![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
I am tension free about myself but not about others and you.
দেশে বিভিন্ন জায়গায় জামাত শিবির ন্যক্কারজনক হামলা চালিয়েছে, তবে সবচেয়ে লক্ষনীয় হচ্ছে তাদের হামলার লক্ষবস্তু গুলো। লক্ষবস্তু গুলো হচ্ছে, শহীদ মিনার, গণজাগরণ মঞ্চ এবং আমাদের রাষ্ট্রীয় প্রতীক আমাদের জাতীয় পতাকা। শহীদ মিনারে ভাংচুর ও জাতীয় পতাকা পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় জাতি স্তব্ধ হয়ে গেছে। জামাত শিবিরের এই কান্ডে বাংলাদেশের হৃদয় ভেঙ্গে গেছে। অন্তরে ক্রমাগত রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এভাবে দেশের ভিতরে দেশে বসবাসকারীদের দ্বারা জাতীয় পতাকা পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনা সরাসরি রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বে আঘাতের শামিল। আর এমন ঘটনা পৃথিবীতে সম্পূর্ণ বিরল, অকল্পনীয়। ঘটনার কারন হচ্ছে, ইসলাম অবমাননার দায়ে ধর্মপ্রাণ (!) মুসলমানদের প্রতিবাদ মিছিল। কোন ধর্ম ও মানুষের আবেগ নিয়ে ছেলেখেলা করা অবশ্যই অন্যায় ও গর্হিত কাজ। কিন্তু, সেইজন্য কায়কে হত্যা করা আরো জঘন্য কাজ। তাতে আরো হিংসা ও প্রতিহিংসার সৃষ্টি হয়, যুক্তিভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্টার চেষ্টা সম্পুর্ণ ভেস্তে যায়। তারপরেও প্রতিবাদ একটি রাজনৈতিক ও নাগরিক অধিকার। এই রকম প্রতিবাদ হলে আমার বলার কিছু ছিল না। কিন্তু ঘটনাটা ছিল পরিকল্পিত সহিংস আক্রমণ। তাই আক্রমনের মূল লক্ষবস্তু ছিল বাংলাদেশের ভিত্তিস্তম্ভগুলো। এইজন্য ই গণজাগরন মঞ্চে হামলা চালিয়েছে কারণ এই মঞ্চে রাষ্ট্রদ্রোহীদের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে। কিন্তু তাই বলে শহীদ মিনার ও জাতীয় পতাকা?? একটু ঘভীর ভাবে চিন্তা করলেই কারণ খুজে পাওয়া যায়, তবে তার জন্য একটু ইতিহাস জানার প্রয়োজন আছে। ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতবর্ষ ভেঙ্গে ১৯৪৭ সালের আগষ্ট মাসে পাকিস্তান ও ভারতের জন্ম হয়। সাংস্কৃতিক, ভৌগোলিক সহ সকল ধরণের পার্থক্য থাকার পরেও দ্বিজাতিতত্বের উপর ভিত্তি করে শুধু ধর্মীয় সমতার কারণে সাবেক পূর্ব বঙ্গ (বর্তমান বাংলাদেশ)কে পাকিস্তানের সাথে জুড়ে দেয়া হয়। এত ব্যাতিক্রম থাকা সত্বেও এই বাংলার মানুষ চেষ্টা করেছে পশ্চিম পাকিস্তানীদের আপন করে নেয়ার জন্য। কিন্তু তারা কখনো বাংলাকে আপন করে নিতে পারেনি বরং তারা এই বাংলাকে জাতি হিসেবে নিচু করে দেখছে অবমুল্যায়ন করেছে, এই কথাটা একজন পাকিস্তানি লেখক স্বীকার করেছেন অল্প কিছুদিন আগে শাহবাগ নিয়ে তার কলামে। তারা কখনো বাংলাকে বিশ্বাস করতে পারেনি তাই সবসময় বাংলাকে পঙ্গু করে দিয়ে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করা তারই ফলাফল। শুধু তাই নয়, তারা অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক সকলভাবে বাংলাকে পঙ্গু করার চেষ্টা করেছে। তার ছোট্ট একটা উদাহারণ দিচ্ছি, ১৯৭০ এর জলোচ্ছাসে যখন বাংলার ১০ লাখের ও অধিক মানুষ মারা যায় কেন্দ্রীয় সরকার তখন ন্যূনতম কোন সাহায্য নিয়ে এগিয়ে আসেনি যদিও বিভিন্ন আন্তুর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা এসেছিল। তাছারাও তারা কখনো বাংলাকে বিশ্বাস করতো না তাই ১৯৭০ এর নির্বাচনে