![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় সাক্ষী মো: মনোয়ার হোসেন খান মোহন মুন্সি জেরায় বলেছেন, ‘আমি পাঁচটি বিয়ে করেছি। প্রথম স্ত্রী ময়নাকে দুইবার বিয়ে করেছি। আলবদর হওয়ার কারণে প্রথম বউকে তার বাবা আমার সাথে দেয়নি। পরে ময়নাকে দ্বিতীয়বার বিয়ে করেছি। বর্তমানে দুই স্ত্রী আমার সঙ্গে আছে। এক স্ত্রী আমার সঙ্গে স্কুলে চাকরি করে।’
গতকাল ট্রাইব্যুনালে জেরার সময় সাক্ষী এ কথা বলেন।
সাক্ষী মোহন মুন্সির ট্রাইব্যুনালে দেয়া জবানবন্দীতে নিজেকে নিরক্ষর হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন। কিন্তু গতকাল জেরার সময় তিনি স্বীকার করেছেন অষ্টম শ্রেণী পাস দেখিয়ে স্কুলের দফতরির চাকরি নিয়েছেন তিনি। টিপসই নয়, নাম স্বাক্ষর করে তিনি বেতন তোলেন। জালজালিয়াতি করে ভাইবোনদের সম্পত্তি দখল করার অভিযোগে সাক্ষীর ভাই-বোনেরা তার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এবং কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়ার কারণে ভাই-বোনেরা তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন বলেও শিকার করেন তিনি।
এ ছাড়া সাক্ষী হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর সরকার তার এক ছেলেকে শেরপুর রাজস্ব অফিসে চাকরি দিয়েছে বলেও শিকার করেন মোহন মুন্সি। জেরায় মনোয়ার হোসেন বলেন, তিনি এলাকায় ঝাড়ফুঁক করেন। তবে ঝাড়ফুঁক করে তিনি নিজ এলাকার মানুষের সাথে প্রতারণা করছেন এবং প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে সাক্ষী হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর তার ছেলেকে চাকরি দেয়া হয়েছেÑ আসামি পক্ষের এ অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেন তিনি।
গতকাল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ কামারুজ্জামানের আইনজীবী মোহাম্মদ কফিল উদ্দিন চৌধুরী সাক্ষীকে জেরা করেন। জেরায় কফিল উদ্দিন চৌধুরীকে সহায়তা করেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো: নজরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, ব্যারিস্টার এহসান এ সিদ্দিক, অ্যাডভোকেট শিশির মনির প্রমুখ।
জেরা:
প্রশ্ন: আপনি একজন সুযোগসন্ধানী ও ধান্দাবাজ লোক, স্বাধীনতা যুদ্ধের পূর্বে আপনি আওয়ামী লীগের পক্ষে ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষে ছিলেন এবং লুটপাট করেছেন। স্বাধীনতার পর এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন এবং এখন সুযোগ বুঝে সরকারের পক্ষ নিয়ে আর্থিকসহ নানাভাবে লাভবান হয়ে কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিচ্ছেন।
উত্তর: সত্য নয়।
প্রশ্ন: আপনি কয়টি বিয়ে করেছেন?
উত্তর: পাঁচটি।
বিচারক মো: শাহিনুর ইসলাম: আসলে কি তাই, পাঁচ বিয়ে করেছেন?
সাক্ষী: সত্য।
প্রশ্ন: প্রথম স্ত্রীকে দুইবার বিয়ে করেন?
উত্তর: প্রথম স্ত্রী ময়নাকে দুইবার বিয়ে করি। প্রথমে একবার বিয়ে করলে তাকে দেয়নাই, কারণ আমি আলবদর ছিলাম। পরে তাকে আবার বিয়ে করি।
প্রশ্ন: বিয়ের তারিখ বলতে পারবেন?
উত্তর: পাঁচ বিয়ে করেছি, তারিখ বলতে পারব না।
প্রশ্ন: এখন কয় স্ত্রী আছেন?
উত্তর: দুই স্ত্রী আছে। একজন বাচ্চা দেখে এবং আরেকজন আমার সাথে একই স্কুলে চাকরি করে।
প্রশ্ন: স্কুলে স্বাক্ষর করে বেতন তোলেন?
