নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিষয়টা এত সহজে তারা বুঝবেন, সেটা আমি আশা করি নাই। আমি গত ২১/০৯/ ২০১৪ তারিখে "রাইস বাকেট চ্যালেঞ্জ, পথশিশুদের আম উৎসব এবং সমাজসেবার নামে কিছু উপযোগিতাহীন স্থুলতার প্রদর্শনী" শিরোনামে ( Click This Link ) লেখা পোস্ট করেছিলাম বিভিন্ন ব্লগ সাইটে । সেই লেখা আমি ফেসবুকে আমরা খাটি গরীবের পেজে এবং রাকিব কিশোর, রোহিত হাসান কিছলুসহ তাদের কিছু প্রধান ব্যক্তির সাথে শেয়ার করেছিলাম। আমার উদ্দেশ্য ছিল তাদের এই উপযোগিতাহীন কাজটির অন্তসারশূন্যতা তাদের ধরিয়ে দেয়া এবং তারা যাতে এর বদলে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সত্যিকার উপকার হয় বা কাজে লাগে এমন কিছু কাজ শুরু করে সেই তাগিদ দেয়া।
পথশিশুদের আম উৎসবের সমালোচনা করে লেখা আমার লেখাগুলো অন্তরজালে ভালই আলোড়ন তুলেছিল। ‘পথশিশুদের আম উৎসব’ লিখে গুগলে সার্চ দিলে আমার লেখাগুলো ২ বা ৩ নম্বরে চলে আসতো।
প্রথমেই তারা বিষয়টি সহজভাবে মেনে নিতে চায়নি। ব্লগে এবং ফেসবুকে তাদের অনেক সদস্যই আমার সাথে তুমুল বিতরক চালিয়ে গিয়েছিল। তাদের সমরথন করে কিছু আওয়ামী ব্লগার এবং কিছু বাম নাস্তিকও আমার প্রস্তাবনার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে তীব্র যুক্তিতর্ক চালিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি, এদের বেশিরভাগেরই সমাজসেবামূলক কাজের কোন অভিজ্ঞতাই নেই বললেই চলে।
যাই হোক, রাকিব কিশোর আর ‘আমরা খাটি গরীব’ গ্রুপ সম্প্রতি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জানিয়ছেন যেঃ
।।।। “সর্বসাধারণের অবগতির জন্য জানানো যাইতেছে যে - "আমরা খাঁটি গরীব..." গ্রুপ এই বছর থেকে আর "পথশিশুদের আম উৎসব" করবে না।
"আম উৎসব" মূলত শুরু হয়েছিলো ২০১০ সালে - এর মূল উদ্দেশ্যই ছিলো অনলাইনে সময় কাটানো তরুনদের কিছু সমাজসেবার দিকে এগিয়ে আনা। গত সাড়ে পাঁচ বছরে বছরে এই গ্রুপের মেম্বার শুন্য থেকে একুশ হাজারে এসে দাঁড়িয়েছে, এরা সবাই সমাজসেবী, এরা সবাই দরিদ্র্যদের একটু হাসির জন্য কাজ করে...
গত সাড়ে পাঁচ বছরে এই গ্রুপ ঢাকা থেকে শুরু করে পৌছে গেছে দেশের প্রতিটি প্রান্তে। বাংলাদেশের সব জেলায় এই গ্রুপের মেম্বার রয়েছে, এরা সবাই অচেনা একে অপরের কাছে, কিন্তু একটা দিকে সবাই এক - এরা, এই অচেনা সব বন্ধুরা সবাই মিলে মানুষের জন্য কাজ করেছে, করছে, করবে... smile emoticon
"আমরা খাঁটি গরীব..." গ্রুপটির প্রাথমিক উদ্দেশ্য সফল হয়েছে, এখন এই দেশের হাজার হাজার ছেলেমেয়ে, শত শত গ্রুপ একাট্টা হয়ে মানুষের জন্য কাজ করে। অনলাইনের মাধ্যমে, একে অপরকে না চিনে না জেনে, স্রেফ বায়বীয় বন্ধু হয়েও যে সবার জন্য কাজ করা যায় সেটা আমরাই প্রথম সারা দুনিয়াকে জানিয়েছিলাম। এখন সবাই জানে যে এটা সম্ভব, এভাবেও কাজ করা যায়।
সুতরাং, আমাদের প্রাথমিক দায়িত্ব শেষ। আমরা "আমরা খাঁটি গরীব..." এই ব্যানারে, বা এই নামে আর কোন প্রোগ্রাম, ইভেন্ট, অনুষ্ঠান-এর আয়োজন করবো না। আজ থেকে "আমরা খাঁটি গরীব..." নামধারী সকল কিছুই বন্ধ হয়ে গেলো...
আমরা ফিরে আসবো নতুন নামে, নতুন কিছু কাজ নিয়ে - যেখানে মানুষের জন্য আরো নিবিড়ভাবে, আরো গভীরভাবে, নতুন উদ্যমে, নতুনভাবে কাজ করতে পারবো, এবার আমরা অনেক বেশী ফোকাসড হয়ে কাজ করবো। এতদিন আমরা মানুষের জন্য কাজ করেছি, এবার থেকে কাজ হবে মানবিকতা নিয়ে...
