নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগার

সোহান চৌধুরী

লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ

সোহান চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইজেতমা, তাবলীগ জামাত এবং দেশের সরল ও অজ্ঞ মুসলমানদের ভ্রান্তি প্রসঙ্গে কিছু কথা

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪২



প্রশ্নঃ- তাবলীগ জামাতের ইজতেমা কি বিদআত? তাবলীগ জামাত তো ভাল কথাই বলে?
উত্তরঃ- হ্যা, ইজতেমা সম্মেলন একটি জঘন্য বিদআত। তো তাবলীগ জামাতের লোকেরা তো ভাল কথাই বলে, দ্বীনের দাওয়াত দেয়, নামাযের দাওয়াত দেয়, তাহলে তাদের মন্দ কেন বলছেন? এই যুক্তি অনেক সাধারণ মুসলিম ভাই পেশ করেন। এই প্রকার ভাইদের উত্তরে সামান্য কিছু ব্যাখ্যা তুলে ধরলাম, যাতে করে সবাই বুঝতে সক্ষম হয় মন্দটা কোথায়।

১- এতে সন্দেহ নেই যে, নবী মুহাম্মদ (সাঃ) সব চেয়ে বড় ও সত্য মুবাল্লিগ (তাবলীগকারী)। অতঃপর তাঁর সাহাবাগণ যাঁরা সারা বিশ্বে নবী (সাঃ) এর নিয়মে তাবলীগ করে গেছেন।

কিন্তু বর্তমান যুগের তাবলীগ জামাত সেই নবীর ও তাঁর সাহাবাদের তাবলীগ ছেড়ে কয়েক দশক পুর্বে ভারতের সাহারানপুরের ইলয়াস
সাহেবের তৈরি করা বরং স্বপ্নে পাওয়া তাবলীগ নিয়েছেন। নবী (সাঃ) এবং তাঁর সাহাগণের তাবলীগ কি যথেষ্ট নয়? সেটা কি উত্তম তাবলীগ নয়? না এই যুগে তা অচল?

২- নবী (সাঃ) এর তাবলীগের মূল কথা ছিল বরং ইসলামের মূল কথাই হচ্ছে, তাওহীদ। কিন্তু বর্তমান তাবলীগে তাওহীদের দাওয়াত নেই।

৩- নবী (সাঃ) এর তাবলীগে যে বিষয় থেকে সবচেয়ে বেশী সতর্ক করা হয়েছে তা হল, শির্ক থেকে সতর্কতা। ইলইয়াসী তাবলীগে শির্কের কথা বলা হয় না; অথচ দেশের আনাচে কানাচে অহরহ শির্ক ও শির্কের আড্ডা বিদ্যমান।

৪-নবী (সাঃ) এর দাওয়াতের সব চেয়ে বড় অংশ ছিল, মুশরিকদের ইসলামের দাওয়াত দেওয়া। কিন্তু বর্তমান তাবলীগ জামাত মুশরিকদের দেয় না! অথচ তাবলীগ জামাতের জনক ইলিয়াস ও যাকারিয়া সাহেবের দেশ একটি মুশরিক দেশ।

৫-মহান আল্লাহ, পবিত্র কুরআন যদি আমাদের হেদায়েতের জন্য অবতীর্ণ করে থাকেন, তাহলে তা বাদ দিয়ে ফাযায়েলে আমলের শিক্ষা দেয়া হয় কেন? অনুরূপ নবী (সাঃ) এর হাদীস কি উত্তম বাণী নয়, তাহলে এখনও কেন সাধারণ লোককে বলা হবে, এগুলো তোমরা বুঝবে না। মানুষ না বুঝলে এসব কার জন্য অবতরণ করা হয়েছে?

৬- ইসলাম কি শুধু ফযীলতের নাম? সকল বিধানের সব কিছু বাদ দিয়ে শুধু ফাযায়েল বর্ণনা কেমন ইসলাম! ধরুন নামায একটি ইসলামের বিধান। এ সম্পর্কে মোটামুটি যা আছে তা হল, নামায কি, নামাযের গুরুত্ব, নামায ছাড়ার বিধান, নামাযের রুকন, ওয়াজিব ও মুস্তাহাব, নামাযের পদ্ধতি এবং নামাযের লাভ বা ফযীলত। এখানে সব কিছু ছেড়ে দিয়ে শুধু ফযীলত কেন?

৭- যেই তাবলীগের এত প্রসংশা ও ফযীলত বর্ণনা করা হচ্ছে, কিন্তু কখনো চিন্তা করেছেন কি সেই তাবলীগী নেসাবে অযু করা ও নামায পড়ার নিয়ম-পদ্ধতিটাও কেন লেখা নেই? অন্যান্য বিষয়গুলির বর্ণনা তো দূরের কথা।

৮- ইসলামের রুকন ৫টি আর ঈমানের ৬টি, যা হাদীসে জিবরাঈলে বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু এই রকম একটি মৌলিক বিষয় বাদ দিয়ে ৬ উসূল আবিষ্কার কোন্ দলীলের ভিত্তিতে করেছে ইলিয়াসের তাবলীগ জামাত? ইকরামে মুসলিম বা মুসলিমের সম্মানের নামে নীতি তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু সত্য হচ্ছে এখানে কেবল তাবলীগীদেরই সম্মান করা হয়! অন্যদের ছায়াটাও তো তারা দেখতে পছন্দ করেন না!

৯- তাবলীগের জন্য কুরআন সুন্নাহ কি যথেষ্ট নয়? শত শত বানোয়াট কেচ্ছা কাহিনীর আশ্রয় নেয়া হয় কেন? তবুও আবার সেই সব কেচ্ছা যাতে আছে সুফীদের কাশফ, কারামত, স্বপ্ন, ইল্কা, ইলহাম ও ফয়েযের কথা।

১০- শরীয়ার কোন মাসলায় আমীর সাহেব সরাসরি কুরআন-সুন্নাহ থেকে সমাধান না দিয়ে দেওবন্দে পাঠান কেন? এমন তো নয় যে, আপনারা তাবলীগের নামে দেওবন্দের প্রচার-প্রসার করছেন!

১১- আপনারা ফাযায়েলে আমল বইটি একাধিক ভাষায় অনুবাদ করেছেন কিন্তু এখনও আরবী ভাষায় তা অনুবাদ করা হচ্ছে না কেন? আপনাদের মধ্যে আরবী শিক্ষিত ব্যক্তিত্ব নেই? নাকি গুমর ফাঁস হওয়ার ভয়ে করেন না?

১২-মোট কথা নবী (সাঃ) এবং সাহাবাগণের দাওয়াতে তাবলীগই হচ্ছে সহীহ, শুদ্ধ, পূর্ণ তাবলীগ। আর অন্যান্য তাবলীগের অনেকটাই হছে, ভুল, অশুদ্ধ ও অপূর্ণাঙ্গ এবং নতূন তাবলীগ। যেমন ইলিয়াস মেওয়াতীর তাবলীগ জামাত। তাই আমাদের নিকট নবীর (সাঃ) তাবলীগই একমাত্র গ্রহণযোগ্য।

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:৫৫

আহা রুবন বলেছেন: আমরা যারা কম বুঝি তারা এখন কী করি? কোন দিকে যাব, পক্ষে না বিপক্ষে!