উত্তর: হ্যাঁ, স্বাক্ষর করে বেতন নেই।
প্রশ্ন: স্কুলের চাকরিতে দেয়া তথ্যে আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণী পাস।
উত্তর: হ্যাঁ।
প্রশ্ন: চাকরিতে দেয়া তথ্যে আপনার জন্মতারিখ দেয়া আছে ১ জানুয়ারি ১৯৬০।
উত্তর: জন্মতারিখ বলতে পারব না।
প্রশ্ন: আপনার ভাই মাহবুবুল ইসলাম অপনার বিরুদ্ধে শেরপুর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে জালজালিয়াতি করে জমি দখলের অভিযোগে মামলা করেছেন?
উত্তর: হ্যাঁ।
প্রশ্ন: ভাইবোনদের সম্পত্তি জালজালিয়াতি করে আপনি দখল করতে চেয়েছিলেন?
উত্তর: সত্য নয়।
প্রশ্ন: আপনার ভাই-বোনেরা আপনার বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন?
উত্তর: সত্য নয়।
প্রশ্ন: এলাকায় ঝাড়ফুঁক করেন?
উত্তর: হ্যাঁ।
প্রশ্ন: আপনার বিরুদ্ধে এলাকায় ঝাড়ফুঁকের মাধ্যমে প্রতারণা করে পয়সা আদায়ের অভিযোগ আছে?
উত্তর: সত্য নয়।
প্রশ্ন: এ ধরনের প্রতারণা করার কারণে আপনার ভাই-বোনেরা আপনার সাথে সম্পর্ক রাখেন না?
উত্তর: কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়ার কারণে ভাই-বোনেরা সম্পর্ক রাখে না। কামারুজ্জামানের সাথে ভাই-বোনদের সম্পর্ক।
প্রশ্ন: আপনি আপনার ভাই-বোন সম্পর্কে মিথ্যা বলছেন?
উত্তর: সত্য নয়।
প্রশ্ন: আপনার কয় ছেলেমেয়ে?
উত্তর: তিন ছেলে ও দুই মেয়ে।
প্রশ্ন: ছেলেরা কে কী করেন?
উত্তর: এক ছেলে নাসিম শেরপুরে নায়েবের অফিসে চাকরি করে।
প্রশ্ন: কত দিন আগে তিনি ওই চাকরিতে যোগ দিয়েছেন?
উত্তর: আট থেকে নয় মাস আগে।
প্রশ্ন: নাসিমের পুরো নাম মোহাম্মদ নুরুন নবী খান নাসিম?
উত্তর: হ্যাঁ।
প্রশ্ন: আপনি কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে সাক্ষী হওয়ার পর গত ২৯ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখে প্রয়োজনীয় যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও সরকার নাসিমকে শেরপুর জেলার রাজস্ব বিভাগে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী হিসেবে চাকরি দেয়?
উত্তর: সত্য নয়।
প্রশ্ন: আপনার এক ছেলে ইব্রাহিম মাদক ব্যবসায়ী ও ছিনতাইকারী। এ ধরনের মামলায় অনেক দিন জেলে আছেন?
উত্তর: সত্য নয়।
প্রশ্ন: আপনার এলাকার নুরুল ইসলামকে চেনেন?
উত্তর: হ্যাঁ।
প্রশ্ন: নুরুল ইসলাম ২০০৭ সালের ৩১ আগস্ট আপনার ছেলে ইব্রাহিমসহ দুই জনের বিরুদ্ধে মোবাইল ছিনতাইয়ের অভিযোগে মামলা করেছেন এবং অপনার ছেলে গ্রেফতার হন?
উত্তর: সত্য নয়।
প্রশ্ন: আপনার ছেলে ছিনতাই ও মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত বলে স্থানীয় পত্রপত্রিকায় রিপোর্ট হয়েছে?
উত্তর: সত্য নয়।
প্রশ্ন: আপনার বড় ভাইয়ের সাথে কামারুজ্জামানের পরিচয় আছে?
উত্তর: আছে। আমার বড় ভাই আমার থেকে সাত বা আট বছরের বড়।
প্রশ্ন: তিনি জীবিত আছেন?
উত্তর: হ্যাঁ।
প্রশ্ন: ’৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় এবং যুদ্ধের পরে কামারুজ্জামানের এলাকায় চলাফেরা, লেখাপড়াসহ নিয়মিত যাতায়াত করেছেন এবং আপনি চিহ্নিত রাজাকার হওয়ার কারণে তার সাথে আপনার কোনো দেখা সাক্ষাৎ হয়নি।
উত্তর: সত্য নয়।
প্রশ্ন: ’৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা বন্ধ ছিল, জানেন?
