![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হ্যা, তারপর একদিন, সব শেষ হয়ে যাবে,
প্রথমেই বলে নিই, উনাকে নিয়ে ব্লগটি লিখছি মূলত 'পাক সার জমিন সাদ বাদ' পড়ার রিএকশন হিসেবে। এই বইটি দাঁড়ায় উনাকে বিচার করছি।
আমি জানি, একটি বই দিয়ে কোন লেখককে মুল্যায়ন করা যায় না। কিন্তু এটাও ঠিক, যে ব্যক্তি একবার অপরাধ করে সে ই বারবার অপরাধ করতে পারে।
হুমায়ূন আজাদের "পাক সার জমিন সাদ বাদ" পড়ে আমি হতভম্ব হয়েছি। কোন সুশীল(?) সমাজের বাসিন্দা লেখনীর প্রকাশ এতটা রাফ ভাবে করতে পারে আমার কল্পনায় ছিল না।
পুরোটা বই জুড়ে হিন্দু নারীদের দৈহিক বিবরন, তাদের গায়ের গন্ধের মোহ, কিভাবে গ্রামে গ্রামে ধর্ষণ চালানো হয়, মৌলবাদীরা ও তাদের বিশেষ অঙ্গ ইত্যাদি প্রচুর অশ্লীল বাক্যে বইটি পূর্ণ।
অথচ এর দুতিন শতাংশ ব্যবহার করেও আদর্শ সাহিত্যের মাধ্যমে মৌলবাদীদের কর্মকাণ্ড ব্যাখা করা যেত। এই বই পড়ে মৌলবাদীদের প্রতি ঘৃণা না জন্মে উল্টো লেখকের উপর ঘৃণা জন্মাতে বাধ্য। ইসলামকে যথেচ্ছ ও অশ্লীল ভাবে প্রকাশের কথা বাদই দিলাম।
এত অশ্লীল লেখনী একমাত্র চটি লেখকের কলম দিয়েই বের হওয়া উচিত ছিল, আমার বিশ্বাস।
২| ২৪ শে মে, ২০১৪ রাত ১১:৫৭
হাসান খা বলেছেন: অথচ এর দুতিন শতাংশ ব্যবহার করেও আদর্শ সাহিত্যের মাধ্যমে মৌলবাদীদের কর্মকাণ্ড ব্যাখা করা যেত। এই বই পড়ে মৌলবাদীদের প্রতি ঘৃণা না জন্মে উল্টো লেখকের উপর ঘৃণা জন্মাতে বাধ্য।
৩| ২৫ শে মে, ২০১৪ রাত ১২:২৬
শাহ আলম বাদশাহ বলেছেন: সহমত-- উনি আসলে বিকারগ্রস্ত লেখকনামধারী তসলিমাপন্থী একজন যার লেখায় সাহিত্যমান খুজে পাওয়া যায়না
৪| ২৫ শে মে, ২০১৪ রাত ১২:৪১
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
ধারাবাহিক বুদ্ধিজীবি হত্যা, মৌলবাদ বিরোধি মতামত স্তব্ধ করা, গ্রেনেড হামলা জায়েজ করার জন্য আর কত যুক্তি দেখাবেন?
একটি খারাপ বই লেখার জন্য কি মৃত্যুদন্ড দেয়া যায়?
২৬ শে মে, ২০১৪ রাত ৯:৪৮
সবজান্তা-সব জানে বলেছেন: অবশ্যই নয়। আমি তার বই-এর সমালোচনা করেছি। বলিনি, তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে উচিত করেছে।
তারা মৃত্যুদন্ড দেবার কে?
৫| ২৫ শে মে, ২০১৪ রাত ১২:৫০
প্লিওসিন অথবা গ্লসিয়ার বলেছেন: এই আইডিগুলো এখনও টিকে আছে?
