নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কার্ণিশ ভাঙ্গা জানালার ফাঁক দিয়ে রাতের আকাশের যেটুকু অংশ দেখা যায়, অইটাই আমার পৃথিবী।
বিধিতে লিখা আছে, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারি। মানে রিপর্টেবল টু দ্য পিপল। জনগণই তাদের পারফর্মেন্স ইভালুয়েট করবেন। কিন্তু প্রজাতন্ত্রের কর্মচারিদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণে শেখানো হয়; খবরদার, জনগণের সাথে দূরত্ব বজায় রেখে চলতে হবে। মনে রাখতে হবে, সেবা করতে নই, শাসন করতেই পাঠানো হচ্ছে। বিধিতে লিখা নেই, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারিদের জনগণ স্যার সম্বোধন করবেন। কিন্তু স্যার বলবার জন্য বাধ্য করার কায়দা কসরত বুনিয়াদি প্রশিক্ষণেই শেখানো হয়।
তোরাব আলী সিকদার হ্যাজেসে আগুন জ্বালিয়ে পিটুইটারি গ্ল্যান্ডে তা’ দিচ্ছেন।
তাঁরা জনগণের জন্য কাজ করেন। সুতরাং তাঁরা জনগণ, বিশেষ করে, অসহায়, দুঃস্থ, দরিদ্র, দলিত, যাদের কাছে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারিরা যান না, তাঁদের কাছেই তাঁরা যান। বাহ্! এত্তো ভালো। তাঁরা সরকারি বাজেট জনগণের সামনে পেশ করার জন্য তাগিদ দেন। কিন্তু নিজেদের বাজেট কোনদিনও জনসাধারণের সামনে উপস্থাপন করেন না। কারণ, জনগণ, বিশেষতঃ অসহায়, দরিদ্র জনগোষ্ঠী তাঁদের পণ্য। ভালো তো, ভাল না?
তোরাব আলী সিকদার এবার সবজিতে তা’ দিলেন। কারণ গার্লফ্রেন্ড কাল রাতে সবজি-টব্জি খাইতে বলছে। ঘুম-টুম না কী ইদানিং ঠিকমতন হচ্ছে না। সবজি খেলে টইলেট ভালো হয় তো!
ভদ্রলোক পায়ের উপর পা রেখে আয়েশে বসে আছেন থ্রিস্টার হোটেলের রিসিপশন লাউঞ্জে। টেকু মাথায় বৈদ্যুতিক বাল্বের প্রতিসরণ। এমন একজন লোক তোরাব আলী সিকদার ‘তের পান্ডা এক গুন্ডা’ নামের একটা বাংলা সিনেমায় দেখেছিলেন। ডিপজলের সাথে সাইড ক্যারেক্টার। তোরাব আলী সিকদার ভদ্রলোকের পাশের সিটে বসে অফিসের জরুরি আলাপ সারছিলেন। দেড় মিনিট পর। হঠাৎ আরেক ভদ্রলোক এসে তোরাব আলী সিকদারকে হেঁচকা টানে টেনে তুলে বললেন অইটাতে বসেন। এমন চেহারার একজন লোক তোরাব আলী সিকদার ‘রান’ নামের একটা সিনেমায় দেখেছিলেন। কাউয়া বিরিয়ানি খাইছিল। কিন্তু এই ভদ্রলোকের কোমরে একটা মানুষ মারার দারুণ কর্কশ যন্ত্র আছে। গায়ে চড়ানো জলপাই রঙের পোষাক।
এবার তোরাব আলী সিকদার সোনালি শিশিরে চুমুক দিলেন। ভারি ওষ্ঠ আর গভীর চোখ নিয়ে বাংলা সিনেমায় দেখা সেই ভদ্রলোকের দিকে তাকালেন। কই, তাঁর গায়ে জলপাই রঙের জামা নেই তো! চোখ রগড়ালেন তোরাব আলী সিকদার। আবার তাকালেন। এবার দেখলেন আছে। তবে জলপাই রঙের জামা না। পোলো শার্টের বাঁ পাশের বাঁ ব্রেষ্টের কিঞ্চিত উপরে। পুলিশ। খুলনা রেঞ্জ।
তোরাব আলী সিকদার এবার সব ঝেড়ে ফেলে হাঁটা ধরলেন। বাইরে দুধ জ্যোৎস্না। তখন রবীন্দ্রনাথ গাইছিলেন-
‘যে কথাটি বলব তোমায় ব'লে
কাটল জীবন নীরব চোখের জলে
সেই কথাটি সুরের হোমানলে
উঠল জ্বলে একটি আঁধার ক্ষণে—
তখন তুমি ছিলে না মোর সনে ॥’
তিন মাস পর। পত্রিকায় এলো তোরাব আলী সিকদার নামের একজন সন্দেহভাজন আইএস সদস্যকে ‘পিকক’ থেকে গ্রেফতার করেছে বাংলা সিনেমায় দেখা সেই ভদ্রলোক। পিকক থেকে? পিকক থেকেই।
তিন মাস সাড়ে তিনদিন পর। পত্রিকায় এলো তোরাব আলী সিকদার নামের সেই সন্দেহভাজন আইএস সদস্য বন্দুকযুদ্ধে মারা গেলেন।
তিন মাস সাড়ে চারদিনের মাথায় পত্রিকায় এলো তোরাব আলী সিকদার ব্যাক্তি জীবনে বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারি ছিলেন।
তোরাব আলী সিকদার এবার সব ঝেড়ে ফেলে হাঁটা ধরলেন। বাইরে দুধ জ্যোৎস্না। সেদিন তোরাব আলী সিকদার কাকে ভালো বলবেন সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছিলেন।
২| ১২ ই জুলাই, ২০১৬ সকাল ১০:২৭
পবন সরকার বলেছেন: আমিও বুঝি নাই।
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:১৪
ঢাকাবাসী বলেছেন: মাথামুন্ডু কিছু বুঝলুমনা।