নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঠোঁটে ঠোঁট রেখে চুম্বন। আর সেই সঙ্গে নায়িকার ব্লাউজ যে মুহূর্তে খিমচে ধরেছেন নায়ক, ঠিক তক্ষুনি ছবিঘর কয়েক সেকেন্ডের জন্য অন্ধকার। ফের ফিরে এল দৃশ্য। কিন্তু তত ক্ষণে নায়ক নায়িকা একে অপরের থেকে সরে গিয়ে গাছের ডাল ধরে ঝুলে প্রেম নিবেদন করছেন।
হল-এ তত ক্ষণে চরম অশান্তি। কেন কেটে দেওয়া হল সিন? কেউ চেয়ার দাপিয়ে প্রতিবাদ করল। কেউ হুংকার দিল, আবার দেখাও প্রথম থেকে। কিন্তু সেই বিদ্রোহ শান্ত হল তক্ষুনি। কারণ শুরু হয়ে গেছে একটা দারুণ কৌতুকদৃশ্য। একটু আগের রাগ এখন হো হো করে অট্টহাসিতে ফেটে পড়ছে।
এসি-টেসি দূরের কথা। মাথার ওপর ফ্যানটা ঘুরছে বড়জোর তিন স্পিডে। ফ্যান ঘোরার ঘড়ঘড় আওয়াজ সিনেমার ডায়ালগের সঙ্গে মিশে গিয়ে অদ্ভুত শব্দজগৎ তৈরি হচ্ছে। তাও আবার সব দর্শকদের মাথায় ফ্যান ঘোরার ভাগ্য লেখা নেই। প্রতি বার নাকি গরমের সময় হলগুলোতে অদ্ভুত ভাবে ফ্যানের সংখ্যা কমে যায়। তখন মালিক ওই ফ্যান হল থেকে খুলে নিয়ে গিয়ে অন্য জায়গায় ভাড়া খাটান। খুব গরমে কখনও বা নিজের বাড়িতেও লাগান।
তবে ফ্যানের দরকার কী? দরদর করে ঘামতে ঘামতে, জামা খুলে, লুঙ্গি হাঁটু পর্যন্ত তুলে আয়েশ করে পা সামনের কাঠের চেয়ারে তুলে দিয়ে ভোজপুরি সিনেমা দেখার মেজাজই আলাদা। বিড়ির কড়া গন্ধ, ঘামের নোনতা গন্ধ, আর ঘুণ-ধরা কাঠের চেয়ারের সোঁদা গন্ধ, মিলেমিশে একাকার। তিন টাকার সল্টেড বাদাম বাড়তি মশলা ছড়াচ্ছে।
টিকিট কাউন্টারের সামনে লম্বা লাইন। একশো-দু’শো টাকার কোনও কারবার নেই। কলকাতা শহরে এখনও দশ-বিশ টাকাতেও একটা আস্ত সিনেমা দেখে নেওয়া যায়। কোথাও ব্যালকনি কুড়ি টাকা, কোথাও পনেরো। একেবারে সামনের সিট দশ টাকাতেও মিলবে। সিনেমার শুরুতেই যে ঢুকতে হবে, তারও কোনও মানে নেই। ছবির মাঝখানেও উত্তেজক দৃশ্য বা মারামারির দৃশ্য দেখতে ঢুকে পড়া যায়। এই তো ‘বনারসওয়ালি’ নামে একটা সিনেমার মাঝখানে বড়বাজারের ঠেলাওয়ালা জয়ন্ত সাউ একটা কাঠি-আইসক্রিমের অর্ধেকটা খেয়ে বাকি অর্ধেকটা গেটম্যানকে ঘুষ দিলেন। গেটম্যান অবলীলায় ওই আইসক্রিম চুষতে চুষতে জয়ন্তকে হলে ঢুকিয়ে দিলেন।
গুমোট হলের ভেতরে বেশ একটা জমজমাট ব্যাপার। কেউ ভাঙা কাঠের চেয়ারে শিরদাঁড়া লম্বা করে মন দিয়ে ছবি দেখছেন। কেউ একেবারে পরদার কাছে ফাঁকা জায়গায় সটান শুয়ে শুয়ে সিনেমা দেখছেন। হল কর্তৃপক্ষ জানালেন, ওই ফাঁকা জায়গায় আগে চেয়ার ছিল। এখন সেগুলো একেবারেই ভেঙে গিয়েছে। তাই চেয়ারগুলো সরিয়ে, একটা শতরঞ্চি পেতে দেওয়া হয়েছে। সেখানে বসলেও ভাড়া কিন্তু একই নেওয়া হচ্ছে। শতরঞ্চিতেই কেউ বসে কেউ শুয়ে দেখছেন সিনেমা। সারা দিন খাটাখাটনির পর শুতে পেলে যা হয়, কেউ ভোঁস ভোঁস করে ঘুমোচ্ছেন। নাক ডাকার মৃদু আওয়াজ পাওয়া গেল। কেউ বিড়ি জ্বালিয়ে আধশোয়া, কাছে গেলে গাঁজার মৃদু গন্ধ। যদিও হলে ঢোকার গেটগুলোর ওপরে মৃদু আলোতে জ্বলজ্বল করছে ‘নো স্মোকিং’।
