![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি মুক্ত প্রাণী। কথা বলি গণমানুষের। অধিকার আদায়ের জন্যেই আমার জন্ম।
সোহাগ আশরাফ
বর্তমান ১৪ দলীয় সরকারের একটাই সফলতা একাধিক জাতীয় ও রাজনৈতিক মামলা সফল ভাবে এগিয়ে নিয়েছে তারা। এসব মামলার রায় ঘোষণা ও তা কার্যকরে সাহসের পরিচয় দিয়েছেন সরকার। বঙ্গবন্ধুর পরিবার কে হত্যা, জাতীয় কিছু রাজনৈতিক হত্যা, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, বিরোধী দলে বিরুদ্ধে রাজনৈতিক মামলাসহ বেশ কিছু আলোচিত মামলা এগিয়ে নিয়ে ১৪ দলীয় মহাজোট সরকার ইতিমধ্যে নিজেদেরকে মামলার সরকারে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন।
ওয়ান ইলেভেনের মামলা থেকে শিক্ষা নিয়ে ১৪ দলীয় মহাজোট সরকার দেশের উন্নয়নের বদলে হটেছেন ভিন্ন পথে। ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই দেশের উন্নয়নকে পিছে ঠেলে মামলার রাজনীতি নিয়েই এগিয়ে চলেছেন তারা। এ সময়ের মধ্যে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য মামলা সাহসের সাথে মোকাবেলা করে পূর্বের সব রেকর্ড টপকে গিয়েছেন তারা। এর আগে কোনো সরকারের আমলে এতো বেশি রাজনৈতিক ও জাতীয় মামলা হয়নি।
সরকার ২০১০ সলের শুরুর দিকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলার রায় কার্যকর করে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন । ওই বছর ২৭ জানুয়ারি গভীর রাতে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত ৫ খুনির ফাঁসির রায় কার্যকর হয়।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। ওই বছরই ৩ নভেম্বর কারাগারেরর অভ্যন্তরে হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহযোগী জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী এবং এএইচএম কামরুজ্জামানকে।
প্রায় ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ইতিহাসের এই বর্বর হত্যাকান্ডের বিচার সম্পন্ন করে। ২০০১ এ সরকার পরিবর্তন এবং বিএনপি-জামায়াত চার দলীয় জোট ক্ষমতায় আসার মামলার রায় কার্যকর করা ঝুলে যায়। নানা টানাপোড়েন ও প্রতিকৃলতার কারণে ৯৬ সালে মামলা দায়ের করার পর এর বিচারকাজ শেষ করে রায় কার্যকর করতে সময় লাগে ১৩ বছর।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অন্যতম নির্বাচনী অঙ্গিকার ছিলো ক্ষমতায় গেলে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় কার্যকর করার। নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ২০০৯ সালের মধ্যে আসামিদের লিভ টু আপিলের শুনানি এবং সকল আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে।
এরপর বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সেনানিবাসের বাড়ি নিয়ে যে মামলা হয় তাতেও জয় লাভ করে সরকার পক্ষ। শেষ পর্যন্ত সেনানিবাসের বাড়ি ছেড়ে দিতে বাধ্য হন খালেদা জিয়া।
২০০৯ সালের ২৫ এবং ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিডিআর বিদ্রোহের পর বিডিআর আইনে মোট ৫৭টি মামলা হয়। ৫৭টি মামলায় মোট আসামি ৬ হাজার ৪১ জন। এর মধ্যে ৫৬টি মামলার রায়ে ৫ হাজার ২০৩ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়। খালাস পায় ১০৫ জন।
মামলার জালে আটকে আছে বিএনপি। জেলায় জেলায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে হয়েছে হাজার হাজার মামলা। পুলিশ ইতোমধ্যে বিএনপি নেতা রিজভী, মির্জা ফখরুল সহ শীর্ষ নেতা ও শতাধীক কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, অতীতে কখনো কোনো সরকার বিরোধী দল ঠেকাতে মাত্র ১০ দিনে শতাধিক মামলা করেছে বলে নজির নেই।
বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের চার বছরে হাজার হাজার মামলা দায়ের হয়েছে বিএনপির বিরুদ্ধে। বিএনপির একটি সূত্র দাবি করেছে, সারাদেশে এ মামলার সংখ্যা হবে প্রায় ২০ হাজার। এর মধ্যে শুধু রাজধানী ঢাকা শহরেই প্রায় দেড় থেকে দুই হাজার মামলা দায়ের হয়েছে। আর এসব মামলার আসামি প্রায় দুই থেকে আড়াই লাখের মতো। বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের প্রায় সবার বিরুদ্ধেই একাধিক মামলা রয়েছে।
এরপর আওয়ামী লীগের বড় সফলতা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। ৪২ বছরে যা সম্ভব হয়নি তা করে দেখিয়েছে ১৪ দলীয় সরকার। আলোচিত কয়েকটি রায়ই তার প্রমাণ।
বিএনপির পাশাপাশি জামায়াতের নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে রয়েছে একই পরিমাণ মামলা। মামলার জালে আটকে আছে তাদের সাংগঠনিক কর্যক্রম। অধিকাংশ নেতা-কর্মী এখন কারাগারে। দলটি কে নিষিদ্ধের প্রক্রিয়া চলছে।
এছাড়াও অসংখ্য দুর্নীতির মামলা হয়েছে এ সরকারের আমলে। ডেসটিনি, হলমার্ক, পদ্মা সেতুসহ বড় বড় ইস্যুতে হয়েছে বেশ কিছু আলোচিত মামলা।
সম্প্রতি জাতীয় চার নেতা হত্যা মামলায় আপিলের ওপর রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের শুনানি শেষে আগামী ৩০ এপ্রিল রায় ঘোষণার তারিখ ধার্য করেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এই রায় ঘেষণা হয়ে দেশে আরো একটি ঐতিহাসিক রায় হবে।
সব মিলিয়ে, বর্তমান সরকারের মেয়াদকালে দেশের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন না হলেও দেশবাসী কিছু আলোচিত মামলার রায় পেয়েছে। যা ইতিহাস কে কলঙ্কমুক্ত করেছে বলে দাবি সরকারের।
০১৬৭৪০৭৬৪৭৯
©somewhere in net ltd.