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:২৬

সোহান চৌধুরী বলেছেন: আপনি কম বুঝতে যাবেন কেন? জাহান্নাম থেকে বাঁচতে হলে আমাদের সবাইকে দ্বীন বুঝতে হবে ও জানতে হবে। কিভাবে জানবো? কুরআন ও সহীহ হাদিস অনুসরণ করে। কোনো কাঠমোল্লা বা বিদআতি আলেম/দলের কথায় সবকিছু বিশ্বাস না করে আমরা নিজেরা কুরআন ও সহীহ হাদিসের দ্বারা দ্বীন ইসলামের সমস্ত বিষয় যাচাই করবো।

২| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:১৬

একজন সত্যিকার হিমু বলেছেন: তাবলীগ সম্পর্কে অনেক কিছু জানলাম ।ধন্যবাদ ।

৩| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:২৫

মিঃ আতিক বলেছেন: আপনার কথায় লজিক আছে, ধন্যবাদ।

৪| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:৪৮

নতুন নকিব বলেছেন:



প্রিয় ভাই সোহান চৌধুরী,
আপনার পূর্ববর্তী পোস্ট "তাবলীগ জামাতের পিকনিক সমাচার!" এ আমার কমেন্ট মুছে দিয়েছেন। অন্যদের কমেন্টের জবাব না দিয়ে আবার ভিন্ন শিরোনামে এই পোস্ট দিয়েছেন। এই পোস্ট থেকেও আবার কখন হারিয়ে যাবেন কে জানে!

আসলে ভাই, আপনাদের ক্ষেত্রে সমস্যাটা হচ্ছে- সর্ব অঙ্গে ক্ষত, ওষুধ দেব কত?
জেগে জেগে ঘুমালে তাকে জাগাবে কে?
মন-মগজে যাদের ঘূন ধরে যায় তাদের বাহ্যিক আবরন সে যতই সুন্দর সাজানো থাকুক না কেন, আসলতো ফাকা। পঁচন শুরু হয়েছে ভিতর থেকেই। এ রোগ দূর করা দূরুহ। তবু চেষ্টা করুন। হতাশ হবার কারন নেই। উদার মনে কুরআন হাদিস পড়ুন। বর্তমান তাবলীগকে রাসূলে আকরাম সল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম এবং সাহাবীগন রাদিআল্লাহু আনহুম এর তাবলীগের সাথে মিলিয়ে দেখুন। দেখুন। দেখতে থাকুন। এবং আবারও দেখুন। দেখবেন, মিল পাবেন। শুধু শুধু কষ্ট বাড়াচ্ছেন কেন? শুধু শুধু হিংসার অনলে পুড়ে লাভ কী ভাই? আর যদি পারেন, আপনার ক্ষমতা কিংবা সাধ্যে কুলোয়, আপনার যোগ্যতা-বিজ্ঞতা ও পারদর্শীতায় আপনি সক্ষম হন তাহলে হিংসা-বিদ্ধেষ পরিহার করে এই তাবলীগের বিপরীতে একটি নিরেট খাঁটি ভেজালমুক্ত তাবলীগ এক মূহুর্তে বিশ্বময় চালু করে দিন। আমরাও মেওয়াতী তাবলীগ বাদ দিয়ে আপনার নতুন আবিষ্কৃত নির্ভেজাল তাবলীগে যোগদান করে সহীহ তকমা লাগিয়ে নিই। আর যদি না পারেন, আর যদি আপনার শক্তি-সামর্থ্য না থাকে, আপনি অপারগ হন, তাহলে বিভ্রান্তির বেড়াজালে হাবুডুবু খেয়ে, হিংসার দাবানলে জ্বলে-পুড়ে ছাই হয়ে গেলেও দ্বীনের এই অপ্রতিরোধ্য কাফেলাকে রুখতে পারবেন না। বিশ্বময় ছড়িয়ে থাকা মহামহিয়ানের অমোঘ এ বানীর নিশানধারীরা উল্কার গতিতে ছুটতেই থাকবে আল্লাহ পাকের রহমতে। পৃথিবীজুড়ে ইসলামের দাওয়াতি এ ঝান্ডাবাহীগন দিগ-দিগন্তে উড়াতেই থাকবেন ইসলামের পতাকা। জ্বালাতেই থাকবেন সত্যের আলো।

সুতরাং কথা বাড়িয়ে লাভ নেই, অল্পতে বুঝে নিন- সাগরে যখন জোয়ার আসে খরকুটো যেমন তা আটকাতে পারে না, সত্যের আলো, ইসলামের উদীয়মান এ কাফেলাকে রোখার শক্তিও কোন চামচিকা কিংবা বাদুঁরের নেই।

আপনার পয়েন্টগুলো ধরে ধরে উত্তর দেয়া প্রয়োজন মনে করছি না। কারন, আপনার প্রশ্নগুলোই ফালতু।

আপনি আপনার আগের পোস্টে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন। তারপরে হাওয়া হয়ে গেলেন। কমেন্ট মুছে দিলেন। শেষ পর্যন্ত কমেন্টের উত্তর দিতে না পেরে ঘাঁপটি মেরে থাকলেন। এখানেও কি তাই করবেন?

অতএব ভাই, বুঝার ইচ্ছে থাকলে এ কথাগুলো থেকেই চেষ্টা করুন এবং এতেই আপনার হিংসা-দ্বেষ-ভুলের অবসান হবে বলে আশাবাদি।

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ২:৫৬

সোহান চৌধুরী বলেছেন: আমি মোটেও হাওয়া হয়ে যাই নাই। বরং আগের পোস্টে আপনাদের বিদআতিদের যে প্রতিক্রিয়া ছিল তারই জবাবে এই পোস্ট। আর এখানে যে প্রশ্নগুলো রেখেছি সেগুলো উত্তর দেবেন না কেন? আপনাদের সাধ্য থাকলে অবশ্যই উত্তর দিতেন।

৫| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:০২

নতুন নকিব বলেছেন:



@কালীদাস,
পাঠ এবং মন্তব্যে আসায় আন্তরিক অভিনন্দন। প্রথা এবং সত্যের পক্ষে আপনার শক্তিশালী অবস্থান আপনার সততার প্রমান বহন করে।

শ্রদ্ধা রেখে বলছি, এই প্লাটফর্মের পুরাতন সক্রিয়দের মধ্যে আপনি একজন। সঙ্গত কারনে আপনাদের মত বিজ্ঞ-অভিজ্ঞদের থেকে আরেকটু মার্জিত আচরন কি আমরা আশা করতে পারি না? বিষয়টা জাস্ট এরকম, আমরা কারও ভুল ধরিয়ে দিতে গিয়ে নিজে যেন ভুল করে না বসি।

ভাল থাকবেন অহর্নিশ।
আমার নতুন ব্লগ আপনাদের মত গুনীদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত।

৬| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:১০

নতুন নকিব বলেছেন:



প্রিয় সোহান চৌধুরী,
আল্লাহর একত্ববাদকে প্রমান করতে যেমন হাজারো লাখো দলিল-প্রমানের প্রয়োজন হয় না। চক্ষুষ্মান মাত্রেই যেমন এই মহাসত্য উপলব্ধি করতে ভুল করে না; তেমনি বর্তমান জমানায় সারা পৃথিবীজুড়ে তাবলীগে দ্বীনের নামে যে কাজটি চলছে তার ক্ষেত্রেও দলিল -প্রমান উপস্থাপনের প্রয়োজন পরে না। মুসলিম, অমুসলিম নির্বিশেষে আলহামদুলিল্লাহ, বলতে গেলে শান্তিকামী প্রায় সাতশো কোটি মানুষ তাবলীগওয়ালাদের চেনে, জানে এবং শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় কাছে যায়, কাছে টানে। গাঠুরীওয়ালা এই নিবেদিত প্রান বিনয়ী মানুষগুলোকে দেখলেই সবার ভেতরে ভিন্ন এক ভক্তি-সম্মান-মহব্বত জেগে ওঠে। তবে এদেরকে মানতে পারে নি কিছু সংখ্যক ফিতনাবাজ, জ্ঞানপাপী। যারা নিজেদের নামের শেষে আহলে হাদিস যুক্ত করে। এরা মুসলিম নামধারী তথাকথিত আধুনিকতার ধ্বজাধ্বারী।

