নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অমরত্বের লোভ কখনো আমাকে পায়না। মানব জীবনের নশ্বরতা নিয়েই আমার সুখ। লিখি নিজের জানার আনন্দে, তাতে কেউ যদি পড়ে সেটা অনেক বড় পাওয়া। কৃতজ্ঞতা জানানো ছাড়া আর কিছুই নেই।

শের শায়রী

হৃদয়ের কাছে বুদ্ধির বাস ভাল কথা। কিন্তু মাঝে মঝে হৃদয়ের ওপর থেকে বুদ্ধির শাসন তুলে দিতে হয়, হৃদয়কে স্বাধীন করে দিতে হয়, মুক্ত করে দিতে হয়। স্বাধীন মুক্ত হৃদয়ের ধর্মকে সব সময় বুদ্ধি দিয়ে বিচার করতে নেই।।

শের শায়রী › বিস্তারিত পোস্টঃ

জরাথ্রুষ্টবাদঃ পারস্যর বা মধ্য এশিয়ার প্রথম একেশ্বররবাদী ধর্ম

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:৩০



রহস্যময় জরাথ্রুষ্ট। গ্রীক উপাখ্যানেও তার নাম আছে, জরাথ্রুষ্ট নামের অনেক অর্থ আছে, প্রাচীন পার্সিয়াবাসী তারা নামের অর্থ করেছিল “উটের পিঠে আরোহী বার্তা বাহক”। পার্সিয়ার এই ধর্ম প্রচারককে নিয়ে জোহান ষ্ট্রস ছবি তৈরী করেছেন। ষ্ট্যানলি কুবরিক “আ স্পেস অব অডিসি”তে দেখিয়েছেন জরাথ্রুষ্টের দর্শন বা মতবাদ।


Freddie Mercury, the legendary lead singer of Queen, drew inspiration from the Zoroastrian faith of his Persian family (Credit: Alamy)

কুইন” ব্যান্ড গ্রুপের লিজেন্ডারি সিংগার ফ্রেডি মারকুরি জরাথ্রুষ্ট্রবাদ দ্ধারা প্রভাবিত হয়েছিল। কোথাও কোথাও দেখেছি “মাজদা” গাড়ী কোম্পানীর নাম ও জরাথ্রুষ্ট ঈশ্বর আহুর মাজদা থেকে এসেছে। জরাথ্রুষ্টবাদের কিছু লেখা দেখলাম নেটে তাতে আমার কাছে কোন কোন ক্ষে্ত্রে মনে হয়েছে, এরা না বুজেই অনেকাংশে পুরা ব্যাপারটা গোঝামিল দিয়ে ফেলছে। পিথাগোরাস থেকে ভলতেয়ার, রাফায়েল এরা সহ অনেকেই জরাথ্রুষ্টবাদ দ্ধারা প্রভাবিত হয়ে ছিল।



পারস্য এবং মধ্য এশিয়ার জানামতে প্রথম ধর্ম প্রচারক জরাথ্রুষ্ট আদর্শে বিশ্বাসীরা বলে তাদের নবী জরাথ্রুষ্ট পৃথিবীতে আসেন আলেকজান্ডারের ২৫৮ বছর আগে, এর অর্থ দাড়ায় আলেকজান্ডার দ্যা গ্রেট পার্সেপোলিস ধ্বংস করেছিল খ্রিষ্টপূর্ব ৩৩০ শতাব্দীতে, তাহলে হিসাব করলে পাওয়া যায় জরাথ্রুষ্ট পৃথিবীতে আসে খ্রিষ্টপূর্ব ৫৮৮ শতাব্দীতে

ঠিক একই সময় আকামেনিস সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা সাইরাস দ্যা গ্রেট জন্ম গ্রহন করেছিলেন। তার জন্ম সময় খ্রিষ্টপূর্ব ৫৯০ থেকে ৫৮০ শতাব্দীর কোন এক সময়। জরাথ্রুষ্ট ধর্ম বিশ্বাসে প্রথম ব্যাক্তি ছিলেন রাজা বিশ্বথাপা। তিনি ছিলেন দারিউস দ্যা গ্রেটের বাবা। সাইরাস এবং দারিউসের শাসনামলে প্রধান গভর্নর ছিলেন বিশ্বাথাপা। কিন্তু এখানে আমরা জানি যে, দারিউসের দাদা এবং পিতামহ সবাই এক এবং একমাত্র ঈশ্বর “আহুর মাজদার নির্দেশে চলতেন। সেটাও আলেজান্ডারের পারস্য দখলের ২৫৮ বছর আগে। হয়তোবা এরও আগে।



কিন্তু আধুনিক ঐতিহাসিকরা এব্যাপারে একমত জরাথ্রুষ্টের জন্ম তার ধর্ম প্রচার সব কিছুই পারস্য থেকে আগত। তেহরানের প্রাচীন নগরী “রাহাজ” থেকে এর প্রসার ঘটে, আবার এমন ধারনাও করা হয় ইরানের উত্তর পশ্চিমের নগরী “মেডেয়া” থেকেও এর উৎপত্তি হতে পারে। আফগানিস্থানের মানুষজনের প্রাচীন গাথা অনুযায়ী জরাথ্রুষ্ট “বালাক” নগরীতে তার ধর্ম প্রচার করতেন। আবার সোভিয়েট ইতিহাসবেত্তাদের মতে তিনি ছিলেন কাজাখস্থানের অধিবাসী। মুলতঃ জরাথ্রুষ্টের ধর্ম প্রচার নিয়ে ধর্ম নিয়ে গবেষনাকারীরা আজো অধিকাংশ ব্যাক্তিবর্গই কোথা থেকে এই ধর্মের উৎপত্তি হয়েছিল তা নিয়ে যে সব যুক্তি এবং তথ্য প্রমান হাজির করে তার প্রায় সবই অনুমান নির্ভর বা বিকৃত তথ্যের।

জরাথ্রুষ্ট ওই পৌত্তলিক সময়ের সাপেক্ষে যখন প্যাগান বা বিভিন্ন দেব দেবীর মুর্তিপুজা করছিলো তখন এক বিপ্লবী ধর্ম প্রচার করেছিলেন যার মুল বক্তব্য ছিল ঈশ্বর এক এবং অদ্বিতীয়। প্রচলিত ধর্ম যুগের পর যুগ কালের পর কাল মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়েছে, মানুষের হৃদয়ে এই কথা এমনভাবে গেথে গিয়েছিল যে এমন কি তার অনুসারীরা যতক্ষন তার আদর্শের এবং দর্শনের কথা লিখে না রেখেছে ততদিন মুখে মুখেই প্রচারিত হচ্ছিল। স্বভাবতঃই তার কিছু কিছু অংশ বিকৃত হয়ে গিয়েছিল, সেই বিকৃতিটুকু কতখানি, আজ আর তা নির্নয় করা সম্ভব না। জরাথ্রুষ্ট ধর্মের সংকলিত ধর্মগ্রন্থ যা গ্রীক এবং রোমান ভাষায় লিখিত ছিল তার নব্বই ভাগই হারিয়ে গেছে।



জরাথ্রুষ্টবাদীরা বলে তাদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থের বহু পান্ডুলিপি আলেকজান্ডার যখন পারস্য দখল করে তখন পুড়িয়ে দেয়। এখানে একটা রহস্যময় ব্যাপার হল ইরানিরা কিভাবে তাদের এই ধর্মগ্রন্থ হারিয়ে ফেলে তার কোন সদুত্তর মেলে না, যেখানে ইহুদীরা কয়েক হাজার বছর ব্যাপী তাদের ধর্মগ্রন্থ সংরক্ষিত রাখে এত ঝড় ঝাপটার পরো, একই কথা খাটে খ্রিষ্টানদের বাইবেল সন্মন্ধ্যেও, যুগে যুগে বিভিন্ন সময় এই ধর্ম দুটোর শুরুর দিকে অনেক অত্যাচার হবার পরো তারা তাদের সংকলিত ধর্মগ্রন্থের প্রাচীন রূপ যদিও পরিবর্ধিত বা পরিমার্জিত তবুও সংরক্ষনে রেখেছিল। পারস্যের রাজা সাইরাসের সময় সেদেশে লেখনির কোন উপকরন ছিল না, কিন্তু সম্রাটের নির্দেশে পাথরের গায়ে খোদাইলিপি ছিল।

আলেকজান্ডারের পারস্য বিজয় করার পর জরাথ্রুষ্টবাদ ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে উপনীত হয় এবং এক পর্যায়ে যেহেতু লিখিত আকারে কিছু না থাকায় পরবর্তী এক শতাব্দীতে এই ধর্ম এবং ধর্মের অনুসারীরা প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যায়, খুবই নগন্য কিছু মানুষ তাদের মুখে মুখে এই ধর্মের আলো টিম টিম করে জ্বালিয়ে রেখেছিল।



