![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
(নিজেকে নিয়ে লেখতে গিয়ে পারিনা ।আজ কিছু একটা লেখলাম ।অনেক সাহস করে লেখতে হলো ।তবুও লেখসি এটাই বড় কথা আমার কাছে।)
পিচঢালা পথ ।সূর্য প্রায় ডুবন্ত । লাল আভা ঠিকড়ে বেড়ুচ্ছে । দিগন্তের আকাশে সোনালী আভা ।একপাশে চাঁদ উকি দিয়ে তার আলো ছড়ানোর সময় জানান দিয়ে যেতে চাইছে ক্রমশঃ অন্তরালে । স্বাক্ষর বিশাল আকাশের নিচে ।নিজেকে মুক্ত আকাশের রাজা ভাবে সে । পকেট ধুধু মরুভূমি । তবে এমন অপরূপ দৃশ্য প্রত্যক্ষ করতে ভাগ্য ভালো পয়সার প্রয়োজন পড়েনা ।তার কাছে মুক্ত আকাশ মানে অবারিত পৃথিবী । সেখানে দেয়াল নেই ,নেই হিংসে, বিদ্বেষ ।সেখানে ঘর নেই । জাতি নেই ।অর্থ লোভ লালসা নেই ।আছে শুধু মমতাময় মানবতা । এই ধর্মটাই তার চোখে শ্রেষ্ঠ । মানব ধর্ম । অপ্রাসঙ্গিক যতো চিন্তা মনের কোণে শ্রাবনের মেঘ হয়ে ধরা দেয় । কত সাধারন একটা মানুষ সে ।পথে হাজারো মানুষের ভীড়েও মনে হয় কতটা শূণ্য তার অস্তিত্ব ।মনে হয় অনাদি অনন্তঃকাল একাকীত্বের ক্রীতদাস হয়ে বেঁচে আছে ।জীবনের খাতা তার কাছে দীর্ঘশ্বাস ।পাতা উল্টায় সে খাঁতার ।পুরোনো একটা অধ্যায় পড়া শুরু করে ।
স্বাক্ষর বড় হয়েছে অস্থিরতায় । তার মা বাবার ছোট ছেলে । ছোট থেকেই দেখতো মা বাবার কলহঃ ।বুঝতোনা কিছু ।বাবা বের হয়ে যেতো ।মা ও মাঝে মাঝে তল্পিতল্পা গুটিয়ে চলে যেতো স্বাক্ষরকে ফেলেতার বাপের বাড়িতে । নিজের একটা দুনিয়া বানিয়ে নিয়েছে সেই তখন থেকে ।নিজেকে করেছে নিজের বন্ধু । সকাল থেকে শুরু করে মধ্যরাত চলত শুধু যুদ্ধ আর স্বাক্ষর সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে নিজের সাথেই আড্ডা দিতো ।এত হইচই এর মাঝেও কতটা একাকীভাবে বড় হয়েছে ।
বাবাকে সে অনেক ভালোবাসতো ।তার বাবা তাকে ভীষন আদর করতো । যখন তখন অফিস থেকে ফোন দিতো তার বাবা আর স্বাক্ষরকে বলতো
-''আব্বু কি আনবো আজ তোমার জন্য?অলিম্পিয়ার কেক খাবে ?নাকি শিক কাবাব ?''
স্বাক্ষর তার আর্জি পেশ করতো । তার বাবা আক্ষরিক অর্থে মাটির মানুষ ছিলেন ।একটু পাগলাটেও । তবে স্বাক্ষর কে একা করে ছবছর আগেপাড়ি জমান অন্য পৃথিবীতে ।এ প্লেস অফ নো রিটার্ন । তার বাবা কতো স্বার্থপর । ছেলেটাকে এভাবে একা করে গেলো ।বাবাকে এখনো খুঁজে স্বাক্ষর । তবে যে যায় সে কি আর ফিরে আসে ! স্বাক্ষর একটা মিথ্যা বয়ে বেড়াতে বেড়াতে ক্লান্ত । তার বাবার মৃত্যুর কারনটাই মিথ্যে । দুঃস্বপ্নে তার বাবা তাড়া করে বেড়ায় তাকে ।
-''স্বাক্ষর তুইতো প্রতিবাদ করতে পারতি অন্ততঃ বাবা ।''
স্বাক্ষর ঠিক সেই মুহুর্তে ভেঙে সব চুরমার করে দিতে চায় ।দেয়ালে মাথা ঠুকে ।
সেদিন রাত দুটোয় শুয়ে ছিলো তার রুমে ।হঠাৎ বুকে ধ্বক করে উঠে ।ছুটে যায় পাশের রুমে !বাবা কি করছে তা দেখতে গিয়ে আর্তনাদ বেরিয়ে আসে মুখে !বাবা ! শূণ্যে ঝুলছে । কাতরাচ্ছে । গোঙাচ্ছে!উফফ !কি কষ্ট !বাবা ! কি করবে খুঁজে পায়না ।বাঁচাতে পারেনি শেষপর্যন্ত । দেহঘড়ি থেকেপ্রাণ বের হয়ে গেছে ততক্ষণে ।
-''বাবা তুমি স্বার্থপর!ভালোবাসার প্রতিদান দিতে পারোনি!বাবা!স্বার্থপর তুমি !''
সেদিন চোখে একফোটা পানি ছিলোনা ।যা ছিলো তা হলো অভিমান ।কষ্ট ।তার পরিবার ঝামেলা এড়াতে আত্মহত্যাকে হার্ট এটাক বলে চালিয়ে দিলো ।
-''স্বাক্ষর !তুমি খুনী !তুমি চোর!তুমি খেলেছো বাবার মৃত্যুকে নিয়ে !''
কানে হাত চাপা দেয় তবু শব্দ থামেনা ! ভাবতেই চোখ আবার ছলছল হলো ।তার কপালটাই অশুভ ।তাকে নিয়ে সবার প্রত্যাশা কে ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে !কেনোইবা মেশাবে না ধুলোয় তারা কি করেছে তার জন্য!বাবা মারা যাওয়ার পর তার উপরচাপিয়েছে শুধু প্রত্যাশার বোঝা ।কেউ আঁকড়ে ধরেনি তাকে শুধু ভেতরের বন্ধু ছাড়া ! একে একে প্রতিটা ভালোবাসার মানুষ ছেড়ে গেছে । তাকে ভালোবাসার মানুষ নেই। সে যাকে আকড়ে ধরেছে সেই দুরে সরতে চেয়েছে সবসময়। মহুয়াকে ভালোবাসতো ।প্রচন্ড মাত্রায় ।কোচিং এর ফাঁকে একবার দেখতে অপেক্ষায় থাকতো ।তবে হায়রে নিয়তি।তাকে কষ্ট দিয়ে মহুয়াও মজা পেলো । সেই থেকে স্বাক্ষরের পা পিঁছলে যাওয়ার শুরু ।
মেধাবী ছিলো সে ।স্বপ্ন ছিলো বুয়েটে পরার ।তবে তার দুনিয়া তছনছ হলো ।পরীক্ষাতেই বসলনা । সবাই স্বাক্ষরকেই দোষ দেয় ।হ্যা !দোষ তো তারই !অপেক্ষার প্রহর গোনা তো দোষই ! কষ্টে বয়ে বেড়ানো কে তো পাপ বলে ! তার কষ্ট কাউকে বুঝতে দেয়নি এটাই তার অপরাধ !সে অসুস্থ এটা তো তারই দোষ!সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে দু কদম হাটলে যন্ত্রনায় কুকড়ে যায় তবু মুখে হাসি ধরে রাখে এটা তো আসলেই অনেক বড় দোষ !সে যে মানুষ তা আর এখন মনেই হয়না ।
হঠাৎ জীবনে এক দেবদূত এসেছে । অন্ততঃ স্বাক্ষরের কাছে ফেরেশতার মতো নিষ্পাপ সে ।নিদ্রাকে পাগলের মতো ভালোবাসতে শুরু করেছে ।তাকে ঘিরে এখন বাঁচার স্বপ্নে ভর করতে চায় ।সে বিভোর নিদ্রার ভালোবাসায় । নিদ্রার ঠোঁটের কোণের একটুকরো হাসি তাকে বাঁচার নতুন মানে শেখায় । নিদ্রার অনেক কষ্ট ।সে চায় তা দুর করতে ।পারেনা ।তবে চেষ্টার ত্রুটি রাখেনা সে ।ব্যর্থ হয় সে নিজেও জানে । চেষ্টা থামেনা । স্বাক্ষর হয়তো তাকে চিরজীবনের জন্য আপন করে পাবেনা ।তবু স্বপ্ন দেখতে ভালো লাগে তার ।স্বপ্ন যদি মধুর হয় তা দেখে যদি অন্তর তৃপ্ত হয় তাহলে এটুকু গুরুদন্ড করতেই পারে সে ।
''অতঃপর তাহারা সুখে শান্তিতে বসবাস করিতে লাগলো'' ধরনের পরিসমাপ্তি না হোক অন্ততঃ একটা স্বপ্ন দেখে শান্তি পেলে তা থেকে নিজেকে বন্ঞ্চিত করা কি ঠিক ?
এসব ভাবতে ভাবতে সূর্যটা কখন যেনো দিগন্তে ডুবে গেছে ।মাথার উপর চাঁদ এখন অনেকটাই পরিপূর্ণ আলো ছড়াচ্ছে । এই হাঁটার আর শেষ নেই । আপনমনে কাঁদে আবার হাসে ।মানুষ তার দিকে তাকিয়ে তবে তার বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ নেই । সব গল্পের সুখী পরিসমাপ্তি হয়না কেনো ?বলতে পারেন ??
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৪৩
সময় মাহমুদ বলেছেন: আচ্ছা আমাকে ব্লগে লগ ইন করলে বলে
**উপর্যুপরি নিয়ম ভঙ্গ করায় আপনার উপর নজর রাখা হচ্ছে এবং এরফলশ্রুতিতে আপনার লেখা সরাসরি প্রথম পাতায় প্রকাশ হবে না। আপনার লেখা কেবল মাত্র আপনার নিজস্ব পাতায় প্রকাশিত হবে। তবেমডারেটর উপস্থিত থাকলে তার বিবেচনা সাপেক্ষে আপনার লেখা প্রথম পাতায় প্রকাশ করা হতে পারে। দয়া করে ব্লগ সাইটের নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে চলুন।**
আমি বুঝতেসিনা কি রুল ভাঙসি ।আর মোবাইল এ থাকার দরুন আমি নিয়মগুলোও পড়তে পারতেসিনা ।কেউ একটু হেল্প করবেন কি ?