নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অমরত্বের লোভ কখনো আমাকে পায়না। মানব জীবনের নশ্বরতা নিয়েই আমার সুখ। লিখি নিজের জানার আনন্দে, তাতে কেউ যদি পড়ে সেটা অনেক বড় পাওয়া। কৃতজ্ঞতা জানানো ছাড়া আর কিছুই নেই।

শের শায়রী

হৃদয়ের কাছে বুদ্ধির বাস ভাল কথা। কিন্তু মাঝে মঝে হৃদয়ের ওপর থেকে বুদ্ধির শাসন তুলে দিতে হয়, হৃদয়কে স্বাধীন করে দিতে হয়, মুক্ত করে দিতে হয়। স্বাধীন মুক্ত হৃদয়ের ধর্মকে সব সময় বুদ্ধি দিয়ে বিচার করতে নেই।।

শের শায়রী › বিস্তারিত পোস্টঃ

খোলাফায়ে রাশেদিন হযরত আবু বকর (রাঃ)

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৩:১৯


Islamic Empire during the reign of Caliph Abu Bakr.

প্রথম পর্ব খোলাফায়ে রাশেদিনদের ইতিহাস (প্রথম পর্ব)

আসলে আমি না বুজে এই সিরিজটা শুরু করছি, যদি জানতাম এদের কর্ম পরিধি এত বিশাল তবে এই লেখায় আমি হাত দিতাম কিনা সন্দেহ আছে। পাশাপাশি, এই দেশের অধিকাংশ মানুষ মুসলমান হওয়ায় লিখতে যাবার আগে প্রতিটা তথ্য উপাত্ত এত বেশী ক্রস চেক করতে হচ্ছে গলদঘর্ম হয়ে যাবার অবস্থা। প্রতিজন খোলাফায়ে রাশেদিন কে নিয়ে বিশাল আকারের ধরুন ৭০০/৮০০ পৃষ্ঠার বই আছে তারো আবার খন্ড আছে, সেখান থেকে ব্লগের উপযোগী সামারী করতে যাওয়া মানে সিন্ধুকে বিন্ধুতে আবদ্ধ করার দুরূহ প্রচেষ্টা। তাও আমার যতটা সম্ভব চেষ্টা থাকবে একটা সার সংক্ষেপ দেবার যা মুলতঃ ঐতিহাসিক দৃষ্টি কোন দিয়ে দেখা। এর পরো কারো কোন প্রশ্ন থাকলে জিজ্ঞাস করতে পারেন, জ্ঞানতঃ জানা থাকলে উত্তর দেব। না জানলে সেটাও স্বীকার করে নেব। তবে লিখতে গিয়ে নিজের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা আবারো উপলদ্ধি করছি।

হযরত আবু বকর (রাঃ) র প্রকৃত নাম “আব্দুল্লাহ”। ইসলাম পূর্ব যুগে তার নাম ছিল আব্দুল কা’বা (ইবনুল আছীর, উসুদুল গাবাহ, খ- ২, পৃ ১৩৮)। তার অনেক উপাধি ছিল। তার মাঝে উল্লেখ্যযোগ্য হলো আল আতীক, আছ সিদ্দিক, আল আওয়াহ্‌, আল আতকা, সাহিবু রাসুলিল্লাহ (সাঃ) ও খলিফাতু রাসুলিল্লাহ (সাঃ) (ইবনু খালদুন, আল মুকাদ্দামাহ পৃঃ ৯৭)। বয়স্ক পুরুষদের মাঝে আবু বকর সিদ্দীক সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন।

আমি মুলতঃ এখানে হযরত আবু বকরের খিলাফত নিয়ে আলোচনা করব অত্যান্ত সংক্ষিপ্ত পরিসরে। আমার গত পোষ্টে আমি লিখছিলাম বনু সাইদার চত্বরে আবু বকর (রাঃ) প্রথম বাইয়াত গ্রহনের মাধ্যমে ইসলামের প্রথম খলিফা নির্বাচিত হবার পর যে ভাষন দেন তা যে কোন নেতা বা রাষ্ট্রপ্রধান (যদিও রাষ্ট্র প্রধান শব্দটি এখানে গ্রহনযোগ্য না তথাপি আমি সবার বুঝার সুবিধার জন্য লিখছি) এর কাছে অনুকরনীয়ঃ হে লোকসকল, আমাকে তোমাদের উপর কর্তৃত্ব দেওয়া হয়েছে, কিন্তু আমি তোমাদের সর্বোত্তম ব্যক্তি নই। সুতরাং যদি আমি সঠিক কাজ করি তবে আমাকে সাহায্য করবে, আর যদি ভুল করি তবে আমাকে সংশোধন করে দিও। সততা একটি পবিত্র আমানত এবং মিথ্যা হচ্ছে বিশ্বাসঘাতকতা। তোমাদের দুর্বলরা ততক্ষণ পর্যন্ত সবল যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তাকে তার অধিকার আদায় করে দেই ইনশাআল্লাহ এবং তোমাদের শক্তিশালীরা ততক্ষণ পর্যন্ত দুর্বল যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তাদের কাছে থেকে পাওনা আদায় করে দেই ইনশাআল্লাহ। কোনো জাতি জিহাদ ত্যাগ করলে অবশ্যই আল্লাহ তাকে লাঞ্ছিত করে ছাড়বেন। কোনো জাতির মধ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়লে আল্লাহ অবশ্যই তাদেরকে পরীক্ষায় ফেলবেন। আমাকে ততক্ষণ মেনে চলো যতক্ষণ আমি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে মেনে চলি। যদি আমি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে মেনে না চলি, তাহলে আমার প্রতি তোমাদের আনুগত্যের কোনো বাধ্যবাধকতা থাকবে না। (আব্দুর রাজ্জাক, আল মুছান্নাফ)।

