নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আল্লাহ ছাড়া আর কোন সৃষ্টিকর্তা নেই । হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল ।

েশখসাদী

আল্লাহ ছাড়া আর কোন সৃষ্টিকর্তা নেই । হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল ।

েশখসাদী › বিস্তারিত পোস্টঃ

অলৈাকিক কুরআনঃ লোহার উৎস সৈারজগতের বাইরে ।

১২ ই মার্চ, ২০১৯ সকাল ৭:৪১



কুরআন শরীফের ৫৭ নম্বর সূরার নাম হলো আল-হাদীদ । আল-হাদীদ আরবী শব্দ, এর বাংলা অর্থ হলো - লোহা । এটা কি একটা আশ্চর্য্য বিষয় না যে আল্লাহ কুরআন শরীফের একটা সূরার নাম রেখেছেন লোহা । এই লেখা পড়ার পর আশা করা যায় কিছুটা ধারণা করা যাবে কেন এই সূরার নাম আল্লাহ লোহা রেখেছেন । এই সূরার একটি মাত্র আয়াতে আল্লাহ সুবহানাতায়লা লোহার কথা উল্লেখ করেছেন । আয়াতটি হলোঃ
আর আমি নাযিল করেছি লৌহ, যাতে আছে প্রচন্ড রণশক্তি এবং মানুষের বহুবিধ উপকার।

আরবী "আঞ্জলনা" শব্দটির বাংলা অনুবাদ হলো- "পাঠানো" এবং যা আয়াতটিতে লোহার জন্য ব্যবহৃত হয়েছে । আল্লাহ বলছেন যে, তিনি মানুষের উপকারের জন্য লোহা পাঠিয়েছেন । মনে হচ্ছে যেন আল্লাহ বলছেন যে, লোহা খুবই শক্তিশালী ও মানুষের জন্য উপকারী তাই আল্লাহ মানুষকে লোহা দিয়েছেন ব্যবহার করার জন্য। বিষয়টা আপাতদৃষ্টিতে সেটা মনে হলেও বিষয়টা ঠিক তা নয় । এই আয়াতের মধ্যে আল্লাহ সুবহানাতায়ালা অনেক বড় একটা সংবাদ মানবজাতিকে জানিয়ে দিয়েছেন ।

যখন আমরা শব্দটির আক্ষরিক অর্থ বিবেচনা করি, যা অর্থ হয় "আকাশ থেকে শারীরিকভাবে পাঠানো হচ্ছে" যেমন বৃষ্টি এবং সূর্যের রশ্মির ক্ষেত্রে যা হয়, তখন আমরা বুঝতে পারি যে এই আয়াতটি খুব গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক অলৌকিক ঘটনাকে বোঝায়। কারণ, আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের গবেষণায় প্রমাণিত যে আমাদের পৃথিবীতে পাওয়া লোহার মহাকাশ থেকে সরাসরি ভাবে শারীরিকভাবে অন্য কোন বৃহৎ তারা সূমহ থেকে এসেছে।

লোহা এমন এক খনিজ পদার্থ, যা পৃথিবীতে তো নয়ই সৈারজগতের অন্য কোন গ্রহেও উৎপত্তি হয় নি । কারণ আমাদের সৈারজগতের সবচেয়ে বেশী তাপমাত্রা রয়েছে সূর্যে । বৈজ্ঞানিকদের মতে সূর্যের তাপমাত্রাও লোহার গঠনের জন্য অপর্যাপ্ত। সূর্যের উপরিভাগের তাপমাত্রা ৬,০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, এবং কেন্দ্রে তাপমাত্রা প্রায় ২০ মিলিয়ন ডিগ্রি সেলসিয়াস।
লোহা তৈরী হতে তাপমাত্রার প্রয়োজন কয়েক শত মিলিয়ন মিলিয়ন ডিগ্রি সেলসিয়াস , সেক্ষেত্রে লোহা তৈরীর জন্য সূর্যের চেয়েও আরও বড় আকারের তারা-র প্রয়োজন যেখানে তাপমাত্রা সেইরকম লেভেলে পৈাছে । এই রকম বিশাল আকারের কোন তারাতে যখন রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে লোহা তৈরী হয়, তারপর তৈরী হতে হতে একটি পর্যায়ে এসে সেই তারা আর লোহাকে তার ভিতর ধরে রাখতে পারে না । তখন প্রচন্ড উত্তাপে ও ভাড়ে এটা এক সময় বিষ্ফোরিত হয় - যাকে সুপার নোভা বলে । এই বিষ্ফোরণের ফলে লোহা মহাকাশের বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়ে । বৈজ্ঞানিকদের দৃঢ় বিশ্বাস পৃথিবীতেও এরকম করে লোহা অন্য কোন সুপান নোভা বিষ্ফোরিত হয়ে তারপর পৃথিবীতে সশরীরের পতিত হয়েছে । আল্লাহ সুবহানাতায়ালা এই বিষয়টাই সূরা হাদীদে আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন । যেহেতু বিষয়টা একটি ভিন্ন এবং গবেষণালব্ধ জ্ঞান তাই আল্লাহ এটা উল্লেখ করেছেন আল-কুরআনের সত্যতা প্রকাশ জন্য । কুরআন যে কোন মানুষ দ্বারা লিখিত কোন বই নয় এটা যে স্রষ্টা থেকে আগত বাণী সেটা প্রমাণ করার জন্য তিনি কুরআনের বিভিন্ন আয়াতে বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব সমূহের ইঙ্গিত প্রদান করেছেন ।

