছেন আর যাঁরা স্মরণ রাখতে পারেননি উনারা ভুলে গেছেন।” (বুখারী শরীফ, মিশকাত শরীফ)
‘ছহীহ মুসলিম শরীফ’-এ আরো উল্লেখ আছে যে, “হযরত হুযাইফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মাঝে দাঁড়িয়ে ক্বিয়ামত পর্যন্ত যা কিছু হবে তার সব কিছুই বর্ণনা করে দিলেন, কোন কিছুই বাদ দিলেন না।”
‘বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ’-রয়েছে, “আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো ইরশাদ করেন “আমি সমস্ত ইলমসহ প্রেরিত হয়েছি।”
বিখ্যাত মুহাদ্দিছ ও মুহাক্কিক হযরত শায়খ আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিখ্যাত গ্রন্থ “মাদারিজুন নুবুওওয়াতে” উল্লেখ করেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সকল বিষয় বা বস্থ সম্পর্কেই অবহিত ছিলেন। তিনি আল্লাহ পাক, উনার শান ও আহকাম বা বিধি-বিধান, উনার ছিফাত বা গুণাবলী উনার আসমা বা নামসমূহ উনার আফয়াল বা কর্মসমূহের এবং আদি-অন্ত, যাহির-বাতিন ইত্যাদি সর্বপ্রকার ইলমের অধিকারী ছিলেন। যা উনার সীমাহীন ফযীলতের বহিঃপ্রকাশ।
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উনার মর্যাদা-মর্তবা বর্ণনা করে শেষ করার মত নয়। উনার ফাযায়িল-ফযীলত শ্রেষ্ঠত্বের বর্ণনা করতে গিয়ে সমুদ্রের পানিকে কালিস্বরূপ এবং সমস্ত গাছ-পালাকে কলমরূপে ব্যবহার করে সমস্ত জিন-ইনসান কিয়ামত পর্যন্ত লিখতে থাকলেও সমস্ত কিছুই নিঃশেষ হয়ে যাবে, তবুও উনার ফাযায়িল-ফযীলত বা শ্রেষ্ঠত্বের কিঞ্চিত বর্ণনাও লিখে শেষ করা যাবে না। এক কথায় তিনি শুধু আল্লাহ পাক নন, এছাড়া সকল ছানা ছিফত, মর্যাদা-মর্তবা, ফাযায়িল-ফযীলত-এর অধিকারী হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
মূলত যে ব্যক্তি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উনার ছানা-সিফত করবে, শান-মান বর্ণনা করবে প্রকৃতপক্ষে সে নিজেই ফায়দা লাভ করবে। এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত হাসসান বিন ছাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, ‘আমি আমার প্রশংসামূলক কবিতার দ্বারা হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উনার শান-মান কিছুই বাড়াতে পারিনি। বরং উনার ছানা-সিফত বা প্রশংসা করার কারণে আমার কবিতা এবং আমি নিজেই সম্মানিত ও মর্যাদাবান হয়েছি।’ সুবহানাল্লাহ!
আমাদের সকলের দায়িত্ব-কর্তব্য হলো- আল্লাহ পাক, উনার প্রিয়তম হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উনার শান-মান, মর্যাদা-মর্তবা উপলব্ধি করত উনার প্রতি যথাযথ তা’যীম-তাকরীম ও সম্মান প্রদর্শন এবং পরিপূর্ণ ছানা-সিফত করার মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উনাদের উভয়ের খাছ রেযামন্দি (সন্তুষ্টি)হাছিল করা।

৯| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:১০

সকাল>সন্ধা বলেছেন: মূলতঃ আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যেহেতু সমগ্র কায়িনাত সৃষ্টির পূর্বেই সৃষ্টি করা হয়েছে। তাই তিনি সর্বকালে, সর্বযুগে, সর্বাবস্থায় হাযির-নাযির ছিলেন, আছেন, ক্বিয়ামত পর্যন্ত থাকবেন ও ক্বিয়ামতের পরে অনন্ত কাল থাকবেন। এ মর্মে ইরশাদে রব্বানী হচ্ছে- الم تر ان الله خلق السموت والارض بالحق.

অর্থ: হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি কি দেখননি? যে মহান আল্লাহ পাক আসমান ও যমীন এবং এতদুভয়ের মধ্যস্থিত সমস্ত কিছুই সঠিক ও সুন্দরভাবে সৃষ্টি করেছেন। অর্থাৎ সমগ্র কায়িনাত বা মাখলূকাত সৃষ্টির সময় আপনি হাযির-নাযির থেকেই সবকিছুই দেখছেন। মূলকথা হচ্ছে আল্লাহ পাক যখন কুল কায়িনাত সৃষ্টি করেন তখনও হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মহান দরবারে ইলাহীতে উপস্থিত ছিলেন ও সবকিছু দেখেছেন।আল্লাহ পাক আরো বলেন- الم تر كيف فعل ربك باصحاب الفيل অর্থ: “হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি কি দেখেননি, আপনার প্রভু হস্তীবাহিনীদের কি অবস্থা করেছেন?” (সূরা ফীল-১)

الم تر كيف فعل ربك بعادঅর্থ: “হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি কি দেখেননি, আপনার প্রতিপালক আদ জাতির সঙ্গে কিরূপ আচরণ করেছেন?” (সূরা ফজর-৬)

‘আদ’ জাতি ও ‘হস্তিবাহিনীর ঘটনাবলী হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর যমীনে আগমণের অনেক আগেই সংঘটিত হয়েছিল, অথচ বলা হচ্ছে الم تر আপনি কি দেখেননি? অর্থাৎ আপনি দেখেছেন। এ আয়াত শরীফসমূহ থেকে এটাই ছাবিত হলো যে আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সৃষ্টির শুরু থেকে সর্বকালে, সর্বযুগে, সর্বাবস্থায় কায়িনাতে যত ঘটনা ঘটেছে তা সবই তিনি হাযির-নাযির থেকে প্রত্যক্ষ করেছেন বা দেখেছেন।

সর্বপরি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাযির ও নাযির হওয়া সম্পর্কে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের ফতওয়া হলো, “তিনি আল্লাহ্ পাক-এর প্রদত্ত্ব ক্ষমতায় ছিফত হিসেবে হাযির-নাযির।” এবং জাতিগতভাবেও যেকোন সময় যেকোন স্থানে হাযির-নাযির হওয়ার ইখতিয়ার রয়েছে।আল্লাহ্ পাক বলেন, وما ارسلنك الا رحمة للعلمين.অর্থ: “নিশ্চয়ই আমি আপনাকে সমস্ত আলমের জন্য রহমত স্বরূপ পাঠিয়েছি। (সূরা আম্বিয়া-১০৭) উল্লেখ্য যে, মহান আল্লাহ পাক হচ্ছেন رب العلمين (রব্বুল আ’লামীন) সমস্ত আল্লমের রব। আর হাবীবুল্লাহু হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হচ্ছেন رحمة للعلمين (রহমাতুল্লিল আ’লামীন) সমস্ত আলমের জন্য রহমত। অর্থাৎ রব্বুল আলামীনের রুবুবিয়্যত যত কিছুর জন্য প্রযোজ্য رحمة للعلمين এর রহমত তত কিছুর জন্যই প্রযোজ্য। আল্লাহ পাক-এর রুবুবিয়তের বাইরে যেমন কোন কিছু নেই তেমিন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর رحمة থেকে খালি কোন কিছুই নেই।এ সম্পর্কে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন,ورحمتى وسعت كل شىءঅর্থ: “আর আমার রহমত সবকিছুকে বেষ্টন করে আছে।” (সূরা আ’রাফ-১৫৬) অর্থাৎ আল্লাহ্ পাক প্রদত্ত ক্ষমতায় রহমত হিসেবে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্ নাবিয়্যীন, রহমতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাস্সাম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সৃষ্টি জগতের সবকিছুতে বিরাজমান।আল্লাহ পাক-এর সৃষ্টি জীবের মধ্যে এমন কোন বিষয় নেই, এমন কোন স্থান নেই, এমন কোন বস্তু নেই যেখানে রহমত নেই। আল্লাহ পাক-এর কায়িনাতে বায়ুশূন্য স্থানের যেমন কোন অস্তিত্ব পাওয়া যাবে না অনুরূপ রহমতশুন্য স্থানের অস্তিত্বও পাওয়া যাবে না। সুতরাং আল্লাহ পাক-এর রহমত তথা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সমগ্র কয়িনাতকে বেষ্টন করে আছেন।এ সম্পর্কে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ ফরমান- ان رحمة الله قريب من المحسنين অর্থ: নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক-এর রহমত (হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হক্কানী-রব্বানী ওলীআল্লাহগণের নিকটেই রয়েছেন। (সূরা আ’রাফ- ) অর্থাৎ হক্কানী-রব্বানী ওলীআল্লাহগণ মহান আল্লাহ পাক-এর রহমত তথা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে লাভ করেই ওলীআল্লাহ হন। আর সে কারণেই আওলিয়ায়ে কিরামগণ মহান আল্লাহ পাক-এর রহমত তথা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দায়িমীভাবে দেখে থাকেন।

