নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাঝে মাঝে মনে হয় জীবনটা অন্যরকম হবার কথা ছিল!

শেরজা তপন

অনেক সুখের গল্প হল-এবার কিছু কষ্টের কথা শুনি...

শেরজা তপন › বিস্তারিত পোস্টঃ

চামড়া ও চামড়াশিল্পের কেন আজ এই ভয়াবহ পরিস্থিতি? # ৩

১১ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:১৭


আগের পর্বের জন্যঃ Click This Link
প্রথম পর্বের জন্যঃ Click This Link
আপনি কি জানেন স্থানীয় বাজারে চামড়া-জাত পণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি ক্রেতা কারা?
ভাবতে থাকুন? পরের পর্বে আমি উত্তর দিব। মনে হয় অনেকেই উত্তর শুনে অনেকেই খানিকটা বিস্মিত হবেন!
এবার আমরা যে বিষয় নিয়ে আলাপ করব সেটা হচ্ছে স্থানীয় বাজারে চামড়া ও চামড়া-জাত পণ্যের চাহিদা:

একসময়ে দেশের অভ্যান্তরে কনজ্যুমার মার্কেটের একচেটিয়া অধিকার ধরে রেখেছিল বিশ্বখ্যাত জুতা তৈয়ারি কোম্পানি ‘বাটা’। নথিতে দেখা যায় বাটা শু কোম্পানি পূর্ববঙ্গে তাদের যাত্রা শুরু করেছিল ১৯৬২ সালে। পাকিস্তানে ১৯৫১ সালে- আর ভারতে শুরু করে ১৯৩১ সালে।
২০১৩ সালে নাকি ওরা ৩৬ মিলিয়ন জোড়া জুতা তৈরি করেছিল। তার মানে আমাদের জনসংখ্যা অনুপাতে প্রায় প্রতি পাঁচজনের একজনের জুতা তৈরি করেছিল তারা।
তারা বলছে তাদের টঙ্গী ও ধামরাইয়ে অবস্থিত ফ্যাক্টরিতে প্রতিদিন গড়ে ১৬০০০০ জোড়া জুতা উৎপাদন করতে সক্ষম। কিন্তু সক্ষমতা আর উৎপাদনের মুল চিত্র; আসলেই কি এক?
আমাদের আগের জেনারেশন ও তার আগের জেনারেশনের চামড়ার জুতার মুল ভরসার জায়গা ছিল ‘বাটা’। বাটার একটা স্যান্ডেল বা জুতা পরে ২/৪/১০ বছর কাটিয়ে দেয়া কোন ব্যাপারই ছিল না! বাটার একটা স্যন্ডেল বা জুতা কেনা মানে সেটা পরে চোখ বন্ধ করে হাটে মাঠে ঘাটে ঘুরে বেড়ানো! বাটার আরেক নাম ছিল’ অ-ক্ষয় কোম্পানি’। একটা কোম্পানির কতটা প্রভাব বিস্তার করলে এমন নাম কিনতে পারে এখন ভাবার বিষয়!
একসময় আধুনিকতার সাথে তাল মেলাতে গিয়ে- ও অধিক মুনাফার আশায়, তারা তাদের ব্যবসার ধারায় আনে আমূল পরিবর্তন। ক্যানভাসের জুতা, রাবারের স্যন্ডেল ও জুতা, কেডস সহ অন্যান্য আধুনিক উপকরণের তৈরি এসব প্রোডাক্ট দিয়ে তারা দেশের অভ্যন্তরীণ বাজার আরও ভালভাবে দখল করে নেয়। কোন এক সময়ে মুদির দোকানে বাটার জুতা স্যান্ডেল বিক্রি হত। মূল্যের শেষের অংশটা সবার দারুক আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল .৯৯ পয়সা মানে এক পয়সা ফেরত দেয়া। পরে সেটা .৫০ পয়সা হলে মানুষের মনে এখনো গেঁথে আছে .৯৯ পয়সা।
নব্বুইয়ের দশকের শেষভাগের আগে বাটার ব্যবসা ছিল অনেকটা এক চাটিয়া। কিন্তু চাহিদার হার বৃদ্ধির পাশাপাশি বাটার পণ্যের গুনগত মান কমতে থাকে। এরপরে বাজারে আসে এপেক্স- ১৯৯৭ সালে এপেক্স পরীক্ষা মুলকভাবে তাদের স্টক লট ও টেকনিক্যালি রিজেক্টেড জুতা দিয়ে দেশের বাজারে খুচরা বিক্রি শুরু করে।
পরবর্তীতে এপেক্স-ই বাটার মুল প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে দাঁড়ায়। এপেক্সের দেখা দেখি আরও কিছু ট্যানারি, ফ্যাক্টরি ও কর্পোরেট কোম্পানি দেশের বাজারে চামড়া ও কৃত্রিম চামড়া-জাত পণ্য নিয়ে আসলেও এখনো পর্যন্ত এপেক্সের ধারে কাছে কেউ যেতে পারেনি। এর মধ্যে ইটালিয়ান ব্রান্ড ‘লোটো’র বাংলাদেশী ভার্সন ব্যবসা শুরু করে অন্যান্য ফ্যাশন আইটেমের পাশাপাশি চামড়া-জাত পণ্য নিয়ে বেশ খানিকটা এগিয়েছে। আড়ং ও চেষ্টা করে যাচ্ছে- চামড়া-জাত পণ্য নিয়ে কিন্তু তাদের এত শত আইটেমের ভিড়ে চামড়া-জাত পণ্যটা সবসময় আড়ালেই থেকে যাচ্ছে।
পিছিয়ে পড়ছে ‘বাটা’- তাদের পণ্যের সুনাম ও চাহিদা দুটোই কমে গেছে। উচ্চবিত্ত তাদের ছেড়েছে অনেক আগে, মধ্যবিত্ত ও যেন তাদের বলয় থেকে বের হতে চাইছে।
ওদিকে বাটা তাদের ব্যবসা বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের চেষ্টা করার পরেও দিনের পর দিন পিছিয়ে পড়ছে।ওদিকে এপেক্স ও তাদের সুনাম হারাচ্ছে!
আসুন এর পেছনের মুল কারণগুলো খুজিঃ

