প্রেম বড় না ধর্ম বড়???মনের দ্বন্দ.....

১৭ ই জুন, ২০১১ রাত ১:৪৩

ছোটবেলা থেকে এখন পর্যন্ত যতটুকু জেনেছি ধর্ম জিনিষটা আর কোন ক্ষেত্রে আলাদা করুক আর না করুক সম্পর্কের ক্ষেত্রে তা অনেকখানি গুরুত্বপূর্ণ। পরিবারকে সবসময়ই দেখেছি এর বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিতে। সুতরাং সবসময়ই মনের মধ্যে ছিল আর যাই করি না কেন এমন কিছু করবো না যেটা আমার ধর্মে প্রশ্ন তোলে। কারণ আমি নিজেই উত্তর খুঁজে পাই না কিভাবে দুটো আলাদা ধর্মের মানুষ ধর্ম পরিবর্তন না করেই কিভাবে বিয়ে করতে পারে। ইদানীং আমাদের মিডিয়াতে এই ঘটনাগুলো অনেক বেশি হচ্ছে। আগে এগুলো অনেক আলোচিত হলেও এখন ডাল-ভাত হয়ে গেছে। আমার জানামতে মুসলমান ধর্মে অন্য কোন ধর্মে যাওয়ার কোন ও সুযোগ ও দেয়া হয়নি।

সবকিছু জানবার,বুঝবার পরেও নিজের জীবনের ঘটনাগুলোকে হয়ত অস্বীকার করা যায়না।আমাদের ক্লাসে হিন্দু ধর্মের ছেলেমেয়ের সংখ্যা কম না।আমার সবচেয়ে ভাল বন্ধুটাই কিন্তু হিন্দু ধর্মের।ক্লাসে সবার সাথে সবসময় কথা বলা হয়না। এমনও কিছু মানুষ আছে যাদের সাথে ২বছর হয়ত একবারও কথা হয়নাই। যাকে নিয়ে ঘটনাটা তার সাথেও আমার দেড় বছরে কোন কথাই হয়নাই। তাকে আমি অনেক শান্ত, ভদ্র ছেলে হিসেবেই জানতাম।ফেসবুকে সে আমার ফ্রেন্ড হয়। সে যেদিন আমার ফ্রেন্ড হয় তারপরের দিনই আমার কাছে সে অনেক লম্বা মেসেজ এ সে আমাকে জানায় সে আমাকে অনেক বেশি ভালোবাসে,গত দেড় বছরে সে আমাকে অনেক ভাল করে খেয়াল করেছে,আমি তার জন্য পারফেক্ট।তার সাথে আমার ধর্মে অমিল থাকলেও আমি যদি তার ভালোবাসা বুঝতে পারি তাহলে আমি তাকে ফিরিয়ে দেবনা এটাই তার বিশ্বাস।আমি সব কথা পড়ে তাকে বুঝিয়ে বলি যে আমার পক্ষ থেকে এটা সম্ভব না।

ওর সব কথা জেনে ওর অনুভূতি কে অসম্মান আমি করি নি। কিন্তু আমার মনে প্রশ্ন আসে এরকম একটা পর্যায়ে এসে কি এতবড় অসামন্জস্য থাকবার পরেও একজনকে ভালোবাসা যায়?তারপর যখন আমার এক বন্ধুর কাছে আমি আমার ব্যাপারে তার বলা কিছু কথা শুনতে পাই তখন সত্যিই অনেক অবাক হয়েছিলাম। সে বলেছে তার বিশ্বাস সে যদি আমাকে নিজে এসে বোঝাতে পারে তার ভালোবাসার কথা আমি আমার ধর্ম নিয়ে মাথা ঘামাবোনা। তার এক চাচার কথা সে বলে তার চাচা একজন মুসলিম মহিলাকে বিয়ে করে এখন অনেক ভাল আছে। তার চাচী ভালোবাসার জন্য ধর্ম পরিবর্তন করে,পরিবার ছেড়ে চলে আসছে।

এই কথাটা শুনবার পরে আমার মনে হয় ও আমাকে পছন্দ করে নিজের ধর্মের পরিবর্তনের কথা ভাবতে পারেনাই, সে ভেবেছে আমার কথা। ওর মনে হয়নি ধর্ম তো শুধু ধর্ম না, ধর্ম ছাড়া মানে পরিবার ছাড়া,সমাজ ছাড়া।



এই ঘটনার পর আমার মনে হয় কিছু জিনিষ আমাদের জীবনের জন্য ছাড় দিতে হয়। দুজনের মাঝে এত ব্যাবধান থাকবার পর তার মনের কথাটা আমাকে না জানালেও চলত। আমি আমার ধর্মকে ছোট করে দেখব এটাও তার ভাবা ঠিক হয় নি।হয়ত আমি অনেক বেশি প্র্যাকটিক্যাল, তারপরেও আবেগের ও হয়ত সীমা থাকা উচিত যেটা অন্য কারও মনের অনুভূতিগুলোকে কষ্ট দেবে না। আর এখন আমাদের জীবনে যতোটুকু সৌন্দর্য তার অনেকখানি কৃতিত্ব ধর্মেরও।

০ টি +০/-০