হুজ্জাতুল ইসলাম হযরত ইমাম গাজ্জালী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, .ارباب قلوب مشاہدہ می کنند در بیدا ری انبیاء و ملائکہ راو ہمکلام می شوند بایشاں অর্থ: “খোদায়ী নূরে আলোকিত অন্তর বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ জাগ্রত অবস্থায় হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও ফেরেশ্তাগণকে দেখতে পান, তাঁদের সাথে কথাবার্তাও বলেন।” ইমামে আ’যম হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি “কাছীদায়ে নু’মান” নামক প্রশংসামূলক কাব্যগ্রন্থে বলেছেন, .واذا سمعت فعنك قولا طيبا + واذا نظرت فلا ارى الاك অর্থঃ- “হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সম্বোধন তিনি করে বলছেন, “হে নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! যখনই আমি কিছু শুনি শুধু আপনার মুবারক ক্বওল শরীফই শুনি আর যখন কোন দিকে তাকাই তখন আপনি ছাড়া আর কিছুই আমার দৃষ্টিগোচর হয়না।” হযরত ইমাম আযম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি কুফা নগরে অবস্থানকালীন সময় চতুর্দিকে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দেখতে পেতেন।

“তাবাকাত” কিতাবের ২য় খন্ডের, ১৩ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে, হযরত ইমাম আবুল আব্বাস মারাসী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেছেন لى اربعون سنة ما حجبت عن رسول الله صلى الله عليه وسلم لو حجبت طرفة عين ما اعددت نفسى من جملة المسلمين. অর্থঃ “আজ চল্লিশ বৎসরব্যাপী আমি রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর (দর্শন) হতে বঞ্চিত হইনি। যদি এক নিমেষও তাঁর দর্শন হতে বঞ্চিত হতাম তাহলে আমি নিজেকে মুসলমান বলে পরিগণিত করতাম না।” অর্থাৎ যখন তিনি ঐ কথা বলেছেন তার চল্লিশ বছর পূর্ব হতে তখন পর্যন্ত এবং তারও পরে আজীবন তিনি আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দায়েমী দীদারে মশগুল ছিলেন।মুজাহিদে আ’যম, মুজাদ্দিদে জামান হযরত সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরেলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং কুতুবুল ইরশাদ, হাফিযে হাদীছ হযরতুল আল্লামা রুহুল আমীন বশিরহাটী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন আমরা যখন কোন হাদীছ শরীফ বর্ণনা করি তখন সরাসরি আল্লাহ পাক-এর হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্ নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আমাদের সামনে দেখতে পাই। সরাসরি হাদীছ শরীফ জেনে বা তাহকীক করে তা বর্ণনা করে থাকি।

তাযকিরাতুল আওলিয়া ২য় খণ্ড উল্লেখ করা হয়েছে- আল্লাহ পাক-এর খালিছ ওলী হযরত আবুল হাসান খারকানী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর কাছে উনার একজন মুরীদ খারকান শহর থেকে শাম দেশে গিয়ে ইলমে হাদীছ শিক্ষার অনুমতি চাইলেন। তিনি মুরীদকে বললেন, তুমি শাম দেশে যাবে কেন? খারকান শহরে কি কোন বড় মুহাদ্দিছ নেই। তখন শায়খ রহমতুল্লাহি আলাইহি নিজেই বললেন, তুমি হাদীছ শরীফ পড়বে, আমার কাছেই তো পড়তে পার। তখন সেই মুরীদ মনে মনে ফিকির করলো আমার শায়খ হযরত আবুল হাসান খারকানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তো কোন মাদ্রাসায় লেখা-পড়া করেননি। তিনি কি করে আমাকে হাদীছ শরীফ পড়াবেন? সে কোন উত্তর না দিয়ে মজলিস শেষে চলে গেল। রাত্রি বেলায় ঐ মুরীদ স্বপ্নে দেখলো- আল্লাহ পাক-এর হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বলতেছেন, হে ব্যক্তি তুমি সাবধান হয়ে যাও! তুমি জান, তোমার শায়খ হযরত আবূল হাসান খারকানী রহমতুল্লাহি আলাইহি বর্তমান বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিছ। কাজেই তুমি উনার কাছে গিয়ে ক্ষমা চাও এবং উনার কাছেই হাদীছ শরীফ শিক্ষা কর। সে ব্যক্তি তাই করলো। হাদীছ শরীফ পড়ানোর সময় শায়খ মুখস্থ পড়ান আবার কিতাবে লিখা না থাকা সত্ত্বেও কোনটি কোন ধরনের হাদীছ শরীফ তাও তিনি বলে দেন। অনেক দিন পরে সেই মুরীদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন যে, আমি হাদীছ শরীফ পড়ানোর সময় রহমতুল্লিল আলামীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আমার সামনে দেখতে পাই। উনার নিকট থেকে জেনেই আমি তোমাকে পড়াই ও সব কথা বলি। (সুবহানাল্লাহ)

এছাড়াও কারবালার হৃদয় বিদারক ইতিহাস থেকেও হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম তিনি যে হাযির ও নাযির তার অকাট্ট প্রমাণ পাওয়া যায়। যখন তীরের আঘাতে নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার প্রিয় দৌহিত্র হযরত ইমাম হুসাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-উনার পবিত্র শরীর ঝাঁঝরা হয়ে ফিনকি দিয়ে সারা শরীর মুবারক থেকে রক্ত বের হতে লাগলো, তখন উনি বার বার মুখে হাত দিয়ে বললেন, বদবখতের দল! তোমরাতো তোমাদের নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর লেহাজও করলে না। তোমরা নিজের নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বংশধরকে কতল করছো! এভাবে যখন তিনি আর একবার মুখের উপর হাত দিলেন, তাঁর চোখের সামনে আর এক দৃশ্য ভেসে উঠল। তিনি দেখতে পেলেন, স্বয়ং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাত মুবারকে একটি বোতল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। হযরত আলী র্ক্রাামাল্লাহু ওয়াজ্্হাহু রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত ফাতিমাতুয্্ যাহরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহাও পার্শ্বে আছেন আর বলছেন, ‘হুসাইন! আমাদের দিকে তাকাও, আমরা তোমাকে নিতে এসেছি।’হযরত ইমাম হুসাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-উনার কাপড় রক্তে ভিজে যাচ্ছিল আর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেই রক্ত বোতলে ভরে নিচ্ছিলেন এবং বলছিলেন, ‘হে আল্লাহ পাক! হুসাইনকে পরম ধৈর্য ধারণের ক্ষমতা দান করুন।’ (দলিল: কারবালার হৃদয় বিদারক ইতিহাস)

উপরে বর্ণিত মিলাদ শরীফ-ক্বিয়াম শরীফ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সর্বত্র হাযির ও নাযির সম্পর্কিত দলিল সমূহ মূলতঃ শত সহ¯্র দলিল সমূহের মধ্য থেকে সামান্য কয়েকটি দলিল সংকলন করে সংক্ষেপ আকারে পেশ করা হয়েছে। আসলে মু’মিনের জন্য একটি দলিল’ই যথেষ্ট। আর যারা বদ আক্বিদা, বদ মাযহাবী, বাতিল ফিরক্বার অন্তভ’ক্ত তাদের লক্ষ-কোটি দলিল দিলেও তারা মানবেনা। কেননা তাদের অন্তরে সিল মোহর পড়ে গেছে। তারা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শানে বেয়াদবী করতে করতে যুব্বুল হুযূনে চলে যাবে তবু নবী পাক-এর শানে আদব, মুহব্বত তারা প্রদর্শন করবেনা।

আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে ঐসব বদ আক্বিদা, বদ মাযহাবী, ওহাবী, খারিজি, দেওবন্দী, তাবলীগী, কাদিয়ানী তথা বাতিল বাহাত্তর ফিরক্বার লোকদের ওয়াস ওয়াসা থেকে হেফাযত করুন। আর নাযিয়াহ্(নাযাত প্রাপ্তদের) তথা আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামায়াত এর আক্বিদা পোষণ করার এবং সে অনুযায়ী আমল করার তাওফীক দান করুন।

১০| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:১৩

সকাল>সন্ধা বলেছেন: শবে বরাত কি?
শবে বরাত হচ্ছে ইসলামের বিশেষ রাত্রিসমূহের মধ্যে একটি রাত্র। যা শা’বানের চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাত্রিতে হয়ে থাকে। শবে বরাত-এর অর্থ হচ্ছে ‘মুক্তির রাত’ বা ‘নাজাতের রাত।’