এদের কাছে সুন্নাত গুরুত্বপূর্ন বিষয় নয়।
এদের কাছে নফলের দাম নেই।
এদের কাছে মাযহাব বিদআত (তবে ইবনে তাইমিয়্যাকে মানলে দোষ নেই)।
এদের কাছে পীর-মুরিদী হারাম।
এদের কাছে ইমাম আবু হানিফা রহ.সহ চার ইমামের প্রত্যেকেই অপদার্থ, অকাঠ, মূর্খ (নাউজু বিল্লাহ)।
এদের কাছে বুখারী শরীফই হাদিসের কিতাব বাকিগুলোর প্রয়োজন নেই।
এদের কাছে সাহাবীগনের অনুসরন প্রয়োজন নেই, (এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য- আল্লাহকে মানুন আর আল্লাহর রাসূলকে মানুন)।
কী সুন্দর কথা! আল্লাহকে মানুন আর আল্লাহর রাসূলকে মানুন! আল্লাহকে মানুন আর আল্লাহর রাসূলকে মানুন!! আল্লাহকে মানুন আর আল্লাহর রাসূলকে মানুন!!! যেন আল্লাহ আর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম কারো সামনেই দাড়িয়ে আছেন, আর দেখে দেখে তাদের মান্য করা সম্ভব! কোন মাধ্যম প্রয়োজন নেই!

দিনের পর দিন পার করে দিলেও এই বিভ্রান্তদের ফিরিস্তি শেষ হবে না। এরা এক কথায়, নিজেরা বিভ্রান্ত অন্যদেরও বিভ্রান্তির ফাঁদে ফেলে জাহান্নামের একই গন্তব্যে ঠিকানা বানাতে চায়।

প্রিয় সোহান চৌধুরী,
আপনার জ্ঞাতার্থে বলছি, ধর্মের ঠিকাদারি আমি বা আমরা কেউ গ্রহন করিনি। দ্বীন ইসলাম আল্লাহ পাক মনোনীত একমাত্র জীবন বিধান। এর রক্ষার দায়িত্বও স্বয়ং তাঁরই হাতে। এই দ্বীনের প্রচারের ক্ষেত্রে প্রচলিত তাবলীগ জামাত যেসব কিতাবাদি ফলো করেন তার ভেতরে ভুল-ভ্রান্তি থাকতে পারে না- একথা আমরা বিশ্বাস করি না। কেউ যদি নিজেকে কিংবা নিজের কোন কাজকে শতভাগ সহীহ দাবি করে তাহলে বুঝতে হবে, ভেজাল আছে। নিরঙ্কুশ নির্ভুল, সকল ত্রুটির উর্দ্ধেতো একমাত্র আল্লাহ পাক।

আরেকটি কথা জেনে রাখুন,
তাবলীগ জামাত, পীর-মুরিদী, কারো হাতে বাইয়াত হ্ওয়া ইত্যাদি এগুলোর কোনটি আপনার আমার নাজাতের গ্যারান্টি নয়। আপনার চরিত্র সংশোধন, তাকওয়া অর্জন এবং সর্বোপরি একজন সত ও উত্তম চরিত্রের মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলে দুনিয়া ও আখিরাতের মুক্তি এবং কল্যান লাভে সামর্থ্য হওয়ার জন্য আপনি কার কাছে যাবেন কিংবা যাবেন না সেটা আপনার সিদ্ধান্ত।

আপনি জেনে রাখুন,
সকল প্রকার ইবাদাত কবূল হওয়ার জন্য প্রথম এবং প্রধান শর্ত- শিরক ও রিয়ামুক্ত হতে হবে। সুতরাং আপনি/ আপনারা যারা শিরক, বিদআত বলে গলা উঁচু করছেন, হিসাব করলে আপনাদের ভেতরে এগুলো বোধ করি ঢের বেশি পাওয়া যাবে।

পরিশেষে বলি, মন খোলাসা করুন। হিংসা-বিদ্বেষ-রিয়া-কেনা এইসবের আগুনে নিজেকে জ্বালিয়ে লাভ নেই। নিজে মুক্তি খুঁজুন। নিজে ভাল আমল করুন, অন্যদের উতসাহিত করুন, টাইপরা তথাকথিত আধুনিক আল্লামা আর কুরআন সহীহ করে পড়তে পর্যন্ত না জানা শাইখ নামের মূর্খদের খপ্পর থেকে বেড়িয়ে আসুন।

শুধু বুখারী শরীফ পরিপূর্ন ইসলাম নয়।
শুধু দু'চার জন এদেশে নতুন করে হঠাত গজিয়ে ওঠা কাঠ মূর্খ শাইখ (এজেন্ট) ইসলামের মডেল নয়।
হাজার বছর যাবত আমরা এখানে ইসলামের আলো জ্বেলেছি। হাজারো পীর আউলিয়াদের এই পূন্যভূমিতে এইসব ধোঁকাবাজ শাইখ-ফাইখ কুলোবে না। এখানের মাটির পরতে পরতে জড়িয়ে আছে শাহজালাল, শাহ পরান, শাহ মাখদূম, খান জাহান আলী, নিসার আলী তিতুমীর, হাজী শরীয়তুল্লাহ, মাওলানা নেছার উদ্দিন রহমাতুল্লাহ আলাইহিমসহ আল্লাহ পাকের হাজারো লাখো অলির পদধূলি, পদস্পর্শ। সুতরাং রঙচঙ দিয়ে লাভ নেই। এখানের মানুষ ধর্মপ্রান সহস্র বছর যাবত। কোন নব্য সাধূ ভন্ড ধ্বজাধ্বারীর চক্করে এরা বিভ্রান্ত হবার নয়।

মুরোদে কুলোলে আপনার টাই পড়া শাইখ বাবাদের বলুন, তারা কাবা শরীফ, মসজিদে নববীতে তারাবীহর সলাত ২০ রাকাতের পরিবর্তে ৮ রাকাত চালু করে দিক।

হারিয়ে যাবেন না।

ভাল থাকবেন। এবং পোস্টে থাকবেন, মন্তব্য মনযোগ সহকারে পড়বেন তারপরে উত্তর দিবেন।

৭| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৩

কাঙ্গাল মুরশিদ বলেছেন: "যেন আল্লাহ আর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম কারো সামনেই দাড়িয়ে আছেন, আর দেখে দেখে তাদের মান্য করা সম্ভব! কোন মাধ্যম প্রয়োজন নেই!"

