নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মুক্ত পাখির ডাক

আমি মুক্ত পাখির মতো উড়ে বেড়াতে চাই আকাশে বাতাসে

সোহাগ.আশরাফ

আমি মুক্ত প্রাণী। কথা বলি গণমানুষের। অধিকার আদায়ের জন্যেই আমার জন্ম।

সোহাগ.আশরাফ › বিস্তারিত পোস্টঃ

জনগণের সাথে প্রতারণা করে বিরোধী দল

১৯ শে মে, ২০১৩ বিকাল ৩:৪১





সোহাগ আশরাফ :

দেশের সব রাজনৈতিক কর্মকান্ডের কেন্দ্রস্থল সংসদ। অথচ আমাদের সংসদীয় রাজনীতির ইতিহাস সমালোচনায় পূর্ণ। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যেখানে সংসদীয় রাজনীতির তাৎপর্য বিশাল, সেখানে সংসদের সার্বভৌমত্ব হয় ভূ-লুণ্ঠিত। আর এর জন্য দায়ি সরকারের পাশাপাশি বিরোধী দলও। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে জনগণের সাথে প্রতারণা করে তারা। জনগণ তাদের সমস্যা নিয়ে কথা বলার জন্য একজন প্রতিনিধিকে সংসদে পাঠায়। অথচ একজন সাংসদ জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে দলের কথা মতো বর্জন করে সংসদ। শুধু বর্তমান বিরোধী দল নয়, সব সময়ই বিরোধী দলগুলো সংসদ বর্জনের রাজনীতি নিয়ে এগিয়েছে।



বিরোধী দলের অভিযোগ, তাদের কথা বলতে দেওয়া হয় না বলে তারা সংসদে যায় না। এটি কোনো যুক্তি নয়। সংসদে কথা বলতে না দিলে তারা সেখানে গিয়ে অবস্থান ধর্মঘট করুক। প্রয়োজনে সাংসদেরা অনশন করুন। সংসদ তো শুধু সরকারি দলের নয়। কথা বলতে না দেওয়ার জন্য যদি বিএনপি সংসদ বর্জন করে, তাহলে রাজপথও বর্জন করা উচিত। কেননা, সেখানেও সরকারের পুলিশ বাহিনী তাদের বাধা দিচ্ছে, পেটাচ্ছে। মামলা দিয়ে নেতাদের হয়রানি করছে, জেলে পুরছে।



অপরদিকে সংসদ বর্জন করলেও বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ঠিকই হাতিয়ে নিচ্ছেন বিরোধী দলের সাংসদেরা। এমনকি সংসদে না গিয়ে দৈনন্দিন যাতায়াত ভাতা পর্যন্ত তুলে নিচ্ছেন। এটি কেবল অনৈতিক নয়, বেআইনিও। জনগণের সাথে, জাতীর সাথে, দেশের সাথে প্রতারণা।



কোনো জতীয় সমস্যায় সংসদেই একমত হওয়া যায় এবং দ্বিমতও পোষণ করা যায়। গণতান্ত্রিক সরকার বলতে আমরা সংসদীয় সরকারই বুঝে থাকি। সংসদীয় সরকারে মিডিয়ার স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, বহুদল গঠনের স্বাধীনতা, বহুমত ও বহু ধর্মের স্বাধীনতাকে নিশ্চিত করে।



গণতান্ত্রিক সমাজে বিরোধী দল জনগণের কণ্ঠ হিসেবে কাজ করে। সরকারের ভুললত্রুটি সংশোধন, দেশের মানুষের জন্য কল্যাণকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণের ব্যাপারে বিরোধীদলের গঠনমূলক ভূমিকার কোনও বিকল্প নেই। এজন্য সংযম, সহনশীলতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ থাকা অপরিহার্য। কিন্তু আমরা দেখেছি তার উল্টা। আমরা লক্ষ্য করেছি মহাজোট ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের আচার আচরণ। তারা বিরোধীদলের প্রতি তদের হিংসাত্মক মনোভাবই প্রকাশ করেছে বেশি। তারা অশালীন ভাষায় বিরোধীদলের নেতানেত্রী এবং নন্দিত ব্যক্তিদের যেমন কুৎসা গাইছেন তেমনি দলীয়ভাবেও তাদের উৎখাতে তৎপর রয়েছেন। তাদের কেউ কেউ সংসদের পবিত্র অঙ্গনে দাঁড়িয়ে প্রয়াত জাতীয় নেতাদের নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করছেন। যে সংসদ দেশের মানুষের কল্যাণ নিয়ে কথা না বলে ব্যক্তির চরিত্র হননের প্লাটফরমে পরিণত হয় সে সংসদে বিরোধীদলের অবস্থান তাকে কার্যকর করার ব্যাপারে কতটুকু ভূমিকা রাখতে পারবে। হয়েছেও তাই। সংসদ ছেড়ে রাজপথে নেমেছে বিরোধী দল। তবে এ আচরণ শুধু বর্তমান সরকারের নয়, এর ধারাবাহিক চিত্র সব সরকারের আমলেই দেখেছে দেশের জনগণ।



