নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাঝে মাঝে মনে হয় জীবনটা অন্যরকম হবার কথা ছিল!

শেরজা তপন

অনেক সুখের গল্প হল-এবার কিছু কষ্টের কথা শুনি...

শেরজা তপন › বিস্তারিত পোস্টঃ

শুন্যের গর্ভে- পর্ব পাঁচ ও ছয়

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:৫২

দ্বীধান্বিত পায়ে এগিয়ে গেলাম তার রুমের দিকে । রুমে ঢুকেই আবার চমকে উঠার পালা একি সবাই এখানে ? যেন মৃত মানুষের আত্মার শান্তির জন্য মৌনতা অবলম্বন করছে ! সবাই মাথা নিচু করে নিশ্চুপ বসে আসে । আমার ধারনা হোল ইনস্টিটিউট কতৃপক্ষ নিশ্চই আমাদের দাবি প্রত্যাখান করেছে সে কারনেই হয়ত ..... ।

তন্ময় হঠাৎ মুখ তুলে আমাকে ডাকল তার সামনে বসার জন্য বলল। তার কন্ঠস্বর শুনে আমি হতভম্ব! এ রকম কন্ঠে সে আমার সাথে কখনও কথা বলেনি। তার চেহারার দিকে তাকেয়ে আমি একটু ঘাবড়ে গেলাম। চোখ দুটো টকটকে লাল সেখানে আবার পানি টলমল করছে। কোকড়ানো চুলগুলো আরো বেশী উস্কখুস্কো। ভাবলাম, বেচারার প্লান হয়তো সফল হয়নি তাই সে এভাবে ভেঙ্গে পড়েছে...

সামনা সামনি দুটো খাট তার একটায় পা নামিয়ে সে বসে আছে আমি ধীর পায়ে এগিয়ে গিয়ে তার সামনের খাটটায় বসলাম। তাকে জিজ্ঞেস করলাম ,’কি হয়েছে?

সে আমার কথার উত্তর না দিয়ে বিশাল জানালা দিয়ে বাইরে আকাশের দিকে তাকাল। হয়তো অশ্রু“ সংবরন ও ধাতস্ত হওয়ার প্রচেস্টা- কেননা এখান থেকে বাইরে দেখার মত কিছুই নেই বরফ ছাড়া।

একটুক্ষন পরে সে আমার দিকে মুখ ফেরাল। খুব শান্ত ভাবে জিজ্ঞেস করল, ডিন আমাকে কি কি প্রশ্ন করেছিল আর আমি তার কি উত্তর দিয়েছি?

আমি খুব স্বাভাবিক ভাবে বলতে শুরু করলাম। কিন্তু আমার কথা মাঝপথে থাকতেই আচমকা প্রচন্ড ঘুষির তোড়ে আমি ভুপাতিত হলাম। আমাকে আঘাত করেছে আর কেউ নয় সেই তন্ময়!!

বিস্ময়ে হতবাক হয়ে আমি যখন কিছু ভাবার সুযোগ খুজছি তখনই আবার আঘাত। আমিও প্রতিরোধ করার চেস্টা করলাম। কিন্তু সে তখন চালকের আসনে- তা ছাড়া সে ছিল আমার চেয়ে যথেস্ট শক্তি শালী।

সবাই যখন দাড়িয়ে দাড়িয়ে আমাদের ডুয়েল দেখছে তখন সবাইকে উপেক্ষা করে হোস্টেলের সবছেয়ে ছন্নছাড়া রাগী ছেলেটা তাদেরকে সে দ্বৈরথ থামাতে এগিয়ে আসল। আমি লড়িনি শুধু অহিংস প্রতিরোধ করেছিলাম।



যেন প্রচন্ড ঝড়ের পরে পৃথিবী শান্ত হয়ে গেল। আমি সেখান থেকে এতটুকু নড়িনি আর তন্ময়ও তার সেই আগের অবস্থানে। বিস্ময় রাগ দুঃখ ক্ষোভ অপমান অভিমানে আমার দুচোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে উষ্ণ জলের ধারা । আর ওদিকে তন্ময়ও কেঁদে চলেছে শিশুদের মত শব্দ করে।

আমার সেই ছন্নছাড়া বন্ধু হাত বাড়াল আমাকে আমার রুমে নিয়ে যাবার জন্য, আমি এক ঝটকায় তার হাত ছাড়িয়ে তখন রুখে উঠলাম- বললাম,একটা প্রশ্নের উত্তর না জেনে কিছুতেই আমি এখানথেকে যাব না। আর সেটা তন্ময়ের কাছে, কেন সে আমাকে আঘাত করল ?

তন্ময় নিশ্চুপ নির্নিমেষে অন্য দিকে তাকিয়ে আছে - আমি অপেক্ষা করছি উত্তরের জন্য?

বেশ কিছুক্ষন এভাবে কাটল তখন অন্য এক সহপাঠী আমাকে এর কারন ব্যাখ্যা করল; সে নাম মেনশন না করে বলল, দুয়েকজনের ধারনা ছিল আমাদের মধ্যে কেউ কেউ এই আন্দোলনের বিপক্ষে তারা সামনে কিছু না বললেও ডিনের সামনে ঠিকই প্রকাশ করবে। আর সেই বিট্রেয়ারকে বের করার জন্য আড়ি পাতা হয়ে ছিল। আর তাদের সেই গোয়েন্দা খবর দিয়েছে আমি নাকি বলেছি ’এই আন্দেলন ওদের আমি ওর মধ্যে নেই।’ একথা শুনেই তাদের ধারনা হয়েছে শিক্ষকরা আমাদের দাবি মেনে নিবে না সেজন্যই তারা শিক্ষকদের সিদ্ধান্তের কথা না শুনেই চলে এসেছে।

ছিঃ কি মিথ্যা অপবাদ!

আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম ,আমার কথা কে শুনেছিল?

সে বলতে চাইলনা।

সেদিন সারা রাত একফোটা ঘুমাতে পারিনি। সারারাত ক্ষোভে অপমানে ছট্ফট করেছি।

পরদিন সকালেই খবর এল আমাদের পরিক্ষা বাতিল অর্থাৎ কেউ বিশ্বাসঘাতকতা করেনি।

আমার এই ছন্নছাড়া বন্ধুতো দারুন খুশী। সে খুশীর চোটে অনেকটা ভদকা গিলে ফেলল। তার পরেই তার স্বভাব সুলভ মেজাজে সবাইকে শাসাতে শুরু করল।আমার পক্ষ নিয়ে হোস্টেলের সবাইকে গালিগালাজ করল ইচ্ছেমত।

মদ গিললে তাকে রুখে কার সাধ্যি?

তখন সবার কি অভিব্যাক্তি! কেউ যেন আমার সামনে চোখ তুলে তাকাতে পারছে না যেন দারুন লজ্জা পাচ্ছে। কেউ কেউ আমার কাছে এসে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে নিজেকে সাধু সাজানোর চেস্টা করল। আমি তাদের কাছে শুধু জানতে চাইলাম, কে আমার সময়ে আড়িপেতে ছিল?

অবশেষে জানলাম। সে আর কেউ নয় আমার প্রাক্তন রুমমেট! আমার আগেই সন্দেহ হয়েছিল। সেই শত্রুতাবশতঃ এ কাজ করেছে। অবশ্য সুযোগ পাওয়া সত্বেও আমি কোন প্রতিশোধ নেইনি।

সেদিনের পর থেকে তন্ময় আর কখনই আমার সাথে লজ্জায় কথা বলতে

পারেনি। তবে অন্য বন্ধু মারফত আমার কাছে ক্ষমা চেয়েছিল। কিন্তু আমি কোনদিন সে অপমান ভুলতে পারিনি।



সেদিনের পর থেকে আমরা দৃশ্যত দুটো শিবিরে বিভক্ত হয়ে গেলাম।আমাদের বিপক্ষ শিবিরের মুল উদ্যোক্তা ছিল আমার সেই প্রাক্তন রুমমেট । যদিও তারা সংখ্যায় নেহায়েত কম ছিল কিন্তু তাদের তুরুপের তাস ছিল তন্ময়। অনেক চেস্টা করেছে তন্ময়কে তাদের দলের লিডার বানাতে। কিন্তু তন্ময় সেদিনের ঘটনার পরে একদম ম্রিয়মান হয়ে পরেছিল। সেইসঙ্গে হয়তোবা অনুতপ্তও- যেজন্য আমাদের বিশেষ করে আমার সাথে তার বন্ধুত্ব কাম্য ছিল শত্রুতা নয়।

সে প্রথম প্রথম বাধ্য হয়ে ঐ দলকে সাপোর্ট করলেও একসময় ঠিকই আমাদের দলে ভেড়ার সুযোগ খুজতে থাকল। আর সেই পথটা প্রসস্ত করে দিলাম স্বয়ং আমি ।

তার প্রতি আমার প্রচন্ড রাগ থাকলেও একটা সহানুভুতি অবশ্যই ছিল । এটা বুঝতে আমার অসুবিধে হয়নি য , সে ও আমি দুজনেই পরিস্থিতির স্বীকার।

আমাদের রুমে বিশেষ রান্নার আয়োজন হলে তাকে অন্য বন্ধু মারফত ডেকে নিয়ে আসতাম। সে আসত দ্বীধাভরে মাথা নিচু করে। আমার রুমে ঢুকে খাটের এককোনে চুপ করে বসে থাকত।

ধীরে ধীরে সে অনেকটা সহজ ও স্বাভাবিক হয়ে উঠল। কখনো আমার ইনস্টিটিউটে যেতে দেরী হলে তাকে দেখতাম রেডি হয়ে বাইরের দরজায় অপেক্ষা করতে। আমাদের কার্ড খেলায় আবার সে হয়ে উঠল অপরিহার্য নিয়মিত পার্টনার। সেই আগের মতই অধম যখন গো হারা হারতাম তখন তাকে দেখতাম দান ছেড়ে দিতে।

