নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হ-য-ব-র-ল জীবন নিয়ে চলছি।

স্বপন খাঁন

মাঝেমধ্যে নিজেকে কেন জানি প্রতিভাবান বলে মনে হয়! কেন মনে হয়, তা খুঁজতে খুঁজতে প্রতিভা শেষ করে ফেলছি।

স্বপন খাঁন › বিস্তারিত পোস্টঃ

সতীদাহ প্রথা

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:৫৮

হিন্দুেদর সতীদাহ প্রথা:

সতীদাহ প্রথা ছিল হিন্দু ধর্মান্ধতার এক নিষ্ঠুর পৈশাচিক প্রথা। ধর্মের দোহাই দিয়ে মৃত স্বামীর জ্বলন্ত চিতার আগুনে স্ত্রীকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হতো। ব্রিটিশ শাসন প্রবর্তনের পর ওয়ারেন হেস্টিংস কয়েকজন ব্রাহ্মণের সাহায্যে হিন্দু আইন সংকলন করেছিলেন তাতে সতীদাহ প্রথার মাহাত্ম্য বর্ণনা করে বলা হয়েছে, "পতির চিতায় পড়ে মরলে সতী সাধ্বী মানুষের গায়ে যত লোম, ততো বছর অর্থাৎ সাড়ে তিন কোটি বছর পতি সহ সুখে স্বর্গে বাস করবে। তার পতির পিতৃমাতৃ উভয় কূলের তিন পুরুষ পাপ মুক্ত হবে। সহমরণের মত পত্নীর আর কোন মহৎ কর্তব্য নেই। এ জন্মে এটি অবহেলা করলে পর জন্মে তার পশু জন্ম হবে।" ১৮২২ সালে ২০ মার্চ সংখ্যা সামাচার দর্পণে প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী ভারতবর্ষে সতীদাহের ঘটনা ১৮১৫ সালে ৩৮০, ১৮১৬ সালে ৪৪২, ১৮১৭ সালে ৬৯৬টি, এসব সতীদের বেশিভাগেরি বয়স ছিল মাত্র ২০ বছর এবং তার কমও অনেকের ছিল। ১৮১৫ থেকে ১৮২৮ সালের মধ্যে কেবল মাত্র অবিভক্ত বাংলায় ৮,১৩৪টি সতীদাহের ঘটনা ঘটে। উল্লেখযোগ্য অমানবিক ঘটনা ঘটে ১৮১৮-১৮২০ সালের মধ্য যারা সতী হয়েছিল। এদের মধ্য তিনজনের বয়স ছিল মাত্র ৮ বছর। বাকি ৪৩ জনের বয়স ছিল নয় বছর থেকে ষোল বছরের মধ্যে। রাজা রামমোহন রায়ের নেতৃত্বে সতীদাহ প্রথার বিলোপ সাধনের জন্য আন্দোলন শুরু হয় এবং ১৮২৯ সালের ৪ ডিসেম্বর লর্ড ব্যান্টিঙ্ক সতীদাহ প্রথা উচ্ছেদ আইন প্রণয়ন করেন এবং এর বিরুদ্ধে দন্ডাদেশ জারি করেন। এর বিরুদ্ধে প্রাচীন পন্থি গোঁড়া হিন্দু সমাজ প্রতিবাদ করেন। হেস্টিংস তাদের প্রত্যাখ্যান করেন। তারা পরবর্তীতে বিলেতের প্রিভি কাউন্সিলে আপিল করেন। রাজা রামমোহন রায় বিভিন্ন যুক্তিতর্কের সাহায্যে সতীদাহ প্রথা উচ্ছেদের পক্ষে যুক্তি প্রদর্শন করেন। এর ফলে চরমপন্থি হিন্দুদের আপিল বরখাস্ত হয় এবং চিরদিনের জন্য সতীদাহ প্রথা বন্ধ হয়।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৭:২৩

কি করি আজ ভেবে না পাই বলেছেন: বিভৎস!!!

২| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:১৮

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: সমস্ত প্রথা রীতিনীতি ও যুগ বিশেষের আইন-কানুনের পিছনে থাকে ঐতিহাসিক ঘটনাবলী । ইতিহাস বাদ দিয়ে তার বিচার করলে অবিচার করা হয় তাই সতীদাহ প্রথার বিষয়ে বলতে গেলে পূর্বাপর কিছু অবস্থা না বললে তা বুঝা কঠিন হবে বলেই সেই সময়ের অবস্থার অবতারনা করতে হচ্ছে । ভারতের ইতিহাস আধুনিক কালের মত লিপিবদ্ধ করা নাই । ভারতের ও হিন্দু ধর্মের ইতিহাস জানতে হলে সেই সময়ের ধর্ম ও সাহিত্য গ্রন্থ কিছু স্থাপনা ও প্রত্নতাত্মিক নিদর্শনের উপরে নির্ভর করতে হয় ।
ভারতের সনাতন ধর্ম পরবর্তিতে যা হিন্দু ধর্ম নামে প্রচারিত ও প্রচলিত হচ্ছে সেই দ্রাবিরের সময় হতে । তখনকার দ্রাবিড়রা ছিল মাতৃ পুজারক । কিন্তু তারা তা মূর্তি পূজার মাধ্যমে করত কিনা তার কোন নিদর্শন পাওয়া যায় নাই । পরবর্তিতে আর্যরা পিতৃ পুজা শুরু করে । অর্থাৎ দ্রাবিড়িরা ঈশ্বরকে দেখত মাতৃ শক্তি রূপে আযরা দেখা শুরু করে পিতৃ শক্তি ও মাতৃ শক্তি উভয় রূপে ।
একসময়ে এই হিন্দুরা গুন ও কর্ম অনুযায়ী ৪ ভাগে ভাগ হয় । পরবর্তিতে যা বংশ বা জন্ম সূত্রেই পরিচালিত হয় এবং তার নামকরন হয় । ব্রাম্মন (বুদ্ধিজীবি) , ক্ষত্রিয় (প্রশাসক) , বৈশ্য (ব্যবসায়ী)ও শুদ্র (শ্রমজীবি) এই চার নামে শুরু হয় জাতিভেদ প্রথা । এই জাতি প্রথার কঠোর প্রয়োগ সব চেয়ে বেশী ছিল উচ্চকাজ ও বিয়ের বিষয়ে ।
ভারত বর্ষের সভ্যতার ইতিহাস অনেক প্রাচীন । সেই প্রাচীন কাল থেকে দেখা গেছে এই হিন্দুরা বেশীর ভাগ নিরামিষ ভোজী হলেও তৃন ভোজী চতুষ্পদ প্রানী ও দ্বীপদ পাখী গুলোর মধ্যে কেবল পুরুষের মাংশ খাওয়া হতো । এই মতে সেই বৈদিক যুগ হতেই গরু ও ঘোড়ার মাংশ খাওয়ার বহু নিদর্শন পাওয়া যায় । ষাড় কৃষি কাজে অপরিহার্য হওয়ায় ও গো দুগ্ধ মাতৃদুগ্ধের বিকপ্ল হওয়ায় এবং এই গরুর মল মূত্র মানুষের জন্য উপকারী হিসাবে স্বীকৃত হওয়ায় গো মাংশ ভক্ষন ও গো হত্যা সম্পূর্ন রূপে পরিত্যাক্ত হয় । তুর্কি আক্রমনের পরবর্তি পর্যন্ত গো হত্যা দর্শন ও গো মাংশের ঘ্রান গ্রহনও অপরাধ হিসাবে বিবেচিত হতো ফলে এই পাপে অনেক হিন্দুকেই প্রায়শ্চিত্ত কিংবা ধর্মান্তরিত হতে হয়েছে বলে কিংবদন্তি রয়েছে । পরবর্তিতে তা কঠোর ভাবে পালন করতো হিন্দু সমাজের ব্রাম্মনরা । অর্থাৎ সময়ের প্রয়োজনে ধর্মের পরিবর্তন ও তা মেনে নেওয়া হিন্দু ধর্মের মূল নীতি ।
প্রাচীন ভারতীয় শাস্ত্রে সতীদাহ প্রথা নামে কোন শব্দের উপস্থিতি পাওয়া যায় না , তবে সহমরন শব্দ ও তার প্রয়োগ দেখা যায় । আপনারা নিশ্চয় বুঝতে পারছেন সতীদাহ ও সহমরন এক শব্দ বা প্রতিশব্দও নয় ।
