![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রতি বছর বাংলাদেশসহ এই উপমহাদেশে মধ্য শাবানে শবে বরাত নামে একটি ইসলামপরিপন্থী, বিশেষত সুন্নাহ বিরোধী কাজ হয়ে থাকে যেটিকে বিদ'আত বলা হয়ে থাকে। বিদ'আত অর্থ সংযোজন অর্থাৎ যে কাজটি আল্লাহর নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোনদিন করেননি। আর এই সংযোজনের বিষয়ে প্রিয় নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কঠোরভাবে নিষেধ করে গেছেন। সুন্নতের বিপরীতই হলো বিদ'আত। আমাদের দুর্ভাগ্য যে এই উপমহাদেশের মুসলিম সমাজ বহু ধরনের বিদআতে অভ্যস্ত! অনেকগুলো বিদ'আতের মাঝে একটি হলো এই শবে বরাত পালন। অথচ শবে বরাত কিংবা লায়লাতুল বরাত বলে কোনো শব্দ কোরআন ও হাদিসে নেই। কোরআনে যা আছে সেটা হলো লায়লাতুল কদর। কিন্তু শবে বরাত বলে কিছু নেই। পৃথিবীর কোনো মুসলিম দেশে এই শবে বরাত পালন হয় না একমাত্র বাংলাদেশ ও পাকিস্তান ব্যতিত। ইসলাম সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান না থাকায় নিজেদের অজান্তেই এ দেশের মুসলমানরা নানানরকম বিদ'আত এমনকি শিরকের মত ভয়ংকর পাপে নিজেদের জড়িয়ে ফেলছে। এর বাইরে কিছু ভন্ড ধর্ম ব্যবসায়ী আলেম নামের জালেমরা তো আছেই সাধারণ মুসলমানদের বিভ্রান্ত করে তাদের আকীদাহ নষ্ট করতে। সে অনেক লম্বা কথা, আজ আপাতত শবে বরাত সম্পর্কিত বিষয়টিতেই আলোচনা সীমাবদ্ধ রাখি।
আগেই বলেছি শবে বরাত একটি বিদ'আত সুতরাং এটি পালন করা কিংবা এই রাতে নেকীর আশায় সালাত আদায় করা যাবে না। অনেকে ভাবতে পারেন সালাত যখন আদায় করছি সেটা খারাপ হয় কি করে? এ তো ভালো কাজ! হ্যা, আপাতদৃষ্টিতে আপনার কাছে এটা ভালো মনে হলেও যেহেতু এটা বিদ'আত তথা সংযোজন আর সংযোজন ইসলামে নিষেধ অতএব এ থেকে আমাদের বিরত থাকায় বাঞ্চনীয়। বিদ'আত বিদআত ই। এখানে ভালো বিদ'আত বা খারাপ বিদ'আত বলে কিছু নেই। কারণ সবরকম বিদ'আতই খারাপ ও ইসলামে অগ্রহনযোগ্য। তো চলুন এবার উদাহরণ দেয়া যাক শবে বরাতের নামে মধ্য শাবানে এদেশের মুসলিম সমাজে প্রচলিত কয়েকটি বিদআতের।
১. শবে বরাত উপলক্ষে ১৪ শাবান দিনে রোজা রাখা এবং ১৪ তারিখ দিবাগত রাত ১৫ শাবানে সর্বোচ্চ একশত রাকাত সালাত আদায় করা!
২. মৃতদের আত্মার পুনরাগমনে বিশ্বাস করা!
৩. হালুয়া, রুটি ও এধরনের বিভিন্ন খাবার তৈরী করা!
৪. অনেকে ছবি ও মূর্তি কৃত মিষ্টান্ন তৈরী করে থাকে।
৫. মিলাদ ও জিকিরের অনুষ্টান করা! (জেনে রাখা ভালো যে মিলাদ হলো আরেকটি বিদ'আত।)
৬. শবে বরাতকে উপলক্ষ বানিয়ে কবর জিয়ারত করা!
আসুন আমরা সকলে মধ্য শাবানে তথাকথিত শবে বরাতের নামে এই সকল বিদ'আতি ইবাদত বর্জন করে এবং কোরআন ও সহীহ হাদিসের আলোকে নিজেদের আকীদাহকে পরিশুদ্ধ করি। আল্লাহ আমাদের সেই তৌফিক দান করুন। আমীন।
২| ০১ লা জুন, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৪
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আপনি নিশ্চিত?
কিভাবে? তথ্য সূত্র, প্রমাণ অকাট্য দলিল কিছূই না দিয়ে এত বড় একটা সিদ্ধান্ত দিয়ে দিলেন????
আপনি কি ইলহাম পেয়েছেন না ওহি!
আচ্ছা তাহলে নীেচর কোট করা অংম নিয়ে কিছু ্কাট্য দরিল দিনতো দেখি!---
"
মহাপবিত্র শবে বরাত শরীফ উঁনার দলীল ভিত্তিক পোষ্ট ও প্রমাণ পবিত্র আল কুর’আন এবং হাদিস শরীফ উঁনাদের থেকে।
১৪ই শা’বান দিবাগত রাতটি হচ্ছে পবিত্র শবে বরাত বা লাইলাতুল বরাতের রাত্রি। কিন্তু অনেকে বলে থাকেন কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ উঁনাদের কোথাও শবে বরাত বলে কোনো শব্দ নেই। শবে বরাত বিরোধীদের এরূপ জিহালতপূর্ণ বক্তব্যের জবাবে বলতে হয় যে, পবিত্র শবে বরাত শব্দ দু’টি যেরূপ মহাপবিত্র আল কোরআন উল কারিম ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উঁনাদের কোথাও নেই তদ্রূপ পবিত্র নামায, পবিত্র রোযা, পবিত্র খোদা, পবিত্র ফেরেশতা, পবিত্র পীর ইত্যাদি পবিত্র শব্দও মহাপবিত্র আল কোরআন উল কারিম ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উঁনাদের কোথাও নেই। এখন পবিত্র শবে বরাত বিরোধী লোকেরা কি পবিত্র নামায, পবিত্র রোযা ইত্যাদি পবিত্র শব্দ মহাপবিত্র আল কোরআন উল কারিম ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উঁনাদের কোথাও না থাকার কারনে তা ছেড়ে দিবে? পবিত্র খোদা, পবিত্র ফেরেশতা ইত্যাদি শব্দ মহাপবিত্র আল কোরআন উল কারিম ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উঁনাদের কোথাও না থাকার কারনে মহান আল্লাহ পাঁক ও উঁনার ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উঁনাদেরকে অস্বীকার করবেন? মূলত পবিত্র শবে বরাত, পবিত্র নামায, পবিত্র রোযা, পবিত্র খোদা, পবিত্র ফেরেশতা, এবং পবিত্র পীর ইত্যাদি ফার্সী ভাষা হিসেবে ব্যবহৃত। ফার্সী শব অর্থ রাত্রি এবং বরাত অর্থ ভাগ্য বা মুক্তি। সুতরাং শবে বরাত মানে হল ভাগ্য রজনী বা মুক্তির রাত।
মূলতঃ পবিত্র শবে বরাত এবং উঁনার ফযীলত সম্পর্কে মহাপবিত্র আল কোরআন উল কারিম ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উঁনাদের অসংখ্য আয়াত শরীফ ও হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত। মহাপবিত্র আল কোরআন উল কারিম উঁনার মধ্যে শবে বরাতকে লাইলাতুম মুবারাকাহ বা বরকতময় রজনী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আর পবিত্র হাদীছ শরীফ উঁনার মধ্যে শবে বরাতকে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান বা পবিত্র শা’বান মাসের মধ্য রাত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাঁক তিঁনি মহাপবিত্র আল কোরআন উল কারিম উঁনার মধ্যে ইরশাদ মোবারক করেন, অর্থঃ শপথ প্রকাশ্য কিতাব উঁনার! নিশ্চয়ই আমি(মহান আল্লাহ পাঁক) বরকতময় রজনীতে মহাপবিত্র আল কোরআন উল কারিম নাযিল করেছি। নিশ্চয়ই আমিই সতর্ককারী। আমারই(মহান আল্লাহ পাঁক) নির্দেশক্রমে উক্ত রাত্রিতে প্রতিটি প্রজ্ঞাময় বিষয়গুলো ফায়সালা হয়। আর নিশ্চয়ই আমিই(মহান আল্লাহ পাঁক) প্রেরণকারী।” (পবিত্র সূরা দু’খান শরিফঃ আয়াত শরীফ ২-৫)
