নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাঝে মাঝে মনে হয় জীবনটা অন্যরকম হবার কথা ছিল!

শেরজা তপন

অনেক সুখের গল্প হল-এবার কিছু কষ্টের কথা শুনি...

শেরজা তপন › বিস্তারিত পোস্টঃ

শুন্যের গর্ভে-চতূর্থ পর্ব

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৫৫

মাসখানেক পরে সে বুঝতে পারল তাকে দেখলে- মেয়েটির সারা দেহ উপচিয়ে যে খুশীর ভাব ফুটে উঠত সেটা ম্লান হতে শুরু করেছে , তার একান্ত সান্যিধ্যে স্নিগ্ধ তৃপ্ততা সে ভাবে আর প্রকাশ পায় না!

তাকে হারানোর ভয়ে সে শংকিত হয়ে উঠল! ব্যাপারটা ভাল হচ্ছেনা জেনেও তার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে অনুরোধ করল, মেয়েটিকে অনুসরন করতে। কদিনের মাথায় সে খবর এনে দিল;সেটা বলতে গিয়ে লজ্জায় তন্ময়ের মুখ লাল হয়ে গেল, নিজেকে লুকোবার জন্য সে মাথাটা নিচু করে ফেলল...ভাবটা এমন যে অপরাধী সে-ই।

এ’কদিনেই সম্পর্ক শুধু মনের দিক দিয়েই এগুইনি,সেটা শরির পর্যন্ত গড়িয়েছে। তন্ময় প্রথমে বিশ্বাস করতে চাইল না- কিন্তু প্রমান যখন হাতে নাতে পেল তখন সে উন্মাদের মত আচরন শুরু করল। এও কি সম্ভব যে দু- বছরের ঘনিষ্ঠতার সুযোগে সে যা দাবী করতে পারেনি?

কোত্থেকে হুটকরে এসে অন্য কেউ তার সবকিছূ ছিনিয়ে নিয়ে গেল। হয়তোবা ছিনিয়ে নেয়নি- সম্ভবত স্বেচ্ছায় আত্ম সমর্পন করেছে সে -উদারতার সাথে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছে!

যৌবনের রক্ত টগবগিয়ে উঠল। প্রতিশোধ স্পৃহা তাকে উন্মত্ত করে তুলল।

আজ এই মুহুর্তে আমার সামনে বসে হয়তো তার আত্মোপলদ্ধি হল। ঘৃনায় চোখ-মুখ কুঁচকে গেল তার- ছিঃ! প্রচন্ড অনুশোচনা হচ্ছিল সে এমন একটা নোংরা মেয়েকে ভালবেসেছিল ভেবে।

সে প্রথমে তার প্রেমিকার মুখোমুখি হতে চাইল। কিন্তু চরম ঘৃনা লজ্জা আড়ষ্ঠতা তাকে বাধা দিল। সারাক্ষন ফন্দি আটতে থাকল কিভাবে প্রতিশোধ নেয়া যায়।

মনের মধ্যে ঝড় বইছিল ভীষন! ঠিক করল, সে দুজনকেই খুন করবে! কিন্তু কিভাবে?

পরে ভেবেছিল,সেই ছেলেটিকেই খুন করবে যে তার প্রেমিকাকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। তাছাড়া ওকে খুন করলে তার সেই প্রেমিকা যে কষ্ট পাবে তার সেই বিষন্ন চেহারা মানষপটে ভেসে উঠতেই সে আরো হিংস্র হয়ে উঠল।

হলের ক্যাডারদের অনেক অনুনয় বিনয় করে কিছু টাকা খরচ করে সে একটা অতি পুরোনো রিভলবার যোগার করল। একদিনের ট্রেনিং নিয়েই সে তক্কে তক্কে থাকল, ওকে বাগে পেলেই ঠিক মাথা লক্ষ করে গুলি চালাবে। ব্যাস্ শেষ..