ধন্যবাদ আপনাদের সবাইকে - যারা এতদিন ধরে এই গ্রুপের ব্যানারে মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন, ধন্যবাদ আপনাদেরকে, যারা সময়ে অসময়ে নিজে না খেয়েও এই গ্রুপের মাধ্যমে মানুষের দুঃখ নিবারণ করে গেছেন, ধন্যবাদ আপনাদেরকে, যারা আমাদের ক্রমাগত সাহস যুগিয়েছেন - যাদের চোখের দিকে তাকিয়েই সেদিনের ছোট্ট আমরা অনেক বড় বড় কাজ করে ফেলেছিলাম... আর ধন্যবাদ এই গ্রুপের সেই অসাধারণ ভলান্টিয়ারদেরকে - যারা জগতের সবকিছু তুচ্ছ করে স্রেফ মনে রকথা শুনেছিলো... তোমাদের আমি আগেও বলেছিলাম - আবারো বলি - তোমরা বাংলাদেশের সেরা মানুষের মধ্যে সবচাইতে উপরের দিকে থাকবে ।
বস্তুত, "আমরা খাঁটি গরীব..." গ্রুপের সকল কার্যক্রম এখানেই শেষ, এই গ্রুপ এই নামে, এই ব্যানারে আর কোন কাজ করবে না...
আসছে নতুন কিছু, কিছুদিনের মধ্যেই সেটি জানিয়ে দেয়া হবে...
সবাইকে ধন্যবাদ...”।।।।।
তাদের পোস্টটির স্ক্রীণশট নিচে দেয়া হলঃ
তাদের এই ঘোষণার মাধ্যমে আসলে রাকিব কিশোর বা আমরা খাটি গরীব গ্রুপ, কারোই পরাজয় ঘটে নাই। তাদের নিজেদেরই জয় হয়েছে, এইজন্য যে তারা পুরো ব্যাপারটি আসলে বুঝতে পেরেছেন এবং সেই অনুযায়ী নিজেদের কাজেকর্মে পরিবরতন এনে আরও ভালভাবে সমাজের মানুষদের জন্য কিছু করার প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেছেন। পরাজয় হয়েছে সেইসকল আওয়ামী, বাম আর মাথামোটা ব্লগারদের, যাদের কিনা সমাজসেবা সম্মন্ধে কোন ধারণা বা অভিজ্ঞতা নেই বললেই চলে, যারা কিনা এই ব্যাপারে গভীরভাবে কোন চিন্তাভাবনাই করেনা, অথচ নিজেদের সীমিত জ্ঞানের ভিতর থেকে সমানে চাপা পিটিয়ে চলেছিলেন।
কিন্তু, রাকিব কিশোর আর খাটি গরীব গ্রুপের সাম্প্রতিক এই ঘোষণা তাদের নিজেদের পাশাপাশি এইসব পাবলিককেও নতুন কিছু ভাবার অবকাশ দিয়েছে বলেই মনে করি।
ভুল সিদ্ধান্তে দিনের পর দিন চলার চাইতে, গোয়ারতুমি করে তা আকড়ে ধরে রাখার চাইতে সেটা সংশোধণ করে নতুনভাবে পথ চলাই উত্তম আর উদারপন্থি মানুষের কাজ।
রাকিব কিশোর ভাই সম্প্রতি আমাকে ফেসবুকে তার ফ্রেন্ডলিস্ট থেকে বাদ দিয়ে দিয়েছেন। এতে আমার কোন দুঃখ নেই। সমালোচনার আড়ালে আমার লেখায় তাদের জন্য শুভকামনাও ছিল। সেই শুভকামনার ছোয়া তারা পেয়েছিলেন কিনা জানিনা, তবে যে উদ্দেশ্যে আমার লেখাটি ছিল, সেই উদ্দেশ্য সার্থক হওয়াটাকেই আমি বড় বলে মনে করছি।
নতুনভাবে, নতুননামে ‘আমরা খাটি গরীব’-এর কাজকর্ম ও প্রচেষ্টা সফল ও সার্থক হোক এই কামনা করি।
২৪ শে মে, ২০১৫ দুপুর ২:৪৫
শেহজাদ আমান বলেছেন: @ আহমেদ জী এসঃ সেটাই ভাই। ১০০ জন মানুষকে একবেলা খাওয়ানোতে আসলে কারই কিছু উপকার হয়না। কিন্তু, ১ জন মানুষের ১০০ বেলার আহারের ব্যবস্থা করা সত্যিকার অরথেই একটা বড় কাজ।
তবে, আশার ব্যাপার হল, 'আমরা খাটি গরীব'-এর মত অনেক সংগঠনই এই ব্যাপারটা বুঝতে পারতেছে এবং নিজেদেরকে পরিবর্তন করে নিচ্ছে !
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে মে, ২০১৫ রাত ১০:১৪
আহমেদ জী এস বলেছেন: শেহজাদ আমান ,
এখন এই দেশের হাজার হাজার ছেলেমেয়ে, শত শত গ্রুপ একাট্টা হয়ে মানুষের জন্য কাজ করে।
আমার মনে হয় , "সকল মানুষের মঙ্গল হোক" এমন একটা আবেগীয় তাড়নায় এই নতুন প্রজন্ম ছুটে চলেন ।
এই আবেগের সাথে অনুভব ও তা ধারন করে সুদূর প্রসারী ভাবনা-চিন্তা নিয়ে এগুনোর সময় এসেছে আজ যা তাদের আবেগীয় আকাঙ্খাকে নেতিবাচক প্রভাবের বাইরে নিয়ে কাজ করতে শেখাবে । রোমান্টিসিজম বা এ্যাডভেঞ্চারিজম না হয়ে তা সত্যিকার অর্থে রিয়েলিষ্টিক হয়ে ওঠাটাই আসল ।
এ অভাগা দেশটি এইসব হাজার হাজার ছেলেমেয়েদের মুখের দিকে চেয়ে আছে । তারা যেন সেটা মনেপ্রানে দায়িত্বশীলতার সাথে অনুধাবন করেন সে প্রার্থনা রইলো ।