আধুনিকতার নামে নিন্মমানের মাল: বাটা’র প্রতিদিন যে ১৬০০০০ পেয়ার জুতার উৎপাদন ক্ষমতা প্রতিদিন উল্লেখ করেছে। তার কত-ভাগ তারা নিজেরা সত্যকারে উৎপাদন করে? এর মধ্যে চামড়া-জাত পণ্য কত-ভাগ?
তাদের ভিন্ন ভিন্ন নামের ব্রান্ড Bata Comfit, Marie Claire, Hush Puppies, Scholl, Nike, Skechers, Power, North Star, Bubblegummers, Ben10, Sandak, Weinbrenne-সহ আরও অনেক-দৃষ্টি নন্দন আর মন ভোলানো নামের এই বাহারি পণ্য গুলোর কত-ভাগ চামড়া দিয়ে তৈরি, কত-ভাগ রাবার, ক্যানভাস, পিউ, ভক্স লেদার এটা জানা বেশ কষ্টের। তবে এই প্রডাক্টগুলোর ক্ষুদ্র একটা অংশই তারা নিজেরা উৎপাদন করে সেটা আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি। এখন বাটা তাদের সব প্রডাক্টের ১০ ভাগ ও জেনুইন চামড়া দিয়ে করে না।
এসব প্রডাক্টের এর একটা বড় অংশ আসে চায়না ও থাইল্যান্ড থেকে- যার বেশীর ভাগই হচ্ছে নন লেদার আইটেম। কিন্তু দেখতে হুবহু চামড়ার মত( কোথাও কোথাও একটু খানি চামড়া থাকে)- যা না বুঝে কিনে মানুষ দিনের পর দিন ধোঁকা খাচ্ছে। আর রিয়েল চামড়ার পণ্যের মূল্য থাকে আকাশ ছোঁয়া। আমার কেন যেন মনে হয় তারা চায় শতভাগ চামড়া-জাত পণ্য থেকে তারা বের হয়ে আসতে।
এরপরে আছে তাদের লোকাল সোর্সিং – বাটা তাদের চামড়া-জাত পণ্যের বড় একটা অংশ নেয় লোকাল সোর্সিং থেকে। কুটির শিল্প ও মাঝারি মানের ফ্যাক্টরিগুলো থেকে তারা তাদের পছন্দ অনুযায়ী পণ্য তৈরি করে নেয়। নিজেরা উৎপাদনের থেকে এই সোর্সিং এ ইনভেস্ট কম ও লাভ বেশী থাকে বিধায় তাদের নজর এদিকে বেশি।
এটা দেশীয় শিল্পের জন্য নিঃসন্দেহে ভাল একটা দিক। কিন্তু দক্ষতা, কারিগরি জ্ঞান, মেশিনারিজের অভাব, পুঁজির স্বল্পতা ও সর্বোপরি শিক্ষা দীক্ষার অভাবের জন্য এই শিল্পের উদ্যোক্তারা এগোতে পারছে না( এই নিয়ে আমি বিশদ আলোচনা করব পরের একটি পর্বে।)
ওদিকে ‘বাটা’ সুযোগ বুঝে এদের ঘাড়ে কাঁঠাল ভেঙ্গে খাচ্ছে। একটা পণ্য ডেলিভারি দেবার পর নুন্যতম তিন মাসের আগে তারা পাওনা পরিশোধ করে না। তার পরেও বিল পেতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়। যে কারণে ক্ষুদ্র কারখানার মালিকরা ধার দেনা করে তাদের পণ্য তৈরির ধারা ধরে রাখতে গিয়ে আরও বেশী সমস্যার সম্মুখীন হয়। তারা বেশি বেশী লাভের আশায়( যেটা আমাদের সবার মজ্জাগত অভ্যাস) নিন্ম-মানের কাঁচামাল ও এক্সেসরিজ ব্যাবহার করে। ( সাপ্লাইয়ার দের সাথে বাটার একটা অলিখিত এগ্রিমেন্ট থাকে: তারা সিম্পলের সাথে মিল রেখে মাল বুঝে নিবে- কিন্তু কাস্টমার যদি কোয়ালিটির জন্য সেই মাল ফিরিয়ে দেয় তবে সেই মাল তারা ফেরত দিবে না তবে মালের দাম তারা বিল থেকে কেটে নিবে। তবে সেটার নির্দিষ্ট কোন সময় নেই। এইসব রিজেক্টেড মাল বাটা সম্ভবত ডিসকাউন্ট ‘সেল’এ দেয়)।
বাটা নিজেরা মূলত তৈরি করে( সম্ভবত) টিপিএ,রাবার,পিউ সোলের অটো-মেশিনের কিছু জুতা,রাবারের স্যান্ডেল ও কিছু চামড়ার জুতা স্যান্ডেল।
একই কাজটা শুধু ‘বাটা’ করছে বলে ভাববার কোন কারন নেই। লোকাল ব্রান্ডের প্রায় সবাই করছে। ‘বাটা’ তাও তো একসময় সাপ্লাইয়ারদের টাকা দেয়- এরা আরও বেশী গড়িমসি করে।
এপেক্স,লোটো থেকে শুরু করে প্রায় প্রত্যেকটা ব্রান্ড তাদের পণ্যের একটা বড় অংশ চায়না থেকে আমদানি করে কিংবা লোকাল সোর্সিং করে। আর আড়ং সম্ভবত পুরোটাই লোকাল সোর্সিং করে( তবে তারা দেশী শিল্পের বিকাশে কিছুটা নমনীয়। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ে- এবং লাভ তুলনামুলকভাবে কম করে। তবে এদের সাথে ব্যাবসার প্যারা অন্যখানে-সে বিষয়গুলো এর সাথে যায় না দেখে আলোচনে উহ্য রাখছি।)
• যদি বেঁচে থাকি আর সুযোগ পাই তবে আমার ‘বাঙ্গালীর ব্যবসা’ নিয়ে একটা সিরিজ লেখার ইচ্ছে আছে। সেখানে সবাইকে নিয়েই ডিটেল লেখা হবে- আপনারাও সহযোগিতা করবেন আশা রাখছি।
চামড়া শিল্পে এই পর্যায়ে আছে ভারতের আগ্রাসন! আমাদের স্থানীর চামড়া শিল্পের দৈন্যতার সুযোগ নিয়ে একশ্রেণীর মুনাফা-লোভী ব্যবসায়ীদের প্রচেষ্টায় ভারতের চামড়া-জাত পণ্য দেশীয় বাজার দখল করে নিচ্ছে ধীরে ধীরে। ওই সকল ব্র্যান্ড ও ইদানীং ঝুঁকছে ভারতীয় চামড়া পণ্যের দিকে।
এবার এ ব্যাপারটা একটু তলিয়ে দেখি;
ভারতে বার্ষিক র হাইড( কাঁচা চামড়া) উৎপাদন হয় কমবেশি ১৮০ মিলিয়ন পিস( ধরে নিই দুই লক্ষ কোটি স্কয়ার ফিট)। দেশের চাহিদা মিটিয়ে তারা ৩০-৪০ ভাগ পর্যন্ত রপ্তানি করে। সারা বিশ্বের প্রায় ১৩ ভাগ চামড়া ও চামড়া-জাত পণ্যের চাহিদা মেটায় ভারত।
এটা হল তাদের মৌলিক চিত্র। খতিয়ে দেখুনতো এর কত ভাগ তারা বিক্রি করে বিশ্বের নামি দামি ব্র্যান্ড হাউসগুলোর কাছে। ওদের জনসংখ্যা ১৩৫ কোটি- সারা বিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ওদের কোটি কোটি প্রবাসী শ্রমিক। অনেক বাঙ্গালী যেমন দুবাই গিয়ে ‘আবুল বিড়ির’ খোজ করে। তেমনি ভারতীয়রা খোঁজে ভারতীয় মাল।
জাতীয়তা-বোধ ওদের আমাদের থেকে বেশী থাকায় ওরা আমাদের থেকে বেশী স্বদেশীয় পণ্য খোঁজে। নিজের দেশের পণ্য হলেই সই- কোয়ালিটি আর ফ্যাশন নিয়ে খুব কম মানুষই মাথা ঘামায়। কিন্তু ভারতীয়দের একদম ছোট করে দেখলে হবে না- ওদের কিছু কিছু পণ্যের গুনগত মান অবশ্যই অতি উচ্চ।
ভারতে তবুও ব্যাক ওয়ার্ড লিঙ্কেজ গড়ে উঠেছে- দিন দিন আমদানি নির্ভরতা অনেক কমেছে। বড় বড় ইনভেস্টমেন্ট আসছে- বিশ্বের নামী দামী কোম্পানিগুলো চামড়া শিল্পের জন্য তাদের বাংলাদেশের থেকেও অনেকগুণ বেশী। পরিবেশ দূষণের দিকটা দেখেও না দেখার ভান করছে। ব্যবসা হারানোর ভয়ে তারা উচ্চবাচ্য করছে না।আর ভারত এই সুযোগে তাদের আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে- আর তাদের সেই পথ সহজ করে দিচ্ছে শুধু মুনাফা আর মুনাফা অন্য কোন উদ্দেশ্য নেই তেমন আদর্শহীন কিছু ব্যবসায়ী।