জরাথ্রুষ্টের অনুসারী এবং ধর্মপ্রচারক কাটির ছিল মনিবাদের প্রবক্তা মনির ঘোরতর শত্রু, এখানে মনিকে নিয়ে কিছুটা না লিখলে অনেকেই মনিকে নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্ত হয়ে যাবেন। মনিবাদ নিয়ে নিয়ে লিখতে গেলে ভিন্ন আর একটি পোষ্ট হয়ে যাবে, শুধু এটুকুই বলি “মনি অমর” নামে আর একজন ধর্ম প্রচারকের আবির্ভাব ঘটেছিল তাঁর সময়কাল ২১০-২৭৬ খ্রিস্টাব্দ। প্রফেট (!) মনি ২১৬ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন দক্ষিণ ব্যাবিলনে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। সে সময়টায় ব্যাবিলন ছিল পারসিক সাম্রাজের অন্তর্গত। তিনি ছিলেন মনিবাদ বা Manichaeism-এর প্রবক্তা (মনিকে নিয়ে অন্য কোন দিন পোষ্ট দেব)। তবে তার আগে অন্য কথা এই কাটিরও কিন্তু জরাথ্রুষ্ট ধর্মের কিছু ব্যাপার লিপিবদ্ধ করার চেষ্টা করছিলেন, আর এক ধর্ম প্রচারক তানসার ও এই ধর্মের তত্ত্বগুলো লিখিত আকারে আনার চেষ্টা করছিলেন। রাজা শাহের সময় তিনি এই কাজ করেন কিন্তু সেটা আলেকজান্ডারের পারস্য বিজয়ের ৬০০ বছর পর অর্থ্যাৎ তৃতীয় শতাব্দীর দিকে।

এই ঘটনার দিকে দৃষ্টি দিতে গিয়ে সোভিয়েট ধর্মতত্ত্ববিদ হায়াম সালোভিচ বলেন, “যখন পৃথিবীতে সব কিছু লিখিত আকারে গ্রহনের অলিখিত আইন পাশ হল, আনুষ্ঠানিক শিক্ষা পদ্ধতি চালু হল তখন থেকেই অলিখিত কোন ধর্মগ্রন্থের বানী মানুষের কাছে মনগড়া মনে হতে থাকে।” প্রাচীন সমাজের ধ্যান ধারনা সব কিছুর মুল্য হারিয়ে গেল, একজন মানুষ কতটা দেখছে তার ওপর না একজন মানুষ কতটা জানে সেভাবেই বিচার করা হল তাদের লিখিত বানী থেকে।


Yasna 28.1, Ahunavaiti Gatha (Bodleian MS J2)

যখন আভেস্থা সংকলিত হল, সে সময়ের মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত বিভিন্ন কবিতা বা শ্লোক গুলো থেকে। আভেস্তা (এখানে উল্লেখ্য “আভেস্তা” কিন্তু একটা ভাষা ঐতিহাসিকভাবে যা “জেন্দা” নামে পরিচিত যা প্রাচীন ইরানিয়ান ভাষা থেকে উদ্ভুদ্ধ, এখানে উল্লেখ্য যে সংস্কৃতি ভাষার সাথে এর অনেক মিল আছে, এনিয়ে পরে কোন এক দিন লিখব হয়ত) থেকে পার্সি ভাষায় লেখা হয়েছেঃ ‘তোমার মুক্তি জরাথ্রুষ্ট দর্শনের “মিথরাবাদে”’ আবার সেটাই সাংস্কৃতিতে এসে হলঃ “হে মানুষ তুমি মুক্তি পাবে জরাথ্রুষ্ট দর্শনে” এ থেকে আমি বুঝাতে চাচ্ছি যে মুল আভেস্থা যেটুকু টিকে আছে সেখান থেকে যখন অন্য ভাষায় রূপান্তরিত হল তখন অনেকটা পরিবর্তিত হয়ে গেল। আভেস্তা পাচ ভাগে বিভক্ত, গাথা, ইয়াসনা, ভিস্পরাত, ভেন্দিদাদ, ইয়াসহাত। এর বাইরে কুর্দ আবেস্তা ( ছোট আবেস্তা) বলে আর একটা ছোট গ্রন্থ আছে যেটা নির্দিষ্ট প্রার্থনার সময় পড়া হয়।



অনেক ঐতিহাসিকের মতে বেদের কিছু জায়গায় আবেস্তার সাথে আর্শ্চয্যজনক মিল খুজে পাওয়া গেছে, সে হিসাব করতে গেলে এটা হিসাবে রাখতে হবে যে ভারতীয় আর্যরা এসেছিল পারস্যর দিক থেকে। এবং সময়টা ছিল ১৫০০ থেকে ১২০০ খ্রিষ্ট পূর্বে। সে হিসাবে জরাথ্রুষ্টের আগমন আরো আগে মানে খ্রিষ্টপূর্ব ১২০০ সালের পূর্বে। সময়টা এমন যে তখন মধ্যপ্রাচ্যের অন্য প্রান্তে তখন মোজেসের ধর্ম এবং দর্শন নিয়ে তোলপাড় চলছে। অনেক বিশেষজ্ঞের মতে তার আগমনের সময় কাল খ্রিষ্ট পূর্ব ১৭০০ থেকে ১৫০০ সাল নাগাদ। যখন আব্রাহাম নামক আর একজন মহামানব পৃথিবীর অন্য প্রান্তে এসেছিলেন। এনসাইক্লোপিডিয়া অব রিলিজিয়ন বলছে- “পূর্ব ইরানের গ্রাম্য সংস্কৃতিতে প্রোথিত জরাথ্রুষ্টবাদের শেকড়। ধর্মটি খ্রিস্টের জন্মের ১০০০ বছর আগে উৎপত্তি লাভ করে এবং পারসিক সাম্রাজ্যের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রতিষ্ঠিত হয়।” (খণ্ড- ১৫, পৃষ্ঠা- ৫৮০)



বর্তমানে জরাথ্রুষ্টবাদীরা অগ্নির উপাসনা করে, আসলে জরাথ্রুষ্ট সত্যিই অগ্নির উপাসনা করত বলে কোন উল্লেখ্য নেই। তার মৌলিক দর্শন মধ্যপন্থা অনুসরন করত, উগ্রবাদীতা না, প্রচন্ড আত্ম ত্যাগী তিনি ছিলেন না, জরাথ্রুষ্ট তার অনুসারীদের উৎসাহ যোগাতেন তারা যেন এক ঈশ্বরের অনুসন্ধান করে। জরাথ্রুষ্ট বাদীদের মতে সে ৭৭ বছর জীবিত ছিল। তাকে অলৌকিক ভাবে জানান হয়েছিল তার মৃত্যু হবে ছুরিকাঘাতে আর এক ধর্মপ্রচারকের হাতে যার নাম কারাপান। এই কারাপান ছিল মুর্তি উপাসক, বলা হয়ে থাকে জরাথ্রুষ্টের মৃত্যুর পর কারাপানের বোধোদয় ঘটে এবং সে জারাথ্রুষ্টের ধর্ম প্রচার করে। জরাথ্রুষ্ট তার জীবদ্দশায় হামা (গাজা মাদক দ্রব্য) বন্ধ করে দিয়েছিলেন অথচ বর্তমান জরাথ্রুষ্টবাদীরা তার ধর্ম প্রার্থনার পূর্বে গাজা জাতীয় নিষিদ্ধ দ্রব্য সেবন করে। ইরানে জরাথ্রুষ্টবাদীদের যে নওরোজ উৎসব হয় তার শুরু হয় সাতটি জিনিষ দিয়ে। সে বর্ননা দিতে গেলে পোষ্ট অন্য দিকে যাবে তাই আপাতত সেদিকে না যাই।

জরাথ্রুষ্টবাদ নিয়ে আপনি যদি পড়াশুনা করেন তবে দেখবেন সে ধর্ম বিভিন্নভাবে অন্যান্য ধর্মে মিশে গেছে বা প্রভাবিত করেছে, সেগুলো নিয়ে আলোচনা এই পোষ্টে করব না কারন সেগুলো এত বিষদ একটা দুটো পোষ্টে তার ব্যাখ্যা দেয়া যাবে না। সময় সুযোগ পেলে অন্য কোন দিন এ নিয়ে আলাদা পোষ্ট দেব। জরাথ্রুষ্টবাদ নিয়ে কিছু বই সংগ্রহ করছি বিদেশী গবেষকদের সেখানে এই ধর্ম নিয়ে পড়তে গিয়ে দেখলাম বর্তমানে প্রচলিত জরাথ্রুষ্টবাদের সাথে মুল (আসলে মুলটাও যে কতটুকু মুল তা নিয়েও সন্দেহ আছে) জরাথ্রুষ্টবাদের অনেক পার্থক্য। ভালোই লাগছে পড়তে।


Friedrich Nietzsche, circa 1875.