"আমি স্বয়ং এ উপদেশ গ্রন্থ অবতারণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক।(১৫:০৯)"

আল্লাহ এবং মানুষের মধ্যে একমাত্র মাধ্যম তাঁর কিতাব কোরআন যা তিনি নিজেই সংরক্ষণ করেছেন। এর বাইরে আর কোন মাধ্যম খোজার প্রয়োজন নাই। অথচ আমরা এই কোরআন থেকেই দুরে সরে থাকছি। আমরা বলছি কোরআন খুবই কঠীন/জটিল বিষয় যা সাধারণ মানুষ বুঝবে না। অথচ কোরআনে আল্লাহ চারবার বলেছেন : আমি কোরআনকে সহজ করে দিয়েছি বোঝার জন্যে। অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি? (৫৪:১০)।

আমার মনে আছে আজ থেকে ২০-২২ বছর আগে ঢাকার এক মসজিদে কোরআন চর্চার উদ্যোগ নেয়ার চেস্টা করা হয়েছিল। তখন দেখেছি তাবলীগ নিয়ন্ত্রিত সেই মসজিদের ইমাম খতিব এবং কমিটি কিভাবে প্রতিবাদ করেছিল। বলা হয়েছিল - ঠিক আছে কোরআনের কোন তাফসীর আমরা নিজেরা করব না, মা'রেফুল কোরআন থেকে শুধু পড়ে শোনাব - তাবলীগে নিয়োজিত সেই ব্যাক্তিরা সেটাও অনুমোদন করেনি।

তাবলীগের সাথে কোরআনের দুরত্ব এবং মানুষকে কোরআন থেকে দুরে রাখার ব্যাপারে এ'দের কার্যক্রম সত্যিই বিশ্বয়কর। মানুষ কোরআন পড়বে, বোঝার চেস্টা করবে - এটা ওনারা কিছুতেই মানতে পারেন না। নিজেরা চেল্লায় গিয়েতো কোরআন চর্চা করেনই না (নিজ অভিজ্ঞতায় দেখেছি কোরআন তেলাওয়াত ছাড়া অর্থ বুঝে পড়া প্রায় নিশিদ্ধ) বরং অন্যদেরও নিরুৎসাহিত করে - কারণ কি এটাই যে কোরআনের জ্ঞান মানুষের মাঝে বিস্তৃত হলে তাদের নিজেদের উদ্ভাবিত বিষয়গুলি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পরবে?

তবে সময় বদলে যাচ্ছে। এ'খানে দেখতে পারেন সরাসরি কোরআন থেকে কোরআনের ব্যাখ্যা কিভাবে করা হচ্ছে: Click This Link

ধন্যবাদ

৮| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:৫৭

নতুন নকিব বলেছেন:



@কাঙ্গাল মুরশিদ,

এই পোস্টের মহান পোস্টদাতা কোথায়? নাকি তিনি এই পোস্ট থেকেও হারিয়ে গেলেন, যথারীতি?

আপনি আমার মন্তব্য কোট করেছেন- "যেন আল্লাহ আর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম কারো সামনেই দাড়িয়ে আছেন, আর দেখে দেখে তাদের মান্য করা সম্ভব! কোন মাধ্যম প্রয়োজন নেই!"

"আমি স্বয়ং এ উপদেশ গ্রন্থ অবতারণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক।(১৫:০৯)"

এবং এরপরে লিখেছেন- "আল্লাহ এবং মানুষের মধ্যে একমাত্র মাধ্যম তাঁর কিতাব কোরআন যা তিনি নিজেই সংরক্ষণ করেছেন। এর বাইরে আর কোন মাধ্যম খোজার প্রয়োজন নাই। অথচ আমরা এই কোরআন থেকেই দুরে সরে থাকছি। আমরা বলছি কোরআন খুবই কঠীন/জটিল বিষয় যা সাধারণ মানুষ বুঝবে না। অথচ কোরআনে আল্লাহ চারবার বলেছেন : আমি কোরআনকে সহজ করে দিয়েছি বোঝার জন্যে। অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি? (৫৪:১০)।"

উপরে বোল্ডকৃত অংশে আপনি লিখেছেন- "আল্লাহ এবং মানুষের মধ্যে একমাত্র মাধ্যম তাঁর কিতাব কুরআন যা তিনি নিজেই সংরক্ষন করেছেন। এর বাইরে আর কোন মাধ্যম খোঁজার প্রয়োজন নেই।" আপনার এই কথাটি সঠিক নয়। বরং সঠিক কথা হওয়া উচিত- কুরআন এবং সুন্নাহ/ হাদিস এ দু'টিই আল্লাহ এবং মানুষের মধ্যে মাধ্যম। রাসূলে পাক সল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম ইরশাদ করেন- তারাকতু ফি-কুম আমরাইন, লান তাদিল্লু- মা- তামাচ্ছাকতুম বিহিমা, কিতাবাল্লাহি ওয়া সুন্নাতা নাবিয়্যিহি। অর্থ- আমি তোমাদের মাঝে দু'টি জিনিষ রেখে যাচ্ছি, যত দিন তোমরা এ দু'টিকে আঁকড়ে থাকবে ততদিন তোমরা পথভ্রষ্ট হবে না। আর বস্তু দু'টি হচ্ছে, আল্লাহর কিতাব আল কুরঅান এবং তার রাসূলের সুন্নাত।

আর কুরআনের নির্দেশ এ ব্যাপারে আরও স্পষ্ট। আল্লাহ পাক বলেন- হে রাসূল, আপনি বলুন- তোমরা যদি আল্লাহকে ভালবাসতে চাও তাহলে আমার (রাসূলে পাক সল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম) অনুসরন কর।

তো আপনি যেভাবে বলছেন তাতে তো বুঝা যায়, পৃথিবীর সকল মানুষ প্রত্যেকেই এক একজন কুরঅানের মুফাসসির। ব্যাখ্যাকার। কুরআন পড়বে আর কুরআন থেকে সব কিছু শিখে পন্ডিত হয়ে যাবে।

বিস্তারিত আলোচনায় যাওয়ার পূর্বে আপনার এটুকু ভালভাবে বুঝা প্রয়োজন। এ বিষয়টি যদি ঠিকভাবে বুঝতে অক্ষম হন তাহলে আর আলোচনা করে লাভ নেই। তাই বুঝুন। এবং প্রশ্ন থাকলে জানান। উত্তর দিতে সচেষ্ট থাকব ইনশা- আল্লাহ।

ভাল থাকুন নিরন্তর।


৯| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:০৭

অগ্নিঝরা আগন্তুক বলেছেন: তাবলীগে যাওয়া ছেলেপেলেদের কি অবস্থা হয়, তার বাস্তব প্রত্যক্ষদর্শী আমি। ইসলামকে অন্ধ, গোঁড়া ধর্ম হিসাবে উপস্থাপনে তাদের ভুমিকা কম নয়।

১০| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৪

কাঙ্গাল মুরশিদ বলেছেন: @ নতুন নকিব : বিস্তারিত উত্তরের জন্য ধন্যবাদ

বিধান একমাত্র আল্লাহর, অন্য সবাই সেই আদেশের বাহক মাত্র
إِنِ الْحُكْمُ إِلَّا لِلَّهِ
কথাটা কোরআনে কয়েক বার আছে। অনুবাদ করা হয়েছে - আল্লাহ ছাড়া কারও বিধান দেবার ক্ষমতা নেই (12:40), নির্দেশ আল্লাহরই চলে(১২:৬৭)। আল্লাহ ছাড়া কারো নির্দেশ চলে না। (৬:৫৭)
বলা হয়েছে: যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফায়সালা করে না, তারাই কাফের। (৫:৪৩) যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফয়সালা করে না তারাই জালেম। (৫:৪৪) যারা আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফয়সালা করে না, তারাই পাপাচারী। (৫:৪৬)

সুতরাং তাওহীদের দ্বাবি অনুযায়ী হুকুম বা বিধানের উৎস একটি - আল্লাহর কোরআন। রাসুল(স) সেই বিধানের বাহক। তাই রাসুল(স)কে অনুসরণও মুলত কোরআনেরই অনুসরণ। কোরআনে রাসুল(স।) এর বহু কথা ও কাজের বর্ণনা সংরক্ষিত আছে। রাসুল(স)কে অনুসরণের জন্য সেগুলিই যথেস্ট।