কেউ কেউ বলে থাকেন যে, “পবিত্র সূরা দু’খান উঁনার উল্লেখিত আয়াত শরীফ উঁনার দ্বারা মহাসম্মানিত পবিত্র শবে ক্বদর উঁনাকে বুঝানো হয়েছে। কেননা উক্ত আয়াত শরীফ উঁনার মধ্যে সুস্পষ্টই উল্লেখ আছেন যে, নিশ্চয়ই আমি বরকতময় রজনীতে মহাসম্মানিত পবিত্র আল কওরআন উল কারিম উনাকে নাযিল করেছি। আর মহাপবিত্র আল কোরআন উল কারিম উঁনাকে যে পবিত্র ক্বদরের রাত্রে নাযিল করা হয়েছে তা সম্মানিত পবিত্র সূরা ক্বদর উঁনার মধ্যেও উল্লেখ আছে।” এ প্রসঙ্গে মুফাসসির কুল শিরোমণি রঈসুল মুফাসসিরীন বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু উঁনার স্বীয় তাফসীরে তিঁনি উল্লেখ করেন,” মহান আল্লাহ পাঁক তিঁনি পবিত্র লাইলাতুম মুবারাকাহ বলতে শা’বান মাসের মধ্য রজনী বা শবে বরাতকে বুঝিয়েছেন। মহান আল্লাহ পাঁক তিঁনি এ রাতে প্রজ্ঞাময় বিষয়গুলোর ফায়সালা করে থাকেন।
দলিলঃ– (ছফওয়াতুত তাফাসীর, তাফসীরে খাযীন ৪র্থ খন্ডঃ ১১২ পৃষ্ঠা, তাফসীরে ইবনে আব্বাস, তাফসীরে মাযহারী ৮ম খন্ডঃ ৩৬৮ পৃষ্ঠা, তাফসীরে মাযহারী ১০ম খন্ড, তাফসীরে ইবনে কাছীর, তাফসীরে খাযিন, বাগবী, কুরতুবী, কবীর, রুহুল বয়ান, আবী সাউদ, বাইযাবী, দূররে মানছূর, জালালাইন, কামলালাইন, তাবারী, লুবাব, নাযমুদ দুরার, মাদারিক)।
পবিত্র লাইলাতুম মুবারাকাহ দ্বারা যে পবিত্র শবে বরাত উনাকে বুঝানো হয়েছে উহার যথার্থ প্রমাণ পবিত্র সূরা দু’খান উঁনার ৪ নাম্বার আয়াত শরীফ فِيهَا يُفْرَقُ كُلُّ أَمْرٍ حَكِيمٍ। এই পবিত্র আয়াত শরীফ উঁনার يُفْرَقُ (ইয়ুফরাকু) শব্দের অর্থ ফায়সালা করা। প্রায় সমস্ত তাফসীর শরিফে সকল মুফাসসিরীনে কিরামগণ يُفْرَقُ (ইয়ুফরাকু) শব্দের তাফসীর করেছেন ইয়ুকতাবু অর্থাৎ লেখা হয়, ইয়ুফাছছিলু অর্থাৎ ফায়সালা করা হয়, ইয়ুতাজাও ওয়াযূ অর্থাৎ বন্টন বা নির্ধারণ করা হয়, ইয়ুবাররেমু অর্থাৎ বাজেট করা হয়, ইয়ুকদ্বিয়ু অর্থাৎ নির্দেশনা দেওয়া হয়। কাজেই ইয়ুফরাকু উঁনার অর্থ ও উহার ব্যাখার মাধ্যমে আরো স্পষ্টভাবে বুঝা যায় যে, লাইলাতুম মুবারাকাহ দ্বারা শবে বরাত বা ভাগ্য রজনীকে বুঝানো হয়েছে। যেই রাত্রিতে সমস্ত মাখলুকাতের ভাগ্যগুলো সামনের এক বছরের জন্য লিপিবদ্ধ করা হয়, আর সেই ভাগ্যলিপি অনুসারে পবিত্র রমাদ্বান মাসের পবিত্র লাইলাতুল ক্বদর বা পবিত্র শবে ক্বদর উঁনার রাত্রে তা চালু হয়। এজন্য পবিত্র শবে বরাত উঁনাকে লাইলাতুত্ তাজবীজ অর্থাৎ পবিত্র ফায়সালার রাত্র এবং পবিত্র শবে ক্বদরকে লাইলাতুল তানফীয অর্থাৎ নির্ধারিত ফায়সালার কার্যকরী করার রাত্র বলা হয়। (তাফসীরে মাযহারী, তাফসীরে খাযীন, তাফসীরে ইবনে কাছীর, বাগবী, কুরতুবী, রুহুল বয়ান, লুবাব)
মহাসম্মানিত পবিত্র আল কোরআন উল কারিম উঁনার থেকেঃ- সুতরাং মহান আল্লাহ পাঁক তিঁনি যে সুরা দু’খান শরীফ উঁনার মধ্যে বলেছেন, “আমি বরকতময় পবিত্র রজনীতে মহাসম্মানিত পবিত্র আল কোরআন উল কারিম উঁনাকে নাযিল করেছি” এর ব্যাখ্যামুলক অর্থ হলোঃ “আমি বরকতময় পবিত্র রজনীতে মহাপবিত্র আল কোরআন উল কারিম উনাকে নাযিলের ফায়সালা করেছি”। আর পবিত্র সুরা ক্বদর শরীফ উঁনার মধ্যে “আমি পবিত্র লাইলাতুল ক্বদর উঁনার পবিত্র রজনীতে আল কোরআন উল কারিম নাযিল করেছি” এর ব্যাখ্যামুলক অর্থ হল “আমি পবিত্র ক্বদর উঁনার পবিত্র রজনীতে আল কোরআন উল কারিম নাযিল করেছি” অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাঁক তিঁনি পবিত্র শবে বরাত উঁনার রাত্রে মহাপবিত্র আল কোরআন উল কারিম উঁনাকে নাযিলের সিদ্ধান্ত নেন এবং পবিত্র শবে ক্বদর উঁনার রাত্রে তা নাযিল করেন।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উঁনার থেকেঃ- পবিত্র হাদীছ শরীফ উঁনার মধ্যেও পবিত্র শবে বরাত উঁনার সমর্থন পাওয়া যায়। যেমন পবিত্র হাদীছ শরীফ উঁনার মধ্যে ইরশাদ মোবারক হয়েছে, “উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উঁনার থেকে বর্ণিত আছে। একদা মহান আল্লাহ পাঁক উঁনার হাবীব হুযুর পাঁক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিঁনি বললেন, হে হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম! আপনি কি জানেন, পবিত্র লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান বা পবিত্র শবে বরাতে কি সংঘটিত হয়? তিঁনি বললেন, হে মহান আল্লাহ পাঁক উঁনার হাবীব হুযুর পাঁক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এ রাত্রিতে কি কি সংঘটিত হয়? (উত্তরেঃ) মহান আল্লাহ পাঁক উঁনার হাবীব হুযুর পাঁক ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিঁনি বললেন, এ রাতে আগামী এক বছরে কতজন সন্তান জম্মগ্রহণ করবেন এবং কতজন লোক মৃত্যূবরণ করবেন তা লিপিবদ্ধ করা হয়। আর এ পবিত্র রজনীতে বান্দার (এক বছরের) আমলসমূহ মহান আল্লাহ পাঁক উঁনার নিকট পেশ করা হয় এবং এ রাতে বান্দার (এক বছরের) রিযিকের ফায়সালা হয়”।