প্রাচীন জরাথ্রুষ্টবাদ কে আধুনিক যুগে এক বিখ্যাত দার্শনিক পুর্নজীবন দিয়েছিলেন তিনি হলেন ফ্রেডরিখ উইলহেম নিৎশে। নিৎসে দর্শনের মুল বিষয় হচ্ছে “ভালো এবং মন্দের মৌলিক পার্থক্য”। নিৎসের আগে জার্মান দার্শনিক স্কোপেনহার কে জরাথ্রুষ্টবাদ ভীষন ভাবে প্রভাবিত করেছিল। সেই স্কোপেনহারের দর্শন পড়ে নিৎসের মনে প্রচন্ড আলোড়ন সৃষ্টি হল। তার মনে হল এ যেন তাকে উদ্দেশ্য করেই বলা হয়েছে। জরাথ্রুষ্টবাদ এবং স্কোপেনহারের দর্শন এবং মতবাদের মিল ঘটিয়ে তিনি লিখলেন “দ্য বার্থ অভ ট্রাজেডি”।

নিৎশে লোকালয় থেকে দূরে কোন জঙ্গলে থাকতেই পছন্দ করতেন। এখান থেকেই তিনি সত্যের অনুসন্ধান করেন। তিনি জরাথ্রুষ্ট দর্শনের প্রতিটি ছত্রে ছত্রে মুগ্ধ হতে থাকেন, এ দর্শনবাদ থেকে তিনি এ সিদ্ধান্তে উপনীত হন “জীবন বা বেচে থাকা খুব তুচ্ছ ব্যাপার, মানুষ কোন কিছুতেই সন্তুষ্ট না, অধিক লোভ লালসা এবং পার্থিব জগতের মোহ তাকে সত্য এবং ন্যায়ের পথ থেকে দূরে রাখে। আর যে মানুষ এই সব ত্যাগ করতে পারে সেই প্রকৃত ধার্মিক।" জরাথ্রুষ্ট ধর্মে এভাবেই ধর্ম প্রচার করা হয়েছে।



চার খন্ডে বিস্তৃত নিৎসের লেখা “দাজ স্পোক জরাথ্রুষ্ট” জরাথ্রুষ্টবাদ নিয়ে বিশদ আলোচনা আছে। তার কথাই ছিলঃ এক ঈশ্বরবাদী হও, সত্যকে মিথ্যার সহিত মিশিও না। ব্যাভিচার কোর না। জরাথ্রুষ্টের প্রকৃত শিক্ষা মানবতাবাদ – সেটা সবার জন্য অবশ্যাম্ভাবী। এই ধর্ম দর্শন মানতে অলৌকিক কিছু করে দেখাতে হয় না। বরং যে মানুষ সত্যের পথে থাকবে, ন্যায় বিচার করবে, হিংসা বিদ্বেষ থাকবে না, লোভী হবে না, সেই হবে প্রকৃত মানুষ। মানবতা, নৈতিকতা তৈরী হবে মানুষের কর্মের মাধ্যমে। এটাই হবে প্রকৃত ধর্ম। নিৎসে জরাথ্রুষ্ট ধর্মের দ্বিবিভাজন এর বিরোধিতা করেছিলেন যা প্রকারান্তে জরাথ্রুষ্টের একেশ্বরবাদীতাকে সমর্থন দেয়।

নিৎসের জরাথ্রুষ্ট দর্শন নিয়ে আশা রাখি সামনে বিস্তারিত আলোচনা করব এবং একই সাথে এই মতবাদের সাথে অন্যান্য কিছু ধর্মের সাদৃশ্য দেখানোর চেষ্টা করব। তবে সমস্যা হল আদি জরাথ্রুষ্টবাদের খুব অল্পই টিকে আছে, আর যা আছে তা এত বেশি পরিবর্তিত যে অনুমিত মুল বিশ্বাসের সাথে অনেক তফাৎ।

বর্তমানে জরাথ্রুষ্টবাদ যেভাবে পালিত হচ্ছে তাতে এই ধর্মকে যতটা না মহিমান্বিত করে, তার থেকে অনেক বেশী করে কৌতুহলী। যাতে মহিমা থাকে না থাকে উৎসুক্য। মানুষ জরাথ্রুষ্টবাদ বলতে যা বুজে তা হল তাদের মৃতদেহ সৎকারের অদ্ভুত পদ্ধতি এবং কিছু আদ্ভুত ধর্মীয় আচার আচরন যা সাধারনতঃ অন্য ধর্মাবলম্বীদের ক্ষেত্রে দেখা যায় না।


Zoroastrians worship in fire temples, such as this one in Yazd, Iran – they believe fire and water are the twin agents of purity and necessary for ritual cleansing (Credit: Alamy)

বর্তমানে আগুনের সাথে জরাথ্রুষ্টবাদীদের সম্পর্ক খুব নিবিড়, এত নিবিড় যে তাদের অগ্নিউপাসক ও বলা হয় অথচ সম্ভবতঃ অগ্নি উপাসনার এই ধারা জরাথ্রুষ্টের মৃত্যুর পর প্রচলিত হয়। জরাথুস্ত্রবাদের কিছু উপাসনাকেন্দ্র আবিষ্কৃত হয়েছে। নকশাগত দিক থেকে এগুলো টাওয়ার ও বর্গাকৃতির। চার দরজা বিশিষ্ট পবিত্র দেয়ালকে বলা হয় চাহারতাক। ইরান জুড়ে এর অসংখ্য নজির বিদ্যমান। পবিত্র আগুনের মধ্যে আবার বিস্তর ফারাক। যাজকদের জন্য আগুনের নাম ফারবাগ, যা প্রথমে খাওয়ারিজমে দেখা যায়, পরে ফারসে স্থানান্তরিত হয়। যোদ্ধাদের জন্য আগুন ছিল গুশনাস্প। তবুও ধর্মীয় একত্বতার প্রতীক এই আগুন। অন্যদিকে বুর্জেন-মিহর আগুন ছিলো কৃষকদের জন্য। এর বাইরেও আগুন দুইভাগে বিভক্ত। আদুরান বা গ্রাম্য আগুন এবং ভারহরান বা রাজকীয় আগুন।



এ রাজকীয় আগুনের দেখভাল যারা করতেন, তাদেরই পেশাগত পদবি ছিল এহরপাত। গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় অনুষ্ঠানে তার ভূমিকা থাকতো অনেকটা সহকারী যাজকের মতো। তার ওপরের পদবি হলো মোবেদ আর সর্বোচ্চ পদবি 'দস্তুর'। দস্তুরের কাজ প্রধান ধর্মযাজকের মতো, যার কাছে গুরুত্বপূর্ণ মন্দিরের দায়িত্ব দেওয়া হয়। যাজকত্বের দায়িত্ব বংশানুক্রমিক। কিন্তু প্রত্যেককেই একটা নির্দিষ্ট শিক্ষা ও চর্চার ভেতর দিয়ে যেতে হতো। প্রত্যেক জরাথুস্ত্রবাদীর ৭ বা ১০ বছর বয়সে অভিষেক হয়। তখন তাকে 'সাদরে' (শার্ট) এবং 'কুস্তি' (কোমরবন্ধনী) দেওয়া হয়, যা তাকে পরতে হয় পরবর্তী জীবনভর। পায়দাব, নাহন ও বারেশনুম নামে তিন ধরনের পবিত্রতা পদ্ধতি আছে।



পবিত্র অনুষ্ঠান ইয়াসনা মূলত পবিত্র আগুনের সামনে দাঁড়িয়ে আবেস্তার শ্লোক পাঠ করা ও আহুতি দেয়া। পবিত্র আগুনকে নিরন্তর প্রজ্বলিত অবস্থায় রাখা ও দিনে পাঁচবার উপাসনা করা অন্যতম প্রধান আচার। সুর্যোদয় থেকে দুপুরের মাঝে পালনীয় প্রার্থনাকে বলে “হাওয়ান”, দুপুর বেলা থেকে ৩ টা পর্যন্ত পালনীয় প্রার্থনাকে বলে “রাপিথিউন”, বেলা ৩ টা থেকে সুর্যাস্ত মধ্যবর্তী সময় পালনীয় প্রার্থনাকে বলে “উজেরিন”, সুর্যাস্ত থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত প্রার্থনাকে বলে “আইউইশ্রুথ্রুম” এবং মধ্যরাত থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত পালনীয় প্রার্থনাকে বলে “উশাহীন”।



মৃত্যুর পর লাশকে যথাযথভাবে গোসল করানো হয়। জরথ্রুস্টবাদীদের বিষ্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে মৃত্যুর পর মৃতদেহ সৎকার। শকুনেরা যেহেতু সবচেয়ে বেশী উচুঁতে উঠে সূর্যের কাছে যেতে পারে, তাই তারা নিজেদের মৃতদেহকে শকুন দিয়ে খাওয়ানো পবিত্র কর্ম মনে করে। মৃতদেহকে যাতে সহজে শকুনে খেতে পারে তার ব্যবস্থা করে তারা এবং মাংস শকুনে খাওয়ার পর মৃতের হাড়-মজ্জা ‘পবিত্র কুয়ায়’ ফেলে দেয়া হয়। তাদের বিশ্বাস, মরণের ৪র্থ দিনে ‘রুহ’ অহুর মাজদার কাছে বিচারের জন্যে পৌঁছে, এই ৪-দিন মৃতকে শকুন দিয়ে খাওয়ানো অত্যন্ত পূর্ণ কর্ম। কারো দেহ শকুনে না খেলে সেটা অবশ্যই অশুভ।



