নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নানা দেশ কত কথা

শোভন শামস

আমার দেখা নানা দেশের কথা সবার জন্য - পাঠকের ভাল লাগাতেই আনন্দ

শোভন শামস › বিস্তারিত পোস্টঃ

হ্যানয় শহরে রাত ও অন্যান্য – ছবি ব্লগ

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:২৬


রাতের হ্যানয়





রাতে সিটি সেন্টারে মানুষজন















হ্যানয় শহরে সিক্লো- এখন শুধু পর্যটকদের জন্য





হ্যানয় শহরে মসজিদ
এখানে বিকেল বেলা ও সন্ধার সময় অনেকে হাঁটাহাঁটি করে কিংবা একটু সময় কাটায়। পার্কের একপাশে একজন সিক্লো চালক তার বাহন নিয়ে পর্যটকদের জন্য অপেক্ষা করছিল। তার এই সিক্লোতে করে আস্তে আস্তে শহরের নানা জায়গায় পর্যটকদের ঘুরিয়ে আনে। সিক্লো চালক গেঞ্জি ও প্যান্ট পরা, বেশ স্মার্ট, মনের সুখে সিগারেট টানছে আর পাশ দিয়ে যাওয়া পথচারীদেরকে তার বাহনে চড়ার অনুরোধ করছে।

তাকে পেছনে ফেলে সামনে এগিয়ে গেলাম। রাস্তার মাঝে মোড়ের মধ্যে বেশ বড় দুর্গের মত গোলাকার ঘর, ভেতরে কি আছে বুঝলাম না। এর পাশ দিয়ে সামনে এগিয়ে চললাম। সামনেই একটা বেশ ব্যস্ত বাণিজ্যিক এলাকা। পাইকারি জিনিসপত্রের বাজার, অনেক মানুষ কেনাকাটা করছে। এখানে একটু জোরে কথাবার্তা শুনতে পেলাম, সাধারনত শহরে উত্তেজনা, চিৎকার চেঁচামেচি তেমন একটা শোনা যায় না।

বেশ গরম এই বিকেলেও , হাঁটতে হাঁটতে ঘেমে গিয়েছি, পানি কেনার জন্য একটা ছোট দকানের সামনে দাঁড়ালাম। বুড়ো বুড়ী দোকান চালায়, তাদের চেহারায় আভিজাত্যের ছাপ, এক বোতল পানি চাইলাম, অরধেক দামে এখানে পানি পেলাম। হোটেলের কাছের দোকানগুলোতে দাম দ্বিগুণ। পানির বোতল নিয়ে এগিয়ে চলছি, সামনে দেখি আরবি লিখা একটা বোর্ড। একটু ভাল করে খেয়াল করতেই একটা মসজিদ দেখলাম। হ্যানয় শহরে বেশ কিছু মুসলমান আছে, তাদের মসজিদ আছে, হালকা আজানের ব্যবস্থাও আছে। আজানের শব্দ শুনতে পেলাম, তবে ঢাকা শহরের মত সুললিত আজান এখানে কোথায় পাবো।