মহানবীর মৃত্যুর পর হযরত আবু বকর যখন প্রথম খলিফা হন তখন এক ভয়াবহ জটিল পরিস্থিতির উদ্ভব হয় যা আমরা কিছুটা উপলদ্ধি করতে পারি মহানবীর সর্বকনিষ্ঠ স্ত্রী এবং আবু বকর (রাঃ) এর কন্যা হযরত আয়েশা (রাঃ) এর এক বর্ননা থেকেঃ মহানবীর মৃত্যুর পর আরবরা স্বধর্ম (ইসলাম) ত্যাগ করতে শুরু করে, ইহুদী এবং খ্রিষ্টান গোত্রগুলো মাথা তুলতে শুরু করে এবং মুনাফেকি বিস্তার লাভ করে। রাসুলিল্লাহ (সাঃ) কে হারানোর পর মুসলমানদের অবস্থা দাড়ায় শীতের রাতে বর্ষন সিক্ত মেষপালের মত। আবু বকরের নেতৃত্বে সংগঠিত হবার পূর্ব পর্যন্ত এই অবস্থা চলতে থাকে। (সীরাতে ইবনে হিশাম পৃষ্ঠা ৩৬০) এমন কি মক্কার তৎকালীন শাষন কর্তা আত্তাব ইবনে উসাইদ ভয়ে আত্ম গোপন করে।

আপনাকে মনে রাখতে হবে সে সময়ের আরবের পটভুমি। বর্বর আরববাসীদের মাঝে ছিল গোত্রপ্রীতি, স্বজন প্রীতি, স্বাতন্ত্র্যবোধ, ব্যাক্তি স্বাধীনতা এবং নেতৃত্বের প্রতি দুর্দমনীয় লোভ। যা শত শত বছর তাদের রক্তের মাধ্যমে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে প্রবাহিত হচ্ছিল। ইসলাম প্রতিষ্ঠার পর এগুলো বিলীন হয়ে যায়। ইসলামের মুল বক্তব্য ভ্রাতৃত্ববোধ, সাম্যতা তাদের রক্তের কলুষতাকে তখন সবে মাত্র স্তিমিত করার চেষ্টা চলছিলো মহানবীর জীবিত অবস্থায়। মহানবীর মৃত্যুর সাথে সাথে তাদের রক্তের সেই প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম প্রবাহিত চাপা অন্যায় আবারো বিকাশিত হবার একটা পথ পায় নেতৃত্বহীনতার আশংকায়। দলে দলে মানুষ জন ইসলাম থেকে বের হয়ে আবার নিজেদের গোত্র ভিত্তিক নেতৃত্ব নেবার চেষ্টা চালায়। এই যে স্বধর্মত্যাগী আন্দোলন একে আরবীতে বলে “রিদ্দা” একই সময় আরবে কিছু স্বঘোষিত নবীরও আবির্ভাব ঘটে। হযরত আবু বকরের দু বছরের শাসনামলের অধিকাংশই কাটে এই “রিদ্দার যুদ্ধে”।



মহানবীর নবুয়ত প্রাপ্তিকে তার সন্মান, প্রতিপত্তি এবং মর্যদা বৃদ্ধিতে অনেকের মনেই নবুয়তির আকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধি পায় যা থেকে ভন্ড নবীদের উৎপত্তি যাদের মধ্যে ইয়ামেনের আনসি গোত্রের নেতা আসাদ আনসি, ইয়ামামার বনু হানিফা গোত্রের মুসায়লামা, বনু সাদ গোত্রের তোলায়হা, বনু ইয়ারবু গোত্রের খ্রিষ্টান মহিলা সাজাহ ভন্ডনবীদের মাঝে উল্লেখ্যযোগ্য।

ইয়ামেনের আসাদ আনসি মহানবীর জীবদ্দশায় হিজরী দশম সালে নিজেকে নবী দাবী করে ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করে। সে ইয়েমেনের মুসলমান শাসন কর্তাকে হত্যা করে রাজধানী সানা এবং নাজরানে কর্তৃত্ত্ব স্থাপন করে। মহানবী এ বিদ্রোহ দমনের জন্য সা’দ বিন জাবালকে প্রেরন করেন। কিন্তু সা’দ বিন জাবাল পৌছার পুর্বেই ইয়েমেনের নিহত শাসনকর্তার এক আত্মীয় ফিরোজ দায়লামী এই ভন্ডনবী আসাদ আনাসিকে মহানবীর মৃত্যুর দু এক দিন পূর্বে হত্যা করে। তবে তার অনুসারীরা তখনো সানায় তাদের কর্তৃত্ত্ব ধরে রেখেছিল। (উলায়মী, আল উনসুল জালীল বি তারীখিল কুদসী ওয়াল খলীল, খ-১, পৃঃ২২২)

ভন্ডনবীদের মাঝে সব থেকে প্রতাপশালী ছিল বনু হানিফা গোত্রের মুসায়লামা কাযযাজ। মুসায়লামা কাযযাবের বয়স হয়েছিলো দেড় শত বছর। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পিতা আবদুল্লাহ’র চেয়ে বয়সে বড় ছিল। সে আবার খ্রিষ্টান ভন্ড মহিলা নবী সাজাহকে বিয়ে করে প্রচন্ড ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠে। নবম হিজরীতে বনু সাদ গোত্রের তোলায়হা নিজেকে নবী দাবী করে মদিনার বেদুঈনদের সাথে যাকাত বিরোধী এক আন্দোলন গড়ে তোলে (ইবনু কাছির, আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া খ-৫, পৃঃ ১০২)।