সুযোগ একদিন ঠিকই এসে গেল। তার মুখোমুখি হয়ে রিভলবারটি কপালেও ঠিকই ঠেকিয়ে ছিল কিন্তু গুলি করতে গিয়ে শেষ মুহুর্তে হাত কেঁপে যাওয়ায় নেতাজী সে যাত্রায় বেঁচে গিয়েছিলেন। তবে আহত হয়ে হাসপাতালে থাকতে হয়েছিল বেশ কিছূদিন।

তন্ময় ভেবেছিল সে মারা গেছে। গুলি করে সে একচুলও নড়েনি। আগে থেকেই ভেবে রেখেছিল সে কাপুরুষের মত পালাবে না, সেচ্ছায় ধরা দিবে। তাছাড়া কেউ বিশেষ করে তার প্রেমিকা যদি জানতেই না পারে যে কে খুন করেছে তাহলে তার এই প্রতিশোধ নিয়ে লাভ কি হল।

বিমুঢ় দৃষ্টিতে চেয়েছিল রক্তাক্ত সেই দেহটির দিকে। কিংকর্তব্যবিমুঢ় সে তখন তার সামনে পড়ে থাকা একটা লাশই দেখতে পাচ্ছিল।

পরে আরেক জনের মুখে এ কথা শুনেছিল যে মাটিতে পরে গিয়ে সে তার কাছে প্রান ভিক্ষে চাইছিল। সেই নেতাটি ভেবেছিল তাকে সে আবার গুলি করবে!

কিছুটা সম্বিৎ ফিরে পেতেই সে অনুভব করল কয়েকজন মানুষ তাকে একরকম চ্যাংদোলা করে কোথায় যেন নিয়ে চলছে। কিছুক্ষন পরে নিজেকে আবিস্কার করল হাজতের গড়াদের আড়ালের বদলে হোস্টেলের রুমে নিজের প্রিয় বিছানায় ।

ঢাকা ভার্সিটিতে এরকম হরহামেশাই ঘটত। যে কোন অপরাধ সংঘটিত হলে পরের দিন পত্রিকার পাতায় ফলাও করে প্রচার করা হয় প্রতিপক্ষের হাতে অমুক ছাত্র বা ছাত্র নেতা নিহত অথবা আহত। বিশেষ কোন ব্যক্তির নাম প্রচার করা হয় না। যে কোন ঘটনাকেই রাজনৈতিক মোড় দেয়ার প্রয়াস চালানো হয়। সত্যিকার অপরাধী থাকে ধরা ছোয়ার বাইরে।

যে নেতাটিকে তন্ময় গুলি করেছিল সে এককালে দারুন জনপ্রিয় থাকলেও পরবর্তীতে তার কিছু ন্যক্কারজনক কর্মকান্ডের জন্য সেই জনপ্রিয়তা তখন বহুলাংশে হ্রাস পেয়েছিল। তাছাড়া তার অধীনস্ত কিছু ছাত্র নেতা দলের জন্য প্রচুর ত্যাগ স্বীকার করার পরেও দল তাদের সঠিকভাবে মুল্যায়ন করছিল না সেটার জন্য বহুলাংশে সেই দায়ী। ক্ষোভ থেকে নিজের দলেই একটা প্রতিদদ্বী গ্রুপ গড়ে উঠছিল। যদিও তাকে চ্যালেঞ্জ করার মত যথেষ্ট শক্তি বা সাহস তাদের ছিল না।

তন্ময়ের সেই দুঃসাহসিক কান্ডের জন্য তারা তাকে অনেকটা বীরের মর্যাদা দিল। তাকে প্রোটেকশনের নিশ্চয়তা দিল। বিনিময়ে তন্ময় বাধ্য হল সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহন করতে। ধীরে ধীরে রাজনীতি তাকে গ্রাস করে ফেলল। মফস্বলের একটা সহজ সরল ছেলে অল্প কদিনেই অত্মপ্রকাশ করল দলের একজন দুঃসাহসিক ক্যাডার হিসেবে।

প্রতিহিংসা ও রাজনীতির আগ্রাসন কত সম্ভবনাময় ভবিষ্যৎকে এভাবে ধ্বংস করে ফেলে তার কি ইয়ত্বা আছে।

