নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সেলিনা জাহান প্রিয়া , জন্ম পুরান ঢাকা, নাজিরা বাজার , নানা বাড়িতে ।বাবার বাড়ি মুন্সী গঞ্জ , বড় হয়েছি ঢাকা ।স্বামীর বাড়ি কিশোরগঞ্জ ।ভাল লাগে ঘুরে বেড়াতে , কবিতা , গল্প , উপন্যাস পড়তে অজানাকে জানতে । ধর্ম বিশ্বাস করি কিন্তু ধর্ম অন্ধ না ।

সেলিনা জাহান প্রিয়া

পৃথিবির প্রতিটি গল্পের শুরু আছে শেষ নাই শুধু। আমার লিখা কবিতার সাথে গল্পের সাথে আমার জিবনের কোন মিল নেই , আমি লিখি লিখিকা হবার জন্য নয় । ভাল লাগে তাই । অনেকই মনে করে আমি ব্যক্তি জীবনে খুব কষ্টে আছি । আসলে সুখ দুঃখ নিয়েই জীবন ।, অন্য ১০ জন মানুষের মতেই আমার জীবন ।

সেলিনা জাহান প্রিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধারাবাহিক ঃ- অসম্পাদিত মানব । (প্রথম পর্ব)

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:১৪


দেখ আমরা একটা সমাজে বাস করি । আমাদের সমাজের একটা নিয়ম আছে । আমরা এই সামজের নিয়মের মধ্য বড় হয়ে উঠেছি। আমাদের সমাজ আমাদের ধর্ম আর নিয়মের মধ্য দিয়ে আমাদের একটা সুন্দর পরিবেশ দিয়েছে । দেখ মা আমাকে তুমি কোন সমাজের কথা বল । কোন ধর্মের কথা বল ? কোন নিয়মের কথা বল । এই সমাজ আমাকে কি শিক্ষা দিয়েছে । এই ধর্ম আমাকে কি শান্তি দিয়েছে । আর তোমরা আমাকে জন্ম দিয়ে কি এমন পুণ্য করেছ । আমি তোমাদের সমাজ তোমাদের ধর্ম তোমাদের নিয়ম কে অস্বীকার করছি । তাতে কি হবে আমার । দেখ পুত্র আমার কথা শুন শান্ত হয়ে বস আকাশের দিকে দেখ আকাশের একটা নিয়ম আছে। বর্ষায় বৃষ্টি দেয় , শীতে কুয়াশা দেয় । রাতে চাঁদের আলো দেয় - এই বিশাল প্রকৃতি একটা নিয়ম মেনে চলে । তুমি আমার পুত্র হিসাবে এই গুলো কি দেখ না। আমি তোমাকে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলেছে । আমি তোমার মাঝে আমার সুন্দর স্বপ্ন দেখেছি । আমি চাই আমার পুত্র সমাজের একজন আদর্শ মানুষ হিসাবে মাথা উঁচু করে দারাক ।
মা একটা কথা তোমাকে না বললেই নয়। যাদের তুমি মানুষ বল মনের কুটিরে তাজমহলে বসিয়েছে তাঁদের তুমি বাহিরের রুপ দেখেছে মা ।
------- দেখ আমার প্রিয় পুত্র আমি খুব আশা করে তোমার নাম রেখেছি অর্ক।
------- হাসালে আমাকে মা। দুনিয়ায় মানুষ একটা নিয়মে আসে । একটা নিয়মে চলে যায় । প্রতিটা প্রাণীও তাই । আমরা সব এক প্রাণী জন্ম হয় অন্য প্রাণীর খাদ্য হিসাবে , যে যার সুযোগ মতে একে অন্য কে খেয়ে নেয় । কেউ কাঁচা খায় , কেউ রান্না করে খায় , কেউ তাকে কাজে লাগিয়ে খায় । প্রতিটা প্রাণী খেয়ে আছে কোন না কোন ভাবে । মা আমি তোমাদের মতো মানুষ হতে পারলাম না।