হুমায়ুন আজাদের কিছু কবিতা দিয়ে গেলাম। সেগুলো পড়ে যদি মাথায় কিছুটা হলেও বোধ জাগ্রত হয়।
ফুলেরা জানতো যদি
মুলঃ হেনরিক হাইনে
ফুলেরা জানতো যদি আমার হৃদয়
ক্ষতবিক্ষত কতোখানি,
অঝোরে ঝরতো তাদের চোখের জল
আমার কষ্ট আপন কষ্ট মানি ।
নাইটিংগেল আর শ্যামারা জানতো যদি
আমার কষ্ট কতোখানি-কতোদুর,
তাহলে তাদের গলায় উঠতো বেজে
আরো ব হু বেশী আনন্দদায়ক সুর ।
সোনালী তারারা দেখতো কখনো যদি
আমার কষ্টের অশ্রুজলের দাগ,
তাহলে তাদের স্থান থেকে নেমে এসে
জানাতো আমাকে সান্ত্বনা ও অনুরাগ ।
তবে তারা কেউ বুঝতে পারেনা তা-
একজন,শুধু একজন,জানে আমার কষ্ট কতো;
আমার হৃদয় ছিনিয়ে নিয়েছে যে
ভাংগার জন্য-বারবার অবিরত ।
ভালো থেকো
ভালো থেকো ফুল, মিষ্টি বকুল, ভালো থেকো।
ভালো থেকো ধান, ভাটিয়ালি গান, ভালো থেকো।
ভালো থেকো মেঘ, মিটিমিটি তারা।
ভালো থেকো পাখি, সবুজ পাতারা।
ভালো থেকো।
ভালো থেকো চর, ছোট কুড়ে ঘর, ভালো থেকো।
ভালো থেকো চিল, আকাশের নীল, ভালো থেকো।
ভালো থেকো পাতা, নিশির শিশির।
ভালো থেকো জল, নদীটির তীর।
ভালো থেকো গাছ, পুকুরের মাছ, ভালো থেকো।
ভালো থেকো কাক, কুহুকের ডাক, ভালো থেকো।
ভালো থেকো মাঠ, রাখালের বাশিঁ।
ভালো থেকো লাউ, কুমড়োর হাসি।
ভালো থেকো আম, ছায়া ঢাকা গ্রাম, ভালো থেকো।
ভালো থেকো ঘাস, ভোরের বাতাস, ভালো থেকো।
ভালো থেকো রোদ, মাঘের কোকিল,
ভালো থেকো বক, আড়িয়ল বিল,
ভালো থেকো নাও, মধুমতি গাও,ভালো থেকো।
ভালো থেকো মেলা, লাল ছেলেবেলা, ভালো থেকো।
ভালো থেকো, ভালো থেকো, ভালো থেকো।
আমার কুঁড়েঘরে
আমার কুঁড়েঘরে নেমেছে শীতকাল
তুষার জ’মে আছে ঘরের মেঝে জুড়ে বরফ প’ড়ে আছে
গভীর ঘন হয়ে পাশের নদী ভ’রে
বরফ ঠেলে আর তুষার ভেঙে আর দু-ঠোঁটে রোদ নিয়ে
আমার কুঁড়েঘরে এ-ঘন শীতে কেউ আসুক
আমার গ্রহ জুড়ে বিশাল মরুভূমি
সবুজ পাতা নেই সোনালি লতা নেই শিশির কণা নেই
ঘাসের শিখা নেই জলের রেখা নেই
আমার মরুভূর গোপন কোনো কোণে একটু নীল হয়ে
বাতাসে কেঁপে কেঁপে একটি শীষ আজ উঠুক
আমার গাছে গাছে আজ একটি কুঁড়ি নেই
একটি পাতা নেই শুকনো ডালে ডালে বায়ুর ঘষা লেগে
আগুন জ্ব’লে ওঠে তীব্র লেলিহান
বাকল ছিঁড়েফেড়ে দুপুর ভেঙেচুরে আকাশ লাল ক’রে
আমার গাছে আজ একটা ছোট ফুল ফুটুক
আমার এ-আকাশ ছড়িয়ে আছে ওই