দলিল – (বাইহাক্বী শরীফ, ইবনে মাজাহ্ শরীফ, মিশকাত শরীফ)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উঁনার মধ্যে আরও ইরশাদ মোবারক হয়েছে, “উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উঁনার থেকে বর্ণিত আছে। তিঁনি বলেন, একদা মহান আল্লাহ পাঁক উঁনার হাবীব হুযুর পাঁক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উঁনার সাথে কোন এক রাত্রিতে রাত্রিযাপন করছিলাম। এক সময় উনাকে বিছানায় না পেয়ে আমি মনে করলাম যে, তিঁনি হয়ত অন্য কোন উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উঁনাদের হুজরা শরীফ এ তাশরীফ মোবারক নিয়েছেন। অতঃপর আমি তালাশ করে উনাকে জান্নাতুল বাক্বীতে পেলাম। সেখানে তিঁনি উম্মতের জন্য মহান আল্লাহ পাঁক উঁনার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছেন। এ অবস্থা দেখে আমি স্বীয় হুজরা শরীফ এ ফিরে এলে তিঁনিও ফিরে এলেন এবং বললেনঃ আপনি কি মনে করেন মহান আল্লাহ পাঁক উঁনার হাবীব হুযুর পাঁক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপনার সাথে আমানতের খিয়ানত করেছেন? আমি বললামঃ ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি ধারনা করেছিলাম যে, আপনি হয়তো আপনার অন্য কোন উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উঁনাদের হুজরা শরীফ-এ তাশরীফ নিয়েছেন। অতঃপর হুযুর পাঁক ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিঁনি বললেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাঁক তিঁনি পবিত্র শা’বান মাস উনার ১৫ তারিখ রাত্রিতে পৃথিবীর আকাশে অবতরণ করেন অর্থাৎ রহমতে খাছ নাযিল করেন। অতঃপর তিঁনি বণী কালবের মেষের গায়ে যত পশম রয়েছে তার চেয়ে বেশী সংখ্যক বান্দাকে ক্ষমা করে থাকেন”। দলিল – (বুখারী শরীফ, তিরমিযী শরীফ, ইবনে মাযাহ শরীফ, রযীন শরীফ, মিশকাত শরীফ)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উঁনার মধ্যে আরও ইরশাদ মোবারক হয়েছে, যে “হযরত আবু মুসা আশয়ারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিঁনি বর্ননা করেন, মহান আল্লাহ পাঁক উঁনার হাবীব হুযুর পাঁক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিঁনি বলেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাঁক তিঁনি পবিত্র শা’বান মাস উঁনার ১৪ তারিখ রাত্রিতে ঘোষনা করেন যে, উঁনার সমস্ত মাখলুকাতকে ক্ষমা করে দিবেন। শুধু মুশরিক ও হিংসা-বিদ্বেষকারী ব্যতীত।” দলিল – (ইবনে মাযাহ্ শরীফ, আহমদ শরীফ, মিশকাত শরীফ)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উঁনার মধ্যে আরও ইরশাদ মোবারক হয়েছে, “হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম তিঁনি বর্ননা করেন, মহান আল্লাহ পাঁক উঁনার হাবীব হুযুর পাঁক ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিঁনি বলেন, যখন অর্ধ শা’বানের রাত তথা শবে বরাত উপস্থিত হবে তখন তোমরা উক্ত রাতে সজাগ থেকে ইবাদত-বন্দেগী করবে এবং দিনের বেলায় রোযা রাখবে। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাঁক তিঁনি উক্ত রাতে সূর্যাস্তের সময় পৃথিবীর আকাশে রহমতে খাছ নাযিল করেন। অতঃপর ঘোষাণা করতে থাকেন, কোন ক্ষমা প্রার্থনাকারী আছো কি? আমি ক্ষমা করে দিব। কোন রিযিক প্রার্থনাকারী আছো কি? আমি তাকে রিযিক দান করব। কোন মুছিবগ্রস্ত ব্যক্তি আছো কি? আমি তার মুছিবত দূর করে দিব। এভাবে সুবহে ছাদিক পর্যন্ত ঘোষাণা করতে থাকেন।” দলিল – (ইবনে মাযাহ্ শরীফ, মিশকাত শরীফ, মিরকাত শরীফ)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উঁনার মধ্যে আরও ইরশাদ মোবারক হয়েছে, “মহান আল্লাহ পাঁক উঁনার হাবীব হুযুর পাঁক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিঁনি বলেন, যে ব্যক্তি পবিত্র শা’বানের মধ্য রাতে (শবে বরাত) ইবাদত করবে তারই জন্য সুসংবাদ এবং তার জন্য সমস্ত কল্যাণ” পবিত্র হাদীছ শরীফ উঁনার মধ্যে আরও ইরশাদ মোবারক হয়েছে, “মহান আল্লাহ পাঁক উঁনার হাবীব হুযুর পাঁক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিঁনি বলেন, যে ব্যক্তি দুই ঈদের রাতে এবং অর্ধ শা’বানের রাত তথা শবে বরাতের রাতে জাগ্রত থেকে ইবাদত করবে, সে ব্যক্তির অন্তর ঐদিন মরবে না বা পেরেশান হবে না যে দিন সকলের অন্তর পেরেশান থাকবে।” দলিল – (মুকাশাফাতুল কুলুব)
শবে বরাতের রাতে দোয়া কবুল প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উঁনার মধ্যে আরও ইরশাদ মোবারক হয়েছে, যে “মহান আল্লাহ পাঁক উঁনার হাবীব হুযুর পাঁক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিঁনি বলেন, পাঁচটি রাত এমন রয়েছে যেগুলোতে দোয়া করলে তা রদ বা বাতিল হয়না ।
(১) পবিত্র পহেলা রজবের রাত
(২) পবিত্র শা’বানের মধ্য রাত তথা শবে বরাত
(৩) পবিত্র জুমুয়ার রাত
(৪) পবিত্র পবিত্র ঈদুল ফিতরের রাত
(৫) পবিত্র পবিত্র ঈদুল আযহার রাত।” দলিল (দায়লামী শরীফ)
শবে বরাতের রাতে দোয়া কবুল প্রসঙ্গে অন্য হাদীছ শরীফ এ ইরশাদ হয়েছে, “মহান আল্লাহ পাঁক উঁনার হাবীব হুযুর পাঁক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিঁনি বলেন, নিশ্চয়ই দোয়া বা মুনাজাত পাঁচটি রাতে কবুল হয়ে থাকে ।
(১) পবিত্র পহেলা রজবের রাত
(২) পবিত্র শা’বানের মধ্য রাত তথা শবে বরাত
(৩) পবিত্র ক্বদরের রাত
(৪) পবিত্র পবিত্র ঈদুল ফিতরের রাত
(৫) পবিত্র পবিত্র ঈদুল আযহার রাত। দলিল – (মা ছাবাত বিস্ সুন্নাহ, গুনইয়াতুত্ ত্বালিবীন, মুকাশাফাতুল কুলুব)
সুতরাং কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ এর উপরোক্ত বর্ণনা দ্বারা অকাট্যভাবেই প্রমাণিত যে, শবে বরাত কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত।"
আশা করি ধৈয্য নিয়ে পাঠ করে বুঝে তথ্য প্রমাণ সহ উত্তর দিয়ে বাধীত করবেন।
০১ লা জুন, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৮
সোহান চৌধুরী বলেছেন: ওটা লাইলাতুল কদরকে বোঝানো হয়েছে। ভালো করে কোরআন স্টাডি করেন।
