নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ঘুমাইতে গেলে যারা খালি এপাশ ওপাশ কাইত চিত হয় তারাই ব্যাচেলর।

ডাক্তার তো জানেনা যে তুমিই আমার হৃদরোগের কারন!

আমিই সোহেল

জীবনের মানেই খুঁজে পেলাম না।।

আমিই সোহেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীনের কথা শুনুন

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১০

কখনো খেয়াল করেছেন? ঢাকার মৌচাক-মগবাজার রোডটার একটা নাম আছে। মুক্তিযুদ্ধে শহীদ এক সাংবাদিকের নামে। তাঁর নাম সেলিনা পারভীন। শুনুন সেই সাংবাদিকের কথা।

১৯৬৯-এর রাজনৈতিক আন্দোলনে উত্তাল বাংলাদেশ। জাতির ক্রান্তিকাল। নিজেও শরিক হন গণঅভ্যুত্থানের আন্দোলন কর্মকাণ্ডে। ছেলেকে সঙ্গে নিয়েই বেরিয়ে পড়তেন '৬৯-এর ২১ ফেব্রুয়ারি পল্টনের জনসভায় বা শহীদ মিনার থেকে বের হওয়া নারীদের মিছিলে যোগ দিতে। শরিক হতেন বুদ্ধিজীবীদের প্রতিবাদে আর সভায়ও। অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী, শহীদুল্লাহ কায়সার প্রমুখদের সাথে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে সমাজতন্ত্রের প্রতিও আস্থাশীল হয়ে পড়েন তিনি।

শুরু হলো ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধের সময় সেলিনা পারভীন ঢাকায় ছিলেন। তাঁর বাসায় মাঝে মাঝে রাত হলে কয়েকজন তরুণ আসতেন। খাওয়া-দাওয়া করে চলে যাওয়ার আগে এরা সেলিনা পারভীনের কাছ থেকে সংগৃহীত ঔষধ, কাপড় আর অর্থ নিয়ে যেতেন। তরুণদের প্রত্যেকেই ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। 'শিলালিপি'র বিক্রয়লব্ধ অর্থ দিয়েই তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করতেন।

একসময় 'শিলালিপি'র উপরও নেমে আসে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর খড়্গ। হাসেম খানের প্রচ্ছদ করা একটি 'শিলালিপি'র প্রকাশিতব্য সংখ্যা নিষিদ্ধ করে দেয় পাকিস্তান সরকার। 'শিলালিপি' প্রকাশের অনুমতি মিললো তবে শর্ত হলো নতুনভাবে সাজাতে হবে। আগস্ট-সেপ্টেম্বরের দিকে 'শিলালিপি'র সর্বশেষ সংখ্যা বের হয়। কিন্তু এর আগের সংখ্যার জন্যই সেলিনা পারভীন পাকিস্তানী ও তাদের দালালদের নজরে পড়ে যান। যেটাতে ছিল দেশ বরেণ্য বুদ্ধীজীবীদের লেখা এবং স্বাধীনতার পক্ষের লেখা। তাই কাল হলো। 'শিলালিপি'র আরেকটি সংখ্যা বের করার আগে নিজেই হারিয়ে গেলেন।

১৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ সাল। দেশ স্বাধীন হতে আর মাত্র তিন দিন বাকি। বেশ কিছু অঞ্চল ইতিমধ্যে মুক্ত হয়ে গেছে। সাংবাদিক সেলিনা পারভীন তখন বাস করতেন সিদ্ধেশ্বরীতে। ১১৫নং নিউ সার্কুলার রোডে তার বাড়ীতে থাকতো তিনজন মানুষ- তার পুত্র সুমন, মা আর তার ভাই জনাব উজির। সেদিন শীতের সকালে তারা সকলেই ছিলেন ছাদে। সেলিনা পারভীন সুমনের গায়ে তেল মাখিয়ে দিচ্ছিলেন। সুমন যখন ছাদে খেলাধুলা করছিল তখন সেলিনা পারভীন ছাদে একটা চেয়ার টেনে একটি লেখা লিখছিলেন। শহরে তখন কারফিউ। রাস্তায় মিলিটারি। পাকিস্তানি বাহিনীকে আত্মসমর্পণের জন্য বিমান থেকে চিঠি ফেলা হচ্ছে।

হঠাৎ দূরে একটা গাড়ির আওয়াজ হলো। সুমনদের বাড়ীর উল্টো দিকে E.P.R.TC-এর ফিয়াট মাইক্রোবাস ও লরি থামলো। সেই বাসার প্রধান গেইট ভেঙে ভিতরে ঢুকে গেল কিছু লোক। তাদের সবাই একই রঙের পোশাক পরা ও মুখ রুমাল দিয়ে ঢাকা। সুমনদের ফ্ল্যাটে এসে একসময় কড়া নাড়ে তারা। সেলিনা পারভীন নিজে দরজা খুলে দেন। লোকগুলো তাঁর পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হয় এবং এ সময় সেলিনা পারভীনের সাথে লোকগুলোর বেশ কিছু কথা হয়। এরপর তারা সেলিনা পারভীনকে তাদের সাথে ধরে নিয়ে যায়।

১৮ ডিসেম্বর সেলিনা পারভীনের গুলিতে-বেয়নেটে ক্ষত বিক্ষত মৃতদেহ পাওয়া যায় রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে। খুব শীতকাতুড়ে সেলিনার পায়ে তখনও পড়া ছিল সাদা মোজা । এটি দেখেই তাঁকে সনাক্ত করা হয় ।

১৪ ডিসেম্বর আরও অনেক বুদ্ধিজীবীর মতো পাকিস্তানের দালাল আলবদর বাহিনীর ঘৃণিত নরপশুরা সেখানেই সেলিনা পারভীনকে হত্যা করে। সেদিনই তাঁকে আজিমপুর কবরস্থানে শহীদদের জন্য সংরক্ষিত স্থানে সমাহিত করা হয়।

খুব আফসোস হয়, আজকালকার বেশীরভাগ তরুণীরা আর জাহানারা ইমাম, সেলিনা পারভীনদের কথা জানে না। গাঁজাখুরি সিরিয়াল, সিনেমার চক্রেই যেন তাদের জীবন ঘুরপাক খায়। আজকের তরুণীই আগামী দিনের মা। তাঁরা যদি ইতিহাস সচেতন না হয়, পরবর্তী প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনাব কিভাবে?

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:২৬

ঢাকাবাসী বলেছেন: অনেকেই চেনেনা তাঁকে। নাম শোনে তাও সিদ্ধেশ্বরী দিয়ে গেলে পরে। ভাল করেছেন লেখাটি দিয়ে।

২| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৪৬

আমিই সোহেল বলেছেন: ধন্যবাদ :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.