পাতটিনের মতো ধাতুর চোখ জ্বলে প্রখর জ্বালাময়
সে-তাপে গ’লে পড়ে আমার দশদিক
জল ও বায়ুহীন আমার আকাশের অদেখা দূর কোণে
বৃষ্টিসকাতর একটু মেঘ আজ জমুক
আমার কুঁড়েঘরে নেমেছে শীতকাল
তুষার জ’মে আছে ঘরের মেঝে জুড়ে বরফ প’ড়ে আছে
গভীর ঘন হয়ে পাশের নদী ভ’রে
বরফ ঠেলে আর তুষার ভেঙে আজ দু-ঠোঁটে রোদ নিয়ে
আমার কুঁড়েঘরে এ-ঘন শীতে কেউ আসুক।
ব্যাধিকে রূপান্তরিত করছি মুক্তোয়
একপাশে শূন্যতার খোলা, অন্যপাশে মৃত্যুর ঢাকনা,
প’ড়ে আছে কালো জলে নিরর্থক ঝিনুক।
অন্ধ ঝিনুকের মধ্যে অনিচ্ছায় ঢুকে গেছি রক্তমাংসময়
আপাদমস্তক বন্দী ব্যাধিবীজ। তাৎপর্য নেই কোন দিকে-
না জলে না দেয়ালে-তাৎপর্যহীন অভ্যন্তরে ক্রমশ উঠছি বেড়ে
শোণিতপ্লাবিত ব্যাধি। কখনো হল্লা ক’রে হাঙ্গরকুমীরসহ
ঠেলে আসে হলদে পুঁজ, ছুটে আসে মরা রক্তের তুফান।
আকষ্মিক অগ্নি ঢেলে ধেয়ে আসে কালো বজ্রপাত।
যেহেতু কিছুই নেই করণীয় ব্যাধিরূপে বেড়ে ওঠা ছাড়া,
নিজেকে-ব্যাধিকে-যাদুরসায়নে রূপান্তরিত করছি শিল্পে-
একরত্তি নিটোল মুক্তোয়!
এ লাশ আমরা রাখবো কোথায়
এ লাশ আমরা রাখবো কোথায় ?
তেমন যোগ্য সমাধি কই ?
মৃত্তিকা বলো, পর্বত বলো
অথবা সুনীল-সাগর-জল-
সব কিছু ছেঁদো, তুচ্ছ শুধুই !
তাইতো রাখি না এ লাশ আজ
মাটিতে পাহাড়ে কিম্বা সাগরে,
হৃদয়ে হৃদয়ে দিয়েছি ঠাঁই।
তোমার দিকে আসছি - হুমায়ুন আজাদ
_____________________________
অজস্র জন্ম ধ'রে আমি তোমার দিকে আসছি; কিন্তু পৌছোতে পারছি না।
তোমার দিকে আসতে আসতে আমার এক-একটি দীর্ঘ জীবন
ক্ষয় হয়ে যায় পাঁচ পয়সার মোমবাতির মতো।
আমার প্রথম জন্মটা কেটে গিয়েছিলো শুধু তোমার স্বপ্ন দেখে দেখে।
এক জন্ম আমি শুধু তোমার স্বপ্ন দেখেছি।
আমার দুঃক্ষ তোমার স্বপ্ন দেখার জন্যে আমি মাত্র একটি জন্ম পেয়েছিলাম।
আরেক জন্মে আমি ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছিলাম তোমার উদ্দেশে।
পথে বেরিয়েই আমি পলিমাটির ওপর আঁকা দেখি তোমার পায়ের দাগ।
তার প্রতিটি রেখা আমাকে পাগল ক'রে তোলে।
ওই আলতার দাগ আমার চোখ আর বুক আর স্বপ্নকে এতো লাল ক'রে তোলে
যে আমি তোমাকে সম্পূর্ণ ভুলে যাই। ওই রঙিন পায়ের দাগ
প্রদক্ষিণ করতে করতে আমার ওই জন্মটা কেটে যায়।
আমার দুঃক্ষ মাত্র একটি জন্ম পেয়েছিলাম সুন্দরকে প্রদক্ষিণ করার।