সে এক অদ্ভুত রকমের বন্ধুত্ব। কেউ কারো সাথে কথা বলতাম না কিন্তু সর্ম্পর্ক ছিল দারুন আন্তরিকতাপূর্ন। আমি যখন বাইরে বাজার করতে বা ঘুরতে বেরুতাম এসে দেখতাম সে আমার বিছানায় শুয়ে বেঘরে ঘুমাচ্ছে । আমি তার ঘুমের ব্যাঘাত না ঘটিয়ে তখন অন্য রুমে গিয়ে আড্ডা দিতাম । কখনোবা বাইরে বেরুনোর মুখে আমার সার্ট ওভার কোর্ট, মাফলার বা টুপি খুজে পাচ্ছিনা। রুমের সম্ভাব্য সব জায়গায় আতিপাতি করে খুজে ক্লান্ত হয়ে হাল ছেড়ে বিমর্ষ বদনে অন্য বন্ধুরটা ধার করার উদ্দেশ্যে পা বাড়াতে গিয়ে দেখি তন্ময় সেই পোষাক পরে নিশ্চিন্ত মনে ঘুরে বেড়াচ্ছে । রাগ করতে গিয়েও নিজেকে সামলে নিতাম ।

যা একসময় অভ্যাসে পরিনত হয়ে গেল। আমার কোন পোষাক না পেলেই ধরে নিতাম এটা সে নিয়েছে।

প্রথম দিকে সে আমার অগোচরেই নিত- কিন্ত যখন বুঝতে পারল আমি তাকে প্রশ্রয় দিচ্ছি তখন সেআমার সামনেই পোষাকের আলমারি থেকে ইচ্ছেমত পোষাক বের করে পরা শুরু করল।

তবে আমার অগোচরে একটা ব্যাপার প্রায়ই ঘটতে থাকল আর সেটা হল আমার রুমে উদ্বৃত্ত কোন খাবার রেখে গেলে সে সেটা চেটেপুঠে সাবাড় করে দিত।

আমি আমার রুমের তালা বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া লাগাতাম না- কেননা ওটা ছিল সবার আড্ডা কার্ড খেলা মিটিংয়ের স্থান। তাছাড়া কারো কিছু প্রয়োজন পরলে সবার আগে আমার রুমে খুজতে আসত। প্রায় সবার সেখানে ছিল অবাধ প্রবেশ। তবুও আমি ও আমার রুমমেট বাইরে থাকলে কেউ পারতপক্ষে আসত না। কিন্তু তন্ময় ছিল এর ব্যাতিক্রম। সে রুমে আমি থাকলেই কম আসত। বাইরে গেলেই সমগ্র রুমের নিয়ন্ত্রন সে নিয়ে নিত । আমি আশ্চর্য হতাম হোস্টেলের এতগুলো ছেলের কেউই কখনই উদ্যোগী হয়নি আমাদের সম্পর্ক উন্নয়নের। আমাদের সম্পর্ক যততুকু তরল হয়ে ছিল সেটা আমাদেরই প্রচেস্টায়।

আমাদের পরস্পরের বাকহীন আন্তরিকতা দেখে তারা হয়তো মজাই পেত।

...এই পর্ব সমাপ্ত

শুন্যের গর্ভে-পর্ব ৬

...এভাবে কেটে গেল প্রায় বছরখানেক।

তন্ময় প্রায়ই মস্কো যেত। ওখানে কেন যেত? গিয়ে কি করত ? সেটা আমার ধারনা প্রায় কাউকেই বলত না। প্রায় প্রত্যেকেই দেখতাম তার এই ঘন ঘন মস্কো যাওয়ার অন্তর্নিহিত কারন জানতে উৎসাহী?

সে প্রথম হোস্টেলে আসার মাস তিনেক বাদে আমাকে সাথে নিয়ে মস্কো গিয়েছিল। আমি যে শহরে থাকতাম সেটা মস্কো থেকে প্রায় সাড়ে চারশো কিলোমিটার দুরে। যোগাযোগের দুটো মাধ্যম ছিল-ট্রেন ও প্লেন। বছরের প্রায় নয় মাস সারা দেশ বরফে মুড়ে থাকার কারনে দুরপাল্লার বাস যোগাযোগ প্রায় ছিল না বললেই চলে। পণ্য ও যাত্রী পরিবহনের মুল মাধ্যমই ছিল ট্রেন।

ট্রেনের প্রথম শ্রেনীর ও বিমানের ভাড়া ছিল প্রায় সমান তবুও প্রায় সব রুশদের বিমান যাত্রায় ছিল দারুন অনীহা।

তখন সামার ভ্যাকেশন চলছ। ছোট শহর আর হোস্টেলের পরিবেশে কিছুটা যেন হাঁপিয়ে উঠেছিলাম। ও যখন মস্কো যাবার অনুরোধ করল তখন নিদ্বিধায় সাড়াদিয়ে ছিলাম। বরফে মোড়া মস্কোকে ভাল করে দেখতে পারিনি ইচ্ছে ছিল সামারে কয়েকটা দিন ইচ্ছেমত সেখানে ঘুরে বেড়াব সেইসাথে কিছু কেনাকাটাও করা যাবে। কিন্তু উপযুক্ত সঙ্গী কাউকে পাচ্ছিলাম না। সেজন্যই তন্ময়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়ার প্রশ্নই আসে না।

আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম প্লেনে যাব। রুশ নির্মিত সেই ছোট্র ইয়াক-৪২ বিমানটিতে উঠার পরে অনুধাবন করলাম কেন রুশরা বিমানের চেয়ে ট্রেনকে প্রেফার করে বেশী। ভিতরটা ছোট্র অপরিসর। সিটগুলো মোটেই আরামদায়ক নয়। সমস্ত বিমানটাতে একটামাত্র এয়ার হোস্টেজ যার কাজ মুলত বিমান উঠা ও নামার ঘোষনা প্রচার করা । কেননা এসকল ভ্রমনে কোন আপ্যায়নের ব্যাবস্থা নেই। তবে সুখের কথা এই যে ভ্রমন পথ খুবই সংক্ষিপ্ত ।