আমাদের দেশের চামড়া প্রসেস করার কেমিক্যাল প্রায় পুরোটা আসে অন্য দেশ থেকে। আর ভারত নিজের উৎপাদিত কেমিক্যাল দিয়েই চামড়া প্রক্রিয়াজাত করে( আমার ধারনা ৬০-৭০ ভাগ) তাদের কেমিক্যাল যেমন সস্তা তেমনই নিচু-মানের। চামড়া প্রক্রিয়াজাতের সবচেয়ে বড় খরচ এর কেমিক্যালের। সেখানে ভারত এগিয়ে থাকে। তেমনি কলকাতা বাদে আর কোথাও সম্ভবত স্পেশাল জোনে চামড়া প্রক্রিয়াজাত হয় না। ভারতের সবচে বেশি চামড়া প্রক্রিয়াজাত হয় ভেলরে।অটো সেমি অটো ও ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে অতি সস্তা মজুরীতে ( যেটা আমাদের মজুরী থেকেও কম) তারা চামড়া প্রক্রিয়াজাত করে।
এবার আসি ভারতীয়দের কম মূল্যে চামড়া-জাত পণ্য তৈরির কিছু কৌশল: এখানে আমি বেশি কিছু বলব না পাঠক বুঝে নিবেন।
আমি এক মাড়োয়ারি ব্যবসায়ীর কথা বলছি; কলকাতায় তার নিজস্ব ট্যানারি আছে। বিভিন্ন মান ও দামের চামড়া উৎপাদন হয় সেখানে। টি আর, স্টক লট আর দেশীয় সস্তা কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি চামড়া সে বাইরে বিক্রি করে না। তাই দিয়ে পন্য বানিয়ে সে কিছু অংশ দেশের বাজারে আর বাকিটা ভারতীয়দের মাধ্যমে দেশের বাইরে পাঠায়( দাম বেশ সস্তা-তাই চাহিদাও বেশী)।
তিনি তার ফ্যাক্টরিতে এমন কিছু মেশিনারিজ ও প্রযুক্তি যুক্ত করেছেন, যা ক্ষুদ্র ও মাঝারী কারখানার উদ্যোক্তাদের জন্য সপ্নের। প্রথমে তিনি নিজের ফ্যাক্টরিতে বায়ারদের চাহিদা অনুযায়ী স্যাম্পল তৈরি করে অর্ডার সংগ্রহ করেন। তারপরে সেই অর্ডার অনুযায়ী চামড়া, কাঁচামাল, এক্সেসরিজ সংগ্রহ করে অটো ডাই ও লেজার দিয়ে চামড়া কেটে আলাদা আলাদা সেক্টরে ভাগ করেন। এরপরে ডাকেন ফড়িয়া দালাল ও ছোট ফ্যাক্টরির মালিকদের। পন্যের মান ও ডেলিভারির সময় অনুযায়ী কমপ্লিট প্রোডাক্ট তৈরি করার জন্য নিলামে তোলেন। নিলামে যার মুল্য সবচেয়ে কম থাকে তাকে তিনি অর্ডার দেন। যেহেতু সবার সব মেশিন আর এক্সপার্ট নেই সেই সহযোগীতাগুলো তিনি নিজে করেন- যার ফলে পন্য কপি হওয়ার সম্ভাবনা ও প্রোডাকশন কষ্ট দুটোই কমে যায়।
সেই ফড়িয়া ও দালারেরা পশ্চিম বংগ, রাজস্থান, বিহার সহ অতি দরিদ্র অঞ্চলে ক্ষুদ্র ফ্যাক্টরির মালিকদের কাছ থেকে অতি কম মুল্যে মাল তৈর করে মুল কোম্পানীকে বুঝিয়ে দেন।
এখন ব্যাবসাটা বোঝেন?
বাংলাদেশে ভারত থেকে স্থল বন্দর দিয়ে চামড়াজাত পন্য ঢোকে তার কোয়ান্টিটি, মান ও দামের উপর নির্ধারন করা শুল্কে নয়। কেজি দরে!!!! এক কেজি চামড়ার মানিব্যাগ বা এস এল জি ( Small Leather Goods) পন্যেরশুল্ক নাকি ৩৫০ টাকা! বেল্টের শুধু চামড়াজাত অংশটুকু আনা হয়। এর মেটাল ও অন্যান্য ভারি এক্সেসরিজ আনা হয় অন্য উপায়ে- বেশীরভাগ চায়না থেকে। তারপরে এখানে সংযোজন হয়।
সেই পন্য গুলোই নামী ব্রান্ডেরা বিক্রি করে কখনো মেরি ক্লেয়ার, কখনো এম্বাসেডর কিংবা নিনো রসি বা ভেনচুরা নামে মনভোলানো নামে আর দামি মোড়কে কয়েকগুণ দামে। এখানে অনেক বিক্রেতারাও জানে না সেটা ভারতীয় পন্য!
ভাবুন একবার চামড়া ও চামড়াজাত পন্যের এই ভয়ঙ্কর দুঃসময়ে আমাদের ব্যাবসায়ী ও নীতিনির্ধারকের ভুমিকা নিয়ে? কিভাবে এই দ্বীতিয় বৃহত্তম রপ্তানী খাতকে প্রায় ধ্বংসের দারপ্রান্তে এনে স্থানীয় বাজারকেও আমরা ধ্বংস করার খেলায় মেতেছি।
ব্লু ওয়েট চামড়া রপ্তানির সরকারি সিদ্ধান্তের পরে;
ব্লু ওয়েট চামড়া রপ্তানী করা হলে দেশীয় চামড়া শিল্পে চামড়া ঘাটতি পড়তে পারে এই বিষয়ে তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বাণিজ্যমন্ত্রী মুন্সী সিদ্ধান্তটি পর্যালোচনা করার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।
"এরপরে কি হয় দেখতে দিন. তিনি বলেন, আমরা যদি স্থানীয় শিল্পের উপর নেতিবাচক প্রভাব দেখতে পাই তবে আমরা রফতানি কমিয়ে দেবো।