তন্ময়ের এই আকস্মিক পরিবর্তনের খবরে তার বাবা মায়ের কি প্রতিক্রিয়া হয়েছিল সে জানেনা তবে মা মাঝে মধ্যে চোখের জলে দুয়েকটা চিঠি লিখলেও বাবা আর তার খবর নেবার প্রয়োজন অনুভব করেননি। সেও আজ অব্দি তার মুখোমুখি দাড়ানোর সাহস সঞ্চয় করে উঠতে পারেনি।





ভাষা শিক্ষা কোর্স শুরু করার মাস ছয়েকের মাথায় আমাদের ইনস্টিটিউটের উর্ধ্বতন কতৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিলেন ফাইনাল পরীক্ষা নেয়ার(কোর্সটা ছিল এক বছরের)।

ছাত্ররা স্বভাবতই হতভম্ভ হঠাৎ তাদের এই অপরিকল্পিত উদ্ভট সিদ্ধান্তের জন্য। এমনকি আমাদের ক্লাস টিচারদের কেউই চাচ্ছিলেন না যে এই মুহুর্তে আমাদের পরীক্ষা নেয়া হোক। কেননা এ’কদিনে পরীক্ষা দেয়ার মত উপযুক্ত ভাষা আমরা করায়ত্ব করতে পারিনি। তবুও যদি শুধু রুশ ভাষায় আমাদের দক্ষতা নিরুপনের জন্য পরীক্ষা নেয়া হোত।এখানে আমাদের ক্যমিস্ট্রি ,ফিজিক্স,ম্যাথ,আর্কিটেকচারের সহ অন্যান্য সব বিষয়ের পরীক্ষা নেয়া হবে তাও আমাদের কাছে তখন আপাত দুবোধ্য এক ভাষায়। আমরা কতৃপক্ষের সাথে আলাপ আলোচনা করে কোন বরফ গলাতে পারলাম না। তারা তাদের সিদ্ধান্তেই অনঢ় থাকল!

শুধু এমনি এমনি পরীক্ষা হলে কথা ছিল নোটিশ টাঙ্গিয়ে জানিয়ে দেয়া হোল। কেউ যদি এই পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয় তাহলে তাকে আবার ভাষা শিক্ষা কোর্স প্রথম থেকে শুরু করতে হবে। তার মানে শুধু সময় ক্ষেপনই নয় তৎসঙ্গে নতুন করে টিউশন ফি দেয়ার প্রশ্ন।

অগত্যা বিমর্ষ চেহারা নিয়ে আমরা সবাই মিলিত হলাম বিশেষ আলোচনার জন্য।

উদ্দেশ্য একটাই কিভাবে এই পরীক্ষা দেয়া থেকে বিরত থাকা যায়।

যে যার মত বক্তব্য প্রদান করল। চেস্টা করল সবচেয়ে সহজ সল্যিউশনের কিন্তু ব্যাপারটা আরো জটিল করে ফেলল...

আমরা যখন বিশেষ কোন সিদ্ধন্তে উপনিত হতে পারছিলাম না তখন আমাদের সাহায্যের জন্য সবাইকে ভীষন অবাক করে দিয়ে তন্ময় এগিয়ে এল। আমাদের সবারই প্রায় ধারনা ছিল সেই একমাত্র ছাত্র যার এ পরীক্ষায় পাশ করার ন্যুন্যতম সম্ভাবনা আছে। সেজন্যই সে আমাদের বিপক্ষচারন না করলেও পক্ষে যে সক্রিয়ভাবে অংশ নেবে না সে ব্যাপারে কারোই দ্বীমত ছিল না।

সে আমাদের বলল আন্দোলন করতে। একদম দেশী স্টাইলে!!!

