নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সেলিনা জাহান প্রিয়া , জন্ম পুরান ঢাকা, নাজিরা বাজার , নানা বাড়িতে ।বাবার বাড়ি মুন্সী গঞ্জ , বড় হয়েছি ঢাকা ।স্বামীর বাড়ি কিশোর গঞ্জ ।ভাল লাগে ঘুরে বেড়াতে , কবিতা , গল্প , উপন্যাস পড়তে অজানাকে জানতে । ধর্ম বিশ্বাস করি কিন্তু ধর্ম অন্ধ না ।

সেলিনা জাহান প্রিয়া

পৃথিবির প্রতিটি গল্পের শুরু আছে শেষ নাই শুধু। আমার লিখা কবিতার সাথে গল্পের সাথে আমার জিবনের কোন মিল নেই , আমি লিখি লিখিকা হবার জন্য নয় । ভাল লাগে তাই । অনেকই মনে করে আমি ব্যক্তি জীবনে খুব কষ্টে আছি । আসলে সুখ দুঃখ নিয়েই জীবন ।, অন্য ১০ জন মানুষের মতেই আমার জীবন ।

সেলিনা জাহান প্রিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

কোন এক শেষ রাতের গল্প ।।

১৬ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:০৬


আলেয়া চাকুরী জন্য শহর ছেরে গ্রামে । আধুনিক নারী হলেও সে কিন্তু গ্রাম কে নিজের মতো করে নিয়েছে । গ্রামের পিছিয়ে পরা মানুষের জন্য তার এন জি ও কাজ করে যাচ্ছে । গ্রাম কে যারা টিভি র পর্দায় দেখে আসলে গ্রাম তার চেয়ে সুন্দর । গত এক বছরে মানুষের জীবনের দুঃখ কষ্ট গুলো খুব কাছে থেকে দেখেছে । এই গ্রামে পাঁচ টাকা মানুষের কাছে পাঁচশত টাকার সমান । আলেয়া বাসায় কাজ করে একটা মেয়ে নাম তার কুমকুম । মাথায় সব সময় তেল দিয়ে থাকে । পান খায় । নাকে অনেক বড় একটা নাক ফুল । পায়ে কোন দিন জুতা পড়তে দেখে নাই আলেয়া কুমকুম কে । মেয়েটা কালো হলেও সাহস আছে । ঘরের সব কাজ একবার বলে দিয়েছিল আলেয়া তার পড় আর কোন দিন বলতে হয় নাই । কাজের শেষে আলেয়ার গল্প করার মানুষ হল কুমু । কুমকুম কে আলেয়া সখ করে কুমু ডাকে ।
আলেয়া যখন এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে যায় মানুষের কাজের উন্নতি কি ভাবে করতে হয় । দল গত কাজের সাফল্য কি ভাবে হয় । আমাদের কৃষি আমাদের কি ভাবে সফলতা নিয়ে আসে তাই শিখায়। আজ অন্যদিনের মতো কাজ থেকে ফিরছে আলেয়া । জমিতে কাজ করছে কিছু মানুষ তারা সবাই আলেয়া দেখলে বলে এন জি ও আপু । সবাই সালাম দিয়ে কথা বলে । ভিবিন্ন পরামর্শ জন্য আসে । আলেয়া লক্ষ করলো তার পিছনে একটা মানুষ প্রায় অনেক দূর থেকে হেঁটে আসে । এত দূর থাকে যে তার সাথে কথা বলা হয় না। প্রতিদিনই দেখে কিন্তু বিষয়টা গত ছয় মাসে তার চোখে পড়ে নাই । আজ তার কাছে বিষয় টা পরিষ্কার । জমি থেকে একজন বলল এন জিও আপু আপনার পিছনে রোজ পাগলা গফুর হেঁটে যায় । ও কিন্তু পাগল । একটু দূরে থাকবেন । তার পড় আলেয়া বুঝতে পারলো হ্যা সত্যি তো । আলেয়া গত দুই তিন যাবত দেখতে পাচ্ছে । কিন্তু গফুর তো অনেক দূরে থাকে ।
কুমু বলল আলেয়া আফা চিন্তা করবেন না। সে পাগল হলেও কারো ক্ষতি করে না তবে সে আগে ডাকত ছিল । যাবত জীবন জেল হয়েছিল । ১৪ বছর জেল খেটে বের হয়েছে । বাড়িতে এসে দেখে তার বউ অন্য মানুষ কে বিয়ে করে অনেক বছর আগেই শহরে চলে গেছে । তার পড় থেকে পাগল । পাগল হয়েছে সাত আট বছর । গ্রামের মানুষের সাথে সে চলে না। একা একা চলে জমি যা আছে তাতে ভাল করেই চলে যায় ।
আলেয়া বলল লোকটা আমার পিছনে হাটে কেন । আমি কিন্তু ওকে ভয় পাই । মুখ ভর্তি দাড়ি মুছ । চুল গুলো আর গাঁয়ের জামা এত ময়লা দেখলেই খারাপ লাগে । গরমের মধ্যে একটা চাদর দিয়ে থাকে । কুমু বলল থাক আফা এইতা নিয়ে চিন্তা করবেন না। সে ডাকাত হলে কি হবে আমাদের কোন গ্রামে কোন দিন ডাকাতি করে নাই । সে যখন কারো খতি করে নাই আপনার ও করবে না। আলেয়া বলল দেখা যাক । চেয়ারম্যান কে বিষয়টা বলতে হবে । পরের দিন চেয়ারম্যান কে বলল আলেয়া । তার অফিস কে জানালো । অফিসের ম্যানেজার বিষয়টা শুনে এক গাল হেসে বলল ম্যাডাম আপনি এই সব নিয়ে মোটেও চিন্তা করবেন না। পাগলের সুখ মনে মনে । চেয়ার ম্যান বলল আরে আপনি শহরের মেয়ে আপনার হাটা চলা হয়ত পাগলের কাছে ভাল লাগে । আমি হলাম বুড়া চেয়ার ম্যান । তারপড় ও তো আপনাকে দেখলে আরেক বার দেখি । এই কথা বলে চেয়ারম্যান একটা হাসি দিল । আলেয়া নিজেও একটু হাসি দিয়ে বলল আপনি
অনেক মজার মানুষ , তাই বার বার পাশ করে চেয়ারম্যান হয়ে জান । চেয়ারম্যান বলল বইন সবেই আল্লার ইচ্ছা গরীব মানুষের জন্য কাজ করে যাই আর কি ? আলেয়া মনে মনে বলে তাই গ্রামের মধ্যে সুন্দর বাড়িটা আর জমি আপনারেই বেশি ।
আলেয়া চলে আসে তার বাসায় । কুমু চা নিয়ে আলেয়ার হাটে দেয় । আর বলে আফা চিন্তা করবেন না। ঐ পাগলে কিছুই করতে পাড়বে না। আমরা আছি না।
এমন সময় অন্য গ্রামের একজন আলেয়া কে তার মেয়ের বিয়ে দাওয়াত দিতে এলো । আলেয়া কে বলল বোন আপনার জন্য আমার মেয়ে কলেজে পড়ে । ছেলে ভাল পেয়েছি তাই বিয়ে । আপনি না গেলে আমার মেয়ে কষ্ট পাবে । আপনি কুমু কে নিয়ে যাইয়েন । আলেয়া বলল ঠিক আছে যাব কিন্তু আসতে আসতে যে রাত হয়ে যাবে । কুমু বলল চিন্তা নাই আমি আছি না আর চাঁদনী রাত নদীর পার দিয়ে হেঁটে চলে আসব ।
আলেয়া বিয়েতে খুব মজা করে গীত গাইলো সবার সাথে । বড় এলো রাত আট টায় । বিয়ে শেষ হল , হাইজেক লাইটের আলোতে সবাই খুব খুশিতে সময় পার করলো । রাত ১১ টায় বর মেয়ে নিয়ে চলে গেল । আলেয়া কে কিছুটা রাস্তা এগিয়ে দিয়ে গেল কনের বাবা।
নদীর পার দিয়ে চাঁদনী রাতে আলেয়া আর কুমু হেঁটে যাচ্ছে । কিছুটা পথ যাওয়ার পর কুমু বলল আলেয়া আফা চরে কিন্তু খিরাই ভাল হইছে । চলেন কিছু খিরাই নিয়ে যাই । আলেয়া বলল না মানুষের জমির জিনিস না বলে খাওয়া ভাল না । আর অল্প একটু রাস্তা বাকি আছে তারাতারি চল । রাস্তা বাক নিতেই কিছু বুঝে উঠার আগে সাত আট জন মানুষ আলেয়া আর কুমুকে কাপড় দিয়ে ডেকে হাট পা নদীর চরের দিকে কুলে করে নিতে লাগলো । কুমুর মুখ বাঁধা আলেয়ার মুখ বাঁধা । তাঁদের হাঁতে টর্চ লাইন । চার দিক নীরব । আলেয়া খুব চেষ্টা করছে ছুটতে একজন চুলের মুট ধরে বলছে বেশি চালাকি করবি তবে তাহলে মাগি জানে মেরে ফেলব । কিছু বুঝে উঠার আগে তাঁদের নদীর চরের মাঝে নিয়ে এসেছে , সবাই মুখ কাপড়ে বাঁধা । একজন বলছে খুব ফিস ফিস করে বলছে এন জি ও আফা কে আগে আগে হাত দিস না । সাব আগে তার কাজ শেষ করুক । তার পড় । সবার মুখে হাসি । একজন বলল এটা তো সাব হাত দিব না । এটা আমরা নিয়ে যাই । আলেয়া