আওয়ামীলীগ নিরঙ্কূশ সংখ্যাঘরিষ্টতা পেলেও শুধু বাংলা শাসনের কেন্দ্রে চলে আসবে ভেবে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নি। ১৯৫২ সালেই এই বাংলার মানুষ অনুধাবন করেছিল যে পশ্চিম পাকিরা এই বাংলার মানুষ ও সংস্কৃতিকে বিশ্বাস করে না। তাই ৫২ তেই সর্বাত্মক প্রতিরোধ করেছিল যার জন্য জীবন দিতে হয়েছিল। এই জীবনের বিনিময়ে অর্জিত হয় নিজের ভাষায় কথা বলার অধিকার। তাই শহীদমিনার আমাদের ভিত্তিস্তম্ভ। আর এই শহীদমিনারে আঘাত করা মানে বাংলাদেশের ভিত্তিতে আঘাত করা। কিন্তু এতকিছু করেও পাকিরা তাদের স্বার্থ রক্ষা করতে পারছিলনা। তাদের স্বার্থ ছিল এই বাংলার সম্পদ। যখনই তারা তাদের স্বার্থ রক্ষায় ব্যার্থ হল তখনই ধর্মকে উসকে দিল। বিহারী ও সুবিধাভোগী দালালদের উসকে দেয় আর তাতে নেতৃত্ব দেয় সেদিনের জামায়াত ই ইসলাম। তারা মুক্তিকামী মানুষকে নৃশংস নির্যাতনের মাধ্যমে সর্বহারা করে ছাড়ে। সকল বাঙ্গালী মুসলমান তাদের এই ষড়যন্ত্র বুঝতে পারলেও এই দালালেরা সেটা অনুধাবন করে নি, করতে চায় নি। তারা মুক্তিকামী মানুষের পূণ্যভূমি বাংলাদেশ হতে দিতে চাইনি। তাই ৫২ তে যেভাবে শহীদ মিনার গুড়িয়ে দিয়েছিল, ৭১ এ জাতীয় পতাকা পুড়িয়ে দিয়েছিল । আজও সেই দোসর চক্র যারা বাংলাদেশের মূলনীতিতে বিশ্বাস করেনা, তারাই শহীদমিনার ভেঙ্গে দিয়েছে, জাতীয়পতাকা পুড়িয়ে দিয়েছে। সেইদিনের পাকি ও আজকের জামায়াত শিবিরের কোন বৈশাদৃশ্য নেই। তারা একই শুধু সময়ের পার্থক্য। তাই আজ ধর্মভীরু মানুষকে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে উসকে দিচ্ছে। বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ ও সভ্য সমাজদেখে তাদের ইর্ষা হয়। তাদের পূর্বপ্রজন্মের দেশ পাকিস্তানের মত তারা এই দেশকে উগ্রবাদীদের দেশে পরিণত করতে চায়। তারা এই বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানাতে চায় যাতে, বিশ্ববাসী এই দেশকে জঙ্গি ও ব্যার্থ রাষ্ট্র ঘোষনা করে সকাল সন্ধ্যা দ্রোণ হামলা করে। যেন তাদের উত্তরসূরিরা খুশি হয় এই ভেবে যে তারা বাংলাকে শেষ করতে পেরেছে। তাই, সাধারণ মানুষদের বুঝতে হবে যে ধর্মের মিল থাকা সত্বেও পাকিস্তান ভেঙ্গে যায়। তাই মানবিকতা, মানসিকতার মিলই বড় মিল ধর্মই একমাত্র বিষয় নয়। আর যারা লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত পতাকা পুড়িয়ে দেয় তাদের উদ্দেশ্য কখনো ধর্ম নয় কেবলই রাজনৈতিক স্বার্থ হাসীল করা। যখনই স্বার্থ হাসিল হয়ে যাবে তখনই সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারবে। এখন সরকারকে শক্ত অবস্থানে গিয়ে সার্বভৌমত্বে আঘাতের কঠিন বিচার করতে হবে সাথে এই দেশে এদেরকে নিষিদ্ধ করতে হবে। আর বিএনপির কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করছি, সর্বসাধারণ যখন এই প্রেতাত্বাগুলোর বিচার করার চেষ্টা করে যাচ্ছে তখনই এই দলটি এদের পৃষ্টপোষকতা করে যাচ্ছে। এমনকি পতাকা পুড়িয়ে ফেলার পরেও দলটি পুলিশের শাস্তি দাবি করছে কারণ পুলিশ এই অপরাধীদের প্রতিহত করার চেষ্টা করেছে। এই দেশের মানুষ আপনাদের ক্ষমা করবেনা, আপনারা অতীতের মত বেঈমান আর বিশ্বাসঘাতক।
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৩৬
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: যেখানে মানবতা বিবর্জিত সেখানে দেশ প্রিতি কি আর থাকে।