জরথ্রুস্টবাদিরা যেখানে বাস করে সেখানে সৎকারের ব্যাবস্থা স্বরূপ থাকার কথা মৃতকে শকুন দিয়ে খাওয়ানোর ব্যবস্থা। তবে ভারতে যেহেতু বর্তমানে সবচেয়ে বেশি এ ধর্মের লোক তাই, দক্ষিণ মুম্বাইর মালাবার হিলে ৫৭ একর অরণ্য-উদ্যানের মাঝে বিরাটাকার 'ডখমা' বা ‘টাওয়ার অব সাইলেন্স’ (নির্জনতার স্তম্ভ) নির্মাণ করা হয়েছে। ঐ পাহাড় চূড়ায় বিশাল আধার নির্মাণ করে সেই আধারের মাঝে পাথর বসিয়ে তার উপর মৃতদেহ রেখে আসে তারা। এ টাওয়ারে বা কাছাকাছি শকুনেরা বসে থাকে মৃতদেহটি খাবারের জন্যে। ৩-দিন খাওয়ার পর হাড়গোড়গুলো সংগ্রহ করে অন্যত্র কয়লা ও বালির মিশ্রণের মধ্যে রেখে দেওয়া হয়। এর নাম হাড়দানি (Ossuary ), এরপর যায় পবিত্র কুয়ায় (কবর?)।



এই লেখা লিখতে গিয়ে আমাকে "মিডিয়া পার্সিয়া এ্যান্ড ব্যাবিলন”, পল ক্রিসবাসজেকের “ইন সার্চ অভ জরাথ্রুষ্ট” সহ আরো দু তিনটি বই পড়তে হয়েছে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন অন লাইন ফিচার যেমন The obscure religion that shape the west , Manichaeism: The Ancient Religion that Rivaled Christianity , Friedrich Nietzsche, Ahura Mazda, Zoroastrianism, The Last of the Zoroastrians , Zoroastrianism, জরাথুস্ত্রবাদ: একটি ধর্মের আখ্যান, History of Zoroastrianism, Avesta সহ আরো অনেক অন্তর্জাল নিবন্ধ দেখতে হয়েছে।

মন্তব্য ৪২ টি রেটিং +১১/-০

মন্তব্য (৪২) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২০

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: বিশাল পোস্ট; আপাতত জার্মান দার্শনিক নিৎসের মৌলিক দর্শন পর্যন্ত এসেছি। সময় নিয়ে আবার আসছি।

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১২:১১

শের শায়রী বলেছেন: অপেক্ষায় থাকলাম ভাই, বাকীটুকু পড়ে কি মন্তব্য দেন।

২| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:০৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


মৃতদেহকে শকুনের খাবারে পরিণত করতো যারা, তারা কি বুদ্ধিমান ছিলো?

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১২:১৩

শের শায়রী বলেছেন: এটা তো এখনো করছে, ধর্ম মানে বিশ্বাস সেটা যেমনই হোক অন্য ধর্মে শ্রদ্ধা থাকতে হবে। শুধু এটুকু দেখলেন? তার দর্শন, মতবাদ গুলো দেখলেন না মুরুব্বী?

৩| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:৫০

নেওয়াজ আলি বলেছেন: বিশাল পোস্ট

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১:২৪

শের শায়রী বলেছেন: রাইটা নেওয়াজ ভাই, আসলে পুরা ব্যাপারটা এত বড় মাঝে মাঝে ছোট করতে গিয়ে গোজামিল দিয়ে ফেলতে হয়েছে ঠিক মত বাখ্যা দিতে পারি নি। আর লিখতে আমার ভালো লাগে এটাও একটা সমস্যা :) চান্স পাইলেই লিখি।

পাঠে এবং মন্তব্যে অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা।

৪| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:২০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: পড়েতো ফেললাম কত সহজে!

আহারে সব একত্র করে সাজাতে কি খাটুনিটাই না গেছে ম্যা' ভাই!!!
জিগিষার এই তৃষা আজীবন বেঁচে থাক! আপনার জিগিষা আমাদের জন্য অফুরান জ্ঞানাহারের আয়োজন :)

অভিবাদন ম্যা'ভাই

++++

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১:২৬

শের শায়রী বলেছেন: অনার ইজ মাইন ম্যাভাই, আপনাগো সংস্পর্শে এবং উৎসাহে এই স্পৃহা আরো বাড়ছে।

পাঠে এবং মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা।

৫| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:৪৪

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো পোষ্ট। পরিশ্রমী পোষ্ট।
আপনি ইতিহাসের ছাত্র?

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১:২৭

শের শায়রী বলেছেন: না ভাই আমি বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলাম কোন এক দূর অতীতে।

৬| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১২:৫৪

নতুন বলেছেন: আগে লেখার প্রচলন তেমন ছিলোনা তাই হয়তো এই বিষয়ে বই আকারে তেমন কিছু লেখা নেই।

ইসলামের সাথে এদের বেশ কিছু মিল আছে,

জরাথৃরুস্টদের ৫ বার প্রথ`না করে,

এক ইশ্বরবাদ,

মৃত্যুরপরে নরকে সাজা শেষ করে সবাই স্বগ` আহুর মাজদার কাছে যাবে...

Zarathustra দেবদূতের সাহাজ্য আহুর মাজদার কাছে গিয়েছিলো যেটা রাসুল সা: এর মিরাজের ঘটনার মতন..

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১:৩৩

শের শায়রী বলেছেন: রাইট, অবশ্যই সে সময় পারস্যে লেখার প্রচলন ছিল না নতুন ভাই। প্রথম দিকে শিলালিপি বা মাটির ফলকে লেখা থাকত অনেক পরে লিখন পদ্ধতি মেসিডোনিয়া থেকে আমদানী হয় পারস্যে। ইসলামের অনেক রচ্যুয়ালের সাথে এর মিল আছে, শুধু ইসলাম বলি কেন, হিন্দু ধর্মের বেদ ওদিকে খ্রিষ্টানদের ধর্মের অনেক কিছু এই জরাথ্রুষ্টের সাথে মিল আছে। আমি কয়েকটা বই পড়ছি এই বিষয় নিয়ে। আরো পড়ে নেই হয়ত সামনে পোষ্ট দেব। ইংরেজীতে আর বাংলায় অন লাইনে যে সব ফিচার আছে সেগুলো অসম্পূর্ন মনে হয়। বইই এক্ষেত্রে ভালো সমাধান। দেখি আরো কি কি পাই।

আমার ধারনাই ছিল না এই জরাথ্রুষ্টের এত প্রভাব!

৭| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১২:৫৮

সুপারডুপার বলেছেন:



লেখক বলেছেন: এটা তো এখনো করছে, ধর্ম মানে বিশ্বাস সেটা যেমনই হোক অন্য ধর্মে শ্রদ্ধা থাকতে হবে।
======================================================================

শের শায়রী ভাই ,

ধর্মের সহিংসতা, সাম্প্রদায়িকতা, বর্বরতা, ভগিজগি-ধান্দাবাজি, অযৌক্তিকতা, অজ্ঞানতা, কুসংস্কার, কূপমণ্ডূকতা, অন্ধবিশ্বাস, অপবিজ্ঞান আর গোড়ামীর প্রতিও কি শ্রদ্ধা থাকতে হবে?