এত সব বর্ননা করার কারন এই যে, খিলাফত লাভের সাথে সাথে হযরত আবু বকর (রাঃ) কি অবস্থায় পড়েছিলেন তার একটা ধারনা দেয়ার। ইসলামের বাতি প্রায় নিভু নিভু হয়ে আসছিলো, কোন মতে মদিনায় টিম টিম করে জ্বলছিলো। আমাদের অনেকেরই ধারনা নেই যে ইসলামের শুরুতে কত জটিল এক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে সে সময়ের খলিফাদের যেতে হয়েছিল। যার শুরু হয়ে ছিল এক দম শুরু থেকে হযরত আবু বকরের সময় হতে।

আবু বকর (রাঃ) এমন ঘোরতর দুর্যোগময় মুহুর্তে অত্যন্ত সাহস এবং দৃঢ়তার সাথে এই জটিল পরিস্থিতির মুখে আরবদের সামনে মুসলমানদের শক্তি প্রদর্শনের নিমিত্তে ৭০০ সৈন্যের এক বাহিনীকে উসামার নেতৃত্বে সিরিয়া অভিমুখে পাঠায়। তখন সিরিয়া ছিল বাইজান্টাইন সাম্রাজ্যের একটি প্রদেশ। এ অভিযান সফল হয়েছিল, দেড় মাসের মাথায় উসামা বিজয়ীর বেশে রাজধানী মদিনায় ফিরে আসেন।



এর মাঝে হযরত আবু বকর তার সর্ব শক্তি নিয়োগ করেন এই স্বধর্মত্যাগী এবং ভন্ড নবীদের হাত থেকে ইসলাম কে রক্ষা করতে। তিনি সমস্ত মুসলমানদের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করেন ১১ টি দলে বিভক্ত করে। কোনো কমান্ডারকে তাৎক্ষণিক মিশনে যেতে হলে অন্যদের মিশন পরে পরিচালনা করা হত। একটি দল স্বয়ং খলিফা নিজ নেতৃত্বে রেখে দেন মদিনা রক্ষার জন্য। সেনাদলগুলোর কমান্ডার ও তাদের দায়িত্ব ছিল নিম্নরূপ,

খালিদ বিন ওয়ালিদ প্রথমে বুজাখার আসাদ গোত্রের তুলায়হা বিন খুওয়াইলিদ আল আসদি ও পরে বুতাহর মালিক বিন নুয়াইরা।

ইকরিমা ইবনে আবি জাহল মুসায়লিমার সাথে লড়াই করেন।

আমর ইবনুল আস তাবুক ও দুমাতুল জান্দালের কুজা ও ওয়াদিয়া গোত্রের বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াই করেন।

শুরাহবিল ইবনে হাসানা ইকরিমাকে অনুসরণ করেন ও খলিফার নির্দেশের অপেক্ষায় ছিলেন।

খালিদ বিন সাইদ, সিরিয়ান সীমান্তের কিছু বিদ্রোহী গোত্র।

তুরাইফা বিন হাজিজ, মদিনা ও মক্কার হাওয়াজিন ও বনি সুলাইমের বিদ্রোহী গোত্র।

আলা বিন আল হাদরামি, বাহরাইনের বিদ্রোহী।

হুজায়ফা বিন মিহসান, ওমানের বিদ্রোহী।

আরফাজা বিন হারজামা, মাহরার বিদ্রোহী।

মুহাজির বিন আবি উমাইয়া, ইয়েমেনের বিদ্রোহী, পরে হাদরামাওতের কিন্দার বিদ্রোহী।

সুয়াইদ বিন মুকারান, ইয়েমেনের উত্তরে উপকূলীয় এলাকার বিদ্রোহী।

( দেখুন Laura V. Vaglieri in The Cambridge History of Islam, p.58 এবং আবুল হাসান আলী আন নদভী রচিত আল মুরতাদা, পৃঃ ৭০)



প্রত্যেক সেনাদলই তাদের যার যার দায়িত্ব সুচারুরূপে পালন করে, ছোট্ট একটা উদাহরন দিলেই বুজবেন এই রিদ্দার যুদ্ধ কেমন ছিল। স্বঘোষিত নবী মুসায়লামার বিরুদ্ধে ইয়ামামা নামক জায়গায় যে যুদ্ধ সংগঠিত হয় তাতে মুসায়লামার পক্ষে একুশ হাজার নিহত হয় এবং মুসলমানদের পক্ষে বারোশত শাহাদাত বরন করে। মদিনার আশেপাশের বিদ্রোহী গোত্রগুলোকে পরাজিত করেন হযরত আলী, হযরত তালহা এবং হযরত যুবাইর বিস্তারিত লিখতে যাব না কারন তাহলে হাজার পৃষ্টা লিখলেও শেষ হবে না। রিদ্দার যুদ্ধ শেষ হলে খলিফা দৃষ্টি দেন পারস্য এবং বাইজেন্টিয়াম সাম্রাজ্যের দিকে।

মুলতঃ রিদ্দার যুদ্ধে জয়লাভ করায় ইসলাম ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে স্থায়ী মর্যদা লাভ করে। মুসলমানদের আত্ম শক্তি বৃদ্ধি পায়। খিলাফতের ভিত্তি সুদৃঢ় হয়, জয়ের দিগন্ত উন্মোচিত হয়। এবং সামরিক দিক দিয়ে নতুন শক্তি হিসাবে আত্মপ্রকাশ পায়