মস্কো অভ্যান্তরিন বিমানবন্দরে নেমেই ও তড়িঘড়ি করে কয়েক জায়গায় ফোন করল। তারপর ট্যাক্সিতে করে আমাকে সাথে নিয়ে চলল শহর অভিমুখে।

শহরের চারপাশে সবুজের সমারোহ দেখে তো আমি বিমোহিত। অবাক বিস্ময়ে আমি তাকিয়ে ছিলাম সেই সৌন্দর্যের দিকে। ঘন্টা খানেক পরে দশতলা উচু এক এপার্টমেন্টের সামনে সে গাড়ি থামাতে বলল। রাশিয়ার বাইরে থেকে প্রায় সব বাড়িই সাধারন লাগে। কিন্তু ভিতরে ঢুকলে অনেক সময় চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়।

যেটা আমার ক্ষেত্রে সেই প্রথম হল। ভিতরে ঢুকেই বোঝা গেল এখানে অভিজাতদের বাস। কারন আমার চির পরিচিত লক্কর ঝক্কর লিফট আর নোংরা সিড়ি দুটোই অনুপস্থিত। তাছাড়া সিড়ির মাথায় কেতাদুরস্ত পোষাক পরে দারোয়ানও একজন দাড়িয়ে। তার কাছে একটা মিনি ইন্টারভিউ দিয়ে ভিতরে ঢোকার অনুমতি পেলাম।

আমাকে সাথে নিয়ে সাত তলায় অবস্থিত যে ফ্লাটটাতে প্রবেশ করল সেটা দেখেই বোঝা যাচ্ছিল এর মালিক যথেস্ট অর্থবান। আমরা ওয়েটিং রুমে অপেক্ষা করার এক পর্যায়ে পর্দা ঠেলে সাধারন চেহারার খাটোমত এক বাঙ্গালী ভদ্রলোক প্রবেশ করলেন। তন্ময় তাকে দেখামাত্র উঠে দাড়িয়ে সন্মান জানাল। আমিও তার দেখাদেখি উঠে দাড়ালাম। সে আমার সাথে তার পরিচয় করিয়ে দিল। ভদ্রলোক তাচ্ছিল্যের ভঙ্গিতে আমার দিকে একবার শুধু তাকালেন। সন্দেহ নেই যে কারনে আমি কিঞ্চিৎ অপমানিত বোধ করলাম।

তারা দুজনে দীর্ঘক্ষন নিজেদের মধ্যে কখনও উচ্চস্বরে কখনও বা নিন্ম স্বরে আলাপ করছিল। তাদের আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে কেন যেন আমার কোন আগ্রহ সৃস্টি হলনা। তাদের মধ্যেকার আলোচনার প্রায় সব সময়টুকু আমি রুমের সৌন্দর্য দেখায় মনোনিবেশ করেছিলাম। বাংলাদেশের সব্বোচ্চ পর্যায়ের দুজন রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্বের সাথে তার ঘনিষ্ঠ ছবি দেখে আমি নিশ্চিত হলাম ইনি শুধু অর্থবানই নন ক্ষমতাধরও।

আলোচনা শেষে তন্ময় আমাকে উদ্দেশ্য করে বলল,কখনও যদি কঠিন কোন সমস্যায় পর তাহলে উঁনার সাথে যোগাযোগ কোর। ভদ্রলোক একটা অহংকার পূর্ন হাসি দিয়ে তার ভিজিটিং কার্ড আমার দিকে এগিয়ে দিলেন।

ওখান থেকে রের হয়ে আমার অনিচ্ছা সত্বেও তন্ময় আরো কয়েক জনের সাথে আমার পরিচয় করিয়ে দিল সেই সাথে নিজেও তার আলাপ সেরে নিল।

আমাকে যাদের সাথে পরিচয় করাল তারা প্রত্যেকেই সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যাবসায়ী।

আমার ধারনা ছিল না যে মস্কোতে এতগুলো বাঙ্গালী ধনী ব্যাবসায়ী আছে । ইনারা নিশ্চই আমার দেখা বাংলাদেশী ব্যাবসায়ীদের একাংশ।

পরে জেনেছিলাম এরা সবাই রাজনৈতিক মদদপুস্ট। এদের ধনী হওয়ার পিছনের ইতিহাস খুব একটা কলঙ্কমুক্ত নয়। এদের থেকেও অনেক বড় বড় ব্যাবসায়ী আছে যারা সম্পুর্ন নিজেদের প্রচেস্টা আর ভাগ্যের সহায়তায় অনেক দুর গিয়েছে। কিন্তু এদের মত কারো মদদ বা অনুগ্রহে নয়।

সেবার মস্কোতে মাত্র একদিন ছিলাম। ওখান থেকে ফেরার পথে বা ফেরার পরে কখনই তন্ময়কে আমি জিজ্ঞস করিনি ওঁদের সাথে পরিচয়ের সুত্র।

হোস্টেলের সবাই তন্ময়ের রহস্যজনক ব্যাবহারের এমনিতেই কিছুটা সন্দেহ করত। তদুপরি তারা যদি জানত তারসাথে মস্কোর বড় বড় চাঁই এর সাথে তার ঘনিষ্ঠতা তাহলে সেই সন্দেহটা নিঃসন্দেহে ডালপালা ছড়িয়ে আরো বিস্তার লাভ করত।





কোন রকম অঘটন ছাড়াই প্রথম বর্ষ ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হল। যথাসময়ে রেজাল্টও বের হল। সবাইকে বিন্দুমাত্র অবাক না করে তন্ময়ই সব থেকে ভাল রেজাল্ট করল। আর সবার ধারনা কে সামান্যতম অমর্যাদা না করে আমার সেই প্রাক্তন রুমমেট সব থেকে খারাপ!

