![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সত্যিকারের সুখীমানুষের সাথে আমার একটাই পার্থক্য, সুখীমানুষের গায়ের জামা ছিলো না, আমার আছে।
ভিক্ষুক হারুনকে কেউ চিনেন? সিডিওল মেইনটেন করে তার চলতে হয়, চরম ব্যাস্ত মানুষ। বসে উত্তরা ৫ নং সেক্টরে লেকের দক্ষিন-পচ্ছিম দিকে। সকাল ৬টা থেকে ৮টা পর্যন্ত এখানে দেখা যায়, তাও প্রতিদিন না। আবার মাঝে মাঝে মাস খানেকের জন্য লা-পাত্তা হয়ে যায়। মুখে একটাই বুলি, না দিলে খামু কী!
হারুন যে কেবল ভিক্ষুক তা না, সে পাগলও কিছুটা। চলনে, বলনে, ড্রেসআপ এ তাই মনে হয়। কিন্তু ব্যাটা বিরাট বড় সক্রেটিস। আমি সকাল বেলা যে গ্রুপের সাথে হাটতে যাই এই গ্রুপের প্রায় সবার সাথেই হারুনের টুকটাক কথাবার্তা হয়। শুধুমাত্র ইসহাক ভাই ছাড়া। ইসহাক ভাইয়ের কথা হলো, ব্যাটা ঢং ধরছে ভিক্ষা নেওয়ার জন্য। আমি খুব দরদ নিয়ে বলি, নাহ্ ইসহাক ভাই, আমার মনে হয়না। ভিক্ষা করতে গেলে কি আর এত সং সাজতে হয়? এই দেশের মানুষ নিজে খাইতে পায়না তবু হাত পাতা লোক দেখলেই ভিক্ষা দেয়।
হারুন বিবাহিত, ছয় বাচ্চার বাপ। আমি বলি, হারুন তুমিতো বিরাট সুখী। হারুন আনন্দের চোটে থুতুর অর্ধেকটা জামার উপরই ফেলে। মুখ ভর্তী হাসি নিয়ে বলে-
-সুখী অওন সুজা। মাইয়া মানুষের রাগ সইজ্য করতে পারলেই অয়।
গত কয়েকদিন ধরে হারুনকে দেখিনা। আজ খালি পকেটেই হাটতে বের হলাম। হারুনের সাথে দেখা।
- কি হারুন থাকো কই? তোমারেতো দেখাই যায়না!
- তোমার মত অনেকেই আছে আমার।
- তো?
- ওমা, সবার লগে দেহা করন লাগে না?
- কই কই যাও দেখা করতে?
-মিরপুর যাই, পুরান ডাহা (ঢাকা) যাই...
- তো হারুন আমিতো আজ টাকা পয়সা নিয়া বের হই নাই
- তোমার টাকা দেওন লাগবো না।
- টাকা না দিলে খাইবা কী?
হারুন একগাল হাসি দিয়ে আবারও অর্ধেকটা থুতু জামার উপর ফেলে বলে
-দুই বেলা খাওনের টেহা ওঠতে আর কতকন্ লাগে!
এরপর আবার সান্ত্বনার সুরে বলে, বিষুদবার পর্যন্ত আছি উত্তরায়। এরপর মিরপুর যামু। এবার সে আমার দিকে তাকায়ে বলে
- তোমার টেহা দেওন লাগবো না, আমার পাশে একটু বসো।
- আমি তোমার পাশে বসলে তো তোমার ইনকাম ভাগাভাগি হইয়া যাইবো।
এবার হারুন আবার হাসে। আনন্দের চোটে আবারও অর্থেক থুতু জামায় ফেলে দেয়। পাগল মানুষ, কথা রিপিট করে বলে
- তোমার টেহা দেওন লাগবো না, আমার পাশে একটু বসো।
বসলাম না, পাশে কিছুক্ষণ দাড়ালাম। কেমন আছো / ভালো আছি টাইপ গল্প করলাম কিছুক্ষন। এবার খুব দায়িত্ব নিয়ে হারুন বল্লো
- যাও, অফিসে যাইবা না?
আমি কেমন যেন মমত্ববোধের ছোঁয়া পেলাম। শুধু কি পরিবারের লোকজনই এই মমতা দেখাবে? হারুনের এই 'যাও, অফিসে যাইবা না?' এর মমতাও কি কম? আমি জানি সবার বুক জুড়েই মমতা আছে। আমরা তা দেখাই না। মমতা ঢেকে রাখার জিনিস না। যে মমতা দেখানোয় কোন স্বার্থ জড়িত নয় আসুন সেই মমতাগুলো আর ঢেকে না রাখি।
বিদ্র: হারুনের সাথে কারু দেখা হলে আমার কথা বল্লে সে চিনবে আশা করি। কিন্তু আমার নাম বলতে হবে, ঐযে পাতার বাঁশি বাজায় যে ঐ লোক।
১০ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৪
সুখী মানুষ বলেছেন: বাপরে!!!
এত সুন্দর মন্তব্য!!!!!!
ইচ্ছা করছে আপনার লেখাটা ফ্রেমে বাঁধিয়ে দেওয়ালে ঝুলিয়ে রাখি। আর বউকে বলি, দেখো তুমিতো আমারে চিনলানা
ধন্যবাদ ভাই।
২| ১০ ই জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩১
রাজীব নুর বলেছেন: হুম...
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ২:১৪
বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন: ভাল লাগা।
ভাল লিখেন আপনি । চালিয়ে যান।