০১ লা জুন, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৭
সোহান চৌধুরী বলেছেন: শবে বরাত সম্পর্কে বিশ্ব বরেণ্য আলেম শায়খ আবদুল আযীয আবদুল্লাহ বিন বায রাহিমাহুল্লাহ এর প্রবন্ধ -
حكم الاحتفال بليلة النصف من شعبان للشيخ عبد العزيز بن عبد الله بن باز رحمه الله
‘মধ্য শাবানের রাত উদযাপনের বিধান’ এর সার-সংক্ষেপ তুলে ধরব। তার এ প্রবন্ধে অনেক উলামায়ে কিরামের মতামত তুলে ধরা হয়েছে।
তিনি বলেছেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেনঃ
اليوم أكملت لكم دينكم وأتممت عليكم نعمتي ورضيت لكم الإسلام دينا. (المائدة : ৩)
অর্থঃ আজ আমি তোমাদের দীনকে তোমাদের জন্য পূর্ণাঙ্গ করলাম ও তোমাদের জন্য আমার নেআমাত সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দীন হিসাবে মনোনীত করলাম। (সূরা আল - মায়িদা: ৩)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেনঃ
أم لهم شركاء شرعوا لهم من الدين ما لم ياذن به الله.(الشورى : ২১)
অর্থঃ তাদের কি এমন কতগুলো শরীক আছে যারা তাদের জন্য ধর্মের এমন বিধান দিয়েছে যার অনুমতি আল্লাহ দেননি? (সূরা আশ শুরা: ২১)
হাদীসে এসেছেঃ
عن عائشة رضى الله عنها عن النبي صلى الله عليه وسلم أنه قال : من أحدث في أمرنا هذا ما ليس منه فهو رد.
(رواه البخاري ومسلم)
অর্থঃ যে আমাদের এ ধর্মে এমন কিছুর প্রচলন করবে যা ধর্মের মধ্যে ছিল না তা প্রত্যাখ্যাত হবে। (বুখারী ও মুসলিম)
হাদীসে আরও এসেছেঃ
عن جابر رضى الله عنه أن النبى صلى الله عليه وسلم كان يقول في خطبة يوم الجمعة : أما بعد فإن خير الحديث
كتاب الله وخير الهدى هدى محمد صلى الله عليه وسلم وشر الأمور محدثاتها وكل بدعة ضلالة.
(رواه مسلم
অর্থঃ সাহাবী জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম জুমু‘আর খুতবায় বলতেনঃ আর শুনে রেখ! সর্বোত্তম কথা হল আল্লাহর কিতাব ও সর্বোত্তম পথ-নির্দেশ হল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পথ-নির্দেশ। আর ধর্মে নতুন বিষয় প্রচলন করা হল সর্ব নিকৃষ্ট বিষয়। এবং সব ধরনের বিদআতই পথভ্রষ্টতা। (সহীহ মুসলিম)
এ বিষয়ে অনেক আয়াতে কারীমা ও হাদীস রয়েছে যা থেকে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহ তা‘আলা ইসলাম ধর্মকে পরিপূর্ণ করে দিয়েছেন। আর নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে কোন রকম অলসতা করেননি বা কার্পণ্যতা দেখাননি। ইসলাম ধর্মের সকল খুটিনাটি বিষয় তিনি স্পষ্টভাবে তাঁর উম্মতের সামনে বর্ণনা করে গেছেন যা আজ পর্যন্ত সুরক্ষিত রয়েছে।
৩| ০১ লা জুন, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৯
জুলহাস খান বলেছেন: সুরা দুখানের লাইলাতুম মুবারকা বলতে শবে বরাতকে বোঝানো হয়নি। না জেনে ফতোয়া দিবেন না। ‘লাইলাতুন নিস্ফ মিন শাবান’ শব্দটি হাদিছে আছে। তবে রসূল (স) আমাদের মতো বরাত পালন করেন নি। বরাত শব্টি কুরআন হাদীসে কোথায়ও নেই।
৪| ০১ লা জুন, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৪
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: @ জুলহাস খান, শব’ ফারসি শব্দ। অর্থ রাত বা রজনী। বরাত শব্দটিও মূলে ফারসি। অর্থ ভাগ্য। দু’শব্দের একত্রে অর্থ হবে, ভাগ্য-রজনী। বরাত শব্দটি আরবি ভেবে অনেকেই ভুল করে থাকেন। কারণ ‘বরাত’ বলতে আরবি ভাষায় কোন শব্দ নেই।
আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয়ই আমি কোরআন অবতীর্ণ করেছি বরকতময় রাতে। নিশ্চয়ই আমি সতর্ককারী। এই রাতে হেকমতপূর্ণ সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত করা হয়।’ (সুরা দুখান, আয়াত ২-৩) কোরআনের ব্যাখ্যাকারদের অনেকে আয়াতে উল্লিখিত "লাইলাতুম মুবারকা" ‘লাইল’ এর অর্থ শবেবরাত বলেছেন।
রসুল (সঃ) আমাদের মতো শবে বরাত পালন না করলেও এক রাতে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) নামাজ পড়তে দাঁড়ালেন। তাঁর সেজদা এতই দীর্ঘ হল যে আমার মনে হল তিনি নিষ্প্রাণ হয়ে পড়েছেন। অবস্থা এমন মনে হওয়ার আমি উঠলাম কিন্তু (পরক্ষণে) তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলির সঞ্চালন অনুভব করলাম এবং তাঁর নড়াচড়াও পেলাম। তাই আমি শুয়ে পড়লাম।তারপর তিনি যখন সেজদা থেকে মাথা তুললেন এবং নামাজ শেষ করলেন তখন বললেন, “আয়েশা, তুমি কি মনে করেছিলে আমি অন্য কোথাও চলে গেছি?” আমি বললাম, “তা নয়, হে আল্লাহর রাসূল। তবে আপনার সেজদার দীর্ঘতার কারণে মনে হয়েছিল আপনার প্রাণ-বায়ু বেরিয়ে গেল কিনা।” তিনি বললেন, “তুমি কি জান আজ কোন রাত?” আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই অধিক অবগত। তিনি বললেন, “আজ মধ্য শাবানের রাত। মহান আল্লাহ এই মধ্য শাবানের রাতে তাঁর বান্দাদের দিকে মনোনিবেশ করেন এবং যারা তাঁর মার্জনা চায় তাদেরকে মার্জনা করেন, আর যারা তাঁর রহমত প্রত্যাশা করে তিনি তা তাদেরকে দান করেন। তবে হিংসা বিদ্বেষীরা যেভাবে আছে তাদেরকে সেভাবেই রেখে দেন।” বর্ণনায়, আয়েশা বিনত আবি বাকর (রা.)। ((বাইহাক্বী বলেন, “হাদিসটি উত্তম মুরসাল।” [মুরসাল হচ্ছে এমন হাদিস যার সনদে/সূত্রে শেষের দিকে কেউ বাদ পড়েছেন।] বাইহাক্বী প্রণীত, শুয়াবুল ঈমান, ৩/১৪০/৫ ))
আল্লাহ আমাদের নেক আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন
০১ লা জুন, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০১
সোহান চৌধুরী বলেছেন: আপনি যে হাদিসটি পেশ করলেন এটা মূলত যইফ। এর উপর আমল করা যাবে না। তাছাড়া আপনাদের ভাষ্যমতে শবে বরাতেই যদি এত কিছু হয় তাহলে শবে কদরের তাত্পর্য কি?