এত ভাল ফলাফলের পর অন্যান্য ছাত্ররা যখন তন্ময়কে অভিন্দন জানাচ্ছিল তখন লক্ষ্য করলাম সে যেন লজ্জায় নুয়ে পড়ছে। ভাবটা এমন যে এত ভাল রেজাল্ট করে সে বড় ধরনের কোন অপরাধ করে ফেলেছে ।

রেজাল্টের পরদিন আমরা সবাই মিলে বড় ধরনের উৎসবের আয়োজন করলাম।

আমাদের পূর্বের সব পার্টিতেই কোন না কোন অঘটন ঘটত কিন্তু এবার বিশেষ কোন বিপর্যয় ছাড়া ভালয় ভালয় পার্টি শেষ হল। গভীর রাতে ক্লান্ত বিধ্বস্ত সবাই প্রসন্ন চিত্তে ঘুমোতে গেলাম। কেউ ঘুনাক্ষরেও বুঝতে পারল না যে এটাই আমাদের শেষ উৎসব!

পরদিন ইনস্টিটিউটে আমাদের কোন ক্লাস না থাকায় সবাই একটু দেরী করে ঘুম থেকে উঠল, কেউবা অনেক বেলা অব্দি ঘুমাল। দুপুরের দিকে আমাদের ডিপার্টমেন্ট ডিন টেলিফোনে জানালেন যে তারা তিনটার দিকে জরুরী একটা মিটিং ডেকেছেন সেখানে আমরা সবাই যেন অবশ্যই উপস্থিত থাকি ।

হাতে বেশী সময় ছিলনা। সারাদিন অবসরে কাটাবে বলে কেউবা তখনো বিছানায় শুয়ে আড়মোড় ভাঙ্গছে -কেউবা হেড ফোন কানে লাগিয়ে চোখ বুজে মনের সুখে গান শুনছে! কেউ স্বদেশে প্রিয়জনকে চিঠি লেখায় ব্যাস্ত। অতিধুমপায়ীরা বাসি মুখেই একের পর এক সিগারেট টানছে সেই সঙ্গে খোশ গল্প আর খুচরো হাসি ঠাট্রায় ব্যাস্ত , আর সাস্থ্য সচেতন দুয়েকজন করিডোরের শেষ মাথায় অবস্থিত শুধু প্রবাসী ছাত্রদের জন্য নির্মিত আধুনিক জিমনেসিয়ামে ব্যায়াম করছে। মিটিংয়ের কথা শোনা মাত্র সবকিছু তালগোল পাকিয়ে ফেলল।

শুরু হয়ে গেল চিৎকার চেচামেচি হুল্লোড়!

প্রথমে কেউ বিশ্বাস করতে চাইল না ভাবল হয়ত ইয়ার্র্কী মারছে। অতি উৎসাহী (অতি সন্দিহান) একজন )ছুটে গেল টেলিফোন করে খবরের সত্যতা যাচাই করতে । মিটিংয়ের ব্যাপারটা নিশ্চিত হবার পরে অনিচ্ছাকৃতভাবে বিমর্ষ বদনে ক্ষুধার্ত পেটে সবাই চললাম ইনস্টিটিউট অভিমুখে অল্প ক’মিনিটের মিটিং। তবে অতীব গুরুত্বপূর্ন সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই । মিটিংয়ের সারমর্ম দুয়েকজন বুঝতে না পেরে পাশের জনকে খোচাচ্ছিল বিস্তারিত ব্যাখ্যা করার জন্য। আমাদের গুরুত্বপূর্ন ক্লাস বা মিটিংয়ের সারমর্ম সবাই যাতে বুঝতে পারে সেজন্য পর্যায়ক্রমে দু'তিনজন ছাত্রের দায়িত্ব দেয়া হত সবার সামনে দাড়িয়ে সেটার বাংলায় তর্জমা করার। এবার সে দায়িত্ব পড়ল তন্ময়ের উপর ।

সে প্রথমে বলতে অপারগতা প্রকাশ করল উল্টো উপস্থিত শিক্ষক বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গের সাথে প্রচন্ড তর্ক জুড়ে দিল। শিক্ষকদের সাথে আমাদের সম্পর্ক যথেস্ট বন্ধুত্বপূর্ন ছিল কিন্তু তন্ময় আজ যেভাবে কথা বলছে সে ভঙ্গীতে বা সে ভাষায় কেউ কখনো কথা বলতে সাহস পায়নি। সমগ্র ক্লাস বিস্ময়ে বিমূঢ় হয়ে দেখছিল রুদ্র তন্ময়কে। তার এই রুপের সাথে অপরিচিত সবাই। তবে মনে মনে প্রত্যেকেই দারুন খূশী হচ্ছিল। কতৃপক্ষ হুট করে যে অনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটা মেনে নেয়া সম্ভব নয়। এখানে আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্ন জড়িত।

ব্যাপারটা একটু ব্যাখ্যা করি; এখানে কেউই আমরা বৃত্তি ভোগী না কেউ।সবাই নিজেদের গাঁটের পয়সা খরচ করে পড়ালেখা করি। আমাদের টিউশন ফি অন্যান্য দেশের তুলনায় কম হলেও আমরা এখানে অনেক সুযাগ থেকে বঞ্চিত!