আচ্ছা হাদীস নিয়ে আমরা এত ব্যাস্ত কেন?
সাহাবী(রা)গন কি হাদীসের প্রতি এত গুরুত্ব দিতেন?
কোরআনে সামান্য আঞ্চলিক উচ্চারণ দেখেই উসমান(রা) রাস্ট্রীয় উদ্যোগে প্রমিত উচ্চারণের কোরআন গ্রন্থাকারে সংরক্ষণের ব্যাবস্থা করেছিলেন।
অথচ হাদীসের নামে লক্ষ লক্ষ জাল/মিথ্যা/ভুয়া কথা সমাজে প্রচলিত হয়ে গেলেও তা নিয়ে কার কোন মাথা ব্যাথা ছিল না।
যদি হাদীসকে এত গুরুত্বপুর্ণই মনে করা হত তাহলে খোলাফায়ে রাশেদার যুগে যখন জাল হাদীসের প্রচলন শুরু হয়েছিল তখন সহীহ হাদীস সংরক্ষণের কোন উদ্যোগ কেউ নিলেন না কেন?
পরের দুইশ বছরে সমাজে লক্ষ লক্ষ জাল হাদীসের প্রচলন হলেও ইসলামী রাস্ট্রের কোন আমীর/খলিফা রাস্ট্রীয় উদ্যোগে সমন্মিতভাবে হাদীস সংকলনের কোন ব্যাবস্থা করেন নি কেন?
এমনকি তখনকার আলেমদের নিয়ে কোন কমিটি বা শুরাও তো হয়নি যেখানে আলোচনার মাধ্যমে সহীহ হাদীস বাছাই করা হবে?
২১২ হিজরিতে বুখারার আবু আব্দুল্লাহ ইসলমাইল ব্যাক্তিগত উদ্যোগে প্রায় সাত লাখ হাদীস সংগ্রহ করে, নিজেই যাচাই বাছাই করে প্রায় সাত হাজার (মাত্র ১%) হাদিস নিয়ে একখানা কিতাব লিখলেন আর সেটাই হয়ে গেল আল্লাহর দ্বীনের দলিল?? আল্লাহর দ্বীন কি কোন সাধারণ (নবি নন এমন) ব্যাক্তির ব্যাক্তিগত সংগ্রহের উপর নির্ভরশীল হতে পারে??
আমরা কি কোন বড় ধরনের বিভ্রান্তিতে পরে আছি??

১১| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:০৫

নতুন নকিব বলেছেন:



@কাঙ্গাল মুরশিদ,
দেখলেন তো এই পোস্টের লেখক হারিয়ে গেছেন।

যাই হোক, আপনি উত্তর নিয়ে এসেছেন দেখে ভাল লাগল। একচুয়ালি, উই হ্যাভ নো এনি ডিফারেন্স ইন আওর অরিজিনাল থিংকিং এন্ড ডুয়িং। বলতে চাচ্ছি, ফরজ, ওয়াজিব ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ন বিষয়াদিতে আমাদের মতপার্থক্য নেই।

ধন্যবাদ,

আপনার মন্তব্যে প্রতি উত্তর করতে মনে হয় কিছুটা সময় লাগবে। বাই দা ওয়ে, নো টেনশন।

হোয়েন আই ফিল ফ্রি আই উইল ট্রাই টু ফিডব্যাক ইউ সূন।

ধন্যবাদ।

ভাল থাকুন নিরন্তর।

১২| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:২১

নুর ইসলাম রফিক বলেছেন: উত্তরঃ- হ্যা, ইজতেমা সম্মেলন একটি জঘন্য বিদআত।
উত্তরটা আপনার মনগড়া।
আপনি শুধু যুক্তি উপস্থাপন করেছেন কোন ডকুমেন্ট উপস্থাপন করতে পারেননি।
ইসলাম যুক্তিতর্ক নির্ভর নয়। ইসলামের একটা নিজেস্ব সংবিধান (কুরআন) রয়েছে।
মনগড়া আলোচনা না করে ইসলামের সংবিধান থেকে ডকুমেন্ট উপস্থাপন করে আলোচনায় আপনাকে স্বাগতম।
যদিও আপনার ইসলামের সংবিধান থেকে ডকুমেন্ট উপস্থাপন করে আলোচনায় করা কতটা গ্রহণযোগ্য তাও আমাদেরকে জানতে বা জানাতে হবে।
আপনি নিজে ইসলামিক বিজ্ঞ কিনা সেটা এখানে সব চেয়ে বড় বিষয়।
লেজকাটা বানরের শিক্ষা গল্পে কোন পশু গ্রহন করেনি।
আমরা কিভাবে আপনাকে না জেনে আপনার শিক্ষা গ্রহন করবো?

১৩| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৩

সাহরাব বলেছেন: আমাদের ডিজিটাল আউলিয়াগণ ইসলামকে যেভাবে শর্টকাট করে ফেলছে তা রীতিমতো উদ্বেগের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে !!

১৪| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:০০

নতুন নকিব বলেছেন:



প্রিয় @সাহরাব,
ধন্যবাদ, অনুসন্ধিৎসু মন নিয়ে খুঁজতে থাকলে সত্যের সন্ধান অবশ্যই পাবেন। আল্লাহ পাকের দ্ব্যর্থহীন ঘোষনা- "অল্লাজিনা যা-হাদু ফি-না লানাহদিয়ান্নাহুম ছুবুলানা" -যারা আমার সন্ধানে সচেষ্ট, অবশ্যই আমরা তাদের পথ প্রদর্শন করব।

আপনাদের মত বিচক্ষন অনুসন্ধিৎসুদের জন্যই বোধ করি এই ঘোষনা।

সাথে থাকুন।

আর ঐ যে বললেন- "ডিজিটাল আউলিয়াগণ ইসলামকে যেভাবে শর্টকাট করে ফেলছে তা রীতিমতো উদ্বেগের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে !!" -ব্যাপার কিন্তু সেটাই!

এদের মুখে কুরআন। লেবাসে পাক্কা মুসল্লি। ভেজাল শুধু ভিতরে। শুধু কাটছাট! শুধু শর্টকাট! শুধু ফাঁকিঝুকি!

প্রিয় @কাঙ্গাল মুরশিদ,

আপনার শেষোক্ত কমেন্টের বেশ কিছু কথার সাথেই সহমত। তারপরও বিস্তারিত কথা বলার ইচ্ছা রয়েছে। তথাকথিত আধুনিক ইসলামের নামে যারা ডিজিটাল ফাঁকিবাজিতে লিপ্ত তাদের থেকে নিরাপদ দূরত্ব কামনা করি।

আমার ব্লগে আগাম স্বাগত।

শুভ কামনা নিরন্তর।

১৫| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:০০

নতুন নকিব বলেছেন:



প্রিয় @কালীদাস: Sorry to late reply. সঠিক বলেছেন। অামিও তাই ধারনা করেছিলাম। এ যে escape করবে এটা তার পূর্ববর্তী পোস্ট থেকেই বুঝে নিয়েছিলাম।

আসলে ধর্মের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি এবং অতিরঞ্জন এদেরকে পথচ্যুত করেছে। এরা ঠগ বাছতে গা উজার করে ছেড়েছে।