৫| ০১ লা জুন, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৯
জুলহাস খান বলেছেন: নূর মোহাম্মদ নূরু ভাই তাহলে কি রসূল (স) এর বানী সমূহ ফারসী বর্ণিত হয়েছে। সব আরবী তে হলেও এই ইবাদতটি ফারসীতে বর্নিত হলো কেন?
৬| ০১ লা জুন, ২০১৫ রাত ৮:০১
জুলহাস খান বলেছেন: দয়া করে বলবেন কি লাইল অর্থ শবে বরাত হলো কি করে?
৭| ০১ লা জুন, ২০১৫ রাত ৮:৪৭
বরফের গরম বলেছেন: শবে বরাত। তর্ক বিতর্ক চলছেই চলবে। শেষ হবে না। আমাদের উপমহাদেশে নয় শুধু সারা দুনিয়াতেই কিছু নিকৃষ্ট মানুষ আছেই। শবে বরাতের কথা একটু পরে বলেন। চলেন দেওয়ানবাগীর কাছে যাই। এই দেওয়ানবাগীর লক্ষ লক্ষ ভক্ত আছে। এই ভক্তকূলকে কোনোদিনও বোঝানো যাবে না দেওয়ানবাগী কি জিনিস। গতকাল দেশের উচ্চ ইসলামীক সংস্থা ফতোয়া দিয়ে দিয়েছে চেয়ারে বসে নামাজ পড়া যাবে না। আবার জামাতে ইসলামি (বাংলাদেশ ও পাকি) রাজনীতি করে অন্যের মাথা না ফাটালে বেহেস্ত মিলবে না। "দোলনা হইতে কবর পর্যন্ত বিদ্যা অর্জন কর"। তেতূল শফি বলে ৪-৫ কেলাশ পর্যন্ত পরার পর আর লেখা পড়ার দরকার নাই। সৌদী আরবের সাথে মিল রেখে রোজা এং ঈদ চালু হয়েছে অনেক আগেই।
শবে বরাত, মাজার পূজা, ইত্যাদি উপমহাদেশে ছিল ও থাকবে। এই সকল মানুষ আর পশুতে শুধু ঐ ল্যজটাই পার্থক্য। ডানে বায়ে একটুও চিন্তা করে না। লাইলাতুল ক্বদর নামে একটি আলাদা সুরাই রয়েছে। যেখানে ১১৪টি সুরার মধ্যে ১টি সুরা ঐ একটি রাতের জন্য। কিন্তু সেই রাতটি নির্ধারিত নয়। ২১, ২৩ ...২৯ বেজোড় রাত্রির যে কোনো ১ রাত। ক্বদরের রাতকেও খুজে নিতে বলেছে। সেখানে আমরা ১৪ই শাবানকে কিভাবে পাই?
বাংলাদেশ ইন্ডিয়া ও পাকির বর্তমানে এমন দূরবস্থা কেন? ১২টি মাস আকাম কুকাম করার সময় হুশ থাকে না। তারপর কেউ হজ্বে যায়, কেউ শবে বরাত পায়। গত ১ বছরের আকাম কুকামের দাগ পরিস্কার হয়ে গিয়ে বেহেস্তে যাওয়ার উপযুক্ত হয়ে রেডি হয়ে যাই।
৮| ০১ লা জুন, ২০১৫ রাত ৮:৫৪
বরফের গরম বলেছেন: নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: ... রসুল (সঃ) আমাদের মতো শবে বরাত পালন না করলেও এক রাতে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) নামাজ পড়তে দাঁড়ালেন। হাসবো না কাদবো বুঝতেছি না। রাসুল (সা) আমাদের মত পালন করে নাই। তো, আমরা কি রাসুল সা: যা করেছেন, যা শিখিয়েছেন হুবহু তাই করবো, নাকি কম বেশী করবো?
০১ লা জুন, ২০১৫ রাত ৯:৩৮
সোহান চৌধুরী বলেছেন: এই সাধারণ ব্যাপারটাই তো এদের মাথায় ঢুকানো যাচ্ছে না।
৯| ০১ লা জুন, ২০১৫ রাত ৯:০৩
মুদ্দাকির বলেছেন:
পড়ব
১০| ০১ লা জুন, ২০১৫ রাত ৯:৩৯
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: @জুলহাস খান- বরাত শব্দটি কোরআনে নেই। কথা সত্য!
নামাজের কথাও কিন্তু েকারআনে নেই। নামাজ পড়া ছেড়ে দিবেন কি?
@ লেখক আপনি খুব অহমিকা আর হামবড়ি প্রদর্শন করছেন। যা আপনার মুসলমানিত্ব পরিচয়কেই বিলীন করে দেয়। আপনি বড়পীর আবদুল কাদের জিলানী রহ: কে বলেছেন তেলাপোকা সাইজের!!! ছিঃ আপনার জ্ঞান এবং চিন্তা কতটা নীচু! আপনি তার পায়ের ধূলার যোগ্যওতো নন!
আর যেই বাজের...শায়খ আবদুল আযীয আবদুল্লাহ বিন বাযের রেফারেন্স দিচ্ছে তারা কি তা আগে ভাল করে জানুন!!
তাদের ফতোয়া দেখলে সুস্থ মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে! তারা স্রেফ ক্ষতার জন্য ইহুদীর দালালী পায়রবি করে। যা সরাসরি কোরআনে বিরোধী! কোরআনে স্পষ্ট বলা আচে নিশ্চয়ই তারা ইসলামের শত্রু! অথচ তাদের সাথে চুক্তি করে তারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাচ্ছে! সুতরাং আগে সুস্থ বোধের মানুষ হোক পরে না হয় ইসলাম আর মুসলমানিত্ব নিয়ে ভাববেন..