আরেক জন্মে তোমার কথা ভাবতেই আমার বুকের ভেতর থেকে
সবচেয়ে দীর্ঘ আর কোমল আর ঠান্ডা নদীর মতো কী যেনো প্রবাহিত হ'তে
শুরু করে। সেই দীর্ঘশ্বাসে তুমি কেঁপে উঠতে পারো ভেবে আমি
একটা মর্মান্তিক দীর্ঘশ্বাস বুকে চেপে কাটিয়ে দিই সম্পূর্ণ জন্মটা।
আমার দুঃক্ষ আমার কোমলতম দীর্ঘশ্বাসটি ছিলো মাত্র এক জন্মের সমানদীর্ঘ।
আমার ষোড়শ জন্মে একটি গোলাপ আমার পথরোধ করে।
আমি গোলাপের সিঁড়ি বেয়ে তোমার দিকে উঠতে থাকি-উচুতে-উচুতে,
আরো উঁচুতে-; আর এক সময় ঝ'রে যাই চৈত্রের বাতাসে।
আমার দুঃক্ষ মাত্র একটি জন্ম আমি গোলাপের পাপড়ি হয়ে তোমার উদ্দেশে
ছড়িয়ে পড়তে পেরেছিলাম।
এখন আমার সমস্ত পথ জুড়ে টলমল করছে একটি অশ্রুবিন্দু।
ওই অশ্রুবিন্দু পেরিয়ে এ-জন্মে হয়তো আমি তোমার কাছে পৌছোতে পারবো না।
কেনো পৌছোবো? তাহলে আগামী জন্মগুলো আমি কার দিকে আসবো?
আমাদের মা - হুমায়ুন আজাদ
_________________________________________
আমাদের মাকে আমরা বলতাম তুমি, বাবাকে আপনি।
আমাদের মা গরিব প্রজার মত দাঁড়াতো বাবার সামনে,
কথা বলতে গিয়ে কখনোই কথা শেষ ক’রে উঠতে পারতোনা।
আমাদের মাকে বাবার সামনে এমন তুচ্ছ দেখাতো যে
মাকে আপনি বলার কথা আমাদের কোনোদিন মনেই হয়নি।
আমাদের মা আমাদের থেকে বড় ছিলো, কিন্তু ছিলো আমাদের সমান।
আমাদের মা ছিলো আমাদের শ্রেনীর, আমাদের বর্ণের, আমাদের গোত্রের।
বাবা ছিলেন অনেকটা আল্লার মতো, তার জ্যোতি দেখলে আমরা সেজদা দিতাম
বাবা ছিলেন অনেকটা সিংহের মতো, তার গর্জনে আমরা কাঁপতে থাকতাম
বাবা ছিলেন অনেকটা আড়িয়াল বিলের প্রচন্ড চিলের মতো, তার ছায়া দেখলেই
মুরগির বাচ্চার মতো আমরা মায়ের ডানার নিচে লুকিয়ে পড়তাম।
ছায়া সরে গেলে আবার বের হয়ে আকাশ দেখতাম।
আমাদের মা ছিলো অশ্রুবিন্দু-দিনরাত টলমল করতো
আমাদের মা ছিলো বনফুলের পাপড়ি;-সারাদিন ঝরে ঝরে পড়তো,
আমাদের মা ছিলো ধানখেত-সোনা হয়ে দিকে দিকে বিছিয়ে থাকতো।
আমাদের মা ছিলো দুধভাত-তিন বেলা আমাদের পাতে ঘন হয়ে থাকতো।
আমাদের মা ছিলো ছোট্ট পুকুর-আমরা তাতে দিনরাত সাঁতার কাটতাম।
আমাদের মার কোনো ব্যক্তিগত জীবন ছিলো কিনা আমরা জানি না।
আমাদের মাকে আমি কখনো বাবার বাহুতে দেখি নি।