এদের অবস্থা হয়েছে ঠিক সেই মেয়ে লোকটির মত যে ঈদের চাঁদ দেখে প্রতি বছর আনন্দে মেতে উঠতো। অপরের সংশোধনের খুবই বেকারার। নিজের সংশোধনের খবর নেই। ফলে এদের চোখজুড়ে শুধু অন্যের দোষ। নিজের দোষসমূহের কথা ভেবেও দেখে না।

গল্পটি বলার লোভ সামলাতে পারছি না- কিন্তু একবার ঈদের চাঁদ খোঁজার সময় তার ছোট শিশুটি পায়খানা করে দিল। মেয়ে লোকটি বাচ্চাকে শূচাতে গেছে এমন সময় পাড়ার মেয়েরা 'ঐ চাঁদ উঠেছে, ঐ চাঁদ উঠেছে, বলে হৈ চৈ শুরু করে দিল।

চাঁদ উঠেছে শুনে মেয়েটি তাড়াতাড়ি তার বাচ্চাকে এমনভাবে শৌচ করালো যে নিজের হাতটিও ভাল করে ধুতে পারল না। দৌড়ে এসে চাঁদ দেখে খুশিতে দু'হাত তুলে দুআ করতে লাগলো। দুআ শেষে হাত দু'টি মুখে বুলিয়ে নিল। কিন্তু এ কি? গন্ধ কেন? ঘৃনায় থু থু করে বলতে লাগলো, "ছি! এবারের ঈদের চাঁদে একেবারে টাটকা পায়খানার গন্ধ! এমন দুর্গন্ধের চাঁদ কোন দিন দেখিনি।"

অথচ গন্ধ ছিল তার হাতে। বাচ্চাকে তাড়াহুড়ো করে শুচাতে গিয়ে হাতে পায়খানা লেগে আছে সে দিকে লক্ষ্য নেই। লক্ষ্য শুধু নির্মল চাঁদের দিকে। যত দোষ এই সুন্দর চাঁদটিকে দেয়া হলো।

-এদের অবস্থাও ঠিক এরকমই। অতি চালাকের গলায় দড়ি। এরাও গল্পের মেয়ে লোকটির মত নিজেদের ভুলের দিকে না তাকিয়ে যারা সত্যিকার ধর্মপ্রান, যারা সঠিকভাবে মনে প্রানে ধর্মকে পালন করে তাদের পিছে উঠে পড়ে লেগেছে। বিশ্বাস করুন, এরা নিবিষ্ট মনে কোন ইবাদাতও করতে পারে বলে মনে হয় না। পারবে কি করে? কারন, এরা প্রত্যেক কাজে বিদআতের গন্ধ পায়। প্রত্যেক কাজে শিরকের স্পর্শ খোঁজে। প্রত্যেক কাজে ভেজাল তালাশ করে। হাদিসের অসংখ্য কিতাবে বর্নিত লক্ষ লক্ষ হাদিসের ভেতরে তারা শুধু বুখারী শরীফকেই চেনে। পবিত্র কুরআন আর বুখারী শরীফ খুঁজে যখনই কোন বিষয়ে সমাধান পেতে ব্যর্থ হয় তখনই সেটাকে বিদআত বলে বাতিল ঘোষনা দিয়ে দেয়। আর এতে করে তারা দিনে দিনে ইসলাম ধর্মকেই বিকৃত কিংবা অপূর্নাঙ্গ বানিয়ে ছাড়ছে। এদের উদ্ভট বিশ্বাস এবং ফতোয়া হচ্ছে অনেকটা এই জাতীয় - মাযহাব মানা হারাম-বিদআত, সাহাবি মানা শিরক, পীর ধরা শিরক ইত্যাদি ইত্যাদি।

প্রিয় কালিদাস,
আল্লাহর অশেষ রহমতে বুকে সাহস নিয়ে যে কোন চ্যালেঞ্জ গ্রহন করতে প্রস্তুত আছি, এই শ্রেনির লোকদের বিচ্যুতি, বিভ্রান্তি এবং অসারতা প্রমান করার জন্য।

শুভ কামনা।

ভাল থাকবেন নিরন্তর।

১৬| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:২২

কাঙ্গাল মুরশিদ বলেছেন: @নতুন নকিব

অনেক বিষয়ে একমত হওয়ার জন্য ধন্যবাদ
আপনাকে অনুসরনে রাখলাম
আশা করি এই ব্যাপারে আপনার গবেষণালব্ধ লেখা পাব।

আর একটা কথা শেয়ার করি : বর্তমান সময়টা অনেকের মতেই রাসুল(স) এর মক্কী জীবনের অনুরূপ। তাই আমাদের উচিত মক্কী সুরা গুলিতে আমাদের জন্য যে কর্মসুচী দেয়া আছে তা খুঁজে দেখা। আমরা কি সেই কাজগুলি করছি, না পবর্তি সময়ে তৈরী হওয়া বিভিন্ন ছোটখাট বিষয় নিয়ে অহেতুক বিতর্ক করছি/সময় ক্ষেপন করছি।

কোরআন নিশ্চয়ই অনেকবার পড়েছেন, আমি অনুরোধ করছি আর একবার ভিন্ন দৃস্টিতে পড়ার জন্য। ব্যাখ্যা এবং শানে নজুল বাদ দিয়ে মাক্কী সুরাগুলির অনুবাদ সরাসরি পড়ুন আর ভাবার চেস্টা করুন ঐ কথাগুলি যদি আজকে আপনাকে বলা হত তাহলে আপনি কী বুঝতেন। দেখুন প্রচলিত ইসলামের চেয়ে সেটা ভিন্ন কী না। মানা না মানা পরের ব্যাপার, জানতে তো সমস্যা নই - কি বলেন?

১৭| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:১৪

টারজান০০০০৭ বলেছেন: ল্যাদায়া তো পরিবেশ নষ্ট কইরা ফালাইছেন ! ভাবছিলাম হোগা মোছার জন্য প্রথম আলু দিমু , তয় আফনের হোগা মুইচ্ছা প্রথম আলুর ইজ্জত বাড়াইতে চাইনা। চুতরা পাতা দিয়া মুইচ্ছা লন। সারা জীবনে মাদ্রাসায় না যাইয়া যারা বিরাট মুহাদ্দিস আর মুফাস্সির হইয়া এইখানে ল্যাদাইতেছেন তারাও মুইচ্ছা লন। অন্য জায়গায় ল্যাদান।