৬৩৩ সালে খলিফা আবু বকর মুসলমান সেনাপতি খালিদ বিন ওয়ালিদের নেতৃত্বে ১০০০০ সৈন্যের এক বাহিনীকে এবং মুসান্নার নেতৃত্বে ৮০০০ সৈন্যের আর এক বাহিনীকে পারস্যের দিকে পাঠান। পারস্যের সেনাপতি হরমুজের সাথে মুসলিম বাহিনীর প্রথম সংঘর্ষ হয় উবাল্লার হাফির নামক স্থানে। এ যুদ্ধ ইতিহাসে “ব্যাটল অভ চেইন” নামে পরিচিত। যুদ্ধে মুসলিম বাহিনী জয় লাভ করে। ( অসাধারন এই সব যুদ্ধ বর্ননার ইতিহাস পড়ার সময় নিজে নিজে অনেকবার হতচকিত হয়ে গেছি, প্রায় সময়ই এগুলো ছিল অসম যুদ্ধ মানে বিপক্ষের তুলনায় মুসলমানদের সামরিক শক্তি কয়েকভাগের এক ভাগ ছিল, তাও কোন এক ব্যাখ্যাতীত কারনে কিভাবে যেন মুসলমানরা জয় লাভ করছে, ভবিষ্যতে হয়ত কোন কোন যুদ্ধের বর্ননা দিয়ে আলাদা পোষ্ট দেব)।



এর পর মুসলমান বাহিনী “ব্যাটল অভ লেডি ক্যাসল” যুদ্ধে জয়লাভ করে, এর পর ওয়ালাজার যুদ্ধে জয়লাভ করে, একে একে হীরা আনবার, আইনুন তামুর ও দুমা দখল করে। মুল কথা এই বাহিনী পারস্য (তৎকালীন ইরাক, ইরান) বিজয় করে নেয়। ওদিকে খলিফা আমর ইবনুল আস, সুরাহবিল ইবনে হাসানাহ, ইয়াজীদ ইবনে আবু সুফিয়ান এবং আবু উবাইদাহর নেতৃত্বে ৩৬০০০ হাজার সৈন্যের এক বাহিনীকে বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের সিরিয়ার দিকে পাঠান, সেখানে সম্রাট হিরাক্লিস এক লাখ সৈন্যের এক বিরাট বাহিনী নিয়ে বাধা দিতে আসে, এ অবস্থায় খলিফা খালিদ বিন ওয়ালিদকে পারস্যের হীরা ত্যাগ করে সিরিয়া অভিমুখে পাঠান সিরায়ায় মুসলিম সৈন্যদের সাহাযার্থে। খালিদ যখন সিরিয়ার পৌছে তখন সব মিলিয়ে মুসলিম সৈন্য ৪০ হাজারের মত বিপরীতি বাইজান্টাইন সৈন্য প্রায় দুই লাখ। সেখানে ৬৩৪ সালের ৩০শে জুলাই খালিদের নেতৃত্বে সম্মিলিত বাহিনী বিশাল বাইজান্টাইন বাহিনীকে পরাজিত করে আজনাদাইন নামক স্থানে যা ইতিহাসে “ব্যাটেল অভ আজনাদাইন" নামে পরিচিত। মাত্র চব্বিশ ঘন্টায় এই যুদ্ধের ফলাফল নির্ধারিত হয়। হিরাক্লিস পালিয়ে তার রাজধানীতে যায় দক্ষিন সিরিয়া হয় মুসলমানদের পদানত। এরপর কিছু ছোট খাট যুদ্ধ আছে যেগুলোর নামও উল্লেখ্য করলাম না কারন তাতে লেখার কলেবর বৃদ্ধি পাবে।


ফাদাকের জমি

খলিফা আবু বকরের খিলাফত কালীন যে ব্যাপারটা নিয়ে কেউ কেউ বিতর্কের সৃষ্টি করার চেষ্টা করেন সেটা হল ফাদাকের জমি নিয়ে হযরত আবু বকর এবং হযরত এর বংশধর বিশেষ করে ফাতেমা (রাঃ) এর মাঝে যে ভুল বোজাবুজির সৃষ্টি হয়েছিল সেটা নিয়ে এ নিয়ে আমি বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম মতামত দেখছি কোথাও কোথাও সহী হাদীসের উদ্ধৃতি আছে, কিন্তু আমার কাছে বিষয়টি যেভাবে মনে হয়েছে তা হল খলিফা হিসাবে আবু বকর (রাঃ) নবীর দেখানো পথের বাইরে এক পাও দিন নি, হাদীসের উদ্ধৃতি দিয়ে ব্যাপারটা বুজানোর চেষ্টা করি

হযরত আবু বকরের ব্যাপারটা আমি বুখারী এবং মুসলিম শরীফ থেকে উদ্ধৃতি দিচ্ছিঃ

ফাতিমা (রাঃ) ও আব্বাস (রাঃ) আবু বাকরের কাছে এলেন এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পরিত্যক্ত সম্পত্তির উত্তরাধিকার চাইলেন। তারা উভয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ফাদাকের জমি ও খাইবারের জমির অংশ চাইছিলেন। আবু বকর (রাঃ) তাঁদেরকে বললেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ আমাদের সম্পত্তির কোন উত্তরাধিকারী হয় না। আমরা (নবীরা) যা রেখে যাই, তা সাদাকা। মুহাম্মাদের বংশধরগণ, স্বগোত্রীয়রা, আত্মীয়স্বজন ও সঙ্গী সাথীরা সবাই এ সম্পত্তি ভোগ করবে। আল্লাহর কসম! আমি প্রতিটি ব্যাপারেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে যা করতে দেখেছি, তা ছাড়া অন্য কিছু করবো না।[বুখারী (৪০৩৫), মুসলিম (১৭৫৯), ও ইবনু হিব্বান (৪৮২৩) কর্তৃক সহীহ আখ্যায়িত] তবে যেটাই হোক নবী বংশ এনিয়ে মনো কষ্টে ছিল, কিন্তু ফাতিমা (রাঃ) মৃত্যুর পূর্বে তার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী হয়ে তার অন্তর পরিস্কার করে দেন (দেখুন মোহাম্মদ নাসের উদ্দীন লিখিত খোলাফায়ে রাশেদিন জীবন ও কর্ম পৃঃ ১২৮)।