হাঁটতে হাঁটতে একটা মোড়ের কাছে চলে এলাম, এখানে হঠাৎ করে দুই তিনটা মোটরসাইকেল আমাদের সামনে ব্রেক করে দাঁড়ালো। চালক ছেলে মেয়ে উভয়েই আছে। তারা আমাদেরকে তাদের পেছনে উঠতে বলল, একটু অবাক হলাম, ব্যাপার কি? পরে জানলাম এখানে এই বাইকের পেছনে বসিয়ে পুরো শহর দেখিয়ে আনে এসব বাইকে আসীন গাইড। পর্যটকরা কম খরচে এ ধরনের বাইকে করে হ্যানয় শহর সম্পর্কে একটা ধারনা পায়। এদের ব্যাপারে খোঁজ নেইনি আগে তাই এই অ্যাডভেনচারে গেলাম না।
এই চালকরা পর্যটকদের হ্যানয়ের দর্শনীয় স্থান দেখানোর পাশাপাশি নানান ধরনের মার্কেটে নিয়ে যায় এবং দেশ ও মানুষকে জানতে সাহায্য করে, এটাও একটা নতুন অভিজ্ঞতা। থাইল্যান্ডে এই ধরনের ট্যাক্সি সার্ভিস ছিল, তবে তা ছিল বিপদজনক, কারন চালকরা ওভার স্পীডে চালিয়ে নানা ধরনের দুর্ঘটনার সম্মুখীন হত। সন্ধ্যা হয়ে আসছিল, রাতে একটা ডিনার পার্টিতে যেতে হবে তাই শহরের কিছু অংশ দেখে ফেরার পথ ধরলাম।
ডিনারের পরিবেশ ও পরিবেশনা একটু নতুন ধরনের। প্রতিটা কোর্সের সাথে তারা একজন একজন করে পালাক্রমে সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে এক পেগ খালি করে। আমরা তার বদলে কোমল পানীয় নিয়ে তাদের সুস্বাস্থ্য কামনা করলাম। লেবু দিয়ে সেদ্ধ করা ওয়েস্টার বা ঝিনুক , স্কুইব ও নানান বিচিত্র পদের সামুদ্রিক মাছের আইটেম, কাভিয়ার ও ছিল এই ডিনারে। সবশেষে ভাত যখন পরিবেশিত হল তখন কোন কারী ছিল না সেই সাথে। ডিনারে আগেই ব্রেড বাটার খেয়ে নিয়েছিলাম। এটাও একটা নতুন অভিজ্ঞতা।

রাতের বেলা সিটি সেন্টারের কাছে হোয়ান কিয়েম লেকে গেলাম। এই লেকের চারপাশ দিয়ে রাস্তা চলে গেছে। যে কোন জায়গা থেকে অতি সহজে এই সিটি সেন্টারে আসা যায়। সন্ধ্যার পর অনেক স্থানীয় মানুষ এখানে আসে। এটা তাদের সময় কাটানো এবং বিনোদনের একটা সুন্দর জায়গা। হোয়ান কিয়েম অর্থ ফেরত দেয়া তলোয়ার। এবং এই নামটা এখাণকার একটা প্রচলিত উপকথার ভিত্তিতে এসেছে। এখানকার রাজা লি লয় কে সৃষ্টিকর্তা একটা তলোয়ার দিয়েছিল, সেই তলোয়ার দিয়ে রাজা আক্রমণকারী চীনাদেরকে তার রাজ্য থেকে বিতারিত করেছিলেন। একদিন বোটে করে লেক ভ্রমন করান সময় রাজা একটা বিশাল কচ্ছপ দেখতে পান। সেই কচ্ছপ তলোয়ারটা নিয়ে লেকের গভীর পানিতে ডুব দেয় এবং সৃষ্টিকর্তার কাছে তা ফেরত নিয়ে চলে যায়। এখনো বিশ্বাস করা হয় যে সেই বিশাল কচ্ছপ এই লেকে এখনো আছে।

লেকের দক্ষিণ কোনায় ছোট একটা দ্বীপ এটাকে জেড আইল্যান্ড বলে, এখানে একটা ছোট মন্দির আছে। ১৮ শতকে এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল।এটা তের শতকের বীর ত্রান হুং দাও এর স্মৃতির প্রতি সম্মান দেখিয়ে বানানো হয়েছিল। লেকের পাড় থেকে লাল রঙ করা একটা ব্রিজ মন্দিরকে যুক্ত করেছে। এখানে রাতের বেলা আলোকসজ্জা থাকে। অনেক ভ্রমণকারী এবং স্থানীয়রা এখানে বেড়াতে আসে, ছবি তোলে। এই লেকের চারপাশের ব্যস্ত ট্রাফিক থেকে নিজেকে দুরে রেখে চমৎকার হেঁটে বেড়ানোর রাস্তা আছে এখানে। ভিয়েতনামের স্থানীয় লোকজন ও যুবক যুবতীরা রাতের বেলা তাদের প্রিয়জনদের নিয়ে এখানে এসে কিছুক্ষণ অন্তরঙ্গ সময় কাটায়।


মন্তব্য ২০ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৫৯

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: ভাত খায় কি দিয়ে!!
সমসাময়িক সময়েই স্বাধীনতা প্রাপ্তি, কিন্ত কত দ্রুত চলা!!