""
বিন বাজ: এজিদ ছিল সত্যপন্থী আর ইমাম হুসাইন রাদ্বিআল্লাহু আনহু ছিলেন অন্যায়কারী। কারবালায় অন্যায়কারীকে পরাজিত ও হত্যা করা হয়েছে। (Click This Link)
বিন বাজ: ইরাকের বিরুদ্ধে জিহাদ। এই জিহাদ সবার জন্য ফরজ। যারা এই জিহাদে আছে, তারা বন্ধু, তাদের সহায়তা করা ফরজ (মার্কিন ইত্যাদি)। মার্কিন ইত্যাদি সৈন্যকে সৌদি রাজত্বে রাখা সম্পূর্ণরূপে প্রয়োজনীয় এবং ফরজ। সন: ১৯৯১ (বিন বাজ মৃততুশয্যায়ও বারবার অনুরোধের প্রেক্ষিতেও এই ফতোয়া ফিরিয়ে নেননি।)
আল মুনাজিদ: ইসলামিক আইন অনুসারে মিকি মাউসকে ও টম অ্যান্ড জেরির জেরিকে সর্বাবস্থায় হত্যা করতে হবে। তা বাসায় থাক আর কার্টুনে। এরা শয়তানের চামুন্ডা। (মুনাজিদ সাব হইলেন মার্কিন মুল্লুকের ওয়াশিংটন ডিসির সৌদি দূতাবাসের সাবেক কূটনীতিক।)
বিন বাজ: নারীর বুদ্ধি কম। (পল এ মার্শাল, ২০০৫)
দাইশ=ইরাকি আল কায়েদা=আইএস=আইএসআইএস=আইএসআইএল=আবু বকর আল বাগদাদী (বিভিন্ন কনফিউজিং প্রতিনিয়ত নামকরণ হয়েছে ইরাক ও সিরিয়ায় কাজ করা এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর)-
স্ত্রী থেকে দূরে থাকা অবস্থায় পায়ুসঙ্গম জিহাদের সময় বৈধ। (ইসুকারী মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রিচার, প্রয়োগ আইএস এর উপর Click This Link)
নিনেভেহ প্রদেশ মুক্ত হওয়ায় প্রত্যেক বাসার অবিবাহিত নারীদের তাদের পাঠানো উচিত তাদের ভাইদের আনন্দিত করতে। যারাই আদেশ লঙ্ঘন করবে শরিয়াহ্ আইন তাদের উপর প্রযোজ্য। (Click This Link)
রমজান মাসে বিদদুত বন্ধ করার ফতোয়া দেয় আইএস শুধু এই অজুহাতে যে, রাসূল দ. ১৪০০ বছর আগে তড়িৎ বিহীন যুগে রোজা রাখতেন। (Click This Link)
পাঁচটি ফতোয়া- আল কামিশলি শহরের সমস্ত খাদ্য ও বস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ জিহাদি ভাইদের অধিকারে যাবে। স্বর্ণ ও রৌপ্য যোদ্ধারা নিবে কারণ এটা তাদের অর্জিত সম্পদ। সমস্ত বিনোদনের ব্যবস্থা ও সিগারেট বিক্রির দোকান সম্পূর্ণ ধ্বংস করার আগে আগুন দেয়া হবে। খ্রিস্টান, কুর্দ ও আল খাজনাভিদের বের করে দাও অথবা হত্যা করো। তাদের নারীরা তোমাদের। এই নির্দেশ আল্লাহর ইচ্ছায় পরবর্তী শহরগুলোতেও জারি থাকবে। (Click This Link)
১১-৪৬ বছর বয়সী সকল নারীর খতনা করতে হবে। (এই আদেশের পক্ষে অসংখ্য প্রমাণ এসেছে, বিপক্ষেও অনেক তথ্য এসেছে। এই আদেশ জারি হয়ে থাকলে তা ৪ কোটি নারীর উপর পড়ছে।)
আসলে আইএস এর আরো অসংখ্য ফতোয়া আছে। এইসব বীভৎস ফতোয়া ঘেঁটে বের করা নার্ভের উপর চরম চাপের বিষয়। যেমন, সারা পৃথিবীর সমস্ত মুসলমানের ফরজ হল খলিফাকে মানা। তাদের উপর ফরজ, ইসলামিক স্টেটে চলে আসা। যারাই আসবে না, তারাই পথভ্রষ্ট এবং শাস্তি পাবে। সবার উপর ফরজ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ নয় এমন মা বোনকে তাদের হাতে তুলে দেয়া। জামাতেস্লামী, বাংলাদেশের হেজবুত তওহীদ বা এ ধরনের অসংখ্য আল কায়েদা টায়েদার অসংখ্য বিবমিষাকর ফতোয়া রয়েছে যা উল্লেখ করতে যাওয়াও রীতিমত শারীরিক কষ্টের বিষয়।
বিন বাজ: সাদ্দাম হুসাইন কাফের। (Click This Link)
রোজায় মাস্টারবেশনে রোজা ভাঙে না। নবীকে অপমান করলে কেউ কাফির হয় না। নারীদের জন্যও স্বর্ণ হারাম। (নাসিরুদ্দিন আলবানী, সৌদি 'মুজাদ্দিদ')
মুলতাকা আহলে হাদীস: ইমোটিকন হারাম। (হারামই যদি, তো ছবি তোলাই হারাম। সব গ্র্যান্ড মুফতি থেকে শুরু করে পাতি মুফতি পর্যন্ত টিভিতে দৌড়ায়। এমনকি ইরাক-লেভ্যান্টের তাকফিরিরাও তাদের খলিফাকে ভিডিওতে দেখাচ্ছে।)
সৌদি গ্র্যান্ড মুফতি: সত্যিকার মুসলিম টুইট করে না! (উল্লেখ্য, সৌদি প্রিন্স আলাউদ্দিন বিন তালাল ওই মুরগি যে কিনা টুইটারের মাত্র ৩.৬% শেয়ার কিনেছে ৩০০ মার্কিন ডলারে)
সিরিয়ায় জিহাদি রা পর্যায়ক্রমে সিরিয়ান ১৪ বছর বা তদুর্দ্ধ মহিলা, স্বামীহীন এবং তালাকপ্রাপ্তা- এদের সাথে কয়েক ঘন্টার ইন্টারকোর্স ম্যারেজে আবদ্ধ হতে পারে। (আল আরিফি, সৌদি মুফতি। https://www.youtube.com/watch?v=6Qvo4_hMrF4)
যুদ্ধক্ষেত্রে আপন বোনের সাথেও যৌন জিহাদ চালনা করা যাবে আর কাউকে না পেলে। (নাসের আল উমার, সউদি... এ নিয়ে ভিডিও প্রচারণাও করা হয়েছে।) "" আরো বিস্তারিত জানতে..