খোলাফায়ে রাশেদিন হিসাবে হযরত আবু বকর (রাঃ) ইসলামকে ধ্বংসের মুখ দিয়ে ফিরিয়ে আনা ছাড়াও পবিত্র কোরানকে সংকলিত করেছিলেন। কুরআন একত্রিত করার বিবরনঃ

সহিহ বুখারী শরীফে যায়েদ বিন সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছেঃ মুসায়লামা কাযযাবের সাথে যুদ্ধের পর আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ) আমাকে ডেকে পাঠালেন। আমি এসে দেখলাম, তার কাছে উমর (রাঃ) নীরবে বসে আছেন। আবু বকর আমাকে বললেন, “উমর আমাকে বলেছেন, ইয়ামামার যুদ্ধে অনেক মুসলমান ক্বারি শহীদ হয়েছেন। আমার ভয় হয়, যদি এভাবে মুসলিম ক্বারিগণ শহীদ হতে থাকেন, তাহলে হাফেযদের সাথে কুরআন শরীফও উঠে যাবে। তাই আমি কুরআনকে একত্রিত করতে চাই।” আমি বললাম, “আমি এ কাজ কিভাবে করতে পারি, যা স্বয়ং নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম করেননি ?” উমর বললেন, “আল্লাহ’র কসম, এটি সওয়াবের কাজ, এতে কোনই ক্ষতি নেই।” তিনি বারবার অনমনীয়ভাবে এ কথা বলছিলেন, অবশেষে বিষয়টি ভালোভাবে আমার বুঝে আসলো।

যায়েদ (রাঃ) বলেছেনঃ উমর নীরবে শুনছিলেন। আবু বকর (রাঃ) আবার আমাকে বললেন, “তুমি তরুণ ও বুদ্ধিমান। তোমার ব্যাপারে কোন অভিযোগও নেই। তুমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওহী লেখক। সুতরাং অনুসন্ধান করে তুমি কুরআন জমা করো।”

যায়েদ (রাঃ) বলেছেনঃ এ কাজটি আমার কাছে খুবই দুঃসাধ্য মনে হলো। আমাকে যদি পর্বত উত্তোলনের নির্দেশ দেওয়া হতো, তাহলে আমি একে (পর্বত উত্তোলনকে) তার চেয়ে (অর্থাৎ, কুরআন সংকলনের কাজের চেয়ে) হালকা মনে করতাম।” আমি বললাম, “আপনারা দুজন কেন এ কাজ করতে চাইছেন, যা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম করেননি ?” আবু বকর (রাঃ) বললেন, “এ কাজে কোনই ক্ষতি নেই।” কিন্তু আমি দ্বিধান্বিত হয়ে পড়লাম আর নিজেকে এ কাজের অনুপযুক্ত মনে করলাম। অবশেষে আল্লাহ আমার অন্তরচক্ষু খুলে দিলেন আর বিষয়টি খুবই সুন্দরভাবে বুঝতে পারলাম। আমি অনুসন্ধান শুরু করলাম আর কাগজের টুকরো, উট ও ছাগলের রানের হাড়, গাছের পাতা, হাফেযদের মুখস্ত জ্ঞান থেকে কুরআন সংগ্রহ করে জমা করলাম। সূরা তাওবার দুটো আয়াত – لَقَدْ جَاءَكُمْ رَسُولٌ مِّنْ أَنفُسِكُمْ খুযাইমা বিন সাবেত (রাঃ) ছাড়া অন্য কারো কাছে পাইনি। কুরআন জমা করে আমি তা আবু বকরের কাছে পেশ করলাম, যা মৃত্যু অবধি তার কাছেই ছিলো। এরপর তা উমরের হস্তগত হয়। তার মৃত্যুর পর হাফসা বিনতে উমর (রাঃ) তা সংরক্ষণ করেন। [বুখারি শরিফ, হা. ৪৯৮৬; ইবনে কাছির : ভূমিকা]

আলী (রাঃ) এর বরাত দিয়ে আবু ইয়ালা বলেন, “কুরআন শরীফ জমা করার সবচেয়ে বেশী সওয়াব আবু বকর সিদ্দীকের প্রাপ্য। কারন তিনি সেই ব্যক্তি, যিনি সর্বপ্রথম কুরআন শরীফকে গ্রন্থাকারে রূপ দেন।”

৬৩৪ সালের ২৩শে আগষ্ট ইসলামের এই প্রথম খলিফা মারা যান শেষ হয় তার দুই বছর ৩ মাসের খেলাফতের জীবন, তবে মারা যাবার আগে তিনি একটি ব্যাতিক্রমী কাজ করে যান, তিনি তার উত্তরসুরী হিসাবে হযরত উমর (রাঃ) মনোয়ন দিয়ে যান, যদিও হযরত তালহা (রাঃ) এনিয়ে কিছুটা দ্বিমত করছিলেন, কিন্তু হযরত আবু বকরের অনুরোধে মেনে নিন।