শবে বরাত সম্পর্কে কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ-এ বর্ণনা
‘শব’ ফার্সী শব্দ। যার অর্থ হচ্ছে, রাত। আর বরাত আরবী শব্দ যা উর্দূ, ফার্সী, বাংলা ইত্যাদি সব ভাষাতেই ব্যবহার হয়ে থাকে। যার অর্থ ‘মুক্তি’ ও ‘নাজাত’ ইত্যাদি। কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ-এর ভাষা যেহেতু আরবী তাই ফার্সী ‘শব’ শব্দটি কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ-এ না থাকাটাই স্বাভাবিক।
স্মর্তব্য যে, কুরআন শরীফ-এর ভাষায় ‘শবে বরাতকে’ ‘লাইলাতুম মুবারাকাহ বা বরকতময় রজনী’ এবং হাদীছ শরীফ-এর ভাষায় শবে বরাতকে ‘লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান’ বা শা’বানের চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাত’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
যেমন আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন-

انا انزلنه فى ليلة مبركة انا كنا منذرين. فيها يفرق كل امر حكيم. امرا من عندنا انا كنا مرسلين

অর্থ: “নিশ্চয়ই আমি বরকতময় রজনীতে (শবে বরাতে) কুরআন শরীফ নাযিল করেছি অর্থাৎ নাযিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আর আমিই ভয় প্রদর্শনকারী। উক্ত রাত্রিতে আমার পক্ষ থেকে সমস্ত প্রজ্ঞাময় কাজ গুলো ফায়সালা করা হয়। আর নিশ্চয়ই আমিই প্রেরণকারী।” (সূরা দুখান-৩, ৪, ৫)

আর হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে-

عن ام المؤمنين حضرت عائشة عليها السلام قالت فقدت رسول الله صلى الله عليه وسلم ليلة فاذا هو بالبقيع فقال اكنت تخافين ان يحيف الله عليك ورسوله قلت يا رسول الله صلى الله عليه وسلم انى ظننت انك اتيت بعض نسائك فقال ان الله تعالى ينزل ليلة النصف من شعبان الى السماء الدنيا فيغفر لاكثر من عدد شعر غنم كلب

অর্থ: উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম-উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আল্লাহ পাক-উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সাথে কোন এক রাত্রিতে রাত্রিযাপন করছিলাম। এক সময় উনাকে বিছানা মুবারক-এ না পেয়ে আমি মনে করলাম যে, তিনি হয়তো অন্য কোন উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের হুজরা শরীফে তাশরীফ নিয়েছেন। অতঃপর আমি তালাশ করে উনাকে জান্নাতুল বাক্বীতে পেলাম। সেখানে তিনি উম্মতের জন্য আল্লাহ পাক-উনার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছেন। এ অবস্থা দেখে আমি স্বীয় হুজরা শরীফে ফিরে আসলে তিনিও ফিরে এসে আমাকে বললেন, আপনি কি মনে করেছেন, আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা আপনার সাথে আমানতের খিয়ানত করেছেন! আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি ধারণা করেছিলাম যে, আপনি হয়তো অপর কোন হুজরা শরীফে তাশরীফ নিয়েছেন। অতঃপর হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক তিনি শা’বানের ১৫ তারিখ রাত্রিতে পৃথিবীর আকাশে অবতরণ করেন অর্থাৎ রহমতে খাছ নাযিল করেন। অতঃপর তিনি বনী কালবের মেষের গায়ে যতো পশম রয়েছে তার চেয়ে অধিক সংখ্যক বান্দাকে ক্ষমা করে থাকেন।” (তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, রযীন, মিশকাত)

অতএব প্রমাণিত হলো যে, কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফেই শবে বরাতের কথা উল্লেখ আছে। তবে কুরআন শরীফে বরাতের রাতকে ‘লাইলাতুম মুবারকাহ’ আর হাদীছ শরীফে ‘লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান’ বলা হয়েছে। অনেকে বলে থাকে যে, সূরা দুখান-এর উক্ত আয়াত শরীফ দ্বারা শবে ক্বদরকে বুঝানো হয়েছে। কেননা উক্ত আয়াত শরীফে স্পষ্টই উল্লেখ আছে যে, “আমি কুরআন শরীফ নাযিল করেছি ....” আর কুরআন শরীফ যে ক্বদরের রাত্রিতে নাযিল হয়েছে তা ‘সূরায়ে ক্বদরেও’ উল্লেখ আছে। মূলতঃ যারা উপরোক্ত মন্তব্য করে থাকে তারা ‘সূরা দুখান-এর’ উক্ত আয়াত শরীফ-এর সঠিক ব্যাখ্যা না জানা ও না বুঝার কারণেই করে থাকে। মহান আল্লাহ পাক যে ‘সূরা দুখান’-এ বলেছেন, “আমি বরকতময় রজনীতে কুরআন শরীফ নাযিল করেছি।” এর ব্যাখ্যামূলক অর্থ হলো, “আমি বরকতময় রজনীতে কুরআন শরীফ নাযিলের ফায়সালা করেছি।”

আর ‘সূরা ক্বদরে’ যে বলেছেন, “আমি ক্বদরের রাত্রিতে কুরআন শরীফ নাযিল করেছি।” এর ব্যাখ্যামূলক অর্থ হলো, “আমি ক্বদরের রাত্রিতে কুরআন শরীফ নাযিল শুরু করি।” অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক “লাইলাতুম মুবারকাহ বা শবে বরাতে” কুরআন শরীফ নাযিলের সিদ্ধান্ত নেন আর শবে ক্বদরে তা নাযিল করা শুরু করেন। এজন্যে মুফাসসিরীনে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা শবে বরাতকে ليلة التجويز অর্থাৎ ‘ফায়সালার রাত।’ আর শবে ক্বদরকে ليلة التنفيذ অর্থাৎ ‘জারী করার রাত’ বলে উল্লেখ করেছেন। কেননা শবে বরাতে যে সকল বিষয়ের ফায়সালা করা হয় তা ‘সূরা দুখান-এর’ উক্ত আয়াত শরীফেই উল্লেখ আছে। যেমন ইরশাদ হয়েছে-

فيها يفرق كل امر حكيم

অর্থাৎ- “উক্ত রজনীতে প্রজ্ঞাসম্পন্ন সকল বিষয়ের ফায়সালা করা হয়।”
হাদীছ শরীফেও উক্ত আয়াতাংশের সমর্থন পাওয়া যায়। যেমন ইরশাদ হয়েছে-

فيها ان يكتب كل مولود من بنى ادم فى هذه السنة وفيها ان يكتب كل هالك من بنى ادم فى هذه السنة وفيها ترفع اعمالهم وفيها تنزل ارزاقهم

অর্থাৎ- “বরাতের রাত্রিতে ফায়সালা করা হয় কতজন সন্তান আগামী এক বৎসর জন্ম গ্রহণ করবে এবং কতজন সন্তান মৃত্যু বরণ করবে। এ রাত্রিতে বান্দাদের আমলগুলো উপরে উঠানো হয় অর্থাৎ আল্লাহ পাক-উনার দরবারে পেশ করা হয় এবং এ রাত্রিতে বান্দাদের রিযিকের ফায়সালা করা হয়।” (বায়হাক্বী, মিশকাত)

কাজেই, আল্লাহ পাক তিনি যেহেতু বলেছেন যে, বরকতময় রজনীতে সকল কাজের ফায়সালা করা হয় আর উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও যেহেতু বলেছেন যে, বরাতের রজনীতেই সকল বিষয় যেমন- হায়াত, মউত, রিযিক, আমল ইত্যাদি যা কিছু মানুষের প্রয়োজন হয়ে থাকে তার ফায়সালা করা হয় সেহেতু বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, “সূরা দুখান-এর” উক্ত আয়াত শরীফ দ্বারা শবে বরাতকেই বুঝানো হয়েছে।

[দলীলসমূহ: (১) সূরা দুখান (২) তাফসীরে দুররে মনছূর, (৩) কুরতুবী, (৪) মাযহারী, (৫) তিরমিযী, (৬) ইবনে মাজাহ, (৭) বায়হাক্বী, (৮) মিশকাত, (৯) মিরকাত, (১০) আশয়াতুল লুময়াত, (১১) লুময়াত, (১২) ত্বীবী, (১৩) তালীক্ব, (১৪) মুযাহিরে হক্ব ইত্যাদি।]

শবে বরাতকে কেন্দ্র করে আতশবাজি ও আলোকসজ্জা করা
শবে বরাতে আলোকসজ্জা ও আতশবাজি করা শরীয়ত সম্মত নয়। ইতিহাসে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আলোকসজ্জা হচ্ছে গ্রীক ধর্মের একটি ধর্মীয় প্রথা। সেখান থেকে পর্যায়ক্রমে হিন্দু ধর্মের ধর্মীয় প্রথা হিসেবে রূপ লাভ করে, যা শেষ পর্যন্ত দেয়ালী পূজা নামে মশহূর হয়। আলোকসজ্জা সেখান থেকে পর্যায়ক্রমে মুসলমানদের মধ্যে প্রবেশ করে যা প্রকৃতপক্ষে দ্বীন ইসলামের শেয়ার বা তর্জ-তরীক্বার অন্তর্ভুক্ত নয়। আর আতশবাজিও দ্বীন ইসলামের কোন শেয়ারের অন্তর্ভুক্ত নয়। প্রকৃতপক্ষে আতশবাজিও হিন্দু ধর্মের একটি ধর্মীয় প্রথার অন্তর্ভুক্ত। তাই মুসলমানের জন্য এসব করা সম্পূর্ণরূপে হারাম ও নাজায়িয। কারণ হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে-

