নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পরিপূর্ণ মনুষ্যত্ব অর্জনের প্রত্যয়ে

শুজা উদ্দিন

ব্যতিক্রম

শুজা উদ্দিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

আসামের টুকরো ইতিহাস

০৪ ঠা মার্চ, ২০১৮ সকাল ৯:১৪

আসাম সম্পর্কে আমাদের সাধারণ জ্ঞান খুব স্বল্প। বিশেষ করে আসামের মুসলমানদের সম্পর্কে। আসামের মুসলমানদের উদ্ভব সম্পর্কে যথেষ্ট গবেষণা হয়নি। আসামের সবচেয়ে বড় শহর গৌহাটি। গৌহাটি নামটা বাংলা। অহমিয়া বা আসামি ভাষায় নামটা হলো গুয়াহাটি। আগে অহমিয়া ভাষায় নামটা ছিল গুবাক-হাটি। হাট শব্দটা ফারসি। গুবাক শব্দটাও ফারসি। ফারসিতে গুবাক বলতে বোঝায় সুপারি। গুবাক-হাটি নামটা তাই বাংলা করলে দাঁড়ায়, ‘সুপারির হাট’। আসামের সবচেয়ে বড় শহর গৌহাটির নামটা কেন এসেছে ফারসি ভাষা থেকে, সেটা জানা যায় না।
বাংলাদেশে ১৩৩৮ থেকে ১৫৭৬ সাল পর্যন্ত ছিল একটি পৃথক স্বাধীন মুসলিম সালতানাত, যাকে বলা হচ্ছে সালতানাত-ই-বঙ্গালাহ। এর একটা বিশেষ প্রভাব পড়েছিল পশ্চিম আসামের (কামরূপ) ওপর। বাংলার স্বাধীন সুলতানরা জয় করেছিলেন পশ্চিম আসাম বা কামরূপ পর্যন্ত। সম্ভবত সে সময়ে উদ্ভব হয়েছিল গুবাক-হাটি নামটি। কেননা, বাংলার সুলতানরা তাদের কাজকর্মে করতেন আরবি ও ফারসি ভাষার বিশেষ ব্যবহার। সুলতান শামস-উদ-দীন ইলিয়াস শাহ্-এর পুত্র সেকেন্দার শাহ ১৩৬৭ সালে কামরূপে এসে একটি টাকশাল স্থাপন করেছিলেন। সেকেন্দার শাহ্্র পুত্র গিয়াস-উদ-দীন আজম শাহ গৌহাটিতে নির্মাণ করেছিলেন একটি দুর্গ। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হওয়া সম্ভব হয়েছে গৌহাটিতে প্রাপ্ত আরবি ভাষায় লিখিত একটি শিলালিপি থেকে। শিলালিপিটি সংরক্ষিত আছে আসামের কামরূপ সংগ্রহশালায়। এর থেকে আমরা অনুমান করতে পারি, আসামে মুসলমানেরা হঠাৎই বাইরে থেকে গিয়ে উপস্থিত হয়নি। কম করে তারা খ্রিষ্টীয় চতুর্দশ শতাব্দী থেকে সেখানে আছে।
আসামের অনেক মন্দিরে থাকতে দেখা যায় গম্বুজ। আর এসব গম্বুজ হলো কতকটা গৌড়ের সুলতানি আমলের মসজিদের মতো। দেখতে কতকটা উল্টানো ধামার মতো। বিখ্যাত কামাক্ষার মন্দিরেও এর প্রভাব পরিদৃষ্ট হয়। অহমিয়া বা অসমিয়া ভাষা বাংলা ভাষার সঙ্গে খুবই ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। অনেকের মতে, ভাষাটিকে বলা যায় বাংলা ভাষারই একটি রূপ। ১৯৩১ সালে বগুড়ার মহাস্থান নামক জায়গায় সম্রাট অশোকের সময়ের একটি শিলালিপি আবিষ্কৃত হয়, যা অশোক প্রাকৃত ভাষায় ব্রাহ্মী অক্ষরে লিখিত। অনেকের মতে, অশোক প্রাকৃত থেকে হতে পেরেছে বাংলা ভাষার উদ্ভব। আসামে সম্রাট অশোকের সময় কোনো শিলালিপি পাওয়া যায়নি। অশোকের সময়ের এই শিলালিপিকে ধরা হয় আনুমানিক ৩০০ খ্রিষ্টপূর্ব অব্দের। আসামের কোথাও এত পুরনো শিলিলিপি এখনো আবিষ্কৃত হয়নি।
আসামে ভাষার অক্ষর ও বাংলা ভাষার অক্ষর একই। বাংলা অক্ষরের উদ্ভব হয়েছে ব্রাহ্মী অক্ষর থেকে। আসামি ভাষাকে ভাবা যায় বাংলা ভাষা থেকে উদ্ভূত। ব্রিটিশ আমলের আসাম প্রদেশে যারা বাস করত, তাদের শতকরা ৫০ ভাগ মানুষ কথা বলত বাংলা ভাষায়। শতকরা ২০ ভাগ মানুষ কথা বলত অহমিয়া বা আসামি ভাষায়। আর শতকরা ৩০ ভাগ লোক কথা বলত বিভিন্ন উপজাতীয় ভাষায়। উপজাতীয়দের ভাষা আর্য পরিবারভুক্ত ছিল না। এরা হলো চীনা এবং কম্বোডিয় ভাষা পরিবারভুক্ত। এদের কথা এখন বিশেষভাবে ভাবতে হচ্ছে, কেননা সাবেক আসাম প্রদেশ এখন আর নেই। তা ভেঙে সৃষ্টি হতে পেরেছে আসাম, অরুণাচল, নাগাল্যান্ড, মেঘালয় ও মিজোরাম। মিজোরামের মানুষ আর্য ভাষায় কথা বলে না।
বিজিপি এখন আসামের প্রাদেশিক পরিষদে ক্ষমতায় আছে। ক্ষমতায় আছে ভারতের পার্লামেন্টে। আসামে বিজিপি বলছে হিন্দুত্ববাদের কথা। হিন্দুত্ববাদের ভিত্তি হলো আর্য ভাষা ও হিন্দুধর্ম; কিন্তু উপজাতিদের ভাষা আর্য পরিবারভুক্ত নয়। আর ধর্মে তারা এখন অধিকাংশই হয়ে উঠেছে খ্রিষ্টান। হিন্দুত্ববাদ আসামে কিছুটা আবেদনবহ হলেও সমগ্র পূর্ব ভারতে তার প্রভাব সেভাবে প্রবিষ্ট হতে পারবে না। কেননা, খ্রিষ্টধর্ম আর হিন্দুধর্ম একসূত্রে গাঁথা হতে কখনই পারে না।
।।সংগৃহীত।।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৩:৫২

বারিধারা ২ বলেছেন: অহমী ভাষার গানগুলো আমার খুব ভালো লাগে। একটা প্রশ্নঃ গারো পাহাড় এবং খরস্রোতা ব্রহ্মপুত্র পাড়ি দিয়ে মুসলিম শাসকেরা আসামে পৌঁছল কি করে?

২| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৪

ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: ভালো লাগলো।

৩| ০৫ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:৫৭

খাঁজা বাবা বলেছেন: ভাল লাগল
আরো বিস্তারিত লিখবেন আশা করি :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.