লেখায় কোথাও কোন ভুল থাকলে জানালে কৃতজ্ঞতার সাথে ঠিক করে দেব।

পরের পর্বঃ খোলাফায়ে রাশেদিন হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)

মন্তব্য ৩৬ টি রেটিং +১১/-০

মন্তব্য (৩৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ভোর ৬:২৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


নবী মোহাম্মদ ( স: ) ও উনার লোকেরা ইহুদীদের মদীনা দখল করেন প্রথমে, এরপর উনারা মক্কা দখল করেন বিদায় হজ্জের সময়; এটাই ছিল বেদুইন সাম্রাজ্রের শুরু। নবীর (স: )মৃত্যুর পর, মক্কার মালিক গোত্রসমুহ নিজেদের এলাকা ফেরত পেতে চায়; কিন্তু তারা বুঝতে পারেনি যে, আবু বকরের অধীনে প্রচুর বেদুইন নতুন সাম্রাজ্য রক্ষার জন্য প্রস্তুত ছিলো। উনি বেদুইনদের সাম্রাজ্যকে রক্ষা করতে পেরেছিলেন, এটাই ইতিহাস; ধর্ম ছিল বেদুইনদের ঐক্য রক্ষার কবচ।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:৩৯

শের শায়রী বলেছেন: মুরুব্বী আপনি লিখেছেন কিন্তু তারা বুঝতে পারেনি যে, আবু বকরের অধীনে প্রচুর বেদুইন নতুন সাম্রাজ্য রক্ষার জন্য প্রস্তুত ছিলো এই যে না বুজতে পারা, এটা যেমন তখনকার ঘাউড়া বেদুঈনরা যেমন বুঝে নাই তেমনি এখনো কিছু বোধ হীন মানুষ বুজতে চায়না, কিসের ভিত্তিতে ওই বেদুঈনরা প্রস্তত ছিল, আর তারা সংখ্যায় প্রচুর না তুলনায় ছিল সামগ্রিক বেদুঈনদের সংখ্যালঘু।

বুজতে পারার জন্য ধন্যবাদ।

২| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ভোর ৬:৩১

রাবেয়া রাহীম বলেছেন: ঝর ঝরে লেখা। ভাল লাগলো পড়তে।

মহিলাদের মধ্যে প্রথম মুস্লিম ছিলেন বিবি খাদিজা (রাঃ)

পুরুষদের মধ্যে প্রথম মুসলিম ছিলেন আবু বকর (রাঃ)

বাকি পর্বের অপেক্ষায়

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:৪০

শের শায়রী বলেছেন: বোন অশেষ কৃতজ্ঞতা এবং ধন্যবাদ।

৩| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৭:৪২

ইসিয়াক বলেছেন: পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায়।
শুভকামনা রই্লো।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:৪২

শের শায়রী বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ প্রিয় কবি।

৪| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৮:২০

নীল আকাশ বলেছেন: পুরুষদের মাঝে আবু বকর সিদ্দীক সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন। পুরুষ নয় বয়স্ক পুরুষ হবে।
উম্মুল মু'মিনিন হযরত খাদিজা (সা.) ছিলেন ইসলামের ইতিহাসের প্রথম মুসলমান। (যদিও পুরুষদের মধ্যে প্রায় একই সময়ে আমিরুল মু'মিনিন হযরত আলী-(আ.) দশ বছর বয়সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন বলে তাঁকেও প্রথম মুসলমান ধরা হয়।) বিশ্বনবী (সা.)'র পেছনে সর্বপ্রথম যে দুই জন জামায়াতে নামাজ আদায় করেছেন তারা হলেন উম্মুল মু'মিনিন হযরত খাদিজা (সা.)ও বালক আলী(আ.)। খাদিজা (সা.) মহান আল্লাহর এতটা নৈকট্য লাভ করেছিলেন যে যখন হযরত জিবরাইল (আ.) ওহী নিয়ে বিশ্বনবী (সা.)'র কাছে নাজেল হতেন তখন তিনি প্রথমে মহান আল্লাহর সালাম পৌঁছে দিতেন এই মহীয়সী নারীর কাছে।
ধন্যবাদ।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:৪৪

শের শায়রী বলেছেন: নীল ভাই, অশেষ কৃতজ্ঞতার সাথে সংশোধন করা হল। সামনেও সহযোগিতার দাবী রইল।

৫| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:২২

রাজীব নুর বলেছেন: তথ্যপূর্ন পোষ্ট।
খুব ভালো লাগলো।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:৪৫

শের শায়রী বলেছেন: পাঠে এবং মন্তব্যে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা রাজীব ভাই

৬| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:৩১

বোকা পুরুষ বলেছেন: নীল আকাশ বলেছেন: "বিশ্বনবী (সা.)'র পেছনে সর্বপ্রথম যে দুই জন জামায়াতে নামাজ আদায় করেছেন তারা হলেন উম্মুল মু'মিনিন হযরত খাদিজা (সা.)ও বালক আলী(আ.)। " নামাজ তো আসলো মিরাজের পর, তখণ কিভাবে নামাজ পরলো?

