![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
...
বাসা থেকে বের হওয়া হলো সেই সাত সকালে, ঘড়ির সাত সকাল। আমার জন্য আরও সকাল, বিশেষত শীতের দিন বলে। আমার সকাল হয় ফজরের সময় দেখে, ঘড়ির কাটা না। শীতের দিনে সকাল হয় দেরিতে। সূর্য উঠার সময় হয় হয় করছিল, কিন্তু মেঘে ঢাকা আকাশ বলে সূর্যটাও বুঝি বা মুখ থেকে লেপের ওম সরাতে চাইছে না। ট্রেইনে থাকতে থাকতেই ঝির ঝিরে বৃষ্টি। সরু বৃষ্টি কণারা ছুটে চলা ট্রেইনের জানালার কাঁচ ঘেষে যায়। মনে হয় ফটোশপে করা কোন ডিজিটাল প্যাটার্ন। সমান্তরাল গুটি গুটি বৃষ্টির দাগ, একটুও ভুল নেই কোথাও। প্যান্টের নিচের ফ্লেয়ারটা আজ একটু বেশিই। আবহাওয়া শুনে পোশাক পরার অভ্যাসটা আজও হলো না। ট্রেইন থেকে নেমে ভেজা রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে ফ্লেয়ার ভিজে যাওয়া দেখলাম। শীতে কাঁপাও শুরু করেছি বুঝিবা একটু একটু। কাজল দেই না প্রতিদিন, আজ কি মনে হতে দিলাম। মাশকারাও ছুঁইয়েছি একটু। বৃষ্টির বুঝি সেটাও সহ্য হচ্ছে না। হিংসা? আচ্ছা, বৃষ্টি কি মেয়ে? আমি কখনও ছাতা আনি না। আমার খুব বিরক্ত লাগে। সারাদিন যখন ইউনিতে থাকতে হবে, ছাতার আড়ালের সুযোগে শুকনো কাপড়ের আইডিয়াটা ভালই, কিন্তু ভেজা ছাতা ব্যাগে বয়ে নিয়ে বেড়ানোর কথা চিন্তা করলেই ততটুকু ত্যাগ স্বীকার করতে রাজি হয়ে যাই। সেন্ট্রাল স্টেশনে একটু কেমন কেমন লাগল, সব বুটেড সুটেড মানুষেরা শুকনো কাপড়ে কাজে যাওয়ার ব্যপারে বদ্ধপরিপক্ক। আকাশের চেয়েও বড় ছাতার আড়াল মাথার উপর। রাস্তা পার হওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে পাশের জনের ছাতায় ঠুকাঠুকি লাগলে বিরক্ত হয়ে পাশ ফিরে তাকায়। ছাতা-যুদ্ধ। ইউনিতে আসলে অবশ্য অতটা একা একা লাগে না। আর্টসের কিছু মেয়ে মেকআপ গলে পড়া থেকে বাঁচতে মাথায় ছাতি দিয়েছে। বাকি সবাই চুলে হীরক-দানা নিয়ে নির্বিকার হেঁটে বেড়াচ্ছে। হাতে কফির কাগুজে কাপ। লোভ হলো খুব। কিন্তু কফি খাওয়া বাদ দিয়েছি। কফি পরবর্তী মুখের গন্ধ খুবই বিরক্ত লাগে। তাছাড়া, কোন বস্তু আমাকে ডোপামিনের লাঠি হাতে চালিয়ে বেড়াচ্ছে, তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে, ভাবতে ভালো লাগে না। কখনও সখনও খাবো না, তা অবশ্য দিব্যি দেই নি। কারণ, কফি আমার খুব প্রিয় বস্তুগুলোর একটা। অতএব কফিহীন আমি জমে যাওয়া হাতের আঙ্গুল, পায়ের পাতা আর নাকের ডগা নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে বৃষ্টির উপর খুব বিরক্ত হয়ে গেলাম। উল্টা মানুষ, ইমুর আজ আমার ইউনিতে আসার কথা। এমনিতেই নাকি সেন্ট্রাল স্টেশনে আসলে ওর মাথা ঘুরায়। বৃষ্টিতে ভেজা ঘোলাটে বৃষ্টিতে হারিয়েই যাবে নির্ঘাত। যেই মেয়ে আশি ডলার ব্যাংক থেকে তোলার সাথে সাথে হারিয়ে ফেলতে পারে, তাকে বৃষ্টির মধ্যে আমাদের ইউনি খুঁজে আসার ব্যপারে বিশ্বাস করার প্রশ্নই আসে না। ইউনি থেকে আসতে একটু দেরি হলেই মা যেমন খুব চিন্তিত হয়ে বার বার ফোন করে জ্বালিয়ে মারে, সেই মার্তৃত্বে পরাভূত হয়ে ইমুকে ফোন করে বসলাম একাধিকবার। ফোন করতে করতেই লাইব্রেরি লনে পৌঁছলাম। মুহূর্তেই সব বিরক্তি হুট করেই উধাও। ধূসর আকাশ থেকে খুব সূক্ষ্ম কাঁচের গুঁড়ো ফেলছে কেউ, চালুনি দিয়ে মেপে মেপে। লনের কলাপাতা রঙের কোমল ঘাসের কার্পেটের উপর পড়তেই মিলিয়ে যাচ্ছে কোমল বৃষ্টিধারা। দেখতেই ইচ্ছা করে হাত বাড়িয়ে ছুঁয়ে দিতে।
শুনছি জশ গ্রোবানের 'রিমেম্বার হোয়েন ইট [wjsK= Click This Link '।
২| ১৫ ই আগস্ট, ২০০৭ সকাল ৯:৩৬
আবূসামীহা বলেছেন: দক্ষিণ গোলার্ধে কি এখনো শীতকাল? শেষ হয় কোন মাসে?