সরকারের সিদ্ধান্তকে রক্ষা করে তিনি বলেছিলেন: “এটা নয় যে আমরা রফতানি করতে খুব আগ্রহী। আমাদের লক্ষ্য মানুষের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা ”
তার এই পর্যালোচনার ফল জানার অপেক্ষায় আমি আছি- আপনারা কি করবেন?
* পরের পর্বে আলোচনার বিষয় স্থানীয় পন্য বাজারে(বাল্ক কোয়ান্টিটি) 'বিজনেস প্রমোশনাল গিফটস' এ চামড়া পন্যের ভুমিকা।
পরের পর্বের জন্যঃ Click This Link


মন্তব্য ৩৫ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (৩৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:৫৪

আকন বিডি বলেছেন: মাড়োয়ারিরা?
এপেক্স থেকে ৫০০০+ দিয়ে জুতা কিনে ধরা।দুই মাসেই সোল শেষ। বাটাও একই অবস্থা।
১০নং বাউন্ডারি রোড গিয়ে স্পেসাল ওর্ডার দিয়া জুতা তাও দুই মাসেই শেষ।
জুতার কোয়ালিটি খুব খারাপ সব স্থানে।
সব এখন ওপেন দাদাদের জন্য , আর আমরা দাসের খাতা নাম লিখেছি।

১১ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১০

শেরজা তপন বলেছেন: হাটাহাটি বেশী হয়ে যাচ্ছে মনে হয়! :) একটু কম হাটুন না হয় জুতা খুলে হাটুন- অনেক দিন যাবে।এর থেকে ভাল উপদেশ দেবার সাধ্ধয আমার নেই!
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য- ভাল থাকুন।

২| ১১ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বাটার কথা আর কি বলবো! আপনিতো দারুন ভাবে বলেছেন!
তবে কিছুদিন আগের অভিজ্ঞতায় চমকে গেছি। একই ডিজাইন, একই রং একই সাইজ - বাইরে খোলা জুতা ৮০০ টাকা, বাটায় ৩৫০০ টাকা!!!! গলাকাটা ব্যবসার দিকেই ঝুকেছে 'ব্রান্ড' নেম পূজিটুকু নিয়ে!