তোমাদের মতো মানুষ হলে আমাকে পাগল হতে হবে । তোমরা মানুষকে সামনে প্রশংসা কর। পিছনে তার সমালোচনা কর । স্বার্থ বুঝে তাকে ব্যবহার কর , স্বার্থ ফুরালে তাকে ভুলে যাও । মা এই দুনিয়ায়ার সৃষ্টি একটা স্বার্থ আছে। সৃষ্টি কর্তা যাকে বল তার একটা উদ্দেশ্য আছে। এই আমি যখন স্কুলে ভর্তি হই মনে আছে মা তোমার ইচ্ছা আমি একটা দামি স্কুলে পড়ি । তার জন্য আমাকে সকালে ঘুমাতে দিতে না।দুপুরে বা বিকালে খেলতে দিতে না। আমাকে একটা বইয়ের মধ্য প্রতিযোগিতার ঘোড়া বানিয়ে দিলে । যেই বয়সে আমার সাতার কাটার কথা , ঘুড়ি উড়ানোর কথা , তখন তুমি আমাকে জোর করে ছবি আকাতে , ঘুম পাড়িয়ে দিতে । তোমাদের নিয়মের মধ্য আমাকে নিয়ে আসতে লাগলে । জুড়ে কথা বলা যাবে না। কান্না করা যাবে না। কিছু মানুষের সামনে যাওয়া যাবে না। বড়দের কাছে বসা যাবে না । থাক মা আজ আর কথা বাড়াতে চাই না বাহিরে আমার কাজ আছে , আমি যাই । অর্কের মা ছেলের দিকে চুপ করে তাকিয়ে থাকে । দিন দিন তার ছেলের কি হয়েছে ।
এত সুন্দর একটা ছেলে । তার পিতা তার জন্য কি রেখে যাই নাই । আমি তার দিকে তাকিয়ে কি করি নাই । মুখ ভর্তি দাড়ি । চুল গুলো কাটে না। একটা পোলো সার্ট একটা জিন্সের পেন্ট । এক জোরা স্যান্ডেল এই আমার পুত্র । এই তার শিক্ষা ।আমি কি তবে হেরে গেলাম । আমি কি এমন পুত্র চেয়ে ছিলাম । না আমি এমন পুত্র চাই না । তবে আমার পুত্র কি চায় কেন সে জীবনের প্রতি এত উদাসীন । না আমাকে কিছু করতে হবে। দিন দিন অর্ক মানুষ থেকে আলাদা হয়ে যাচ্ছে । অর্কের মা হামিদা খানম । উচ্চশিক্ষিত সমাজ সচেতন এক নারী । মহিলা অঙ্গনে তার একটা বেশ নাম আছে । তবে তার ছেলে অর্ক কি চায় ভাল করে জানতে হবে ।
অর্ক বনানী রেল স্টেশন থেকে হেঁটে তেজ গাঁয়ের দিকে যাচ্ছে । আর মনে মনে বলছে না এমন করে একটা সমাজ বাঁচতে পারে না। রেল লাইনের দুই পাশের চার দিক কি সুন্দর সুন্দর ইমারত । আর রেল লাইন ঘেঁষে হাজার জাহার বস্থি । একটা বাচ্চা মেয়ে মায়ের পাশে বসে আছে । তার মা রান্না করছে । ঝুপড়ি ঘর মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে না কোন মানুষ সেই ঘরে । কত শত শিশু রেল লাইনের পাশে খেলা করছে । এই সকল শিশুর কোন আগামী চিন্তা নেই তাঁদের মায়ের কোন চিন্তা নেই কোন ভাল স্কুলে পড়াতে হবে । অর্ক রান্না করা মহিলার পাশে যায় । দুই হাত পকেটে রেখে বাচ্চার দিকে তাকিয়ে বলে- এই যে মেয়েটা কে মাটিতে বসিয়ে রেখেছেন কত ময়লা ডায়রিয়া হবে তো । কত নোংরা জিনিস মুখে দিচ্ছে । মহিলা তার বুকের উরনা আর মাথার কাপড় ঠিক করে একটা হাসি দিয়ে অর্কের দিকে তাকিয়ে বলে কিছু হবে না গরিবের আল্লাহ আছে । মহিলার মাথায় কোন সুগন্ধি তেল দেয়া , চোখে কাজল দেয়া কিন্তু হাসির মাঝে এক অফুরন্ত শান্তনা । অর্ক বলে কি রান্না হচ্ছে - বাচ্চার বাবা কোথায় ? মহিলা বলল আর কি রান্না করব স্যার কচুর মুখি দিয়ে গুড়া ইছা মাছ । কলমির শাক । সাথে বেগুন বর্তা । মেয়ের বাবা লাইনের কলে গাঁ ধুইতে গেছে। তার জন্যই গরম তরকারি রান্না করছি । খাবেন স্যার । অর্ক বলল আমাকে খাওয়ালে তো তোমার খাবার হবে না । যে ছোট পাতিল । মহিলা বলল কি যে বলেন ভাইজান একজন মানুষ কে খাবার দিতে পারলে আল্লাহ খুসি হয় । অর্ক তখন মনে পড়ে যায়