ছবির নায়ক ও নায়িকার নাম পবন সিংহ ও মোনালিসা। রয়েছে মারদাঙ্গা, কমেডি, আবার ট্র্যাজিক দৃশ্যও। জয়ন্ত যখন ‘বনারসওয়ালি’ দেখতে ঢুকলেন তখন সিনেমা হলের ভেতরে হাসির রোল উঠেছে। জয়ন্ত জানালেন, তাঁর ঠেলাগাড়ি মহাত্মা গাঁধী রোডের একটা গলিতে গ্যারেজ করে প্রায় প্রতি দিনই নাইট শো-তে তিনি ঢুকে পড়েন হলে। ওই হাসির দৃশ্য থেকেই জয়ন্ত সিনেমাটা দেখেন। খুব মজা লাগে। নায়িকাকে মানতে চায়নি নায়কের পরিবার। তাই নায়কের সঙ্গে পরামর্শ করে তাদের বাড়িতে চাকরানি সেজে ঢুকে পড়েছে সে। সেই চাকরানিকে আবার গোপনে প্রেম নিবেদন করছেন নায়কের গোঁফওয়ালা বুড়ো জ্যাঠা। জ্যাঠা কল্পনায় নায়িকার সঙ্গে রোমান্স করছেন। পাহাড়ের ধারে, ঝরনার জলে প্রেম করতে গিয়ে জলে পড়ে জ্যাঠার নাকানি-চোবানি!
সারা দিন হাড়ভাঙা পরিশ্রমের পর হা হা করে হাসছেন বড়বাজারের ঠেলাওয়ালা জয়ন্ত। মেছুয়াবাজারের রিকশা-চালক রাম যাদব হাসছেন বেদম, হাসছেন ক্যানিং স্ট্রিটের মুটে বিনোদ। সব গ্লানি ভুলে হাসছেন কলেজ স্ট্রিট ক্রসিংয়ে দাঁড়িয়ে ক্যানসার রোগ হয়েছে বলে ডাক্তারি প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে সাহায্য চাইতে যাওয়া এক প্রৌঢ়ও। পরদায় এই মজা দেখতে গেলেও অবশ্য কম পরিশ্রম করতে হয় না। ঘষা কাচে নিজের মুখ যেমন দেখা যায়, অনেকটা সে রকম অস্পষ্ট ছবিগুলো। কখনও আবার পরদার ওপর পড়ে যাচ্ছে সাদা কুয়াশার মতো একটা আস্তরণ। কখনও ফুটে উঠছে কাটাকুটি খেলার মতো নানা দাগ। কখনও হঠাৎ কয়েক সেকেন্ডের জন্য পরদার আলো টুনি বালবের মতো নিভে আসছে। তবু তরতরিয়ে চলছে সিনেমা। কোনও কিছুই দর্শকদের অধৈর্য করতে পারে না। শুধু ওঁরা ভয়ানক রেগে যান দৃশ্য কেটে দিলে। অথবা কুয়াশা যখন একেবারে ঢেকে ফেলে নায়ক নায়িকাদের। তখন প্রচণ্ড জোরে চেয়ার চাপড়ানো হয়। অথবা তেড়ে দেওয়া হয় বাছাই চার অক্ষর পাঁচ অক্ষর।
‘কিন্তু আমরা কী করব বলতে পারেন? ক্যান-বন্দি ফিল্মই যদি এ রকম আসে তা হলে আমাদের কী করার আছে?’ ‘পণ্ডিতজি বাতাই না বিহা কব হোয়ি’ নামে ভোজপুরি ফিল্মের রিল প্রোজেক্টরে লাগাতে লাগাতে বললেন মহাত্মা গাঁধী রোডের ধারে একটি সিনেমা হলের অপারেটর কুমার গঙ্গোপাধ্যায়। তিন তলার ছোট্ট ওই প্রোজেক্টর রুমে কোনও ফ্যান নেই। দরদর করে ঘামতে ঘামতে তিনি একের পর এক রিল লাগাচ্ছেন। খালি গায়ে হাফপ্যান্ট পরে কুমারবাবু নাইট শোয়ের সিনেমা চালাচ্ছিলেন। জানালেন, কলকাতার কয়েকটি হলে যদিও ভোজপুরি সিনেমা দেখানো হচ্ছে আধুনিক UFO প্রযুক্তিতে, তাঁদের হলে ওই ব্যবস্থা নেই। চলন্ত অবস্থায় একটা ফিল্মে বুড়ো আঙুল দিতেই আঙুলের ডগায় কালো ময়লা উঠে এল। কুমারবাবু মুচকি হেসে বললেন, ‘বুঝুন, কী অবস্থা! এই ময়লা ফিল্ম চালালে কখনও ঝকঝকে ছবি হবে? কোনও ফিল্মের সাইড কেটে গিয়েছে, কোনও ফিল্মে স্ক্র্যাচ পড়ে গিয়েছে। অনেক সময় জোড়া লাগানো ফিল্মও থাকে। আমরা তো ইচ্ছে করে সিন কাটি না!’ তবু সিন কেটে গেলে প্রথমেই রোষের মুখে পড়েন প্রোজেক্টর রুমের কর্মীরাই। যত গালমন্দ সব তাঁদেরই শুনতে হয়। এমনকী দর্শকদের শান্ত করতে ওই প্রোজেক্টর রুমের ঘুলঘুলি থেকে চেঁচিয়ে বলতে হয়, আরে ভাই, কিচ্ছু করার নেই। রিলটাই এ রকম। ফের ওই অংশটা চালানোর দাবি করে লাভ নেই।
তবে এ সব যুক্তি মানতে চান না জয়ন্ত, রামবাবু, গোবিন্দরা। কেন দশ টাকা পনেরো টাকাতে পরিষ্কার ছবি দেখা যাবে না? সারা দিন পয়সা বাঁচিয়েই তো সিনেমা দেখতে আসা। এখানে যাঁরা সিনেমা দেখতে এসেছেন তাঁদের অনেকেরই ঠিকানা শহরের ফুটপাত। চাঁদনি চকের পানের দোকানি মহেন্দ্র দুবে বিহারের দেশের বাড়িতে কিনে দিয়েছেন একটা ছোট এলসিডি। সেই টিভি-তে তাঁর স্ত্রী ও সন্তানরা শাহরুখ-সলমনদের সিনেমা দেখেন। আর মহেন্দ্র সারা দিন পানের দোকান চালানোর পর দোকানের নীচেই ছোট্ট একটা খুপরি ঘরে সেঁধিয়ে যান। ধোনির ক্রিকেট থেকে দীপিকা পাড়ুকোনের নাচ, কোনওটাই তাঁর দেখা হয় না। তাঁর বিনোদনের ঘর বলতে এই ভোজপুরি সিনেমা হলগুলোই। ফুটপাতে ক্যাম্পখাটে লম্বা হয়ে শুয়ে রিকশা-চালক দীনেশ বলেন, ‘দীনেশ লাল যাদব দারুণ মারপিট করে। এখন পবন সিংহকেও বলে বলে গোল দিচ্ছে। রবি কিষণ-ও সমান টক্কর দিচ্ছে।’ বড়বাজারের ফুটপাতে রাত তখন প্রায় বারোটা। হু-হু করে হাওয়া দিচ্ছে। খাটিয়ায় শুয়ে একটা ছোট চাদর টেনে নিয়ে দীনেশ বলেন, ‘কী ফিগার ছিল রানি চ্যাটার্জির! এখন একটু মোটা হয়ে যাচ্ছে। ওকে একটু আপনারা বলুন না রোগা হতে। এখন রিঙ্কু ঘোষকে দারুণ লাগে!’ চাঁদনি চকের মুটে হরিরাম সপ্তাহে দু’দিন ভোজপুরি সিনেমা দেখার জন্য বাসে না চেপে পয়সা জমান। তাঁর আক্ষেপ, ‘কেন প্রতি সপ্তাহে পালটানো হয় না ছবি? কেন আরও বেশি করে পাখি হেগড়ে বা সুইটি ছাবড়াদের ছবি আসে না?’ আবার গ্যারেজে পরিবার নিয়ে থাকা সুদেশ পাণ্ডে সপ্তাহের শেষে স্ত্রীকে নিয়েই আসেন ভোজপুরি ফিল্ম দেখতে। সঙ্গে দশ বছরের ছেলে আর পাঁচ মাসের কোলের বাচ্চাটাও থাকে। তাঁদের প্রশ্ন, ভোজপুরি সুপার-ডুপার-হিট ‘বিদেশিয়া’ বা ‘হামারা ভউজি’ কেন কলকাতার হলগুলোতে মাত্র কয়েক দিনের জন্য এসে চলে যায়?