ভারতের দেশপ্রেমকে তার প্রমোট করে। নাটক সিরিয়াল, সিনেমায় নিত্য আপডেটেড রাখে এবং থাকে।!
আর তাদের চানক্য কৌশলতো বলাই বাহুল্য। তারা যে কি ভয়াবহ রকম ট্যাক্স ফাঁকি দেয় - দেখেছি এক ভারতীয় কোম্পানীতে মাস ছয়েক আইটিতে কাজ করতে গিয়ে!
যে পণ্য ডিক্লেয়ার দিয়ে আনলে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা ট্যাক্স লাগতো, তারা র ম্যাটেরিয়াল নামে কুরিয়ারে করে এপারে আনে পার্ট পার্ট করে। তারপর এসেম্বল করে নেয়! আর তারা দীর্ঘেময়াদী মিশন ভিশনে কাজ করে। তাদের প্রজেক্ট কোড যখন আমাকে বলছিল ওজেসিও১৯৭১ আমি মানে জানতে চাইলাম- জানালো অপারেশন জ্যাকপট ক্যালকাটা ১৯৭১!
আমার চোখটা বি্স্ময়ে জ্বলে উঠেছিল বলেই দ্রুত অন্য টপিকে চলে যায়! আর আমি অবাক হয়ে ভাবি- তাদের ওজেসিও১৯৭১ বাস্তবায়িত হয় বাংলাদেশে ২০০২-৩ সালে!!!!

তাদেরই পয়সায় দেখা গেলো একদল পরিবেশ নিয়ে কাঁদলো, আরেক দল নদী দূষন নিয়ে একেপেশ কান্না, আরেক দল বিদেশী বায়ারদের দেখাল বোঝাল - দেখো কি অবস্থা!! তাদের কাছ থেকে কিনো না! বিকল্প নিয়ে গেলো নিজের দেশের বাজারে! এইতো খেলা!

আর আমরা বুঝে না বুঝে নগদ পেলেই বর্তে যাই। আত্মঘাতি পথে হাটি অপনমনে। তা যেমন পণ্যের দাম নির্ধারনে রাষ্ট্রীয় ভূমিকায়, তেমনি রপ্তানি বন্ধ খোলা খেলায়! পররাষ্ট্র মন্ত্রী যখন বলেন - সম্পর্ক স্বামী স্ত্রীর মতোন! বা রক্তের বন্ধন!! তখন আর বানিজ্য কৌশল খাটাবেন কোথায়?
স্বামীর আব্দার হলে স্ত্রী আর কতইবা মুচরামুচরি করতে পারে ;)

১১ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩৭

শেরজা তপন বলেছেন: আপনার মন্তব্যের উত্তর দিতে গেলেই আমাকে সময় নিয়ে বসতে হয়!! সন্ধ্যাকালীন কাজকর্ম শেষ করে বসছি।
মাঝে একবার 'গ্রামীন ফোনের সেকাল একাল' টা আরেকবার ঝালিয়ে নিয়েন; পরের পর্বে লাগবে খানিকটা :) -সাথে আমাকে বুঝতে সুবিধা হবে।
https://www.somewhereinblog.net/blog/sherzatapon/29633870

১১ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩২

শেরজা তপন বলেছেন: আপনার মন্তব্যইতো একটা পুরো পর্ব!!!
আমার রুটি রুজির কাহপোরে অনেক ভারতীয় কর্পোরেট বস আমার সখ্যতা রাখতে হয়েছে। অনেক গল্প জমে আছে ভিতরে। সব
মিলিয়ে অভিজ্ঞতা দিন দিন বাড়ছে বৈ কমছে না। এক জীবনে বলে যেতে পারব কিনা জানিনা :(
ওজেসিও১৯৭১ বিষয়টা ভয়ঙ্কর!
আমি কোন বিদেশী কর্পোরেট কোমাপানী আর আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী ও আশে পাশের দেশগুলোর দোষ দেখিনা। ব্যাবসার স্বার্থে ওরা সব নৈতিকতা বিসর্জন দিতে পারে। কিন্তু আপনার কথার রেশ ধরে বলছি; আমারাতো নিজেদের বাজারে তুলেছি বিকোবার জন্য। ভাল মন্দ একটা দাম পেলেই হল। হোক সেটা বেনিয়া কিংবা এদেশে জন্মানো স্ব-দেশি শত্রু।
আপনি ভাল থাকবেন। সুযোগ পেলে দু'জনের অনেক কথাই হবে।

৩| ১১ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৮

নূর আলম হিরণ বলেছেন: একটা সম্ভবনা খাতকে নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে কিছু বেকুব আমলা ও রাজনীতিবিদদের কারনে।

১১ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩২

শেরজা তপন বলেছেন: ধন্যবাদ নুরে আলম হিরণ ভাই, আপনার আপনার মন্তব্যকে সন্মান জানিয়েই বলছি, আসলে মুল দায়ীকে এটা এক বাক্যে না বলে দীর্ঘ আলোচনায় যেতে চাচ্ছি। সে জন্যই এ ধারাবাহিকের শুরু। আমি কাউকে একচেটিয়া দোষ দেই না দোষ আমাদের সবার- কেউ এর দায় থেকে মুক্তি পাবে না।

ভাল থাকবেন- আগের পর্ব গুলো পড়বেন কষ্ট করে ও আপনার মুল্যবান মতামত জানাবেন।

৪| ১১ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


আসলে, এইসব কমপ্লেক্স সসম্যাকে কন্ট্রোলে রাখার মতো বাংগালী সরকারে নেই।

১১ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪০

শেরজা তপন বলেছেন: তবে এসেছেন আপনি 'চাঁদ্গাজী' ভাই। খুঁজছিলাম আপনাকে- খুব ছোট প্রশ্নের বড় উত্তর দেবার জন্য...

কিন্তু প্রশ্ন না করে উত্তর আপনি ই দিয়ে দিলেন। আমি আর কি বলব!!!!
সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

৫| ১১ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: কি লিংক দিলেন!
পুরাই নষ্টালজিক হবার জোগার.... ২০১২!
কেমনে কেমনে সময় চলে গেল! হুম রিভিউ দিয়ে এলাম। সাথে পদচিহ্ণ আছে তাও দেখলাম :)

আমাদের সরলতা, আমাদের আতিথ্যয়তা, আমাদের উদারতা'র অপ ব্যবহারই করলো সবাই!
আর আমাদের বলে যাদের নেতৃত্বে বসাই- তারা "আমাদের" সুরক্ষার কোন আয়জনই করলো না। করবে কিভাবে? ভাবনাতেই যে নাই! আর দু পেগের পর যে কুতকুতি- তার ঠেলায় তারাই উল্টে বুদ্ধি দিয়ে দেয়- কিভাবে আমজনতাকে বকরা বানানো যায়!!!