আমি জানি না মাকে জড়িয়ে ধরে বাবা কখনো চুমু খেয়েছেন কি না
চুমু খেলে মার ঠোঁট ওরকম শুকনো থাকতো না।
আমরা ছোট ছিলাম, কিন্তু বছর বছর আমরা বড় হতে থাকি,
আমাদের মা বড় ছিলো, কিন্তু বছর বছর মা ছোটো হতে থাকে।
ষষ্ঠ শ্রেনীতে পড়ার সময়ও আমি ভয় পেয়ে মাকে জড়িয়ে ধরতাম।
সপ্তম শ্রেনীতে ওঠার পর ভয় পেয়ে মা একদিন আমাকে জড়িয়ে ধরে।
আমাদের মা দিন দিন ছোটো হতে থাকে
আমাদের মা দিন দিন ভয় পেতে থাকে।
আমাদের মা আর বনফুলের পাপড়ি নয়, সারাদিন ঝরে ঝরে পড়েনা
আমাদের মা আর ধানখেত নয়, সোনা হয়ে বিছিয়ে থাকে না
আমাদের মা আর দুধভাত নয়, আমরা আর দুধভাত পছন্দ করিনা
আমাদের মা আর ছোট্ট পুকুর নয়, পুকুরে সাঁতার কাটতে আমরা কবে ভুলে গেছি।
কিন্তু আমাদের মা আজো অশ্রুবিন্দু, গ্রাম থেকে নগর পর্যন্ত
আমাদের মা আজো টলমল করে।
কখনো আমি - হুমায়ুন আজাদ
______________________
কখনো আমি স্বপ্ন দেখি যদি
স্বপ্ন দেখবো একটি বিশাল নদী।
নদীর ওপর আকাশ ঘন নীল
নীলের ভেতর উড়ছে গাঙচিল।
আকাশ ছুঁয়ে উঠছে কেবল ঢেউ
আমি ছাড়া চারদিকে নেই কেউ।
কখনো আমি কাউকে যদি ডাকি
ডাকবো একটি কোমল সুদূর পাখি।
পাখির ডানায় আঁকা বনের ছবি
চোখের তারায় জ্বলে ভোরের রবি।
আকাশ কাঁপে পাখির গলার সুরে
বৃষ্টি নামে সব পৃথিবী জুড়ে।
আমাকে ছেড়ে যাওয়ার পর - হুমায়ুন আজাদ
______________________________________________
আমাকে ছেড়ে যাওয়ার পর শুনেছি তুমি খুব কষ্টে আছো।
তোমার খবরের জন্য যে আমি খুব ব্যাকুল,
তা নয়। তবে ঢাকা খুবই ছোট্ট শহর। কারো কষ্টের
কথা এখানে চাপা থাকে না। শুনেছি আমাকে
ছেড়ে যাওয়ার পর তুমি খুবই কষ্টে আছো।
প্রত্যেক রাতে সেই ঘটনার পর নাকি আমাকে মনে পড়ে
তোমার। পড়বেই তো, পৃথিবীতে সেই ঘটনা
তুমি-আমি মিলেই তো প্রথম সৃষ্টি করেছিলাম।
যে-গাধাটার হাত ধরে তুমি আমাকে ছেড়ে গেলে সে নাকি এখনো
তোমার একটি ভয়ংকর তিলেরই খবর পায় নি।
ওই ভিসুভিয়াস থেকে কতটা লাভা ওঠে তা তো আমিই প্রথম
আবিষ্কার করেছিলাম। তুমি কি জানো না গাধারা কখনো
অগ্নিগিরিতে চড়ে না?
তোমার কানের লতিতে কতটা বিদ্যূৎ আছে, তা কি তুমি জানতে?
আমিই তো প্রথম জানিয়েছিলাম ওই বিদ্যূতে
দপ ক'রে জ্বলে উঠতে পারে মধ্যরাত।
তুমি কি জানো না গাধারা বিদ্যূৎ সম্পর্কে কোনো
খবরই রাখে না?