আমাদের জনদরদি গণতান্ত্রিক দলগুলো ক্ষমতায় থাকতে সংসদ ভালোবাসে এবং বিরোধী দলে গেলে রাজপথের প্রেমে পড়ে। তাদের এই প্রেম এতটাই ভয়ংকর যে দেশ ও মানুষকে মহাবিপর্যয়ের মধ্যে ঠেলে দেয়।



গত দুই দশকে আমরা চারটি জাতীয় সংসদ পেয়েছি। ধারাবাহিকভাবে আগের সংসদের চেয়ে পরের সংসদের কার্যকারিতা কম। পঞ্চম জাতীয় সংসদে কার্যদিবস ছিল ৩৯৫ দিন, এর মধ্যে সংসদনেতা (খালেদা জিয়া) উপস্থিত ছিলেন ২৫৬ দিন এবং বিরোধী দলের নেতা (শেখ হাসিনা) ১১৯ দিন। সপ্তম সংসদে মোট কার্যদিবস ছিল ৩৮৫ দিন। এর মধ্যে সংসদনেতা (শেখ হাসিনা) উপস্থিত ছিলেন ২৯৮ দিন (৭৭ দশমিক ৮১ শতাংশ), বিরোধী দলের নেতা (খালেদা জিয়া) উপস্থিত ছিলেন মাত্র ২৮ দিন (৭ দশমিক ৩১ শতাংশ)। ষষ্ঠ সংসদের হিসাবও জনগণের জানা। বিরোধী দলহীন সেই সংসদের মেয়াদ ছিল মাত্র নয় দিন এবং একমাত্র দায়িত্ব ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন। পঞ্চম সংসদে বিরোধী দল (আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য) বর্জন করেছে ১৩৫ দিন (৩৪ দশমিক ১৮ শতাংশ), সপ্তম সংসদ বিরোধী দল (বিএনপি ও অন্যান্য) বর্জন করেছে ১৬৩ দিন (৪২ দশমিক ৫৬ শতাংশ)।



চলতি সংসদের চার বছরে মোট ৩৩৭ কার্যদিবসের মধ্যে বিরোধী দল উপস্থিত ছিল মাত্র ৫৪ দিন। অনুপস্থিত ছিল ২৮৩ কার্যদিবস। আর অষ্টম সংসদের পুরো মেয়াদে ৩৭৩ কার্যদিবসের মধ্যে আওয়ামী লীগ অনুপস্থিত ছিল ২২৩ দিন, উপস্থিত ছিল ১৫০ দিন। এই যদি হয় চিত্র তবে কে বলবে তারা জনগণের জন্য প্রতিনিধিত্ব করেন।



এখন বিরোধী দল সংসদে যাওয়ার কথা বলছে। জনগণ তো জানে কি জন্য এই ব্যাকুলতা। সদস্য পদ যদি হরিয়ে যায় তবে বেতন ভাতা তো আর তোলা সম্ভব হবে না। এখন জনগণ শিক্ষিত, তারা প্রযুক্তির যুগে অনেক এগিয়ে, মুক্ত গণমাধ্যম এর এই যুগে প্রতারণা করলে তা ধরা পরেই। তাই এই সব সংঙ্কৃতি থেকে দুরে থেকে জনগণের কাঙ্খিত আশা পূরণ করুণ তাতে হয়তো পাপ মোচন হবে।





জনগণের সাথে প্রতারণা করে বিরোধী দল

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.