আন্দোলনের কথা শুনে অনেকেই প্রথমে একটু ঘাবড়ে গেল! কিন্তু তন্ময়ের সাবলীল ব্যাখ্যার পরে সবাই নিশ্চিত সিদ্ধান্তে উপনিত হল যে আন্দোলনই হবে আমাদের প্রধান হাতিয়ার। অন্দোলন ভিন্ন অন্য কোন পন্থাই আমাদের সমস্যা উত্তরনের জন্য যথেস্ট সহায়ক হবে না।

সবার মধ্যে সে কি উত্তেজনা! আন্দোলন যেন অ্যাডভেঞ্চারে রুপ নিল। সেই অ্যাডভেঞ্চারের উত্তেজনায় সবার রক্ত যেন ফুটছে টগবগ করে।

তন্ময় আমাদের পরবর্তী কর্মপন্থা ঠিক করে দিল তবে তার একটা শর্ত ছিল যে সে কখনই সামনে থেকে নেতৃত্ব দেবে না।

কেন? ব্যাখ্যা চাইলে বলল ’এমনিই’ রহস্যজনক উত্তর। কিন্তু তখনকার মত এনিয়ে আর কেউই বিশেষ মাথা ঘামাল নাক।

আমাদের প্রথম পদক্ষেপ ছিল ঘোষনা দিয়ে ক্লাশ বর্জন এবং পরবর্তীতে অবস্থান ধর্মঘট।

দ্বীতিয়টার আর প্রয়োজন পরেনি প্রথমটাতেই বাজিমাত! আমাদের প্রথম পদক্ষেপই ইনস্টিটিউটে রীতিমত তুমুল আলোড়ন সৃস্টি করল।শিক্ষকসহ ওদেশী ছাত্ররা সবাই ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল!

ক্লাশ বন্ধের দু'দিনের মাথায় ডিপার্টমেন্ট ডিন থেকে শুরু করে সব শিক্ষরা আমাদের হোস্টেলে ছুটে আসল আলোচনার জন্য। তারা কখনই এমন পরিস্থিতির সন্মুখীন হয়নি সেজন্য কিভাবে এসব পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হয় তা তাদের জানা নেই। তারা কিভাবে আলোচনা শুরু করবে এইটেই বুঝে উঠতে পারছিল না। তাদের অসহায়ত্ব ভাব দেখে আমরা সামনে গাম্ভীর্যতা দেখালেও ভিতরে ভিতরে্র সবাই হেসে খুন হচ্ছিলাম!

তারা আমাদেরকে আন্দোলন থেকে সরে আসার আহ্বান করল। বিপরীতে তারা আমাদের যে কোন অনুরোধ মেনে নিবে ।

কিন্তু তারা একটা শর্তও জুড়ে দিল যে প্রতিটা ছাত্রের নিজস্ব বক্তব্য শুনতে চায় কারন তারা সন্দিহান সবাই পরীক্ষা বর্জনের বিপক্ষে নয় দু'য়েকজনকে জোড় করে দলে টানা হয়েছে। আমরা খুশী মনে তাদের প্রস্তাব মেনে নিলাম- কেননা কেউই যে নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমাদের এই আন্দোলনে যোগ দেয়নি সে ব্যাপারে আমরা শতভাগ কনফার্ম ছিলাম।

আমাদের ইনস্টিটিউট কতৃপক্ষ জানালেন যে তারা পরদিন অফিস টাইমে টিচার্স রুমে আমাদের সবার সাথে মিলিত হবে।

আমাদের অগ্রিম বিজয়ের আনন্দে আমরা সেদিন রাত্রেই বিশেষ পার্টির আয়োজন করলাম। সেখানে সবার মধ্যমনি ছিল তন্ময়।অনেকের চোখেই সে তখন হিরো।

দারুন হৈ হুল্লোড় করে আমরা রাত কাটিয়ে পরদিন যথা সময়েই ইনস্টিটিউটে গিয়ে উপস্থিত হলাম ।

কিছুক্ষনের মধ্যেই আমাদের সাক্ষাৎকার পর্ব শুরু হল; একেকজন দারুন টেনশন নিয়ে যাচ্ছে কেননা সবারই ধারনা ছিল তাকে কঠিন কোন প্রশ্নের সন্মুখীন হতে হবে যার উত্তর দিতে গিয়ে সে জট বাধিয়ে ফেলবে। কিন্তু ফিরে আসছে মোটামুটি উৎফুল্ল চিত্তেই -বোঝা যাচ্ছে তেমন কোন কঠিন প্রশ্নের সন্মুখীন হতে হয়নি- সবার শেষে আমার ডাক পড়ল।