عن حضرت عبد الله بن عمر رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من تشبه بقوم فهو منهم

অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে মিল বা সাদৃশ্য রাখবে তার হাশর-নশর তাদের সাথেই হবে।” (আহমদ, আবূ দাউদ)

এ প্রসঙ্গে একটি ওয়াক্বিয়া বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, তা হলো হিন্দুস্তানে একজন জবরদস্ত আল্লাহ পাক-উনার ওলী ছিলেন। যিনি ইনতিকালের পর অন্য একজন বুযুর্গ ব্যক্তি উনাকে স্বপ্নে দেখে জিজ্ঞেস করেন, “হে আল্লাহ পাক-উনার ওলী, আপনি কেমন আছেন?” আল্লাহ পাক-উনার ওলী জাওয়াবে বলেন, “আপাতত আমি ভালই আছি, কিন্তু আমার উপর দিয়ে এক কঠিন সময় অতিবাহিত হয়েছে, যা বলার অপেক্ষা রাখেনা। আমার ইনতিকালের পর আমাকে হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা সরাসরি আল্লাহ পাক উনার সম্মুখে পেশ করেন। আল্লাহ পাক তিনি হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের বলেন, “হে হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম! আপনারা উনাকে কেন এখানে নিয়ে এসেছেন”? হযরত ফেরেশ্তা আলাইহিমুস সালাম উনারা বলেন, “আয় আল্লাহ পাক! আমরা উনাকে খাছ বান্দা হিসেবে আপনার সাথে সাক্ষাৎ করানোর জন্য নিয়ে এসেছি।” এটা শুনে আল্লাহ পাক তিনি বললেন, “উনাকে এখান থেকে নিয়ে যান, উনার হাশর-নশর হিন্দুদের সাথে হওয়া উচিৎ। কেননা তিনি পুজা করেছেন। আল্লাহ পাক উনার ওলী তিনি বলেন, এটা শুনে আমি ভয় পেয়ে গেলাম এবং আমার সমস্ত শরীর ভয়ে কাঁপতে লাগলো। তখন আমি আল্লাহ পাক-উনার নিকট আরজু পেশ করলাম, “আল্লাহ পাক! আমার হাশর-নশর হিন্দুদের সাথে হবে কেন? আমি তো সবসময় আপনার এবং আপনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার ফরমাবরদার ছিলাম। কখনো ইচ্ছাকৃত নাফরমানি করিনি এবং কখনো পূজা করিনি আর মন্দিরেও যাইনি।” আল্লাহ পাক তিনি বললেন, “আপনি সেই দিনের কথা স্মরণ করুন, যেদিন হিন্দুস্তানে হোলি পুজা হচ্ছিলো। আপনার সামনে-পিছনে, ডানে-বামে, উপরে-নীচে সমস্ত গাছ-পালা, তরু-লতা, পশু-পাখী, কীট-পতঙ্গ সবকিছুকে রঙ দেয়া হয়েছিলো। এমতাবস্থায় আপনার সামনে দিয়ে একটি গর্দভ (গাধা) হেঁটে যাচ্ছিলো যাকে রঙ দেয়া হয়নি। তখন আপনি পান চিবাচ্ছিলেন, আপনি সেই গর্দভের গায়ে এক চিপটি পানের রঙ্গীন রস নিক্ষেপ করে বলেছিলেন, “হে গর্দভ! তোমাকে তো কেউ রং দেয়নি এই হোলি পুজার দিনে, আমি তোমাকে রং দিয়ে দিলাম। এটা কি আপনার পুজা করা হয়নি? আপনি কি জানেন না?”

من تشبه بقوم فهو منهم

অর্থ: “যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে মিল রাখে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে অর্থাৎ তার হাশর-নশর তাদের সাথে হবে।” কাজেই, “আপনার হাশর-নশর হিন্দুদের সাথে হওয়া উচিৎ।”

যখন আল্লাহ পাক এ কথা বললেন তখন আমি লা-জাওয়াব হয়ে গেলাম এবং ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে বললাম, আয় আল্লাহ পাক! আমি এটা বুঝতে পারিনি, আমাকে কেউ বুঝিয়েও দেয়নি। দয়া করে আমাকে ক্ষমা করে দিন। কিছুক্ষণ পর আল্লাহ পাক বললেন, “হ্যাঁ আপনাকে অন্যান্য আমলের কারণে ক্ষমা করা হলো।” কাজেই, মুসলমানদের জন্য শুধু শবে বরাতকেই কেন্দ্র করে নয় বরং কোন অবস্থাতেই আতশবাজি ও আলোকসজ্জা ইত্যাদি বিধর্মী বিজাতীয়দের কোন আমল করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

[দলীলসমূহ - (১) আহমদ, (২) আবূ দাউদ, (৩) বযলুল মাজহূদ, (৪) আউনুল মা’বূদ, (৫) মাছাবাতা বিসসুন্নাহ, (৬) গ্রীক জাতির ইতিহাস, (৭) হিন্দু ধর্মের ইতিহাস ইত্যাদি।]

শবে বরাতের আমল
শবে বরাত হচ্ছে মুক্তি বা ভাগ্য অথবা নাজাতের রাত। অর্থাৎ বরাতের রাত্রিতে ইবাদত-বন্দেগী করে ও পরবর্তী দিনে রোযা রেখে আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনাদের সন্তুষ্টি অর্জন করাই মূল উদ্দেশ্য। শবে বরাতে কোন্ কোন্ ইবাদত-বন্দেগী করতে হবে তা কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফে নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়নি। তবে ইবাদত-বন্দেগী করার জন্য নির্দেশ করা হয়েছে। যেমন হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে-

عن حضرت على رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا كانت ليلة النصف من شعبان فقوموا ليلها وصوموا يومها فان الله تعالى ينزل فيها لغروب الشمس الى السماء الدنيا فيقول الا من مستغفر فاغفرله الا مسترزق فارزقه الا مبتلى فاعافيه الا كذا الا كذا حتى يطلع الفجر

অর্থ: “হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহ পাক-উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, যখন শা’বানের ১৫ তারিখ রাত্রি অর্থাৎ বরাতের রাত্রি উপস্থিত হবে তখন তোমরা উক্ত রাত্রিতে নামায আদায় করবে এবং দিনে রোযা রাখবে। কেননা নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক তিনি উক্ত রাত্রিতে সূর্যাস্তের সময় পৃথিবীর আকাশে আসেন অর্থাৎ রহমতে খাছ নাযিল করেন। অতঃপর ঘোষণা করেন, “কোন ক্ষমা প্র্রার্থনাকারী আছো কি? আমি তাকে ক্ষমা করে দিবো।” “কোন রিযিক প্রার্থনাকারী আছো কি? আমি তাকে রিযিক দান করবো।” “কোন মুছিবতগ্রস্ত ব্যক্তি আছো কি? আমি তার মুছিবত দূর করে দিবো।” এভাবে ফজর পর্যন্ত ঘোষণা করতে থাকেন।” (ইবনে মাজাহ, মিশকাত)

হাদীছ শরীফে আরো বর্ণিত আছে-

عن حضرت ابى موسى الاشعرى رضى الله تعالى عنه عن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ان الله تعالى ليطلع فى ليلة النصف من شعبان فيغفر لجميع خلقه الا لمشرك او مشاحن

অর্থ: “হযরত আবু মূসা আশআরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি আল্লাহ পাক-উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার থেকে বর্ণনা করেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক তিনি শা’বানের ১৫ তারিখ রাত্রিতে ঘোষণা করেন যে, উনার সমস্ত মাখলূকাতকে তিনি ক্ষমা করে দিবেন। শুধু মুশরিক ও হিংসা-বিদ্বেষকারী ব্যতীত। (ইবনে মাজাহ, আহমদ, মিশকাত)

উপরোক্ত হাদীছ শরীফসমূহের সংক্ষিপ্ত বিষয়বস্তু হলো, রাত্রিতে ইবাদত-বন্দেগী করতে হবে এবং দিনে রোযা রাখতে হবে। যার মাধ্যমে আল্লাহ পাক বান্দাহকে ক্ষমা করে স্বীয় সন্তুষ্টি দান করবেন।

বরাতের রাত্রিতে যেসব ইবাদত করতে হবে তার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেয়া হলো-