১৮| ২৬ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:৪১

হাফিজ রাহমান বলেছেন: তাবলীগের কথা কুরআন হাদীসে আছে। আর তাবলীগের চলার নির্ধারিত কোনো গতি পথ নেই। কুরআন হাদীসে অবারিত তাবলীগ তথা দীন ইসলাম পৌঁছে দেয়ার কথা আছে। সেখানে কোনো বিধিবদ্ধ নীতিমালা বা সীমা রেখা নেই। আর তাবলীগের চলমান প্রক্রিয়া তাবলীগের সত্তাগত কোনো বিষয় নয়। বরং এটা একটা সাময়িক সুবিধাগত পারিপাশ্বিক বিষয়। স্থান কাল পাত্র ভেদে যেকোনো সময় এতে পরিবর্তন আসতে পারে। দাওয়াতি কাজে উন্নয়ন, সমৃদ্ধি এবং শৃঙ্খলার স্বার্থে একটি প্রক্রিয়া গ্রহণ করতেই হয়। আর এ প্রক্রিয়া গ্রহণের ব্যাপারটি উন্মুক্ত ও অবারিত। এক্ষেত্রে ধরা বাধা কোনো বিধি প্রণালী নেই। এ ব্যাপারটি কুরআন হাদীসে থাকা না থাকার কোনো বিষয় নয়। তাছাড়া পারিপাশ্বিক কোনো বিষয় না থাকার ফলে মূল বিষয়টি না থাকা আবশ্যক হয়ে পড়ে না। দীনের যে ব্যাপারটিকে উদার উন্মুক্ত রেখে দেয়া হয়েছে সেক্ষেত্রে খামোকা দ্বৈতমত সৃষ্টি করে সংকীর্ণতা ও প্রান্তিকতার আশ্রয় গ্রহণ করা আদৌ বুদ্ধিমত্তার পরিচয়ক নয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, সাহাবায়ে কেরাম, তাবিয়ীনে ইযামসহ দীনে ইসলামের মহামনীষীগণ দাওয়াত ও তাবলীগের সুনির্দিষ্ট কোনো কর্মপন্থা গ্রহণ করেন নি। তাই তাবলীগের ক্ষেত্রে কোনো লিমিটেশন বা সীমাবদ্ধতা নেই। ব্যক্তি, পরিবেশ, সময়, যুগ এবং পরিস্থিতি অনুপাতে তাবলীগের ক্ষেত্রে যেকোনো কর্মপন্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমার পক্ষ থেকে একটি বাণী হলেও তোমরা পৌঁছিয়ে দাও। সহীহ বুখারী ৩৪৬১
হাদীস ব্যাখ্যাতাগণ হাদীসটির ব্যাখ্যায় বলেন, তোমরা আল্লাহ এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাণী যথা সাধ্য মানুষের কাছে বিবৃত করো। এবং এক্ষেত্রে তাদেরকে উপকৃত করো।-মিরকাতুল মাফাতীহ ২/৯১ ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে তাঁরা ما أمكنكم أو ما استطعتم বাক্য দুটি ব্যবহার করেছেন। আর বাক্য দুটির অর্থ ব্যাপক। যতটুকু সম্ভব, যেভাবে সম্ভব, যে উপায়ে সম্ভব- এসবি বাক্যদ্বয়ের স্বার্থক অর্থ। দাওয়াতের ক্ষেত্রে তারা উপকৃত হওয়া, করার ব্যাপারটি এনেছেন। উদ্দেশ্য হলো, দাওয়াত তথা ক্যাম্পেইনের এমন উপায় এবং কর্মপন্থা গ্রহণ করা উচিৎ যাতে দাওয়াতের কাজটি ফলপ্রসূ এবং লাভজনক হয়। সুতরাং দাওয়াত ও তাবলীগের ক্ষেত্রে শরীয়ত সমর্থিত সর্বরকমের উপায় এবং কর্মপন্থা গ্রহণের অবারিত সুযোগ রয়েছে। উমদাতুল আহকাম গ্রন্থের ব্যাখ্যাকার আব্দুর রহমান ইবনে আব্দুল্লাহ বলেন, ... যখন তাদের ডাকে সারা না দিয়ে কোনো উপায় ছিল না তখন তাদের আগ্রহকে মূল্যায়ন করে হাদীসের ব্যাখ্যা গ্রন্থ লেখায় মনোযোগী হলাম। যাতে আমি ঐসব লোকের দলভুক্ত হতে পারি যাদের ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার বাণী শুনে আত্মস্থ করলো এরপর অন্যদের নিকট পৌঁছিয়ে দিলো আল্লাহ তা‘আলা তার চেহারাকে সজীব এবং প্রফুল্যময় করে তুলুক।-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৬৬০ এবং যাতে ঐসব লোকের দলভুক্ত হতে পারি যারা রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অমোঘ বাণী ‘আমার পক্ষ থেকে একটি বাণী হলেও তোমরা পৌঁছিয়ে দাও। সহীহ বুখারী ৩৪৬১’ এর অনুকরণ করে।-ইতহাফুল কিরাম বিশরহি উমদাতিল আহকাম ১/১
হাদীস ব্যাখ্যাতাগণ একটি বিশেষ প্রক্রিয়া গ্রহণ করে হাদীসের ধারাভাষ্য রচনা করেন। দীনের এ সেবাধর্মী কর্মপন্থাটিকে উপরোক্ত ভাষ্যকর মহোদয় তাবলীগধর্মী কর্ম বলে অভিহিত করতে চেয়েছেন। দীনের প্রচার প্রসারে যেসব উলামায়ে কেরাম এবং দায়ীগণ ব্যাপৃত আছেন তারা সবাই নিজেদের এ দীনী কার্যক্রমকে তাবলীগ শিরোনামে অভিহিত করেন। অথচ সবার কার্যক্রমের মাঝে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে রয়েছে বিশাল তফাত ও ব্যবধান। কিন্তু তাদের প্রচারধর্মী দীনী কার্যক্রমের ক্ষেত্রে তাবলীগ শিরোনাম ব্যবহার করার কারণে কেউ সাধারণত প্রশ্ন তোলে না। সুতরাং সীমাহীন ফলপ্রসূ বিবেচনায় গৃহীত বিশ্বব্যাপী প্রচলিত দাওয়াত ও তাবলীগের বিশেষ কর্মপন্থার ব্যাপারে প্রশ্ন তোলা আদৌ সমীচীন নয়।
অন্য দিকে কুরআন হাদীসের লিখিত যে রূপরেখা আমাদের সামনে দৃশ্যমান তা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে ছিল না। এবং এ ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিশেষ কোনো নির্দেশনাও ছিল না। বরং এ রূপরেখা প্রস্তুত হয়েছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর তিরোধানের পরবর্তী যুগে। তো কুরআন হাদীসের লিখিত এ সংরক্ষণ পদ্ধতি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাণী ‘আমার পক্ষ হতে একটি বাণী হলেও পৌঁছে দাও’ এর সাথে সাংঘর্ষিক নয়; বরং ফলপ্রসূ ও সহায়ক মাধ্যম। উপরন্তু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রচারধর্মী হাদীসগুলোর মাঝেই কুরআন হাদীস লিখে রাখার বৈধতা নিহিত রয়েছে। কারণ স্মৃতি বিভ্রাট মানুষের স্বভাবজাত ধর্ম। আর যে ব্যক্তি আপন স্মৃতি শক্তির উপর আস্থা পোষণ করে সে ত্রুটি বিচ্চুতি থেকে নিরাপদ থাকতে পারে না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রচারধর্মী হাদীসগুলোকে যদি সংকীর্ণ করে রাখা হতো এবং কুরআন হাদীসের লিখিত রূপ না দেয়া হতো তাহলে অধিকাংশ হাদীস ভাণ্ডার অন্তরালে চলে যেত। ফলে দীনী প্রচারনা অসাধ্য হয়ে পড়তো। এবং মুসলিম উম্মাহ বিশাল একটা দীনী জ্ঞান ভাণ্ডার থেকে বঞ্চিত থেকে যেত। তাই উমর রা. বলতেন, তোমরা দীনী জ্ঞান ভা-ারকে লিখিত রূপ দিয়ে আবদ্ধ করে ফেলো।- শরহুস সুন্নাহ লিলইমাম বাগাবী ১/২৯৫, শরহে মুসলি লিননাবাবী ১৮/১৩০