৩| ১৫ ই আগস্ট, ২০০৭ সকাল ৯:৪৯
কাল-পুরূষ বলেছেন: সাজু-গুজুটা তো মেয়েদের জন্যই।
৪| ১৫ ই আগস্ট, ২০০৭ সকাল ১০:০২
হাসান বলেছেন: ভাল লাগল, গতকাল সকালে এখানেও হালকা বৃষ্টি হচ্ছিল। হাতে বেশ লম্বা "অাকাশের চেয়েও বড়" একটা ছাতা ছিল, তবুও খুলতে মন চাইছিল না। টিপটিপ করে পড়ছিল, বেশ উপভোগ করছিল। হঠাত মনে পড়ল আমি উপভোগ করলেও পিঠে যাকে বহন করছি সে হয়তোবা সহ্য করবে না, অগত্যা ছাতা খুলেই অফিসে রওনা হলাম।
৫| ১৫ ই আগস্ট, ২০০৭ সকাল ১০:৪২
মাহমুদ রহমান বলেছেন: "আমি কখনও ছাতা আনি না। আমার খুব বিরক্ত লাগে। সারাদিন যখন ইউনিতে থাকতে হবে, ছাতার আড়ালের সুযোগে শুকনো কাপড়ের আইডিয়াটা ভালই, কিন্তু ভেজা ছাতা ব্যাগে বয়ে নিয়ে বেড়ানোর কথা চিন্তা করলেই ততটুকু ত্যাগ স্বীকার করতে রাজি হয়ে যাই।"............. মিলে গেছে। তবে আরও একটা ব্যাপার হল, খুব বেশি ছাতা হারিয়ে ফেলার রেকর্ড আছে। এটাও ছাতার প্রতি বিরক্ত হবার আরেকটি কারন।
৬| ১৫ ই আগস্ট, ২০০৭ সন্ধ্যা ৬:২৬
সন্ধ্যাবাতি বলেছেন: হাসান,
আমার সব কিছু ভিজে চুবুচুবু হয়ে যায়, পরে খুব পস্তাই। এই যে সেদিন বেখেয়ালে ফোন ভিজালাম। শাওয়ারে নিয়ে ঢুকি মাঝে মাঝে, দিব্যি চুবানি খায়। তাই ব্যাগের কিছু মাইন্ড করবে এটাও ছাতা নেয়ার জন্য আমার ক্ষেত্রে গুড এনাফ এক্সকিউজ না!
মাহমুদ রহমান,
আমার অবশ্য ছাতা হারানোর রেকর্ড নেই একটাও। ছাতা নিলে সেটা ফিরিয়ে আনবোই--এই রকম একটা প্রতিজ্ঞা করে ঘর থেকে বের হই )
পড়ার জন্য ধন্যবাদ সবাইকে।
৭| ১৫ ই আগস্ট, ২০০৭ রাত ১১:২৪
ফারহান দাউদ বলেছেন: ছাতা নিয়ে ঘুরার মত বিরক্তিকর কাজ দুনিয়াতে ২টা নেই,তার চেয়ে বৃষ্টিতে ভেজা অনেক ভালো।দেশে এখন অবশ্য রোজ বৃষ্টি,কাজেই আধাভেজা হয়ে ক্লাসে বা হলের রুমে বা ক্যাফেটেরিয়াতে বসে থাকা নিত্যকার রুটিন হয়ে গেছে।বন্ধুরা বিরক্ত হয়,মনে হয় পড়াশোনার চাপে বৃষ্টিতে ভেজাটা কঠিন হয়ে গেছে আজকাল,সাথে থাকা ফাইল বা বইগুলি ভেজার ভয়ে,নয়তো আসল প্রেমিকার হাত ধরে বসে থাকাটাই ভালো মনে করে বৃষ্টিমেয়ের শীতল হাত ধরার চেয়ে
৮| ১৬ ই আগস্ট, ২০০৭ রাত ১২:০০
রঙধনু বলেছেন: আপু তোমার ব্লগে আগেও ঢু মেরেছিলাম একদিন।সেদিন ভাল লেগেছিল।আজও ভাল লাগাটা কনটিনিউ করালে।
৯| ১৬ ই আগস্ট, ২০০৭ রাত ১২:০৩
রঙধনু বলেছেন: আমার প্রিয় পোষ্টের তালিকায় তোমার এই লেখাটি রাখলাম।
১০| ২৩ শে আগস্ট, ২০০৭ রাত ৩:২৭
মাহবুবা আখতার বলেছেন: চমৎকার লেখা হয়েছে । ৫ দিলাম।
আমার ছাতাটা (খুব কিউট ছিল)। অন্য কলেজ দেখে হম্বি তম্বি করতেও পারিনি ফেরত পেলাম না আর। আমার অবশ্য ছাতা নিয়ে বৃষ্টিতে হাঁটতে ভালোই লাগে (রোদে নয়)।
১১| ২৩ শে আগস্ট, ২০০৭ সকাল ১১:৪৯
নাজিরুল হক বলেছেন: প্রায় দুই মাস আগে আপনার জিমেইলে একটা মেইল করেছিলাম। সে মেইলটা এড্রেসটা কি ব্যাবহার করেন না? (পোষ্টের প্রসংগ ছারা মন্তব্য)
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই আগস্ট, ২০০৭ সকাল ৯:১৩
পাশা বলেছেন: সুন্দর লেখা।
"আর্টসের কিছু মেয়ে মেকআপ গলে পড়া থেকে বাঁচতে মাথায় ছাতি দিয়েছে।"
আসলেই আর্টসের মেয়েরা সাজুগুজু একটু বেশি করে। আমাদের এখানেও।