১১ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২২

শেরজা তপন বলেছেন: এমনি করে সময় চলে যায় রে ভাই- আপনার পদচিহ্ণ আমার আগের অনেক লেখাতেই খুজে পাবেন।
ঠিক ঠিক- আমি অনেক কথা চাই, বলিতে পারিনা কেননা সমস্যাতো আমার মধ্যেই আছে। এই রক্তের ধারাবাহিকতায়- এই জিনে।
ওদের জায়গায় আমি হলে আমিও হয় ওই স্রোতে গা ভাসাতা্ম...

অফ টপিকঃ তার ও একযুগ বেশী সময় আগে, সেদিন আমার সাথে ওই গাড়িয়ে অন্য দু'জন ভদ্রমহিলা ছিলেন- তার একজনকে আমার খুব চেনা-জানা মনে হয়- আমি কখনো খতিয়ে দেখিনি' তবে তিনি যদি সুকন্ঠী হয়ে থাকেন তবে তিনি সেই।'

৬| ১১ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৭

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: দেহেন দি কল্লেন কি?

অফ টপিকেতো চারপেগের কুতকুতি জাগিয়ে দিলেন ;) হা হা হা

সুকন্ঠি সেই তিনি .... সেইই!!!
এক রহস্যোপন্যাসের গন্ধ পাচ্ছি B-)

১১ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:১৯

শেরজা তপন বলেছেন: জ্বী জ্বী ঠিক ধরেছেন দাদা। :) আমি কখনো খতিয়ে দেখিনি- তবেমনে মনে ভেবে রেখেছিলাম তিনি-ই হবেন। যদি হন তাহলে আমিতো বিরাট সৌভাগ্যবান! :) :)

সেই গল্পটা অন্যদিন হবে খন। তকে সেই মহীয়সী কে আমাদের স্যালুট!

কোন ব্রান্ড হবে? আলকাশ'কে আনতে হবে এখন- জিগাই সে কি খেতে চায় ... হাঃ হাঃ

৭| ১১ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:০৪

জোবাইর বলেছেন: অনেক পরিশ্রম করে ও যথেষ্ট সময় দিয়ে চামড়া শিল্পের সিরিজটি লিখছেন। অনেক অনেক ধন্যবাদ। প্রতি বছর কোরবানী ঈদে পোস্টে চামড়া শিল্প নিয়ে ভালো ভালো কিছু লেখা আসে। কিন্তু আপনারা কীবোর্ডে ঝড় তোলে অনেক অনেক সুন্দর সুন্দর প্রস্তাব ও সমাধান তুলে ধরেন। অথচ যারা এগুলো বাস্তবায়ন করবে তাদের কোনো কোনো উদ্যোগ নাই! দুঃখজনক!! :(

গত বছর কোরবানীতে দুটি গুরুত্বপূর্ণ লেখা:
১। চামড়ার কু-বাণিজ্য ও কর্তৃপক্ষের অবহেলা-অব্যবস্থাপনা!!! - আকেনাটেন
২। মাটিতে প্রোথিত কুরবানীর পশুর চামড়াই ধ্বংসের হাতিয়ার হয়ে ঝাপিয়ে পড়ুক চামড়াশিল্পের অশুভ সিন্ডিকেট বিনাশে - ডঃ এম এ আলী

এ বছর মা. হাসান লিখেছেন: কোরবানির চামড়াঃ একটি এসো নিজে করি প্রজেক্ট এবং আপনার এই সিরিজ।

যা-ই হোক, আমরা উৎসাহী পাঠকেরা অনেক কিছু জানতে পারলাম। একটি ব্যাপারে খটকা লাগলো:
"ব্লু ওয়েট চামড়া রপ্তানি করা হলে দেশীয় চামড়া শিল্পে ঘাটতি পড়তে পারে।"
যেহেতু মানুষ ক্রেতার অভাবে চামড়া নদীতে ফেলে দিচ্ছে, তাই আপাতত ব্লু ওয়েট চামড়া রপ্তানি করার সিদ্ধান্ত সঠিক বলেই মনে হয়। ঘাটতি পড়লেই দাম বাড়বে, তাই আমাদের ঘাটতি পড়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত।

১১ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:৩৯

শেরজা তপন বলেছেন: ওরে ভাই- আপনি তলে তলে এত খবর রেখেছেন?
আমার কি যে ভাল লাগে এভাবে কেউ মন খুলে মন্তব্য করলে। আমি একেকটা একেকটা করে সমস্যা ধরে ধরে এগোচ্ছি। শেষে এসে সবাইকে সাথে নিয়ে(আপনাদের মত বিজ্ঞজন) সমাধান নিয়ে আলাপ করব। আশায় থাকব কোনদিন কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙ্গবে!

যারা আগ্রহী হবে চামড়া শিল্পের কিছু কারিগরি দিক প্রোডাক্ট মেকিং এর কিছু কারিকুরি শেখাব( যতটা আমার যোগ্যতায় কুলোয়)।
আশা করি কোন একদিন এই সামু ব্লগের কেউ একজন হাজার মাল্লার এই নৌকার এক মাল্লা হয়ে হাল ধরবে- ডুবন্ত এই নৌকাকে আরো গহীনে তলিয়ে যেতে বাধ সাধবে।

লিঙ্কগুলো দেবার জন্য সবিশেষ ধন্যবাদ। পড়ে দেখে এই চলমান বিশ্লেষনকে আরেকটু শুদ্ধ করার প্রত্যাশায় রইলাম।

