নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বুঝ হবার পর থেকে অনেক দিন পর্যন্ত দেখেছি, প্রতি বছর বাবা একটা করে ষাড় পোষতেন। কোরবানির ঈদে সেই ষাড় বিক্রির জন্য তৈরি করা হত। এক জন রাখাল নিয়মিত থাকত ষারটার দেখভালের জন্য। প্রাইমারির শিক্ষক বাবা। তখনতো আর এতো টাকা বেতন আর ঈদ বোনাস ছিল না। পাশাপাশি এই ষাড় বিক্রির টাকা দিয়ে আমাদের ঈদ আনন্দের সুযোগ করে দিতেন।
ঈদের কিছুদিন আগ থেকেই এক্সট্রা জত্ন নেওয়া শুরু হত, বাড়তি খাবার, আলাদা থাকার জায়গা, নিয়মিত গুসল। যে দিন রাখাল গরু নিয়ে বাজারে যেতো বাবা তার পিছু পিছু যেতেন। আর মা পুকুরপাড়ে দাঁড়িয়ে থাকতেন, যতক্ষন পর্যন্ত ষারটাকে দেখা যেতো।
বাবা ষাড় বিক্রি করে আমাদের জন্য জামা জুতা বাজার সদাই সব কিছু নিয়ে আসতেন। কিন্তু বাবা নিজের জন্য কোনো ঈদে কিছু কিনতে দেখি নি। তার পরেও আমরা কাদতাম। বাহানা ধরতাম কোরবানি দিতে, পাড়ার সবার উটানে কোরবানির পশু বাধা থাকত শুধু আমাদের নেই, এই কথা মনে করে আরো বেশি করে কাদতাম। কেদে কেদে চোখ লাল করে দিতাম।বাবার উপর খুভ রাগ হত।
আর বাবা........ আমাদের দিকে তাকাতেন আর বোকার মত কি যেনো ভাবতেন।
এখনও বুঝি না বাবার সেই নিরব ভাবনার মানে কি ছিল। কি ভাবতেন বাবা?
হয়ত আক্ষেপ করতেন!
সরকারি শিক্ষক হয়েও বাবাকে ঈদের বাজার করতে ষাড় বিক্রি করতে হত কেনো!
এখনো বাবার উপর খুব রাগ হয়, যখন ভাবি লোকটা শিক্ষকতা করতে গিয়ে সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন দরিদ্রতার সাথে।নিজের জন্য কিছু না নিয়ে জাতির সেবায় দিয়ে গেছেন সারাটা জীবন। কিন্তু কেনো?
সত্যি তুমি বোকা ছিলে বাবা, এখনো বোকাই রয়ে গেলে। দেখনা তুমার ডান বামে আজ কত জৌলশ, তুমারই পাশে তুমার মত সরকারি চাকরী করে রাতা রাতি বড়লোক বনে যাচ্ছে সবাই। কেনো বাবা তুমি কেনো এই বোকামিটা করলে?
২| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৯
রিপন বর্মণ বলেছেন: তুমারই পাশে তুমার মত সরকারি চাকরী করে রাতা রাতি বড়লোক বনে যাচ্ছে সবাই।
হাছা কথা
৩| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:০৪
রহস্যময় ডিটেকটিভ ঈশান বলেছেন: এই বোকা মানুষদের মনই অনেক উদার।আকাশের মত।যারা জীবনে কিছু চাই না।শুধু দেয়।অন্যকে দিতে এরা ভালবাসে।
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৯
গেম চেঞ্জার বলেছেন: এই রকমের আরো কয়েকজন না শতশত বোকা দরকার এই মাটির, এই দেশের জন্য । আমি চাই লাখ লাখ বোকায় ভরে যাক আমাদের সমাজে ।