৭| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:৪৩

নীল আকাশ বলেছেন: @বোকা পুরুষ কে বলছিঃ পবিত্র মীরাজ শরীফে নামায কত রাকাত সেটা ঠিক করা হয়েছিল। আপনি কী জানেন না পবিত্র কা'বা শরীফে নামায পড়ার সময় নবী করীম (সা.) এর গায়ের উপর ময়লা আবর্জনা ফেলে দেয়া হয়েছিল?
ধন্যবাদ।

৮| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:৫৯

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: এগিয়ে চলুক সিরিজ।

বিশ্বাসের বিষয়টা খুবই আপেক্ষিক এব সেনসিটিভও বটে।
আমরা প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতেই উপসংহারে পৌছার চেষ্টা করি। এটাই স্বাভাবিকতা।
আবার ইতিহাস বিজয়ীর পক্ষে লিপিবদ্ধ হয় বলেই বিজিত মিথ্যা তাও কিন্তু নয়।
এই দুইয়ের মাঝখানে কোন পক্ষে ঝুঁকে না গিয়ে সত্যাহরণ খবুই কঠিন এবং কষ্টসাধ্য হলেও সেটাই প্রকৃত সত্য।

ম্যা' ভাই দারুন কষ্টের এবং খবুই স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে নেমেছেন। দোয়া রইল যাতে সফল এবং প্রকৃত নির্মোহতার সাথে সমাপ্ত করতে পারেন।

++++

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২৭

শের শায়রী বলেছেন: ম্যা'ভাই জ্ঞানতঃ নির্মোহ থাকব। আর পাশাপাশি যাই পড়ি না কেন তাতে আমার বিশ্বাসের কিছু যায় আসে না, আমার ধর্মীয় বিশ্বাস আমার কাছে, আর দশটা ধর্মের ইতিহাস যেভাবে পড়ছি এখানেও সেভাবে থাকতে চাই।

দোয়া আমার জন্য পাথেয় ম্যা'ভাই। অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা।

৯| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৪২

হাসান রাজু বলেছেন: আপনি চমৎকার লিখেন। মহৎকে লজ্জায় ফেলার ইচ্ছা আমার নেই। কিন্তু এইটুকু প্রশংসা না করে পারছি না।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫১

শের শায়রী বলেছেন: এই মনিহার আমায় নাহি সাজে! :) তাও লোভীর মত দুহাতে তুলে নিলাম। পাঠে, প্রসংশায় এবং মন্তব্যে অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা হাসান ভাই।

১০| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:৫০

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: পাঠে এবং মন্তব্যে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা রাজীব ভাই


নবিজির (সঃ) দাঁড়ি, পায়ের ছাপ, জায়নামাজ ইত্যাদি পৃথিবীর অনেক যাদুঘরে আছে। ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আপনার কাছ থেকে একটা পোষ্ট আশা করছি। এগুলো কি আসল। নাকি নকল? আধুনিক লেখা লিখবেন। লজিক নির্ভর।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:৫৩

শের শায়রী বলেছেন: রাজীব ভাই আপনি যে বিষয় টা নিয়ে লিখতে বলছেন, সেটা নিয়ে লিখতে গেলে আসল নকল পার্থক্য বুজতে হবে কিন্তু সেটা তো আমার পক্ষে আসলে সম্ভব না। তারপরো আমি যতদুর সম্ভব এনিয়ে জানার চেষ্টা করব। যদি জানতে পারি অবশ্যই পোষ্ট দেব। এবং সেটা নিশ্চিত থাকুন অবশ্যই লজিক্যালি হবে যদি লিখার মত যথেষ্ট তথ্য পাই।

আবারো অনেক অনেক ধন্যবাদ প্রিয় ভাই।

১১| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:৫০

রাশিয়া বলেছেন: রাশিদুন খিলাফাতের সৈন্যবাহিনীর লিমিটেড রিসোর্স ছিল। যার অপটিমাম ইউটিলাইজেশনের জন্য তারা সুদূরপ্রসারী স্ট্র্যাটেজি ফিক্স করতেন। যার ফলাফল হল প্রতিটি অসম যুদ্ধে বিস্ময়কর বিজয়। তারা নিজেরা কখনোই বিশ্বাসঘাতকতা করতেন না, কিন্তু প্রতিপক্ষের মধ্যে মীরজাফর খুঁজতেন এবং পেয়েও যেতেন। তাদের মাধ্যমে প্রতিপক্ষের দুর্বলতা ভালোভাবে জেনে সকলে বসে যুদ্ধ কৌশল ঠিক করতেন। যেহেতু তাদের মধ্যে কোন বেঈমান থাকত না - তাই এই যুদ্ধ কৌশল লিক আউট হতনা। এই হচ্ছে অবিশ্বাস্য যুদ্ধগুলি জেতার রহস্য।

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:০৪

শের শায়রী বলেছেন: রাশিয়া ভাই, আমার কাছে যুদ্ধ কৌশলের থেকে বেশি মনে হয়েছে যে কৌশল তাহল মৃত্যু ভীতিকে জয় করা। এরা যুদ্ধ করত শহীদ হবার জন্য। যার কারনে প্রতিটা সৈন্য হয়ে যেত অনেক টা অজেয়। যার মন থেকে মৃত্যু ভীতি উঠে গেছে তাকে তো হত্যা করা যায় না। প্রতিটা যুদ্ধই আমি খুব মনোযোগ দিয়ে পড়ছি। এর সাথে আপনি যে কারন গুলো উল্লেখ্য করছেন সেগুলো অবশ্যই আছে কিন্তু আমার কাছে মুল ব্যাপার মনে হয় এটাকেই।

পাঠে এবং মন্তব্যে অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা।

১২| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৪

নিভৃতা বলেছেন: হজরত মুহাম্মদ (সা) এর মৃত্যুর কয়েক মাস পরেই ফাতেমা (রা) মৃত্যুবরণ করেন। এই সময়টা তিনি পিতার মৃত্যু শোকে এতটাই কাতর ছিলেন যে উনার মুখে এক চিলতে হাসিও নাকি দেখা যায় নি। এমন শোকাতুর অবস্থায় তিনি জমি নিয়ে মনোমালিন্যে জড়াবেন এই ব্যাপারটা কেন জানি মেনে নেয়া যায় না।