৮| ১১ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:২৯

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আমি আপনার লেখা পড়ে যা বুঝলাম তা বলছি। বোঝা গেলো বহুজাতিক কর্পোরেট পুজি (বাটা) ও কিছু দেশীয় বড় প্রতিষ্ঠান দেশের চামড়া ব্যবসাকে অনৈতিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছে। পণ্যের বাহ্যিক জৌলুসের মাধ্যমে ও ক্রেতার অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে খাটি চামড়ার পণ্যের চাহিদা কমিয়ে দেয়া হয়েছে। কারণ খাটি চামড়ার ব্যবহারের হার কম। বিকল্প হিসাবে অন্য কিছু বা নিম্ন মানের চামড়া ব্যবহার করা হয়। এই ব্যাপারে নিয়ন্ত্রক সংস্থা থাকা উচিত। বাটা যে টোলের মাধ্যমে আউটসোর্স করে এটা জানতাম।

ব্রান্ডিইং খুব গুরুত্বপূর্ণ। দেশী বিদেশী বড় প্রতিষ্ঠান ব্রান্ডিং করতে পারে কারণ এটা করার মত অর্থনৈতিক সক্ষমতা তাদের আছে। ছোটরা কষ্ট করে বানালেও বড়রা ছোটোদের কাছ থেকে টোল মানুফাকচারিং এর মাধ্যমে আউট সোর্স করে। লাভের বড় অংশ বড়রা পায় কারণ তাদের ব্রান্ড ইমেজ আছে। গার্মেন্টস এর ক্ষেত্রেও এটা ঘটে। ফ্যাক্টরির দামের চেয়ে ৫ গুন ১০ গুন দামে রিটেইল আউটলেটে বেচে বিদেশে বায়াররা। ফ্যাক্টরি সামান্য লাভ পায়। মূল সমস্যা কর্পোরেট পুজির অনৈতিক আচরণ।

শুল্ক টেরিফ কাঠামো দেশের চামড়া শিল্পের অনুকুল না এবং শুল্ক বিভাগের দুর্নীতির কারণে অন্য দেশের সস্তামাল ঢুকছে অনেক কম দামে। কিন্তু এগুলি বিক্রি হচ্ছে ব্রান্ড আইটেম হিসাবে। ফলে ব্রান্ড বিশিষ্ট কোম্পানি গুলির কষ্টিং কমে যাচ্ছে। দেশের চামড়া ব্যবহার করলে কষ্টিং বেশী হয়। পাবলিক আসল আর নকলের ব্যাপারে উদাসীন বা অজ্ঞ। জনসচেতনতা বৃদ্ধি প্রয়োজন যেন মানুষ বুঝে বা না বুঝে ধোঁকা না খায়। এছাড়া নীতিগত কিছু সরকারী সিদ্ধান্ত প্রয়োজন এই শিল্পকে বাঁচানোর জন্য। বাংলাদেশে পশু খাদ্য ( পোলট্রি, ক্যাটেল, মাছ) সেক্টরও বিদেশী ব্যবসায়ীদের দ্বারা হুমকির সম্মুখীন। সব সেক্টরেই সরকার ও কিছু স্বার্থান্বেষী মহল পরিকল্পিতভাবে দেশের শিল্প সেক্টরগুলি ধ্বংসের জন্য মিলে মিশে কাজ করে যাচ্ছে।

১১ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:৫৩

শেরজা তপন বলেছেন: আপনার দারুন বিশ্লেষন-ধর্মী মন্তব্য পড়ে আমি সারপ্রাইজড! আমি যা যেভাবে বলতে পারিনি আপনি তা আরো সুন্দর করে বয়ান
করেছেন ভাই সাড়ে-চুয়াত্তর( আপনার আসল নাম জানিনা তাই এনামেই সন্মোধন করলাম)।
নিয়ন্ত্রন কে করবে ভাই। সব নিয়ন্ত্রিত ব্যাবস্থা টাকার কাছে অনিয়ন্ত্রিয়ত হয়ে যাবে ভাই। আরেকটা ঘুষখোর ডিপার্টমেন্ট খোলা ছাড়া
বেশি কি-ই বা হবে?
ব্রান্ডিং এর ব্যাপারটা ঠিক বলেছেন।বিষয়টা বড়দের হাতেই থাকা ভাল- কেননা পরিচর্যার বিষয় জড়িত! ইপিলিয়ন চেষ্টা করছে।
আর কিছু ভাল গোষ্ঠী এগিয়ে আসছে ধীরে ধীরে- এদের আমাদের প্রয়োজন।
কষ্টিং নয় শুধু - আমাদের ম্যানুফ্যাকচারার রাও অনেকাংশে দায়ী এদের বহির্মুখী হওয়ার জন্য। রাতারাতি ধনী হওয়ার প্রবনতা, কোন রকমে যেন তেন মাল গছিয়ে দেবার ধান্দা,প্রোডাক্ট মেকিং ও কোয়ালিটি বোঝার মত লোকের অভাব( চামড়া সেক্টরে), সময় মত মাল ডেলিভারি না দেয়া সহ বিভিন্ন কারন জড়িত।
আর শেষের কথার সাথে দ্বীমত হওয়ার কোন অবকাশ নেই- সব কিছুর মুলেতো ওরাই।

ভাল থাকুন- বরাবরের মত সাথে থাকুন। নেক ধন্যবাদ আপনাকে

৯| ১১ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:১৫

নেওয়াজ আলি বলেছেন: আমি নিজে এপেক্স হতে দামি জুতা কিনে ধরা খেয়েছি । ২/৩ মাস পরে সোল বালুর মত হয়ে গিয়েছে । পরে পুটপাথ হতে সোল লাগিয়েছি । এপেক্স সো রুমে কথা শুনতেও রাজি না।

১১ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:০১

শেরজা তপন বলেছেন: কি বলব ভাই কথা বলতে গেলে অনেক অপ্রিয় কথা বলতে হয়। কার স্বার্থে আবার আঘাত লাগে। মঞ্জুর এলাহি সাহেবের অতি যোগ্য সন্তান নাসিম মঞ্জুর এসোসিয়েশনে আর টিভিতে বেশ চোস্ত বাংল/ ইংলিশে যে জ্বালাময়ী বক্তৃতা দেন তাতে নিজের দেশ প্রেম নিয়ে সন্দেহ জাগে। মনে হয় এনারাই প্রকৃত দেশ প্রেমিক।

