![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
A competent and confident freelance Journalist, writer, author of 37 popular science (non-fiction)books and novel for kids working as a corporate digital documentary maker on educational affairs. Familiar with information approaches, tools, methods, logics for planning, executing and monitoring printing and information strategies. Working for the public and knowledge of social, political and development issues at home and abroad. Strong analytical skill with some research background. Has an Intimate knowledge of modern methods of publicity, public relation, copy writing, publication, and art criticism. Quick learner, well conversant and smart. Also possesses a poetic instinct to express thought in a lucid way.
রানা প্লাজার শাহিনার গল্প
প্রতি দিনের মতো আজও শাহিনা খুব সকালে ঘুম থেকে ওঠে ।ফজরের নামায পড়ে । রাতের পানি দেয়া ভাতে মরিচ পিষে পিয়াজ কেটে খাবার ঝামেলা মেটায় !তরকারী রয়েছে সামান্যই তাই নিজে না খেয়ে সন্তানের জন্য রেখে দিলেন ।ছেলেটা এখনও ঘুমে ।উঠবে সেই আটটায় ।তার আগেই শাহিনাকে কাজে যেতে হবে ।গতকাল বিল্ডিংয়ে ফাটল ধরেছে ।কেন যেন মনটা সায় দিচ্ছে না কাজে যেতে।সুপার ভাইজারের ফোনে আশ্বস্ত হলো ।নাহ !তেমন কোন সমস্যা নেই ।তাছাড়া ছেলেটা বায়না ধরেছে একটা ভাল স্কুল ব্যাগের ।শত খন্ড সেলাই পড়ে স্কুল ব্যাগটা আর ব্যাগ নেই সুতার কারখানা হয়ে গেছে ।কাজে গেলে কিছু টাকাও পাওয়া যাবে আর নিজের কাছেও গচ্ছিত কিছু আছে ।ফেরার পথে ছেলেটার জন্য একটা স্কুল ব্যাগও কেনা হবে ।রোজকার মতো আজও ছেলের স্কুলের ড্রেস গুছিয়ে,ভাত তরকারী ঢেকে রেখে বালিশের পাশে ১০ টাকার নোটটা রেখে দিল ।দুপুর বেলা ওর বড্ড ক্ষুধা পায় তাই টিফিনের জন্য টাকাটা রেখে যায় !
সকাল ৮ টা ৪৫ মিনিট ।হটাত করে যেন পুরো আকাশ ভেঙ্গে পড়ল শাহিনার মাথার উপর ।কিছু বুঝে ওঠোর আগেই নিজেকে আবিস্কার করল ইট আর কংক্রিটের স্তুপের মধ্যে ।কোমড়ের নীচের অংশের কোন অনুভুতি নেই ।দুর থেকে অজস্র মানুষের অস্পষ্ট কোলাহল শোনা যাচ্ছে ।পায়ের কাছে কি যেন আটকে আছে ।যতদুর শক্তি আছে তাই দিয়ে হাতড়ে পাতড়ে দেখলো একটা খন্ডিত মাথা ।চোখ দুটো এখনও খোলা ।মৃত্যুর ঠিক আগে নিশ্চয়ই এমন বড় চোখে পৃথিবীটাকে দেখতে চেয়েছিল ।অন্য যেকোন সময় শাহিনা ভয়ে আতকে চিতকার করে উঠত ।আজ উঠল না,গলায় বিন্দুমাত্র জোর শক্তি নেই ।পরম মমতায় হাত দিয়ে চোখ দুটো বন্ধ করে দিল ।হয়ত তার চোখ এমনি করে কেউ বন্ধ করে দেবে এই আশায় ।শাড়ীর আচলটা উপড়ে উঠে আছে ।হাত দিয়ে আবিস্কার করল আচলে এখনও বাধা আছে ২৭০ টাকা ।এই প্রথম কেদে উঠল শাহিনা ।সারা জীবন এই টাকার জন্য কত কষ্টই না করেছে ।মৃত্যুর ভয় আছে জেনেও সামান্য ২০০ টাকা হাজিরার জন্য কাজে এসেছে ।অথচ আজ এই টাকা কোন কাজেই আসছে না ।শুধু একটাই দু:খ ছেলেটাকে একটা নতুন স্কুল ব্যাগ কিনে দেয়া হলো না ।
হটাত মানুষের চিতকার চেচামেচি স্পষ্ট হতে লাগল ।মনে হল মাথার উপর দিয়ে কেউ হেটে যাচ্ছে ।কান্না,হাহাকার,আর্তনাদ,চেচামেচি এক নারকীয় পরিবেশ । শাহিনা আপ্রান চেষ্টা করছে চিতকার করতে কিন্তু কন্ঠ স্বায় দিচ্ছে না ।হটাত কে যেন মা বলে ডাক দিল ।আরে এইত আমার খোকা ।খোকা আমাকে ডাকছে । শাহিনা সব শক্তি ব্যায় করে চেষ্টা করছে সাড়া দিতে " আমি এইখানে তুই ফিরে যা,যেকোন সময় দেয়াল ভেঙ্গে পড়তে পারে এইখানে থাকাটা বিপদজনক !তুই মরে যাবি তুই বিল্ডিং থেকে নাম,ফিরে যা বাপ ফিরে যা ।গল্পটি শেষ করতে পারলাম না ।কম্পিউটারের স্ক্রীন বার বার ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে ।ভিতর থেকে দলা পাকিয়ে আসছে কান্না
©somewhere in net ltd.