আমি খুব সাবলীল ভঙ্গীতে রুমে ঢুকলেও ভিতরে ঢুকে একটু নার্ভাস হয়ে পরলাম। ওখানকার পরিবেশটা দারুন থমথমে। সবাই পাথরের মত মুখ করে বসে আছে।

প্রথমে আমাকে কয়েকটা টুকটাক প্রশ্ন করল; যেমন, আমাদের ইনস্টিটিউট কেমন লাগছে ?এখানকার পড়ালেখার মান কেমন? শিক্ষকরা কেমন? হোস্টেলে কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা?

আমি সাবলীল ভাবেই উত্তর দিলাম।

অবশেষে সেই কাঙ্খত প্রশ্নটি করল, তুমি কি পরীক্ষা দিতে চাও কি না ?

আমি সরাসরি 'না' বললাম না একটু ঘুড়িয়ে বললাম; আমাদের প্রিপারেশন ঠিক মত হয়নি। আমরা পরীক্ষা দেয়ার জন্য এমুহুর্তে প্রস্তুত নই। তাছাড়া যেহেতু সব ছাত্র মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা পরীক্ষা দিবে না সেহেতু আমিও তাদের সাথে একমত।’

তারা আমাকে বোঝাতে চেস্টা করল। কেন পরীক্ষা দিবে না? তুমি ভাল ছাত্র।পাশ করা তোমার জন্য কোন ব্যাপারই না-- এই সব...

আমি মনে মনে হাসলাম,আমি তো জানি নিজেকে! অযথা তারা মিস্টি মিস্টি কথা বলে আমাদের ভিতরে বিভক্তি করতে চাইছে।

রুম থেকে বের হয়ে করিডোরে এসে দেখি কেউ নেই। আমি দারুন আশ্চর্য হলাম। সেই সঙ্গে ব্যাথিতও! নাহ্ এ হতে পারে না। সবাই আমাকে ফেলে চলে যাবে!

তাছাড়া ইনস্টিটিউট কতৃপক্ষ তো এখনও তাদের শেষ সিদ্ধান্তের কথা জানায়নি।

তারা কি এতটাই কনফিডেন্ট যে এটা শোনারও প্রয়োজন অনুভব করল না।

খুব কস্ট পেলাম আমার সহপাঠীদের ব্যাবহারে। ইচ্ছাকৃত বিক্ষিপ্তভাবে কিছুক্ষন এদিক ওদিক ঘুরে অনেক দেরী করে হোস্টেলে গেলাম।

আমি ভেবেছিলাম সেখানে গিয়ে দেখব প্রচন্ড হৈ হুল্লোড় হচ্ছে। কিন্তু হোস্টেল করিডোরে পা রাখতেই চমকে ইঠলাম। এ যেন মৃতপুরী! প্রতিটা রুমের দরজা বন্ধ। কোথাও যেন কোন প্রাণের চিহ্ন নেই! যা চরমভাবে অপ্রত্যাশিত- তার মানে কি কেউ আসেনি? কোথায় গেল ওরা?

চিন্তিত চিত্তে ধীরে ধীরে আমার রুমের দিকে এগিয়ে গেলাম। আমার রুম বাইরে থেকে তালাবদ্ধ।পকেটে হাত দিয়ে ডুপ্লিকেট চাবি বের করে তালা খুলতে যাব সে মুহুর্তে পিছন থেকে কে যেন আমার নাম ধরে ডাকল?