এরা পৃথিবীতে এসেছে শুধু টাকা কামাইতে- আর কোন উদ্দেশ্য নাই। সোশ্যাল রেস্পন্সিবিলিটির মানে এরা বোঝে নিজেদের আখের গোছানো।
একজন মধ্যবিত্ত বা নিন্ম মধ্যবিত্তের মানুষ কত কষ্ট করে কতটা ত্যগের বিনিময়ে ৪/৫ হাজার টাকা সঞ্চয় করে ওদের কাছ থেকে সেরাটা পাবে দেখে একটা পন্য কিনল কিন্তু দু'দিনেই বুঝল সব ফাঁকি!
এদের বিচার কেঊ করে না -না মানুষ না বিধাতা

১০| ১১ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:১৮

রাজীব নুর বলেছেন: অত্যন্ত চমৎকার পোস্ট। ধারাবাহিক ভাবে লিখে যাচ্ছেন।
এই পোষ্ট সরকারের পড়া দরকার।

১১ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:০৩

শেরজা তপন বলেছেন: জ্বী ব্রাদার আপনিও ধারাবাহিকভাবে পড়ে যাচ্ছেন। দেখি কোনদিন যদি কারো নজরে পড়ে- লিখে যাই সেই ভরসায়। তবুও আগে শেষতো করি
সাথে থাকবেন- বরাবরের মত

১১| ১১ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:২৬

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: মঞ্জুর এলাহি সাহেবের একটা লেখাতে পড়েছি যে উনি ১৯৭১ সালে পোস্টিং নিয়ে বিদেশে চলে যান ( আমার ধারণা যুদ্ধ থেকে বাঁচার জন্য। উনি একটা বহুজাতিক কোম্পানিতে চাকরী করতেন)। অথচ '৭১ সালে অনেক মুক্তিযোদ্ধা পশ্চিম পাকিস্তান বা অন্য দেশ থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এসে যুদ্ধে যোগ দিয়েছেন।

১২ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:১৬

শেরজা তপন বলেছেন: বিষয়টা আমি জানিনা ভাই। হতে পারে। আসলে উনার মুল কি বাংলাদেশে প্রোতিথ? মনে হয় না
এরাওতো এমনই করবে- এতে আর আশ্চর্য হবার -কি'ই বা আছে

১২| ১২ ই আগস্ট, ২০২০ ভোর ৫:৫৪

সাফকাত আজিজ বলেছেন: আপনিতো কিছু কোম্পানির "নগ্ন পদ" করে দিয়েছেন... :P B-)) =p~

১২ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:১৯

শেরজা তপন বলেছেন: 'শুধু নগ্ন পদ করেছি নগ্নতো করতে পারলামনা ভাই :)

১৩| ১২ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১:০৭

রাজীব নুর বলেছেন: লিখতে থাকুন সাথে আছি। থাকবো।

১২ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:২৩

শেরজা তপন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ রাজীব ভাই। আমি দারুন অনুপ্রাণিত ও আনন্দিত হলাম।

১৪| ১২ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১:০৯

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: আমি যতটুকু বুঝতে পারছি তা হলো বাটা প্রচন্ডভাবে মানুষকে ধোকা দিচ্ছে সেই সংগে এপেক্সও।

১২ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:২৮

শেরজা তপন বলেছেন: ওদের পন্যের জৌলুস আর চাকচিক্যে মোহিত হয়ে আমরা পদে পদে ধোঁকা খাচ্ছি। ধীরে ধীরে ওরাও যে সেটা বুঝতে পারছে না তা নয়। এই ধোঁকাবাজির সাথে জড়িত ওদের কিছু মারচেন্ডাইজার, ডিজাইনার, পারচেজ ডিপার্টমেন্ট, সাপ্লাই চেইন সহ আরো কিছু বিভাগের অসাধু করমকরতাও।কোম্পানীর মুল কর্তাব্যাক্তিদের হয়তো সবকিছু দৃষ্টিগোচর হয়ও-না।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। ভালে থাকুন- সাথে থাকুন

১৫| ১২ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:২৪

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: চামড়া শংশ্লিষ্ট খাতের কর্মকতা ও সরকারের ভাল পদক্ষেপ নিতে হবে নয়তো সমস্যা সহসা মিঠবেনা।

১২ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:৩১

শেরজা তপন বলেছেন: সময় মনে হয় ফুরিয়ে গেছে- আমার স্পষ্ট ধারনা হয়েছে পাট শিল্পের মত চামড়া শিল্পও সম্পূর্ণ ধ্বংসের মুখে দাঁড়িয়ে!
ফিরে আসার আর পথ আছে কিনা আমার এখনো জানা নেই।

১৬| ১২ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:৩২

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: মঞ্জুর এলাহি সাহেবের পরিবার পশ্চিম বঙ্গ থেকে পূর্ব বঙ্গে আসেন। অনেকেই এভাবে এসেছেন। এটা কোনও দোষের কিছু না। আপনি ওনার সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিলেন তাই বললাম।

১২ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:৫০

শেরজা তপন বলেছেন: ধন্যবাদ- আমিও যৎকিঞ্চিত জানি। প্রশ্নটা করবার বিশেষ একটা কারন আছে- পরে জানাব

বিষয়টা অবশ্যই দোষের কিছু নয়।

১৭| ১৬ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:৩৫

অশুভ বলেছেন: বাটার কোয়ালিটি এখন যে খুব নিম্নমানের তাতে কোন সন্দেহ নাই। তবে বাটা যে এত বাটপারী শুরু করেছে তা জানা ছিল না।
মাঝে কয়দিন ব্যস্ত ছিলাম, তাই আসতে পারি নাই। আগের পর্বগুলো দেখে আসি।

১৬ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৭

শেরজা তপন বলেছেন: হুম তাই বলি গেলেন কোথায়? আপনার সিরিজটাও তো আগাচ্ছে না-নাকি?এই রকম চলছে বহুবছর ধরে আমরা জানছি কিছুদিন আগে :)
ঠিক আছে পরে এসে বলে যাবেন কেমন ছিল পর্বগুলো?
অনেক ধন্যবাদ ফের।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.