তাঁদের বাড়িতে গ্রাম থেকে কোন মেহেমান আসলে তার মা খুব বিরক্ত হয়ে যেত । বস্থির মেয়ে কে বলল বোন অন্য দিন খাব আজ আসি । অর্ক ভাবতে থাকে এই মানুষ গুলোর কোন ফিউচার নেই । কোন এম ইন লাইফ নেই তবু তারা কত সুখি । প্লাটফরমের শেষ মাথায় এক ভিখারি শুয়ে আছে । মাছি গুলো তার শরীরে বসছে উড়ে উড়ে কিন্তু তার ঘুমের কোন সমস্যা নেই । আর তার বাসায় মশা মাছি মরার জন্য কত কি ? একটা লোকাল ট্রেন থামে তেজগাঁ । ট্রেনের নাম ঈশা খাঁ - কত মানুষ এই ট্রেনে তবে কোন কোট টাই পড়া কোন শিল্প পতি নেই । সবাই খুবেই সাধারণ মানুষ । ট্রেন থেকে কলার ছড়ি নামছে । কুলি সর্দার খুব হিসাব রাখছে । একটা মেয়ে সর্দারের হাঁতে পান দিয়ে বলল সর্দার আপনার ছোট বিবি আমাকে দেখলে খবর আছে । সর্দার তার মুছে হাত দিয়ে বলল তকে ছোট বানাতে পারলে মনটা শান্ত হতো । মেয়েটা হাসি দিয়ে বলে তোমার মতো মজনু কি আমার দেখা পায় । সর্দার বলল শুন জরিনা তোর হাঁতে পান খেলে আমার খুব ভাল ঘুম হয় । অর্ক তাঁদের রসিকতা ভাল করে চেয়ে দেখল । তারদের কথায় যত ভেজাল থাক জীবন তাঁদের সেই ভেজাল মুক্ত । ট্রেন ছেরে যায় কমলা পুরের দিকে । জি আর পি পুলিশ কয়টা ছেলে লাটি দিয়ে দৌড়ান দিচ্ছে । অর্ক বলল কি ব্যাপার বাচ্চা গুলো কে মারছেন কেন ? পুলিশ খুব রাগ হয়ে বলল আরে আর বলবেন না । আমার দুপুরের খাবার এরা কেউ চুরি করে খেয়েছে । অর্ক বলল ভালই তো টাকা নিলেন মানুষের কাছ থেকে । পুলিশ বলল হ্যা নিয়েছি যারা টিকেট করে নাই তাঁদের কাছ থেকে । ভাই আপনি কি সাংবাদিক । অর্ক হেসে বলল না আমি অসম্পাদিত মানব । পুলিশ বলল ঠিক বুঝতে পারলাম না- অর্ক হেসে বলল একটা রচনা , গল্প , বা কবিতা আমি কিন্তু আমাকে আজ পর্যন্ত কেউ সম্পাদন করে নাই - আমি অসম্পাদিত মানব । আপনি বুঝবেন না। যেমন আপনি দুর্নীতি করেন মাত্র সারা দিনে ২০০ টাকা । আর ভাবেন আমার দারা দেশের কি খতি হয় । আপনি কিন্তু কোন দিন ২০০ টাকার সেই গানিতিক খতি জাতির জন্য কত ক্ষতি টা ভাবেন না। যারা ভাবে তারাই অসম্পাদিত মানব । ২০০ টাকা আর ২০০ শত কোটি টাকা সবেই কিন্তু চুরি । কিন্তু কেন এই চুরি তা হল আমাদের বিশ্বাসের অভাব । আপনি আপনার সৃষ্টি কর্তা কে বিশ্বাস করেন আবার তার আইন নিজ হাঁতে লঙ্গন করেন । তার মানে আপনার ভিতরে তার প্রতি কোন ভয় সম্মান নাই - আপনি বিশ্বাসের নামে এক প্রতারক । পুলিশ বলে ভাই এত কিছু বুঝি না।অর্ক বলল আমি বুঝি বলেই আমি অসম্পাদিত মানব ।।
------------------চলমান ।।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: অর্ক কি আপনি?

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:৫১

সেলিনা জাহান প্রিয়া বলেছেন: না

২| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:১৬

শামচুল হক বলেছেন: ভালো লাগল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.