![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুরাদপুর মোড়ে বাসে উঠেই বিরক্ত হলাম। বসার কোন জায়গা নেই। কোনমতে বাসে উঠেই হ্যান্ডেল ধরে দাঁড়িয়ে পড়লাম।আমার আশেপাশে প্রচুর মানুষ দাঁড়িয়ে আছে।আমার কিছু দূরে তিন চারজন মেয়ে বসার জায়গা না পেয়ে হতাশ হয়ে এদিক সেদিক তাকাচ্ছে।আমার পাশে দাঁড়ানো এক মধ্যবয়সী ভদ্রলোক কার সাথে যেন উচ্চস্বরে ফোনে কথা বলছে। তার সামান্য দূরে একটি কিশোরী মেয়ে বসার জায়গা না পেয়ে দাঁড়িয়ে আছে।কাঁধে স্কুল ব্যাগ। হঠাৎ একটা অদ্ভুত ব্যাপার লক্ষ্য করলাম।বাসের প্রচণ্ড ভিড়ে এমনিতেই দম বন্ধ হয়ে আসার উপক্রম। তারউপর শুরু হল একটা মধ্যবয়সী মানুষের ইতরামি ও অসভ্যতা। সেই মধ্যবয়সী মানুষটি কিছুক্ষণ পরপরই সেই কিশোরী মেয়েটির গাঁ ঘেঁষে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে।মেয়েটি প্রচণ্ড অস্বস্তি নিয়ে সরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে।কিন্তু লোকটি নাছোড়বান্দা। বাসের প্রতিটি ঝাঁকুনির সাথে সাথে মধ্যবয়সী লোকটি ইচ্ছাকৃতভাবে সেই মেয়েটির শরীর স্পর্শ করার চেষ্টা করতে লাগলো। কিছুক্ষণ পর লোকটি এমন কিছু কাজ করা শুরু করল যেটা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।লোকটির মুখের দিকে তাকালাম। ভাবলেশহীন এবং পাথরের মতো মুখ।যেন পৃথিবীর কোন ব্যাপারে তার বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই।হঠাৎ কিশোরী মেয়েটির জন্য প্রচণ্ড মায়া অনুভব করলাম, সেই কিশোরী মেয়েটির বয়স কতই বা হবে, হয়ত ১৪-১৫, হয়ত কোন স্কুলে পড়ে,বাস-ভর্তি মানুষের সামনে হয়ত সেই অসভ্য ও বর্বর মানুষ টির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পায় নাই।পুরো ব্যাপারটি আমার চোখের সামনে ঘটেছে,আমার হয়ত প্রতিবাদ করা উচিত ছিল,কিন্তু অহেতুক ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ার ভয় বা সাহসের অভাবে প্রতিবাদ না করে চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিলাম। ।বাসের অনেকেই হয়তো ব্যাপারটি লক্ষ্য করেনি, বা কেউ কেউ করেছে, কিন্তু কেউ প্রতিবাদ করে নাই। লালখান বাজার স্টপেজে এসে মেয়েটি বাস থেকে নেমে গেল।লোকটির চেহারা দেখে মনে হল যেন শিকার তার হাত ছাড়া হয়ে গেছে। কিশোরী মেয়েটির চেহারায় যে লজ্জা, হতাশা, আত্মগ্লানি এবং পুরুষ জাতির উপর যে ক্ষোভ দেখেছি যা আসলেই বিবেককে নাড়া দিয়ে যায়। এই ঘটনার পর থেকে অনেকদিন কেমন একটা অপরাধ-বোধ সবসময় আমাকে তাড়া করতো। গভীর রাতে মাঝে মাঝে দুঃস্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙ্গে যেত। দুঃস্বপ্নে বার বার ভেসে আসতো সেই নিষ্পাপ, মায়াময় এবং বিষণ্ণ সেই কিশোরী মেয়েটির চেহারা এবং এক পিশাচ যেন তাকে ছিঁড়ে-কুরে খাচ্ছে। অফিস-আদালত, রাস্তা-ঘাটে এবং গন-পরিবহনে এই ধরনের যৌন হয়রানি যারা করে দেশের প্রতিটি মানুষ কে এদের ব্যাপারে সচেতন এবং সোচ্চার হওয়া উচিত, বাংলাদেশের আইনে এই ধরনের অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান থাকা উচিত এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগ হওয়া উচিত।
২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:৩৭
মহাকাল333 বলেছেন: ধন্যবাদ সচেতনহ্যাপী আপু।আপনার চমৎকার মন্তব্যটি পড়ে অপরাধবোধ কিছুটা কমে গেছে। অনেক অনেক শুভকামনা রইলো। ভাল থাকবেন।
২| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ ভোর ৬:৩৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
আইনের অভাব নেই, অভাব সাহসী মানুষের।
২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:০৬
মহাকাল333 বলেছেন: চাঁদ গাজী ভাই, বাংলাদেশের আইনের অভাব নেই, একথা সত্য কিন্তু আইনের যথাযথ প্রয়োগের বড়ই অভাব।আমাদের সমাজে সাহসী মানুষের সংখ্যা অনেক কম,আমাদের সমাজ ব্যবস্থা আমাদের কাপুরুষ হতেই শেখায়। আমরা খুব বেশি আত্নকেন্দ্রিক হয়ে উঠছি,কেবল নিজেকে নিয়েই শুধু ভাবছি। তবু ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে চাই, অনেক সময় হয়ত প্রতিবাদ করতে পারি না, কেবল নিজের ভেতরে ক্ষয়ে যায়। স্বপ্ন দেখি একদিন সব বাঁধার শিকল উপেক্ষা করে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করব এবং হাজার হাজার তরুনের সাথে সমাজ বদলের অগ্রযাত্রায় সামিল হবো।
মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।ভালো থাকুন সবসময়।
৩| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:৪৭
প্রামানিক বলেছেন: আইন আছে প্রয়োগ নেই যে কারণে মানুষের সাহস নেই।
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:০৭
মহাকাল333 বলেছেন: প্রামানিক ভাই, আপনার সাথে সহমত পোষন করছি। আইনের প্রয়োগ না হওয়া এবং কোন কোন ক্ষেত্রে অপপ্রয়োগের ফলেই দেশের আজ এই অবস্থা।
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১:৩৬
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: ,কিন্তু অহেতুক ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ার ভয় বা সাহসের অভাবে প্রতিবাদ করি না- আজ না হয় হলো না কিন্তু লেখাটাই প্রমান করে প্রতিবাদের অংকুর ফুটেছে মহীরুহ হবার অপেক্ষায়।। ধন্যবাদ ভাইটি।। প্রতিবাদের লেখা চলতেই থাকুক।।