![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রতিনিয়ত সৎ থাকার চেষ্টার যুদ্ধে লিপ্ত একসৈনিক
কনফেশন। বাংলা অর্থ স্বীকারোক্তি। ফেসবুকের কল্যানে কনফেশন নামক ফেসবুক পেইজগুলো ভার্সিটির ছেলে মেয়েদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয়। পেইজগুলোতে আপনি নিজের নাম গোপন রেখে, আপনার পছন্দের মানুষের নাম উল্লেখ করে লেখা পাঠাতে পারেন। আমিও একজনের নামে লিখেছিলাম। প্রেম যাকে বলে। ভার্সিটিতে ভর্তির পর তাকেই ভালোলাগে। কেন ভালোলাগে তা আমি নিজেও জানি না। শুধু ওকে দেখলে অদ্ভুদ এক ভালোলাগায় মন ছুঁয়ে যায়। ইচ্ছে করে পাশাপাশি একটু হাঁটি। পলকহীন তাকিয়ে চোখ দুটো দেখি। কিন্তু কখনও হয়নি। কনফেশন লেখার পর, কেটে যায় তিনবছর। বন্ধুরা বহুবার বলা শর্তেও আমি কখনও সামনাসামনি গিয়ে বলিনি, তাকে আমি পছন্দ করি। তবে সে জানত, তাকে পছন্দের ব্যপারটা। তারও একবছরপর, একদিন আমি সত্যি সত্যি তার মুখোমুখি বাসের ভেতরে, অন্য কেউ তখন ছিল না। তাকে অামার মনের কথা বলি, প্রতিউত্তরে সেও সরাসরি না বলে দেয়। আমি আরো আত্মবিশ্বাসের সহিত বলি, দেখ আমার চেয়ে বেশি কেউ কখনও তোমায় ভালো রাখতে পারবে না? ভেবে বলো পরে অনুশোচনা করতে হবে না হয়? সে আরো আত্মবিশ্বাসের সহিত না বললো। তিন সত্যির মতো, আমি তাকে আবারো জিজ্ঞেস করি, সেও না করে দেয়। আমার প্রথম ভালোলাগা, ভালোবাসার মৃত্যু হয়। কষ্ট পেয়েছিলাম প্রচন্ড। কিন্তু তাকে ভুলে থাকা টা অনেকটা অসম্ভব ছিল। বন্ধুরা বুদ্ধি দিল, অন্য কাউকে পছন্দ করতে, ভালোবাসতে। অনেকটা কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার মতো। কিন্তু হয়নি ।
প্রায় ছয়মাস পর। একজনের সাথে ফেসবুকে পরিচয়। নাম ছিল অপ্সরীর নীল। কথা হতো টুকটাক তারপর দেখাও করি একদিন। সুন্দর, অসম্ভব সুন্দর ছিল চোখদুটো। সময় সংক্ষেপের জন্য বেশিক্ষন থাকতে পারেনি সে। চলে যায়। কথা ছিল, আবার দেখা করবে , শর্ত ছিল পরের বার আমাকে চোখদুটো ভালো করে দেখার সুযোগ দিবে। পরের সাপ্তাহ এলো, কিন্তু দেখা হলো না। কি কাজে যেন ব্যস্ত ছিল। অদ্ভুদ হচ্ছে আর দেখা হয়নি আমাদের। কেটে যায় অনেকদিন, মাঝে মাঝে ফেসবুকে চ্যাট হতে এইটুকুই। আমিও বুঝতে পারলাম, সে আমার কাছ থেকে পালাতে চায়। কিন্তু মুখফুটে তা সে বলে না। অন্যদিকে আমি বুঝেও না বুঝার ভান ধরে, তার চোখদুটো দেখবো বলে উদ্গ্রীব হয়ে আছি। একদিন ফেসবুকে নিউজফিড ক্রল করতে করতে দেখতে পেলাম অপ্সরী নীল কে নিয়ে কনফেশনে কেউ একজন তার ভালোবাসার কথা লিখলো। অসম্ভব সুন্দর ছিল লেখাটা। আমার ভেতরটা কেঁপে উঠলো। দুইদিনপর ভার্সিটিতে অপ্সরীর সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। তাকে ভালোবাসার কথা বললাম। সেও না করে দিল। কারণ হিসেবে, কনফেশনের ছেলেটার কথা বললো, ছেলেটার লেখা নাকি তার হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। আমি হাসলাম। অবশেষে বুঝলাম, সে কনফেশনের ছেলেটার প্রেমে পড়েছে, আমার না। ভালাবাসার মানুষটির জন্য খারাপ লাগতেছিল এই ভেবে, আমি জানি কনফেশনের ছেলেটি কখনও তার কাছে আসবে না কারণ কনফেশনটা আমিই লিখি।
©somewhere in net ltd.