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১:৪০

শের শায়রী বলেছেন: সুপারডুপার ভাই, এটাতো এখনো আছে বলতে আমি বুজিয়েছি জরাথ্রুষ্টবাদের মৃতদেহ শকুনে খাওয়ানো প্রসঙ্গ।

এর পর আপনি আমাকে প্রশ্ন রাখছেন ধর্মের সহিংসতা, সাম্প্রদায়িকতা, বর্বরতা, ভগিজগি-ধান্দাবাজি, অযৌক্তিকতা, অজ্ঞানতা, কুসংস্কার, কূপমণ্ডূকতা, অন্ধবিশ্বাস, অপবিজ্ঞান আর গোড়ামীর প্রতিও কি শ্রদ্ধা থাকতে হবে? ভাই ধর্ম নিয়ে এর আগেও আমার অনেক পোষ্ট আছে কোথাও কি আপনার মনে হয়েছে উল্লেখিত কোনটার সমর্থনে আমার একটা কথাও আছে? আপনার এই প্রশ্নে আমি এক ধরনের অপমান বোধ করছি, আমার কোন লেখায় কি এগুলোর প্রতি সমর্থন দেখছেন? এই ধরনের প্রশ্ন তখনি করবেন তাকে যখন দেখবেন এগুলোর সমর্থনে কেউ লিখছে এটাই স্বাভাবিক বোধ।

ধন্যবাদ আপনাকে।

৮| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১:০৪

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
আমি এর আগেও একটি মন্তব্যে বলেছিলাম
তবে প্রাচীন জোরোস্টবাদের সাথে প্রায় সব রিচুয়াল ইসলামের আচারের সাথে মিলে যায়।
অনেক প্রশ্নের সাথে কিছু গুরতর প্রশ্নও এসে যায়।
ইসলাম ধর্মিয় এবাদত নিয়ম আচার অনুষ্ঠান, ইতিহাস, কোরান নাজেল পদ্ধতি, মেরাজ অনেক ক্ষেত্রেই হুবুহু মিল পাওয়া যায়।

যেমন (একত্ববাদ)
পুনরুত্থান (হাশর),
বেহেস্ত - স্বর্গ, নরক,
শয়তান,।
জিব্রাইল - সারাওস ( Saraosh)
৫ বার নামাজ, আবেস্তাদেরও ৫ বার এবাদত
অজু। আবেস্তা গ্রন্থ পাঠের আগেও মুখ হাত পা তিনবার করে ধৌত করতে হয়, (প্রায় অজুর মত)
অজুর পানি না পেলে তায়ামুম - "ইয়াবাবা"।
এবং মেরাজের মত তাদের প্রফেট ইশ্বরের সাথে দেখা করে এসেছেন একজন স্বর্গের দূতের মারফতে।
এবং সেখান থেকে পাঁচবার উপাসনার আদেশ নিয়ে আসছেন,

সবই ইসলামের আচারের সাথে মিলে যায়।
হজরত মোহম্মদ সেই এলাকায় কখনো যান নি,
কিন্তু সেই এলাকার একজন সমরকুশলী সালমান পার্শির সাথে বন্ধুত্ব। একজন অনারব ভিন্নধর্মি হওয়ার পরেও পার্শি নবী মুহম্মদ (স) এর উপর বেশ প্রভাব বিস্তারকারি এবং ক্ষমতাবান একজন বিখ্যাত সাহাবী। ইসলাম আবির্ভাবের সবটা সময়ই হজরতের মৃতুর শেষদিন পর্যন্ত নবীর সংগে ছিলেন। হযরত মুহাম্মদ (সা.) তাকে সালমান আল খায়র খেতাব প্রদান করেছিলেন।

এই দুই ধর্মের যোগসুত্র নিয়ে ও সালমান পার্শিকে নিয়ে একটি পোষ্ট আশাকরি। ধর্মকে প্রাধান্য বা অবমাননা না করে শুধু ইতিহাস জানার জন্যই।

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ২:১৭

শের শায়রী বলেছেন: দুই ধর্মের তুল্য বিচার হয়ত করা যাবে আরো কিছু পড়াশুনা করে, কিন্তু সাহাবী সালমান (রাঃ) এর প্রভাব বা যোগ সুত্র আপনি যেটা বলছেন সে ধরনের কিছু সম্ভব না কারন এই টাইপের কিছু লেখা আছে বলে আমার ধারনা নেই, আর আমি যথাযথ রেফারেন্স ছাড়া লিখতে অপারাগ। তবে উভয় ধর্মের এবং হিন্দু, খ্রিষ্টান ধর্মের সাথেও জরাথ্রুষ্টবাদের কিছু রিচ্যূয়াল সাদৃশ্য দেখা যায় তার তুল্য বিচার করে হয়ত এক দিন পোষ্ট দেব।

ধন্যবাদ আপনাকে।

৯| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ২:৩২

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: আপনার লেখা এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেললাম | আপনি ঠিকই জানেন কোথায় লেখার রাশ টেনে ধরতে হয়, তাই আরেকটি বিষয় অবতারণা করলে তা সংক্ষেপে সেরে ফেলে মূল প্রসঙ্গে ফিরে আসতে আপনার সমস্যা হয় না তেমন |

একই ধরণের এক ধর্মের (যেমন একেশ্বরবাদ) সঙ্গে আরেকটি ধর্মের মিল আমাকে খুব একটা বিস্মিত করে না, পূর্বর্তী ধর্মের প্রভাব পরেরটিতে পড়বে এটাই স্বাভাবিক মনে হয় | কয়েকটি বিষয় বা ঘটনায় বিভিন্ন ধর্মের বেশ মিল খুঁজে পাই | এর একটি হলো মহাপ্লাবন যা অনেক ধর্মেই বর্ণিত হয়েছে | আরেকটি হলো রাবনের সীতা হরণ আর গ্রিক হেলেন অফ ট্রয়ের উপাখ্যান | হয়তো এধরণের ঘটনা ঘটেছিলো অতীতে যা বিভিন্ন ধর্মে গিয়ে ভিন্ন রূপ লাভ করেছে |

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:১৩

শের শায়রী বলেছেন: স্বামীজি, একেশ্বরবাদ ধর্মে একটি আর এক্টির সাথে মিল খুজে পাওয়া অসম্ভব না, ইসলাম ও কিন্তু ব্যাপারটা একসেপ্ট করে, পূর্ববর্তী অনেক মহাপুরুষকেই এই ধর্মে স্বীকৃতি দিয়েছে। আবার প্রকারান্তে এটাও স্বীকার করছে এমন অনেক আছে যাদের উল্লেখ্য কোরানে হয় নি।

মহাপ্লাবন নিয়ে গিলগামেশও উল্লেখ্য আছে। সেটা মানুষ্য ইতিহাসের অন্যতম প্রচীন গ্রন্থ। রাবনের সীতা হেলেন অভ ট্রয়ের মাঝেও অনেক মিল পাওয়া যায়। এগুলো পড়তে জানতে ভালো লাগে ব্যাস এই পর্যন্ত :)

পাঠে এবং মন্তব্যে অনেক কৃতজ্ঞতা স্বামীজি।

১০| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৮:৪৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


লেখক বলেছেন, "এটা তো এখনো করছে, ধর্ম মানে বিশ্বাস সেটা যেমনই হোক অন্য ধর্মে শ্রদ্ধা থাকতে হবে। শুধু এটুকু দেখলেন? তার দর্শন, মতবাদ গুলো দেখলেন না মুরুব্বী? "

-আপনি দর্শনের ডেফিনেশনটাও না জানায়, মানুষের যে কোন ভাবনা, ধারণাকে দর্শন বলে বেড়াচ্ছেন; দর্শন হলো সব বিজ্ঞানের মাতা, ইহা লজিক্যাল সত্য ধারণাকে প্রতিষ্ঠিত করে।

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:১৯

শের শায়রী বলেছেন: ধর্ম ও দর্শনের মাঝে পার্থক্য আমি জানি, কিন্তু এটা জানতাম না ধর্ম প্রচারকদের দর্শন বা মতবাদ থাকে না! ( আমি বড় বড় ধর্ম প্রচারকদের নিয়ে বলছি)।

১১| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:২৬

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: না ভাই আমি বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলাম কোন এক দূর অতীতে।

ওকে।
ধন্যবাদ।

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:১৯

শের শায়রী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ রাজীব ভাই।

১২| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১১:০৮

নীল আকাশ বলেছেন: @ হাসান ভাই, দারুন বিষয় এনেছেন। আমি একটু খোলাশা করে দেই। সাহাবী সালমান ফারসী (রাঃ) আরবে এসেছেন অনেক পরে। আমি য্তটুকু জানি -
সালমান আল ফারিসী (আরবি: سلمان الفارسي‎‎) হযরত মুহম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহিস সালাম) এর একজন বিখ্যাত সাহাবী। মুহাম্মাদ (সা.) তাকে সালমান আল খায়র নাম প্রদান করেন। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পূর্বে তার নাম ছিল মাবিহ ইবনে বুজখ্‌শান। তিনি বর্তমান ইরানের ইস্পাহান নামক স্থানে জায়্য নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন। তবে তার জন্মস্থান কোথায় তা নিয়ে মতভেদ আছে। তার পিতা ছিলেন একজন জরাথ্রুস্টবাদী। ইসলাম গ্রহণের পূর্বে সালমান খ্রিষ্টান ধর্ম গ্রহণ করেন। খন্দকের যুদ্ধকালীন সময়ে তার পরামর্শে মুসলমান গণ পরিখা খনন করেন। উনি মদিনায় এসেছিলেন।

আরেকটা সূত্রে পেয়েছি-
তিনি নিজেকে সালমানুল ইসলাম বলতেন। ‘আসবাহান’ এলাকার অগ্নিপূজারী বংশের লোক ছিলেন। ‘যিয়ান’ লোকালয়ে বেড়ে উঠেছিলেন। সফর করেছিলেন সিরিয়া, মুসিল, নসীবাঈন, আমূরিয়া। অগ্নিপূজারী, ইয়াহূদী ও নাসারাদের ধর্মগ্রন্থ পড়েছিলেন। যখন শুনতে পেলেন যে, শেষ যামানার শেষ নবীর আগমনের ঊষা অত্যাসন্ন, তিনি প্রেরিত হবেন আরব উপদ্বীপে, তখন তিনি আরব ভূখণ্ডের দিকে সফরের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লেন। পথিমধ্যে দেখা হয় বনী কালাবের সাথে। তারা হযরত সালমান রা.-কে কাজের লোক হিসেবে ব্যবহার করে এবং অবশেষে ক্রীতদাসে পরিণত করে বিক্রি করে দেয়। (মদীনার) বনু কুরাইযা গোত্রের জনৈক ব্যক্তি হযরত সালমান রা.-কে ক্রয় করে মদীনায় নিয়ে আসে।