হাস্যকর ও অমানবিক কিছু সৌদি-সালাফি-আহলে হাদীস ফতওয়া এবং প্রাসঙ্গিক আলোচনা
এইবার ভাবেন- কাদের অন্ধ ভাবে অনুসরন করছেন!!! ইসলাম কোন অন্ধের ধর্ম নয়। ইসলাম কোন ব্যক্তি বা গোত্রের স্বেচ্ছাচারের স্থান নয়। কাউকে লেবাস দেখে অনুসরনের ধর্ম নয়। এটা মুক্ত চিন্তার, উন্মুক্ত হহুদয়য়ের, জ্ঞান আর সত্যের ধর্ম।
আপনার শায়েখ বাজ গংদের নোংরামী দেখার শোনার জানার পরও যদি অন্ধ থাকেন সে দায় একান্তই আপনার।
আল্লাহ সত্য পথের সন্ধান দান করুন।
১১| ০২ রা জুন, ২০১৫ সকাল ৮:৩৯
অস্তমিত সুর্য বলেছেন: শবে বরাতের ফযীলত সংক্রান্ত কিছু হাদী
(১)হযরত মুআয ইবনে জাবাল ( রাদিয়াল্লাহু
তাআলা আনহু ) বলেন, রাসূলে করীম
( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম )
এরশাদ করেছেন, আল্লাহ তাআলা অর্ধ
শাবানের রাতে ( শাবানের চৌদ্দ তারিখ
দিবাগত রাতে ) সৃষ্টির দিকে ( রহমতের )
দৃষ্টি দেন এবংগ মুশরিক ও বিদ্বেষ
পোষণকারী ব্যতীত সবাইকে ক্ষমা করে দেন।
(২)হযরত আয়েশা সিদ্দীক ( রাদিয়াল্লাহু
তাআলা আনহা ) বর্ণনা করেন, মহানবী
( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম )
আমাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, হে আয়েশা!
তুমি কি জান? আজ রাত ( নিসাফে শাবান )
কী? হযরত আয়েশা ( রাদিয়াল্লাহু তাআলা
আনহা ) বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি তো
জানি না, দয়া করে বলুন। মহানবী
( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম )
বললেন, আজ রাতে আগামী বছরে যে সমস্ত
বনী আদম জমীনের বুকে জন্মগ্রহণ করবে এবং
যারা মৃত্যুবরণ করবে, তাদের তালিকা
লিপিবদ্ধ করা হয়। বিশেষ করে বান্দাদের
আমলনামা মহান আল্লাহর নিকট প্রকাশ করা
হয়।
#
হযরত আয়েশা ( রাদিয়াল্লাহু তাআলা
আনহা ) থেকে বর্ণিত অপর একটি হাদীসে
মহানবী ( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম ) বলেন, আমি এক রাতে মহানবী
( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ঔয়া সাল্লাম )-কে
বিছানায় পেলাম না। তাই আমি অত্যন্ত
পেরেশান হয়ে খোঁজাখুঁজি আরম্ভ করলাম।
খুঁজতে খুঁজতে দেখি, তিনি জান্নাতুল বাকীর
মধ্যে মহান আল্লাহর প্রার্থনায় মগ্ন। তখন
তিনি আমাকে লক্ষ্য করে বললেন, হে
আয়েশা! আমার নিকট হযরত জিবরাইল
( আলাইহি ওয়া সাল্লাম ) উপস্থিত
হয়েছিলেন। তিনি বলেছেন, আজ রাত হল
নিসফে শাবান ( অর্থাৎ, লাইলাতুল
বারাআত )। এ রাতে আল্লাহ তাআলা অধিক
পরিমাণে জাহান্নামবাসী লোকদেরকে
জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। এমনকি কালব
বংশের বকরীগুলোর লোম সমপরিমাণ
গুনাহগার বান্দা হলেও। ( মিশকাত শরীফ-১১৫
পৃ )
(৩)হযরত আলী ( রাদীয়াল্লাহু তাআলা আনহু )
থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ( সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম ) বলেছেন,পনেরো
শাবানের (চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাত) যখন
আসে, তখন তোমরা রাতটি ইবাদত বন্দেগীতে
কাটাও এবং দিনে রোযা রাখ। কেননা এ
রাতে সূর্যাস্তের পর আল্লাহ তাআলা প্রথম
আসমানে আসেন এবং বলেন, কোন ক্ষমা
প্রার্থনাকারী আছে কি? আমি তাকে ক্ষমা
করবো। আছে কি কোন রিযিকপ্রার্থী? আমি
তাকে রিযিক দিব। এভাবে সুবহে সাদিক
পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা মানুষের প্রয়োজনের
কথা বলে তাদেরকে ডাকতে থাকেন।
( সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস-১৩৮৪,
বাইহাকী-শুআবুল ঈমান, হাদীস-৩৮২৩ )
১২| ০২ রা জুন, ২০১৫ সকাল ১১:০২
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: অত্র পোস্টের লেখক ও জুলহাস খানের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে,
আমি সত্যিই পবিত্র কোরআন কিংবা হাদিসের ব্যাখ্যা জানিনা, আমি সু্ন্নি মুসলমান,
যাঁরা পবিত্র কোরআ্ন ও হাদিস নিয়ে রিসার্চ করেন, তাঁদের কাছ থেকে যতটুকু জ্ঞান
অর্জন করেছি তা থেকে আমার অদ্যকার লেখা মহিমান্বিত মুক্তির পূণ্যময় রজনী ও দোয়া কবুলের রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত বা শব-ই-বরাত আজ
১৩| ০২ রা জুন, ২০১৫ দুপুর ১:৩১
জুলহাস খান বলেছেন: বিদ্রোহী ভৃগু। ভাই নামাজ পড়ার জিনিস না। আর নামাজ নামে না থাকলেও কোরআনে সালাত (উচ্চারণে হবে সলাহ) নামে বহুবার এসেছে। নামাজ পড়া নয় হবে আদাইস সালাত। আর ইক্বামাতিস সালাত। আমি শবে বরাত কঠোর ভাবে অস্বীকারও করি না। আবার কঠোর ভাবে স্বীকারও করিনা। কারণ শবে বরাত সম্পর্কে যে কয়টা হাদিস বর্ণিত হয়েছে কয়টাই দুর্বল (দয়ীফ)। দুর্বল হাদীছ শরীয়তের কোন বিষয়ের অকাট্য দলিল হয় না। সুতরাং আপনারা যা করছেন বা বলছেন সেটা আমি মনে করি অতিরিক্ত।
নূর মোহাম্মদ নূরু ভাইকে বলছি ‘লাইল’ দ্বারা শবে বরাত বুঝানো হলো কিভাবে বিস্তারিত জানাবেন?