বরাতের নামায: শবে বরাতে ৪, ৬, ৮, ১০, ১২ রাকায়াত নফল নামায পড়া যেতে পারে।
ছলাতুত তাসবীহ নামায: অতঃপর ছলাতুত তাসবীহ-এর নামায পড়বে, যার দ্বারা মানুষের সমস্ত গুণাহখতা ক্ষমা হয়।
তাহাজ্জুদ নামায: অতঃপর তাহাজ্জুদের নামায পড়বে, যা দ্বারা আল্লাহ পাক-উনার নৈকট্য হাছিল হয়।
কুরআন শরীফ তিলাওয়াত: কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করবে, যার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা-উনার সন্তুষ্টি অর্জিত হয়। কেননা নফল ইবাদতের মধ্যে কুরআন শরীফ তিলাওয়াত হচ্ছে সর্বোত্তম আমল।
মীলাদ শরীফ ও দুরূদ শরীফ পাঠ: মীলাদ শরীফ ও দুরূদ শরীফ পাঠ করবে, যার দ্বারা আল্লাহ পাক-উনার রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সন্তুষ্টি অর্জিত হয়।
যিকির-আযকার: যিকির-আযকার করবে, যার দ্বারা দিল ইছলাহ হয়।
কবর যিয়ারত: কবরস্থান যিয়ারত করবে, যার দ্বারা সুন্নত আদায় হয়। তবে কবর বা মাযার শরীফ যিয়ারত করতে গিয়ে সারারাত্র ব্যয় করে দেয়া জায়িয হবেনা। সুন্নত আদায়ের লক্ষ্যে নিকটবর্তী কোন কবরস্থান যিয়ারত করে চলে আসবে।
দান-ছদকা: গরীব-মিসকীনকে দান-ছদকা করবে ও লোকজনদের খাদ্য খাওয়াবে, যার দ্বারা হাবীবুল্লাহ হওয়া যায়।
দোয়া-ইস্তিগফার: আল্লাহ পাক-উনার নিকট দোয়া করবে, যার কারণে আল্লাহ পাক খুশি হবেন ও উনার নিয়ামত লাভ হবে। আর সর্বশেষ খালিছ ইস্তিগফার ও তওবা করবে, যার মাধ্যমে বান্দাহর সমস্ত গুণাহ-খতা মাফ হয়ে আল্লাহ পাক-উনার খালিছ সন্তুষ্টি অর্জিত হয়। অর্থাৎ শ’বে বরাতের বারাকাত, ফুয়ূজাত, নিয়ামত, রহমত, মাগফিরাত ও নাজাত ইত্যাদি হাছিল করা যায়।

স্মরণীয় যে, অনেক স্থানে দেখা যায় যে, লোকজন ছুবহে ছাদিকের পর আখিরী মুনাজাত করে থাকে। মূলতঃ মুনাজাত যে কোন সময়েই করা যায়। তবে বরাতের রাতে দোয়া কবুল করার যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তা ছুবহ্ েছাদিকের পূর্ব পর্যন্ত। এরপর বরাতের রাত অবশিষ্ট থাকেনা। কেননা, হাদীছ শরীফে স্পষ্টই বলা হয়েছে যে-

حتى يطلع الفجر

অর্থ: “ফজর বা ছুবহে ছাদিক পর্যন্ত আল্লাহ পাক তিনি দোয়া কবুল করেন।” অতএব, সকলের উচিৎ হবে মূল বা আখিরী মুনাজাত ছুবহে ছাদিকের পূর্বেই করা।

[দলীলসমূহ - (১) তাফসীরে কুরতুবী, (২) মাযহারী, (৩) রুহুল বয়ান, (৪) রুহুল মায়ানী, (৫) খাযিন, (৬) বাগবী, (৭) তিরমিযী, (৮) ইবনে মাজাহ, (৯) আহমদ, (১০) রযীন, (১১) মিশকাত, (১২) মিরকাত, (১৩) আশয়াতুল লুময়াত, (১৪) লুময়াত, (১৫) ত্বীবী, (১৬) ত্বালীক, (১৭) মুযাহিরে হক্ব ইত্যাদি।]

শবে বরাতে ইবাদতে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে সারারাত্র ওয়াজ মাহফিল করা
শবে বরাত হচ্ছে ইসলামের বিশেষ রাত্রিসমূহের মধ্যে একটি রাত্রি। যা শা’বানের চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাত্রিতে হয়ে থাকে। শবে বরাত-এর অর্থ হচ্ছে মুক্তির রাত্র বা নাজাতের রাত্র। এ রাতে ওয়াজ-নছীহত করার আদেশও নেই। আবার নিষেধও করা হয়নি। তবে এ রাতে দোয়া কবুল করার ও ইবাদত বন্দেগী করার কথাই হাদীছ শরীফে ব্যক্ত হয়েছে। যেমন আখিরী রসূল, রহমতুল্লিল আলামীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন-

ان الدعاء يستجاب فى خمس ليال اول ليلة من رجب وليلة النصف من شعبان وليلة القدر المباركة وليلتى العيدين

অর্থ: “নিশ্চয়ই পাঁচ রাত্রিতে দোয়া নিশ্চিতভাবে কবুল হয়ে থাকে। (১) রজব মাসের প্রথম রাতে, (২) শবে বরাতের রাতে, (৩) ক্বদরের রাতে, (৪) ঈদুল ফিতরের রাতে, (৫) ঈদুল আযহার রাতে।” (মা ছাবাতা বিসসুন্নাহ, আমালুল ইয়াত্তমি ওয়াল লাইলাতি)

হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ হয়েছে-

عن حضرت على رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا كانت ليلة النصف من شعبان فقوموا ليلها وصوموا يومها فان الله تعالى ينزل فيها لغروب الشمس الى السماء الدنيا فيقول الا من مستغفر فاغفرله الا مسترزق فارزقه الا مبتلى فاعافيه الا كذا الا كذا حتى يطلع الفجر

অর্থ: “হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহ পাক-উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, যখন শা’বানের ১৫ তারিখ রাত্রি অর্থাৎ বরাতের রাত্রি উপস্থিত হবে তখন তোমরা উক্ত রাত্রিতে নামায আদায় করবে এবং দিনে রোযা রাখবে। কেননা নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক তিনি উক্ত রাত্রিতে সূর্যাস্তের সময় পৃথিবীর আকাশে আসেন অর্থাৎ রহমতে খাছ নাযিল করেন। অতঃপর ঘোষণা করেন, “কোন ক্ষমা প্র্রার্থনাকারী আছো কি? আমি তাকে ক্ষমা করে দিবো।” “কোন রিযিক প্রার্থনাকারী আছো কি? আমি তাকে রিযিক দান করবো।” “কোন মুছিবতগ্রস্ত ব্যক্তি আছো কি? আমি তার মুছিবত দূর করে দিবো।” এভাবে ফজর পর্যন্ত ঘোষণা করতে থাকেন।” (ইবনে মাজাহ, মিশকাত)

উক্ত হাদীছ শরীফ-এর ব্যাখ্যায় ইমাম-মুজতাহিদগণ বলেন যে-

ليلة البراءة هى ليلة العفو والكرم، ليلة التوبة والندم، ليلة الذكر والصلوة، ليلة الصدقات والخيرات، ليلة الدعاء والزيارة، ليلة الصلاة على النبى صلى الله عليه وسلم، ليلة تلاواة القران الكريم

অর্থ: “বরাতের রাত্র হলো ক্ষমা ও দয়ার রাত্র, তওবা ও লজ্জিত হওয়ার রাত্র, যিকির ও নামাযের রাত্র, ছদক্বা ও খয়রাতের রাত্র, দোয়া ও যিয়ারতের রাত্র, দুরূদ শরীফ তথা ছলাত-সালাম পাঠ করার রাত্র এবং কুরআন শরীফ তিলাওয়াতের রাত্র।”

কাজেই, বরাতের রাতে যেহেতু ওয়াজ নছীহতের আদেশও করা হয়নি এবং নিষেধও করা হয়নি, তাই মুছল্লীদেরকে বরাতের রাতের ফযীলত ও ইবাদত-বন্দেগীর নিয়ম-কানুন, তর্জ-তরীক্বা বাতিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত ওয়াজ-নছীহত করা অবশ্যই জায়িয ও প্রয়োজন। তাই বলে, সারা রাত্র ওয়াজ করে মুছল্লীদেরকে নামায, তিলাওয়াত, যিকির-আযকার, দোয়া মুনাজাত ইত্যাদি ইবাদত বন্দেগী হতে মাহরূম করা কখনোই শরীয়ত সম্মত নয়। বরং হাদীছ শরীফের খিলাফ। শুধু তাই নয় এতে হক্কুল ইবাদ নষ্ট করা হয়। আর হক্কুল ইবাদ নষ্ট করা কবীরা গুণাহর অন্তর্ভুক্ত। কারণ ওয়াজ বৎসরের যে কোন দিনেই করা যায়। কিন্তু বরাতের রাত্র বৎসরে মাত্র একবারই পাওয়া যায়। যদি কেউ পরবর্তী বৎসর হায়াতে থাকে তবেই সে বরাতের রাত্র পাবে। কাজেই এই মহামূল্যবান রাত্রকে শুধুমাত্র ওয়াজ করে ও শুনে অতিবাহিত করে দেয়া সুন্নতের খিলাফ।