উত্তর: হ্যাঁ, বন্ধ ছিল।
প্রশ্ন: পাকিস্তানের আর্মি মাইক দিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার ঘোষণা দিয়েছিল এবং মুক্তিযোদ্ধারা চিরকুট পাঠিয়ে বলেছিলÑ যারা পরীক্ষা দেবে তাদের সাক্ষাৎ মৃত্যু।
উত্তর: জানা নেই।
প্রশ্ন: কামারুজ্জামান মুক্তিযোদ্ধাদের ডাকে সাড়া দিয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেননি।
উত্তর: জানা নেই।
প্রশ্ন: কামারুজ্জামান আলবদর নেতা হওয়া, ছাত্রসংগঠনের নেতা হওয়া, আলবদর ক্যাম্পে অবস্থান এবং কামারুজ্জামানকে জড়িয়ে যেসব কথা বলেছেন তা সম্পূর্ণ বানোয়াট ও মিথ্যা।
উত্তর: সত্য নয়।
প্রশ্ন: কামারুজ্জামানের রাজনৈতিক শত্রুপক্ষ থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে মিথ্যা বানোয়াট এবং তাদের শেখানো মতে সাক্ষ্য দিয়েছেন?
উত্তর: সত্য নয়।
প্রশ্ন: আপনি কামারুজ্জামান সম্পর্কে যা বলেছেন তা সত্য না হওয়ার কারণে এক এক সময় এক এক কথা বলছেন?
উত্তর: সত্য নয়।
প্রশ্ন: ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দী দেয়ার আগে অন্য কোথাও জবানবন্দী দিয়েছেন?
উত্তর: শেরপুর ডিসি অফিসে প্রথম জবানবন্দী দিয়েছি।
প্রশ্ন: কবে দিয়েছেন তারিখ বলতে পারবেন?
উত্তর: ২০১০ সালের শেষের দিকে।
প্রশ্ন: কে জবানবন্দী নিয়েছেন?
উত্তর: ডিসি অফিসে তদন্তকারী সংস্থার একজন লোক জিজ্ঞাসা করেছে এবং একজন টাইপ করেছে।
প্রশ্ন: আপনার জবানবন্দী ভিডিও করা হয়েছে?
উত্তর: আমি কোনো ক্যামেরা দেখতে পাইনি।
প্রশ্ন: যে বিষয়ে ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিতে এসেছেন, এই বিষয়ে ২০ বছর আগে ১৯৯২ থেকে ’৯৪ সালের মধ্যে গণ-আদালত হয়েছিল। আপনার এলাকায় ওই গণ-আদালতের তদন্তের সময় কোনো বক্তব্য দিয়েছেন আপনি?
উত্তর: না, বক্তব্য দেইনি।
প্রশ্ন: স্বাধীনতার পর কামারুজ্জামান যে কলেজে লেখাপড়া করতেন সেই কলেজ থেকে এইএসসি পাস করেন, এরপর ঢাকার একটি কলেজ থেকে বিএ এবং ১৯৭৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবাদিকতা থেকে এমএ পাস করেন।
উত্তর: জানা নেই।
প্রশ্ন: ক্যাম্পে পাকিস্তান আর্মি ইংরেজি না উর্দুতে কথা বলত?
উত্তর: ইংরেজিতে কথা বলতে দেখিনি, উর্দুতে বলত।
প্রশ্ন: ‘দেখিয়ে, হাম বহুত দুরসে এঁহা আয়েহেঁ, এই উর্দু কথার অর্থ কী?
উত্তর: আমি বলতে পারব না।
প্রশ্ন: আপনার জবানবন্দীতে বর্ণিত সুশীল একটি অস্তিত্বহীন মানুষ?
উত্তর: সত্য নয়।
প্রশ্ন: কাজল কিভাবে গুলিবিদ্ধ হয় দেখেছেন?
উত্তর: দেখিনি।
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৪:০৩
িলপু_িসলেট বলেছেন: মনে হচ্ছিল আদালত প্রাঙ্গনে চলে এসছি। ধন্যবাদ লেখক-কে। ভাবছি একটা মামল করব কার বিরুদ্ধে করব ভেবে পাচ্ছিনে শাওনের বিরুদ্ধে কি করা যায়???? প্রিয় লেখককে অর্ধমৃত করার দায়ে।