দীনেশ, হরিরামরা বলেন, পাখি হেগড়ে সুইটি ছাবড়া বা মোনালিসা যখন নাচেন, তখন তাঁরা যেন উড়তে থাকেন। পাখি উড়তে থাকে তাঁদের দেশের গ্রামের নদীর ধারে, পাহাড়ের কোলে, গ্রামের সুরকির রাস্তায়। পরদায় পাখির চোখে চোখ রেখে দীনেশরা বুঝতে পারেন এখনও তাঁদের মনে প্রেম ভালবাসা রয়ে গিয়েছে। এই সব সিন আবার তাঁদের মনে সন্দেহের বীজ পুঁতে দেয়। মনে হয়, দেশে ফেলা আসা বউকে কেউ লাইন মারছে না তো? মোবাইল থেকে রাতে বউয়ের সঙ্গে কথা বলে আশ্বস্ত হন তাঁরা। অন্য প্রান্ত থেকে ফোন না ধরলে ছটফটানি বাড়ে। এই ছটফটানির নামই কি প্রেম? জানেন না ওঁরা। তবে ফুটপাতের খাটিয়াতে শুয়ে ওঁরা স্বপ্ন দেখেন ওঁদের বউ বা প্রেমিকারা পাখি হেগড়ের মতো শাড়ি পরেছে। কিংবা দোপট্টাটা নিয়েছে অনেকটা সুইটি ছাবড়ার মতো। সকালে ফুটপাতের দোকান থেকে ও রকম শাড়ি বা দোপট্টার খোঁজ করেন তাঁরা। ভোজপুরি ফিল্মে যখন গ্রামের বাড়িতে গোলাভরা ধানের ছবি দেখায়, দেখায় সবুজ খেতের মধ্যে দিয়ে সুইটি ছাবড়া ছুটে আসছেন, যখন তাঁরা দেখেন নায়ক দীনেশ লাল যাদব গ্রামের রাস্তায় দাপটে ট্রাক্টর চালিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তখন কিশোরলাল, রাজুদের মনে হয় এই সব মুটেগিরি বা পানের দোকান ছেড়ে গ্রামে গিয়ে ফের চাষবাস শুরু করি। এই শহরে বর্ষায় ফুটপাতে কাকভেজা হতে হতে হতে বা শীতে ফুটপাতে আগুন জ্বালিয়ে ওঁরা ‘জ্বালামণ্ডী’র পোস্টারে হৃদয় সেঁকে নেন। মনে হয়, নায়িকার শরীরে অঝোর জল পড়ে বোধহয় ছ্যাঁক করে বাষ্প হয়ে যাচ্ছে, নায়িকাকে আষ্টেপৃষ্ঠে পিছন থেকে জড়িয়ে থাকা নায়কের মতোই তাঁরাও যেন সেই আশ্চর্য শরীরের জল-আগুনের ওম পোয়াতে থাকেন। আইটেম গার্ল সম্ভাবনা শেঠ-এর নাচ দেখলে চনমন করে ওঠে শরীর।
ওঁরা জানালেন, ভোজপুরি সিনেমাতে অমিতাভ বচ্চন, মিঠুন চক্রবর্তী, অজয় দেবগণরা অভিনয় করলেও সে ভাবে ওঁদের মন জয় করতে পারেননি। অমিতাভ অভিনীত ‘গঙ্গা’ হিট করলেও পরের পার্ট ‘গঙ্গোত্রী’ তেমন চলেনি। তবে শুধু অমিতাভই নয়, ‘গঙ্গা’-তে রবি কিষণও ছিলেন। মিঠুন অভিনীত ‘ভোলে শঙ্কর’ ভালই চলেছিল। কিন্তু কোথায় যেন একটা দেশওয়ালি ভাইয়ের অভাব বোধ করেছেন ওঁরা।