১৩০০ শতাব্দিতে অশিক্ষত আলাউদ্দিন খিলজী (সম্রাট জালাল উদ্দিন খিলজীর মৃত ভাইয়ের ছেলে ) ছিলেন ভারতের সম্রাট । তিনি সাম্রাজ্য পরিচালনার জন্য আরব থেকে কিছু ইসলামী আইন বিশ্বেষজ্ঞ আনয়ন করেন । সেই সময়ে অমুসলিম প্রজাদের জন্য ২টি কর আইনের জন্ম হয় ১ ) নজর-এ –এ মরেচা ২ ) নজর-এ-বেওয়া ।
১ ) নজর-এ –এ মরেচা ঃ অমুসলিম প্রজাদের ছেলে বা মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার পারমিশানের নেওয়ার জন্য কর ।
২ ) নজর-এ-বেওয়া ঃ অমুসলিম প্রজাদের কোন নারী নিঃসন্তান অবস্থায় বিধবা হইলে তাহাকে স্বামী বা পিতার গৃহে রাখিবার জন্য বার্ষিক কর ।
এই দুই করের জন্য নির্দিষ্ট কোন অর্থের পরিমাপ ছিল না , সেই সময়ের পরগনার দেওয়ান বা কাজী যাহা ধার্য করিতেন প্রজারা তাহাই দিতে বাধ্য থাকিত । যাহারা সেই অর্থ দিতে অসমর্থ হইত, তাহাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হতো বা সেই কন্যা বা বধুকে বাজেয়াপ্ত করে হাউলিতে চালান করা হতো । এই সকল নারীকে যে সুরক্ষিত বাড়ীতে রাখা হতো তাহার নাম “হাউলি “বা “হাভেলী” ।
এই হাভেলীতে থাকা অবস্থায় সেই নারীদের যে বাচ্চা হতো সেই বাচ্চাদের নাম হতো “ নজরতরপের বাচ্চা”। সেই বাচ্চা ছেলে হলে তাকে ধর্ম শিক্ষা ও অস্ত্র শিক্ষা দিয়ে সেনাবাহীনিতে নিয়োগ দেওয়া হতো । আর মেয়ে বাচ্চা হলে তাদেরকে নর্তকী হিসাবে প্রস্তুত করা হতো ।
নজরে বেওয়া সম্মন্ধ্যে আবার ভিন্ন কাহিনীও জনশ্রুতি হিসাবে কিংবদন্তি আছে যে , কুমারী ও বিধবাদের সন্তান সম্ভবা বা সন্তান প্রসব হলেই কেবল তাদেরকে এই কর প্রদান করতে হতো । আর না দিতে পারলেই সেই মা ও বাচ্চা সহ হাউলীতে পাঠানো হতো । পরিশেষে সেই বাচ্চা ছেলে হলে সৈনিক মেয়ে হলে নর্তকী হিসাবে ভবিতব্য নির্ধারন হতো ।
এছাড়াও দীনেশ চন্দ্র সেন তার “বৃহৎ বঙ্গ পুর্বোক্ত” গ্রন্থ এবং “প্রাগুরু” নামক গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, “যে কোন রমনী ভাল নাচিতে ও গাহিতে পারিতেন তাহলে তার রক্ষে ছিল না । ময়মনসিংহ জেলার মুসলমান নবাবের নিযুক্ত এক শ্রেনীর লোক ছিল, যাদের উপাধি ছিল “সিন্ধুকী”। হিন্দু ঘরের রূপবতী ও গুনবতী রমনীদের ঠিকানা নবাব সরকারে জানিয়ে দেওয়াই তাদের কাজ ছিল । এর বিনিময়ে তারা বিস্তর জায়গীর পাইতেন” ।
“আবার কোন কোন সময় নবাবের লোকেরা বা সেই জায়গীরের লোকেরা বিভিন্ন যায়গায় ঘুরা ফিরা করতেন । তারা হিন্দুদের প্রাপ্ত বয়স্কা সুন্দরী কুমারী পাইলেন বল পুর্বক ধরিয়া লইয়া যাইত” ।