লোহার উপকারিতা বলে শেষ করা যাবেনা । পৃথিবীতে লোহা ছাড়া জীবনের উপযোগী বায়ুমন্ডল, মধ্যাকর্ষণ শক্তিএবং চৈাম্বক শক্তি কোন কিছুই তৈরী হত না । সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ পৃথিবীর কেন্দ্রে অবস্হিত গলিত লোহা যা একটি বিশাল ডাইনামোর মতো কাজ করে, পৃথিবীর চৌম্বকীয় ক্ষেত্র তৈরীর মাধ্যমে যা ভ্যান অ্যালেন বিকিরণ বেল্ট নামে পরিচিত - যা পৃথিবীর পৃষ্ঠকে ধ্বংসাত্মক উচ্চ-শক্তি-তীক্ষ্ণ মহাজাগতিক বিকিরণ থেকে রক্ষা করে এবং মহাজাগতিক রশ্মি ধ্বংস থেকে গুরুত্বপূর্ণ ওজোন স্তর সংরক্ষণ করে। আমাদের প্রতেকের রক্তে নির্দিষ্ট মাত্রার আয়রণ প্রয়োজন, আয়রণের ঘাটতি মারাত্নক রোগের সৃষ্টি করে ।

তাছাড়া, সাম্প্রতিক মাসগুলিতে ক্যান্সার চিকিত্সার ক্ষেত্রে আয়রন অক্সাইড কণাগুলি ব্যবহার করা হচ্ছে । জার্মানির বিখ্যাত চেরিটে হাসপাতালের ডাঃ আন্দ্রেড জর্দান নেতৃত্বে একটি দল চৌম্বকীয় তরল হাইপারথার্মিয়া (উচ্চ তাপমাত্রা চৌম্বকীয় তরল) নামে এই নতুন কৌশল দিয়ে ক্যান্সার কোষগুলি ধ্বংস করতে সফল হয়েছে। এরকম একটা উপকারী খনিজ পদার্থ যা আল্লাহ পাঠিয়েছেন মানুষের জন্য সেটাই সূরা হাদীতে আল্লাহ উল্লেখ করেছেন - আর আমি নাযিল করেছি লৌহ, যাতে আছে প্রচন্ড রণশক্তি এবং মানুষের বহুবিধ উপকার।

এবার আসুন আমরা জেনে নেই - এই সূরায় আল্লাহ আমাদের আর কি জানিয়ে দিচ্ছেন । সূরা হাদীদের ২০ নম্বর আয়াতে আল্লাহ মানব জীবনের কথা

'তোমরা জেনে রাখ, পার্থিব জীবন ক্রীড়া-কৌতুক, সাজ-সজ্জা, পারস্পরিক অহমিকা এবং ধন ও জনের প্রাচুর্য ব্যতীত আর কিছু নয়, যেমন এক বৃষ্টির অবস্থা, যার সবুজ ফসল কৃষকদেরকে চমৎকৃত করে, এরপর তা শুকিয়ে যায়, ফলে তুমি তাকে পীতবর্ণ দেখতে পাও, এরপর তা খড়কুটা হয়ে যায়। আর পরকালে আছে কঠিন শাস্তি এবং আল্লাহর ক্ষমা ও সন্তুষ্টি। পার্থিব জীবন প্রতারণার উপকরণ বৈ কিছু নয়।'

আয়াতটা যদি এভাবে বিশ্লেষণ করি, তাহলে পরিস্কার ভাবে বুঝা যাবে আল্লাহ সুবহানাতায়ালা কি ভাবে পুরো মানব জীবন এর সার্বিক অবস্হা কি ভাবে এই আয়াতে তুলে ধরেছেন ।

তোমরা জেনে রাখ, তোমাদের পার্থিব জীবন শিশুকাল কাটে খেলা-ধূলায়, যৈাবন কাল কাটাও পোশাক-আশাকের সাজ-সজ্জা প্রকাশ করে, কর্ম জীবন পার কর পরষ্পর নিজেদের বড়ত্ব বড়াই করে আর প্রৈাঢ় কাল পার কর নিজেদের ধন সম্পত্তি ও সন্তান সন্ততির প্রাচুর্য এর মধ্যে ডুবে থেকে । এর সবকিছুর অবস্হা অনেকটা এমন যে এক কৃষক তার শষ্যক্ষেত্রের ফসল দেখে খুব খূশী হয় কিন্তু তার শেষ পরিণতি হলো খড় কুটা । সুতরাং এই পার্থিব জীবন হলো একটা ধোকা বা প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই না যা খুবই ক্ষণস্হায়ী ।

তারপর ২১ আয়াতে আল্লাহ বলছেন আমাদের কি করা উচিত-

তোমরা অগ্রে ধাবিত হও তোমাদের পালনকর্তার ক্ষমা ও সেই জান্নাতের দিকে, যা আকাশ ও পৃথিবীর মত প্রশস্ত। এটা প্রস্তুত করা হয়েছে আল্লাহ ও তাঁর রসূলগণের প্রতি বিশ্বাসস্থাপনকারীদের জন্যে। এটা আল্লাহর কৃপা, তিনি যাকে ইচ্ছা, এটা দান করেন। আল্লাহ মহান কৃপার অধিকারী।

আসুন আমরা বুঝে কুরআন পড়ি এবং আমাদের বিশ্বাসকে দৃঢ় করি, যেই ঈমান নিয়ে মরতে পারবে সেই দশটা দুনিয়ার সমান বেহেশ্ত পাবে ইনাশাল্লাহ ।

আল্লাহ ভালো জানেন ।


মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.