পিছনে তাকিয়ে দেখি আমার প্রাক্তন রুম মেট তার রুমের দরজা খুলে আমাকে ডাকছে।

এখানে উল্লেখ্য, কিছু অপ্রীতিকর ঘটনার জন্য কিছুদিন আগে আমি ওই রুম ছেড়ে চলে আসি যার মুল কারন ছিল আমার ওই প্রাক্তন রুমমেট। যে আমার দৃস্টিতে সব অঘটনের উদ্যোক্তা। সরল ভাবে যে কোন কিছুই চিন্তা করতে পারেনা বলেই আমার বিশ্বাস।

দ্বীধান্বিত পায়ে এগিয়ে গেলাম তার রুমের দিকে । রুমে ঢুকেই আবার চমকে উঠার পালা একি সবাই এখানে? যেন মৃত মানুষের আত্মার শান্তির জন্য মৌনতা অবলম্বন করছে ! সবাই মাথা নিচু করে নিশ্চুপ বসে আছে। আমার ধারনা হোল ইনস্টিটিউট কতৃপক্ষ নিশ্চই আমাদের দাবি প্রত্যাখান করেছে সে কারনেই হয়ত .....চতূর্থ পর্ব সমাপ্ত

আগের পর্বের জন্য; Click This Link

মন্তব্য ৩৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৩৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:০২

মামুন রশিদ বলেছেন: ভাল লেগেছে ।

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:১৪

শেরজা তপন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই 'মামুন রশিদ'। ভাল থাকুন নিরন্তর!

২| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৩১

ঘাসফুল বলেছেন: বিরাট সাসপেন্স!

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫৩

শেরজা তপন বলেছেন: :) তাই নাকি?
ধন্যবাদ অনেক বরাবরের মত সাথে থাকবার জন্য। ভাল থাকুন।

৩| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৩৫

লাবনী আক্তার বলেছেন: বেশ কিছুদিন পর আসলাম । কেমন আছেন ভাইয়া?

পড়ে ফেললাম গল্পটা। ভালো লাগল।

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫৫

শেরজা তপন বলেছেন: হ্যা তাইতে দেখছি! হারিয়ে গেছেন প্রায়... :(
ভাল আছি।পুরো বছরের মধ্যে সবচেয়ে ব্যাস্ততম মওসুম আমার -তারপেরও সুযোগ পেলে ব্লগে ঢুঁ দিচ্ছি...
আপনি কেমন আছেন? নিশ্চয়ই ব্যাস্ত?
ধন্যবাদ অনেক-কাছে দুরে যেখানেই থাকুন ,ভাল থাকুন সবসময়।

৪| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:০৬

লাবনী আক্তার বলেছেন: জ্বি! ভাইয়া ভালো আছি। :)

আসলে গল্প বড় হলে আর পড়ার সময় পাইনা। :( তাই দেখেন না।

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৪

শেরজা তপন বলেছেন: বড় লেখা অনেকেই পড়তে চায়না - তবুও এইবার ইচ্ছে করেই এক বড় করে লেখা দিলাম...
সমস্যা নেই- মাঝ মধ্যে দেখা পেলেই হবে। ভাল থাকুন

৫| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৩২

তূর্য হাসান বলেছেন: ওহ্ এমন জায়গায় থামলেন! মনে হচ্ছে টাইম মেশিনে করে দেখে আসি!‍!! ভালো থাকুন।

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৬

শেরজা তপন বলেছেন: এইখানে এসে না থামলে লেখাটা আরো দু-পৃষ্ঠা বেড়ে যেত। বড় লেখার এমনিতেই পাঠক কম- তাই আর বেশি বাড়ালাম না।পরের পর্বে খানিকটা ক্লাইমেক্স আছে :) আশা করি আপনাকে সে পর্বে পাব।
ধন্যবাদ অনেক। ভাল থাকুন সর্বক্ষন।

৬| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:০৮

হাসান মাহবুব বলেছেন: খাইছে! একদম ঝানু সিরিয়াল রাইটারের মতো পজ দিসেন! পুরাই ছটফটানি অবস্থা। পরের পর্ব দ্রুত চাই।

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫২

শেরজা তপন বলেছেন: :)খানিকটা চেষ্টা করলাম ঝানু রাইটারদের নকল করার।
আগের পর্বের হতাশা কাটল কিনা জানালে প্রীত হতাম। এই পর্বে আগের পর্বের সমালোচনার কোন প্রভাব পড়েছে কিনা সেইটে জানতে ইচ্ছে করছে।
আপনার মন্তব্যে বিমোহিত হলাম!( ভাল কথা লিখলে সবারই ভাল লাগে।) ভাল থাকুন।