আমরা যে ভাগ্য রজনী বলে থাকি তা কিন্ত কোন সহীহ হাদীস দ্বারাও প্রমাণিত নয়।
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা জুন, ২০১৫ বিকাল ৫:৫২
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: আল্লাহ তায়ালা তাঁর গুনাহগার বান্দাদের ক্ষমা করার জন্য বিভিন্ন স্থান ও সময়-সুযোগ বাতলে দিয়েছেন, যাতে বান্দা নিজ কৃতকর্মে অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা চায়, আর আল্লাহ তায়ালা ক্ষমা করে দেবেন। সেসব সময়ের একটি হলো শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাত, যাকে আমাদের প্রচলিত ভাষায় শবেবরাত বলা হয়। কোরআনে কারিমের ভাষায় একে বলা হয়েছে ‘লাইলাতুম মুবারাকা’ বা বরকতময় রাত, আর হাদিস শরিফে এটি ‘লাইলাতুন নিস্ফ মিন শাবান’ বলে উল্লেখ রয়েছে। আমাদের বর্তমান সমাজে মানুষ এ রাত নিয়ে অনেক প্রান্তিকতার শিকার। একটি দল তা পালনে এ পরিমাণ বাড়াবাড়ি করে যে মসজিদ ও বাড়িঘরে আলোকসজ্জা, কবরে পুষ্প অর্পণ, আতশবাজি, হালুয়া-রুটি ও মিষ্টি বিতরণকেই এ রাতের আমল বানিয়ে নিয়েছে। পক্ষান্তরে এর সম্পূর্ণ বিপরীতে একটি দল উপরোক্ত ভ্রান্ত কাজকর্মের বিরোধিতা করতে গিয়ে শবে বরাতের অস্তিত্বকেই অস্বীকার করে বসেছে এবং তারা এ রাতের কোনো বৈশিষ্ট্যই মানে না; বরং এ রাতের সব কিছুকেই বিদআত বলে থাকে।
আপনি যথার্থ্ই বলেছেন, ইসলামী শরিয়তে বিদ'আত বা কুসংস্কারের কোনো ভিত্তি নেই। তবে শরিয়তে কুসংস্কারের কোনো ভিত্তি না থাকলেও শবে বরাতের একাধিক ফজিলত, তাৎপর্য ও বিভিন্ন করণীয় কোরআনে কারিম ও সহিহ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে।
হজরত মুআজ ইবনে জাবাল (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, অর্ধ শাবানের রাতে অর্থাৎ শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টিকুলের প্রতি রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও হিংসুক-বিদ্বেষী লোক ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন। (সহিহ ইবনে হিব্বান, হা. ৫৬৬৫, আল মু’জামুল কাবীর ২০/১০৯, শুআবুল ইমান, হা. ৬৬২৮)।
কুরআন হাদীসের বক্তব্য থেকে জানতে পারি, চৌদ্দই শাবান দিবাগত রাতটি অত্যন্ত বরকতময় মহিমান্বিত এক রজনী। যাকে অবহিত করা হয় শবে বরাত নামে। শব্দটির অর্থ হচ্ছে মুক্তির রজনী। এ রাতে মহান রাব্বুল আলামীন রহমতের দৃষ্টি দেন, দয়ার সাগরে ঢেউ উঠে, মাগফিরাতের দ্বার উম্মোচিত হয় পাপি-তাপি সকল বান্দার জন্য।
হজরত আলী (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘১৫ শাবানের রাত যখন হয়, তোমরা রাতটি ইবাদত-বন্দেগিতে পালন করো এবং দিনের বেলা রোজা রাখো। কেননা এ রাতে সূর্যাস্তের পর আল্লাহ তায়ালা প্রথম আসমানে এসে বলেন, কোনো ক্ষমাপ্রার্থী আছে কি? আমি তাকে ক্ষমা করে দেব।
কোনো রিজিক অন্বেষণকারী আছে কি? আমি তাকে রিজিক প্রদান করব। আছে কি কোনো রোগাক্রান্ত? আমি তাকে আরোগ্য দান করব। এভাবে সুবহে সাদিক পর্যন্ত আল্লাহ তায়ালা মানুষের বিভিন্ন প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করে তাদের ডাকতে থাকেন।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হা. ১৩৮৮)।
আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয়ই আমি কোরআন অবতীর্ণ করেছি বরকতময় রাতে। নিশ্চয়ই আমি সতর্ককারী। এই রাতে হেকমতপূর্ণ সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত করা হয়।’ (সুরা দুখান, আয়াত ২-৩) কোরআনের ব্যাখ্যাকারদের অনেকে আয়াতে উল্লিখিত ‘লাইল’ থেকে শবেকদর উদ্দেশ্য বললেও কয়েকজন ব্যাখ্যাকার এর অর্থ শবেবরাত বলেছেন।
দেওবন্দী কওমীদের অন্যতম মুরুব্বী মাওলানা মাহিউদ্দীন খান তার মাসিক মদীনায় জুলাই/২০১১ এর ৪১পৃষ্ঠায় “আল-কুরআনে শব-ই-বরাত: একটি বিশ্লেষন” শিরোনামে লিখেছে-
সুরা দুখানের লাইলাতুম মুবারকা শব্দের সংখ্যাতাত্ত্বিক বিশ্লেষন করলে দেখা যায় যে, সুরা দুখান কুরআনের ১ম থেকে ৪৪নং সুরা। ৪৪ এর অঙ্কদ্বয়ের সমষ্টি ৪+৪=৮; ৮দ্বারা বুঝায় ৮ম মাস অর্থাৎ শাবান মাসে লাইলাতুম মুবারকা অবস্থিত। আবার কুরআনের শেষ থেকেও সুরা দুখান ৭১ নং সুরা। ৭১ অঙ্কদ্বয়ের সমষ্টি ৭+১=৮, পুনরায় ৮ম মাসের দিকেই ইঙ্গিত করে। আবার এ সুরার প্রথম থেকে ১৪টি হরফ শেষ করে ১৫তম হরফ থেকে লাইলাতুম মুবারকায় কুরআন নাযিল সংক্রান্ত আয়াত শুরু হয়েছে। এটা ইঙ্গিত করে যে, ঐ ৮ম মাসের ১৪ তারিখ শেষ হয়ে ১৫তারিখ রাতেই লাইলাতুম মুবারকা। এই সংখ্যাতাত্ত্বিক বিশ্লেষন প্রমান করে, সুরা দুখানে বর্নিত লাইলাতুম মুবারকা ১৪ই শাবান দিবাগত ১৫ই শাবানের রাত। অর্থাৎ লাইলাতুল বারাআত বা শব-ই-বারাআত। এছাড়া মুফাসিসরীনদের বিশাল এক জামাত দাবী করেছেন, সুরা দুখানে বর্নিত যে রাতকে লাইলাতুম মুবারকা বলা হয়েছে তা অবশ্যই শব-ই-বরাত। (ইমাম কুরতবী, মোল্লা আলী কারী (রহ), বুখারী শরীফের সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষ্যকার হাফিজুল হাদীস আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানী রহ; এবং হাম্বলী মাজহাবের অন্যতম ইমাম বড়পীর আব্দুল কাদির জিলানী রহমাতুল্লাহি সহ আরো অনেকে এ বিষয়ে একমত)
হজরত আয়েশা (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, অর্ধশাবানের রাতের কার্যক্রম হলো, এ বছর যারা জন্মগ্রহণ করবে এবং যারা মারা যাবে তা লিপিবদ্ধ করা হয়। এ রাতেই মানুষের আমল পৌঁছানো হয়। এতেই তাদের রিজিকের বাজেট করা হয়। (ফাজায়েলে আওক্বাত, বায়হাকি, হা. ২৬)।
শবে বরাত এর ফযিলত অস্বীকার করার কোন উপায় নাই, কেননা তার স্বপক্ষে অনেক গুলি হাদীস দেখেছি। তবে শবে বরাতের নির্দিষ্ট কোনো নামাজ নেই। হাজারিকা নামাজ বলতে ইসলামে কিছু নেই। এটি বেদআত। এ রাতে কবর জিয়ারতের বিশেষ ফজিলত রয়েছে। তবে আমাদের দেশে শবে বরাত উপলক্ষে অনেক বেদাআত কাজ হয় যে গুলি থেকে অবশ্যই বেচে থাকতে হবে। আল্লাহ আমাদের নেক আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন