নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সেলিনা জাহান প্রিয়া , জন্ম পুরান ঢাকা, নাজিরা বাজার , নানা বাড়িতে ।বাবার বাড়ি মুন্সী গঞ্জ , বড় হয়েছি ঢাকা ।স্বামীর বাড়ি কিশোর গঞ্জ ।ভাল লাগে ঘুরে বেড়াতে , কবিতা , গল্প , উপন্যাস পড়তে অজানাকে জানতে । ধর্ম বিশ্বাস করি কিন্তু ধর্ম অন্ধ না ।

সেলিনা জাহান প্রিয়া

পৃথিবির প্রতিটি গল্পের শুরু আছে শেষ নাই শুধু। আমার লিখা কবিতার সাথে গল্পের সাথে আমার জিবনের কোন মিল নেই , আমি লিখি লিখিকা হবার জন্য নয় । ভাল লাগে তাই । অনেকই মনে করে আমি ব্যক্তি জীবনে খুব কষ্টে আছি । আসলে সুখ দুঃখ নিয়েই জীবন ।, অন্য ১০ জন মানুষের মতেই আমার জীবন ।

সেলিনা জাহান প্রিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ- অরন্যের বোন কল্পতরু ।

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:২১




টিপ টিপ বৃষ্টি হচ্ছে বাইরে অরণ্যর মনটা কেমন যেন খারাপ আজ স্কুলে ওর মন বসছে না । তার মায়ের শরীর ভাল না । অরন্যের আর বয়স কত সবে মাত্র ক্লাস ফাইবে পড়ে । , স্কুল ছুটির পর বাসায় ফিরে এসে দেখছে ওদের ঘর আলো করে অরণ্যর মায়ের কোল জুড়ে ফুটফুটে সুন্দর একটি মেয়ে।অরন্য বুঝে গেছে তার বোন হয়েছে । বই গুলো খাটের উপর ফেলে আগে বোন কে কুলে তুলে নেয় । আর এক পলক চোখে তাকিয়ে মাকে বলে তুমি কেন আগে বল নাই আমার একটা বোন আসবে । তার খুশির সীমা নেই । এখন তার বোনের নাম কি রাখবে এই নিয়ে অরণ্যর কৌতূহলের শেষ নেই ।অনেক আদরের বোনের নাম রাখা হল কল্পতরু । অরন্যের সব কিছুইতেই তার এখন বোন । স্কুল থেকে কখন বাসায় আসবে বোন কে কুলে নিবে । কখন তাকে নিয়ে রোদে বসবে ।
ছোট ছোট মুরগির বাচ্চা গুলো বোনের হাঁতে দিবে । স্কুল ছুটির পর দেখে এক লোক আমের কলব বিক্রি করছে । ব্যাগের ভিতরে হাত দিয়ে দেখে ছোট মামার দেয়া সেই নতুন দুই টাকা ৫ টা নোট বইয়ের মধ্য আছে। সেই টাকা দিয়ে আমের কলব কিনে বাসায় ফিরে । তখন বর্ষার শেষ সময় । অরন্যের মা বলল কি রে খোকা গাছ কেন ? অরন্য বলল মা কল্পতরু বড় হয়ে আম খাবে না । তাই আগেই কিনে নিয়ে এসেছি । জাম আর পিয়ারা গাছ লাগাব । আমের ক্লব
লাগিয়ে সেই কাদা মাখা হাত দিয়েই কল্পতরু কে জরিয়ে নিবে কুলে । তার পর তার সাথে কত কথা । স্কুলে কি হয়েছে ? বন্ধুরা কি বলেছে । ছোট কল্প তরু ভাইয়ের দিকে দিয়ে হাসতে থাকে । ছোট্ট ফুটফুটে কল্পতরু মেয়েটি দেখতে দেখতে বড় হয়ে উঠছে, অরণ্যর স্কুল ফাঁকি দিয়ে পালানোর অভ্যাসে পরিনত হতে থাকে , সে কখন বাড়ি ফিরে আসবে কল্পতরু কে কোলে নিয়ে ঘুম পারানো খাওয়ানো তার ছোট ছোট আবদার রক্ষা করা । এখন তরু কথা বলতে পারে
একটু একটু , ভাইয়া ভাইয়া এটা দাও ,এটা নিব না, এটা আমার চাই ।
বোনের জন্য চকলেট খেলনা বই কিনে আনা তার কাজ । অরন্যের মা মাঝে মাঝে বলে এত বোন বোন করে কি হবে লিখা পড়া কর । বোন বড় হলে পর হয়ে যায় । বিয়ে দিতে হয়। অরন্য কিছুইতেই এই কথা মানতে নারাজ । এক মাত্র বোন বলে কথা । এক দিন হঠাৎ কল্পতরুর জ্বর এলো ডাক্তারের কাছে নেয়া হল তারপরের কেন জানিকল্পতরুর জ্বর কমছে না । কল্পতরুর বয়স তখন তিন বছর । জ্বর আর জ্বর । ডাক্তার বলল শহরে নিতে হবে । অরন্যের বাবা কে টেলিগ্রাফ করা হয়েছে । কারন তার বাবা সরকারী চাকুরী করে । অন্য জেলায় তার বদলী । অরণ্যর স্কুলে পরীক্ষা চলছিলো অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে ।বার্ষিক পরীক্ষার শেষ দিনে কেন জানি অরণ্যর মন বসছে না পরীক্ষার হলে ।কোন মতে পরীক্ষা শেষ করে বাড়ি ফিরছিল । বোনের জন্য তার মনটা বেশী খারাপ । তার বাবা আজ এসেছে । শহরে নিয়ে বড় ডাক্তার দেখাবে । অরন্য বাড়ির কাছে আসতেই কেমন যেন ওদের বাড়ির মধ্যে কান্নার শব্দ শোনা যাচ্ছে। অরণ্য দৌড়ে এসে দেখছে কল্পতরুর আর বেঁচে নেই । , অরণ্য নির্বাক হয়ে কাদতে লাগলো । তাদের অনেক আদরের বোনটি আর বেচে নেই ! অরন্য কিছুতেই মেনে নিতে পাড়ছে না। বার বার চিৎকার দিয়ে কান্না করে উঠে । ঘুমের মধ্য কান্না করে উঠে । অরন্যের গাছ গুলো ধরে কান্না করে । কোন কিছুতেই তার মন বসে না। এমনি করে এক একটি দিন কেটে যাচ্ছিল।অরণ্যর বাবা নতুন কোয়াটার পেয়েছে । তাই তার মা আর তাকে নিয়ে ট্রেনে করে যাচ্ছিলো নতুন ঠিকানায় । কিশোর গঞ্জ থেকে ময়মনসিংহ রেল স্টেশনে এসেছে । রাতে রংপুরের ট্রেনে উঠবে । কত ট্রেন আসে আর যায় বাবা মায়ের পাশে বসে বসে ট্রেন দেখে । একবার মাকে অরন্য তার মাকে বলে আচ্ছা মা কল্পতরু থাকলে কি মজা হত বলত ? আমাকে বলত ভাইয়া এটা কি ? ওটা কি ? আচ্ছা মা কল্পতরু কি কোন দিন আসবে না। আচ্ছা মা আমি কবে আমার বোনের কাছে যাব । মা আচল দিয়ে নিজের চোখের জল মুছে বলে বাবা একদিন আমরা সবাই তোমার বোনের কাছে যাব । ভাল কাজ করলে বোনের সাথে বেহেস্থে দেখা হবে । মায়ের সাথে গল্প করছিল অরন্য । ঢাকা থেকে একটা ট্রেন মোহন গঞ্জ যাবে সেই ট্রেন এসে থামলো ময়মনসিংহ রেল স্টেশনে । অরন্যের চোখ গেল ঐ ট্রেনের জানালায় । একটা মেয়ে জানালার সিক থরে বাহিরে থাকিয়ে । অরন্য এক পলক দেখেই তরুলতা বলে চিৎকার দিয়ে ট্রেনের দিকে যাইতে লাগলো দৌরে । অরন্যের মা কিছুই বুঝে উঠতে পারছিল না। তাই অরন্যের বাবা কে বলল এই যে দেখ অরন্য কোথায় যায় ।
অরন্য তখনে ট্রেনের ভিতরে গিয়ে একটা ছোট মেয়ে কে জরিয়ে ধরে আমার কল্পতরু বলে চিৎকার দিয়ে কান্না করে দেয় । পাশ থেকে এক লোক অরন্য কে একটা চর মেরে মেয়েটা কে তার কাছ থেকে টেনে নিতে চায় । দুই তিনটা চর থাপ্পার খেয়েও আমার তরুলতা বলে বুকে ঝরিয়ে অরন্য কাদতে থাকে । মানুষ ভীর হয়ে যায় । ভিরের মধ্য অরন্যের বাবা সবাই কে শান্ত থাকতে বলে । ছেলের মাথায় হাত দিয়ে বলে বাবা অরন্য । মেয়েটা কে বুক থেকে ছেরে বাবার দিকে তাকায় । অরন্যর গালে তখন একটা চরের দাগ লাল হয়ে আছে । কিন্তু সেই দিকে অরন্যের কোন খেয়াল নেই । অরন্যের বাবা সবাইকে তার মেয়ের কথা বলে । তখন সবাই চুপ হয়ে যায় । মেয়েটা অরন্যে দিকে চেয়ে বলে ভাইয়া কান্না করছ কেন । অরন্য অবাক হয় না মেয়েটা তাকে ভয় পাই নি । মেয়েটা বলে আমার ভাইকে কেন মেরেছ । মেয়েটা দেখতে কইছটা তরুলতার মতো । মেয়েটা মা অরন্য কে তার বুকে নিয়ে বলে বাবা না বুঝে তোমাকে আমার ভাই মেরেছে , তুমি কষ্ট নিও না। আজ থেকে এই মমতা তোমার বোন । অরন্যের চোখের পানি ছোট মমতা নিজ হাঁতে মুছিয়ে দেয় । অরন্য বুঝতে পাড়ছে যে সে ভুল করেছে । আসলে বোনের মতো দেখতে তাই সে এই ভুল করেছে । অরন্য মেয়েটা কে বলল ভয় পেয়েছ বুবু । মেয়েটা বলে না তো । তুমি কি আমার ভাই । অরন্য বলে হা আজ থেকে আমি তোমার ভাই । অরন্যের মা বাবা দুইজনেই তাঁদের কাছে সরি বলে ভদ্র মহিলা বলে আপা আমিও তো মা , মোহন গঞ্জে থাকি ছেলে নিয়ে বেড়াতে আসবেন । অরন্য রেল স্টেশন থেকে কিছু খেলনা কিনে মেয়েটা দেয় । মেয়েটার দিকে তাকিয়ে সে কেবল কল্পতরু দেখে । খেলনা গুলো হাঁতে নিয়ে -মেয়েটির চোখে খুশি ঝিলিক দিয়ে উঠলো । ছোট্ট মেয়েটির বড় বড় মায়াময় চোখগুলো অশ্রুশিক্ত । ছোটছোট আদুরে হাত দুটো দিয়ে চোখ কচলাতে লাগলো আর ঠোট ভেঙ্গে কাদতে লাগলো সে ।আবার একটা কন্ঠভেসে এলো দরজার কাছ থেকে । হাতে অনেক গুলো চকলেট ।"দেখো এগুলো তোমার ।" ফিক করে হাসি দিয়ে বললো অরণ্য ।অশ্রুসিক্ত মায়াময় চোখের মনিতে খুশি ঝিলিক দিয়ে উঠলো মেয়েটির । দৌড়ে গিয়ে অরণ্য কে জড়িয়ে ধরলো মেয়েটি ।
ভাই বোন একসাথে বসে বসে চকলেট খেতে লাগলো । দুজনের চোখে মুখেই আনন্দের ঝিলিক ।মেয়েটির মুখ , হাত , জামা সব চকলেটে মাখামাখি ।
তারপরও তার চকলেট খাওয়ার বিরাম নেই ।
অরণ্য সব ভুলে একমনে চেয়ে আছে ছোট বোনেরদিকে । তার কচি মুখে নিষ্পাপ হাসি ছড়িয়ে পরেছে তখন ।এটাকে কি বলে জানেন ? একেই বলে ভালবাসা ।অরণ্য চায়নি যে তার অর্ধখাওয়া চকলেটা খায় । তাই সে আদরের বোনের জন্য নিয়ে এসেছে নতুন অনেগুলো চকলেট ।এতো পবিত্র , স্বর্গীয় , সুন্দর ভালোবাসার উদাহরন আর কোথাও পাবেন কি ? ট্রেন যাবার সময় হয়ে যায় । মেয়েটা জানালা দিয়ে টাটা দেয় । অরন্যের চোখে আবার ও পানি ঝড়তে থাকে । চেয়ে থাকে ট্রেনের দিকে । মনে হল আজো তরুলতা অজানায় চলে যাচ্ছে ।। অরন্যের কে তার মা মাথায় হাত দিয়ে বলে বাবা দোয়া কর এই বোনের জন্য সে যেন ভাল থাকে ।।
------------------------ অসম্পাদিত ।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:৪০