৭| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৯

ধানের চাষী বলেছেন: অপেক্ষায় থেকে থেকে অধৈর্য হয়ে গিয়েছিলাম, শেষ পর্যন্ত চতুর্থ পর্ব দিলেন! :)

তন্ময়ের জন্য খারাপ লাগছে, এভাবে প্রতারিত হওয়াটা খুবই দুঃখজনক, পরের পর্ব তাড়াতাড়ি দিয়ে দিন।

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০৬

শেরজা তপন বলেছেন: আরো খারাপ লাগা বাকি আছেরে ভাই! দুঃখ সুঃখ নিয়ে আর লিখতে ভাল লাগেনা-তারপরেও বারবার মন খারাপ করার মত ঘটনাগুলো মাথার মধ্যে হুটোপুটি করে! :)
কি করব বলুন ; ব্যাস্ততা বেড়েই যাচ্ছে কমা-কমতির লক্ষন নাই।
ভাল থাকবেন।

৮| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১২

কালোপরী বলেছেন: :)

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৯

শেরজা তপন বলেছেন: ইস্ আপনার এই হাসিটা মিস করছিলাম ভীষন! এখন তৃপ্ত হলাম:)

৯| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২০

প্রজন্ম৮৬ বলেছেন: আমি চেষ্টা করি আপনার একটা সিরিজ শেষ হওয়া পর্যন্ত আপনার ব্লগে ঢোকার কথা ভুলে থাকতে, যেন একবারে পুরো সিরিজটা পড়া যায়। কারন সিরিজের যে কোন একটা পর্ব শুরু করলে শেষ না হওয়া পর্যন্ত যেই ফিলিং হয় সেটা কেন যেন ধারন করতে পারি না।

এবার ধরা খেয়ে গেলুম :(

লেখা যে কত চমৎকার হয়েছে সেটা নিয়ে বলার কিছুই নাই, শুধু এটুকুই বলবো, নেক্সট পর্বটা শীঘ্রই, "দাবী" করে যাচ্ছি +++++++++

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:০২

শেরজা তপন বলেছেন: :) ধরা খেয়েছেন দেখে আনন্দিত হলুম !
কি বলেন-নেটে বসে এত গুলো পর্ব একসাথে পড়া তো দারুন ধৈর্যের ব্যাপার। আপনি ভাই মহা ধৈর্য্য নিয়ে পৃথিবীতে এসেছেন।
মন্তব্য পড়ে চরম আনন্দিত ও বিমোহিত হলাম- পরের পর্ব আসবে শিঘ্রি!
ততক্ষন ভাল থাকুন।

১০| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:২৯

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: উফ! আমি এই কারনেই সিরিজ গল্প গুলো পড়ি না। পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা খুব কষ্টকর এবং যদি সেটা হয় দারুন একটা গল্প। দ্রুত দেয়ার অনুরোধ রইল।

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৩৮

শেরজা তপন বলেছেন: :) এমন মন্তব্য শুনেতো আমি আকাশে উড়ছি!
আপনার মত এমন গুটিকতক ব্লগারের আগ্রহ থাকলে পরের পর্ব এসে যাবে শিঘ্রি। এমন যন্ত্রনা দেবার জন্য দুঃখিত। ভাল থাকুন সবসময়।

১১| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৩২

মনিরা সুলতানা বলেছেন: কমেন্ট ধর্মঘট করলাম...............
পরের পর্বে না পাবার আগে পর্যন্ত X(

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৪২

শেরজা তপন বলেছেন: হায় হায় এইটা কি বললেন!!!:) আপনি কমেন্ট ধর্মঘট করলে আমার কি হবে?? তাইলে পরের পর্ব দেবার আগে আর কমেন্ট করছেন না ? :)

রাগ করার জন্য ধন্যবাদ-ভাল থাকুন নিরন্তর।

১২| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:১৪

রুপ।ই বলেছেন: দারুন হয়েছে..........।কবে পাবো পরের পর্ব ?