মদীনায় মহানবী ﷺ-এর আগমনের সংবাদ শোনে তিনি তাঁর দরবারে আসলেন। নবুওতের বিভিন্ন নিদর্শন দেখে মহানবী ﷺ-এর পদতলে কান্নায় ভেঙে পড়লেন। মুসলমান হলেন। ইসলাম গ্রহণের বিষয়টা গোপন রাখলেন। নিজের ইসলাম গ্রহণের মাধ্যমে দাসত্বের নিগড় হতে মুক্ত হতে চাইলেন না। বদর ও উহূদ প্রান্তরে মুসলমানদের সাথে সমর অভিযানে অংশগ্রহণ করতে দেয়নি তাঁর মনিব। অবশেষে নিজের গোলামি থেকে মুক্ত হতে তাঁকে মুসলমানগণ সহায়তা করলেন। ইসলামের বিষয়টি জাহির করলেন। আহযাব ও পরিখা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং পরিখা খননের পরামর্শ তিনিই প্রদান করেছিলেন।

আমি উপরে যা লিখেছি এর মানে হচ্ছে ইসলাম ধর্মের মূল জিনিসগুলি অনেক আগে থেকেই মহানবী ﷺ- প্রচার করে ফেলেছেন মক্কায় থাকতেই। সুতরাং পারশ্য থেকে আগত কারও কাছ থেকে কিছু গ্রহন করা প্রশ্নই আসে না।

@ শের শায়রী ভাইঃ জিন্দা বেস্তা কিংবা আহুর মাজদা ভারতের আর্যদের আগমনের সাথে সাথেই চলে আসে আর্যদের হাতে করে। হিন্দুদের পূজায় অগ্নিহূতির দেয়ার যে নিয়ম প্রচলিত সেটা আর্যদের কাছ থেকে এসেছে। আমি এই বিষয় একটা আর্টিক্যালে এটা বিস্তারিত ভাবে পড়েছি।
লেখা দুর্দান্ত হয়েছে। আর হাসান ভাইয়ের প্রশ্নের উত্তর আমিই দিয়ে দিলাম।


২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:২২

শের শায়রী বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ নীল ভাই, আসলে আমি সাহাবী সালমান ফারসী (রাঃ) খুব বেশী কিছু না জানায় হাসান ভাইর জবাব দিতে পারছিলাম না। আপনাকে অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা সহকারে ধন্যবাদ।

১৩| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১১:১৪

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: জরাথুস্ট্রবাদ সম্পর্কে ছোট থেকেই ভাষা ভাষা পড়ে এসেছি কিন্তু আপনার পোস্টের সৌজন্যে বিশদে পড়ে সমৃদ্ধ হলাম। এমন পরিশ্রমে পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ যথেষ্ট নয়। ধর্ম রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা পেলে তার অনুগামী বাড়ে, দ্রুত বিস্তার লাভ করে। আমরা খ্রিস্টান ধর্ম প্রসারে সম্রাট কনস্টানটাইনের অবদান বা বৌদ্ধ ধর্ম প্রচারের সম্রাট অশোকের অবদান জৈন ধর্ম প্রচারের চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের অবদানের সঙ্গে ইতিপূর্বে পরিচিত। একই ভাবে বিষয়টি অনুল্লেখিত থাকলেও জরাথুস্ট্রবাদের প্রসারে রাজা বিশ্বথাপার অবদানকে বোধহয় অস্বীকার করা যায় না।
অগ্নি উপাসনা প্রসঙ্গে জরাথুস্ট্রের উদাসীনতা ও তার মৃত্যুর পর অনুগামীদের অগ্নি প্রেমের বিষয়টি সম্ভবত তৎকালীন সময়ের যোগাযোগের অপ্রতুলতার কারণে নিদর্শন না থাকাতে প্রভেদ কারণে হতে পারে।
লেখাতে প্রকাশ মনিবাদ সম্পর্কে জানার অপেক্ষায় রইলাম...
যেহেতু কুদ অর্থ ক্ষুদ্র। কাজেই ইরাকের যে প্রভিন্স কুর্দিস্তান না পরিচিত তারা কি জরাথুস্ট্রবাদে বিশ্বাসী? তা যদি হয়ে থাকে তাহলে প্রকৃত জরাথুস্ট্রদের সঙ্গে কুর্দিস্তানের কুর্দদের নিশ্চয় একটা বৈষম্য পরবর্তীকালে তৈরি হয়েছিল বলে অনুমিত হয়।
নিৎসের দর্শনের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে আমাদের সামান্য পাঠ ছিল। মাস্টার্সে ওয়েস্টার্ন ফিলোসফির একটা অধ্যায় ছিল জার্মান দার্শনিক নিৎসের দর্শন। আপনার সৌজন্যে আজ আর একবার পাঠ নিতে পারলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।
জরাথুস্ট্রদের দিনে পাঁচবার উপাসনা করার সঙ্গে ইসলামের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সংখ্যাগত মিল থাকলেও প্রভেদ যে বিস্তর সে কথা বলা বাহুল্য।
ভালো লাগলো অগ্নি উপসনা বিষয়ে বিভিন্ন খুঁটিনাটি তুলে ধরার জন্য।
তবে মৃতদেহ সৎকার প্রসঙ্গে তাদের ধর্মীয় পদ্ধতিটির সঙ্গে আমাদের সবারই কমবেশি পরিচয় আছে। আপনার পোষ্টের সৌজন্যে আজ আরও একবার বিষয়টি ঝালিয়ে নিতে পারলাম। সবমিলিয়ে তথ্যপূর্ণ বিষয়ভিত্তিক পোস্টে ভালোলাগা।

শুভকামনা প্রিয় শায়রী ভাইকে।

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:২৩

শের শায়রী বলেছেন: কখনো কখনো মন্তব্য পোষ্টকে পূর্নতা দেয় আপনার মন্তব্যও তেমনি প্রিয় পদাতিক ভাই। এটা অনস্বীকার্য যে ধর্ম প্রসারে রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতা লাগে সে কারনেই হয়ত যদি ধরে নেই জরাথ্রুষ্টবাদ খ্রিষ্টের জন্মের ১২০০-১৫০০ বছর আগে আসে তখন প্রসার লাভ করে নি, করেছে খ্রিষ্টের জন্মের ৪০০-৫০০ বছর আগে বিশ্বথাপার সময় থেকে।

পাঠে এবং মন্তব্যে অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা।

১৪| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১১:৩৯

কাজী আবু ইউসুফ (রিফাত) বলেছেন: নওরোজে সাতটি জিনিসের বিষয়ে একটু তুলে ধরলাম:

তাঁরা দস্তরখান বিছিয়ে তার উপর একটি কোরআন শরীফ, তসবীহ, আয়না, ফুল, ফলমূল, বিস্কুট, ডিম ও কাঁচের পাত্রে লাল রঙের ছোট মাছ রাখে। এছাড়া ‘হাফতসিন’ নামে খ্যাত সাতটি বিশেষ সামগ্রী রাখে। এই সাতটি জিনিসের নামের প্রথম অক্ষর ফারসি বা আরবি বর্ণমালার ‘সিন’ হরফ দিয়ে শুরু হওয়ায় এইগুলোকে এই নাম দেয়া হয়েছে। প্রত্যেকটির একটি নির্দিষ্ট প্রতীকী অর্থ রয়েছে। এই সাতটি সামগ্রী-সাব্যে বা অঙ্কুরিত সবুজ উদ্ভিদ যা নবজীবনের প্রতীক; সামানূ বা মিষ্টান্ন বিশেষ যা অফুরন্ত নিয়ামতের নিদর্শন, সিব্ বা আপেল হলো সৌন্দর্য ও সুস্থতার প্রতীক; সেরকে বা সিরকা হলো দীর্ঘ জীবন ও ধৈর্য্যরে প্রতীক; সির বা রসুন হলো রোগ নিরাময় ও সুস্বাস্থ্যের প্রতীক; সোমাগ্ব বা লালচে ফল বিশেষ যা প্রভাতের লাল সূর্যের প্রতীক; সেন্জাদ্ বা ফল বিশেষ যা প্রেম ভালোবাসার প্রতীক।

--- আপনার অসীম ধৈয্য ও সুন্দর লেখার জন্য ধন্যবাদ।

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ২:৫৯

শের শায়রী বলেছেন: আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা এমন মন্তব্যের জন্য। লিখেও আনন্দ।।