যেমন এখানে পার্ট টাইম জবের কোন ব্যাবস্থা নেই। এদের মুদ্রার মুল্য মানের বিচারে আমরা ডলারে অনেক বেশী প্রদান করি । তাছাড়া এদের সাথে চুক্তিই ছিল শেষ বর্ষ পর্যন্ত আমাদের একই পরিমান টিউশন ফি দিতে হবে। কিন্তু কোন এক অজানা কারনে এরা সব চুক্তি ও নৈতিকতা ভঙ্গ করে টিউশন ফি সরাসরি তিনগুন বাড়িয়ে দিল।

ফুট নোটঃ রুশ জাতিরা নিঃসন্দেহে বুদ্ধিমান। আমার ধারনা, আমরা কিছুদিন আগে যেই চরম আন্দোলন করে দাবি আদায় করে তৃপ্তির ঢেকুড় তুলেছিলাম সেইটেই ছিল আমাদের শাপ।এই ঘটনার যাতে পূনরাবৃত্তি না ঘটে শঙ্কার জন্যই হয়তোবা সরাসরি ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের না করে একটু কৌশলে বের করতে চাইছিল।

৬ষ্ঠ পর্ব সমাপ্ত

আগের পর্বের জন্য;

Click This Link

মন্তব্য ৩৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৩৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:০৩

সবুজ সাথী বলেছেন: আগে কি পড়ছি ভুলেই গেছি। আগের পর্বটা ঝালাই করে আসি আগে। :)

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:১২

শেরজা তপন বলেছেন: :( দেরিতে লেখা দিলে এই অবস্থা হয়!!!
আর ঘন ঘন লেখা দিলে কেউ বিশেষ পড়ে না... :(
এরপরে নাটকের সংক্ষিপ্তবৃত্তির মত আগের লেখার জের দিলে ভাল হয় কি বলেন?
আপনার মগজকে একটুখানি কষ্ট দেবার জন্য দুঃখিত। ভাল থাকুন।

২| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:০৩

মনিরা সুলতানা বলেছেন: হুম চাইছে তোমার বন্ধুতা ............।
:) :) :) :) :) :) :) :) :) :) :) :) :) :) :) :) :) :) :) :) :) :) :) :) :) :) :)

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:১৩

শেরজা তপন বলেছেন: এইটা কি কোন গানের কলি? মনে হচ্ছে তেমনটা...
:) এত হাসাহাসি করার অর্থ কি?
জানার অপেক্ষায় রইলাম....

৩| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:১৮

লাবনী আক্তার বলেছেন: বন্ধুত্ব এমন একটি ব্যাপার যে চাইলেই এড়িয়ে চলা যায় না।

সেখানে ভালোবাসা মিশ্রিত থাকে।

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:২৪

শেরজা তপন বলেছেন: হুমম দারুন মন্তব্য -অনেক ভাল বললেন। :)
এমন মন্তব্যের জন্য সবিশেষ ধন্যবাদ-আর সবসময়ে আমার লেখা পড়ার জন্য কৃতজ্ঞতা।
ভাল থাকুন সবসময়।

৪| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:২৫

মনিরা সুলতানা বলেছেন: এটা তো মিষ্টি হাসি ,মানে লেখা দারুন , অনেক অনেক ভাল লেগেছে
পস্পরকে বুঝে নিয়ে একটা চমৎকার সম্পর্কের বর্ণনা করেছেন,সেটাই আমাকে মুগ্ধ করলো ...
মুখে বার বার ভালবাসি বা তুই আমার সবচাইতে প্রিয় বন্ধু , এই ধরনের সম্পর্কের চাইতে ,কিছু না বলে বুঝে নেয়ার ব্যপারগুল আমাকে অনেক বেশী আকর্ষণ করে ।
তবে আফসোস আজকাল এই ধরনের রিলেশন বিলুপ্ত প্রায় :(

জি এটা গানের কলি , বুঝলাম আপনি বুঝতে পেরেছেন পুরুটা :)

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:৩২

শেরজা তপন বলেছেন: পুরোটা বোঝার চোষ্টা করলাম... অবশেষ অনেক মাথা খাটাইয়া বুঝিলাম- :)
সেইরকম মন্তব্য! অকপটে বলিলাম; ভাল লাগিল।
ভাল থাকুন সর্বক্ষন।

৫| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:৩৩

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:



মনিরা সুলতানা বলেছেন: মুখে বার বার ভালবাসি বা তুই আমার সবচাইতে প্রিয় বন্ধু , এই ধরনের সম্পর্কের চাইতে ,কিছু না বলে বুঝে নেয়ার ব্যপারগুল আমাকে অনেক বেশী আকর্ষণ করে ।


সহমত

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:৩৯

শেরজা তপন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই- লেখা পড়েছেন?লেখাটা কেমন লাগল দু-কলম লিখে জানালে কৃতজ্ঞ হতাম।
ভাল থাকুন সবসময়ের জন্য।

৬| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ২:০৭

অদৃশ্য বলেছেন:




তপন ভাই

আপনার লিখার ফ্লো খুব চমৎকার... তাই তাই এর থেকে কিছুটা বড় করে লিখলে পাঠক নিমিষে শেষ করে ফেলবে বলেই আমার ধারনা... যেমন এই পর্বটা আমার মনে হলো শুরুতেই শেষ হয়ে গেলো...