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৩

শেরজা তপন বলেছেন: পরের পর্ব পেয়ে যাবেন শিঘ্রি- কিন্তু তখন আপনাকে পাবতো?
পরের পর্বে কিন্তু আপনার মন্তব্যের অপেক্ষায় থাকব।
অনেক ধন্যবাদ- ভাল থাকুন।

১৩| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:০৮

অদৃশ্য বলেছেন:




তপন ভাই

এটা ঠিক কাজ করলেন না... এভাবে কেউ শেষ করে!

এমন একটা জায়গায় শেষ টানলেন যে পরের পর্বের জন্য তীর্থের কাকের মতো অপেক্ষায় থাকতে হবে...

দারুন জমিয়েছেন এই পর্বটা...

শুভকামনা...

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৫১

শেরজা তপন বলেছেন: ঠিক তাই...:) ছোট্ট একটা ভুল হয়ে গেছে!
আপনার মন্তব্যে বরাবরের মত বিমোহিত হলাম।
ভাল থাকুন সর্বক্ষন-অপেক্ষায় রইলাম পরবর্তী পর্বে মন্তব্যের...

১৪| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৭

এক্সপেরিয়া বলেছেন: এবারই এসে ধৈর্য্য নিয়ে চারটা পর্বই পড়ে ফেললাম । কিন্তু শেষে এসে সেই অপেক্ষাতেই থাকতে হল । :(

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৫২

শেরজা তপন বলেছেন: চরম ধৈর্য্যের পরিক্ষা দিয়েছেন বোঝা যায় :)
একসাথে চারটে পর্ব পড়া চাট্টিখানি কথা নয়! সেজন্য সবিশেষ ধন্যবাদ আপনাকে-ভাল থাকুন নিরন্তর।

১৫| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৫৫

আমি ব্লগার হইছি! বলেছেন: ভালো লাগলো। আরো পড়ার অপেক্ষায় আছি।

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৫৩

শেরজা তপন বলেছেন: এবার একটু ভাললাগার প্রকাশ কম- লাইকে একজনমাত্র চাপ দিয়েছেন!
আপনাকে দেখে ভাল লাগল। ভাল থাকুন...

১৬| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ২:৪৩

আল ইফরান বলেছেন: এই পর্বটা কোনোভাবে মিস করে ফেলেছিলাম :(
ভালো লাগলো, :)
পরের পর্বে ঝাপ দেই :-B

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:২২

শেরজা তপন বলেছেন: পরের পর্বগুলোতে আপনার মন্তব্যগুলোর প্রতিউত্তর দিয়ে একটু দেরিতেই পিছনে তাকালাম।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

১৭| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৮:০৭

সাইফুল ইসলাম নিপু বলেছেন: +++++

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:২৩

শেরজা তপন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ- কিন্তু এর পরে হারিয়ে গেলেন যে?
দেরিতে উত্তর দেবার কারনে রাগ করেছেন?

১৮| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৭

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: এই পর্বটা কি আমি পড়িনি ?? মনে তো হচ্ছে পড়েছি কিন্তু আমার কমেন্ট কই ?? যাই হোক অদ্ভুত এক টানটান উত্তেজনাপূর্ণ জায়গায় শেষ করলেন। খুব ভালো লাগলো। যাই পরের পর্বে দৌড় লাগাই।

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:২৪

শেরজা তপন বলেছেন: আপনাকেও এই পর্বে না দেখে আমারও মনটা খারাপ হয়েছিল- এখন ভাল হয়ে গেল :)
ধন্যবাদ ভাই।

১৯| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:১৯

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: সবগুলো পর্ব পড়ে অনুভূতি জানিয়ে যাবার ইচ্ছা রাখি।

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:২৫

শেরজা তপন বলেছেন: জ্বী প্রফেসর সাহেব, আমিও প্রতিক্ষায় রইলাম শেষ পর্বে মন্তব্যের! ভাল থাকুন নিরন্তর।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.