১৫| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১১:৪০

করুণাধারা বলেছেন: এই পোস্ট পড়তে দীর্ঘ সময় লাগলো; লিখতে গিয়ে আপনি কতটা পরিশ্রম করেছেন অনুমান করতে পারি। অনেক ধন্যবাদ পোস্টের জন্য, জরাথুস্ট্রবাদ সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারলাম।

জানি না কেন বলা হয় ইসলামে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জরাথুস্ট্রবাদ থেকে এসেছে!! আপনার পোস্টের মন্তব্য পড়ার আগেও এটা জেনেছি।

মূল পোস্টের সাথে অনেক মন্তব্যও ইনফরমিটিভ (দুঃখিত, বাঙলা মনে পড়ল না)! ভালো লাগলো নীল আকাশের ব্যাখ্যা।

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:৪৭

শের শায়রী বলেছেন: আপনি লিখছেন জানি না কেন বলা হয় ইসলামে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জরাথুস্ট্রবাদ থেকে এসেছে!! আপনার পোস্টের মন্তব্য পড়ার আগেও এটা জেনেছি।

বোন এ বিষয়ে একটা গঠনা বলি। তার আগে বলে নেই অনেকেই অতি অল্প জেনে অহেতুক সেই সামান্য অংশ নিয়ে তর্কে লিপ্ত হয়, যা অতীব মারাত্মক, আল্লাহ আমাদের সঠিক জ্ঞান বৃদ্ধি করে বোজার সক্ষমতা দান করুকঃ

রাসূল (সাঃ) মদিনায় হিজরত করে দেখতে পেলেন সেখানকার ইহুদীরা আশুরা’র দিন সিয়াম পালন করছে। ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, “নবী ﷺ যখন মদিনায় এলেন, তখন দেখলেন ইহুদিরা আশুরার দিন রোজা রাখে। তখন তিনি বললেন, “কেন তোমরা রোজা রাখো?” তারা বললো, “এটি উত্তম দিন। এ দিনে আল্লাহ বনি ইসরাঈলকে তাদের শত্রুর হাত থেকে মুক্ত করেছেন; তাই মূসা (আঃ) এ দিনে রোজা রাখতেন।” তখন নবী ﷺবললেন, “তোমাদের চেয়ে আমি মূসার অধিক নিকটবর্তী। ফলে তিনি এ দিন রোজা রাখলেন এবং অন্যদেরকেও রোজা রাখার নির্দেশ দিলেন।”[সহীহবুখারী, হাদীসনং: ১৮৬৫]

রাসূলﷺ এর এই নির্দেশের পর সবাই বাধ্যতামূলকভাবে আশুরা’র দিন সিয়াম পালন করতো। তখনো রামাদ্বানে সিয়াম রাখার বিধান নাযিল হয়নি। পরবর্তীতে আল্লাহ তা’আলা নাযিল করলেন,

“রামাদ্বান মাসই হল সে মাস, যে মাসে নাযিল করা হয়েছে কুরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য সুস্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবে, সে এ মাসের রোযা রাখবে। আর যে লোক অসুস্থ কিংবা মুসাফির অবস্থায় থাকবে, সে অন্য দিনে গণনা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান; তোমাদের জন্য জটিলতা কামনা করেন না যাতে তোমরা গণনা পূরণ করো এবং তোমাদের হেদায়েত দান করার দরুন আল্লাহ তা’আলার মহত্ত্ব বর্ণনা করো, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার করো।” [সূরা বাকারা (২): ১৮৫]

আয়েশা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীস অনুযায়ী, এ আয়াতটি নাযিল হবার পর মুসলিমরা আশুরা’র সিয়ামকে বাধ্যতামূলক হিসেবে পালন করেনি। বরং তা ঐচ্ছিক হয়ে যায়।[সহীহ মুসলিম, হাদীস নং: ২৪৯৯-২৫০৩]

যদিও জরাথ্রুষ্টদের পাচবার ইবাদত করার কোন বাধ্যবাধকতা নেই যা মুসলিমদের আছে, আর তাদের প্রার্থনা আর আমাদের প্রার্থনা সম্পূর্ন ভিন্ন, অথচ এই পাচ বারের ব্যাপারটাই এইটা বিরাট ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে যারা বিভ্রান্তি ছড়ায়। যদি জিজ্ঞেস করেন তাদের কে জরাথ্রুষ্টরা কিভাবে প্রার্থনা করে দেখবেন সেটা জানার জন্য তাদের ইউটিউবে দৌড়াতে হবে, এর মানে হল এরা অতি অল্প জেনেই অথবা ইচ্ছা কৃতভাবে আংশিক ব্যাপার জানিয়ে মানুষ কে বিভ্রান্ত করতে চায়।

পাঠে এবং মন্তব্যে অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা।

১৬| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:৩৩

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
পৃথিবীতে প্রথম মানুষ আদম (আঃ) যিনি একেশ্বরবাদ ধর্ম শুরু করিছিলেন তারপর ধারবাহিকভাবে যুগে যুগে নবী রাসূলরা এসেছেন তাহলে মানুষ গুহামানব হলো কখন?

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:৪৮

শের শায়রী বলেছেন: এখানেই তো ধর্ম আর বিজ্ঞানের সংঘাত ভাই।

১৭| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৩৫

সুপারডুপার বলেছেন:



শের শায়রী ভাই,

জরাথুস্ট্রবাদ অনুসারে এই জগতে ভালো ঈশ্বর আহুরা মাজদা (Ahura Mazda) এবং খারাপ ঈশ্বর আংরা মাইনিউ (Angra Mainyu) এর মধ্যে লড়াই চলছে। মানুষের কর্তব্য হল এই যুদ্ধে ভালো ঈশ্বরকে সাহায্য করা। জরাথুস্ট্রবাদ একটি দ্বৈতবাদী ধর্ম, একেশ্বররবাদী ধর্ম না। তাই আপনার পোস্টের শিরোনাম বিতর্কিত।

আপনার পোস্টে খারাপ ঈশ্বর আংরা মাইনিউ নিয়ে আলোচিত হয় নি। সেই জন্য কেউ বুঝতেও পারছে না যে জরাথুস্ট্রবাদ একটি দ্বৈতবাদী ধর্ম।

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৫০

শের শায়রী বলেছেন: সুপার ডুপার ভাই, এই ব্যাপারটা নিয়ে এর আগেও আমার একটা পোষ্টে আপনার সাথে বিস্তারিত হয়ে ছিল, যাই হোক আবারো বলি, প্রতিটা একেশ্বরবাদ ধর্মে খারাপ দিকের জন্য আর একজন দায়ী থাকে (মোটা দাগে) ইসলামে ইবলিস, ক্রিশ্চিয়ানে ডেভিল, হিব্রু "স্যা- টান" শব্দটি থেকে এসেছে শয়তান। প্রতিটা ধর্মাবলাম্বীরাই একে যার যার মত বিশ্বাস করে এখন আপনি যদি শয়তান, ডেভিল, স্যা-টান কে বিশ্বাস করাকে দ্বৈতবাদ বলেন, তবে তো পৃথিবীতে একেশ্বরবাদ বলে কিছু নাই আপনার মতবাদ অনুযায়ী।

দ্বৈতবাদ কি? যে দার্শনিক মতবাদে জীবাত্মা ও পরমাত্মা অথবা সৃষ্টি ও স্রষ্টা অথবা পুরুষ ও প্রকৃতির স্বাতন্ত্র্য স্বীকৃত। মানে দুটো ভিন্ন ভিন্ন প্রকৃতির স্বীকৃতি। দেখুন এখানে জীবাত্মা বা পরমাত্মা, সৃষ্টি এবং স্রষ্টা এই সব কিন্তু এই জিনিসের দুটো রূপ হিসাবে স্বীকৃত। এটাই দ্বৈতবাদ। তাই আল্লাহ আর আর শয়তান দুটো সম্পুর্ন ভিন্ন প্রকৃতির তারা কোন ভাবেই দ্বৈতবাদের সংজ্ঞাকে সংজ্ঞায়িত করে না।

আনুমানিক ৬২৮ থেকে ৫৫১ খৃস্টপুর্বে পারস্যে বর্তমান ইরানে জন্ম লাভ করা পয়গম্বর জরোয়াস্টার (Zoroaster)শয়তানের ধারনাটিকে আরেকটু স্বচ্ছ অবয়ব দান করার চেষ্টা করেন। তাঁর প্রচারিত মতবাদটি পরিচিতি পায় মাজদাবাদ (Mazdaism)নামে। তিনি তাঁর প্রচারিত ধর্মে আধাত্মিকতা বাদে অনেক নতুন ধারা সংযোজিত করেন। ধর্মীয় ইতিহাসে প্রথম এক ঈশ্বরবাদী ধার্মের প্রবক্তা হিসাবেও তাকে বিবেচিত করেন ইতিহাসবিদরা। তৎকালীন সমাজে পূজিত বরুণ, মিত্রা ও ইন্দ্রকে পূজা করতে অস্বীকার করে পরিবর্তে শুরু করেন তাঁর সৃষ্ট সর্ব ক্ষমতার অধিকারী, স্বর্গ মর্ত্যের সৃষ্টিকারী আহুরা মাজদা (Ahura Mazda) )নামে এক শুভ পুরুষ দেবতার পূজা। জরোয়াষ্টারের মতে আহুরা মাজদার আরেক জমজ ভাই হল আহরিমান (Ahriman)। যিনি হলেন মন্দের দেবতা। পৃথিবীতে যত খারাপি আছে সব কিছুর স্রষ্টা এই আহরিমান।