মাইনুল ইসলাম আলিফ বলেছেন: ভালো লেগেছে ভীষণ। খুব সুন্দর করে সাঝিয়েছেন।একটু এডিট করে নিলে আরও সুন্দর হবে।
ভাল থাকবেন লেখিকা।

অফ টপিকঃআপনি গল্প কবিতার সেলিনা জাহান প্রিয়া ?

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:২৯

সেলিনা জাহান প্রিয়া বলেছেন: হা

২| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:১৫

পবন সরকার বলেছেন: ভালো লাগল।

৩| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১:০৮

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: আচ্ছা মা কল্পতরু কি কোন দিন আসবে না। আচ্ছা মা আমি কবে আমার বোনের কাছে যাব ।১৩/১৪ বছরের একটা ছেলে এত বেকুব না।

কমেন্ট রাখবেন কিনা জানিনা। তবে জঘন্য একটা প্লট। আপনার আগের গল্পগুলোর সাথে কোনভাবেই যায় না। সরি...

৪| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১:৩০

সালাহ উদ্দিন শুভ বলেছেন: ভাল ছিল, সবকিছু বাদ দিয়ে সাধারণ দৃষ্টিকোণ থেকে গল্পটি পরে ভাল লাগার মত বেশ ভাল উপাদান ছিল। শুভকামনা। :)

৫| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ২:০৩

কালীদাস বলেছেন: খুবই সিম্পল এবং পুরান একটা প্লট। কিন্তু লেখাটা হৃদয় ছোয়া।
লেখাটা আরও ঘষামাজা আশা করে।

৬| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ৯:৪৬

রাজীব নুর বলেছেন: আর একটু গুছিয়ে নিলে সুন্দর একটা গল্প বলা যাবে।

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:১২

সেলিনা জাহান প্রিয়া বলেছেন: ওকে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.