আবুবকর (রা) মাত্র দুই বছর খিলাফতে ছিলেন। এই দুই বছরে তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম, অসাধারণ বুদ্ধিমত্তা ও সাহসিকতার সাথে ইসলামের চরম দুর্দিনের অবসান ঘটাতে পেরেছিলেন বলেই মনে হচ্ছে।

যথারীতি অসাধারণ বর্ণনা। এক রাশ ভালো লাগা। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:০৮

শের শায়রী বলেছেন: প্রিয় বোন অত্যন্ত সুচিন্তিত এবং যৌক্তিক এক মন্তব্য করেছেন, যা এই ফাদাকের জমি বিরোধ এর ব্যাপারে আমার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন এক পয়েন্ট বলেই মনে হয়েছে অথচ এই পয়েন্টে আলোকপাত করাই হয় নি কিন্তু এত গুরুত্বপূর্ন একটা পয়েন্ট সবারই ভাবা উচিত। আপনি লিখেছেন হজরত মুহাম্মদ (সা) এর মৃত্যুর কয়েক মাস পরেই ফাতেমা (রা) মৃত্যুবরণ করেন। এই সময়টা তিনি পিতার মৃত্যু শোকে এতটাই কাতর ছিলেন যে উনার মুখে এক চিলতে হাসিও নাকি দেখা যায় নি। এমন শোকাতুর অবস্থায় তিনি জমি নিয়ে মনোমালিন্যে জড়াবেন এই ব্যাপারটা কেন জানি মেনে নেয়া যায় না।

অসাধারন এই মন্তব্যের জন্য আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা এবং ধন্যবাদ জানবেন।

১৩| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:২৩

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
খলিফা হজরত আবু বকর (রাঃ) ব্যাকগ্রাউন্ড নিয়েও কিছু আলোকপাত করা দরকার ছিল।
উনি ছিলেন মক্কার অন্যতম ধনাড্ড ও প্রভাবশালী ব্যাক্তি। বাজার দোকান বিশাল পশুপাল এছাড়াও
তার অধিনে দেড় দুশোর মত কৃতদাস ছিলো।

খাদিজা, আবু বকর (রাঃ) এদের মত ধনী ও হামজা ও আলীর মত দীর্ঘদেহী দুর্ধর্ষ ফাইটার গন মোহাম্মদ (স) দলকে প্রাথমিক বড় সফলতা এনে দিয়েছিল

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:৫৬

শের শায়রী বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ হাসান ভাই, আমি মুলতঃ খোলাফায়ে রাশেদিনদের খেলাফত কালের দিকে দৃষ্টি সীমাবদ্ধ রাখার চেষ্টা করছি। তথ্যপূর্ন মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা জানুন।

১৪| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: সবার মন্তব্য গুলো পড়ে ভালো লাগলো।

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:৫৭

শের শায়রী বলেছেন: ভালো মন্তব্য আমিও খুব এনজয় করি রাজীব ভাই।

১৫| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:২২

সোহানী বলেছেন: এতো কঠিন বিষয় মাথায় ঢুকে না...... :((

২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৩:৩১

শের শায়রী বলেছেন: আপনেরে নিয়ে কি একটা অবস্থায় আছি বইলা বুঝাইতে পারব না, যাই লিখি অংক, ফিজিক্স, ইতিহাস, ধর্ম সব আপনের কঠিন লাগে, আমারে তো এট্টু জায়গা দেবেন লেখের জন্য, নাকি। কি যে করি ..... :-<

১৬| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১:৪৩

কাছের-মানুষ বলেছেন: পর্বটি পড়লাম এবং অনেক কিছু জানা হল। কষ্টসাধ্য লেখা।
শুভ কামনা রইল এই সিরিজের জন্য।

২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৩:৩৩

শের শায়রী বলেছেন: পাঠে এবং মন্তব্যে অশেষ কৃতজ্ঞতা ভাই, আশা রাখি সামনের পর্বগুলোতেও আপনার মন্তব্য পাব।

১৭| ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:৩৮

সোহানী বলেছেন: হাহাহাহাহা....... কি করুম ভাইজান, মাথা ভর্তি গোবর! ক্লাস ওয়ান টুর বাচ্চারে আফনি কোয়ান্টাম ফিজিক্স বুঝাইলে কেমনে চলবে ;)

২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৩১

শের শায়রী বলেছেন: হ এই সব কইয়া আমাগো ইলিক বিলিক বুজান, আমরা বুজি আপনের পোষ্ট আর পড়ি নাই, আমরা জানি কেডা কেমুন :)

১৮| ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:১৪

মনিরা সুলতানা বলেছেন: ভালোলাগা ! লেখায় +++
আল্লাহ উত্তম প্রতিদান দান করুন।

০১ লা মার্চ, ২০২০ রাত ২:০৫

শের শায়রী বলেছেন: আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ বোন।

১৯| ০৩ রা মার্চ, ২০২০ রাত ৩:০৭

সোহানী বলেছেন: জানলেতো ভাইজান, রাজিব নুর ভাইজানের মতো পোস্ট দিতেই.........হাহাহাহাহা

(অফ টপিক, আপনার লিখাগুলো পড়ার জন্য মাথা ঘামাতে হয়। কিন্তু মাথা ঘামানোর মতো টাইম নাই :P )

০৩ রা মার্চ, ২০২০ বিকাল ৫:৫৮

শের শায়রী বলেছেন: দরকার নাই বোন মাথা ঘামানোর :) এই যে এত ব্যাস্ততার মাঝেও টাচ করে যান এতেই অনেক পাওয়া।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.