আহুরা মাজদা ও আহরিমানের মধ্যে আদর্শিক দ্বন্দ্ব প্রতিষ্ঠায় শুরু হয় বিরোধ। বিরোধ গড়ায় যুদ্ধে। জরোয়াষ্টার বিশ্বাস করতেন তাদের এই যুদ্ধ ক্রমাগত চলতেই থাকবে যতক্ষন পর্যন্ত না খারাপ দেবতা আহরিমান পরাজিত না হয়। মাজদাবাদে আছে শেষ বিচার নামে এক বিচার ব্যবস্থা যেখানে মৃত মানুষদের আত্মাকে কর্ম অনুযায়ি দুই ভাগে ভাগ করা হবে। যারা ভাল কাজ করবে তাদের প্রাপ্তি স্বর্গ আর যারা খারাপ কাজ করবে তারা ভোগ করবে অনন্তকাল নরক যন্ত্রনা ।

এখন আহরিমান বা এ্যাংরা মাইনু যাই বলেন না কেন খারাপের প্রতিভু সেটাকে বিশ্বাস করাকে যদি দ্বৈতবাদ বলেন তবে বলার কিছু নাই, ভালো খারাপ, শুভ অশুভ, আলো অন্ধকার, ন্যায় অন্যায়ের পার্থক্য প্রতিটা একেশ্বরবাদ ধর্মে আছে এর মানে এই না যে তা দ্বৈতবাদ হবে। দ্বিবিভাজন আর দ্বৈতবাদ এক না। আমি আহরিমান নিয়ে আলাপ করিনি বা অনেক বিষয়ই এড়িয়ে গেছি যা পোষ্ট উল্লেখ্য করছি কারনে লেখা অনেক বড় হয়ে গেছিল এই কারনে, অন্য কোন কারনে না।

অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

১৮| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:০১

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
বরাবরের মতোই তথ্যবহুল এবং চমকপ্রদ পোস্ট। আকারে বড় হলেও পড়তে একফোঁটাও খারাপ লাগেনি।
পোস্টটির বিষয় এবং বিশদ নিয়ে কোন মন্তব্যে গেলাম না। আমি আসলে এই বিষয়ে কিছুই জানতাম না। নতুন কিছু জেনে গেলাম।

ভালো থাকবেন প্রিয় ব্লগার । শুভকামনা।

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:৪০

শের শায়রী বলেছেন: আপনার পোষ্ট পাই না সৌরভ ভাই। মিস করি।

পাঠে এবং মন্তব্যে অশেষ কৃতজ্ঞতা।

১৯| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:৩৪

সুপারডুপার বলেছেন:



হাসান কালবৈশাখী ভাই ইসলামের সাথে জরাথুস্ট্রবাদের কিছু মিল বলে দিয়েছেন। সংক্ষেপে আরো কিছু মিল বলি :


# খোদা প্রকৃত পক্ষে জরাথুস্ট্রবাদ ধর্মে ঈশ্বর বা আহুরা মাজদা কে ডাকতে ব্যবহৃত হয়। ইসলামের সময় থেকে শব্দটি আল্লাহকে ডাকতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

#ইসলাম ধর্মে ফেরেশতা ও শয়তান এর ধারনা জরাথ্রুষ্টিয়ানদের ধারণার সাথে মিল আছে ।

# ইসলাম ধর্মের মিরাজ কাহিনী তার কয়েকশ বছর আগে লেখা জরাথুস্ট্রবাদের পাহলভী কাহিনী ‘আর্তা ভিরাপ’ (Arta Virap) এর সাথে যথেষ্ট মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

# ইসলাম ধর্মে পবিত্র কোরান আবৃত্তি করে গুনাহমুক্ত হওয়ার বিষয়ও জরাথ্রুষ্টিয়ানদের থেকে ধারকৃত। জরাথ্রুষ্টিয়ানরাও Avestan Vendidad পাঠ করে গুনাহমুক্ত হওয়াতে বিশ্বাস করত। মুসলিম ও জরাথ্রুষ্টিয়ান উভয়ই মৃত ব্যক্তির আত্মার শান্তি কামনায় মৃত্যুর কয়েকদিন পর পর্যন্ত পবিত্র গ্রন্থ থেকে পাঠ করে। উভয় ধর্মবিশ্বাসেই পবিত্র গ্রন্থ থেকে আবৃত্তি যেকোন জাগতিক অপশক্তিকে রুখে দিতে সক্ষম বলে বিশ্বাস করা হয়।

# মুসলিমদের ভাল ও মন্দ কাজের পরিমাপের নিক্তি ‘মিযান’ এর ধারনা জরাথ্রুষ্টিয়ানদের ধারনার সাথে মিল আছে ।

# ইসলাম ধর্মের পুল “সিরাতের" ধারণাটি ও জরাথুস্ট্রবাদের রিকুইটার ,চিনভাট পেরেটু (Requiter,Chinvat Peretu) -র ধারণা একই ।

# ইসলাম ধর্মের বেহেশতের অনেক বর্ণনায় জরাথুস্ট্রবাদের পাহলভী’ গ্রন্থে বিবৃত বেহেশতের সাথে মিল আছে।


এখন প্রশ্ন হচ্ছে , জরাথ্রুষ্টিয়ানরা কি টাইম মেশিনে ভবিষ্যতে যাত্রা করে এইসব কিছু ইসলাম থেকে কপি করে এনেছিল? নাকি ইসলাম স্বাভাবিক নিয়মেই অতীত থেকে কপি করে মোডিফাইড করেছিল?

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:৪১

শের শায়রী বলেছেন: ইচ্ছা আছে এই ব্যাপার গুলো নিয়ে লিখব সুপারডুপার ভাই। মানে যেটুকু পাব আর কি।

২০| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১:২৮

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: খন্দকের যুদ্ধে অবদানের পাশাপাশি সালমান আল ফার্সির (রা.) বিষয়ে আরো কিছু যোগ করতে চাই | ধর্মীয় জ্ঞানে তার ছিল অগাধ পাণ্ডিত্য এবং তিনি এ ব্যাপারে গভীর রাত পর্যন্ত মহানবী মুহাম্মাদ (সা.) এর সাথে আলোচনায় মগ্ন থাকতেন। তার কুরআন এবং বাইবেল উভয় গ্রন্থে অগাধ পান্ডিত্যের জন্য তাকে হজরত আলী (রা.) লুকমান উল হাকিম (জ্ঞানী) বলেও উল্লেখ করতেন | মহানবীর (সা.) ওফাতের পর খেলাফত ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে বিভিন্ন দল ও উপদলে বিভক্তি সত্বেও সবার কাছে সালমান ফারসির গ্রহণযোগ্যতা ছিল সত্যি প্রশংসনীয় |

ক্ষণিকের মুসাফির হিসেবে তিনি জীবন যাপন করেছেন। জীবনে কোন বাড়ী তৈরী করেননি, এমনকি মাদায়েনের গভর্নরের মতো একটি উচ্চ পদে আসীন হওয়া সত্বেও | কথিত আছে মৃত্যুর পূর্বে তিনি এই বলে কান্নাকাটি করছিলেন " রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট থেকে অঙ্গীকার নিয়েছিলেন, আমাদের সাজ-সরঞ্জাম যেন একজন মুসাফিরের সাজ-সরঞ্জাম থেকে বেশি না হয়। অথচ আমার কাছে এতগুলি জিনিসপত্র জমা হয়ে গেছে। "

বর্তমানে যারা ধর্ম ও বিত্ত নিয়ে শো অফ করেন সেই শ্রেণীর জন্য সালমান ফারসির (রা.) জীবনী অনেকটা সতর্কবাণী হিসাবেই কাজ করবে |

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:৪৩

শের শায়রী বলেছেন: স্বামীজি আরো কিছু পড়লাম উনাকে নিয়ে অনেক কৌতুহল দেখা দিয়েছে। দেখি সব এক করতে পারলে পোষ্ট দেব নিশ্চয়ই।

অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা।

২১| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৫৮

হাসান রাজু বলেছেন: এতো কষ্ট করেন ! আমি প্রাণ খুলে একটা ধন্যবাদ জানাই। আপনি ভাল থাকুন সবসময়।

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:৪৩

শের শায়রী বলেছেন: ভালো নাই হাসান ভাই, চেষ্টা করি এই সব করে ভালো থাকার। দোয়া রাখবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.