আর সুন্নতের খিলাফ কাজ করে আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনাদের রেজামন্দী বা সন্তুষ্টি কস্মিনকালেও হাছিল করা সম্ভব নয়। মূলকথা হলো, বরাতের রাত্র মূলতঃ ইবাদত-বন্দেগীর রাত্র, সারা রাত্র ওয়াজ করে ইবাদত বন্দেগীতে বিঘ্ন ঘটানো এবং মানুষদেরকে ইবাদত থেকে মাহরূম করা সম্পূর্ণরূপেই শরীয়তের খিলাফ। এ ধরণের কাজ থেকে বেঁচে থাকা সকলের জন্যেই দায়িত্ব ও কর্তব্য।

[দলীলসমূহ- (১) আহকামুল কুরআন জাস্সাস, (২) কুরতুবী, (৩) রুহুল মাআনী, (৪) রুহুল বয়ান, (৫) ইহ্ইয়াউ উলূমিদ্দীন, (৬) কিমিয়ায়ে সা’য়াদাত, (৭) ইবনে মাজাহ, (৮) মিশকাত, (৯) মাছাবাতা বিসসুন্নাহ, (১০) মিরকাত, (১১) আশয়াতুল লুময়াত, (১২) লুময়াত, (১৩) শরহুত্ ত্বীবী, (১৪) তালিকুছ ছবীহ, (১৫) মুযাহিরে হক্ব, (১৬) আমালুল ইয়াউমি ওয়াল লাইলাতি ইত্যাদি]

শবে বরাতে হালুয়া-রুটি বা গোশত রুটি পাকানো
উল্লেখ্য, শবে বরাতে হালুয়া-রুটি অথবা অন্য কোন বিশেষ খাবার তৈরী করা শরীয়তে নাজায়িয নয়। শবে বরাত উপলক্ষে বিশেষ করে আমাদের দেশ ও তার আশ-পাশের দেশসমূহে যে রুটি-হালুয়ার ব্যাপক প্রচলন রয়েছে তার পিছনে ইতিহাস রয়েছে। ইতিহাসে উল্লেখ করা হয়েছে, পূর্ববর্তী যামানায় যখন বর্তমানের মতো বাজার, বন্দর, হোটেল-রেঁস্তরা ইত্যাদি সর্বত্র ছিলোনা তখন মানুষ সাধারণতঃ সরাইখানা, লঙ্গরখানা, মুসাফিরখানা ইত্যাদিতে ছফর অবস্থায় প্রয়োজনে রাত্রিযাপন করতেন। অর্থাৎ মুসাফিরগণ তাদের সফর অবস্থায় চলার পথে আত্মীয়-স্বজন বা পরিচিত জনের ঘর-বাড়ি না পেলে সাধারণতঃ সরাইখানা, মুসাফিরখানা ও লঙ্গরখানায় রাত্রিযাপন করতেন। আর এ সমস্ত মুসাফিরখানা, লঙ্গরখানা ও সরাইখানার দায়িত্বে যারা নিয়োজিত থাকতেন তারাই মুসাফিরদের খাবারের ব্যবস্থা করতেন।

বিশেষ করে মুসাফিরগণ শবে বরাতে যখন উল্লিখিত স্থানসমূহে রাত্রি যাপন করতেন তখন তাদের মধ্যে অনেকেই রাত্রিতে ইবাদত-বন্দেগী করতেন ও দিনে রোযা রাখতেন। যার কারণে উল্লিখিত স্থানসমূহের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিগণ খাবারের ব্যাবস্থা করতেন যাতে মুসাফিরদের রাত্রে ইবাদত-বন্দেগী করতে ও দিনে রোযা রাখতে অসুবিধা না হয়। আর যেহেতু হালুয়া-রুটি ও গোশ্ত-রুটি খাওয়া সুন্নত সেহেতু তারা হালুয়া-রুটি বা গোশ্ত-রুটির ব্যবস্থা করতেন। এছাড়াও আরবীয় এলাকার লোকদের প্রধান খাদ্য রুটি-হালুয়া বা রুটি-গোশ্ত। তারা ভাত, মাছ, ইত্যাদি খেতে অভ্যস্ত নয়। সেখান থেকে পর্যায়ক্রমে শবে বরাত উপলক্ষে হালুয়া-রুটির প্রচলন আমাদের দেশে ছড়িয়ে পড়ে। উল্লেখ্য, কোন আমলের ক্ষেত্রেই বদ রছম বা বদ প্রথার অনুসরণ করা জায়িয নেই।

এখন মাসয়ালা হচ্ছে- কেউ যদি শবে বরাত উপলক্ষে রছম-রেওয়াজ না করে বা নিজের ইবাদত-বন্দেগীর ব্যাঘাত না ঘটিয়ে উক্ত হালুয়া-রুটির ব্যবস্থা করে তাহলে তা অবশ্যই জায়িয। শুধু জায়িয নয় বরং কেউ যদি তার নিজের ইবাদত-বন্দেগী ঠিক রেখে অন্যান্যদের জন্য যারা রাত্রিতে ইবাদত-বন্দেগী করবে ও দিনে রোযা রাখবে তাদের ইবাদত-বন্দেগী ও রোযা পালনের সুবিধার্থে হালুয়া-রুটি বা গোশ্ত-রুটি অথবা আমাদের দেশে প্রচলিত খাদ্যসমূহের কোন প্রকারের খাদ্যের ব্যবস্থা করে তা অবশ্যই অশেষ ফযীলত ও নেকীর কারণ হবে।

হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে-

عن حضرت عبد الله بن سلام رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم يا ايها الناس افشوا السلام واطعموا الطعام وصلوا الارحام وصلوا بالليل والناس نيام تدخلوا الجنة بسلام

অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহ পাক-উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, হে লোক সকল! তোমরা সালামের প্রচলন করো, মানুষকে খাদ্য খাওয়াও, আত্মীয়তার সর্ম্পক রক্ষা করো এবং মানুষ যখন ঘুমিয়ে থাকে তখন নামায পড়ো তাহলে শান্তির সাথে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে।” (তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, দারিমী)

তবে সতর্ক থাকতে হবে যে, এই কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে যাতে এমন পরিশ্রম তথা এমন সময় ব্যয় না হয় যাতে করে কারো শবে বরাতের ইবাদতে ঘাটতি হয়। আরো সতর্ক থাকতে হবে যে, খাদ্য বিতরণ যেনো আত্মীয়-স্বজন বা প্রতিবেশীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে বরং এক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে যেনো অভাবগ্রস্তদের প্রাধান্য দেয়া হয়।

১১| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:১৬

সকাল>সন্ধা বলেছেন: তিন ও চার নং উত্তর জাই দেয়া হওকনা কেন এর কোন বিরুধীতা হবেনা মনে হয় কারণ নবীজীর গুন গান কাফির, মুনাফিক ও শয়তানের পদাঙ্ক অনুশারীরা কখনো পছনাদ করবেনা।

১২| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:২৭

মুনসীমাহফুজ বলেছেন: ৫ নং কমেন্টে rafiq buet বলেছেন: হাদীস শরীফে এসেছে - নবীজী সাঃ বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সর্বপ্রথম আমার নূর সৃস্টি করেন।

@ rafiq buet জনাব আপনার এই হাদীসটি জাল হাদীস, মানে নাবী (সাঃ) এর নামে ডাহা মিথ্যা কথা। (দেখুন সিলসিলাহ আহাদীসিস যায়িফাহ, ইসলামী ফাউন্ডেশন কতৃক অনুবাদ কৃত)।

১৩| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৫

মুনসীমাহফুজ বলেছেন: শবে বরাতের রাত্রি কি ভাগ্য রজনী?

সকল প্রশংসা একমাত্র আল্লাহ্‌র জন্য।

শবে বরাতের রাত্রি ভাগ্য রজনী নয়, এই রাতে কোন ভাগ্য রচনা করা হয় না, আল্লাহ্‌ আমাদের ভাগ্য অনেক আগেই রচনা করে রেখে দিয়েছেন। তবে আলেমদের মত হচ্ছে এই রাতে আল্লাহ্‌ তাঁর ফেরেশতাদের জানিয়ে দেন কারা কোন দিন মৃত্যু বরন করবে ইত্যাদি।

মূলতঃ এ রাত্রিকে ভাগ্য রজনী বলার পেছনে কাজ করছে সূরা আদ-দুখানের ৩ ও ৪ আয়াত দু’টির ভূল ব্যাখ্যা। তা হলোঃ

إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةٍ مُبَارَكَةٍ إِنَّا كُنَّا مُنْذِرِينَ* فِيهَا يُفْرَقُ كُلُّ أَمْرٍ حَكِيمٍ – سورة الدخان:3ـ4
আয়াতদ্বয়ের অর্থ হলোঃ “অবশ্যই আমরা তা (কোরআন) এক মুবারক রাত্রিতে অবতীর্ণ করেছি, অবশ্যই আমরা সতর্ককারী, এ রাত্রিতে যাবতীয় প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়”।