যাইহোক, সেই সময়ে বিভিন্ন অত্যাচার ও অনাচারের হাত থেকে বাচার জন্য “গৌরীদান” প্রথা চালু হয় । অর্থাৎ ঋতুমতি হওয়ার পুর্বেই বিয়ে দেওয়া প্রথাই গৌরীদান প্রথা । অথচ এই ভারতে স্বয়ংবর বিবাহের প্রথা চালু ছিল । মেয়ে আমন্ত্রিতদের মধ্য থেকে নিজের পছন্দ মত ছেলেকে বিয়ে করার পদ্ধতিই “স্বয়ংবর” প্রথা । কালের প্রভাবে স্বয়ংবর বিবাহ প্রথার ভারতে শুরু হয় গৌরীদান প্রথার বিবাহ পদ্ধতি ।
অর্থাৎ কুমারি মাতা হওয়া ও নবাবের লোলুপ দৃস্টির হাত থেকে বাচার জন্য শুরু হয়েছিল গৌরীদান প্রথা । আর বিধবা মাতা ও সুন্দরী বিধবাদের প্রতি মুসলিম জায়গীর ও নবাবের কুদৃস্টি / “নজরে বেওয়ার” হাত থেকে বাচার জন্য হিন্দু সমাজপতিরা সতীদাহ প্রথার প্রবর্তন করেছিলেন বলেই জানা যায় ।
এটা সত্য যে, ব্রাম্মনদের মতো অনেক সাধারন মানুষের নিকটও এই সতীদাহ প্রথা একটি অবশ্যপালনীয় ধর্মিয় অনুষ্ঠানে পরিনত হয়েছিল । আর তাই একদল যখন স্বামীহীন গৃহবধুকে সাদা শাড়ী পড়িয়ে, চুল কেটে, আতপ চাল খাইয়ে অনাকর্ষনীয় করে তুলতে তৎপর ছিল, অপর দিকে অন্যদল তখনো তার প্রিয় আত্মীয়টিকে মৃত্যুর করুন মিখে ঠেলে দিতে অনুতকন্ঠিত হতো । এই বষয়ে ক্ষিতিশ চন্দ্র মৌলিক বলেন – জনস্বার্থ বিরোধী বা অপ্রয়োজনীয় প্রথা যদি কেহ জনসমাজের উপর চাপিয়ে দেন, তবে সে প্রথা অল্প দিনেই লোপ পায় । ব্রাম্মনরা যে সকল বন্ধনী দিয়া সমাজকে বাধিয়া ফেলিলেন, তাহা আপদকালের জন্য বিধান – তাহা সর্বকালের জন্য নয় । জ্বর হইলে রুগীর ভাত খাওয়া বন্ধ হয়, পায়ে ঘা হইলে পঙ্খীরাজ ঘোড়াকেও দৌড়াইতে দেওয়া হয় না । তাহা কোন মতেই সর্বকালের জন্য নয় । অথচ শুধু সময়ের প্রয়োজনেই এই অমানবিক প্রথা প্রায় ৫০০ বছর হিন্দু সমাজে প্রচলিত ছিল । পরবর্তি ইতিহাস সকলেরই জানা।

৩| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:২৪

পুকু বলেছেন: this was a transition period of hindu religion at the time of muslim invasion. the inner beauty of hindu religion is that it transforms with the time no matter how difficult it is. there was many ugly traditions at that time which is difficult to analyse and understand at this present context but it overcomes with time and that is it's strength to survive so long . here is the difference between hindu and other religions. last not the list, hindus always welcome free thinking andcriticise their religion if it does not match with time.

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.