লিখাটি আগের পর্বটা যথেষ্ট আকর্ষণ তৈরী করে রেখেছিলো... এই পর্বটিও যথেষ্ট সুন্দর ভাবেই শেষ হলো...

তন্ময়ের সাথে আপনার এই নিঃশ্চুপ সম্পর্কটা ছিলো অসাধারণ... এমন সম্পর্কে নিজেরা যেমন এক স্বর্গীয় সুখানুভব করে তেমনি অন্যরাও তা ব্যাপকভাবে উপভোগ করে...

চমৎকার গল্পটা পড়ছি অনেক তৃপ্তির সাথে... পরের পর্ব যতটুকু তাড়াতাড়ি দেওয়া যায় দিয়ে দিয়েন...

শুভকামনা...

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৭

শেরজা তপন বলেছেন: আপনার মন্তব্য পড়ে উত্তর দেবার ইচ্ছটা হারিয়ে যায়! কেন?
কেননা এত সুন্দর গুছিয়ে মন্তব্য করেন আপনি-এর প্রতি উত্তর দেবার ভাষা খুজে পাওয়া দুস্কর হয়ে যায়।:(

ব্যাপারটা জানিয়ে রাখলাম- এমন পাঠক পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার!
ভাল থাকুন সর্বক্ষন!

৭| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ২:১৯

সবুজ সাথী বলেছেন:
"এরপরে নাটকের সংক্ষিপ্তবৃত্তির মত আগের লেখার জের দিলে ভাল হয় কি বলেন?"

এটা না করলেও চলে। আগের পর্ব পড়ে আসতে আর কয় মিনিট লাগে।

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২০

শেরজা তপন বলেছেন: ঠিক তাই কি? আপনার মত এমন পাঠক পেলে কোন দরকার নেই- সহমত :)

৮| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ২:৫৪

আল ইফরান বলেছেন: অদ্ভুত মানুষতো আপনার এই বন্ধু তন্ময় B:-)
এত বড় একটা ঘটনার পরেও আপনাদের এই সম্পর্ক যে নিঃশব্দতার মধ্যেও বেচে ছিলো সেটাই একটা আজব ব্যাপার। :||
মানুষ আসলেই অদ্ভুত আর বিচিত্র এক প্রাণী ।

১০ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১১:১২

শেরজা তপন বলেছেন: ঠিক তাই -অন্যরকম আন্তরিকতাপূর্ণ বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল আমাদের!
বন্ধুত্ব একটা তৈরি করা সম্পর্ক- কিন্তু কখনো কখনো সেটা রক্তের সম্পর্কও ছাড়িয়ে যায়। আমাদের সেই সময়কালের সম্পর্কটা তার থেকে বেশী বৈ কম ছিল না।
অনেক অনেক ধন্যভাদ ভাই ইরফান আপনাকে বরাবরেম মত সবগুলো লেখা পড়ে কিছু মন ছুয়ে যাওয়া মন্তব্যের জন্য।

৯| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৪:১০

ঘাসফুল বলেছেন: এই পর্বটা বেশ ভালো লাগলো দাদা ...

১০ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১১:১৪

শেরজা তপন বলেছেন: তাই নাকি? বেশ তবে-সামনে মনে হয় আরো কিছু ভাল লাগার পর্ব পাবেন।
ধন্যবাদ অনেক ঘাসফুল আপনাকে-সবসময়ের মত সঙ্গে থাকবার জন্য।

১০| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:০২

মুদ্রা সংগ্রাহক বলেছেন: মাঝে মাঝে আমি ভাবি যে একদম শেষে যেদিন শেষ পর্ব বলে দিবেন সেদিন প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ব, তাহলে আর অপেক্ষা করে থাকতে হবে না। কিছু কিছু টিভি সিরিজ এর ক্ষেত্রেও এই কাজটা করি। একটু ঘন ঘন আপডেট চাই ব্রো....

অ:ট: কাজাখস্তান নিয়ে বর্তমানে একটা সিরিজ লিখছি, ওই দিকটায় কি আপনার যাওয়া হয়েছিল? কাজাখদের নিয়ে আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন না তাহলে - মিলিয়ে দেখার অপেক্ষায়...

১০ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১১:১৮

শেরজা তপন বলেছেন: :) আমিও মাঝে মাঝে ভাবি কোন একটা লেখা এক পর্বে শেষ করে দিব।
এভাবে দেরি করে লেখা দিতে গিয়ে আমি নিজেও খেই হারিয়ে ফেলি।
চেস্টা করব ভ্রাতা...