আমাকে ছেড়ে যাওয়ার পর শুনেছি তুমি খুব কষ্টে আছো।
যে-গাধাটার সাথে তুমি আমাকে ছেড়ে চ'লে গেলে সে নাকি ভাবে
শীতাতপনিয়ন্ত্রিত শয্যাকক্ষে কোনো শারীরিক তাপের
দরকার পড়ে না। আমি জানি তোমার কতোটা দরকার
শারীরিক তাপ। গাধারা জানে না।
আমিই তো খুঁজে বের করেছিলাম তোমার দুই বাহুমূলে
লুকিয়ে আছে দু'টি ভয়ংকর ত্রিভুজ। সে-খবর
পায় নি গাধাটা। গাধারা চিরকালই শারীরিক ও সব রকম
জ্যামিতিতে খুবই মূর্খ হয়ে থাকে।
তোমার গাধাটা আবার একটু রাবীন্দ্রিক। তুমি যেখানে
নিজের জমিতে চাষার অক্লান্ত নিড়ানো, চাষ, মই পছন্দ করো,
সে নাকি আধ মিনিটের বেশি চষতে পারে না। গাধাটা জানে না
চাষ আর গীতবিতানের মধ্যে দুস্তর পার্থক্য!
তুমি কেনো আমাকে ছেড়ে গিয়েছিলে? ভেবেছিলে গাড়ি, আর
পাঁচতলা ভবন থাকলেই ওষ্ঠ থাকে, আলিঙ্গনের জন্য বাহু থাকে,
আর রাত্রিকে মুখর করার জন্য থাকে সেই
অনবদ্য অর্গান?
শুনেছি আমাকে ছেড়ে যাওয়ার পর তুমি খুবই কষ্টে আছো।
আমি কিন্ত কষ্টে নেই; শুধু তোমার মুখের ছায়া
কেঁপে উঠলে বুক জুড়ে রাতটা জেগেই কাটাই, বেশ লাগে,
সম্ভবত বিশটির মতো সিগারেট বেশি খাই।
ত্মহত্যার অস্ত্রাবলি
—হুমায়ুন আজাদ
______________________
রয়েছে ধারালো ছোরা স্লিপিং টেবলেট
... কালো রিভলবার
মধ্যরাতে ছাদ
ভোরবেলাকার রেলগাড়ি
সারিসারি বৈদ্যুতিক তার।
স্লিপিং টেবলেট
খেয়ে অনায়াসে ম'রে যেতে পারি
বক্ষে ঢোকানো যায় ঝকঝকে উজ্জ্বল
তরবারি
কপাল লক্ষ্য ক'রে টানা যায় অব্যর্থ
ট্রিগার
ছুঁয়ে ফেলা যায় প্রাণবাণ বৈদ্যুতিক
তার
ছাদ থেকে লাফ দেয়া যায়
ধরা যায় ভোরবেলাকার রেলগাড়ি
অজস্র অস্ত্র আছে
যে-
কোনো একটি দিয়ে আত্মহত্যা ক'রে যেতে পারি!