এ আয়াতদ্বয়ের তাফসীরে অধিকাংশ মুফাসসির বলেনঃ এ আয়াত দ্বারা রমযানের লাইলাতুল ক্বাদরকেই বুঝানো হয়েছে। যে লাইলাতুল কাদরের চারটি নাম রয়েছে: ১. লাইলাতুল কাদর, ২. লাইলাতুল বারা’আত, ৩. লাইলাতুচ্ছফ, ৪.লাইলাতুল মুবারাকাহ। শুধুমাত্র ইকরিমা (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, এ আয়াত দ্বারা শা’বানের মধ্যরাত্রিকে বুঝানো হয়েছে। এটা একটি অগ্রহণযোগ্য বর্ণনা।

আল্লামা ইবনে কাসীর (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আলোচ্য আয়াতে ‘মুবারক রাত্রি’ বলতে ‘লাইলাতুল ক্বাদর বুঝানো হয়েছে, যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেছেনঃ

إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ – سورةالقدر:1
আমরা এ কোরআনকে ক্বাদরের রাত্রিতে অবতীর্ণ করেছি। (সূরা আল-কাদরঃ১)।

আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেনঃ

شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِي أُنْزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ- سورة البقرة:185
রমযান এমন একটি মাস যাতে কোরআন অবতীর্ণ করা হয়েছে। (সূরা আলবাকারাহঃ১৮৫)।

যিনি এ রাত্রিকে শা‘বানের মধ্যবর্তী রাত বলে মত প্রকাশ করেছেন, যেমনটি ইকরিমা থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি অনেক দূরবর্তী মত গ্রহণ করেছেন; কেননা কোরআনের সুস্পষ্ট বাণী তা রমযান মাসে বলে ঘোষণা দিয়েছে’। (তাফসীরে ইবনে কাসীর (৪/১৩৭)।

অনুরূপভাবে আল্লামা শাওকানীও এ মত প্রকাশ করেছেন। (তাফসীরে ফাতহুল ক্বাদীর (৪/৭০৯)।

সুতরাং ভাগ্য রজনী হলো লাইলাতুল ক্বাদর যা রমযানের শেষ দশদিনের বেজোড় রাত্রিগুলো।

আর এতে করে এও সাব্যস্ত হলো যে, এ আয়াতের তাফসীরে ইকরিমা (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) মতভেদ করলেও তিনি শা’বানের মধ্য তারিখের রাত্রিকে লাইলাতুল বারা’আত নামকরণ করেননি।

আল্লাহ্‌ বলেছেন: কদরের রাতে কুরআন নাযিল করেছি, আবার অন্য সূরায় আল্লাহ্‌ বলেছেন: বরকতের রাতে কুরআন নাযিল করেছি।

একই ভাবে আমাদেরকে কদরের রাতে কুরআন নাযিল করা হয়েছে এবং বরকতের রাতে কুরআন নাযিল করা হয়েছে বলে দুই রাত বুঝিয়ে ব্যাক্কল বানানো হয়েছে। কিন্তু দুটি একই রাত।

১৪| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৪১

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আমাদের সকলের দায়িত্ব-কর্তব্য হলো- আল্লাহ পাক, উনার প্রিয়তম হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উনার শান-মান, মর্যাদা-মর্তবা উপলব্ধি করত উনার প্রতি যথাযথ তা’যীম-তাকরীম ও সম্মান প্রদর্শন এবং পরিপূর্ণ ছানা-সিফত করার মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উনাদের উভয়ের খাছ রেযামন্দি (সন্তুষ্টি)হাছিল করা।

@ সকাল সন্ধ্যা ১০০ ভাগ সহমত। আপনার উপর আল্লঅহ এবং রাসূল সা: এর রহমত ফয়ের বরকত নাজিল হোক।

আর যারা বলছেন রাসূল সা: মাটির তৈরী তারা কি কোরআনের এই আয়াতটি লক্ষ্য করেন নি-
" ইন্নাল্লাহা ওয়া মালায়িকাতিহি ওয়া সাল্লু আলানাব্যিয়ি......
ইয়া আইয়ুহাল্লাজিনা আমানু ওয়া ষাল্লু আলাইহি মুতাসলিমা.... "

আল্লাহ নিজে ফেরেশতাদের নিয়ে রাসূল সা" এর উপর দরুদ পড়েন, হে মুমিনগণ তোমরাও উত্তম মাহফিলের সাথে দরুদ পড়।"

আল্লাহর এই মর্যাদা কি একজন মাটির মানুষের জন্য!!!!!!!

তিনি নূরুন আলা নূর। সৃষ্টি আদি ও অন্তের ণূর। আউয়ার ওয়াল আখের -শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তিনি রাসূল।

১৫| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৬

বিলাসী বলেছেন: একমাত্র পথভ্রষ্টরাই বলে যে রাসূল সা: নূরের তৈরী, অত্যান্ত নিভ্ররযোগ্য তাফসীর ইবনে কাসির খুলে দেখুন উপরোক্ত আয়াতের সঠিক ব্যখ্যা কী আছে। আশা করি ভূল দূর হবে।

১৬| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২২

রিয়াদ হাকিম বলেছেন: সকাল>সন্ধা বলেছেনঃ
---
হাদীছ শরীফের বিখ্যাত ও মশহুর কিতাব ‘মিশকাত শরীফে’ উল্লেখ আছে, “হযরত আব্দুর রহমান বিন আইশ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। উনি বলেন, আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আমি আমার রবকে উত্তম ছূরত মুবারকে দেখেছি। আমার রব বললেন, (হে আমার হাবীব!) মুকার্‌রব ফেরেশ্‌তাগণ কোন বিষয়ে আলোচনা করছে? আমি বললাম, আপনিই অধিক জানেন। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, অতঃপর মহান আল্লাহ পাক উনার রহমতের হাত আমার দু’কাঁধের মধ্যখানে রাখলেন। আমি আল্লাহ পাক উনার ফয়েজের শীতলতা আমার মধ্যে অনুভব করলাম। অতঃপর আসমান-যমীনের সকল বিষয় ও বস্তুর ইলম আমার অর্জিত হয়ে গেল।”
---
সকাল>সন্ধা উক্ত হাদিসের ব্যাখ্যা ও উল্লেখ করেছেন যা আমি এখানে কপি পেস্ট করলাম না। এখানে যে হাদিসটি উদ্ধৃত হয়েছে তা নিশ্চয়ই মিরাজের ঘটনার বর্ননা (Correct me if I am wrong)।
---
আমি জানি, নবীজি (সাঃ) যখন মিরাজ হতে আসলেন এবং ঘটনা মক্কার লোকেরা জানলো, তখন তারা নবীজিকে নানান প্রশ্ন করে ঘটনার সত্যতা জানতে চেয়েছিলেন। তন্মধ্যে কিছু প্রশ্ন করা হয়েছিল মসজিদুল আকসা (المسجد الاقصى) – এর গঠন সম্পর্কে। তখন আল্লাহ হযরত জিব্রীল (আঃ) কে যমীনে পাঠিয়ে দেন। জিব্রীল (আঃ) নবিজীর সামনে পুরো মসজিদুল আকসার নকশা তুলে ধরেন এবং নবিজী সে নকশা দেখে দেখে উত্তর দিতে থাকেন।
- এই ঘটনার কথা আমি বহু সুন্নি আলেমের মুখ থেকে শুনেছি।
আমার প্রশ্ন হলো মিরাজের রাতে যদি আসমান-যমীনের সকল বিষয় ও বস্তুর ইলম আল্লাহ নবিজি কে দিয়ে থাকেন তাহলে জিব্রীল (আঃ) কে নবিজীর সামনে পুরো মসজিদুল আকসার নকশা তুলে ধরতে হলো কেন?