আল্লাহ তা‘লা পবিত্র কুরআনে ঘোষণা করেন, হে রাসূল! আপনার প্রভুর পক্ষ থেকে আপনার উপর যা কিছু অবতীর্ণ হয়েছে তা মানুষের কাছে পৌঁছে দিন।-সূরা মায়িদা আয়াত ৬৭
মুফাসসিরীনে কেরাম আয়াতটির ব্যাখ্যায় বলেন, ইহজগত এবং পরজগতে মানুষের জন্য কল্যাণকর যেসব বিষয় আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে তা আপনি মানুষের কাছে পৌঁছে দিন।-তাফসীরে ইবাজী
উক্ত আয়াত বা ব্যাখ্যার ভিতরে বেশ ব্যাপকতা লক্ষণীয়। তাতে কোনো সংকীর্ণতা বা প্রান্তিকতা নেই। যার পক্ষে যেভাবে সুবিধাজনক এবং সাম্ভবপর হবে সে সেভাবে দাওয়াতি কার্যক্রম সম্পাদন করবে। অন্যদিকে আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন, তোমার প্রভুর পথে আহ্বান করো প্রজ্ঞা ও বিচক্ষণতার সাথে।-সূরা নাহল আয়াত ১২৫
আয়াতটির ব্যাখ্যায় মুফাসসিরীনে কেরামের ভাষ্য লক্ষ্য করুন :
১. হে রাসূল আপনি আপনার সম্প্রদায়কে আল্লাহর পথে চলতে আহ্বান করুন, যে পথ সত্য, এবং যে পথ আল্লাহ নিজে মানুষের কল্যাণের জন্য প্রবর্তন করেছেন। আপনি মানুষকে আহ্বানের ক্ষেত্রে এমন মাধ্যম বা কর্মপন্থা গ্রহণ করুন যা তাদের জন্য ফলপ্রদ এবং উপকারী।-আইসারুত তাফাসীর ১/২০২৬
২. হে রাসূল! আপনি এবং আপনার অনুসাীরবৃন্দ মানুষকে আহ্বান করুন আপনার প্রভুর দীনের প্রতি এবং তাঁর সঠিক সত্য পথের দিকে যুতসই পথ-পন্থার ব্যাপারে যা আল্লাহ তা‘আলা কুরআন সুন্নাহর মাঝে অবতীর্ণ করেছেন। এবং আপনি মানুষকে সম্বোধন করুন তাদের উপযোগী কর্মনীতি প্রয়োগ করে। এবং তাদেরকে সুন্দর উপদেশ প্রদান করুন।- আততাফসীরুল মুয়াসসার ৪/৪৯১
৩. হে নবী! আপনি মানুষকে সত্য পথে আহ্বান করুন, যে পথ আপনার প্রভু প্রবর্তন করেছেন। এবং আপনি মানুষকে আহ্বানের ক্ষেত্রে এমন কর্মপন্থা গ্রহণ করুন যেটা তাদের জন্য উপযোগী। সুতরাং বিশিষ্ট জ্ঞানী ব্যক্তিদের দাওয়াতের ক্ষেত্রে এমন কৌশলী বাক্য প্রয়োগ করুন যা তাদের জন্য উপযোগী। নিরক্ষর সাধারণ মানুষকে দাওয়াত দেয়ার ক্ষেত্রে উপদেশ এবং উপমা সম্বলিত বাক্য ব্যবহার করুন।-তাফসীরুল মুন্তাখাব ১/৪৬৫
৪. আপনার প্রভুর সঠিক সত্য পথের আহ্বান যেন সমগ্র মানব সম্প্রদায়কে ব্যপৃত করে। যে আহ্বান হবে কল্যাণকর জ্ঞান এবং সঠিক কর্মপন্থাসমৃদ্ধ। এবং প্রত্যেককে তার অবস্থা, বোধ, উক্তি এবং আনুগত্য বিবেচনায় দাওয়াত প্রদান করবে। দাওয়াতের বিষয়ে যথাযথ জ্ঞানার্জন করে দাওয়াতি কাজে অগ্রসর হওয়া, দাওয়াতের ক্ষেত্রে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে প্রাধান্য দেয়া, মানুষের মেধা ও বোধ উপযোগী সাহজিক পন্থা অবলম্বন করা, সর্বাধিক বোধগম্য ও সর্বজন বিদিত কর্মনীতি গ্রহণ করা এবং বিনয় ও নম্রতা অবলম্বন করা- এসবি হিকমত তথা প্রজ্ঞা ও বিচক্ষণতার পর্যায়ভুক্ত।- তাইসীরুল কারীম ফি তাফসীরি কালামিল মান্নান ১/৪৫২
৫. মানুষের পরিবেশ পরিস্থিতি অনুযায়ী দাওয়াতি কর্মপন্থা গ্রহণ করা। এবং এমন কর্মনীতি অবলম্বন করা যা মানুষের জন্য বেধগম্য এবং সহজসাধ্য হয়। এবং স্থান কাল পাত্র ভেদে দাওয়াতি কর্মপন্থার ক্ষেত্রে বৈচিত্র আনা।-ফি জিলালি কুরআন ৪/৪৯৭
ব্যাখ্যাগুলোর সার উক্তি হলো, দাওয়াতি কজের ক্ষেত্রে তোমার কর্মনীতিটা যেন ফলপ্রসূ এবং কার্যকর হয় তার জন্য প্রজ্ঞাপূর্ণ কৌশল এবং বিচক্ষণতা অবলম্বন করো। কুরআনিক এ নীতির আলোকে চলমান তাবলীগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ পারিপাশ্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় তাবলীগের ফলপ্রসূ এনীতিটি গ্রহণ করেছেন। সুতরাং এব্যাপারে কুরআন হাদীসে থাকা না থাকা বিষয়ক কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা সমীচীন নয়। রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জ্ঞানান্বেষণের কথা বলেছেন। এখন মানুষ বিভিন্ন উপায়ে জ্ঞান অন্বেষণ করছে। কেউ কওমাী মাদরাসার আদলে, কেউ আলিয়া মাদরাসার আদলে দীনী জ্ঞান অন্বেষণ করছে। এক্ষেত্রে নানা উপায় এবং নানা পদ্ধতি অবলম্বিত হচ্ছে। এখন যদি প্রশ্ন করা হয়, দীন শিক্ষার এসব প্রক্রিয়া কুরআন হাদীসে নেই তবে কি প্রশ্নটা যথাযথ হবে? এমন প্রশ্নকে যৌক্তিক মনে করা হলে তো কোনো মসজিদ মাদরাসাই বৈধ হবে না। কারণ এভাবে কমিটি করে উস্তাদ শিক্ষকদের বেতন ভাতা নির্ধারণ করে নির্দিষ্ট শিক্ষা কারিকুলাম তৈরি করে শিক্ষা দানের এ পদ্ধতি কুরআন হাদীসে কোথাও নেই। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগেও এ পদ্ধতির প্রচলন ছিল না।
তবে কেউ যদি বলেন, চলমান তাবলীগের এ কর্মপন্থাটাই একমাত্র পথ; এছাড়া তাবলীগের অন্য কোনো পথ-পদ্ধতি গৃহীত নয়। তবে আমরা তার সাথে কোনো ক্রমেই একমত হতে পারবো না। কিন্তু চলমান তাবলীগের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ প্রান্তিকতাপূর্ণ এমন মনোভাব পোষণ করেন বলে আমাদের জানা নেই। এখন নানা পদ্ধতি এবং নানা উপায়ে দীনের প্রচার হচ্ছে। দীনের কথা যদি বিশুদ্ধ হয় তবে সে কথা পৌঁছানোর শরীয়ত গৃহীত সব মাধ্যমকেই স্বীকৃতি দিতে হবে। এবং সাধ্যমত সহায়তাও করতে হবে। ইসলামে বাড়াবাড়ি ছাড়াছাড়ি উভয়টিই নিন্দনীয়। আল্লাহ আমাদের দীনের কাজ করার ক্ষেত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাহ অনুসরণ করার তাওফিক দান করুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.