নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কার্ণিশ ভাঙ্গা জানালার ফাঁক দিয়ে রাতের আকাশের যেটুকু অংশ দেখা যায়, অইটাই আমার পৃথিবী।
হতে তো পারে আজ রাতই জীবনের শ্যাষ রাত, জেনেও যারা আগামীকালের কর্ম-পরিকল্পনা সাজায়
এলার্ম দিয়ে রাখে খুব ভোরে উঠবে বলে, এটাই মুনাফেকি, তাদের অন্তর ইলাহী বিমুখ
আজ রাতই তো হতে পারে আপনার শ্যাষ রাত, মেনে যারা জীবনের সব মুহূর্তকে উপভোগ করেন
এবং প্রতিটি মুহূর্তকে জীবনের শ্যাষ মুহূর্ত জেনেই কাজ করেন, তারা বিশ্বাসী।
তাদের আগামীকাল নিয়ে কোন মাথাব্যথা নেই
তারা জানে তাঁর হুকুম ছাড়া গাছের একটা পাতাও নড়ে না
এরপর স্ক্রিনে ভেসে উঠল এক অভূতপূর্ব
সুন্দরী যার কণ্ঠণালী দিয়ে বয়ে যাওয়া জলধারা দুধের নহরের মতন পরিলক্ষিত হয়
দু’হাত প্রসারিত করে স্বাগত জানাচ্ছে
কোমল পেলব সুন্দরী যেখানে দাঁড়িয়ে আছে ঠিক তার পেছনে খরগোশের চামড়া দিয়ে বানানো প্রকাণ্ড বিছানা
নানান রঙের বোতল জাত পানীয়, সুদৃশ্য ঝাড়বাতি, থরে থরে সাজানো দুধের গেলাস
এইসব দৃশ্য যখন প্যানিং হচ্ছিল, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে দেবদূতের কণ্ঠে ভেসে আসছিল-
আর জীবনের শেষ মুহূর্তকে উপভোগ করার জন্য আসুন . . .
মাত্র হাজ্বী আব্দুল গাফফার মণ্ডল ঈশার নামাজ সমাপ্ত করে বাসায় এলেন।
আট-টার সংবাদের বিরতিতে প্রচারিত বিজ্ঞাপণ হাজ্বী আব্দুল গাফফার মণ্ডলের
এতদিনের বিশ্বাসে যে খুঁত ছিল তা ধরিয়ে দিল।
আজ রাতই তো হতে পারে জীবনের শ্যাষ রাত, আগামীকালের বিষয়ে তার হাত
জপতে জপতে হাজ্বী আব্দুল গাফফার মণ্ডল আর দেরি না করেই দৌড় দিলেন কাকলীর হোটেল লাভ ইন এ
তোরাব আলী সিকদারের ও লেভেল পড়ুয়া ছেলেটা হঠাৎ বায়না ধরল-
তার জন্য আজকে আট-দশটা চে’র ছবিওয়ালা টি-শার্ট কিনে আনতে হবে।
তোরাব আলী সিকদার বেজায় খুশি।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় মার্ক্সীয় আদর্শ লালন করে গেছেন নিবিষ্ট চিত্তে
শোষিত শ্রেণির অধিকার আদায়ে মিছিলের সামনে থেকে স্লোগান ধরেছিলেন,
যদিও এখন দুইটা বিশালাকৃতির গার্মেন্টস’র মালিক হওয়ায় আর সেসবে মনোযোগ দেয়া হয়ে উঠে না।
তোরাব আলী সিকদার দশটা চে’র ছবিওয়ালা টি-শার্ট এনে ছেলের হাতে দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,
এডিডাস, ডু ইউ নো হু ওয়াজ দিজ পারসন? হেই বাডি, ইউ পুওর ম্যান, হি ইজ দ্যা বস অব অল দ্যা ফ্যাশন আইকনস!
তোরাব আলী সিকদার শুধু মনে মনে বললেন, ইয়েস, হি ইজ!
জয়ন্ত বাবু সবে পুজোপাঠ সেরে টিভিতে দেব বাবার বেদ আলোচনা শুনছিলেন
বিরতিতে দেখলেন বাবা দর্দ বটিকা আর দাঁতের মাজনের বিজ্ঞাপণ দিচ্ছেন
জয়ন্ত বাবুর ছেলে জিজ্ঞেস করল- বাবা, এই গুরুদেব বাবাকে তো শাস্ত্র আলোচনা করতে দেখেছিলাম একটু আগে
এখন বুঝি উনি দাঁতের মাজন ও বেচেন!
জয়ন্ত বাবু দুটো দর্দ বটিকার কৌটো আর দাঁতের মাজনের শিশি তড়িগড়ি করে কিনে নিয়ে এলেন
আর আমাদের সকল ভোর ও সন্ধ্যার সুদৃঢ় বিশ্বাসসমূহ বিজ্ঞাপণের প্লটের মালিকেরা কিনে নিলেন।
২| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১১
চাঁদগাজী বলেছেন:
"আজ রাতই তো হতে পারে জীবনের শ্যাষ রাত,"
-আমার মন্তব্য পড়ার সময় পেয়েছিলেন, নাকি তার আগেই কাপুত?
৩| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৬
চাঁদগাজী বলেছেন:
"আজ রাতই তো হতে পারে জীবনের শ্যাষ রাত,"
-খাবারে ফরমালিন এড়াবেন, সকালে ঘুম থেকে উঠার পর হালকা ব্যায়াম করবেন, মানুষের ক্ষতি করার চেস্টা করবেন না, এতে বেশী দিন বাঁচবেন।
৪| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪১
শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন:
জয়ন্ত বাবুর ছেলে জিজ্ঞেস করল- বাবা, এই গুরুদেব বাবাকে তো শাস্ত্র আলোচনা করতে দেখেছিলাম একটু আগে
এখন বুঝি উনি দাঁতের মাজন ও বেচেন!
সব সাধুরা শুদ্ধ নয় কিছু ব্যতিক্রম ও হয় আপনার সেই রকম হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায়না।
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:০২
শামীম সরদার নিশু বলেছেন: সুন্দর একটি পোস্ট।