নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আল্লাহ ছাড়া আর কোন সৃষ্টিকর্তা নেই । হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল ।

েশখসাদী

আল্লাহ ছাড়া আর কোন সৃষ্টিকর্তা নেই । হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল ।

েশখসাদী › বিস্তারিত পোস্টঃ

মহানবী (সাঃ) এর যে নির্দেশ পালন করতে হযরত উমর (রাঃ) আবু হুরায়রা (রাঃ) কে বাধা দিলেন ।

০২ রা জুলাই, ২০১২ দুপুর ১২:৫১

হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন আমরা রাসূলূল্লাহ এর খেদমতে উপস্হিত ছিলাম এবং উনার চর্তুপাশ্বে বসা ছিলাম । হযরত আবু বকর (রাঃ) এবং হযরত উমর (রাঃ) ও আমাদের সাথে ঐ মজলিসে উপস্হিত ছিলেন । এরই মধ্যে রাসূলূল্লাহ (সাঃ) আমাদের মাঝখান হতে উঠে কোন এক দিকে চলে গেলেন । তারপর তার ফিরে আসতে অনেক দেরী হচ্ছিল বলে আমরা শংকিত হয়ে পড়লাম যে , একাকী আমাদেরকে ছেড়ে গিয়ে তিনি কোন দূর্ঘটনায় পড়লেন কিনা ? এ চিন্তুায় আমরা অস্হির হয়ে গেলাম এবং সবাই উনার খোজে বেরিয়ে পড়লাম । সবার আগে আমিই অস্হির হয়ে উনার সন্ধানে বেরিয়ে পড়লাম । খুজতে খুজতে শেষ পর্যন্ত আনসারদের বনু নজ্জার গোত্রের এক বাগানে এসে পৈাছলাম । বাগানটি চার দেয়াল দ্বারা বেষ্টিত ছিলো । আমি এখানে এসে চারদিক ঘুরতে লাগলাম যে ভিতরে যাওয়ার কোন রাস্তা পাই কিনা । কিন্তু কোন রাস্তা খোজে পেলাম না । হঠাৎ দেখলাম যে একটি ছোট্র একটি নালা । যা বাহিরের একটি কুয়া থেকে বাগানের ভিতর প্রবাহিত হচ্ছে । আমি নিজেকে সংকুচিত করে এই সরু নালা দিয়ে বাগানের ভিতর পৈাছে গেলাম এবং রাসূলূল্লাহ (সাঃ) এর সামনে হাজির হলাম ।



রাসূলূল্লাহ (সাঃ) আমাকে দেখে বললেন, আবু হুরায়রা ? আমি উত্তর দিলামঃ হ্যা, ইয়া রাসূলূল্লাহ । তিনি বললেনঃ কিভাবে এখানে আসা হলো ? আমি বললামঃ ইয়া রাসূলূল্লাহ ! আপনি আমাদের মাঝে ছিলেন , হঠাৎ উঠে আসলেন । তারপর যখন দেখলাম আপনার ফিরতে দেরী হচ্ছে , তখন আমাদের আশংকা হলো যে, আমাদের থেকে পৃথক হয়ে একাকী আপনি কোন অসুবিধার সম্মুখীন হলেন কিনা । এই আশংকায় আমরা সবাই ঘাবড়ে গিয়ে বেরিয়ে পড়লাম । আর সবার আগে আমিই শংকিত হয়ে বেরিয়ে পড়লাম । শেষ পর্যন্ত আমি এ বাগানে এসে পৈাছলাম আর শিয়ালের মত শরীর কুচকে এই সরু পথেই কোন রকমে ঢুকে পড়লাম । অন্যান্য লোকেরাও আমার পেছনে রয়েছে ।



এমন সময় রাসূলূল্লাহ (সাঃ) নিজের পাদুকাদ্বয় আমার হাতে দিয়ে বললেনঃ আমার এই জুতা দুটি নিয়ে যাও এবং এ বাগান থেকে বের হবার পর এমন যে ব্যাক্তির সাথেই তোমার সাক্ষাৎ হয়, যে আন্তুরিক বিশ্বাস নিয়ে 'লা-ইলাহা ইল্লাহর' সাক্ষ্য দেয় তাকে জান্নাতের সুসংবাদ শুনিয়ে দাও ।



আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আমি সেখান থেকে বের হয়ে সামনে রওয়ানা দিলাম । সর্বপ্রথম যার সাথে আমার সাক্ষাৎ হলো তিনি হলেন হযরত উমর । তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, আবু হুরায়রা ! তোমার হাতে এ পাদুকাদ্বয়ের রহস্য কি ? আমি উত্তর দিলাম, এ দুটি হচ্ছে হুযুর (সাঃ) এর জুতা মোবারক । আমাকে তিনি এগুলো দিয়ে পাঠিয়েছেন যে, এমন যার সাথেই আমার সাক্ষাৎ হয়, যে আন্তরিক ভাবে লা-ইলাহা ইল্লাহর' সাক্ষ্য প্রদান করে , আমি যেন তাকে জান্নাতের সুসংবাদ শুনিয়ে দেই ।



আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, এই কথা শুনে হযরত উমর (রাঃ) আমার বুকে হাত দ্বারা এমন জোরে আঘাত করলেন যে, আমি চিৎ হয়ে পড়ে গেলাম । তারপর তিনি বললেন যে, পিছনের দিকে ফিরে যাও । আমি কাদঁতে কাদঁতে হুযুর (সাঃ) এর নিকট ফিরে আসলাম আর ওমরও আমার পেছন পেছন এসে হাজির হলেন ।



রাসূল (সাঃ) আমাকে এ অবস্হায় দেখে জিজ্ঞেস করলেন, আবু হুরায়রা ! তোমার কি হয়েছে ? আমি বললাম, ওমর (রাঃ) এর সাথে আমার সাক্ষাৎ হলো । আপনি আমাকে যে সুসংবাদ দেওয়ার জন্য পাঠিয়েছিলেন , আমি তাকে সেই সুসংবাদ শুনালাম , তখন তিনি আমার বুকের উপর এমন আঘাত করলেন যে আমি চিৎ হয়ে পড়ে গেলাম । আর তিনি আমাকে এও বললেন যে, পিছনে ফিরে যাও । রাসূল (সাঃ) তখন ওমর (রাঃ) কে লক্ষ্য করে বললেন যে, উমর তুমি কেন এমনটি করলে ?



হযরত উমর (রাঃ) নিবেদন করলেন, ইয়া রাসূলূল্লাহ ! আমার মাতাপিতা আপনার জন্য উৎসর্গীকৃত হউক । আপনি কি আবু হুরায়রাকে আপনার পাদুকাদ্বয় দিয়ে এজন্য পাঠিয়ে ছিলেন যে, সে এমন যার সাথেই সাক্ষাৎ করবে , যে আন্তরিকভাবে 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ'র সাক্ষ্য প্রদান করে , তাকেই যেন জান্নাতের সুসংবাদ শুনিয়ে দেয় । হুযুর (সাঃ) বললেন, হ্যা, আমিই তাকে একথা বলে পাঠিয়ে ছিলাম । উমর (রাঃ) বললেন, দয়া করে আপনি এরূপ করবেন না । কেননা, আমার আশংকা হয় যে, মানুষ একথা শুনে এর উপরই ভরসা করে বসে থাকবে (এবং আমল ও সাধনা থেকে উদাসীন হয়ে যাবে )। তাই তাদেরকে এভাবে আরো আমল করতে দিন । মহানবী (সাঃ) বললেন, আচ্ছা , তাদেরকে আমল করার জন্য ছেড়ে দাও ।

(মুসলিম)



ব্যাখ্যাঃ



হযরত উমর (রাঃ) কর্তৃক আবু হুরায়রা (রাঃ) কে এমন কঠোর ব্যবহার এর মর্ম উপলব্ধি করার জন্য সাহাবীদের মধ্যে উনার বিশেষ মর্যাদার প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে । তিনি মহানবী (সাঃ) এর সকল কর্মের সহযোগী এবং উপদেষ্টার মতো ছিলেন । সাহাবা কেরামগণও উনার মর্যাদা সম্পর্কে বিশেষ অবহিত ছিলেন । আর যেভাবে প্রত্যেক দলের বা পরিবারের বড় ব্যাক্তিটি ছোটদের শাসন করে তেমনি করে তিনি অন্য সাহাবীদের উপরও এরূপ আধিকার প্রয়োগ করতেন । সুতরাং বাহ্যিক দৃষ্টিতে এটা খারাপ মনে হলেও এর অর্ন্তনিহিত গুরুত্ব অনেক । মহানবী (সাঃ) থেকে শুরু করে প্রত্যেক সাহাবী-ই উম্মতের ভালো চাইতেন । তাই আবু হুরায়রা (রাঃ) এটা নিয়ে কোন উচ্চ বাচ্যও করেন নি ।



সূ্ত্রঃ মারেফূল হাদিস । প্রথম খন্ড । হযরত মাওলানা মুহাম্মদ মনজুর নোমানী (রহঃ)

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা জুলাই, ২০১২ দুপুর ১২:৫৯

রাজদরবার বলেছেন: সূ্ত্রঃ মারেফূল হাদিস । প্রথম খন্ড । হযরত মাওলানা মুহাম্মদ মনজুর নোমানী (রহঃ)

"মারেফুল হাদিস" বইটা কতটুকু সত্য??

০২ রা জুলাই, ২০১২ দুপুর ১:০৮

েশখসাদী বলেছেন:
পড়ার জন্য ধন্যবাদ । হাদিসের সূত্র হলো মুসলিম ।

২| ০৩ রা জুলাই, ২০১২ ভোর ৫:৩২

সূর্য বলেছেন: ভাই পইড়া মনে হইলো বাঁশের চেয়ে কঞ্চি দড় কথাটা আসলেই সত্যি।

০৩ রা জুলাই, ২০১২ ভোর ৫:৫২

েশখসাদী বলেছেন:
সবার সব কিছু বুঝার ক্ষমতা নাই ..তা আপনার মন্তব্য দেখে সত্য মনে হলো ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.