১৭| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৫

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: রাসুল(সঃ) বলেন, ‘ আমার পরে ১২জন ইমাম পযন্ত ইসলাম সমুন্নত থাকবে এবং তারা কুরাইশ বংশ থেকে ’(বুখারি,হাদিস নং৬৭১৬)।মুসলিম শরিফের একটি হাদিসঃ’যে তার যামানার ইমামকে না চিনে ইন্তেকাল করলো,তার ইন্তেকাল জাহেলিয়াতের ইন্তেকাল ’।
এই হাদিসের সমথনে কোরানে বনিত হয়েছেঃ’স্মরন করো সেদিনের কথা যেদিন তোমাদেরকে তোমাদের ইমামসহ ডাকা হবে।সে দিন যাদের আমলনামা তাদের দান হাতে দেয়া হবে,খুশী মনে সে তা পাঠ করবে,কারো উপর কোন জুলুম করা হবে না’(সুরা বনি ইস্রাইলঃ৭১)।১২ ইমাম সম্পকে রাসুল(সঃ) বলেন,সালমান আল ফারসী থেকে নিভরযোগ্য সুত্রে বনিত হয়েছে (বইঃমিসবাহুস শারিয়াহ,লেখকঃইমাম জাফর সাদেক আঃ)- “আমি রাসুলের(সঃ) কাছে উপস্থিত হলাম,তিনি আমার দিকে তাকালেন এবং বললেনঃ ‘হে সালমান,আল্লাহ কোন নবী বা রাসুলকে পাঠান না যদি তার সাথে থাকে ১২ জন ’ ।‘ইয়া রাসুলুল্লাহ,আমি তা দুই কিতাবের লোকদের কাছ থেকে জেনেছি ’ ।‘হে সালমান,তুমি কি আমার ১২ জন সদারকে চেনো,যাদেরকে আল্লাহ আমার পরে ইমাম হিসেবে নিবাচন করেছেন?’
‘ আল্লাহ ও তাঁর রাসুল(সঃ) ভাল জানেন।‘
‘ হে সালমান,আল্লাহ আমাকে সৃষ্টি করেছেন পবিত্রতম আদি নুর থেকে এবং আমাকে ডাকলেন এবং আমি তার আদেশ মানলাম।এরপর তিনি আলীকে (আঃ) আমার নুর থেকে সৃষ্টি করলেন এবং তিনি তাকে ডাকলেন এবং সে আদেশ মানলো।আমার নুর ও আলীর নুর থেকে তিনি সৃষ্টি করলেন ফাতিমাহকে(আঃ);তিনি তাকে ডাকলেন এবং সে আদেশ মানলো।আমার,আলীর ও ফাতিমাহর(আঃ) নুর থেকে সৃষ্টি করলেন আল হাসান ও আল হোসাইনকে(আঃ)।তিনি তাদের ডাকলেন এবং তাঁরা তাঁর আদেশ মানলো।আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে তাঁর ৫টি নাম থেকে নাম দিয়েছেন। আল্লাহতায়ালা হলেন আল মাহমুদ(প্রশংসিত) এবং আমি মুহাম্মাদ(প্রশংসার যোগ্য), আল্লাহতায়ালা হলেন আল আলী(উচ্চ) এবং এ হলো(আঃ)(যে উচ্চ ঞ্ছানীয়), আল্লাহতায়ালা হলেন ‘আল ফাতির(যিনি শুন্য থেকে সৃষ্টি করেন) এবং এ হল ফাতিমাহ(আঃ),আল্লাহতায়ালা হলেন তিনি যার কাছে আছে হাসান(অন্যের জন্য কল্যান) এবং এ হল হাসান,আল্লাহতায়ালা হলেন মুহাসসিন(পরম সুন্দর) এবং এ হল হুসাইন।তিনি ৯ জন ইমামকে সৃষ্টি করলেন আল হুসাইনের(আঃ) নুর থেকে এবং তাদেরকে ডাকলেন এবং তারা তাঁর আদেশ মানলো-আল্লাহতায়ালা উঁচু আকাশ,বিস্তৃত পৃ্থিবী,বাতাস,ফেরেশ্তা ও মানুষ সৃষ্টি করার আগেই আমরা ছিলাম নুর যারা তাঁর প্রশংসা করতো,তাঁর কথা শুনতো এবং তাঁকে মেনে চলতো।‘

@যারা বলে রাসূল সা: মাটির তৈরি তারা কতইনা বোকার রাজ্যে বাস করে। নিশ্চয়ই যে জানে আর যে জানেনা উভয়ে সমান নয়।
তারা না জানার দলে।

আর যারা সেই মহত্তম বানী আমি তোমাদের মতউ মানুষকে শাব্দিক অর্থে ভাবছে তারাও ।ঐ গোত্রের।

মহতের প্রেম থেকে তঁার সাধারন হবার দাবী তাঁর ঔদার্য। তার মানে তিনি তেমন নন।
ইশ্তর ছন্দ্র বিদ্যাসগার, ইমাম গাজ্জালী প্রমূখ মনীষিরা বলেছেন- আমি কিছূই জানি না! বা আমি জ্ঞান সাগরের বালুকা বেলায় বালুর কটা দানা নাড়াচাড়া করেছি মাত্র!...

এই না জানা কি আক্ষরিক?

এই না জানা মানে কি মূর্খতা?

তবে নবীজির সাধারন স্বীখারোক্তির ঔদার্য কেন অনুভবে আসেনা!!!

১৮| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০৫

সকাল>সন্ধা বলেছেন: এই ঘটনার কথা আমি বহু সুন্নি আলেমের মুখ থেকে শুনেছি।
আমার প্রশ্ন হলো মিরাজের রাতে যদি আসমান-যমীনের সকল বিষয় ও বস্তুর ইলম আল্লাহ নবিজি কে দিয়ে থাকেন তাহলে জিব্রীল (আঃ) কে নবিজীর সামনে পুরো মসজিদুল আকসার নকশা তুলে ধরতে হলো কেন?
উত্তর:
রিয়াদ হাকিম: সব কিছুর উত্তর আমার জান নেই তবে এই বষয়ে আমি আকলি দলীল দিয়ে বলতে পারি দেখেন আপনার যদি কাজে লাগে:
নবীজি নিজ থেকে কোন কথা বলেন না। কারণ তিনি ওহি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। সৃষ্টির সব ইলিম দান করা হয়েছে কিন্তু তিনি তত টুকু বর্ণনা করেছেন যত টুকু আল্লাহ্ পাক বলতে র্নিদেশ দান করেছেন।

১৯| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:২৫

সালমা শারমিন বলেছেন: Apnader shobar kothai shunlam, 3/4 jon kotha bolecen dolil diyei kotha bolesen. but ami bujhte parci na, eki jnisher 2 rokom dolil ki kore hoy?

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:২৫

সালমা শারমিন বলেছেন: Apnader shobar kothai shunlam, 3/4 jon kotha bolecen dolil diyei kotha bolesen. but ami bujhte parci na, eki jnisher 2 rokom dolil ki kore hoy?

২০| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০৫

ইখতামিন বলেছেন:
বিষয়টা আসলেই খুব জটিল আকার ধারণ করেছে দেখছি। কেউ বলছেন যে, আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ (স.) নূরের তৈরি। এই ব্যাপারে তাঁদের কাছে যথেষ্ট প্রমাণও রয়েছে। আবার কেউ বলছেন: নবীজী মাটির তৈরি। তাদেরও কিছু প্রমাণ দেখলাম। এখন আমি কী ভাববো. সেটাই চিন্তা করছি। তবে কিছুই বুঝতে পারছিনা। পরে কুরআনে একটা আয়াতে দেখলাম, তাতে যা পেলাম তা হলো~~~

قُلْ إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ يُوحَى إِلَيَّ أَنَّمَا إِلَهُكُمْ إِلَهٌ وَاحِدٌ فَمَن كَانَ يَرْجُو لِقَاء رَبِّهِ فَلْيَعْمَلْ عَمَلًا صَالِحًا وَلَا يُشْرِكْ بِعِبَادَةِ رَبِّهِ أَحَدًا

বাংলাঃ বলুন, আমিও তোমাদের মতই একজন মানুষ, আমার প্রতি প্রত্যাদেশ হয় যে, তোমাদের ইলাহই একমাত্র ইলাহ। অতএব, যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সাক্ষাত কামনা করে, সে যেন, সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং তার পালনকর্তার এবাদতে কাউকে শরীক না করে।

ইংরেজিঃ Say (O Muhammad SAW): ”I am only a man like you. It has been inspired to me that your Ilâh (God) is One Ilâh (God i.e. Allâh). So whoever hopes for the Meeting with his Lord, let him work righteousness and associate none as a partner in the worship of his Lord.”

(সূরা- কাহফ্, আয়াত- ১১০)

এখন আমি যতটুকু বুঝতে পেরেছি তা হলো, নবীজির পবিত্র আত্মা (রূহ) মহান সৃষ্টিকর্তা পৃথিবী সৃষ্টির অনেক অনেক আগেই তৈরি করেছিলেন। তবে তা ছিল নূরের তৈরি। কিন্তু প্রায় ১৫০০ বছর পূর্বে তিনি যখন আমাদের মানব সমাজে জন্মগ্রহণ করলেন, তখন তার দেহখানা তৈরি করা হয়েছে মাটির তৈরি রক্ত মাংসে।

বিষয়টি যদি এভাবে দেখা হয়, তাহলে আমার মনে হয় সকলের ব্যাখ্যাই মিলে যাবে। আমি বিশ্বাস করি- কুরআন এমন একটা গ্রন্থ, যার একটি বাক্য অন্য আরেকটি বাক্যের সাথে সাংঘর্ষিক নয়। আমাদের ব্যাখ্যায় ভুল হতে পারে। তবুও কুরআনে ভুল থাকতে পারে না...

যারা আরবী ভালো বুঝবেন, তাদের জন্য এই লিংকটি দেয়া হলো।

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:২৬

সালমা শারমিন বলেছেন: ভাই, ভাল একটা উত্তর দেয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ

২১| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৮:১০

বশর সিদ্দিকী বলেছেন: ১ এর উত্তর হচ্ছে মুহাম্মদ স: আমাদের মতই মানুষ। একাধিক হাদিস এবং আয়াতে তা প্রমানিত।

২ এর উত্তর হচ্ছে না ইসলামে এধরনের কোন রতেরে কথা কোরান হাদিসে নেই। এটা একটা মনগরা বানানো উৎসব।

২২| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১:১১

মুদ্‌দাকির বলেছেন: পড়ব

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.