না ভাই কাজাকস্থানের অনেক গল্প শুনেছি কিন্তু যাওয়া হয়নি কখনো। আমি সোভিয়েত ইউনিয়েনর কিছু লোককথা ভাষান্তর করেছিলাম- তার মধ্যে কাজাকদের একটা লোককথায় ওদের দেশ পরিচিতি আছে। বইখানা ছাপাবো বলে পড়ে আছে বছর পাঁচেক - আর হচ্ছেনা....
ধন্যবাদ আপনাকে ভাল থাকুন।

১১| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:২০

ধানের চাষী বলেছেন: এত দেরি করে দিলে তো আগের কাহিনী ভুলে যাই। কাহিনীর গতি ঠিক থাকে। নিয়মিত লিখবেন দয়া করে।

১০ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১১:২১

শেরজা তপন বলেছেন: ব্যাপারটা আমার বেলায়ও ঘটে। এই মূহুর্তে জীবনের কঠিন একটা বাঁক অতিক্রম করছি- তাই সব কিছুতেই খানিকটা ছন্নছাড়া ছাপ।
আশা করি শিঘ্রি-ই নিয়মিত লিখতে পারব(মনে হয়না সম্ভব হবে- শুধু ভাবছি এমনটা হতে পারে) :)
ভাল থাকুন।

১২| ০৯ ই অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৩:১৯

অশুভ বলেছেন: আরও ঘন ঘন এবং বড় বড় লেখা চাই।

১০ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১১:২২

শেরজা তপন বলেছেন: আপনাদের মত পাঠককে সবসময় কাছে পেলে অবশ্যই লিখব।
সবসময়ের জন্য ভাল থাকুন ভাই।

১৩| ০৯ ই অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৩

হাসান মাহবুব বলেছেন: ভালো লাগছে পড়তে।

১০ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১১:২২

শেরজা তপন বলেছেন: দারুন প্রীত হলাম জেনে। বরাবরের মত সঙ্গ দেবার জন্য ধন্যবাদ ফের।
ভাল থাকবেন।

১৪| ০৯ ই অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৬

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: সবুজ সাথী বলেছেন: আগে কি পড়ছি ভুলেই গেছি। আগের পর্বটা ঝালাই করে আসি আগে। :)

ঠিক :)

আগে দুই পর্বে ফটাফট চোখ বুলিয়েই ক্লু কন্টিনিউ করলাম :)

ভাল বন্ধুত্ব! ভালোইতো, ভাল না :)

১০ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১১:২৪

শেরজা তপন বলেছেন: আ হ্যা- ভালইতো :)
তিনটে পর্ব পড়তে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন কি? এতটুকু কষ্ট করার জন্য সবিশেষ ধন্যবাদ। ভাল থাকুন নিরন্তর।

১৫| ০৯ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:২৬

কালোপরী বলেছেন: :)

১০ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১১:২৬

শেরজা তপন বলেছেন: এইটা কি আমি মার খেয়েছি বলে?:)
বাই ডিফল্ট থ্যাঙ্কু...

১৬| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৪৬

আমি ব্লগার হইছি! বলেছেন: পড়তে অনেক দেরী করে ফেললাম এবার। আপনার লেখা সবসময় খুবি ভালো লাগে। লাইক বাটন এ সমস্যা আছে। ক্লিক করার পর অনন্তকাল ধরে লোডিং।

১০ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১১:২৮

শেরজা তপন বলেছেন: আমারও দারুন ভাল লাগে আপনার মত এমন একজন ব্লগার পাঠক পেয়ে। আমার ইদানিংকালের প্রত্যেকটা লেখায় আপনাকে পাই দারুন সরব ভাবে- এটা নিতান্তই আমাকে ভাগ্যবান ভাবতে বাধ্য করে।
ভাল থাকুন-সুন্দর থাকুন সবসময়।

১৭| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:০০

সূর্য হাসান বলেছেন: আপনার লেখায় অন্যরকম একটা গতি থাকে যার জন্য পড়তে শুরু করলে হুট করে শেষ হয়ে যায়। অতৃপ্তিতা তাই রয়েই যায়।
প্রথম কমেন্টের জবাবে যা লিখেছেন ভুলেও তা করতে যাবেন না। এমনিতেই পড়ার পর মনে হয় চার লাইন পড়লাম। তারপর যদি ফ্ল্যাশব্যাক... খবর আছে কইলাম!!!

১১ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১০:০০

শেরজা তপন বলেছেন: :) তবে তাই হবে। ভুলেও আর ওই কাজ করতে যাবনা।আপনাদের মত পড়ুয়া ব্লগারদের পড়ার গতির সাথে আমার লেখার গতির তাল মেলাতে পারছি না রে ভাই... :(

১৮| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৫১

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: দুইটা পর্ব একসাথে পেয়ে ভালো লাগলো। অনেকটা পড়তে পারলাম। যতই সময় যাচ্ছে তন্ময়কে একজন চমৎকার রহস্যময় মানুষ বলে মনে হচ্ছে। একজন আইকন, অনুসরনীয়।

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:২৯

শেরজা তপন বলেছেন: তন্ময় একজন রহস্যময় মানুষ সন্দেহ নেই। নাহ্ এমন মানুষকে আইকন বানাবেন না।এই জীবনটা অনেক বেশী মুল্যবান- নিজেকে ধ্বংসের প্রবৃত্তি না থাকাই উত্তম।পৃথিবীর সব মানুষকে ভাল বাসুন- আর সর্বোপরি ভালবাসুন নিজেকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.