‘সসুরা বড়া পয়সাওয়ালা’। ২০০৫ সালে কলকাতায় মুক্তি পেয়েছিল মনোজ তেওয়ারি ও রানি চট্টোপাধ্যায় অভিনীত এই সিনেমা। এর পরই কলকাতায় ভোজপুরি সিনেমার মানচিত্রটাই বদলে যায়। লেনিন সরণির ‘বিজয়লক্ষ্মী মুভিজ’ শহরের ভোজপুরি সিনেমার অন্যতম ডিস্ট্রিবিউটর। তাঁদের এক কর্মী বললেন, ‘কলকাতায় বড় হিট ভোজপুরি ছবি ছিল ‘নদিয়া কি পার’। কিন্তু সেটা অনেক বছর আগের কথা। ‘সসুরা...’ মুক্তির আগে শহরের বড়জোর একটা কি দুটো হলে ভোজপুরি সিনেমা চলত। কিন্তু ওই সিনেমাটা সব ওলটপালট করে দিল। কলকাতায় টানা ছ’সপ্তাহ চলেছিল। বাজার বদলে গেল।’
কলকাতায় মাত্র বছর দশেক আগে থেকে ভোজপুরি ফিল্ম জাঁকিয়ে বসলেও, ভোজপুরি সিনেমা এই ২০১৩ সালেই পঞ্চাশ বছরে পা দিল। ১৯৬৩ সালে ‘গঙ্গা মাইয়া তোহে প্যায়ারই চহরাইবো’ ফিল্ম দিয়ে শুরু হয়েছিল ভোজপুরি সিনেমার যাত্রা। এখন বছরে ৬০টির মতো ভোজপুরি ফিল্ম হয়। একটু পুরনো ছবিই কলকাতায় আসে, বিহার বা উত্তরপ্রদেশে মাস কয়েক চলার পর। একেবারে টাটকা ভোজপুরি কলকাতায় রিলিজ হয় না। কলকাতার রাস্তায় সাঁটা বড় বড় পোস্টারে থাকে বাংলা ছবির নায়ক-নায়িকাদের ছবি। থাকে হিন্দি ছবির দুর্দান্ত উজ্জ্বল পোস্টার। সেই সব পোস্টারে লেখা থাকে যে হলগুলোর নাম সেগুলো কলকাতার মুটে, মজদুর, রিকশাওয়ালা, ঠেলাওয়ালাদের অনেকের কাছেই ভিন্গ্রহের মতো। কবে সে সব ছবি মুক্তি পাচ্ছে, পরিচালক কে, কারাই বা নায়ক নায়িকা— সে খবর তাঁরা রাখেন না। ওঁরা ওই পোস্টারের ভিড়ে খুঁজে নেন ভোজপুরি ফিল্মের পোস্টার। কোন হলে চলছে ‘দেওরা বড়া সওতেলা’, ‘অজব দেওরা কে গজব ভউজি’ অথবা ‘পাপ্পু কো প্যায়ার হো গেইল’। মারদাঙ্গা থেকে শুরু করে রোমান্স, হাতকাটা ব্লাউজ আর নাভির অনেক নীচ থেকে ঘাগরা-পরা নারীর কোমর-দোলানো নাচ সব কিছুরই ইঙ্গিত থাকে জমজমাট পোস্টারে। বস্তির খুপরি ঘরের অন্ধকার অথবা ফুটপাতের খোলা আকাশের আবছা আলোয় তাকিয়ে ওঁরা সেই হাতছানি স্পষ্ট টের পান।
২| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:০৯
এন ইউ এমিল বলেছেন: বিরাট লেখা অর্ধেকটা পড়ে আর ধর্য নেই
৩| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:২০
রসায়ন বলেছেন: অচলীল !
ভালা হৈয়া যান মিয়া ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:০৪
মদন বলেছেন: অসাধারন....