এবং রয়েছো তুমি
সবচেয়ে বিষাক্ত অস্ত্র প্রিয়তমা মৃত্যুর
ভগিনী
তোমাকে ছুঁলে
দেখলে এমনকি তোমার নাম শুনলে
আমার ভেতরে লক্ষ লক্ষ
আমি আত্মহত্যা করি।
ভিখারি - হুমায়ুন আজাদ
_________________
আমি বাঙালি, বড়োই গরিব। পূর্বপুরুষেরা- পিতা, পিতামহ
ভিক্ষাই করেছে; শতাব্দী, বর্ষ, মাস, সপ্তাহ, প্রত্যহ।
এমন সৌন্দর্য নেই- তুমি সব কিছু ফেলে
ছুটে আসবে আমার উদ্দেশে দুই বাহু মেলে।
এত শৌর্যবীর্য নেই যে সদম্ভে ফেলবো চরণ
আর দিনদুপুরে সকলের চোখের সামনে তোমাকে করবো হরণ।
হে সৌন্দর্য হে স্বপ্ন হে ক্ষুধা হে তৃষ্ণার বারি,
আমি শুধু দুই হাত মেলে দিয়ে ভিক্ষা চাইতে পারি।
তুমি শুধু দেখবে দিনরাত,
সব কিছু পেরিয়ে তোমার সামনে মেলে আছি এক জোড়া ভিক্ষুকের হাত।
বই খুলতে গেলে
দেখবে তুমি বই হয়ে আছি আমি দুই হাত মেলে।
প্লেয়ারে রেকর্ড চাপিয়ে যদি গান শুনতে চাও,
চমকে উঠে শুনবে তুমি সব রেকর্ডে বাজে একই গান- 'আমাকে ভিক্ষা দাও।'
ফুল তুলতে গিয়ে বাগানের কাছে
দেখবে আমার ভিক্ষুক হাত গোলাপ চামেলি হয়ে ফুটে আছে।
অন্ধকার নেমে এলে ঘুমে গাঢ় হ'লে রাত
স্বপ্নে দেখবে তুমি দশ দিগন্ত ঢেকে দিয়ে মেলে আছি ভিখারির হাত।
হে স্বপ্ন হে সৌন্দর্য হে ক্ষুধা হে আমার নারী,
তোমাকেই ঘিরে আছি আমি- বাঙালি, বড়োই গরিব, আর একান্ত ভিখারি।
সাহস - হুমায়ুন আজাদ
_____________________________________________
এখন, বিশশতকের দ্বিতীয়াংশে, সব কিছুই সাহসের পরিচায়ক।
কথা বলা সাহস, চুপ ক'রে থাকাও সাহস।
দলে থাকা সাহস, দলে না থাকাও সাহস।
এখন, এ-দুর্দশাগ্রস্ত গ্রহে, সব কিছুই সাহসের পরিচায়ক।
তোমাকে ভালোবাসি বলা সাহস।
তোমাকে ভালোবাসি না বলাও সাহস।
এখন, বিশশতকের দ্বিতীয়াংশে, সব কিছুই সাহসের পরিচায়ক।
ঘরে একলা থাকাটা সাহস।
আবার রাস্তায় অনেকের সঙ্গে বেরিয়ে পড়াও সাহস।
এখন, এ-দুর্দশাগ্রস্ত গ্রহে, সব কিছুই সাহসের পরিচায়ক।
ঝলমলে গোলাপের দিকে তাকানোটা সাহস।
তার থেকে চোখ ফিরিয়ে নেয়াও সাহস।
এখন, বিশশতকের দ্বিতীয়াংশে, সব কিছুই সাহসের পরিচায়ক।
আমি কিছু চাই বলাটা সাহস।
আবার আমি কিছুই চাই না বলাও সাহস।
এখন, এ-দুর্দশাগ্রস্ত গ্রহে, বেঁচে থাকাটাই প্রকান্ড দুঃসাহস।
২৬ শে মে, ২০১৪ রাত ৯:৫০
সবজান্তা-সব জানে বলেছেন: আপনার দৃষ্টিকোন থেকে আমি নির্বোধ। আর আমার দিক থেকে আপনি। কবিতা দিলেন কেন? এগুলো কবিতা, ভাল কবিতা তবে মন্ত্র নয়।
৬| ২৫ শে মে, ২০১৪ রাত ১২:৫৪