আর কুমুর হাত চোখ বাঁধা শরীরের সব কাপড় খুলে ফেলেছে । আলেয়া মনে মনে আল্লাহ আল্লাহ করছে । এমন সময় একজন বলল সাব চলে আসছে । চোখ বন্ধ আলেয়ার পিছনে হাত বাঁধা । কুমুর একেই অবস্থা । সাব এসে খুব আসতে করে বলল মেয়ে মানুষ নরম জাত এত শক্ত করে কেউ বাঁধে । নৌকা থেকে চাটিটা নিয়ে আয় । কুমু ঠিক কণ্ঠ চিনতে পারলো । সেই চেয়ারম্যানের কণ্ঠ । দুই জন মিলে আলেয়া কে নিয়ে চাটির উপর রাখলো । চোখ মুখ বাঁধা কিছুই বলতে পাড়ছে না। ভয়ে আলেয়ার সারা শরীর শীতল হয়ে গেছে । চেয়ারম্যান আলেয়ার শরীরের হাত দিয়ে বলে গরমের দিন কি ঠাণ্ডা শরীর । এমন সময় মা বলে কে জানি একটা চিৎকার দিল । কেউ এদের মারছে । আলেয়া আর কুমু কিছুই বুঝে উঠতে পাড়ছে । একজন বলছে ভাই আমারে মারিস না । আমি কিছুই করে নাই । আরেক জন বলল গফুর
আমাকে মাফ করে দে । গফুর বলল যারা আমাদের ভাল হবার জন্য গ্রামে আসে তোদের জন্য তারা গ্রামে থাকতে পারে না। কিছু সময় পড় আলেয়া চোখ খুলে দিয়ে বলল নে মা কাপড় পড়ে নে । কুমু কে কাপড় দিয়ে বলল নে পড়ে নে । আলেয়া চেয়ে দেখে চার পাশে মানুষের লাশ । চেয়ারম্যান সহ সবাই কে দা দিয়ে কুপিয়ে মারা হয়েছে। গফুরের সারা শরীর রক্ত । হাঁতে দায়ে রক্তে ভরা । আলেয়া জামা পড়ে বলল আপনি কই থেকে আসলেন । গফুর বলল মা কিছু মনে কইর ন। আর একটা খুন করতে হবে । তুমি যে বিয়েতে যাবে এটা তুমি আর কুমু ছারা কেউ জানে না। এই কুমু চেয়ারম্যানের টাকা খেয়ে তোমারে ভুল পথে নিয়ে আসছে । আসলে এই ছেরি অভিনয় করছে । আলেয়া কুমুর দিকে তাকাতে কুমু মাথা নিচু করে ফেলেছে । গফুর বলল মা এই গ্রামে ভাল মানুষের ভিতরে কে সয়তান। কে ভাল চেনা মুশকিল । আমরা যদি কুমুরে বাচাই তাহলে আমাদের ফাঁসী হতে পারে । কুমু পাগলা গফুরের পায়ে ধরে বলল গফুর ভাই আমার ভুল হয়েছে । গফুর বলল আমি গফুর কাউরে ক্ষমা করি না। ক্ষমা করে আল্লায় । এই বলে দা দিয়ে আরেকটা কুব দিল কুমুরে । আলেয়া কিছু বলতে পাড়ছে না । গফুর বলল আরে তরে দেখলে আমার মেয়ের মতো লাগে তাই তোর পিচ পিচ হাটি মা। ভাগ্য ভাল আজ আমি পিছু পিছু ছিলাম । আলেয়া গফুর কে জরিয়ে বলে আমাকে বাচাতে আপনি কত গুলো মানুষ কে খুন করছেন । এখন কি হবে । গফুর বলল আরে মা এরা কেউ মানুষ না যদি মানুষ হবে তাহলে কি কেউ তোমার মতো একটা ফুল কে নষ্ট করতে নদীর চরে নিয়ে আসে । তুমি ভয় পাইও না। আমি নদী থেকে রক্ত পরিষ্কার করে নেই । গফুর নদীর পানিতে রক্ত পরিষ্কার করে বলে চল মা তকে বাড়িতে রেখে আসি । ঐ দেখ মসজিদ থেকে আল্লার ডাক আসছে , কেউ ঘুম থেকে উঠার আগে আমাদের চর থেকে চলে যেতে হবে । কুমুর কথা কেউ বললে বলবি তকে বাসায় রেখে সে রাতেই চলে গেছে ।
পাগল গফুর পরম মমতায় আলেয়ায় কে বাসায় নিয়ে আসলো । গফুর বলল মনে করবা একটা স্বপ্ন দেখছ । এই চেয়ারম্যান কে বা কারা মেরেছে সেটা পুলিশ চিন্তা করবে । আমি পাগল । পাগল কে কেউ সন্দেহ করবে না।। গফুর পাগল চলে যায় । আলেয়ার চোখে সামনে শুধু অন্ধাকার দেখতে থাকে ।। কি হল ? কি ভাবে হল? সে ভাবত পাগল খারাপ আসলে এই সমাজে ভদ্র মানুষ গুলোই বেশি খারাপ ।।









মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:২২

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: চমৎকার একটি গল্প ,বেশ দারুণ বর্ননা শৈলী। ধন্যবাদ এমন গল্প উপহার দেওয়ার জন্য সেলিনা জাহান প্রিয়া।

২| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:৫৮

মোহেবুল্লাহ অয়ন বলেছেন: পোস্টে নিজের ছবি না দেয়াই উচিত।

১৬ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:৫৯

সেলিনা জাহান প্রিয়া বলেছেন: এটা কি আমার ছবি

৩| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:১৩

জাহিদ অনিক বলেছেন:

পাগলে একাই কুপিয়ে অতগুলো মানুষ মেরে ফেলেছে !


বেশকিছু লাইনের সমাপ্তিতে কিছুটা তাড়াহুড়া ছিল । প্লট ভালো ছিল।

১৬ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৫২

সেলিনা জাহান প্রিয়া বলেছেন: যত বার লেখি বিদ্যুৎ যায় আর আসে

৪| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৪০

প্রামানিক বলেছেন: গল্প চমৎকার, আরো যত্ন নিয়ে লিখলে আরো ভালো হতো। ধন্যবাদ

১৬ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৫২

সেলিনা জাহান প্রিয়া বলেছেন: এটা ঠিক কিন্তু বিদ্যুৎ বলে কথা

৫| ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:৫৬

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন:

গল্প ভালো হয়েছে।।

৬| ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:১০

কে এম খান বলেছেন: গল্পটা ভালো লাগলো। সামনে আরো সুন্দর সুন্দর গল্প পড়তে পারবো আশা করি। ধন্যবাদ লেখককে।

৭| ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:১৫

রাজীব নুর বলেছেন: অগোছালো।
আর একটু চেষ্টা করলে লেখাটা আরও সুন্দর হতো।
লেখার সময় কখনও তাড়াহুড়া করবেন না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.