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:৪২

শোভন শামস বলেছেন: ভাত খায় মাছ দিয়ে, এরা পর্ক খায় বেশ, প্রায় সব কিছুতেই তার রেশ থাকে।
সাথে থাকবেন ধন্যবাদ।

২| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:০১

চাঁদগাজী বলেছেন:


কল-কারখানা কিছু চোখে পড়লো? জীবন যাপনের মান কেমন?

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:৪০

শোভন শামস বলেছেন: নিজেরা এখন গাড়ী এসেম্বল করছে, সেমসাং মোবাইল ফোন এখানেই এসেম্বল হয়। নতুন নতুন কারখানা হচ্ছে। পর্যটক আছে ঝাঁকে ঝাঁকে।
এখানেও শ্রেণী ভেদ আছে, তবে সাধারন জীবনে এরা অভ্যস্ত।সাথে থাকবেন ধন্যবাদ।

৩| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:২৩

কালীদাস বলেছেন: এমনিতে ভিয়েতনামিজরা কি ধর্মে বিশ্বাসী? নাকি উদাসীন?
এই সিক্লো জিনিষটা কি ঠেলাগাড়ির মত নাকি?

৪| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:৪৪

শোভন শামস বলেছেন: ধর্ম নিয়ে তেমন মাতামাতি নেই, সমাজতান্ত্রিক দেশ।
সিক্লো জিনিষটা রিক্সার মত।
সাথে থাকবেন ধন্যবাদ

৫| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:৫১

সুমন কর বলেছেন: আজানের শব্দ শুনতে পেলাম, তবে ঢাকা শহরের মত সুললিত আজান এখানে কোথায় পাবো। -- দেশের প্রতি গভীর টান অনুভূত হলো।

ছবি আর লেখা ভালো লাগল। শুভ রাত্রি।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৮:১৪

শোভন শামস বলেছেন: সাথে থাকবেন ধন্যবাদ।

৬| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ২:১১

কবি হাফেজ আহমেদ বলেছেন: ছবি এবং লিখা দুটোই ভালো লাগলো। এগিয়ে যান। শুভ কামনা থাকলো।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৮:১৩

শোভন শামস বলেছেন: সাথে থাকবেন ধন্যবাদ।

৭| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:১৩

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: সেখানকার সুশীল সমাজ কেমন?

জুনিয়রা সিনিয়দের কে দেখল সালাম টালাম দেয়, নাকি গুতা মারে?

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:৩১

শোভন শামস বলেছেন: মানুষজনকে ভালই লেগেছে
সাথে থাকবেন ধন্যবাদ।

৮| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:২৭

নতুন নকিব বলেছেন:



হ্যা, সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকার হাতে ধ্বংসস্তুপে পরিনত হওয়া এক কালের ভিয়েতনাম ঘুরে দাড়াচ্ছে আবার। দেশটিতে যে নারকীয় তান্ডব বিশ্ব মোড়লরা তখন চালিয়েছিল তা ভাবলেও গাঁ শিউরে ওঠে।

তবে ওস্তাদের মার শেষ রাতে! দীর্ঘ অসম যুদ্ধের শেষের দিকে বোকাসোকা ভিয়েতনামী জানবাজদের হাতে খাওয়া মারের কথা আমেরিকানরা স্মরনকালে আর কোথাও খেয়েছে বলে শুনি নি।

ভাল লাগল দেশটিতে ভ্রমন বৃত্তান্ত।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:৪০

শোভন শামস বলেছেন: সাথে থাকবেন ধন্যবাদ।

৯| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:৫৫

সিগনেচার নসিব বলেছেন: শেয়ারের জন্য ধন্যবাদ
পাশে আছি চালিয়ে যান

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:৪৪

শোভন শামস বলেছেন: সাথে থাকবেন ধন্যবাদ।

১০| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:৩৩

বিলিয়ার রহমান বলেছেন: শোভন শামস

রাতের হ্যানয়ের ছবিগুলো সত্যিই দারুন ছিল!:)

লাইক!:)

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:৪১

শোভন শামস বলেছেন: সাথে থাকবেন ধন্যবাদ।

১১| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:৫৬

বিলিয়ার রহমান বলেছেন:

কামাল ভাই আপনার জন্য পাঠাইছে!:)

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:১৭

শোভন শামস বলেছেন: সাথে থাকবেন ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.