প্লিওসিন অথবা গ্লসিয়ার বলেছেন: এত সুড়সুড়ি নিয়ে বইটি পড়তে যাওয়ার দরকারটা কি ছিলো? চটির ভাষা খুব ভালো আয়ত্ব করেছেন বইকি তাই ধর্ষণ বা সঙ্গমের বর্ণনাকেই চটি মনে হয়। দুটোর পার্থক্য আছে এই মনন যদি থাকত তাহলে অবশ্য এই পোস্ট লিখতেন না।
চুলকানি পোস্ট রিপোর্টেড।
২৬ শে মে, ২০১৪ রাত ৯:৪৬
সবজান্তা-সব জানে বলেছেন: কি করব? উনার সৃষ্টিশীল কর্ম কিছু দেখেছি। বাংলা ব্যাকরন নিয়ে তার মেধাবী কাজের কথাও জানি। সেই ব্যক্তি এমন বই লিখতে পারে দেখে চমকেছি।
আপনার কিছু ব্লগ পড়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। যে ব্লগার সেক্স এন্ড লুসিয়া সিনেমার রিভিউ-তে লেখেন, মূল চরিত্রকে আপনার অনেকদিন মনে থাকবে বিশেষ করে যৌনদৃশ্যএ তার এক্সপ্রেশন এর জন্য; এমন ব্লগার থেকে আমি ভাল কোন কমেন্ট আশা করি না।
আমাদের দেশটা বাংলাদেশ। পশ্চিমে অবস্থিত নয় যে পশ্চিমা আচার-সংস্কার নকল করে স্মার্ট হতে চাইব।
৭| ২৬ শে মে, ২০১৪ রাত ৯:৫৬
তাসজিদ বলেছেন: বাজে পোস্ট।
৮| ২৯ শে মে, ২০১৪ দুপুর ১২:৪০
প্লিওসিন অথবা গ্লসিয়ার বলেছেন: করুণ ধর্ষণের বর্ণনায় সুড়সুড়ি প্রাপ্ত হয় তাদের মত অসুস্থ নই। আপনাদের মত লোকেরায় ধর্ষণের বর্ণনায় চটি খুজে পায় - মানসিক বৈকল্যগ্রস্থ লোক - যত্তসব।
০৩ রা জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৮
সবজান্তা-সব জানে বলেছেন: আশা করি,বইটি আবার পড়বেন এবং আমাকে বলবেন বইটিতে কোন ধর্ষণের ঘটনা আপনার করুণাময় মনে হয়েছে...
৯| ০৩ রা জুন, ২০১৪ দুপুর ১:১০
মুদ্দাকির বলেছেন: জগ বলেছেন: শাহবাগী হনুমানদের দেবতা
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে মে, ২০১৪ রাত ১১:৪৭
জগ বলেছেন: শাহবাগী হনুমানদের দেবতা
================
আমি ছিলাম বাপে তাড়ানো মায়ে খেদানো
বস্তুবাদি কুয়ার ভিতরে আস্ফালন করা
একজন হনুমান আজাদ।
য়ুনিভার্সিটির টিচার হয়ে আমি
হয়ে গেলাম মহাবীর আলেকজান্ডারের মত
আমার বাক্যবানে জর্জরীত ভীত কাপুরুষ ছাত্রক রা
থরে থরে কেঁপে উঠত
অহংকারে ফুঁলে ফেঁপে ফুটবলের সমান একটা
কোলা ব্যাঙের মত আমি
ভাব নিয়ে চলতাম
কদবান বিবির দুইটা ঝুলন্ত পেঁপেঁর বর্ননায়
আমার ফুপন্যাস (ফালতু+উপন্যাস) থেকে
কাঁচা মাংসের গন্ধ বের হত
সেই কাঁচা মাংসের লোভে এদেশের
তরুন কিশোরদের আমার ফুপন্যাস গুলি পড়তে হত
কাঁচা মাংসের সাথে আমি
নাস্তিক্যবাদি পাদের গন্ধ মিশিয়ে দিতাম
অর্বাচীন তরুন কিশোর রা
কাঁচা মাংসের গন্ধে বিভোর হয়ে
নাক দিয়ে টেনে নিত নাস্তিকীয় দুষিত বায়ু।
এভাবে আমি হয়ে গেলাম
নাস্তিক গুরু,
আমার মৃত্যুর পর একদিন হয়তো আমি হয়ে যাব
শাহবাগী হনুমানদের দেবতা